āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧝ āφāĻ—āϏ্āϟ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

682{9}

গল্প- পুতুল কন্যা"
(Polok Hossain)
.
Part -9
.
সকালে মিষ্টি রোদ আর হাল্কা কুয়াশার আমেজ আছে চারিদিকে।প্রবন্ধর ঘুম ভাঙলো।চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো পুতুলটি তার আগেই ঘুম থেকে উঠে গেছে। প্রবন্ধ উঠে বসলো।টিনের ফাক দিয়ে রোদের আলো আসছিল।শীতের সময় এই রোদটাকেই গায়ে পরখ করে নিলে বড় তৃপ্তি পাওয়া যায়।কিন্তু উপমা কোথায়!সকালে উঠে ওর দিকে একবার তাকিয়ে নিলেই মনের তৃপ্তি পাওয়া যায়।সকালে কাজল যখন ওর চোখে ছড়িয়ে থাকে তখন এই সৌন্দর্যের মহিমা শুধু সকালে উঠে দেখবার সুযোগ হয়ে থাকে।ঘোমটার আড়ালে থাকা পুতুলটাকেও তখন চোখ ভরে দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। যখন তখন এই সৌন্দর্য দেখা যায় না।অমাবস্যার চাঁদের সাথে ওর এই সৌন্দর্যটা তুলনা করলে হয়তো ব্যাখ্যাটা আরেকটু স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
.
খাটের সামনে যেই জানালা দিয়ে পুকুরপাড়টা দেখা যায় সেই জানালাটা উপমা ঘুম থেকে উঠে খুলে রেখেছে নিশ্চয়ই।জানালা দিয়ে বাহিরে এক নজর তাকিয়ে নিতেই প্রবন্ধ দেখলো উপমা পুকুরপাড় থেকে গোসল করে আসছে।ভেজা শাড়ি ওর গায়ে লেপ্টে আছে।পানি ওর শরীর বেয়ে মাটি স্পর্শ করছে।আর উপমা থর থরিয়ে কেপে কেপে হাটছে।ভেজা আচলটা পুরো শরীরে জড়ানো।ঠোঁট জোড়া কাঁপছে।ভেজা চুলগুলোতে ওর চোখ দুটো ঢাকা পরে আছে।প্রবন্ধ ঘরের দরজা খুলে বাহিরে বের হলো।উপমা রসুইঘরের দিকেই যাচ্ছে।ওর মা সেইখানে বসে রান্না করছে।ঘটলা থেকে আসতে না আসতেই ভেজা শরীরে খালি কলসিটা কাধে নিয়ে আবারও পুকুরপাড়ে ছুটলো উপমা।কোমর পানিতে নেমে কলসিতে পানি ভরে পানি ভর্তি কলসি কাধে করে নিয়ে আসলো।
উপমা হঠাৎ খেয়াল করলো প্রবন্ধ বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।আড় চোখে চেয়ে কিছুটা ইতস্তত বোধ করলো উপমা।লজ্জার বাধ ভেঙে পরছে।প্রবন্ধ এইখানে কখন থেকে যে দাঁড়িয়ে আছে সে কিছুই খেয়াল করে নি।কলসিটা রসুইঘরে রেখেই সে পটাপট ঘরে ঢুকে পরলো।
.
উপমা নতুন একটি বেনারসি শাড়ি পরেছে।ঘোমটার আড়ালে থাকা ভেজাচুলগুলো থেকে বিন্দু বিন্দু পানি নিচে গড়িয়ে পরছে।
প্রবন্ধকে পাতে খাবার তুলে দিলো।সকাল থেকে এই পর্যন্ত কাজ-ই করে যাচ্ছে।সকালে খাবারের আয়োজন খুদেরবাহা সাথে শুটকির ভর্তাসহ আরও নানান কিছু।
উপমা প্রবন্ধর পাতে খাবার তুলে দিয়ে প্রবন্ধর পাশে দাঁড়িয়ে রইলো কেননা খাবার সময় ওর কি লাগবে আর কি না লাগবে এইটা দেখে রাখার দায়িত্ব তো উপমারই।এই দায়িত্বের অবজ্ঞা সে কি করে করবে!
প্রবন্ধ বলল-
-তুমি খেয়েছো!
উপমা মাথা নারালো।খায় নি সে।
প্রবন্ধ ভালোবাসাযুক্ত একটা অভিমানী নিয়ে বলল-
-আমি একা একা খাবো আর তুমি না খেয়ে সারাক্ষণ কাজ করেও এইভাবে দাঁড়িয়ে থেকে আমার খেয়াল রাখবে!! এইটা আমার কাছে মোটেও ভালো লাগবে না।তুমিও বসে পরো খেতে।
উপমা বসলো না।মাথা ঝুকে ঘোমটা বড় করে টেনে দাঁড়িয়ে রইলো।স্বামী মুখে খাবার তুলার আগে তার মুখে খাবার তুলে নেওয়া টা বেমানান।মা ওকে এইটাই শিখিয়েছে।
প্রবন্ধ আবার বলল-
-বসছো না কেন!তুমি যদি এখন খেতে না বসো তাহলে আমিও এখন খাচ্ছি না।এক সাথে খাবো আমরা।
উপমা চুপচাপে দাঁড়িয়ে রইলো।দিধাদ্বন্দে আছে।নিচে তাকিয়ে চোখের পাতা এদিকওদিক করছে।প্রবন্ধ ওকে বুঝে নিয়ে বলল-
-আমি বলেছি তোমাকে বসতে।বসো।আমার সাথে খাবে তুমি।
উপমা প্রবন্ধর কথামতো ওর পাশে বসলো কিন্তু খাবার তুলে নিলো না।চুপচাপ বসে রইলো।
প্রবন্ধ বলল-
-তুমি খাবার নিচ্ছ না কেন!
উপমা নড়ে বসলো।উপমা এইবার প্লেটে খাবার নিলো।
প্রবন্ধ বলল-
-তোমাদের গ্রামটা আজ ঘুরে ঘুরে দেখতে চাই।আমাকে ঘুরিয়ে আনবে তো!
উপমা মাথা নাড়ালো।আনবে।
প্রবন্ধ খেয়াল করলো উপমা এখনো কিছুই খায় নি।সেই কখন থেকেই পাতে খাবার মেখে যাচ্ছে।
প্রবন্ধ বলল-
-খাচ্ছো না কেন উপমা!খিদে পায় নি!
উপমা এইবার একটু একটু করে খাবার মুখে নিলো।
প্রবন্ধ বলল-
-তোমাকে একটা কথা বলবো উপমা!
উপমা প্লেটের খাবার আঙুলের মুঠোয় নেড়ে যাচ্ছিল।প্রবন্ধর কথায় সাড়া দিয়ে নিচু গলায় বলল-
-বলেন
-জানো উপমা..তোমাকে পেয়ে নিজেকে খুব ধন্য মনে হয়।আমাকে তোমার বন্ধু মনে করবে সবসময়।আমাকে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছুই  নেই।তোমার সাথে কোনো অন্যায় আমি করবো না।আমার মাঝে কেন নিজেকে এতো লুকিয়ে রাখো তা আমি বুঝতে পারি।তবে এতো লজ্জাবতী হলে কি চলে!বলো..
উপমা চুপ হয়েই রইলো।ওর চোখে যেন একটা গম্ভীর ভাষা লুকিয়ে আছে।
প্রবন্ধ আবার বলল-
-ঠিকাছে।তুমি নীরব হয়েই আমাকে তোমার কথা শোনাও।আর তা হলো তোমার চুড়ির আওয়াজে,নুপুরের আওয়াজে কিংবা পায়ের আওয়াজে। সেই আওয়াজকেই আমি তোমার মুখের কথা হিসেবে নিজের কানে শুনে যাবো।
উপমা ঘোমটার আড়াল থেকে মুখ তুলে তাকালো প্রবন্ধর দিকে।এই মুহূর্তে প্রবন্ধকে খুব কাছের কেউ মনে হচ্ছে।এতোদিন যেই মানুষটাকে ভয়ের চোখে দেখে আসছিল সে তো সত্যি-ই ভয়ানক পুরুষ নয়।
প্রবন্ধ বলল-
-উপমা..,তুমি কি জানো..তুমি নিজে একটা পুতুল।তোমার মতো পুতুলকে কষ্ট দিলে নিজেকে আমার অপরাধী হতে হবে।আর তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি সেই অপরাধের ভার কখনোই নিতে চাইবো না।কারন এই পুতুল পাওয়ার সৌভাগ্য আমার-ই হয়েছে।তোমাকে যত্নে রেখে দেওয়ার দায়িত্ব আমার।আর তুমি আমার চলার পথের সঙ্গিনী।যার হাত ধরে আমি আমার শেষ বয়সের পথ পর্যন্ত অতিক্রম করতে চাই।
উপমার চোখের কোন আনন্দের বিন্দু বিন্দু পানি জমে উঠেছে।প্রবন্ধর কথায় সে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে।উপমা ওই অবস্থাতেই কেঁদে ফেলল।প্রবন্ধ অবাক হয়ে তাকালো উপমার দিকে।প্রবন্ধ ওর হাত দিয়ে উপমার মুখ তুলে বলল-
-এই বোকা মেয়ে...কেন কাঁদছ তুমি! বলো!তুমি কাঁদলে কি আমার ভালো লাগবে!এখনো দেখি কিছুই খাও নি তুমি!প্লেটের খাবার প্লেটেই পরে আছে।
প্রবন্ধ পানির গ্লাস উপমার মুখের সামনে নিয়ে বলল-
-কান্না বন্ধ করো।পানি খাও।
প্রবন্ধ উপমাকে পানি খাইয়ে দিলো।
উপমার কান্না থামলো।প্রবন্ধ পানি খাইয়ে দেওয়াতে কিছুটা লজ্জা পেল,তবে লজ্জা পেলেও ভালো লাগার একটা অনুভূতি চেপে এসেছে।
প্রবন্ধ খাচ্ছে কিন্তু মেয়েটা অবুঝের মতো বসে খাচ্ছে ঠিকই।ঘোমটার নিচে একটু পর পর প্রবন্ধর দিকে তাকায়।প্রবন্ধর সাথে হঠাৎ চোখে চোখ পরে গেলে লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে মুখ ঘোমটার আড়াল করে নেয়।
.
প্রবন্ধর মনও হিমশিম খাচ্ছিল।হুট করে নিজের মনের ভাবটা বলে ফেলায় উপমার ভয় আবার বেড়ে যাবে না তো!না কি উপমা ওকে বন্ধুর মতো করেই মেনে নিবে।উপমার মনে কি চলছে তা বুঝার উপায়ও তো জানা নেই।কি করে মেয়েটাকে বোঝানো যায় যে এই হৃদয়ের রাজ্যে রাজ্বত্ব করার অধিকার মেয়েটিরই আছে কিন্তু সে কেন তার অধিকার থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।
খাওয়া শেষ হতেই প্রবন্ধ চিন্তার ঘোর কাটিয়ে বলল-
-চলো।আমাকে গ্রাম ঘুরিয়ে দেখাও।সব জায়গা চিনতে চাই আমি।
উপমা পরম আগ্রহ নিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেল।
দুইজনে এইবার বাহিরে বের হয়ে হাটতে লাগলো।উপমা প্রবন্ধকে নদীর পাড় নিয়ে গেল।বড় নদীটা দেখিয়ে বলল-
-এইডা মেঘনা নদী।
নদীর পাড় দাঁড়িয়ে কিছু দূর চোখ গেলেই ব্রীজটা ছোট আকারে চোখে পরে।উপমা ব্রীজটার দিকে আঙুল দেখিয়ে বলল-
-ওইডা মেঘনা ব্রীজ।
গ্রামের ভেতর ছড়িয়ে থাকা ক্ষেতগুলো দেখতে মনোরম লাগে।উপমা ওকে এইবার ক্ষেতগুলোর দিকে নিয়ে গেল।দেড় শতাংশের একটি ছোট জমি দেখিয়ে বলল-
-এইডা আমাগো জমিন।বাবায় এইদিকে আলু আলু চাষ করে।
প্রবন্ধ সব ঘুরে ঘুরে দেখলো।
উপমা যখন মুখ ফুটে ধীর গতীতে সব কিছু ওকে চিনিয়ে দিচ্ছিল প্রবন্ধ তখন শুধু তাকিয়ে তাকিয়েই উপমাকে দেখে যাচ্ছিল।চোখের তৃপ্তি তো ওর মাঝেই লুকিয়ে আছে।ওর কথাতে মোহ হয়ে থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে।জাদুকরী আবারো তার জাদুর মন্ত্র পরে যাচ্ছে।
কিছু দূর হেটে যেতেই দুই,তিনটে ফুল গাছ প্রবন্ধর চোখে পরলো।উপমার অগোচরে প্রবন্ধ গাছ থেকে দুটো ফুল ছিঁড়লো।উপমা সামনে হেটে যাচ্ছে।প্রবন্ধ ওকে ডেকে বলল-
-একটু দাঁড়াও উপমা।
উপমা পেছনে ফিরে প্রবন্ধর সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো। প্রবন্ধ হাতের ফুল দুটি উপমার সামনে দিয়ে বলল-
-ফুল দুটো তোমার কানে পরো উপমা।
উপমা হাত কাঁপতে কাঁপতে  ফুল দুটো প্রবন্ধর হাত থেকে নিজের হাতে নিয়ে  প্রবন্ধর দিকে একটু তাকালো।
প্রবন্ধর চোখে উতফুল্লতার হাসি ভেসে উঠছে।উপমা ঘোমটা একটু সরিয়ে নিয়ে ফুলগুলো কানে পরে নিলো।বাতাসে ওর উন্মুক্ত চুলগুলো উড়ে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে।বাহ..কি চমৎকার। মনে হচ্ছে প্রকৃতির এক খন্ড সৌন্দর্য উপমা কেড়ে নিয়েছে।ওকে দেখে একটি গান প্রবন্ধর মনে ভেসে আসছে।প্রবন্ধর অতি প্রিয় একটি গান।
"একটা ছিল সোনার কন্যা..
মেঘ বরন কেশ।
ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কন্যার দেশ।
দুই চোখে তার আহারে কি মায়া..
কন্যার চিরল বিরল চুল..
তাহার কেশে জবা ফুল..
উপমা দাঁড়িয়ে আছে।মুখে মিষ্টি হাসি।চোখে মায়ার বন্যা।পুতুলটা মন কেড়ে নিচ্ছে।
উপমা মৃদু স্বরে বলল-
-আমাগো পুকুড়ে একটা নৌকা বাধা আসে।চলেন আপনারে ঘুরাইয়া আনি।
প্রবন্ধ বলল-
-আমি নৌকো চালাতে পারি না।
-আমি পারি
মেয়েটি নিজ ইচ্ছায় কথাটা প্রবন্ধকে বলল।প্রবন্ধ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মেয়েটির সাথে গিয়ে নৌকায় উঠে বসলো।
গানের বাকি অংশটাও গুন গুন করছে প্রবন্ধর মনে-
কন্যার চিরল বিরল চুল...
তাহার কেশে জবা ফুল..
সেই ফুল পানিতে ফেইলা কন্যা করলো ভুল..
কন্যা ভুল করিস না..।কন্যা...
চলবে..
#পলক_হোসেন

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ