āĻļāύিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āφāĻ—āϏ্āϟ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

657 {2}

অতঃপর বৃষ্টিদিন.. (শেষ পর্ব)

by- সায়মা মাহমুদা রিমি

এরপর শুরু হলো যুদ্ধ,নিজের সাথে।মন ও মস্তিষ্কের বৈপরত্বে ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম আমি সাথে সবার সামনে থাকার নিখুঁত অভিনয় করে যাওয়া।অনেকটাই গুটিয়ে গিয়েছিলাম নিজের মধ্যে। ফেসবুকেও বসা হতনা আগের মতো তাই তন্ময়ের সাথে যোগাযোগও কমে গিয়েছিল। তবে আমার এই পরিবর্তনে তন্ময়কে ফাঁকি দেয়া সহজ ছিলনা।ওই ঘটনার দুদিন পরের
এক সন্ধ্যায় ও ফোন দিয়ে বসল।ওর গলা শুনে এলোমেলো লাগছিল সবকিছু।
শক্ত হলাম।ক্লাস পরীক্ষা আরো শতশত অজুহাত দেখালাম আমার ব্যস্ততার।
কঠিন সুরে বোঝালাম যেন আমাকে আর ফোন না দেয় তাতে আমার পড়াশোনার ক্ষতি হবে।জানি আমার সেদিনের ব্যবহারে অনেক অবাক হয়েছিল ও কিন্তু আমার তো এমন করতেই হতো। আমাকে আমার ভুল তো শোধরাতেই হতো।এভাবে চলে গেল সপ্তাহখানেক।নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম আমি তখনও কিন্তু সেই ব্যর্থ চেষ্টাকে আরো ব্যর্থ করে দিতেই মনে হয় খবর পেলাম বড়আপুর বিয়ে ঠিক হয়েছে।

আপুর বিয়ে নিঃসন্দেহে আমার জন্য অনেক আনন্দের কিন্তু আমার ভয় ছিল অন্য জায়গায়। তন্ময়ের বাবার সাথে মামার অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল বলে আমি মোটামুটি শিওর ছিলাম যে বিয়েতে তন্ময় আর ওর পরিবারও আসবে।
সেটা আমি কিছুতেই চাচ্ছিলামনা কারন ওর মুখোমুখি হবার শক্তি সাহস কিছুই আমার তখন অবশিষ্ট ছিলনা। রাজ্যের অনিশ্চয়তা নিয়ে বিয়ের একসপ্তাহ আগে বাসায় গিয়ে উপস্থিত হলাম।
বাসায় অলরেডি মেহমানে গিজিগিজি অবস্থা।প্রীতি আমাকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল।শুরু হলো দুজনের আলাপ। অনেকদিনের জমা থাকা সব কথা যেন প্রীতি একনিঃশ্বাসে বলে যেতে থাকল।একসময় সেই প্রসঙ্গ আসল যার ভয় তন্ময়!জানলাম ওরা দুদিন পরে আসবে।তন্ময়ের কথা বলার সময় প্রীতির চোখেমুখে অন্যরকম আভা ছড়িয়ে পড়ল আমার বুঝতে অসুবিধা হলোনা যে ও অধির হয়ে অপেক্ষা করছে কবে এ দুদিন শেষ হবে।প্রচন্ড ব্যস্ততায় কাটল পরের দুদিন,কিছুক্ষনের জন্য সবকিছু ভুলেই গিয়েছিলাম তখনি শুনলাম তন্ময়রা আজ আসছে।বুকটা ধ্বক করে উঠল,সব ভয় অনিশ্চয়তা
আমাকে অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরল। ইচ্ছা হচ্ছিল সবকিছু ফেলে পালাই যদিও সেটা নিজের কাছেই হাস্যকর শোনালো।

তন্ময়রা সেদিন দুপুরের পর পৌছালো আর সারাসকাল অপেক্ষা করার পরেও প্রীতি ওর আসার সময় থাকতে পারলনা কারন তার কিছুক্ষন আগেই আপুর শপিং এর জন্য আমরা মার্কেটে যাই যদিও ফোনে তন্ময়ের আসার কথা শুনে ওর মুখ বাল্বের মত উজ্জ্বল হয়ে যায়। কাজ শেষ করে দুরুদুরু বুকে বাসার পথে পা বাড়ালাম।চারদিকে তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে সাথে ঝিরিঝিরি বাতাস যেন বৃষ্টির পূর্বাভাস। বৃষ্টি আমার অসম্ভব প্রিয় তাই বাসায় পৌছে প্রীতি যখন সবার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে ব্যস্ত আমি তখন প্রকৃতির উৎসবে যোগ দিতে ছাদে চলে গেলাম।বৃষ্টি তখন আসি আসি করছে,সাথে হালকা বাতাস আর বজ্রপাত। আমি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে মগ্ন ধ্যান ভাঙ্গল কারো গলা খাকারির শব্দে।আমি চমকে পিছন ফিরলাম আর দেখলাম একজোড়া উচ্ছসিত চোখ আমার দিকে তাকিয়ে।একটু হেসে ভ্রু নাচিয়ে তন্ময়ের প্রশ্ন..

-খবর কি?
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত সে হাসি দেখলাম আর আমার সামনে দাড়ানো মানুষটার মাঝে তিনবছর আগের তন্ময়কে খুঁজতে লাগলাম। দেখতে অনেকটাই বদলে গেছে ও।অনেক লম্বা হয়ে গেছে,গোলগাল মুখ এখন লম্বাটে,চুল স্টাইল করে লম্বা করে কাটা আর ওর সেই বিখ্যাত মোটা ফ্রেমের চশমাটাও হাওয়া শুধু হারিয়ে যায়নি একটা জিনিস,ওর হাসি।চোখ সরিয়ে নিলাম। বুঝতে পারছিলাম ওর প্রশ্নের উত্তরে আমার কিছু বলা উচিত কিন্তু কি বলব।সত্যি বলতে আমি নিজেই ভাবিনি যে ও আমার সাথে এত সহজে কথা বলবে কারন সেদিন ফোন
করার পর থেকে একটা মানুষকে যতভাবে এড়িয়ে চলা যায় সব আমি ওর সাথে করে ফেলেছি কিন্তু তারপরও যে এই ছেলে সবকিছু ভুলে মিষ্টি হেসে
আমার সাথে কথা বলে বসবে তা কে জানত!মুখে কোনমতে হাসি ফুটিয়ে বললাম..
-ভালো,তোর?
-আমার কথা পরে তুই আগে বল এমন মুটকি হলি ক্যামনে?
আচমকা ওর এই কথায় থতমত খেয়ে গেলাম।আরে কোথায় আমি ধরে রেখেছি আমার ওইদিনের সেই এবনরমাল ব্যবহারের পর ও খেপে খুপে আমার সাথে কথা বলবেনা কিন্তু তা তো না ই বরং রিতিমত আমাকে ক্ষ্যাপানো শুরু করল।কঠিন কন্ঠে বললাম..

-আমি মুটকি হলে তুই তো ডিজিটাল কাকতাড়ুয়া!
কথাটা শুনে ও ছাদ কাপিয়ে হো হো করে হাসতে লাগল। কথাটা যদিও আমি হাসির উদ্দেশ্যে বলিনি কিন্তু ওর হাসি দেখে আমিও হেসে ফেললাম আর অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমি খুর সহজেই ওর সাথে কথা বলতে পারছি।
নতুন দৃষ্টিতে আমি ওর দিকে তাকালাম,যেকোন পরিস্থিতিকে খুব সহজে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসার এক বিরল ক্ষমতা নিয়ে ছেলেটা জন্মেছে।

-কিরে!এমন হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস ক্যান?
-বয়েই গেল আমার।মুখ বাকালাম।তুই বল তোর এখানে কি আর আমি এখানে তোকে কে বল্লো?
-আমিতো বৃষ্টি দেখতে এসেছিলাম কিন্তু আজকাল বৃষ্টির সাথে ডাইনীরাও যে আকাশ থেকে নেমে আসে তা তো জানতামনা।
-কি!আমি ডাইনী!!
চেঁচিয়ে উঠে যখন যাবার জন্য ঘুরব তখন তন্ময় আমার পথ আটকালো..
-স্যরি দোস্ত,মজা করছিলাম।
প্রীতির কাছে শুনলাম তুই এখানে তাই তোকে জালানোর চান্স মিস করলামনা।
আমি চোখেমুখে কৃত্রিম রাগ ফুটিয়ে ওর দিকে তাকালাম যদিও মনে মনে এই ভেবে খুশি লাগছিল যে ও শুধু আমার জন্যই ছাদে চলে এসেছে। বড় বড় ফোটায় বৃষ্টি তখন পড়তে শুরু করেছে।তন্ময় শঙ্কিত গলায় বলল..
-তাড়াতাড়ি চল,ভিজে গেলাম তো!
আমি রহস্যময় গলায় বললাম..
-তুই যা,ডাইনীদের ও মাঝেমাঝে বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করে।

তন্ময় চোখ বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়েও বললোনা আর আমি দেখলাম ও ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে,বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে সব.. তন্ময় ভিজছে তাও আমার সাথে আমার অনেক অবাক হবার কথা কিন্তু এত সুন্দর পরিবেশে আমার শুধু একটা অনুভূতিই কাজ করছে,মুগ্ধতা!! আমরা ভিজলাম,অনেকক্ষন অন্নেকক্ষন.... ভেজার কারনে যে ভালো কাজটা হলো তা হচ্ছে সকালে আমার গাঁ কাঁপিয়ে জ্বর আসল। ভালো এজন্য বললাম কারন আমার অসুস্থতা দেখে সবাই খুব চিন্তিত হয়ে গেল আর আমিও সবার ফ্রি ফ্রি কেয়ার ভালোই এনজয় করতে লাগলাম।

সবচেয়ে মজা তখন হলো যখন তন্ময়ের মা ভেজার জন্য ওকে দোষারোপ করতে লাগল আর বেচারাও আমার জন্য চুপচাপ মায়ের বকা শুনতে লাগল।
খারাপ লাগল প্রীতির জন্য,ওকে সাহায্য করাতো দূরে থাক উল্টো আমি রোগী সেজে বসে আছি।তন্ময়কে বললাম প্রীতিকে যেন হেল্প করে কিন্তু কিসের কি কোন কাজকর্ম করার চেয়ে আমাকে ক্ষ্যাপানোই মনে হয় ওর বেশি পছন্দের।
সারা সকাল আমি রুমে কাটিয়ে দিলাম আর আমাকে সঙ্গ দিল তন্ময় অবশ্য বলা উচিত আমাকে জালানোর চান্স মিস করলোনা ,তবে আমি চূড়ান্তরকম অবাক হলাম যখন দুপুরে ও নিজে দোকানে গিয়ে আমার জন্য
ওষুধ কিনে নিয়ে আসল। এত ব্যস্ততার মধ্যেও ও যে মনে করে ওষুধ কিনে এনেছে এজন্য কৃতজ্ঞতা থেকে ওকে থ্যাংকস দিয়ে বসলাম। ও প্যাকেটটা আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে বলল..
-নে ধর।খেয়ে আমারে মায়ের বকা থেকে উদ্ধার কর।
ওর বলার ভঙ্গিতে আমি হেসে দিলাম আর তখনি ও জ্বর দেখার জন্য খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে আমার কপালে হাত দিল।আমি শিউরে উঠলাম। এক শীতল  স্রোত আমার শিড়দাঁড়া বেয়ে নেমে গেল মনে হলো। আমি প্রশ্নচোখে ওর দিকে তাকালাম আর ও সব দাঁত বের করে বলল..
-আরে ডাইনীদের ইম্যুনিটি তো দেখি হেব্বি স্ট্রং।এত তাড়াতাড়ি জ্বর সেরে গেল।
আমি একটু হাসলাম আর তখনি রুমে প্রীতি ঢুকল।আমার মধ্যে এক ধরনের অপরাধবোধ জন্ম নিল কারন আমার জন্য আসার পর থেকে ওদের দুজনের ঠিকমত কথা পর্যন্ত হয়নি আর তাইতো কাজ আছে বলে আমি রুম থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য যখন ঘুরব তখনই তন্ময়ের ডাক..
-মৌরি
-আবার কি?ভ্রু কুচকে বললাম।
-থ্যাকংস।
-কেন?
-কালকের জন্য।কাল বৃষ্টিতে ভেজার সময়টা ভালোই ছিল।
আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম।অস্বস্তিভরা চোখে তাকালাম প্রীতির দিকে। না জানি মেয়েটা কি ভাবছে!

সেই ঘটনার পর এটা আমি খুব ভালোমতো বুঝে গেলাম যে এখন থেকে আমার প্রধান কাজ তন্ময়কে এড়িয়ে চলা। অনেক কষ্টে আমি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু ওর কর্মকান্ড আমাকে আরো দোটানায় ফেলে দিচ্ছে।আমি চাচ্ছিলামনা যে আমি আবারো আমার আবেগের জটিল জালে আটকে যাই। আর সেজন্যই মামী যখন আমাকে তন্ময়ের সাথে ডেকোরেটরদের সাথে দেখা করতে বল্লো আমি খুর সুকৌশলে সেখানে প্রীতিকে পাঠিয়ে দিলাম।কষ্ট হয়নি যে তা না কিন্তু এটাই সবার জন্য মঙ্গল।

অর্থহীন আবেগ না থাকাই ভালো।যত সহজে কথাটা বললাম তা বাস্তবে পরিনত করা অতটা সহজ ছিলনা। সবার সামনে যতই স্বাভাবিক থাকিনা কেন ভেতরে ভেতরে নিজের সাথে যুদ্ধ তখনো চলছে আর তার সাথে আমাকে আরো বেশি দ্বিধায় ফেলছিল তন্ময়ের কিছু আচরন।সেদিন রাতের কথা,সবাই বসে লিভিংরুমে আড্ডা দিচ্ছিল।প্রীতি হঠাৎ লুডু খেলার প্রস্তাব দিল।

এই খেলা আমার কোনকালেই পছন্দ না তাই খেলবনা বলে কিছুক্ষন ঘ্যানরঘ্যানর করেও খেলতে বসলাম আপুর অনুরোধে।আর এতক্ষন লুডুকে
ছোট বাচ্চাদের হাস্যকর খেলা বলেও তন্ময় ঠিকই খেলতে বসল শুধু তাই না আমাকে হারাবে বলে বাজি ধরে বসল।আপু প্রীতির আগেই খেলা শেষ হয়ে গেল। চূড়ান্ত লড়াই আমার আর তন্ময়ের মধ্যে।আমার পরাজয় মোটামুটি সুনিশ্চিত ছিল কিন্তু খেলা শেষে দেখা গেল অপ্রত্যাশিতভাবে আমি জিতে গেলাম কারন ও আমার কোন গুটি কাটেনি।

ব্যাপারটা আমি ছাড়া আর কেও খেয়াল করলনা,আমি অবিশ্বাসী চোখে ওর দিকে তাকালাম।ও হাসছে।আমার মনে পড়ে গেল তিন বছর আগের কথা।স্যার যখন আমার প্রশংসা করছিলেন ঠিক একই ভঙ্গিতে হেসেছিল ও।আমার সারা শরীর ঝিমঝিম করতে লাগল।অসহায় চোখে শুধু ওর হাসি দেখলাম..

রাত ২টা।আমি বাসার ছাদে একটা কোনে দাঁড়িয়ে আছি।জায়গাটা আমার অসম্ভব প্রিয়।যখনি কোন কষ্টে থাকি কিংবা একা থাকতে ইচ্ছা হয় কেন জানি এই জায়গাটার কথাই সবার আগে মনে হয়..

"তোমার আমার অবস্থান
এপার ওপার
উথাল পাথাল ঢেউ উঠছে নামছে হারিয়ে যাচ্ছে
অপেক্ষায় আছি একে অপরকে
স্বচ্ছ জলে দেখব বলে.."

প্রিয় কবিতার লাইনগুলোতে এতই হারিয়ে গিয়েছিলাম যে বুঝতেই পারিনি কখন পেছনে প্রীতি এসে দাড়িয়েছে।

-কিরে,ঘুমাসনি?ওর প্রশ্ন!
আমি নাসূচক মাথা নাড়ালাম।
-তুইও তো ঘুমাসনি।
জবাব না দিয়ে একটু হাসল শুধু ও আমি ওর হাসির মাঝে এই প্রথম বিষাদের ছায়া দেখতে পেলাম। আসলেই এতদিন আমি স্বার্থপরের মত শুধু নিজের কথাই ভেবেছি কখনো মাথায় আসেনি যে এই মেয়েটাও কষ্টে আছে।বেচারী নিশ্চয়ই অপেক্ষা করে আছে প্রিয়জনের মুখে কিছু প্রতিক্ষিত কথা শুনবে বলে।আর তন্ময় কিনা,নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে ওকে অপেক্ষা করাচ্ছে।হঠাৎ মাথায় আসল
আমারই তো ওদের দুজনের জন্য কিছু করা উচিত কারন এখানে দুজনেরই কাছের তো একমাত্র আমিই।প্রীতিকে বললে ও কখনো রাজি হবেনা ভেবে আমি নিজেই পরেরদিন তন্ময়ের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিলাম।
পরেরদিন সুযোগ খুজতে লাগলাম কখন তন্ময়কে একা পাওয়া যায় যদিও ব্যাপারটা অত সহজ ছিলনা কারন বিয়ের আগের দিন বলে সবাই খুব ব্যস্ত ছিল।সারাবাড়ি চষে বেড়ানোর পর অবশেষে তাকে পাওয়া গেল,কার সাথে যেন গভীর আলোচনায় ভত্ত। কথা বলার জন্য যখনি ডাক দেব দেখলাম ও নিজেই আমার দিকে ছুটতে ছুটতে আসছে।কাছে এসে ও তাড়াহুড়া করে বলল..

-মৌরি তুই কি ফ্রি আছিস?
-কেন?
-একটু কথা ছিল,আর্জেন্ট!
-বল।কিছুটা অবাক হয়েই বললাম।
-না এখন না।দশমিনিট পর ছাদে আসিস প্লিজ..
কথাটা বলেই ও আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হনহন করে চলে গেল আর অবাক চোখে ওর যাওয়া দেখলাম।
দশমিনিট পর দুরুদুরু বুকে ছাদে গেলাম।ও কি বলবে আল্লাহই জানে!তন্ময় গম্ভীর মুখে দাড়িয়ে আছে এতটা সিরিয়াস ওকে আগে কখনো দেখিনি।আমাকে দেখে মুখে জোর করে হাসি ফুটিয়ে ও বলল..

-আসলি?
-হুম,এখন বল।
-আমাকে একটু হেল্প করতে পারবি?শুধু তুইই পারিস..
-আমি!কোন ব্যাপারে?
-প্রীতি।
-প্রীতি কি?
কিছুক্ষন ইতস্তত করে তন্ময় বলল..
-চিঠিটা প্রীতির জন্য।ওকে একটু দিতে পারবি প্লিজ!
-প্রীতি কি?
কিছুক্ষন ইতস্তত করে তন্ময় বলল..
-চিঠিটা প্রীতির জন্য।ওকে একটু দিতে পারবি প্লিজ!
আমার বুঝতে এতটুকু কষ্টও হলোনা যে চিঠিটা কিসের।ঝাপসা চোখে আমি তাকালাম তন্ময়ের বাড়ানো হাতের দিকে।কত সহজেই না ও বলে দিল কথাগুলো।হয়তো কখনো ও এটাও জানতে পারবেনা যে কত বেদনায় নীল হয়েছিলাম তখন আমি।আর জানলেই বা কি?

এটাতো হওয়ার ই ছিল কখনো না কখনো তাছাড়া আমি নিজেও মন থেকেই চাচ্ছিলাম আপুর বিয়ের দিন প্রীতিও অনেক খুশি থাকুক। আমার স্বাভাবিক হওয়া উচিত।দাতে দাত চেপে কান্না থামালাম।এ কাজ আমার চেয়ে ভালো কেউ পারেনা কিন্তু আজ এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ মনে হলো।
আমি ওর দিকে তাকাতে পারলামনা।কোনমতে মুখটা হাসিহাসি করে বললাম..
-পারবনা কেন!দে।
-থ্যাংকস।খুশি ঝরে পড়ল তন্ময়ের কন্ঠে।আমি কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটা নিয়ে প্রীতির উদ্দেশ্যে ছুটলাম।
আমি প্রীতি পর্যন্ত কিভাবে পৌছালাম জানিনা।অবাক লাগল।প্রীতিকে আমি অসংখ্যবার বলেছি যে চিঠিতে প্রপোজ করা আমার খুব রোমান্টিক লাগে সেই আমিই যে ওর প্রেমপত্র বাহক হব কখনো ভাবিনি।
-প্রীতি,তোর চিঠি।
-আমার!কে দিল?
-তন্ময়।
শুনে ওর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল আর ও হা হা করে জোরে জোরে হাসতে লাগল..
-অবশেষে।কিন্তু তুই শিওর তো চিঠিটা যে আমার।
-মানে কি?
-মানে কেন জানি মনে হচ্ছে চিঠিটা আমার না।
ওর এমন অসংলগ্ন আর হেঁয়ালিপূর্ন কথাবার্তা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
অধৈর্য্য গলায় বললাম..
-প্রীতি এটা সেই চিঠি যার অপেক্ষা তুই অনেকদিন ধরে করছিস।
-হুম আসলেই আমি অনেকদিন ধরে এই চিঠির ওয়েট করছি কিন্তু চিঠিটার প্রাপক আমি না তুই।
-মানে কি?
আমার ধৈর্য্যের বাধ তখন পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে কিন্তু প্রীতির হাসি একটুও মলিন হলোনা,মিষ্টি গলায় বলল..
-চিঠিটা খুলেই দ্যাখনা প্লিজ।
প্রীতির দিকে বিস্ময়ভরা দৃষ্টি দিয়ে আমি আস্তে করে চিঠিটা খুললাম আর অবাক হয়ে দেখলাম সেখানে সত্যিই আমার নাম লেখা।

"মৌরি,তিনবছর আগে কোচিং এ নিজের রেজাল্ট শুনে তুই যখন বোকার মত হেসে দিলি তখনই তোর প্রেমে পড়ে যাই।বলতে পারিনি,ভয়ে সংকোচে যদি টেনপড়ুয়া ছেলের ছোট্ট বয়সের আবেগ তোর কাছে হাস্যকর মনে হয়।সময় দিলাম নিজেকে বড় হবার আর অবাক হয়ে দেখলাম আমার সাথে সাথে আমার ভেতর বাড়ছিস তুইও,প্রতিনিয়ত।সেই ছোটবেলায় তোকে ঘিরে মনে যে অনুভূতির বীজ বোনা হয়ে গিয়েছিল তা যে সময়ের সাথে সাথে
ডালপালা গজিয়ে বিশাল বৃক্ষে পরিনত হয়ছে নিজেই বুঝিনি আর তাইতো তারপর থেকে আমার এমন কোন মুহুর্ত নেই যেখানে তুই নেই। সংকোচ তাও পিছু ছাড়লনা আর তাই একসময় তোকে অনেক ভালো বন্ধু হিসেবে পাবার পর মনে প্রশ্ন জাগল,তুই ও আমাকে নিয়ে একই রকম ভাবিস তো? আমি সত্যি জানিনা তুই আমাকে কি ভাবছিস কিন্তু বিশ্বাস কর তোর জন্য অংক ভুল করে স্যারের বকা খেতেও ভালো লাগে.বৃষ্টিতে ভিজে মায়ের বকা শুনতে ভালো লাগে শুধু তোর হাসিমুখ দেখার জন্য বাজিতে হারতে ভালো লাগে।হয়তো অনেক ভালোবাসি তোকে তাই....

বি.দ্র. প্রথম কাউকে চিঠি লেখা।নিতান্তই তোর পছন্দ বলে দুঃসাহসটা করে ফেললাম।উত্তর দিতে না হোক চিঠির ভুলগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য হলেও একবার ছাদে আয়,আসবি?"

একনিঃশ্বাসে চিঠিটা পড়ে শেষ করলাম।টের পেলাম আমার গাল ভিজে যাচ্ছে অভিমানের অশ্রুতে।হঠাৎ খেয়াল হলো সামনে প্রীতি দাড়িয়ে।উদয় হলো শতপ্রশ্ন। প্রীতি আর তন্ময়ের ব্যাপারটা তবে কি ছিল?প্রীতি আর আমাকে অন্ধকারে রাখলনা।শয়তানী হাসি দিয়ে বলল..

-তুই যে এত গাধা আমিতো আগে জানতামনা।এত অভিনয় তো আমি স্যারদের সামনেও করিনি।
-অভিনয়?তো সব তোদের প্ল্যান ছিল?
-তোদের না শুধু আমার,ওইটাতো তোর চেয়েও বলদ।এতদিন ধরে পছন্দ করে অথচ কিচ্ছু বলতে পারলনা। আমাকেও বলেনি পরে আমি স্পাইগিরি করে বের করেছি।জানি আমি কিছু না করলে তোদের কিচ্ছু হবার নয় তাইতো গাধাটাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে রাজি করলাম।এখন বুঝলি?
কিছু না বলে আমি প্রীতিকে জড়িয়ে ধরলাম।এই মায়াবতী মেয়ের মায়ার ঋন আমি কিভাবে শোধ করব জানিনা।

-থাক রংঢং পরে আগে ছাদের বলদটার একটা ব্যবস্থা করে আয়। আমি প্রীতিকে ছাড়লামনা বরং আরো জোরে জাপটে ধরলাম। ছাদে দাড়িয়ে আছি।তন্ময় ঠিক আমার পছন্দের জায়গাটাতে বসে আছে,মুখ গম্ভীর থমথমে ছেলেটার টেনশন আরেকটু বাড়িয়ে দেব নাকি?না থাক।সরাসরি ওর সামনে গিয়ে দাড়ালাম।আমাকে দেখে হুড়মুড় করে উঠে দাড়াল ও।

-এসবের মানে কি?কঠিন গলায় বললাম।
-চিঠিতে লেখা আছে তো,মিনমিনে গলায় ওর উত্তর।
-না চিঠিতে হবেনা,সরাসরি বল।
খানিকক্ষন আমতাআমতা করে অবশেষে ও প্রতিক্ষিত কথাটা বললো..
-মানে ভালবাসি তোকে..
অনেককষ্টে হাসি আটকে আমি গম্ভীর গলায় বললাম..
-সেটা আগে বলতে পারলিনা নাকি আমার পাঁচকেজি চোখের পানি না ঝরালে তোর চলতনা!
তন্ময় আমার দিকে কিছুক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে হেসে ফেললো,ওর উত্তর ও পেয়ে গেছে আর আমি মুগ্ধ চোখে তাকালাম পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর হাসিটা দেখব বলে!!

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ