"""ইরা এবং নীল""""""""
ইদানিং আমার ভিতর আধ্যাত্বিক কিছু ভাব লক্ষ্য করছি, কিছু কিছু ব্যাপারে আগাম কথা গুলো ফলে যাচ্ছে।
সেদিন বিকেলে রাতুল মাঠের এক কোনে মন খারাপ করে বসেছিলো,মন খারাপের কারন, অনেক চেষ্টা করেও তৃষার সাথে রিলেশন হয়নি, হবার সম্ভাবনাও নেই।রাতুল মিষ্টি চেহারার গোবেচারা টাইপের ছেলে অন্যদিকে তৃষা আল্ট্রামর্ডান, তেলে জলে মিশ খাবেনা এটাই স্বাভাবিক,,তবুও রাতুলের পিঠ চাপরে দিয়ে বলেছিলাম," মন খারাপের কিছু নেই কাল বিকেলের মধ্যই নীল খাম পাবি"।
দু,দিন পর ছেলেটা মিষ্টির প্যাকেট আর নতুন একটা পাঞ্জাবি নিয়ে হাজির,
এত খুশির কি হল রে?
তৃষা রাজি হয়েছে(লাজুক একটা হাসি দিয়ে)।
তার পর থেকেই পাড়ায় আমি হিট,,হিট থেকে সুপার হিট।
আমার সব কথাই যে ফলে যায় তা নয়, দু একটা মিসটেক হতেই পারে এটা কোন ব্যাপার না।
তবে আমার আধ্যাতিক ব্যাপারটা ইরা মেনে নিতে পারেনি, ওর সাথে দেখা হলেই একটাই কথা বলে,"এসব ভন্ডামি ছেড়ে ভাল হয়ে যাও, ভাল হতে পয়সা লাগে না, তুমি কি জীবনে সিরিয়াস হবা না"।
তোমার কোন সমস্যা হলে জানাবা,বিশেষ করে হৃদয় ঘটিত" এক তুড়িতেই সমাধান করে দেব,গম্ভীর ভাবে বলেই পাশ কাটিয়ে চলে আসি, পিছন থেকে ইরার দীর্ঘশ্বাসটা স্পস্ট শুনতে পাই।রুপবতী মেয়েদের পাশ কাটিয়ে চলে আসাটার মাঝে অন্যরকম একটা আনন্দ আছে, সবাই আনন্দটা নিতে পারে না, রুপবতীদের পাশ কাটিয়ে আসার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে।
সারারাত প্রকৃতি দর্শন করে ভোরের দিকে রুমে এসে হাত পা টান করে ঘুমাইছিলাম দুপুরের দিকে ঘুম ভাঙার কথা।
কিন্তু মুখের উপর ঘন ঘন ঠান্ডা কিছু স্পর্শে ঘুমটা ছুটে গেল, কোন রকমে চোখটা খুলে দেখি পানির গ্লাস হাতে ইরা, ঠোটে সূক্ষ্ম একটা দুষ্টুমির হাসি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
পরনেনীল শাড়ি, খোপায় বেলী ফুলের মালা জড়ানো, ফুলের গন্ধে ঘরটা ভরে গেছে,
ইরা রুপবতী, আজ ইরাকে পরীর রানীর মত দেখাচ্ছে, যদিও আমি পরীর রানী দেখিনি তবে আমার ধারনা ইরাকে দেখলে পরীর রানীও লজ্জা পাবে।
এই মূহুর্তে যদিও আমার আহ্লাদে গদ গদ হবার কথা তবুও বেশ রাগ ঝাড়বার চেষ্টা করলাম,,
তোমারসমস্যাটা কি? যন্ত্রনা দেবার জন্য তো সারাটা দিন পরেছিলো, আর এভাবে সাজছো কেন? পেত্নী মনে করে ভয় পাইছিলাম।,,,,
তাড়াতাড়ি উঠে তৈরী হয়ে নাও মামার বাসায় যেতে হবে, মামা তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে।,,,,,,,,
তোমার মামা আমার অপেক্ষায় থাকবে কেন?
আমি কি চোর ডাকাত?,,,,,,
আমি অত কিছু জানিনা এক ঘন্টার ভিতর তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছে,না গেলে পুলিশ পাঠিয়ে ধরে নিয়ে যাবে।,,,,,,,,,,,
আচ্ছা তুমি বাইরে বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,(ইরার মামা পুলিশের এসপি, ঝামেলা করে লাভ কি)।
নরম সোফায় বেশ আরামে বসে আছি, ঘর ভর্তি মানুষ, ইরার মামা আমার সামনের সোফাটায় বসে আছে, আমাকে বেশ খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে আসামিদেরও বোধ হয় এভাবেই দেখে।
আমি মুখটা হাসি হাসি করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি(কৃত্রিম ভাবে হাসাটা বেশ কষ্টের)।
ইরা এটাই কি সেই মানুষ? ইরার দিকে তাকিয়ে মামা প্রশ্ন করলেন।,,,
জ্বি মামা ইনিই সেই বিখ্যাত মানুষ,,,,,,
ওকে সব বলেছিস?,,,,
না মামা সময় পাইনি তুমিই বল,,,,
ইরার মামার মুখে আমাকে আনানোর কারনটা শুনলাম, চোখটা বন্ধ করে পরিষ্কার দেখতে পেলাম আমাকে থানায় নিয়ে বেশ ক,জন পুলিশ গায়ের জোরে পেটাচ্ছে আর ইরার মামা সামনে বসে পেটানোর কায়দা বলে দিচ্ছে।
""""""
ঘটনা হল, গতকাল রাতে বাসায় পার্টি হয়েছিলো, ইরার মামীর জন্মদিন উপলক্ষে,
ইরার মামা একটা ডায়মন্ডের নেকলেস স্ত্রীকে জন্মদিনের উপহার দিয়েছেন, অনুষ্ঠানের পুরো সময়টাতে ওটা গলায় ছিলো, মেহমানদের বিদায় দেবার একটু আগে ইরার মামী খেয়াল করলেন নেকলেসটা গলায় নেই, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাওয়া যায়নি, এসপি সাহেবের অনুরোধেই সবাই রাতে এখানেই ছিলো,
যেহেতু মেহমানরা সবাই গন্যমান্য ব্যক্তি সেহেতু সবাইকে সার্চ করাও সম্ভব না তাই আমাকে আনা হয়েছে আধ্যাতিক ক্ষমতার বলে চোর এবং নেকলেস উদ্ধারের জন্য।
আমাকে ফাসানোর ব্যবস্থা যে ইরাই করেছে সেটা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছি।
আমাকে ফাটা বাঁশের চিপায় আটকিয়েছে ভেবে ইরা বেশ আনন্দিত, মিষ্টি হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
পিঠ বাঁচাতে একটা বুদ্ধি বের করলাম।
কাগজে কিছু জিনিসের নাম লিখে ইরার মামাকে ধরিয়ে দিলাম এবং এক ঘন্টার ভিতর সব কিছুর ব্যবস্থা করতে বললাম, আমি জানি সব কিছু পেলেও একটা জিনিসের ব্যবস্থা হবে না, ব্যবস্থা না হওয়া মানে আমার প্রস্থান।
লিষ্টটা ছিল এমন,,,
১/ বেশ বড় সাইজের একটা মিষ্টি কুমড়া,
২/ আড়াইশো গ্রাম কালোজিরার তেল,
৩/ দেড় হাত লম্বা অব্যবহৃত ধারালো ছুড়ি,
৪/ চব্বিশ বছর বয়সী একজন কুমারী মেয়ে(যে মেয়ে প্রেমও করেনি)।
সব কিছু খুব সহজেই পাবে, কিন্তু চব্বিশ বছরের প্রেমহীন মেয়ে,এ যুগে অসম্ভব।
বিশ মিনিটের মধ্য সব সংগ্রহ শেষ, এসপি সাহেবের চব্বিশ বছর বয়েসী যে একটা মেয়ে আছে সেটা তো কেউ আমারে আগে বলে নাই।
যে চোর তার গলা আপনা আপনি কেটে যাবে, এবং এই মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী না,,,,,
ইরার মামাকে দিয়ে এটা লিখিয়ে নিলাম।
সবার দিকে আড় চোখে তাকালাম, কাউকে ঘামতে বা ভয় পেতে দেখলাম না।
ইরা এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেন আমি যে ভন্ড তা এখনি প্রমান হবে।
মেঝেতে বসে সব সাজিয়ে নিলাম, আমার সামনে মিষ্টি কুমড়া রাখলাম পাশে ছুড়িটা,
ইরার মামাত বোন নিশি বেশ রুপবতী তবে যথেষ্ট অহংকারী তাকে আমার সামনে বসালাম কুমড়া দু হাত দিয়ে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে বললাম যতক্ষন পর্যন্ত আমার কাজ শেষ না হবে।
নিশির তাকানোটা দেখেই বুঝেছিলাম আমি ব্যর্থ হলে এই মেয়ে ছুড়িটা দিয়ে আমার গলা কাটবে।
তেলের বতলটা হাতে নিয়ে মন্ত্র পড়তে শুরু করলাম,মন্ত্র বলতে আমার প্রিয় কবিতা" প্রেমের দর্শন" বিড়বিড় করে আবৃত্তি করছিলাম।
মন্ত্র পড়ে তেলটা কুমড়ার উপর ডেলে ছুড়িটা হাতে নিলাম,,,,
সবাইকে অনুরোধ করলাম চোখটা বন্ধ করতে, কারন যখনই আমি ছুড়িটা দিয়ে কুমড়াটা দু,ভাগ করবো সাথে সাথে চোরটার গলাটাও দুভাগ হয়ে যাবে, দৃশ্যটা কেউ সহ্য করতে পারবে না তাই চোখ বন্ধ।
ছুড়িটা কুমড়ার উপর ধরে আছি সবার চোখ বন্ধ, একমাত্র ইরা চোখ বন্ধ করেনি, আমার পালানোর দৃশ্যটা হয়তো উপভোগ করবে।
দিলাম কোপ বলার সাথে সাথে এক ভদ্রমহিলা " প্লিজ থামুন দয়া করে" বলেই অঞ্জান হয়ে গেল।
ছুড়িটা ফেলে দিয়ে সোফায় বসলাম,
সবাই চোখ খুলে মেঝেতে পরে থাকা মহিলার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমার গলা কাটতে না পেরে নিশির খুব কষ্ট হচ্ছে, কষ্টটা আরেকটু বাড়াতে বললাম," নিশি এক মগ কফি বানিয়ে আনো, খুব বেশী গরম হবে সাথে বিস্কিট বা কেক দিতে পারো, ব্রেকফাষ্টা এখনও হয়নি।
ইরা কঠিন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, যাকে বলে অগ্নি দৃষ্টি,,,
রাগার কারনে ইরাকে আরো সুন্দর লাগছে,
সুন্দরের সৃষ্টি শুধু দেখবার জন্যই,
সুন্দর কখনও ছুঁয়ে দেখতে নেই,
ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে হলেই জন্ম নেবে একটা কষ্ট।
সব রুপবতীরাই কি রাগী হয়?
রাগ অবশ্য রুপবতীদের অলংকারের মতই সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়।
""মামুন হাসান,,
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ