গল্পের ৫ম অংশ
দিয়া বাড়ি
বাসায় আসার পর মা দরজা খুলে একটা হাসি দিয়ে কিছু বলতে যেয়েও থেমে গেলো। সাফা মাকে দেখেই সালাম দিলো। তারপর মা সালামের উত্তর নিয়ে আমাকে বলে উঠলো, ও কে?
"মা ও হচ্ছে আমাদের টিমের........
আমাকে আর বাকি কথাটা বলতে না দিয়ে সাফা মাকে বলে উঠলো, আন্টি আমরা একসাথেই এক টিমে কাজ করি।
আমি মাকে বলতে চেয়েছিলাম ও আমাদের টিমের প্রধান। কিন্তু মেয়েটা আমাকে সেটা বলতে দিলোনা।
.
রুমে ঢুকেই মার জন্য কিনে আনা শাড়িটা ভেড় করে মার কাছে দিয়ে বল্লাম, দেখোতো পছন্দ হইছে কিনা? আমার প্রথম মাসের বেতনটা দিয়ে তোমার আর বাবার জন্য কিছু কিনলাম।
মা শাড়িটা হাতে নিয়ে আমার দিকে তাকালো তার চোখে পানি এসে গেছিলো। আনন্দের পানি! তারপর আমাকে বলে উঠলো, তোর জন্য কিছু কিনলি না?
"আমাকেতো তোমরা দিবা। তাই কিনি নাই।
আমার কথাটা শুনে মা আমার গালে তার হাত দিয়ে একটু আদর করে বলে উঠলো, পাগল একটা!
.
এরি ভিতর সাফা মাকে বলে উঠলো, আন্টি শাড়িটা কিন্তু আমি পছন্দ করছি আপনার জন্য। পছন্দ হয় নাই?
মা একটু হেসে সাফার গালেও হাত রেখে বলে উঠলো, হ্যা মা পছন্দ হইছে। চলো নাস্তা বানিয়ে রাখছি, এখন খাবে।
"আন্টি আমি খেয়ে আসছিতো।
"আরে! একটু খেলে কিছু হয় না চলো।
মেয়েটা আর কিছু না বলে হেসে উঠলো।
.
তারপর তিনজন এক সাথে খেতে বসলাম। মা খেতে খেতে সাফাকে একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগলো মেয়েটাও একেক করে উত্তর দিতে লাগলো। মেয়েটাকে খুব খুশি খুশি লাগতেছিলো। আমি খাওয়াটা তাড়াতাড়ি শেষ করে সাফাকে বলে উঠলাম, তুমি মার সাথে থাকো। আমি ফ্রেন্ডের সাথে একটু দেখা করে নামাজ পড়ে চলে আসবো।
তখনি মা আমাকে বলে উঠলো, নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে এসে পরিস।
"আচ্ছা।
কথাটা বলেই আমি বের হয়ে গেলাম।
.
নামাজ শেষে বাসায় ফিরে দেখলাম সাফা আর মা রান্নাঘরে। মা তরকারী থেকে মাংস উঠিয়ে ওকে দিয়ে বল্লো, দেখোতো মা নরম হইছে কিনা?
মেয়েটা মাংসটা মুখে ঢুকিয়ে চাবাতে চাবাতে বলে উঠলো, হুম আন্টি একদম নরম হয়েগেছে। আর খুব মজা হইছে মাংস ভুনাটা।
"ফায়সালের খুব পছন্দ এই মাংসভুনাটা।
"আর কি কি পছন্দ করে ও?
যেই মা কিছু বলতে যাবে আমি নিজেই তখন বলে উঠলাম, মুড়িঘণ্ট, আলু ভর্তা, ভুনাখিচুড়ি, বিরিয়ানি আরো অনেক কিছু।
মা আর সাফা পিছনে তাকিয়ে হেসে দিলো। তারপর মা বলে উঠলো, কখন আসলি?
"এইতো এই মাত্র।
"যা যেয়ে টেবিলে বস রান্না হয়ে গেছে। তোর বাবা আসলেই খেতে দিচ্ছি।
.
বাবা আসার পর সবাই এক সাথে খেতে বসলাম। খাওয়া দাওয়া করার পর সবাই বসে ঘন্টা খানিক কথা বল্লাম।
.
মেয়েটা আমার মাকে পাওয়ার পর মনে হচ্ছিলো বাসায় যাওয়ার কথা ভুলেই গেছে। আমাদের বাসায় আসার পর থেকে মেয়েটার মুখে সারাটাখন হাসি দেখতে পেলাম।
.
সন্ধ্যা হওয়ার পর বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। মেইন রোডে এসে বাসে উঠার পরর মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা দিন উপহার দেওয়ার জন্য।
"এই দিনটা উপহার না দিলে তোমার হাসিমাখা মুখটা কখনো দেখা হতোনা।
"তাই নাহ!
"হুম। আমি বাহিরে যাওয়ার পর আমার সম্পর্কে কি কি বল্লো মা।
" অনেক কিছু বলছে। আর আমাকে বলছে তোমাকে দেখে রাখতে।
"আমাকে খুব ভালবাসেতো মা তাই তোমাকে এই কথাটা বলছে।
.
মেয়েটা আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। ওর এরূপ দৃশ্য দেখে আমি ওকে বলে উঠলাম, কি হলো এমন করে তাকিয়ে আছো কেন?
"মেয়েটা চলে যাওয়ার পর নিজের উপর খুব টর্চার করছো তাই না?
"মা এসবো বলছে তোমাকে তাই না?
"হুম বলছে! তো কি হইছে?
"কিছুনা। ও হঠাৎ করে চলে গেছিলোতো তাই খুব শক খেয়েছিলাম। এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। এখন আর নিজেকে টর্চার করবো কেন?
"করতে দিলেতো করবা!
.
ওর কথাটা শুনে আমি চুপ হয়ে গেলাম। কথাটার মাঝে এক আকুলতার ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম। মেয়েটা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখটা আমার কাছ থেকে সরিয়ে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইলো।
.
বাসায় এসে দুই তালা উঠার পরেই মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, এখন আর কিছু রান্না করার দরকার নাই। আমি খাবার দিয়ে যাবো।
কথাটা বলেই মেয়েটা চলে গেলো।
.
সকালে ঘুমটা ভাঙ্গলো দরজার ঠকঠকানির আওয়াজ পেয়ে। এমনতো কখনো হয় না! সাফার কাছেতো এই ফ্লাটের চাবি আছে। ও আসলেতো ওই চাবি দিয়ে দরজা খুলে অফিসে আসে। আমি আর কিছুনাভেবে বিছনা থেকে উঠে যেই মেইন দরজাটা খুলললাম, তখনি দেখলাম শাহারিয়ার ভাই বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।
.
তিনি আমাকে দেখে অনেকটা চমকিয়ে উঠলো। তিনি ভিতরে এসে আমাকে বলে উঠলো, তুমি এখানে কি করতেছো?
"ভাইয়া রুম খুজে পাইনিতো তাই সাফা বলছে ভালো রুম না পাওয়া পর্যন্ত আমাকে এখানে থাকতে।
আমার কথাটা শুনে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে তার মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে সাফাকে ফোন দিয়ে বলে উঠলো, আমি তোমার অফিসে আসছি। তুমি একটু নিচে নামো।
কথাটা বলেই তিনি ফোনটা পকেটে রেখে আমি যেই রুমটাতে থাকি সেই রুমটার দিকে একটু তাকিয়ে অফিস রুমে যেয়ে ঢুকলো।
.
সাফা ফ্লাটের ভিতর ঢুকার পরেই দেখলো আমি আমার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার দিকে মেয়েটা একটু তাকিয়ে মেয়েটা অফিস রুমে যেয়ে ঢুকার সাথে সাথেই শাহারিয়ার ভাইয়া ওকে বলে উঠলো, এগুলো কি হচ্ছে?
"কি হবে আবার?
"তুমি এই ছেলেকে নিজের বাসায় থাকতে দিচ্ছো?
"তাতে তোমার সমস্যা কোথায়?
"ভালো মতো চিনোনা জানোনা, রুম না পাওয়াতে তাই বলে এইখানে থাকতে দিবে?
"সেইটা তুমি বলার কে? কি বলতে আসছো সেইটা বলে তুমি এখন আসতে পারো।
"দেখো সাফা ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু!
"বেঠিকের কিছু এখানে দেখছিনা আমি।
"এই ছেলেটা যদি তোমার সাথে খারাপ কিছু করে ফেলে তখন কি করবা?
"এই! কি বল্লা? সবাইকে কি তোমার মতো চরিত্রহীন মনে করো? যাও এখনি তুমি আমার বাসা থেকে বের হবা। ফালতু কোথাকার!
.
মেয়েটার কথা শুনে শাহারিয়ার ভাইয়া অফিস রুম থেকে বের হয়ে আমার দিকে একটু তাকিয়ে বাহিরে বের হয়ে গেলো।
.
কেন যেনো মনে হলো আমাকে এইখানে থাকাটা ঠিক হবেনা। সাফা অফিস রুম থেকে বের হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, যাও যেয়ে ফ্রেশ হও।
"একটা কথা বলি?
"বলো।
"আমি এখান থেকে চলে যাই। আমি চাইনা আমার জন্য তোমার কোনো সমস্যা হোক।
"তুমি এখন থেকে এইখানেই থাকবা। কি বলছি বুঝা গেছে?
আমি আর কিছুনা বলে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। মেয়েটা আমাকে আবার বলে উঠলো, ও তোমাকে উল্টা পাল্টা কিছু বলছে?
"আরে না!
"যাও যেয়ে রেডি হও। দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমাদের আবার বের হতে হবে।
কথাটা বলেই মেয়েটা রুম থেকে বের হয়ে ওদের ফ্লাটে যেতে লাগলো।
.
কি জানি মা এই মেয়েটাকে কি কান পড়া দিয়ে দিয়েছিলো। ওকে নিয়ে আমাদের বাসা থেকে আসার পর মেয়েটা আমার প্রতি একটু বেশি খেয়াল রাখা শুরু করলো। হঠাৎ হঠাৎ কথার মাঝে এমন কথা বলে উঠতো সেইটা শোনার পর আমি একদম চুপসে যেতাম।
.
সাফার সাথে ডিল হলো প্রতি মাসে একবার ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাবো। মেয়েটা সেইদিন খুব খুশি হয়েছিলো। যখন স্টলে থাকি তখন মেয়েটা একের পর এক প্রশ্ন করতো। আমি যে করতাম না,তা না আমিও করতাম তবে ওর থেকে একটু কম। আমাদের এরকম সম্পর্ক দেখে ওই ছেলে দুইটা হিমশিম খেতো। মাঝে মাঝে মেয়েটা আমাকে রান্নার কাজে সাহায্য করতো। অনেকবার বলছি, দেখো তোমার এসব করতে হবে না। আমি করে নিতে পারবো।
আমার কথা শুনে মেয়েটা আমার দিকে এমন করে তাকাতো যে, আমি ওর চোখের দিকে তাকালে চুপ হয়ে যেতাম।
.
মাঝে মাঝে মার্কেটিং লাইনের ছেলেগুলোকে যখন মেয়েটা ঝাড়ি দিতো তখন আমিও ওদের সাথে ভয় পেয়ে যেতাম। আসলে মেয়েগুলা যে বিভিন্ন ধরনের রূপ ধারন করতে পারে ওর সাথে কাজ না করলে কখনো জানতে পারতাম না।
.
সেইদিন ছেলেগুলোকে ঝাড়ি দেওয়ার পর যখন ছেলেগুলো বাসায় চলে গেলো তখন মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, এদের ঝাড়ি দেই কেন জানো?
আমি ওর কথাটা শুনে একটু অবাক হয়ে বলে উঠলাম, কেনো?
"এদেরকে ঝাড়ি না দিলে ঠিক মতো কাজ করবেনা। আলসামি দেখাবে। তাই মাঝে মাঝে ঝাড়ি দেওয়া লাগে।
"এখন যদি আমি ঠিক মতো কাজ না করি তাহলে কি ওদের মতোই আমাকে ঝাড়ি দিবা তাই না?
আমার কথাটা শুনে মেয়েটা চোখগুলো একটু ছোট করে বলে উঠলো, ওদের থেকে বেশি দিবো।
.
আরো এক সাপ্তাহ কেটে গেলো। আজ বৃহস্পতিবার আজ কাজ শেষ করেই ওইখান থেকেই বাসায় রওনা দিবো সিদ্ধান্ত নিলাম। যখন স্টল বন্ধ করে বের হলাম তখন মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, আচ্ছা মাসে দুইবার তোমাদের বাসায় যেলে সমস্যা হবে?
আমি ওর কথাটা শুনে হেসে উঠলাম। তারপর ওকে বল্লাম, নাহ সমস্যা হবে কেন? আচ্ছা তাহলে মাকে ফোন দিয়ে বলে দেই কাল তোমাকে নিয়ে আসতেছি।
"নাহ! আজকে বাসায় আমার মামারা আসছে না আসলেতো যেতামি। সামনের সাপ্তায় ওকে?
"হুম ওকে।
তারপর আমি ওইখান থেকেই আমাদের বাসায় চলে আসলাম।
.
বাড়িতে আসার পরর রাত ১১ টার দিকে সাফা ফোন করে আমাকে বলে উঠলো, জানো বাড়িতে মামারাতো আসছেই তার উপর আমার খালামনিরাও এসে পরছে।
"ভালোই তো হইছে।
"হুম তবে পুরো দুই রুম এদের লাগবে। তোমার রুমে যেয়ে আজকে আমি থাকি কোনো সমস্যা হবে?
"আরে না কিসের সমস্যা।
"ওকে। আন্টি কি করে?
"এইতো টিভি দেখতেছে।
"তুমি?
"বন্ধুদের সাথে আড্ডা মেরে আসলাম এখন খাবো।
"ওকে এখন তাহলে রাখি। মাথাটা ব্যাথা করতেছে ঘুমাবো।
"ওকে বাই।
কথাটা বলেই ফোনটা রেখে দিলাম।
.
শুক্রবার বিকালবেলা যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম তখনি ফোনটা বেজে উঠলো। স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখি মিকি মাউস লেখা। হুম! সাফার ফোন। ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, কি করো?
"এইতো বন্ধুদের সাথে তুমি?
"ছাদে উঠে বসে আছি। কখন আসবা?
"রাতে খাওয়া দাওয়া করে।
"এতো দেড়ি করে!
"কেন কি হইছে?
"না কিছুনা। আচ্ছা সাদিয়াকে তুমি খুব ভালবাসতে তাই না!
"হঠাৎ একথাটা কেন জিজ্ঞাস করলা?
"নাহ এমনি। আচ্ছা রাখি তাহলে।
কথাটা বলেই মেয়েটা ফোন কেটে দিলো। মেয়েটার কথাগুলো আজকে একটু অন্য রকম অন্য রকম লাগতেছিলো। খুব আস্তে আস্তে কথা বলতেছিলো। কিছু হলো নাতো আবার। নিজের কাছেই ভাবতে যেনো কেমন লাগতেছে। তারপর কি মনে করে যেনো যেনো ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় যেয়ে মাকে বুঝিয়ে মিরপুর রওনা দিলাম। যাওয়ার সময় মা বাটিতে করে খাবারো দিয়ে দিলো।
.
সন্ধ্যার আযান দেওয়ার সাথে সাথেই মিরপুর পৌছিয়ে গেলাম। বাসায় এসে রুমে ঢুকে দেখলাম রুমটা একদম গুছানো। বারান্দায় একটা টেবিল ছিলো, সেই টেবিলটা আমি যে রুমে থাকি সেই রুমে নিয়ে যেয়ে আমার বইগুলো সাজিয়ে রেখেছে । খাবারের বাটিটা টেবিলের উপর রেখেই বিছানায় বসে মোবাইলটা হাতে নিয়েই মেয়েটাকে ফোন দিলাম। সাথে সাথেই ফোনটা রিসিভ করে ফেল্লো মেয়েটা। তারপর আমি ওকে বলে উঠলাম, আমি এসে পরছি।
"কি!
"রুমে আছি।
কথাটা বলার পর ফোনটা কেটে গেলো।
.
বিছানায় শরীরটা হেলিয়ে দেওয়ার সাথে সাথেই খেয়াল করলাম। সিরি দিয়ে কে যেনো খুব তাড়াতাড়ি নামতেছে। দরজাটা ভিড়িয়ে রেখেছিলাম বিদায় মেয়েটা সরাসরি রুমে ঢুকে পড়লো। ওকে দেখেই আমি উঠে বসলাম। মেয়েটা এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর আমার সামনে এসেই বিছানার এক পাশে বসে বলে উঠলো, রাতে নাকি খেয়ে আসো।
"হুম।
"তো এতো তাড়াতাড়ি আসলে যে?
"কেন যেনো মন টিকতেছিলো না তাই এসে পরছি।
আমার কথাটা শুনে মেয়েটা আমার দিকে তাকালো। আমি ওকে আবার বলে উঠলাম, কি হইছে শুনি?
মেয়েটা আমার দিকে তবুও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আমি আবার ওকে বলে উঠলাম, কি হলো?
মেয়েটা একটু চমকিয়ে বলে উঠলো, না! কিছু না।
"মাথা ব্যাথা আছে এখনো?
"তোমার মনে আছে!
"মনে না থাকলে কি জিজ্ঞাস করতাম?
মেয়েটা মাথাটা নারিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে না সূচক ইশারা দিলো।
.
আসলে বলতে গেলে মেয়েটার ভাবভঙ্গি গুলো একটু বেশিই অন্য রকম লাগতেছিলো। দিন দিন মেয়েটার বিহেভিয়ার গুলো এরকম ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে যা আমাকে অনেক ভাবাচ্ছিলো।
.
আরো একটা মাস কেটে গেলো। একটা রুম খুজে পেয়েছিলাম। সেইদিন রুমের কথা বলাতে মেয়েটা দুইদিন আমার সাথে কথা বলেনি। কেমন যেনো নিজের কাছেই অপরাধী অপরাধী লাগছিলো। সেইদিন যখন বল্লাম আচ্ছা এইখানেই থেকে যাবো। মেয়েটা আমাকে খুব জোড় দিয়েই বলে উঠেছিলো, আমি যেতে দিলেতো তুমি যেতা!
আমি ওর কথাটা শুনে খুব অবাক হয়ে গেছিলাম।
.
আজ শুক্রুবার। ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ। ওর সাথে ডিল হয়েছিলো বিদায় আজো ওকে নিয়ে আমাদের বাসায় যেতে হবে। ওকে পেলে মা ও খুব খুশি হয়। মেয়েটাকে মুড়িঘণ্টর রেসিপি টা মা গতবার শিখিয়ে দিয়েছিলো। আজকে বাসায় যাওয়ার পর মেয়েটাতো পারেনা মাকে কুলে তুলে নেয়।
.
আজ নামাজ পড়ে যখন বাসায় আসলাম তখন দেখলাম মেয়েটার মাথায় মা তৈল দিয়ে দিচ্ছে। আর মেয়েটা বলতেছিলো, আন্টি আমারতো ঘুম এসে পড়তেছে।
মেয়েটার কথা শুনে মা খুব হাসতেছিলো।
.
সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে মিরপুর রওনা দিলাম। মা মেয়েটাকে এমন ভাবেই তৈল দিয়ে দিয়েছিলো যে ওর কপালটাও তৈলাক্ত হয়ে গেছিলো। ওর দিকে তাকিয়ে আমি বলে উঠলাম, চুলে তৈল দেওয়ার পর তোমার লুকটাই চেঞ্জ হয়ে গেছে।
"যেমন!
"মহিলা মহিলা লাগতেছে।
আমার কথাটা শুনে মেয়েটা একটু হেসে বলে উঠলো, বুড়িতো আর লাগতেছেনা?
"নাহ! তবে কপালে তৈল দেওয়াতে জন্ডিস রোগীদের মতো লাগতেছে।
কথাটা বলেই আমি হেসে উঠলাম। মেয়েটা একটু রেগে যেয়ে আমার হাতটা ধরে আমার শাট এর হাতা দিয়ে ওর কপাল মুছতে লাগলো।
আমি আর মেয়েটাকে কিছু বল্লাম না। তবে মানতে হবে মেয়েটা খুব রেগে গিয়েছিলো।
.
আজ সোমবার ক্যান্টনমেন্টে এই সাপ্তাহের জন্য আজকেই শেষ কাজ। কাল থেকে আবার এয়ারপোর্টে কাজ আমাদের।
.
ক্যান্টনমেন্ট পৌছানের পর থেকেই ছেলে দুইটা একে অপরের সাথে কি নিয়ে যেনো কথা বলতেছিলো। আর কিছুটা চিন্তিত মনে হচ্ছিলো। এরূপ দৃশ্য দেখে সাফা ওদের বলে উঠলো, কি হইছে তোমাদের?
ওদের মধ্যে একজন সাফাকে বলে উঠলো, একটা কথা বলার ছিলো।
"কি কথা?
"না মানে, আগামীকাল আমাদের একটু ছুটি লাগতো।
.
ওদের কথাটা শুনে মেয়েটা একটু হেসে উঠলো। তারপর ওদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, কাল কয় তারিখ যেনো?
ওদের মধ্যে একজন বলে উঠলো, ১৪ তারিখ।
"ওহ! বুঝছি। ওকে দিলাম ছুটি।
কথাটা বলেই মেয়েটা হেসে উঠলো। আর ছেলে দুইটাও খুব খুশি হয়ে গেলো। কথাটা শুনেই আমি কিছুটা চুপসে গেলাম। সাদিয়ার কথা মনে পড়ে গেলো। আমিও একটু হাসার চেষ্টা করতে লাগলাম কিন্তু সেইটা আর হয়ে উঠলোনা। ওর কথা ভাবতে যেয়ে সেইদিনের ওর পাশে থাকা সেই ছেলেটার চেহাড়াটা আমার চোখে ভেসে উঠলো। পুরো শরীরটা যেনো গরম হয়ে একটা ভাপ বের হতে লাগলো।
.
ওদের দিকে তাকিয়ে আমিও একটু হাসলাম। সাফা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো, ফায়সাল কাল যেহেতু ওরা থাকতে পারবে না। আমরা এয়ারপোর্ট দুপুর পর্যন্ত কাজ করে আমার এক ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে উত্তরা ১৭ নাম্বার সেক্টর যাবো। ও অনেক দিন ধরে দেখা করতে চাচ্ছে।
"ঠিক আছে।
.
রাতে একটুও ঘুম আসতেছিলো না। খুব ছটফট করতে লাগলাম। নিজেকে অনেক কন্ট্রোল করে রাখতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু পারতেছিলাম না। বিছানাটা একদম উলট পালট করে ফেলেছিলাম। বার বার ডাইরিটার পৃষ্ঠা গুলো একেক করে উলটাতে লাগলাম। একদম সেন্সলেস হয়ে পরেছিলাম। ফজরের আযান দেওয়ার কিছুক্ষন আগে চোখ দুইটা ছোট হয়ে আসছিলো। ডাইরিটা টেবিলে রেখেই শুয়ে পড়লাম।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ