মেয়েটা যখন আমার হাত ধরে বললো, ‘কাজি
অফিসে চলো।' তখন আমি পরে গেলাম বিশাল
ঝামেলায়। নায়ারণগঞ্জ শহরে আমি খুব বেশি যাইনি।
সব মিলিয়ে চার-পাঁচবার হবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই
তেমন কিছু চিনি না। এখন না পারি হাত ছাড়িয়ে নিতে, না
পারি বলতে- আমি আসলে মুহিন নই। আশেপাশে
আরেকবার তাকালাম। কিন্তু কে কোথায়! এত
মানুষের ভিড়ে তাদের কাউকেই দেখতে পাচ্ছি না।
যেন অজানা-অচেনা কোন এক শহরে এক
রাজকন্যাকে পথ হারিয়েছি। এখন যদি রাজকন্যাকে এ
কথা বলি- আমি তোমার রাজপুত্র নই, ভিখারিপুত্র।
তাহলে ভেবে বসতে পারে বিয়ের কথা শুনে ভয়
পেয়ে পালাতে চাচ্ছি।
ফ্ল্যাশব্যাক
আধ ঘন্টা আগে !
টের পাচ্ছিলাম একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে
গাড়িতে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে। গাড়িতে সব
মিলিয়ে মানুষ পাঁচজন। আমার ঠিক বাম পাশে বসে থাকা
মানুষটি ছাড়া আর কাউকেই ভালোভাবে চিনি না। ঘন্টা
খানেক হয়েছে পরিচয় হয়েছে বাকি সবার সাথে।
পাশে বসে থাকা মানুষটি আমার এক কাজিন। আর বাকি
সবাই কাজিনের এলাকার ফ্রেন্ড !
গাড়ি ড্রাইভ করছে রনি। তার পাশে আছে মঈন।
পেছনের সিটে তানিম, আমার কাজিন এবং আমি।
আমাকে কেউ কিছুই বলেনি। তাদের টুকরো
টুকরো কথায় মনে হলো- রনি, মঈন আর তানিম এক
মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলতো। আজ তারা
সেই মেয়েটির সাথে দেখা করতে যাচ্ছে।
গাড়ি ছুটে চলছে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া
মোড়ের দিকে। সেখানে জিয়া হলের সামনে
মেয়োটির অপেক্ষা করার কথা।
রনি-মঈন আর তানিম যেতে যেতে ঠিক করে
ফেললো মেয়েটার সাথে প্রথমেই তারা দেখা
করবে না। তারা আশেপাশে থাকবে আর দেখা
করতে যেতে হবে আমাকে। তাদের এই
প্রস্তাবে আমি খুব একটা সাড়া দিতে পারছিলাম না।
এমনিতেই নারায়াণগঞ্জ শহরে আমি আগন্তুক ।
অচেনা পরিবেশে অজানা মানুষ।
চাষাঢ়া পৌছে গাড়ি রাখা হলো জিয়া হল থেকে খানিকটা
সামনে। মেয়েটি তখনো আসেনি। খেয়াল
করলাম, মেয়েটির ব্যাপারে মঈনের আগ্রহ একটু
বেশি বেশি। বোঝা গেল মেয়েটার সাথে
ভালোলাগা বা ভালোবাসার যা কিছু তা মঈনের সাথেই।
রনি আর তনিম এখানে সাপোর্টার হিসেবে কাজ
করেছে। কিন্তু তিনজনই মেয়েটার সাথে
ছদ্মনামে কথা বলেছে।
মেয়েটার কাছে মঈনের নাম মুহিন। আর এই মুহিন
চরিত্রে অভিনয় করার জন্যই আমাকে বার বার
অনুরোধ করা হচ্ছিল। মুহিন ক্যারেক্টারটাকে
আরো জোড়ালো করার জন্য আমাকে
সেলফোনে মেয়েটিরর ছবি দেখিয়ে নানান
বিষয়ে ব্রিফ করা শুরু হয়ে গেল।
চাষাঢ়া মোড়ে পৌছে দেখি বৃক্ষমেলা চলছে। এই
বৃক্ষমেলার গেটের কাছাকাছি কোথাও মেয়েটির
থাকার কথা। আমরা গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষা
করছি। একটু পর মঈনের ফোন বাজতেই সে
আমাকে সামনের এগিয়ে যেতে ইঙ্গিত করলো।
রনি চট করে আমার হাতে দুটো সেলফোন
ধরিয়ে দিল।
আমি হাটতে হাটতে বৃক্ষমেলার গেটের সামনে
আসতেই দেখি আমি একা হয়ে গেছি। আশেপাশে
তাকিয়ে তনিম-রনি আমার কাজিন কাউকেই খুঁজে পাওয়া
যাচ্ছে না। মঈনতো পুরোপুরি উধাও। গেটের
কাছাকাছি আসতেই দেখি ছবির সেই মেয়েটা এক
স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমি যাবো?
কি যাবো না- মহা টেনশনে পরে গেলাম।
আবার একবার চারপাশে তাকালাম, যদি কাউকে দেখা
যায়। শুনেছি ডুবন্ত মানুষের কাছে নাকি খড়কুটোও
ভাসতে দেখা যায় কিন্তু আমি একটা ঘাসও খুঁজে
পেলাম না।
এগিয়ে গেলাম মেয়েটার দিকে। মেয়েটা
এতক্ষণ অন্যদিকে তাকিয়ে ছিল। আমাকে আসতে
দেখে ফিরে তাকালো।
আমি তার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি
পাপিয়া? ঠিক তখনই আমি কিভাবে যেন আমার
ক্যারেক্টারের নাম ভুলে গেলাম। ভাগ্যিস
মেয়েটির নাম ভুলে যাইনি।
কিন্তু এখন মেয়েটা যদি আমার নাম জিজ্ঞাস করে
তাহলে কী বলবো- মারাত্মক এক ঝামেলায় পরে
গেলাম।
মেয়েটা কেমন একটু অন্যমনষ্ক ভঙ্গিতে
বললো, ‘হ্যাঁ, তুমি মুহিন?’
আমি যেন আমার অর্ধেক আমাকে হারিয়ে
ফেলেছিলাম। নামটা শুনে খানিকটা কনফিডেন্স ফিরে
পেলাম।
আমি হেসে বললাম, ‘কেমন আছেন?’
পাপিয়া বললো, ‘ভালো। কিন্তু তোমার ভয়েস
এরকম কেন?’
‘কী রকম? বিড়ালের মতো মিঁয়াও নাকি ইঁদুরের
মতো কিচকিচ?’
‘তোমার ভয়েসতো ফোনে আরেক রকম
লাগতো।’
‘ফোনে কথা ভেসে আসে সেই নেটওয়ার্কিং
টাওয়ার আর ফোনের স্পিকারের মধ্য দিয়ে। আর
এখন তুমি শুনতে পাচ্ছো লাইভ। ডিফরেন্টতো
লাগতেই পারে।’
‘না, না তারপরেও তোমার কথা অন্যরকম।’
আমি মুখটা কালো করে বললাম, ‘না আসলে বুঝতে
পারছি আমাকে তোমার ভালো লাগছে না। এরকম
হয়, ফোনে হয়তো কথা বলে ভালো লাগে
কিন্তু সরাসরি দেখা হলে সেই মানুষটিকে আর
ভালো লাগে না।’
পাপিয়া স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
‘আমি কী তোমাকে সে কথা বলেছি?’
‘সেটাই হয়তো বলেছো...কিন্তু একটু
অন্যভাবে।’
‘আমার যে তোমাকে ভালো লাগে সেটা কিভাবে
আমি তোমাকে বোঝাবো। আচ্ছা তুমি কি আমাকে
বিয়ে করবে?’
মনে মনে ভাবি, সর্বনাশ! বলে কী এই মেয়ে!
আমি তার দিকে বললাম, ‘তোমার কি মনে হয়?’
মেয়েটা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘এখন বিয়ে করতে পারবে?’
আমি ভাবলাম, ‘এখন যদি বলি পারবো তাহলে নিশ্চয়ই
এখনি সে আমাকে বিয়ে করার জন্য বলবে না।
হয়তো মনে মনে খানিকটা স্বস্তি পাবে। তাই খুব
কনফিডেন্টলি বলে দিলাম, পারবো।’
বলার পর আমার কথার ভঙ্গি শুনে আমি নিজেই চমকে
গেলাম। এমনভাবে কথাটা বলেছি যেন বিয়ে করাটা
ওয়ান-টু’র ব্যাপার।
মেয়েটা সাথে সাথে আমার হাত জড়িয়ে ধরে
বললো, ‘চলো কাজি অফিসে। আমি তোমাকে
বিয়ে করবো।’
দুই
রাজককন্যা তখন আমাকে রাজপুত্র ভেবে এক বুক
আশা নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। নার্ভাস টাইপ হাসি।
সাথে সাথে রাজকন্যা আমার হাত আরোও শক্ত
করে ধরে বসলো।
আমি বললাম, চলো যাই।
রাজকন্যা পাপিয়া বললো, কোথায়?
‘কেন কাজি অফিস!’
'মনে তো হচ্ছে ভয় পেয়েছো।’
‘আরে নাহ! বিয়ে করে আজকেই তোমাকে
বাসায় নিয়ে যাবো।’
রাজকন্যা আমার হাত ধরে রাখলো। আমি রাজকন্যাকে
নিয়ে সামনে এগুতে লাগলাম। এ সময় হঠাৎ করে
দেখি রনি আমাকে পাশ কাটিয়ে হেঁটে চলে
যচ্ছে। আমি যেন মহাসমুদ্রে ভাসতে ভাসতে
আমার খড়কুটো পেয়ে গেলাম। আমি রনির হাত
টেনে ধরে বললাম, ‘আরে রনি বন্ধু, কই যাও?’
রনি আমাকে দেখে অবাক হবার ভঙ্গি করে
বললো, ‘আরে দোস্ত তুমি এখানে। আমি তো
একটা আমগাছ কিনতে আসছি।’
‘আমি একটা চোখ বন্ধ করে বললাম, দোস্ত মিষ্টি
দেইখা কিনিস।’
রনি তখন তার অবাক হবার মাত্রাটা বাড়িয়ে দিয়ে
বললো, ‘আরে দোস্ত, তোর সাথে এইটা
কে?’
‘আরে বুঝস না, এইটা আবার জিজ্ঞাস করতে হয়
নাকি?’
‘ও তাইলে এই অবস্থা! আগে কস নাই তো। তা
তোরা কই যাইতাছোস?’
‘এইতো দোস্ত, কাজি অফিসের দিকে।’
‘ক্যান বিয়ে-শাদির ব্যাপার নাকি?’
‘হুম। ভাবি পেতে চাইলে চল কাজি অফিসে।’
দোস্ত আমার মিষ্টি আমগাছের কি হবে?’
‘আরে ব্যাটা আমগাছতো আর পালিয়ে যাচ্ছে না।
সাক্ষী লাগবে। আশেপাশে পরিচিত কেউ থাকলে
নিয়ে চল।’
রনি ফোন বের করে বললো, ‘এই ব্যাপার!
আগে বলবি না। দরকার পরলে মিষ্টি আমগাছও
সাক্ষী দেবে।’
এরপর রনি ফোন দিয়ে কাকে কী বললো।
আস্তে আস্তে দেখি রাজপুত্র মঈন, মন্ত্রীপুত্র
তনিম আর উজিরপুত্র আমার কাজিন চলে এলো।
আমি রাজকন্যা পাপিয়ার পাশ থেকে সরে এসে
মঈনকে সেখানে আসতে ইশারা করলাম।
মঈন পাশে যেতেই মেয়েটি চোখে একরাশ
প্রশ্ন নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো !
আমি মৃদু হেসে বললাম, ‘রাজকন্যা, ইনিই তোমার
রাজপুত্র।’
.
লেখা... এজি মাহমুদ।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧝ āĻāĻāϏ্āĻ, ⧍ā§Ļā§§ā§
679
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§:ā§Šā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ