āĻļāύিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āφāĻ—āϏ্āϟ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

673

গল্প: লাল সবুজ

বিভ্রান্ত বাউণ্ডুলে।

দ্রুতযান এক্সপ্রেস।
জয়দেবপুর রেলস্টনের ট্রেনের মধ্যে একরাশ বিরক্তি নিয়ে বসে আছি। অপেক্ষা! না কোন ব্যক্তিবিশেষের জন্য নয়। ক্রসিং। পরের স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে না এলে আমাদের ট্রেন এ স্টেশন ছেড়ে যাবে না।

মুখোমুখি সিটে বসে আছে এক তরুণী। সংকোচে তাকাতে পারছি না সামনে। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। প্লাটফর্মে চার পাঁচজন পথশিশু পায়চারী করছে। আমি ওদের দিকে তাকাতেই ওরা এগিয়ে এলো কাছে।
-খিদা লাগছে।কয়ডা টেহা দেন।
কাছেই একজন আমড়া বিক্রি করছিলেন। বললাম তোমাদের সবাইকে আমড়া খাওয়াবো কিন্তু আমাকে গান শোনাতে হবে। ওরা লজ্জা পেয়ে হাসতে হাসতে একে অপরের ওপর গড়িয়ে পড়ছিলো। শেষে ওরা গান শুরু করলো, ও পিয়া ও পিয়া তুমি কোতায়?
ওদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, পিয়া কি?
ওরা আবার শুরু করলো হাসাহাসি। লজ্জায় একেকটা যেন কৃষ্ণচূড়া! 
-এহন আমগো আমড়া কিইনা দেন?
আমি ওদেরকে আমড়া কিনে দিলাম।

আমার মুখোমুখি বসা সেই তরুণী এতক্ষণে ওদের জন্য আরো একটা প্রস্তাব রাখলো। শোনো তোমরা আমার সাথে সাথে একটা কবিতা বলবা, তবে তোমাদের সকলকে গিফট দিব। দুষ্ট ছেলের দল তো মহাখুশি!

সেই তরুণী কবিতা আওড়াচ্ছে, বলো, বলো

ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়ি কই?

ওরা কবিতা কি বলবে আর! হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। মেয়েটি ধমক দিলো,বলো কিন্তু! নাহলে পাবে না।
দুষ্ট ছেলের দল বিপদে পড়লো এবার। এক দু বার কষ্ট করে তাল মেলাতে চাইলো বটে কিন্তু মুহূর্তেই আবার খিল খিল করে হাসি।
কি নির্মল!কি পবিত্র এই হাসি!
আমি মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকি!

মেয়েটি ওদের সবাইকে একটি করে কলম দিলো।
ওরা বলল, কলম দিয়া কি করমু? আমড়া কিইনা দেন। অগত্যা মেয়েটিকে কলমের সাথে একটি করে আমড়াও কিনে দিতে হলো।

ট্রেন চলতে শুরু করলো।
আমরা যেন কয়েক মুহূর্তের জন্য ওদের মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম। মেয়েটি বলল,
-জানেন তো ওদের জন্য মায়া হয় খুব। আমাদের ছোটো এই দেশ কিন্তু জনগোষ্ঠী এত বেশি! বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির  উন্নতি না হলে আমাদের দেশে ক্ষুধা দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়।

আমি বললাম,
- সেই সাথে কলার উন্নয়নও অত্যাবশ্যক।
-কি রকম?
- বিজ্ঞান পারমানবিক বোমা তৈরি করছে। কলা বলবে, ওসব বোমার দরকার নেই। তোমরা বরং এমন এক পাউডার আবিষ্কার করো যা ছিটিয়ে দিলে  আমাদের দু পাশে এই যে নর্দমা আছে, যা থেকে দুর্গন্ধ আসছে তা নিমিষেই স্বচ্ছ জলে পরিণত হবে। বিজ্ঞান  নিত্য নতুন অস্ত্রশস্ত্র তৈরীর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কলা বলবে ভিন্ন মতের মানুষগুলো যদি পাশাপাশি সহাবস্থান করতে পারে তবে এসব অস্ত্রের ঝনঝনানি প্রয়োজন নেই পৃথিবীতে। সামরিক খাতে আমাদের এত ব্যয়  কি জন্য? কাকে ধ্বংস করতে? বরং এই টাকাটা এদের জন্য ব্যয় করা উচিত যারা প্রতিদিন এই পৃথিবীতে না খেয়ে থাকছে, অপুষ্টিতে, অনাহারে ধুকে ধুকে মরে যাচ্ছে। এক কথায় কলা বিজ্ঞানকে পথ দেখাবে, মানবিক করে তুলবে।

-বাহ! এভাবে ভেবে দেখিনি তো।

আমি আর কিছু না বলে মোবাইলে এয়ার ফোন লাগিয়ে  কানে ঢুকালাম। রবীন্দ্র সংগীত বাজছিলো। মেয়েটি কিছুক্ষণ বাদে জিজ্ঞেস করলো,
-কি গান শুনছেন?
-বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি...
-চিমটি!
-কেন?
-এটা আমারও পছন্দের খুব তাই।
-কোথায় চিমটি?
-আপনার হাতের উল্টোদিকে।
-আস্তে দিবেন প্লিজ।
-হাহাহ! আস্তে কি কেউ দেয় নাকি?
-তবে?
-জোরে
-জোরে দিলে কেমন লাগে?
-সন্দেশের মতন।
-সন্দেশ আমার খুব পছন্দের কিন্তু। একটাতে মন ভরে না আবার।
-যা! কি পাজি আপনি!
-কেন?
-আমাকে লজ্জায় ফেলছেন কথার প্যাঁচে।
-আমি আবার  বেশরম ছেলে কিনা তাই!
-হাহাহ। তা বেশরম ছেলে কি করে?
-ট্রেনে ভ্রমণ করে।
-জানি তো। এর বাইরে?
-বাউণ্ডুলে! মাঝে মাঝে গল্প লিখে।
-মিথ্যাও বলে।
-যেমন?
-আপনি মোটেও বেশরম নন। প্রথম প্রথম আমার দিকে তাকাতে রীতিমতো সংকোচ করছিলেন।
-এত সূক্ষ্ণ দৃষ্টি! পুলিশ না আইনজীবী?
- আরকিওলজি তে অনার্স করছি। তবে এটা বোঝার জন্য ওসব লাগে না। মেয়েরা এমনিতেই বুঝতে পারে।
-মনের কথাও?
- আবার?
- আচ্ছা! ছেড়ে দিলাম।
-আপনার পড়াশোনা?
-নেই বললেই চলে, যৎসামান্য।
-বুঝেছি।
-কি?
-মানুষকে কনফিউজড করে বেড়ান আপনি। এতেই আনন্দ আপনার।
- মন্দ কি? রেশ থেকে যাবে পরে।
-এমনিতেও মনে থাকবে আজকের দিনটা।
-তাই বুঝি?
-জি।
-মনে হচ্ছে আজকের ট্রেনটা খুব দ্রুত চলছে।তা কোথায় যাবেন আপনি?
-টাংগাইল।
এবার আমি বললাম, চিমটি!

২.

২৬ শে মার্চ, ২০১৬।
আমার নিজের গড়া পাঠশালার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। মাঠে লাল সবুজ পতাকা হাতে ছোট ছোট বাচ্চাগুলো দৌড়াদৌড়ি করছে এদিক ওদিক। আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এলিজা। লাল ব্লাউজের সাথে আজ সবুজ শাড়ি ম্যাচ করে পরেছে এলিজা।

বললাম,
-লাল সবুজ কিসের প্রতীক জানেন?

-কিসের?

-সবুজ হচ্ছে তারুণ্যের উদ্দীপনা এবং গ্রাম বাংলার বিস্তৃত চির সবুজ পরিবেশের প্রতীক আর লাল হচ্ছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে আনা লাল সূর্যের প্রতীক।

-আপনার সাথে আমার প্রথম দেখা প্রায় এক মাস আগে ট্রেনে, টাংগাইল আসার পথে। আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল হয়ে গেলে ছুটি পেলাম এক মাসের জন্য। সেই ছুটি কাটাতে এলাম টাংগাইল, বড় আপুর বাসায়। ভাবিনি কখনো  টাংগাইল এসে আপনার মত একজনের সাথে এভাবে পরিচয় হয়ে যাবে, এত কিছু জানা হবে।

-হাহাহ। কত কি জানলেন?

-অনেক কিছু। কিন্তু দুঃখ কি জানেন?  এত কিছু জানালেন শুধু নিজের সম্পর্কেই তেমন কিছু বললেন না।

- আমার সব কথা বলে দিলে তখন আমি দেউলিয়া হয়ে যাব, আমার নিজের মধ্যে অবশিষ্ট থাকবে না কিছুই। তখন আমার  প্রতি আর আগ্রহ থাকবে না আপনার। সব কথা বলে দিতে নেই কখনোই,কাউকেই।

-কিন্তু কিছুই বললেন না আপনি!

-বলেছি তো। এই যে পৈতৃক সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে যা পেয়েছিলাম তাই বিক্রি করে এই পাঠশালা গড়ে তুললাম। অল্প কিছু বাচ্চা পড়ে এখানে, কেউ প্রতিবন্ধী, কেউ পিতামাতাহীন এতিম। ওদের চোখ দিয়েই স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্ন নিয়েই রোজ বেঁচে থাকি। ইচ্ছে হলেই হারিয়ে যাই, যেদিকে চোখ যায়....!

-ক্ষমা করবেন। প্রথম যেদিন আপনার সাথে দেখা হলো সেদিনই আপনার সম্পর্কে জানার জন্য মনের মধ্যে  কৌতূহল জন্ম নিয়েছিলো। তারপর যখন জানলাম এই শহরেই আপনি থাকেন, প্রায়ই ছুটে আসতাম এখানে- এই স্কুলে।আপনার স্কুলের বাচ্চাদেরকেও ভালবেসে ফেললাম।কত কি নিয়ে আলোচনা হত আমাদের। এত আলোচনার পরও আমার মন ভরত না। উন্মুখ হয়ে থাকতাম আপনার সম্পর্কে কিছু শোনার জন্য। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে কিছুই বলতেন না আপনি।  আমার ছুটি  প্রায় শেষ। চলে যেতে হবে শ্রীঘ্রই। কিছু জিজ্ঞেস করে বিব্রত করব না তবু নিজের কৌতূহল নিবৃত্তির জন্য শুধু এতটুকু জানতে চাইব , জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ান কেন?  কাউকে ভালোবেসেছিলেন বুঝি খুব বেশি?

-এমন একজনও কি আমাকে দেখাতে পারবেন যার হৃদয়ে অপূর্ণতা নেই, যার মনে শূন্যতা নেই? পারবেন না।কিন্তু তাই বলে কি সবাই জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ায়? না। আপনি যাকে পালিয়ে বেড়ানো বলছেন সেটাই হয়তো আমার জীবন। এক ট্রেনের যাত্রী, কিন্তু সকলের গন্তব্যই কি এক স্টেশন?

-মানে?

-মানেটা খুব সহজ। সকলেই জীবনকে এক ভাবে দেখে না। কাউকে কখনো ভালবাসি বলেছেন?

-মানে!

-মানুষ যখন তার প্রিয়জনকে ভালবাসি বলে তখন প্রিয়জনের প্রতি অলিখিত কিছু দায়বদ্ধতা আপনা-আপনি এসে যায়।কিন্তু আমরা  আমাদের জীবনে সবচেয়ে বেশি বার ভালবাসি বলেছি কাকে? জানেন?

-কাকে?

-আমাদের দেশকে। স্কুলে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আমাদের এ দেশকে ভালবাসি বলা শুরু, তারপর অজস্রবার। কিন্তু এই দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা কি? কত সহজেই ভালবাসি বলে দেই আমরা, কিন্তু এই শব্দটার ব্যাপকতা, গভীরতা তলিয়ে দেখেছি কোনোদিন?
ওই যে দেখুন? সাত বছরের এক বাচ্চা! ওর  নিষ্পাপ চোখে জ্বল জ্বল করছে ওর হাতের লাল সবুজ পতাকা। ওটা শুধু পতাকা নয়, ওটা স্বপ্ন, ওটার নাম সম্ভাবনা। এই পতাকা তলে ও চায় একটি সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা। কখনো ভেবে দেখেছেন? ওরও কিছু চাওয়ার আছে, দাবী আছে; আপনার কাছে, আমার কাছে, এই রাষ্ট্রের কাছে। প্রিয়জনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি কিন্তু যে অলিখিত প্রতিশ্রুতিতে আমরা বাঁধা পড়ে আছি তা এড়িয়ে যাই কি করে?

আপনি যাকে জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ানো বলছেন, ওটা আমার কাছে স্বপ্ন ছড়ানো। এমন করে স্বপ্ন ছড়িয়ে যেতে চাই পথে পথে, সমস্ত পৃথিবীজুড়ে। এই স্বপ্ন চারাগাছ থেকে যেদিন মহীরুহে পরিণত হবে, সেদিনই পৃথিবী হবে নৈসর্গিক।

-আপনি চমৎকার কথা বলেন, গুছিয়ে। কিন্তু এই স্বপ্ন ছড়াতে বুঝি এমন অগোছালো জীবন বেছে নেয়া বাঞ্ছনীয়? নিজেকে গুছিয়ে নিয়েও তো এসব করা যায়!  যায় না বুঝি?

-হাহাহ।গোছানো বলতে তো সংসার বিয়ে এসবই বলতে চাচ্ছেন?

-তবে আর কি?

-কে জানে! আমি আগের জন্মে ভবঘুরে ছিলাম কিনা! পরের জন্মেও আমি ভবঘুরে হবো। শতজন্মেও আমি ভবঘুরেই থাকবো। আর ভবঘুরেদের চলার পথে বন্ধু জুটে গেলেও, বন্ধন কখনো নয়।

-আর এই যে একটা মেয়ে প্রায় এক মাস ধরে আপনার মোহে আটকে আছে, আপনাতে মজে আছে!তাকে কিছুই বলার নেই বুঝি?

-মানে?

-আমারও তো এমন একটা স্বপ্ন থাকতেই পারে, আমি কারো বোষ্টুমি হবো! আমার একজন ভবঘুরে বাউল থাকবে। বাউণ্ডুলে টাইপের বাউল। সে আমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে দেশ দেশান্তর। বলুন, থাকতে পারে না এমন স্বপ্ন?

-হাহাহ। কিন্তু আপনার মতন এত সুন্দর বোষ্টুমী নিয়ে পথেঘাটে ঘুরে বেড়ানো ভীষণ বিপদ। আমাকে ক্ষমা করবেন।

আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম,এলিজার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো মুহূর্তেই! হঠাৎ আকাশও যেন কান্না শুরু করে দিলো। বৃষ্টি! এ বৃষ্টি আর থামতেই চায় না।
সেই বৃষ্টিস্নাত বিকেলে এলিজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে আমার নিজেরও কষ্ট হচ্ছিল।

বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে  চলে আসব সেখান থেকে।এলিজা আমাকে অনুসরণ করতে চাইলে বললাম, আসবেন না প্লিজ। মেয়েরা রাস্তাঘাটে বৃষ্টিতে  ভিজলে দেখতে বিশ্রী লাগে। মানুষজন বদনজরে তাকাবে। এলিজা  ঠায়  দাঁড়িয়ে রইলো! আমি কিছুটা পথ এগিয়ে এসে আকাশের দিকে তাকালাম!

জীবনটা আকাশের মত বিশাল। সেই বিশালতায় ছোটো খাটো প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি, জীবনের তুচ্ছাতিতুচ্ছ বেদনা কতই না তুচ্ছ! আর সেই তুচ্ছাতিতুচ্ছ বেদনা ভুলে বাউণ্ডুলেরা আকাশের বিশালতায় ঠাঁই খুঁজে নেয়; এদের কোন বন্ধন নেই, এদের কোন পিছুটান নেই।

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ