গল্প: মাস্তানি২ (৩য় ও শেষ পর্ব)
লেখা> Abir Hasan Niloy
..
কাল নেহার বিয়ে। মিমিদের ছাদে দাঁড়িয়ে ভাবছি পুরোনো কিছু কথা। ঠিক সে সময় মিমি এসে পাশে দাড়ালো। আমি ঘুরে একবার ওর দিকে তাকালাম। কিন্তু মিমি আজ.প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত। তখনি
বললো..
- কাল কি বলতে চেয়েছিলে। (মিমি)
- হুমমম..(আমি)
- তো বলো..
চুপ করে দাড়িয়ে আছি।.একবার মিমির দিকে তাকালাম। দেখি এখনো সে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।
চারিদিক.নিরাবতা..নিরাবতা ভেঙ্গে বললাম...
- আমি যখন ইন্টার এ পড়ি তখন আমি আমার সৎ মাকে খুন করি। কারন, ঐ মহিলা আমার খুন করে। সে ছিল অহংকারী আর লোভী। শুধুমাত্র পরকীয়ার জন্য
আমার ভালো বাবাকে সে খুন করে। এটা দেখে আমিও
তাকে খুন করি। এর পর শুরু হয় আমার মাস্তানি জীবন। বিশ্বাস করো আমি নিরাপরাধ কাউকে খুন
করতাম না। করতাম সমাজের কিছু খারাপ মানুষদের।
এভাবেই চলে দুই বছর। কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন করার
সিন্ধান্ত নেই। ভেবেছিলাম ভালো মানুষ হব। সমাজে আর দশটা ভালো মানুষের মত থাকবো। কিন্তু...
- কিন্তু কি? (অবাক হয়ে)
- কিন্তু আরো একটি মেয়ের জন্য হতে পারিনি। নিজের
শহর ছেড়ে চলে আসি ঢাকাতে। এখানে এসে নতুন করে সব কিছু শুরু করি। তখনি নেহা নামের কেউ একজন আমার জীবনে আসে। মানে সে আমাকে ভালোবাসি বলতো। আমি তাকে বিশ্বাস করে সবকিছু বলেছিলাম। কিন্তু সে ছিল পুলিশ তখনি আমাকে ধরে দেয়। তবে জেল থেকে আমি পালিয়ে আসি। তোমাদের এখানে। শুরু হয় আবার মাস্তানি জীবন। আমি বোকা না। এই সমাজের কাছে আমি মাস্তান। একটা খারাপ
ছেলে। তোমাকে এসব বলছি, তবে ভেবো না বিশ্বাস
করেই বলছি। চাইলে সবার কাছে আমার ব্যাপারে বলে
দিও। কারন, আজই শেষ এখানে থাকার। আমি একটু
পরেই চলে যাবো। তোমাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করে দিও।
কথাগুলো বলে চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম। মিমির
দিকে তাকিয়ে দেখি সে কাঁদছে আমার দিকে তাকিয়ে। জিগাস করতেই বললো..
- যেও না তুমি নীল...
- কেনে??
- একটা গল্প শুনবে?
- হা,
- তুমি না বলতে, তুমি যখনই ছাদে আসো তখনি আমি
কেনো আসি? আর এসেই.তোমাকে কেন জ্বালায়? আসলে তুমি সবার থেকে আলাদা। একটা গল্প শোনো,
.
সবার মত আমারো সুখের জীবন ছিলো। মা, বাবা নিয়ে ভালোই ছিলাম আমি। রোজ কলেজে যেতাম আর
আসতাম। কিন্তু কয়েকটা ছেলে আমাকে রোজ
জ্বালাত। একদিন কলেজের অনুষ্টান হওয়াতে বাসায় আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। বড় রাস্তাতে আসতেই..
- কি ব্যাপার মিমি, তুমি এ সময়? (ঐ ছেলেটি)
- তো..
- ভালোবাসি মিমি,,তুমিও বাসো না।
- পথ ছাড়ুন..
সেদিন সে পথ ছাড়িনি।.আমাকে সে সেদিন জোর করে..
- জোর করে কি? (আমি)
- ধর্ষন করে। তারপর থেকে আমি ধর্ষিতা। এই সমাজের
চোখে আমি একজন ধর্ষিতা। কেউ আমার পাশে থাকেনি। এমনকি আমার মা বাবাও। তখনি চিনে
নিয়েছিলাম এই সমাজকে। এই সমাজের ভদ্ররুপি মানুষগুলো ধর্ষিতাকে ঘৃনা করে, ধর্ষক কে না। আমার
কি দোষ ছিলো বলো? আমি তো তার বাজে প্রস্তাবে
রাজি হয়নি আর তাতেই...
.
মিমির কথা শুনে চমকে উঠলাম। বলে কি সে? এত
সুন্দর একটা মেয়ের সাথে এত কিছু? কখন যে কেঁদে
উঠেছি। শুনেছি ছেলেদের কাঁদতে নেই। কিন্তু আজ না
কেঁদে পারলাম না।
- ছেলেটার নাম বলো..?
- কোন ছেলেটার?
- যে ছেলে তোমাকে..
- তার আর দরকার হবে না।
- কেনো?
- শুনেছি সে কদিন আগে খুন.হয়ে একটা গলির মধ্যে ফেলে.রেখেছিল কেউ।
কথাটি শুনে আবার চমকে.উঠলাম। তার মানে নেহা
কদিন আগে যাকে ধরতে.গেছিলো তাকে আগেই আমি
খুন করেছিলাম।
- হাহাহাহা,,পাপিদের
শাস্তি এভাবেই হয়
- মানে (মিমি)
- মানে ঐ ছেলেকে আমিই খুন
করেছিলাম।
- কিহহহ..
কিছু না বলেই এবার মিমির.থেকে চলে আসলাম রুমে।
বালিশের নিচে থাকা পিস্তলটি কোমরে গুজলাম ফুল
লোড করে। মিমি হয়ত ভাবছে, আমিও সবার মত
তাকে অবহেলা করে আসলাম। কিন্তু না, আমার
যে কাজ আছে।
..
(পরেরদিন)
আজ নেহার বিয়ে। চারিদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। মিমিদের বাড়ি ছেড়ে এখন চলে এসেছি।.আসার আগে দেখলাম মিমি ছাদে দাড়িয়ে আছে। হয়ত সে ভাবছে তার পাশে.দাড়ানোর মত কেউ নেই।.কিন্তু আমিও যে নিরুপায়।.নেহার উদ্দেশ্যে চলে আসলাম। নেহাদের বাড়িতে আসতেই.দেখি পুলিশ চারিদিকে। মনে মনে হাসলাম। ঢাকাতে যত গ্যাং ছিলো, সবাইকে.বলেছি এই পুলিশ যেন একটাও দাড়িয়ে না থাকতে পারে। গ্যাং এর ছেলেরা তাই করেছে। তার মানে রাস্তা পরিষ্কার। তবে আরেকটু অপেক্ষা। তারপরেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
হুম অপেক্ষার প্রহর শেষ। নেহার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হল। নেহা যখন গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি..
- নেহা...? (আমি)
- তুমি...?
- হুমম..
- পুলিশ...(চিৎকার করে)
- হাহাহা,,কেউ নেই..
- কেনো এসেছো?
কিছু না বলেই কোমরে থাকা পিস্তলটি হাতে
নিয়ে, ডান পায়ে গুলি করলাম। নেহা ও মাগো বলে
গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে.দাড়িয়ে পড়লো।
- কেউ যদি নেহাকে এখন টাচ.করে আর আমার কাছে আসে.তাকেই মেরে ফেলবো।.(আমি)
কেউ আর এগোয়নি, তখনিআরেকটা গুলি করলাম
নেহার বা পায়ের দাপনাতে। তখনি নেহা পড়ে গেল।
- নেহা, চাইলেই মেরে.দিতে পারি। কিন্তু মারবো না তোকে। তুই যতদিন বেঁচে থাকবি ততদিনই আমার কথা
মনে পড়বে। তোর স্বামী.তোকে অবহেলাতেই
রাখবে। পঙ্গু বলে যখন.তোকে ডাকবে তখন আমার
কথা মনে পড়বে। এটা হল বিশ্বাস নিয়ে খেলার
শাস্তি। আর হা পারলে তোর পুলিশকে বলিস
আমাকে ধরে আনতে।
আর কিছু বললাম না। পিস্তলটি ওর হাতের কাছে ফেলে চলে আসি। সবাই নেহাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে লাগলো। আজ শান্তি পেলাম। আজ ছাড়তে হবে এ শহর। ছাড়তে হবে গ্যাং। চলে যাবো অন্য শহরে।
যেখানে থাকবে.বিশ্বাসের দাম।
...
মিমিদের বাড়ির মধ্যে ঢুকছি। আমি জানি মিমি.এখনো সেই ছাদেই দাড়িয়ে আছে।
- মিমি..
চমকে উঠে আমার দিকে তাকালো..
- চলো..(হাতটি ধরে)
- কোথায়..?
- জানিনা, তবে এই ভদ্ররুপি সমাজের থেকে অনেক দুরে।
যেখান বাস করবো আমি আর তুমি। ভালোবেসে থাকবো দুজন একাত্বের মাঝে। বুনবো কিছু ভালোবাসার স্বপ্ন। যে স্বপ্নে থাকবে শুধুই পবিত্রতা। বউ হয়ে থাকবে আমার পাশে সারাজীবন।
- নীল আমি যে ধ***
- হাহাহাহা,,তো তাতে কি? তুমি কি মানুষ না? অপবিত্র তারাই, যারা বিশ্বাস নিয়ে খেলা করে। তুমি মোটেও অপবিত্র না। তোমার মনে নেই কোনো ছলনার দাগ। নাকি তুমি আমার সাথে যেতে চাইছো না আমি মাস্তানি করি বলে?
- ঠাসসস..ফাজিল ছেলে, আমি কি একবারো বলেছি? দরকার নেই এ সমাজে থেকে। যেখানে অপরাধীদের মুল্য নেই। আছে খালি যারা অপরাধ করে তাদের।
আমিও তো চাই, কোন এক রাজকুমার এসে আমাকে
নিয়ে যাক। আজ পেয়েছি। এত সহজে কি ছেড়ে দিই??
মিমির হাত ধরে চললাম অজানার উদ্দেশ্যে। যেখানে জানবে না।আমাদের কথা। জানবে না আমদের অপবিত্রতাকে।
পৃথিবীর মানুষ বড়ই অদ্ভুত।তারা সমাজে ভালো মানুষ সেজে খারাপদের কথা শোনাতে পিছুপা হয় না।
কিন্তু সে কেনো খারাপ হলএটা নিয়ে তাদের মাথা
ব্যাথা নেই। মন চাচ্ছে যেয়ে আবার সেই সব ভালো
মানুষরুপি মানুষদের আজ রাতেই সব গুলি করে মারি। কিন্তু না। আজ থেকে ভালো হতে হবে। হতে হবে একটা মানুষ। থাকবে না কোনো খুন। থাকবে শুধুই
ভালোবাসা। মিমির পাশে থাকবো সবসময়।
মিমির দিকে তাকিয়ে দেখি সে কাঁদছে। আমি আর
মানা করলাম না। কাঁদুক আজ।সে, আমি জানি এটা কষ্টের কান্না নয়। কান্নাটা হল সুখের। চলেছি অজানার উদ্দেশ্যে। ভালোবেসে থাকবো দুজন একসাথে। আজ শেষ করলাম আমার এই মাস্তানি জীবন।
(৫৪)
--------(সমাপ্ত)--------রিপোষ্ট
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ