গল্প- "পুতুল কন্যা"
(Polok Hossain)
.
Part-3
.
বিয়ের দুই দিন গড়িয়ে আজ তৃতীয় দিন।এই পর্যন্ত প্রবন্ধ নিজে ওর সাথে কথা বলা ছাড়া মেয়েটি মুখে এক ফোটা আওয়াজও বের করে নি।প্রবন্ধ পাশে বসলে কিংবা সামনে শুয়ে থাকলে উপমা শাড়ির ভেতরে নিজেকে লুকিয়ে রাখে।যেন ওর আপন কেউ নয় প্রবন্ধ।
.
আজ সকালে উপমা উঠে পরলো প্রবন্ধর আগেই।নিজের কাপড়চোপড়গুলো এখনো সুটিকেসে রেখে দিয়েছে।আলমারিতে প্রবন্ধর কাপড়গুলোর সাথে নিজের কাপড়গুলো রাখতে কেমন যেন জড়তা কাজ করে।প্রবন্ধ ঘুম থেকে উঠে লক্ষ্য করলো উপমা পাশে নেই।আজ সকালেই উঠে গেছে কিন্তু উঠে কোথায় গেল বোকা মেয়েটা।কারো সাথে গিয়ে আড্ডা জুড়ে দেওয়ার মতো মেয়ে তো ও নয়।তাহলে গেল কোথায়। প্রবন্ধ ওকে ওয়াশরুমে না পেয়ে বারান্দায় গিয়ে দেখলো উপমা বারান্দায় দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে।কিন্তু কি দেখছে এতো এমন অবাক হয়ে!প্রবন্ধ বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখলো উপমা স্কুলের দিকে তাকিয়ে আছে।চার তলার এই বারান্দা দিয়ে পাশের গার্লস হাই স্কুলের বড় উঠোন টা সহজেই চোখে পরে।ছুটির সময় ও টিফিন পিরিয়ডের সময় সব মেয়েরা মাঠে জোরো হয়ে ছুটোছুটি করে।উপমা স্কুল মাঠের দিকে তাকিয়ে আছে।জাতীয় সংগীতের ধ্বনি তুলে মেয়েগুলো স্কুল মাঠে সাড়ি সাড়ি হয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাইছে।উপমা ওইদিকটাইর দিকেই তাকিয়ে আছে।
প্রবন্ধ বুঝেও ইচ্ছে করেই জিজ্ঞেস করলো -
-কি দেখছো!
হঠাৎ প্রবন্ধর কথা শুনে উপমা চমকে গিয়ে তাকালো প্রবন্ধর দিকে।প্রবন্ধ বলল-
-স্কুল দেখছিলে!
উপমা নিচের দিকে তাকিয়ে ধীর স্বরে বলল-
-হুম।
-পড়তে ইচ্ছে হয়?
উপমা জবাব দিলো না শুধু একটু তাকালো প্রবন্ধর দিকে।
উপমা লজ্জায় কিছু মুখ ফুটে বলতে পারে না।প্রবন্ধ উপমার মনের এই জড়তা ভাবটা ভালো ভাবেই জানে।প্রবন্ধ বলল-
-ঠিকাছে। বোলো না।বাহিরে কুয়াশা আর বারান্দা দিয়েও অনেক ঠান্ডা আসছে। তুমি রুমের ভেতরে বসো গিয়ে।আমরা এক সাথেই নাস্তা করতে যাবো।
মেয়েটা তা-ই করলো।প্রবন্ধর কথা মতো উপমা বারান্দা থেকে রুমে চলে গেল।
প্রবন্ধর ছোট দুই বোন তানহা মানহাও আজ সকালে স্কুলে গিয়েছে।উপমা সকালে ওদেরকে স্কুল যেতে দেখেছিল।স্কুল ড্রেসে দেখা মাত্রই নিজের স্কুলের কথা মনে পরে গিয়েছিল ওর।স্কুল ড্রেসে প্রতিদিন সকালে এইভাবেই স্কুলে যাওয়া হতো ওর।একদিনও স্কুল বন্ধ দেয় নি।বান্ধুবীদের সাথে কথা বলা কিংবা খেলা করার অাকর্ষনে প্রতিদিন স্কুল যাওয়া হতো ওর।আজ ওই বান্ধুবীরা ওর থেকে কতোটা দূর ভাবতেও ভয় হয় ওর।কেননা শত কথা হলেও সে এখন শ্বশুর বাড়ি।সবাইকে ছেড়ে একাকীত্ব থাকাতে কেমন একটা ভয় কাজ করে ওর ভেতর।
.
.
দুপুরের খাবারটা আজ না হয় নতুন বউ-ই বানিয়ে খাওয়াবে।মেয়েটা কি কি রান্না করতে পারে তাও তো কারো জানা নেই।ছন্দা তাই প্রবন্ধর রুমেই যাচ্ছিল উপমাকে ডেকে আনতে।রুমে এসে দেখলো উপমা খাটে বসে ঘোমটা জড়িয়ে চুপচাপ বসে আছে।
ছন্দা ওকে রুমের বাহিরে থেকেই ইশারা করে তার সামনে আসতে বলল।উপমা ছান্দার ইশারা বুঝে তার সামনে গেল।ছন্দা বলল-
-রান্নাঘরে চলো।তোমাকে রান্নাঘরটা দেখিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে দেই।
ছন্দার পিছু পিছু উপমা রান্নাঘরে গেল।বড় রান্নাঘরটা ওর কাছে পছন্দ হলো।ছন্দা বলল-
-রান্না করতে পারো?
উপমা মাথা নেড়ে বোঝালো যে সে রান্না জানে।
ছন্দা বলল-
-কি কি রান্না করতে পারো?
উপমা মিহি স্বরে বলল-
-ভাত,ডাল,আলুর ভর্তা,ডিম ভুনা,ডিম ভাজি,আলুর দম,শাক..
যা সে বানাতে পারে ওইগুলোর নামই মনে করে বলে যাচ্ছে।
ছন্দা ওর কথা থামিয়ে বলল-
-হুম।বুঝেছি। বুঝেছি।
উপমা সাথে সাথে চুপ হয়ে গেল।
ছন্দা বলল-
-খিচুড়ি বানাতে পারো?
উপমা মাথা নাড়ালো।সে পারে।
-তবে আজ খিচুড়ি বানাও।আমি তোমাকে পরিমাণ বলে দিচ্ছি।
পরিমাণ প্রস্তুত হয়ে নেওয়ার পর চুলোর সামনে গিয়ে ম্যাচ হাতে নিয়ে উপমা দাঁড়িয়ে রইলো। ছন্দা ওকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল-
-কি ব্যাপার?দাঁড়িয়ে আছো যে!কোনো অসুবিধে হচ্ছে তোমার?
-আমি গ্যাসের চুলা জ্বালাতে পারি না।
ঠিকই তো।গ্রামে মাটির চুলোয় রান্না করার অভ্যাস যার আছে তার গ্যাসের চুলো ধরানোতে হিমশিম খাওয়াটাই স্বাভাবিক।
ছন্দা ওকে চুলোটা জ্বালিয়ে দিলো। উপমা সেইভাবেই রাঁধতে লাগলো যেইভাবে মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি রান্না করতো।কিন্তু সবার স্বাদ তো আর এক না।যদি খিচুড়িটা কারো মন মতো না হলো তবে কি ওকে সবাই বকবে!! মনে মনে ভয় হচ্ছে।
.
রান্না সেড়ে উপমা ওর রুমে গিয়ে বসলো।প্রবন্ধ রুমে শুয়ে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটছে।
প্রবন্ধর একটা জিনিসই কেবল মাথা হেলছিল মেয়েটা কি স্কুলে পড়তে চায়!মেয়েটা এমনিতেও পড়ালেখার দিক দিয়ে বেশী দূর এগুতে পারে নি।বর্তমানের সাথে অনেকটা পিছিয়ে।যদি ওকে পড়াশোনা চালিয়ে বি,এ পাশ করানো যায় মেয়েটা হয়তো একটু চালাক চতুর হতে শিখবে।
.
অন্তত স্বামীর সাথে লজ্জা কাটিয়ে কথা বলতে কোনো বউয়েরই জড়তা থাকে না।কিন্তু প্রবন্ধর বেলায় হচ্ছে উল্টো।প্রবন্ধ এখনও উপমার লজ্জা কাটিয়ে কথা বলাতে পারার জন্য সক্ষম হয় নি।কিন্তু মেয়েটার ভালো মন্দ এখন তার বর খেয়াল না রাখলে কে-ই বা রাখবে!
উপমাকে দেখে প্রবন্ধ বলল-
-আমার সামনে বসো।
উপমা প্রবন্ধর থেকে একটু দুরত্ব বজায় রেখে বসলো।
প্রবন্ধ বলল-
-কেন এতো দূরে গিয়ে বসছো!
মেয়েটি এখন সামান্য ইঞ্চি সামনে এসে বসলো।
প্রবন্ধ বলল-
-আমাকে লজ্জা করার কিছুই নেই।প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে তুমি আমার সাথেই তো কথা বলবে।আমার সামনে তোমার এতো বড় ঘোমটা দিয়ে বসে থাকারও কোনো প্রয়োজন নেই।
উপমা শুনে গেল।কিন্তু বললা না কিছু।কথাগুলো শুনেছে ঠিকই।কিন্তু ওর এই কথাগুলোতে কতোটুকু প্রভাব ফেলবে তা-ই ভাববার বিষয়।
প্রবন্ধ বলল-
-আমাদের বাড়িটা একবার ঘুরে দেখেছো! বাহিরে বাগান আর ছাদের উপরে ফুলের সমারোহ দেখে তোমার স্বর্ণ মনে হবে।এসো আমার সাথে।চারিদিক টা ঘুরে দেখবে।
প্রবন্ধর পিছু পিছু উপমা এগুতে লাগলো।প্রবন্ধ ওকে প্রথমে বাগানের দিকটায় নিয়ে গেল।কিন্তু এই বাগানটা দেখেই উপমার ওর গ্রামের বাড়ির কথা মনে পরে গেল।কেননা গ্রামে পাড়ার মেয়েরা সবাই মিলে এমনি একটা ফুলবাড়িরতে গিয়ে সবাই লুকিয়ে লুকিয়ে ফুল কুড়িয়ে আনতো আর মালা গেথে গলায় কানে পরে থাকতো।ফুল উপমার খুব পছন্দের।প্রবন্ধ বাড়ির সব কোণায় কোণায় উপমাকে চিনিয়ে নিলো।
.
.
বিকেলে মেয়েটাকে নিয়ে বাহিরে ঘুরিয়ে আনা যাক।নতুন জায়গার নতুন পরিবেশ দেখলে হয়তো ওর ভালো লাগবে।মেয়েটিকে রেডি হতে বলাতে মেয়েটি কেবল শাড়িটাই বদলেছে।প্রবন্ধ দেখলো মেয়েটি খুব সাধারণভাবে তৈরি হয়ে নিয়েছে।চুলে শুধু একটা খোপা বেধেছে।ওর এই সিম্পল রুপটাও অবশ্য দারুন।
অন্য কেউ হলে তো সাজের মেলা নিয়ে থাকতো। মেয়েটি সাজগোজের এক অংশও জানে না।এই যুগের মেয়ে বলতে উপমাই হয়তো একমাত্র মেয়ে যে কি না সাজগোজের কিছুই জানে না।তবুও মেকআপ ছাড়া কাজল আর লিপস্টিকের ব্যবহার তো সবাই-ই জানে।
প্রবন্ধ ওকে দেখে বলল-
-চোখে কাজল নেই কেনো!লিপস্টিক হাল্কা করেই না হয় ঠোটে লাগাতে...
মেয়েটি নিচের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো-
-নাই
-একি...কিছুই নেই?
এই মেয়ে তো সব দিক দিয়েই পেছনে। প্রবন্ধ বলল-
- চলো আজ ঘুরতে না গিয়ে তোমাকে মার্কেট নিয়ে যাবো।তুমি তোমার প্রয়োজন মতো সব জিনিস নিবে।
মেয়েটি মাথা নাড়ালো আর বোঝালো যে সে যাবে।
চলবে...
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧝ āĻāĻāϏ্āĻ, ⧍ā§Ļā§§ā§
682{3}
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§:ā§Ē⧍ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ