♥♥♥♥
♥
♥
♥
পুরো ক্যাম্পাস থমথমে! বিশ মিনিট আগেও ছাত্রছাত্রী ভরা ছিল।এখন কয়েকটা কুকুর আর কিছু কাকের কা কা ছাড়া আর কিছু শোনা যাচ্ছে না।কিছু ছাত্রছাত্রী হল রুমের ভেতর তালাবদ্ধ হয়ে আছে।মাঠের ভেতর অনেক লাঠি সোঠার স্তুপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে এখানে কি ঘটেছে।রাজনীতির দুটি পক্ষের লড়াই। কেউ কারো থেকে কম না।পুলিশ না এলে দু একটা লাশ এতক্ষনে পড়ে যেত।পরিস্থিতি অনুকূলে এলে হলরুমের স্টুডেন্ট দের ছেড়ে দেয়া হল।নির্দেশ দেয়া হল দু চার মিনিটের ভেতর ক্যাম্পাসের বাইরে যে যার নিরাপদ অবস্থানে চলে যাওয়া হয়।
দ্রুত পা চালতে শুরু করল সাইমা আর মানতাশা।এরা কাজিন আর খুব ভাল বন্ধু। একে অপরকে ছাড়া কোন কাজ করে না। দুজনেই খুব ভীত হয়ে পা চালাচ্ছে।ভয়ের আর এক কারণ হল মানতাশা নুহাশ এর বোন। আর নুহাশ হল উপর লেভেলের একজন নেতা।কলেজের অর্ধেক স্টুডেন্ট তার কথায় চলে।ওর নির্দেশেই হামলা করেছে প্রতিপক্ষের উপর।এজন্যই মানতাশা ভয় পাচ্ছে ওরা ওকে আক্রমণ করে বসে কি না!
সাইমার হাত টা আর একটু চেপে ধরল মানতাশা।গ্যারেজ পাশ কাটানোর সময় ক্ষীন একটা কাতর আওয়াজ শোনা গেল সেখান থেকে।
দুজনেই থমকে গেল ওরা। প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে একে অপরের দিকে চেয়ে রইল ওরা।আওয়াজ টা কোথা থেকে আসছে সেটা শোনার জন্য দাড়িয়ে আছে দুজন।কিছুক্ষন পর আবার আওয়াজ এল গ্যারাজের ভেতর থেকে।এটা নিশ্চিত ভেতরে কেউ গোঙাচ্ছে। শাটারে তালা না দেখে দুজন মিলে উচু করল।পরক্ষনেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল দুজনের.....
ছেলেটার দু হাত পেছনে নিয়ে বাধা।কানের গোড়া থেকে রক্ত চুইয়ে পড়ছে এখনো। সাদা টি শার্ট টা এখানে সেখানে কেটে আছে ধারালো ক্ষুর বা ব্লেডের আঁচড়ে। জাইগা গুলা রক্তে ভিজে আছে।আর ঘামে ভিজে আছে সারা বডি।হাটুর কিছুটা উপরে মাংস ফাকা হয়ে আছে।বিকৃত মানুষগুলোর মেন্টালীটি কে ধিক্কার করছে মানতাশা আর সাইমা।
- এই এখানে বেশিক্ষন থাকা ঠিক হবে না....( মানতাশা )
- চল চল চল......( সাইমা )
দুজনে বেরিয়ে হাটা শুরু করল আবার। কিছু দুর গিয়েই দাড়িয়ে গেল মানতাশা...
- আচ্ছা ছেলেটা কে? ( মানতাশা )
- চেহারার অর্ধেক টা রক্তে ঢেকে গেছে। চিনতে পারিনি...(সাইমা )
- এভাবে পড়ে থাকলে তো মরে যেতে পারে...
- কিছু করা উচিৎ। কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে গেলে যদি আবার কেউ.......
- দাড়া ভাইয়াকে ফোন করি......
অনেক বার কল করেও কারো সাহায্য পেল না ওরা।শেষমেশ.....
- সাইমা তুই এক কাজ কর।কলেজের পেছনের গেটে গিয়ে দেখ কি অবস্থা? ভাল থাকলে একটা রিক্সা ডেকে রাখবি।
- ওই পথে কোন হসপিটাল নেই তো।
- আপাতত বাসায় নিয়ে যায়।ডক্টর ডেকে নেয়া যাবে।
- বাসায় প্রবলেম হবে না তো?
- ধুর ও সব পরে ভাবা যাবে।দরকার হলে ভাইয়ার ঘাড়ে চাপিয়ে দেব।যা এখন....
- তুই কি করবি?
- আমি দেখি ওকে গেটের কাছে নিয়ে যেতে পারি কি না....
;
দুদিন হয়ে গেল নুহাশের কোন খোজ নেই।আহত ছেলেটা এখনো সেরে ওঠেনি।সারা গায়ে টুকরা টুকরা ব্যান্ডেজ। ডান হাত টা গলায় ঝোলানো। একটা হাড় ভেংগেছে।
খুব কষ্টে চোখ মেলে দেখে গাড় অন্ধকারময় একটা ঘরে আছে ও।এক পাশ থেকে রাস্তার আলো ঘরে ঢুকছে।আস্তে আস্তে হেটে জানালার পাশে গিয়ে দাড়াল ও।মাঝে মাঝে দু একটা গাড়ি যাচ্ছে।নিজের অবস্থান আর গাড়ির অবস্থান দেখে বুঝে নিল দুতলা বা তিন তলায় আছে সে।এর বেশি মাথায় আসছে না কিছু।তখনি আজান শুরু হল।তারমানে ভোর হতে যাচ্ছে।কোথায় আছে সেটা বোঝার চেষ্টা করে বিফল হল।দেয়াল হাতড়ে লাইট জেলে দিল ছেলেটা।কিছুক্ষনের মধ্যে দরজা খুলে উকি দিল দুইটা মুখ।দুজনেই অপরিচিতা। একজন মধ্য বয়স্ক নারি। আর একজন সম্ভাবত তার মেয়ে হবে।
- কেমন আছ বাবা?
অচেনা মহিলার উত্তরে মুখ খুলল ছেলেটা.....
-....... ভা...
গলার ভেতর মনে হল কেউ বসে আছে।কিছুই বের হল না প্রথম।কেশে পরিষ্কার করে উত্তর দিল....
- জ্বী ভাল.....
- নাম কি তোমার?
- প্রহর....
- বাড়ি কোথায়?
> আহ মা..... এখন থাক না । মাত্র তো জেগেছে। পরে জানা যাবে!
- আচ্ছা তুমি রেস্ট নাও পরে কথা হবে।
;
সেদিন সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরল নুহাশ। প্রহরকে দেখে জিজ্ঞাসু চোখে মা আর বোনের দিকে চাইল।মানতাশা সবটা খুলে বলার পর,নুহাশ প্রহরের দিকে এগিয়ে গেল....
- ভাই আমরা খুবই লজ্জিত তোমার কাছে।একটা বড় ভুল হইছে আমাদের।
- মানে?
- আসলে ওইদিন তোমাকে যারা মেরেছিল ওরা আমার লোক।আর আমাকে বলেছে তোমাকে ওরা গ্যারেজে আটকে রেখেছে।পরে আমরা তোমাকে খুজে আর পাইনি।অথচ তুমি আমার বাড়ি.....
- আমাকে মারার কারণ কি?
- এখানেই ভুলটা হয়েছে।আমাদের পার্টির এক সিনিয়র ভাইকে ওরা হেনস্তা করেছে পাবলিক প্লেসে।তাই আমরা হামলা করেছিলাম।কিন্তু ওরা ভুলে তোমাকে.......!সেদিন কি হয়েছিল বলতো......
- সাইকেল রেখেছিলাম গ্যারেজে। নিয়ে আসতে যাচ্ছিলাম।দুইটা ছেলে এসে আমাকে নিয়ে যেতে চাইল।প্রশ্ন করলাম কই যাব?
কোথা থেকে আর একটা ছেলে এসে পেছন থেকে মার শুরু করল...
- আর বলতে হবে না।বুঝেছি....তুমি রেস্ট কর।আমি।দেখছি.....
- তোমার বাড়ি কোথায়?
- খুলনা...
- এখানে কোথায় থাক?
- একটা মেসে থাকি।
- মেসে??
- জ্বী
- তোমার বাবা কি করেন?
- উনি কৃষক। নিজেদের কিছু জমি আছে সেখানেই.......
ঘরের সবার ভেতর কেমন একটা অপরাধ বোধ প্রকাশ পেল।
- ওনাকে কি জানিয়েছ?
- না এখনো কিছু বলা হয়নি।
> এখন বলতে হবে না তাকে অনেক কষ্ট পাবেন।(আন্টি)
;
;
হাতের ব্যাথাটা চেক করছিল প্রহর।গলা থেকে নামানো যায় কিনা......! এমন সময় দরজায় নক করল কেউ।পাল্লা ফাক করে মানতাশা ঢুকলো একটা ট্রে হাতে নিয়ে।
- ভালই হল।চায়ের পিপাসা লাগছিল খুব....
- হুম এই নিন....
- থ্যাংকইউ.....আচ্ছা আপনার রাগ হচ্ছে না কারো উপর?
- যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে।এখন রাগ দেখিয়ে কি হবে বলেন?
- তারপরও।
- একটা হেল্প করবেন?
- হ্যা বলেন কি হেল্প?
- হাতের ব্যান্ডেজ টা খুলে দিবেন? অসহ্য লাগছে!
- আরে পাগল নাকি? এখন খোলা যাবে না....
- মনে হয় কিছু হবে না।দিন না প্লিজ.....
- হবে না বলছি তাই হবে না....
মেয়েটার দৃঢ়তা দেখে প্রহর কিছুটা অবাক হল।চশমা টা একটু ঠিক করে বসাল মেয়েটা। ফ্রেমটাতে মানিয়েছে খুব তাকে।অবাক হওয়ার আর একটা কারণ আছে।একই কলেজে পড়ছে,অথচ এত সুন্দর একটা মেয়েকে চোখেই পড়েনি প্রহরের।অবশ্য পড়াশোনা ছাড়া অন্য কিছু ভাবার টাইম তার কাছে নেই।
- এই যে মিস্টার কি ভাবছেন?
- জ্বী? কিছুনা।
- রাত অনেক হল এবার শুয়ে পড়েন....
- আপনি যান....আমি শুয়ে পড়ছি।
- আপনি শুয়ে পড়লে আমি লাইট অফ করে বের হব....
- সমস্যা নেই আপনি........
প্রহরের কথা শেষ হল না।মানতাশার চোখের দিকে তাকিয়ে মাঝ পথে কথা থামিয়ে দিল ও।
খুব ভোরে ওঠা অভ্যাস প্রহরের।উঠে নামাজ পড়ে একটু হাটাহাটি করা রুটিনবাঁধা কাজ।গ কয়েকদিন তা হয়নি।আজও হল না।এসবই ভাবছিল জানালার গ্রীল ধরে দাড়িয়ে।সকালটা খুবিই সুন্দর, কিন্তু কাছে থেকে দেখা হচ্ছে না।ঠিক এই সময় বাড়ির সামনের দিক থেকে অনেক চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শোনা গেল।দ্রুত পায়ে বের হল ঘর থেকে প্রহর।দরজা দিয়ে মুখ বের করতেই মানতাশা ছুটে এল, মেয়েটার মাথা প্রহরের থুতুনির সাথে সজোরে আঘাত লাগলো।কিছুক্ষনের জন্য দু জনেই আহত জাইগায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইল।যদিও দোষটা কারো না।তারপরও সরিটা দুজনেই বলল।
- বাইরে এত চিৎকার চেঁচামেচি কিসের?
- সেদিনের ওই ছেলে গুলা।ভাইয়াকে খুজছে!ওখানে আম্মু আছে উনি সামলে নেবে।আপনার বাইরে যেতে হবে না।
- কি বলেন আন্টি ওদের সামলাবে কিভাবে? আমাদের যাওয়া উচিৎ।
- আরে এর আগেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হইছে আমাদের।আম্মুকে ওরা কিছুই বলবে না।তবে গালাগাল করে বেয়াদব গুলা...
- আমাদের যাওয়া উচিৎ।
কথা শেষ করেই পা বাড়াল প্রহর।ওর হাত ধরে আবার বাধা দিল মানতাশা।
- আপনাকে যেতে না করছি.......( খুব রাগ দেখিয়ে বলল )
- কিন্তু ওরা.....
- আহহ.... বুঝতেছেন না কেন, ওরা মারকুটে মেজাজে আছে।ভাইয়াকে মারতে আসছে।আপনি গেলে আপনাকেও মারবে।
কিছুক্ষন পর সব নিরব।কিন্তু বাড়ির ভেতর থমথমে পরিবেশ এখনো।নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছিলো প্রহরের।চলে যাওয়ার জন্য স্থির করল মন।হাতের ব্যান্ডেজ খোলার চেষ্টা করছে একা একা।নাস্তা নিয়ে ঘরে ঢুকল মানতাশা।
- আরে এটা এখন খুলছেন কেন?
- মনে হয় ঠিক হয়ে গেছে।
- ডক্টরের কাছে গিয়ে খোলা উচিৎ।
- প্রবলেম নেই।পারব আমি.......
- হাত সরান আমি দেখছি......
ধীরে ধীরে প্যাচ গুলা খুলতে শুরু করল মানতাশা।নিজের অজান্তেই মেয়েটার দিকে চেয়ে রইল প্রহর।একটা স্নিগ্ধতা আছে মেয়েটার ভেতর। চুল গুলা এক পাশ থেকে মুখের অর্ধেক টা ঢেকে ফেলেছে।চশমার কাচের ওপাশে চোখ দুটো
স্থির হয়ে আছে প্রহরের হাতে...
- ব্যাথা লাগছে?
-....................)
মানতাশার কথা যেন প্রহরের কানেই গেল না।কোথায় ডুবে গেছে নিজেও জানে না সে।কাজ শেষে ওর দিকে চেয়ে পড়ল মানতাশা। অপ্রস্তুত হয়ে বলল বাকি টুকু নিজেই করতে পারবে।
- হয়ে গেছে আপনাকে আর করতে হবে না।
হাতের দিকে তাকিয়ে দেখল আসলেই খোলা হয়ে গেছে।এবার লজ্জায় পড়ে গেল ও।মেয়েটা যেন বুঝতে পেরেই বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।দরজায় গিয়ে আবার বলল.....
- এই যে.....নাস্তা রেখে গেলাম খেয়ে নিবেন কিন্তু।
শেষ কথা গুলো প্রহরের কাছে অন্য রকম মনে হল।না হলে হাসবে কেন? হাসার মত কিছু বলেনি তো।তাহলে?
গল্পটা কি অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে?
যাওয়ার আগে ওদের কাছে বিদায় নেয়ার জন্য গেল প্রহর।মা মেয়ে দুজনেই রান্না ঘরে।
- আন্টি আসব?
- আরে তুমি এখানে আসছ কেন?
- সমস্যা নেই আন্টি। আমার যাওয়া উচিৎ। এখন তো সুস্থ আছি....
- সে কি এখনো পুরো পুরি সুস্থ হওনি।
- অনেক টা ভাল এখন।আর মনে হয় প্রবলেম হবে না।
আন্টির থেকে বিদায় নিলেও নেয়া হল না মানতাশার কাছ থেকে।বেরিয়ে পড়ল প্রহর...
রাস্তায় বের হওয়ার পর পেছন থেকে মানতাশা এসে বলল...
- আমার কাছ থেকে বিদায় নেবেন না?
কথাটা শুনে বুকের ভেতর শিহরিত হল প্রহরের।বুঝতে পারছে না কি বলা উচিৎ তার।
- কথা বলছেন না কেন?
- ভাল থাকবেন?
- ব্যস এটুকুই? আর কিছু বলার নেই?
মাথা নাড়ল প্রহর।ও ভাল করেই জানে কিছু কথা নিজের ভেতর রেখে দেয়াই ভাল।তাতে বেশি ভাল থাকা যায়।
- ঠিক আছে যান.....নিজের খেয়াল রাখবেন।
আবারও মাথা নাড়ল ও...
- মুখ নেই কিছু বলতে পারেন না? মাথা নাড়েন কেন এত?
- আস্তে কথা বলেন লোকজন কি ভাববে?
- যা ইচ্ছা ভাবুক।আপনার মুখ নেই?
কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না প্রহর।আবারও কথা বলল মানতাশা....
- কিছু বলার নেই আপনার?
প্রহর হেটে চলল.....
- প্রহর? আপনালে কিছু জিগেস করেছি?
আর এক বার মাথা নাড়ল ও।
- আপনার ফোন নাম্বার টা দিয়ে যান।
- আমার তো ফোন নেই?
এতক্ষন মানতাশার চোখেমুখে একটা আকুতি ছিল এখন সেটা আক্রোশে পরিনত হল।
- বাড়িতে কথা বলেন কি দিয়ে? ( জোরের সাথেই বলল কথাটা)
- এক বন্ধুর ফোন থেকে।
- সেটাই দিয়ে যান...
- ওরটা তো মুখস্থ না...
মারমুখো হয়ে তেড়ে গেল মানতাশা। সম্ভব হলে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে প্রহর কে।মাঝ পথেই থেমে গেল হঠাৎ। ধীরে ধীরে পিছু নিয়ে চলে যেতে চাইল সে...
- এই যে শোনেন....
একরাশ আগ্রহ নিয়ে সাড়া দিল মানতাশা...
- জি.....
- বলছিলাম যে.....
- আমতা আমতা করছেন কেন? বলেন না?
- সত্যি বলতে একটা লজ্জা করছে।
- প্রহর প্লিজ.... বলেন!
- আপনার কাছে পঞ্চাশ টাকা ধার হবে? মেসে যাওয়ার খরচ নেই।
মুখটা যেন আধারে ঢেকে গেল মানতাশার।খুব নরম স্বরে বলল একটু দাড়ান।বলেই বাড়ির ভেতরে চলে গেল সে।দু মিনিটে ফিরে এল...
- এই নিন....
- থ্যাংক ইউ....আবার দিয়ে দিব টাকাটা।
- আর কিছু বলবেন?
- গত কয়েকদিনে আপনারা আমার জন্য যা করেছেন তা কখনো ভুলব না।
- উহ... আর কিছু বলবেন?
- আপনি রাগছেন কেন?
- আপনার কথা বন্ধ করেন না হলে মেজাজ আরও খারাপ হবে।
- ঠিক আছে চলি, ভাল থাকবেন।
- এই শুনেন......... আপনার আর কিছু বলার নেই?
- এই না বললেন মুখ বন্ধ করতে?
- ফালতু কথা বাদ দিয়ে অন্য কিছু বলতে পারেন না?
- আচ্ছা... আমি আপনাকে....
- আমাকে? আমাকে কি?
- মাঝ খানে কথা বললে শেষ করব কি করে?
- আপনাকে তুমি বলতে পারি?
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল মানতাশা। লাইফে এই প্রথম এতটা ধৈর্য নিয়ে কারো সাথে কথা বলছে মেয়েটা। ছটফটে একটা মেয়ে ও।একটা কথা শোনার জন্যই এতটা অপেক্ষা।
- কি হল কি ভাবছেন?
- আপনার আর কিছু বলার না থাকলে আসতে পারেন।
( অনেকটা ত্যাগের সাথে বলে ফেলল কথাটা ) আপনিও ভাল থাকবেন,চলি........
- আই লাভ ইউ.......
হঠাৎ করেই বলে ফেলল প্রহর কথাটা।নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না মানতাশা।
- হ্যা?
- ভালবাসি আপনাকে...
কিছুক্ষনের জন্য বাকশক্তি হারিয়ে ফেলল ও।চোখেমুখে একটা আনন্দের ধারা ফুটে উঠেছে।হঠাৎ করেই প্রহরের টি শার্টএর কলার খামচে ধরল মানতাশা....
- এত ঢং করা লাগল কেন এই টুকু বলতে?
- আরে আমার বুঝতে হবে না, আপনি ও আমাকে ভালবাসেন?
তারপর না হয় বলব।
- তা কি করে বুঝলেন আপনাকে ভালবাসি?
- আপনার চোখ বলছে।
- ঢং.....
- আমি কিন্তু উত্তর পাইনি।?
- বুঝে নিয়েছেন না? আর কি?
- তবুও শুনতে চাই....
- প্রথম দুটো দিন মরার মত পড়ে ছিলেন। আপনার সেবা যত্ন কে করেছে? এই আমি করেছি।প্রথমে খুব মায়া লাগছিল।তারপর যখন বুঝলাম এটা তার থেকে বেশি।তখনই আপনাকে........
- আমাকে??
- আর বলতে পারব না.......( এতক্ষনের রাগ,জেদ,অভিমান,আক্রোশ সব কিছু লজ্জায় পরিনত হল।)
- এখন কি তুমি বলতে পারি?
- শালা এত ঢং কই থাকে?
- বলেন না? তুমি বলব?
- আর একবার আপনি বললে ঘুসি মেরে নাক ফাটাবো দেখবা.....
- ভুলেওওও বলব না.....
:
:
:
:
লেখা ; Parvej Imran Prohor
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ