গল্প- "পুতুল কন্যা"
(Polok Hossain)
.
Part-21
.
গোলাপের তোড়া বেশ কয়েকজন বিক্রি
করছে।রাস্তার পাশের ফুল বিক্রেতাদের
দিকে চোখ পরতেই প্রবন্ধ সামনে গেল।
কোনোরকম দরকাষাকষি না করেই তিনটি
ফুলের তোড়া কিনে নিলো।উপমা
দেখলে নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে।দিনশেষে
এই ফুলেরতোড়াটাই হবে
তখন রোমাঞ্চপূর্ণ মুহূর্তের একটি বিশেষ
অংশ।
কানে ফুল পরে উপমার নৌকায় বসে
থাকার ওই দৃশ্যটা চোখে ভেসে আসছে।
ঘোমটার আড়ালে প্রিয় মুখটি ঢেকে
নিজেকে লুকিয়ে রাখা উপমার সেই
লজ্জাবতী মায়াবী চেহারাটা চোখে
স্পষ্ট ভেসে আসছে।আজও কি এই ফুলটা ওর
কানে পরিয়ে দিলে ওইদিনের মতোই কি
মেয়েটার লম্বা চুলগুলোর শোভা বাড়বে
না!! হাতের চুড়ির ছনছন ধ্বনি তুলে উপমা
কি মিষ্টি করে হেসে তাকাবে না!!এই
লাবণ্যের বর্ণনা দিতে গেলেও যে শেষ
হবে না।একবার লিখতে বসলে উপন্যাসের
পাতা ফুরিয়ে এলেও উপমার রহস্যাদির
দীর্ঘ বিবরণের ইতি টানতে ব্যার্থতা
মেনে নেওয়া ছাড়া গতি নেই। মাঝে
মাঝে বলতে ইচ্ছে হয় উপমাকে।
"আচ্ছা..উপমা তুমি কি বুঝতে পারো আমার
মনের কথা!আমার এই কথা শুনে তুমি হয়তো
জবাব না দিয়েই হাসতে শুরু করবে।আর
আমার এই কথা বলার উদ্দেশ্যই তখন হবে
তোমার মুখে হাসি ফোটানো।আমার
পদ্ধতিটা কি ভালো লেগেছে তোমার!
মনে মনে তোমার সাথে কতো কথা
বলেই দুষ্ট করে যাচ্ছি..তুমিও না হয় মনের
মধ্যে ধরা দিয়ে একটি মিষ্টি করে হেসে
দেও।তুমি সামনে থাকলে হয়তো আমার
কাধে মাথা রেখে আধো আধো গলায়
অভিমানী স্বরে বলতে যে আমি
পাগলামি করছি।কিন্তু কি করবো বলো
ভালোবাসা যেইখানে আছে পাগলামি
ঠিক সেইখানেই আছে।আমার হৃদয়ে
ভালোবাসা থাকতে কি আমি এই বাক্যটার
অবমাননা করতে পারি!তুমি-ই বলো।"
ফুলটা হাতে নিলো প্রবন্ধ।সুগন্ধিযুক্ত পুষ্প
আসলেই মন কাড়ে।হেটে যেতে
যেতেই ট্রেন ষ্টেশনের কাছে এসে খুব
কাছের একজন বন্ধুর সাথে দেখা।নাম
শ্রাবণ।শ্রাবণেরও প্রবন্ধর বিয়েতে আসা
হয় নি।দেখা হওয়া মাত্রই জিজ্ঞাসু ভাবটা
ওর মুখে আচ্ছাদিত হয়ে আসছে।দেখা
হতেই হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশ্যাক করার
স্টাইলে বলল-
-কি রে দোস্ত..বিয়ে করলি,, ট্রিট
কোথায়?
-বিয়েতে না এসে ট্রিট চাইছিস?
উত্তরটা শুনলো কি শুনলো কে জানে।
প্রবন্ধর হাতে ফুল দেখা মাত্রই বলে
উঠলো-
-ওহহো..ভাবীর জন্য
নেওয়া হচ্ছে?
প্রবন্ধ হেসে বলল-
-হুম।ঠিক ধরেছিস।
-ভাবী কোথায়?কেমন আছে সে?
-ভালো আছে।ও স্কুলে।
কিছুটা অবাক হয়ে বলল-
-এখনি চাকরী?
-না।চাকরী নয়।পড়তে গেছে।
শ্রাবণ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল-
-মানে?
প্রবন্ধ হেসে বলল-
-সে অনেক কথা।চলে আয়।হাটতে হাটতে
বলছি তোকে।
প্রবন্ধ আর শ্রাবণ হাটা ধরলো।পুরো রাস্তা
জুরে উপমার কথা-ই বলে গেল সে।
মেয়েটা কি এক মিনিটের জন্যও ওকে
ভুলে থাকতে দেয় নাকি!!!
.
.
.
-এরপর কি ক্লাস?
পাশের মেয়েটা জবাব দিলো-
-বাংলা।
-এরপর?
-বিজ্ঞান।
-টিফিন দেয় কয়টায়?
মেয়েটি একটি খাতা বের করে রুটিন
দেখিয়ে উপমাকে বলল-
-এইটা ক্লাসের রুটিন।লিখে নেও।
উপমা লিখে নিলো।প্রথম টিচারের
ক্লাসটা বেশ ভালো লেগেছে ওর।ক্লাস
টিচার পড়ানোর চেয়ে বেশী গল্প-ই
করেন।ভারি মজার ক্লাস করান তিনি।গল্প
করতে করতে মাঝে মাঝে তিন
মিনিটের ব্রেক লাগিয়ে দশ মিনিট পর পর
বেজে ওঠা ফোনটা রিসিভ করেন।
টিফিন দিতে আরও আড়াই ঘন্টার মতো
আছে।গ্রামের স্কুলটা থেকে এই স্কুলের
নিয়মকানুন একেবারেই ভিন্ন।
পাশের মেয়েটি জিজ্ঞাসা করলো-
-নাম কি তোমার?
উপমা জবাব দিলো-
-ইভানা ইলাহি উপমা।আর তোমার নাম?
-রুপা।তুমি নতুন এসেছো মনে হচ্ছে?
-হুমম।
-বাড়ি কোথায় তোমার?
উপমা ইতস্ততভাবে জবাব বলল-
-শ্বশুর বাড়ি এইখানে আর বাপের বাড়ি
গজারিয়ার পাড় গেরামে।
-তুমি বিবাহিত???
-হুম।
ভারী মজার বিষয় মনে হলো ওর পাশে
বসা মেয়েগুলোর কাছে।আরও আগ্রহ
নিয়ে দু চারটি প্রশ্ন করতে লাগলো-
-আচ্ছা..উপমা..একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
-করো।
-তোমার শ্বশুরবাড়ির সবাই কেমন?তোমার
জামাই কেমন? কি করে?কেমন লাগে
ওইখানে?
উপমা এক কথায় জবাব দিলো-
-ভালো।
কিন্তু মেয়েগুলো থামবার মতো নয়।বরং
আগ্রহ নিয়ে আরও অনেক কিছুই জিজ্ঞাস
করতে লাগলো-
-বর কি আদর করে? কেমন লেগেছিল প্রথম
দিন?
উপমা এইবারও এক কথায় জবাব দিলো-
-ভালো।
উপমার সাথে কথা বলতে বলতে মেয়ে
দুটি নিজেদের মধ্যেই হাসাহাসি করে
গেল।
খুব অস্বাভাবিক লাগছে ওর।মেয়েগুলো
অন্য প্রশ্নও করতে পারতো।সরাসরি
বিয়ে,স্বামী,শ্বশুরবাড়ি নিয়ে প্রশ্ন
করাটা উপমার কাছে বিব্রতকর মনে হলো।
চিঠিটা খুলে আরেকটিবার পড়তে ইচ্ছে
হচ্ছিল।কিন্তু ওদের সামনে চিঠিটা নিয়ে
পড়তে গেলেই উঁকিঝুঁকি দিবে।
রুপা বলল-
-এখন থেকে আমাদের সাথে বোসবে।
আমরা জায়গা রাখবো তোমার জন্য।
-আইচ্ছা।
-এই স্কুলে আজ-ই প্রথম ক্লাস তোমার, তাই
না!
-হু।
-কে নিয়ে এসেছে তোমায়?তোমার বর?
বলতে বলতেই ওরা আবারও হেসে গেল।
উপমা ধীর স্বরে বলল-
-হু।
ঘণ্টাটা বেজে উঠলো।উপমা ওদেরকে
বলল-
-এইডা কি টিফিন ঘণ্টা?
রুপা বলল-
-নাহ।এইট এর ক্লাস টেস্ট চলছে।সেই
পরীক্ষার ঘণ্টা পরেছে কেন?তোমার কি
খিদে পেয়েছে?খিদে পেলে খেয়ে
নেও।ক্লাস ক্যাপটেইনকে বলে
ক্যান্টিনে যেতে পারো তুমি।
উপমা কিছু বলল না।টিফিন পিরিয়ডের
সময়টুকুতে সে চিঠিটা আরেকটি বার পড়ে
নিতে চায়।বার বার খুলে পড়ে নিতে
ইচ্ছে হচ্ছে এই চিঠি।যেন এই প্রেমপত্রেই
প্রবন্ধ রয়েছে।চিঠিটা পড়তে নিলেই
প্রবন্ধর কণ্ঠস্বরটা কানে ভেসে আসে।
প্রতিটা লাইন আর অক্ষরে ঘিরে আছে
প্রবন্ধ।
জানালার দিকে তাকালেই গেটের
সামনে চোখ পরে যায়।কেন জানি মনে
হয়,প্রবন্ধ হঠাৎ করেই এসে পরবে উপমাকে
নিয়ে যেতে।
বাংলা ক্লাস চলছে এখন।প্রবন্ধর কথা
ভাবতে ভাবতেই আনমনা হয়ে যেতে
হচ্ছে।একবার না বারবার।চিঠিটার কথা হুট
করে মাথায় চলে এলেই আনমনেই মুখে
হাসি চলে আসে।মস্তিষ্কটাও ভারী মজা
করতে শিখেছে।চিঠিটার কথা নিজেও
ভোলে না এমনকি উপমার মাথা থেকেও
সড়াতে চায় না।
.
.
-এই মেয়ে তুমি দাঁড়াও তো।
স্যার কি উপমাকেই ইশারা করে বলছে।
উপমা উঠে দাঁড়ালো।এতোক্ষন কোনো
পড়াতেই মন ছিল না ওর।
-বলতো..মধুসূদন দত্তের গ্রামের বাড়ি
কোথায়?
উপমা কিছু বুঝে উঠার আগেই হকচকিয়ে
জবাব দিলো-
-আমার গেরাম গজারিয়ার পাড় স্যার।
ওর উত্তর শোনা মাত্রই ক্লাসের সবাই
জোর আওয়াজে হেসে উঠলো।
রুপা ওকে ফিসফিস করে বলল-
-তোমার গ্রামের বাড়ির নাম স্যার
জানতে চান নি।মাইকেল মধুসূদনের
গ্রামের বাড়ি জানতে চেয়েছেন।
উপমা এইবার জবাব দিলো-
-সরি,সাগরদাঁড়ি গ্রাম।
ততোক্ষণে ক্লাসের পরিবেশটা
হাসিতে ভরে উঠলো আর উপমা বোকার
মতোই দাঁড়িয়ে রইলো।পুরো ক্লাস ঠিক
এইভাবেই দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ।
ঘন্টা বাজতে বাজতে টিফিন পিরিয়ড।
কিন্তু খাওয়ার চেয়ে বেশী আকর্ষণ হচ্ছে
ওই চিঠিটা।পড়া হলো কিন্তু মনও যে ভিষন
খারাপ।ক্লাসের প্রথম দিন-ই হাস্যকর
পরিস্থিতিতে পরতে হলো!চোখে এইবার
পানি জমে টলমল করছে।
ঘণ্টা পরতে পরতে একেবারে ছুটিরঘণ্টা।
সাড়া ক্লাসেই মনমরা হয়ে বসে থাকতে
হলো।রুপা মেয়েটার সাথে তেমন
ঘনিষ্ঠতাও আর হয়ে উঠলো না।
উপমা প্রবন্ধর জন্যই দাঁড়িয়ে রইলো স্কুল
গেটের কাছাকাছি।ছুটি হয়েও পনেরো
মিনিটের বেশী বাজতে লাগলো।
আশেপাশে কাউকে দেখতে পেয়ে ভয়
হচ্ছিল ওর। প্রবন্ধর আসতে বিলম্ব হলে
তানহা-মানহার সাথে বাড়ি যাওয়ার কথা।
তবে ওরা কোথায়! বাড়ির পথটাও তো
ভালো করে চেনা নেই।
স্কুল গেটটাও দাড়োয়ান বন্ধ করে দিচ্ছে।
উপমা আগের মতো করেই দাঁড়িয়ে রইলো।
আর খুঁজতে থাকলো প্রবন্ধকে।ভয়ে চোখ
গড়িয়ে পানি চলে আসছে।আর কতো
অপেক্ষা!!
দাড়োয়ান ওকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
বলল-
-বাড়ি যাও না ক্যান?কেউ-ই তো নাই।
একা একা দাঁড়াইয়া আসো কেন?
-আমারে নিতে আসার কথা?
-আসে নাই?
উপমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বলল-
-নাহ..
-বাড়ির ফোন নাম্বার আসে?
-মুখস্ত নাই .
-একা একা চইলা যাও তাইলে।
-আমি চিনি না দাদা..
উপমা কেঁদে উঠলো।কেউ কি আজ আসবে
না ওকে নিয়ে যেতে?আর প্রেমদাস
প্রবন্ধ! সে কোথায়! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই
উপমা ভয়ে কাঁদতে লাগলো।
চলবে..
#পলক_হোসেন
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧝ āĻāĻāϏ্āĻ, ⧍ā§Ļā§§ā§
682{21}
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:ā§¨ā§Ž AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ