āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§§ā§­ āĻĄিāϏেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

3883 (2)

#অবৈধ বিয়ে ৪র্থ পর্ব।
লেখা: Umme Nipa

আমি আর ইকবাল দুজন ই মায়ের দিকে তাকালাম।
ভাবছি মা এসব কি বলছে।জামাই কই দিয়া আসলো।

আপাদত মাথায় কাজ করছেনা।মনে হচ্ছে আমি এক যুগ জেল খেটেছি।ক্লান্ত খুব....

রুবেল: জামাই?

মা: হুম ইকবাল এর সাথে আমার মেয়ের কাবিন হয়ে গেছে দু মাস হলো।

রুবেল: সেটা কেউ জানলোনা?

মা: আমার মেয়ের বিয়ে আমি কারে জানাবো তা তোমায় জিজ্ঞেস করবোনা...

রুবেল: আচ্ছা আমরা আর বিপদে পরলে আসবো না।চলেন আপনারা যাই এখন।

সবাই চলে যাচ্ছে আর বলছে এই ছেলের কথায় আসাই উচিৎ হয়নি।

অনেকে আবার বলছে নাটক দেখলাম ফ্রীতে...

পাশের বাসার আন্টি বলছে ভাবি বিয়া কিন্তু খাওয়া চাই।আবার না বলে উঠিয়ে দিয়েন না।
বাবা!আমরা জানতেই পারলাম না।

সবাই চলে গেছে।ইকবাল আমি আর মা দাড়িয়ে আছি।

এসব কি হচ্ছে সব ই স্বপ্ন লাগছে।

মা: লুবনা ওরা ঘরে ঢুকলো কি করে?

আমি: তুমি যে গেলে দরজা আমি আর লাগাইনি।
আচ্ছা এসব কি বললা তুমি জামাই এর কথা?

ইকবাল: কাকি আমি কাল ই বাসা ছেড়ে চলে যাব। আমাকে আর এই এলাকায় দেখবেন না।

এই ভীতুকে কিনা ভাবছি আমি জঙ্গি।এতো অপমানের চেয়ে ইকবাল আমায় খুন করলে খারাপ হতনা।

মা: এখন তো যাবেই।আমার মেয়ের সর্বনাশ যা হবার তা তো হয়েই গেল বলে মা কেঁদে কেঁদে বসে পড়লো।

আমি: মা উনি কিছু করেনি।আমরা মোম...

মা: চুপ থাক তুই।তুই তোর বাবার মাথা নিচু করে দিলি।তোর বাবা জানলে মরে যাবে।একবার ও ভাবলিনা তুই আমাদের কথা..

আমি: তারমানে তুমি রুবেল এর কথা ই বিশ্বাস করেছো?

মা: শুধু কি রুবেল?
সবাই কি মিথ্যে বলে?
কিছু তো ঘটেছেই...

আমি এতক্ষণ ভয় পেয়েছিলাম,লজ্জা পেয়েছিলাম বাইরের মানুষের কথায়।
তবে এখন চরম আঘাত টা পেলাম।
নিজের মা ই যদি ভুল বোঝে তার চেয়ে অভাগী আর কে আছে।

ইকাবাল মাকে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা বা কিছু বলার নাই।
ও বাসা থেকে বের হয়ে গেল...

বাবা আসেনি এখনো। আসলে কিভাবে তার চোখে চোখ রাখবো..
আজ আমি সামান্য কিছু ভুল করলেও নিজেকে সান্তনা দিতে পারতাম।

কিন্তু আজ কিছু না করেও সর্বোচ্চ শাস্তি পাচ্ছি।
শেষে কিনা আমার মা আমায় খারাপ ভাবলো..

ভাবছি মরে যাব। জাহান্নামের আগুন ও আমার অপমান এর আগুন কে ছাড়াতে পারবেনা।

আমি মরে গেলে আমার মা বাবা কে ঠিক ই সমাজ বলবে মেয়ে খারাপ তাই মারা গেছে।
আমি তাদের এসব এর মাঝে রেখেও যেতে পারছিনা।

কিছুক্ষন পর মা আসলো আমার রুম এ।
-লুবনা চল..

আমি: কই?

চল তুই....

আমার হাত ধরে নিচে ইকবাল এর বাসায় নিয়ে গেল..

ইকবালের জ্বর টা মনে হয় বেড়েছে। চোখ লাল রক্তের মতন।
কিছুটা অপমানেও বেড়েছে।
সে মাকে দেখে মাথা নিচু করে আছে।

মা ওর হাত ধরে বলছে,বাবা আমার মেয়েকে তুমি বাঁচাও বাবা।

ইকবাল: কাকি কি করছেন...বসেন শান্ত হয়ে।আসলে আপনি যা ভাবছেন তা কিছুনা।

মা: বাবা ঘটনা আর ভাবার পর্যায়ে নেই।

আমি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম।আমার ইচ্ছে করেনা আর প্রতিবাদ করতে।

মুখ দিয়ে সব শব্দ ই বিলীন হয়ে গেছে।এখন কেউ মেরে ফেললেও কাঁদতে পারবো না আমি।
অসাড় হয়ে গেছি।

ইকবাল: কাকি আমি কি করবো বলেন?
এখন ই বাসা ছেড়ে যাব?

মা: না বাবা..দেখো আমার মেয়ে ভালো থাকুক তা ওর ফুপু বা ফুপাতো ভাই চায়না।
আমার মেয়ের কপালে যা জুটল এতে ওর বিয়ে দিতে পারবো না আর।
এখন আমি বলে ফেলেছি তুমি ওর স্বামী পরে এটা জানাজানি হলে আমায় এলাকা ছাড়া করবে।নিজেদের বাড়ি ছেড়ে কই যাব বাবা?

মায়ের মুখ দেখে কি অসহায় লাগছে।আমায় নিয়ে মা কি বিপাকেই না পরে গেছে..
এর চেয়ে মেরে ফেললেই তো সব ঝামেলা শেষ...

ইকবাল: কাকি আমি কি করলে আপনি খুশি হন বলেন..
আমি রুবেল এর কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবো? আপনি বললে চাইবো...

মা: না বাবা,তুমি লুবনা কে বিয়ে করো তাহলে সব ঝামেলা শেষ...

আমি: মা...

মা আমার দিকে তাকালইনা..

ইকবাল: কাকি আমার বাবা অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করান।
আমি ই বাসার বড় ছেলে বাবা জানলে মরে যাবে।

মা: আমি তাদের বলবো.

ইকবাল: তাছাড়া লুবনাকে বিয়ে করার আমার যোগ্যতা নেই।
আর ওর ও  একটা  মতামত আছে।

মা: ও কি বলবে..মানসম্মান আগে।
ইকবাল আমার দিকে তাকালো..

এই সেই ছেলেকে আমি তাচ্ছিল্য করতাম আজ তার কাছে আমাকে বিয়ে করার জন্য আকুতি জানাচ্ছে আমার ই মা..

মাঝে মাঝে বাস্তব খুব কঠিন হয়ে যায় যা সিনেমাকেও হার মানায়।

হায়রে সমাজ!তুমি সব পারো...

আমি কোন প্রতিবাদ করছিনা।আমার কপালের উপর সব ছেড়ে দিছি।
একমাত্র মেয়ে আমি,কি হত আমায় সারাজীবন অবিবাহিত রাখলে!
নাকি জন্ম মানেই বিয়ে করতে হয়!

একটা সময় আমার মত ছাড়াই আমার বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।এর মাঝে ইকবাল অনেকবার আমার সাথে কথা বলতে চাইলেও আমি বলিনি।ইচ্ছে করেই বলিনি।

ইকবাল ওদের বাসার মানুষকে কি জানিয়েছে তা আমি জানিনা তবে যতদূর জানি তারা মেনে নেয়নি।
না মানার ই কথা...

১৬ই জুলাই,শুক্রবার আমার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়।
একদম ঘরোয়া ভাবে আমার বিয়ের অনুষ্ঠান হয়।

এমন টা আমার প্রত্যাশায় ছিলনা।অনেক আগ থেকেই বিয়ে নিয়ে পুষে রেখেছিলাম অনেক কিছু।

দিনটা আমার কাছে এমন ভাবে ফিরে আসবে তা আমি কল্পনাও করিনি।

শুনলাম ইকবাল এর বাড়ি থেকে কেউ আসেনি।
ইকবাল এর কয়েকজন বন্ধু আমার বাবা মিলে মসজিদ এ গেল।

আমি অপেক্ষা করছি আমার বিয়ের।কি অদ্ভুত তাইনা।

সবাই মিষ্টি নিয়ে এসে বললো বিয়ে হয়ে গেছে।

কল্পনা গুলি এমন ছিলনা আমার।লাল শাড়ি পরে কবুল বলার স্বপ্ন ছিল বহু আগের ইচ্ছে..

কিন্তু বাস্তবে কবুল বলাও দরকার নেই মেয়েদের।
আচ্ছা কবুল বললেও কি মন থেকে বিয়ে করা হয়!
মনের অনিচ্ছা থাকলে সে বিয়ে কি করে বৈদ্ধ হয় আর সেই বিয়েকে কেন্দ্র করে কি করে দিনের পর দিন এক ছাদ এর নিচে থাকে?

তখন তো কোন রুবেল বিচার করতে আসেনা।
আসলে রুবেল এর মতন ছেলেরা পারে কেবল ভালো কে খারাপ করে দেখতে। তাদের সাহস নেই প্রতিবাদ করার...

যে মানুষগুলি কয়েকদিন আগে রাতে তিরস্কার করেছে তারা আজ আমাদের বিবাহিত জীবনের মঙ্গল কামনা করছেন।

মানুষখুব তাড়াতাড়ি রূপ বদলাতে পারে।

আমি সেদিনের পর থেকে কারো সাথেই কথা বলিনা..
এক ধাক্কায় অনেকটা সাবলীল লাগছে নিজেকে।

রাতে ইকবাল আর ওর বন্ধুরা আমাদের বাসায় রইলো।
ইকবাল কে আমার রুম এ শুতে দিল মা।

মাকে অনেক খুশি দেখাচ্ছে।খুশি হবার কারন আমি বুঝতে পারছিনা।
আর বাকিদের মতন আমার বাসর ঘর ফুলে সাজানো হয়নি..

শুধু নতুন বিছানার চাদর দেয়া হয়েছে।
বাসর দিয়ে অবশ্য কি বা হবে,বাসর ঘরে যার  সাথে চলার শুরুর সাক্ষী,  সেই চলার সাথী ই তো আমার অপছন্দের।

আমি বাকি নতুন বউয়ের মতন বিছানার এক কোনে লজ্জা মুখ নিয়ে বসে রইলাম না।জানালার পাশে দাড়িয়ে আকাশ দেখছি...

এমন সময়ে মা আসলো আমাদের কক্ষে..

ইকবাল বসা থেকে উঠে দাড়ালো..
মনে হয় ক্লাস রুমে এ শিক্ষক এসেছে আর ইকবাল ছাত্র..

মা: ইকবাল ব্যস্ততায় তোমার সাথে কথা বলা হয়নি..

ইকবাল: জ্বি কাকি বলুন।

মা হেসে বলে এই ছেলে এখনো কাকি কি?

ইকবাল চুপ করে আছে।

মা: ইকবাল লুবনা আমাদের একমাত্র মেয়ে।আমরা ওর কোন আবদার অপূর্ন রাখিনি।
এই যে বাড়ি তা তো ওর ই আর সেই সুবাদেই তোমার..

আমি আর ওর বাবা চাই আমাদের মেয়ে আরো কয়েকবছর এখানে থাক।কি ই বা বয়স ওর! পড়াশোনা শেষ করে শ্বশুর বাড়ি যাক। আর তোমার মা বাবা ও তো কেউ আসলেন না তাদের কাছে কি করে মেয়েকে পাঠাই।
তুমিও থাক এখানে। তারপর সুযোগ-সুবিধা বুঝে যাবা।
দুজন ই পড়াশোনা টা করো ভালোকরে।

ইকবাল: কাকি...ও মা, আসলে আমার কাল একটু বাড়ি যেতেই হবে..
বাবা রাগ করে আছে আমার উপর।আমার যেতেই হবে।

মা: আচ্ছা তুমি যাও। কিন্তু লুবনা থাক...

এই বলে মা আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত রেখে বলছে ঘুমিয়ে পর।

মা চলে যাবার পর ইকবাল আবার বসে বসে ঝিমাচ্ছে।
আচ্ছা উনি কি পালাবে?
পালানোর ই কথা..
উনি পরেছে মহা অশান্তিতে।

আমি ইকবাল এর পাশে গিয়ে বললাম,আমাকে নিবেন আপনাদের বাড়ি?

ইকবাল হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি: কি নিবেন না?আমি শ্বশুর বাড়ি আমি যাবনা?

ইকাবাল আমার এ আচরনে ভয় পেয়েছে হয়তো...

যদি নিজের বাসায় থাকার জন্য বিয়ের ষ্ট্যাম্প লাগিয়ে থাকতে হয় তাহলে শ্বশুরঘরে যাওয়াই ভালো..

আমি ইকবাল এর হাত ধরে ওর পায়ের কাছে বসে কেঁদে দিলাম,প্লিস আমাকে নিয়ে যান।

আমার রাগ ছিল আমার উপর,আমার রাগ ছিল আমার মায়ের উপর।এখন আমার উপর ইকবাল এর অধিকার সবার আগে তাই মাকে আমি আর জয়ী হতে দিচ্ছিনা।

ইকবাল আমার হাত ধরে উঠিয়ে বলছে,কি করছো লুবনা...কাঁদছো কেন?

বিয়ে যেহেতু করেছি নিব তো অবশ্যই তবে তুমি এখানেই ভালো থাকবে।

আমি: না আমার এখানে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।আমি এ ঘর থেকে বের হতে চাই।

ইকবাল: আচ্ছা যাবে।

ইকবাল কিছুক্ষন পর বন্ধুদের সাথে ঘুমাতে গেল।

আর আমি সারারাত বসে-দাড়িয়ে কাটিয়ে দিলাম।কি যেন হারয়েছে আমার আর তার ই হিসাব মেলাচ্ছি।

আযান  দিতেই ইকবাল আমার বাবা আর ওর বন্ধুদের নিয়ে গেল নামাজ পড়তে আর যাবার সময় আমাকেও বললো পারলে যেন নামাজটা পরে নেই।

সকাল ৭টা, আমি ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছি।
মা নাস্তা দিতে এসে দেখে ব্যাগ..

মা: কিরে লুবনা ব্যাগ কিসের..?

আমি: আমার।

মা: কেন?

আমি: ইকবালের সাথে তাদের বাড়ি যাব। মা কি বলি শুনছো বলে কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে ডাকতে গেল।

বাবা বেচারা আজকাল আমার কাছে আসেইনা
হয়তো আমার দিকে তাকাতে লজ্জা পায় নয়তো কষ্ট হয়।

বাবা আসলো আমার কাছে...
আমার পাশে বসে কাঁন্না গলায় বলছে,কিরে মা পাগলামি করছিস কেন?

আমি বাবাকে জড়িয়ে কাঁন্না করে দিলাম।বাবাও আর নিজেকে সামলাতে পারলো না।
এই তো সেদিন বাবার পেটের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছি আর আজ বাবাকে কাছেও পাইনা আমি।

আমি: বাবা আমি আবার আসবো..
আমার মনে হয় ইকবাল পালাবে..

যদিওবা এটা মিথ্যে সান্তনার জন্য বলেছি যাতে আমাকে যেতে দেয়।
ইকবাল যে পালানোর নয় তা আমি বুঝে গেছি।

পরে মা-বাবা রাজি হলো..
আমি এবং ইকবাল দুজন ই যাত্রা শুরু করলাম।

বাস এ বসে ইকবাল আমায় বলছে: তুমি ভেবেছো আমি পালিয়ে যাব?

আমি অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকালাম..

তারমানে আমি বাবাকে যখন বলেছি, তখন সে শুনেছে..

আমি আর উত্তর দিলাম না,কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা থাকেনা বা জানলেও বলার ইচ্ছে হয়না....

যাকে আমি আমার কেউ ভাবিনা তার ভুল ভাঙানোর আমার কিসের দায়..!

চলবে....

#অবৈধ বিয়ে।(৫ম পর্ব)
লেখা: Umme Nipa

বাস এ যেতে প্রায় ৩ঘন্টা লাগলো..
বাস থেকে নেমেই এক গ্রাম..

শুধু গ্রাম বললে ভুল হবে, এটাকে ছোট গ্রাম বলা চলে..

নিজের ভাগ্যের কথা ভাবলেও হাসি আসে।

ইকবাল: এই যে রাস্তা দেখছেন এখান দিয়ে হেটে গেলে ২০মিনিট পর ই আমাদের বাড়ি।

আমি : হাঁটবো কেন?গাড়ি নাই?

ইকবাল: হা হা হা

আমি: হাসেন কেন?

ইকবাল: রাস্তা ভালোভাবে দেখেন,এখান দিয়ে গরুও হাঁটতে পারেনা তারপর তো গাড়ি..

আমি: তার মানে আমরা গরুর চেয়েও অধম?

হুট করে মনে পরে গেল আমার সাথে ঘটে যাওয়া দিনগুলির কথা..

দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললাম,হুম অধম ই তো...

দুজন ভুতের মতন চুপ চাপ হাঁটছি.
মাঝে মাঝে আমি জিরিয়ে নিচ্ছি।

এমন সময় ই ইকবাল বললো এই আমাদের বাড়ির দরজা।

আমি: কই দরজা?এটা তো রাস্তা।

ইকবাল: আরে এখানকার বাড়ি গুলি ওমন ই।
বাড়ির ভিতরে যাবার  পথকেই দরজা বলে।একটু ভিতরে গিয়েই আমাদের আর-চাচার বাসা।

আমি: ও..তাহলে জানালা?

ইকবাল এর সাথে ধীরে ধীরে সংকোচ কমে যাচ্ছে।আমার মনে হয় ইকবাল এর ও।তাই ঠাট্টাতামাসা   হচ্ছে।

বাড়ির ভিতরে যেতে বিশাল উঠান।
আর উঠান এর ৩পাশে ৩টা বাড়ি...

সব বাড়িগুলি কেমন এক ধাঁচ এ বানানো। চৌচালা...
আর সব ই নড়বড়ে। মনে হয় বাতাস আসলেই পরে যাবে..

আমি: আচ্ছা বাড়িগুলি কি এক ইঞ্জিনিয়ার এর প্লান করা?

ইকাবাল হেসে বলে এগুলো আমার দাদার আমলের।

এর ই মাঝে ইকবাল কে দেখে এক মহিলা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কাঁন্না শুরু করলো..

এমন কাঁন্না তো মানুষ মারা গেলেও করেনা..
মহিলা আসলে কে, বুঝে উঠতে পারছিনা।

ইকবাল: লুবনা এ আমার মা...

আমি সালাম দিলাম,সে আমায় দেখে হয়তো খুশি হয়নি।
কোথায় তার বোকা ছেলের জন্য  আমার মতন মেয়ে পেয়ে খুশি হবে তা না।

ঘরের ভিতর গেলাম।আমার কপালে বুঝি এ রকম স্বামীর ঘর লেখা ছিল...

ইকবাল আমায় তার কক্ষে বসিয়ে কই গেল কোন খোঁজ নাই।
এ ঘরে কেউ আমার আপন নাই।
চেনার মাঝে ওই একজন ই।

বাসার আর কাউকে দেখছিনা...

ক্লান্ত লাগছে খুব..
তাই বিছানায় শুয়ে পরলাম..
কত রাত ঘুমাইনা আমি..

ভাবতে ভাবতে চোখটা লেগে গেল,

কিছুক্ষন পর ই মানুষ এর গুনগুন শব্দে ঘুম ভাঙল..
তাকিয়ে দেখি বিছানার চার পাশে নানা বয়সের মহিলা ভীড় করে দাড়িয়ে আছে...
আমি তড়িঘড়ি হয়ে উঠে বসলাম।
ঘুমের ঘোরে ভুলে যাচ্ছি আমি আসলে কোথায়..
সবার দিকে একে একে তাকালাম..
পরে মনে হল এটা ইকবাল এর বাসা..

আমায় সবাই এমন করে দেখছে কেন..!
আমার কি আবার বিচার হবে কোন!!

আমি: কি করেছি আমি?

এর মাঝেই এক মহিলা হাসতে হাসতে বলে,উমহ্ এখন ভাজা মাছ উল্টাতে জানে না যেন...

আমার আবার ভয় করছে খুব।হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
চারপাশে তাকিয়ে দেখি ইকবাল কোথাও নেই।
আচ্ছা এরা পাচারকারী নাতো..

আরেকজন মেয়ে উঠে বলে,আমার দেবর টার মাথা চিবিয়ে গেয়ে এখন কিছু বোঝেনা।

আমি আরো চিন্তায় পরে গেলাম।
ইকবাল মারা গেছে নাকি..
কে ওর মাথা চিবিয়েছে!
আর তার জন্য আমাকে দায়ী করছে কেন!
আমি কি করে মাথা চিবাবো! আমায় দেখতে কি মানুষ খেঁকো মনে হয়...

এর মাঝে ইকবাল এর মা আসলেন।সবাইকে সরিয়ে বলছেন,সবাই একে একে বউকে মধু খাইয়ে দেও।

এতো মানুষ এর হাতে মধু আনুমানিক ৩কেজি খাওয়া হলো...

একজন আমার কানের কাছে এসে বলছে,এই ভাবি ভাইয়া তোমায় অনেক ভালোবাসে তাইনা??

কথাটা ফিসফিস করে বললেও পাশের মহিলারা হো হো করে হেসে বলে,ভালো না বাসলে কি করে বিয়ে করে আনে।

ভালোই মজে গেছে...
একেবারে তর সইছিলনা..বিয়ে করে হাজির..

আমি এদের কথার মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝছিনা..

এর মাঝে ইকবাল এসে বলে এ বাবা রুমে এতো ভীড় কেন?

এক মহিলা উঠে বলে এই চলো আমরা বের হয়ে যাই সাহেবের বউ কে একা লাগবে..

আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছে কিন্তু কিছুই বলতে পারছিনা।
যদি এই আশ্রয় ও যায় এর ভয়ে...

সবাই আমায় হাত ধরে খাট থেকে নামালো..

যেই মেয়েটা আমার কানের কাছে এসে কথা বলছিল সে বলে,শোন ভাইয়া আজ তোদের গায়ে হলুদ..
ভীড় তো হবেই।

ইকবাল: আমাদের হলুদ হয়ে গেছে।এসব কয়বার করে?
যা এখান থেকে...

কথায় বুঝলাম মেয়েটা ইকবাল এর বোন...
সবাই ইকবাল কে রুম থেকে বের করে দিল।
আমাকে হলুদ শাড়ি -ফুল এসব দিয়ে সাজানো হলো..
এতো অল্প সময় এতকিছু কিকরে করলো!

উঠান এ  সবাই কি আনন্দ..আর হৈ চৈ...

একে আরেকজনের গায়ে কাদা মাখাচ্ছে।এমন অনুষ্ঠান আমি দেখিনি আগে...

আমি দেখছি আর হাসছি..

এর মাঝে  ইকবাল এর মা আমার পাশে এসে আমায় খোঁচা দিয়ে বলে,নতুন বউকে হাসতে নেই।মানুষ খারাপ বলে..

ভাবছি,এমন নিয়ম আমি কখনো শুনিনি।যার গায়ে হলুদ সে হাসবেনা আর তার গায়ে হলুদ নিয়ে সবাই মজা করবে..

শাশুড়ি হইছে..সব কিছুতে দোষ..
মানি না আমি বর তারপর তো শাশুড়ি..

অনুষ্ঠান শেষে ইকবাল এর বোন আমায় খাইয়ে দিল।
মেয়েটা খুব মিশুক।আমার চেয়ে ২-৩বছরে ছোট হবে।

সবাইকে দেখলাম কিন্তু ইকবাল এর বাবাকে দেখলাম না..

আমাকে বউয়ের মতন সাজানো হলো...
মনে হচ্ছে আমি বানর খেলা দেখাবো আর সবাই মিলে বানরকে সাজিয়ে দিল..

ইকবাল এর রুম এ ফুল আর বিভিন্ন লাল-নীল ফিতা টানিয়ে সাজিয়েছে।

এমন কেউ বাসরঘর সাজায়!

আমায় বসিয়ে যে যার মত হাসি তামাশা করছে...

কেন যে আসলাম আমি!আসা উচিৎ হয়নি।

খুব ঘুম পেয়েছে আর কেউ রুম থেকে যাচ্ছেনা..

একে একে সবাই চলে গেল কিন্তু ইকবাল কে দেখছিনা।
আমি কই ঘুমাবো তা ও বলে গেলনা..

মনে মনে গালি দিতে লাগলাম..এর মাঝেই শুনি কাঁন্নাকাটির শব্দ..

আমি বিছানা থেকে নামলাম তড়িঘড়ি করে।পাশের রুম এ গিয়ে দেখি ইকবাল এক লোক এর পা ধরে কাঁদছে...

আর পাশে ওর মা আর বোন ও কাঁদছে...

অনেকক্ষন পর বুঝলাম এটা ইকবাল এর বাবা।ইকবাল ক্ষমা চাচ্ছে।

ইকবাল এর বাবা বলছে, বাবা আমি তো তোমারে পড়া লেখা করতে পাঠিয়েছিলাম।
ভালোবাসলা তাই বলে বিয়ে পরে করা যেত না?

ভাবছি ভালোবাসা কই দিয়ে আসলো...

আর ইকবাল কাঁদছে ভালো কথা কিন্তু ওর মা কাঁদছে কেন?

কি যে নাটক চলছে বুঝছিনা..

আমায় দেখেই আবার ওর মা বলে হায় হায় তুমি এখানে আসছো কেন?

ইকবাল এর বাবা বলে থাক..এদিকে আসো মা..
আমি তার কাছে গেলাম..
ইকবাল এর মা আমার পাশে এসে বলে সালাম করো..

ইকবাল এর বাবা বললো,দেখো মা যা ভুল হবার হয়েছে।
বিয়ে আল্লাহর হুকুম ছাড়া হয়না।
আল্লাহর নাম নিয়ে ভালোভাবে সংসার করো...

আমি মনে মনে ভাবছি বৈধ বিয়ে হলেনা আমি সংসারের কথা ভাববো..
যাক কয়েকদিন..আমি নিজের পায়ে দাড়াই একবার, কারো সাথে যোগাযোগ রাখবোনা...

আমি শুধু মাথা নাড়ালাম।

রুমে আমায় আর ইকবাল কে রেখে ওর বোন ইতি বাইরে থেকে দরজা দিয়ে গেলো..

আমি: আপনার বোন কি সারাদিন বাংলা সিনেমা দেখে?

ইকবাল: কেন?

আমি: ওর মাঝে অনেক ফিল্মি বেপার আছে।

ইকবাল: আমাদের বাসায় টেলিভিশন নেই..
বন্ধুদের বাসায় দেখতে পারে..

আমি : টেলিভিশন নাই?
কিভাবে থাকেন আপনারা?

ইকবাল হাসছে...

আমি: হাসবেন পরে,এখন বলেন ওয়াশরুম কই?আমি শাড়ি পরে থাকতে পারিনা।এই শাড়ি আমার ওজনের ৩গুন।

ইকবাল: ঘরের ভিতরে ওয়াশ রুম নাই।পুকুর ঘাট এই আমরা গোসল করি.

আমি: কি?
এখন আমি কি করবো...?

ইকবাল: দাড়ান আমি ইতিকে ডাকছি।দরজা খুললে আমি চলে যাব।

ইতিকে ডাকছে,কোন সাড়া নেই।

ভালোলাগছেনা,এর মাঝে আমার ঘুম পেয়েছে খুব।

আমি: আচ্ছা আমি কি বিছানায় ঘুমাবো?

ইকবাল: হুম ঘুমান।

আমি: আপনি?

ইকবাল: আমি পড়বো..
কিছুদিন পর আমার পরীক্ষা।

আমি: সারাদিন এতো ধকল আর এখন পড়বেন?
শুনুন আপনি আবার সিনেমার নায়কের মতন নিচে শুয়ে পরবেন না।
বিছানায় ই ঘুমান সমস্যা নাই।আর আলো জ্বলুক..
আমি রাতে আলো ছাড়া ঘুমাতে পারিনা...

আমি শুয়ে পরলাম।আর ইকবাল পাশে চেয়ারে বসে আছে...
চোখে এতো ঘুম আমার তার উপর ক্লান্ত খুব...
তবুও কেন যেন ঘুমাতে পারছিনা..

আমি:আচ্ছা গল্পের বই আছে?

ইকবাল: হুম আছে..কাল পড়েন এখন ঘুমান..

আমি: আমি পড়বো না...
আমার পড়তে ভালো লাগেনা।গল্পের বই পড়লে আগে দেখি কত পৃষ্ঠা...
আর শেষ পাতা আগে পড়ি..

ইকবাল: হুম আপনি তো পড়া চোর।

আমি: দু দিন টিচারগিড়ি করে আমায় চোর বলে দিলেন।
যাক, পারলে একটা গল্পের বই পড়ে শুনান..

আমি শুনি..মাথা ভাড়ি হয়ে আছে...
ইয়ারফোন ব্যাগে ওটা থাকলে গান শুনতে পারতাম।

ইকাবাল গল্পের বই নামালো।
আমি: কার বই?

ইকবাল: জাফর ইকবাল..

আমি: নিজের নামের সাথে মিল আছে তাই?

ইকবাল হেসে বলে হুম।

আমি: কাজে মিল নাই একটু ও।

বেচারার মুখ মলীন হয়ে গেল।

আমি: গল্পের কি নাম?

ইকবাল: জলমানব..

আমি: আচ্ছা পড়েন।

গল্প শোনার মন -মানুষিকতা কিছুই নাই...
শুধু ইকবাল কে ব্যস্ত রাখতে চেয়েছি..
ছেলে মানুষ বিশ্বাস নাই..
তারপর আবার তাদের বাসা..

আমি: আচ্ছা শুনুন...আপনি বাসার সবাইকে কি বলেছেন??

ইকবাল: আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি তাই।

আমি: মিথ্যে বললেন কেন?খেঁজুর খালি খালি বলি?

ইকবাল: খেঁজুর?

ইস!মুখ ফসকে বের হয়ে গেল..এতদিন পিছনে বসে বলতাম আর আজ সামনা সামনি।

আমি: কিছুনা।

ইকবাল: সব কিছু বললে সবাই আপনাকে খারাপ ভাবতো।আমি তাদের ছেলে আমায় ঠিক ই ঘৃনা করতোনা কিন্তু আপনাকে করতো..
আর এরা গ্রামের মানুষ, অল্পতে হতাশ হয়ে যায়..

আমি: আচ্ছা আচ্ছা পড়েন আপনি।
সব পড়বেন কিন্তু।

ইকবাল পড়া শুরু করলো.."কায়িরা কোমরে হাত দিয়ে খানিকটা অনিশ্চিত ভঙ্গিতে ভাসমান....

এতটুকুই কানে গেল...
তারপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম...

ঘুম ভাঙলো দরজা নক করার শব্দে...

লাফ দিয়ে উঠে দেখি বাইরে এখনো অন্ধকার..
আর ইকবাল টেবিল এর উপর মাথা রেখে নাক ডেকে ঘুম.

ইতি ডাকছে নামাজ পড়ার জন্য..
এদের বাসায় প্রতিদিন ই ঈদ..
আমাদের বাসায় আমায় কেবল ঈদ এর দিনে সকালে ঘুম থেকে উঠাতো কিন্তু এখানে পুরো পরিবার ই পাখির আগে ঘুম থেকে  ওঠে..

ইকবাল সারারাত টেবিল এ ঘুমিয়েছে।

কি বলে ডাকবো ভাবছি..

স্যারর...স্যার..

শুনছেনা..

ইকবাল বলে চেঁচালাম।
উনি উঠেই চোখ কোনমতে খুলে বই এর দিকে তাকিয়ে আবার পড়া শুরু করলো.."হেলিকপ্টারটি বেশ বড় "।।

আমি: হইছে আর হেলিকপ্টার দেখা লাগবেনা।আপনার বোন ডাকছে...নামাজ পড়তে...

ইকবাল দরজা খুললো..

ইতি: ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে নামাজ পরে নিস।আমি এই দরজা সামনে থেকে খুলে দিলাম..

ইকবাল: ইতি আমি মসজিদ এ যাব এখন,তুই দেখিস তো লুবনার কিছু লাগে কিনা..
ইকবাল চলে গেল..
ইতিকে বললাম আমার ব্যাগ এনে দিতে,জামা পরবো..

ইতি: ভাবি নতুন বউ শাড়ি পরে থাকতে হয়.

আমি: এই নিয়ম আমি শুনিনি।আমি শাড়ি পরে থাকতে পারিনা।

ইতি: কাল আমার নানি,খালা আসবে জামা পরা দেখলে হাসবে।আমার নানি একটু সেকেলের কিনা,সব কিছুতেই দোষ খোঁজে..

আমি: সে আসবে কেন?

ইতি: বারে,নাতবউ কে দেখতে...
ভাবছি যে না নাতি তার আবার বউ।কি আর করার হাতি গর্তে পরেছে, লাথি খেতেই হবে।

শাড়ি পরিবর্তন করে আরেকটা শাড়ি পরলাম..

ইতি নামাজ যোহর থেকে পড়ি,তুমি কাউকে বলনা..
আসলে আমার খুব ক্লান্ত লাগছে..

ইতি মুছকি হেসে বললো আচ্ছা ভাবি..

ওর হাসির মানে আমি বুঝি তবে  তা গায় মাখালাম না।

ইতি: আচ্ছা ভাবি আমি যাই আরেকটু ঘুমিয়ে নেই..

আমি: আমার সাথে ঘুমাও না প্লিস..

ইতি: ভাইয়া আসবেনা?

আমি: সে তোমার রুমে যাক। প্লিস ঘুমাও..

ইতি আমার পাশে শুয়ে পরলো..

ঘুম ভাঙল চেঁচামেচি শুনে..
উঠে আমার দু মিনিট লাগে মনে করতে যে আমি কই আছি..
আসলে বাসার বাইরে আমি থাকিনি একা কখনো..

কেউ একজন বলছে,নতুন বউ ১২টা পর্যন্ত ঘুমায়..

আমি তড়িঘড়ি করে মোবাইলটা নিয়ে দেখি বাজছে ১০:১৮..

কেমন উনি?সময় ভুল বলে..যাই গিয়ে ঘড়ির কাটা চিনিয়ে আসি..

চলবে..

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ