#অবৈধ বিয়ে। (১ম পর্ব)
লেখা: Umme Nipa
আমাদের নিচ তলায় এক ব্যাচেলর এসেছে..
এর আগেও অনেক এসেছেন তবে এই ব্যক্তি একটু ভিন্ন ধরনের।
খাঁটি ধার্মিক বলা যায়।
সবসময় পা পর্যন্ত পাঞ্জাবি, আবার কম বয়সে দাড়ি ও রেখছে।
প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙে তার ডাক শুনে.
নামাজ পড়তে উঠায় সবাইকে।
ধীরে ধীরে আমার আর আমার বান্ধবীদের হাসির পাত্রই হয়েগিয়েছিল সে।
আমরা সদ্য কলেজে পড়ুয়া। যা কিছু পাই তাই নিয়ে মজা নিতে পছন্দ করি।
গতকাল জানলাম তার নাম ইকবাল।সে গনিত নিয়ে অনার্স করছে।
যেমন চলা ফেরা আমি ভেবেছিলাম ইসলামী ইতিহাস হবে হয়তো..
বাবা ইকবাল এর সাথে রোজ নামাজে যেতে যেতে ভালো সম্পর্কই হয়ে গিয়েছিল।
বাবা প্রায় ই আমায় দিয়ে ইকবাল কে খাবার পাঠাতো।
আমি খাবার নিয়ে গিয়ে দরজা নক করলে দরজা খুলতো ৩০মিনিট পর।
কি যে করে আল্লাহ ই ভালো জানে।
দরজা খুলেই সালাম।
আমি কোন ভাবে সালাম এর উত্তর নিতাম।লজ্জাও লাগতো..
আমার চেয়ে বয়সে বড় একজন আমায় সালাম দিচ্ছে।রাগ হত খুব।
খাবার দিয়ে এক মিনিট ও দাড়াতাম না।
সেদিন আমি আর আমার বান্ধবী জবা ছাদ এ বসে আড্ডা দিচ্ছি এর মাঝেই ইকবাল সাহেব ছাদ এ আসলো তার পাঞ্জাবী নিতে।
যেই আমাদের দেখছে সে তাড়াহুড়া করে ছাদ থেকে নেমে গেল।আমরা হো হো করে হেসে দিয়েছিলাম।
এরকম হাসার কাজ সে একটা -দুটা করেনায়।
আমরা ওনাকে ক্ষ্যাত ই বলতাম।আমাদের দেখলেই মাথা নিচু করে হেটে যেত। আমরা বাঘ-না ভাল্লুক কে জানে?
বাবা হঠাৎ বাসায় এসে বললো,ইকবাল কাল থেকে আমায় গনিত পড়াতে আসবে।
আমি বললাম সে তো চেহারার দিকেই তাকায়না।গনিত কিভাবে বুঝাবে?
বাবা বলে,গনিত বুঝাতে চেহারা দেখা লাগেনা।
খুব বিরক্তি লাগছিল।একজন অসামাজিক মানুষ এর কাছ থেকে কোন ধরনের জ্ঞান নেয়া আমার জন্য অপমানের ছিল।
তাকে শিক্ষক মানাটাও লজ্জার ছিল।সবচেয়ে বড় কথা এখন চাইলেই আমি তাকে নিয়ে ঠাট্টা করতে পারবোনা...
দুপুর হতেই আমি তার বাসায় গিয়ে নক করলাম।সেই আবার দরজা খুলছেনা।
কিছুক্ষনপর দরজা খুলে আবার সালাম...
আমি: আপনাকে কি বাবা পড়াতে বলেছে আমায়?
ইকবাল: জ্বি..
আমি: আসলে আমি পড়বোনা..
ইকবাল: আসলে চাচা আমায় বলেছে আজ সন্ধ্যায় যেতে..
আমি: চাচা দিয়ে কি হবে?আমি পড়বো সো আমার ইচ্ছের দাম অনেক।আমি এখন কলেজে উঠেছি বুঝলেন।এখন আমি হাতে খড়ির বাচ্চানা যে বাসায় মাস্টার রেখে ক-খ শিখবো।
আমি কলেজের স্যার এর কাছেই পড়বো।আপনি বাবাকে বলবেন আপনি পড়াতে পারবেন না।
ইকবাল: আমি চাচাকে মিথ্যে বলতে পারবোনা।
উফ! রেগে চলে আসলাম এর চেয়ে বাবাকে ম্যানেজ করাও সহজ।
ঘড়িতে ঠিক কাটায়-কাটায় ৭টা। ইকবাল চ্যার হাজির।ওনারে স্যার বলতেও ইচ্ছে করেনা।
এতো বলার পর ও লজ্জা নাই।চাচা পাইছে একজন।
মা বললো যাও পড়তে ইকবাল বসে আছে।
আজব,আমি চা খাব তারপর যাব। পড়াতে আসলে একটু অপেক্ষা করতে হয়।
শুনিয়ে শুনিয়ে ই বলেছি।
পড়ার রুম এ গিয়ে দেখি সে হাতে একখানা বই নিয়ে নিচে তাকিয়ে পড়ছেন।
নিশ্চই গাইড দেখছেন।গনিত এ পড়লেই কি সে পিথাগোরাস হয়ে গেল নাকি?
পাশে গিয়ে সালাম দিলাম।আজ আর উনি আমায় সালাম দিচ্ছেনা।
উনি সালাম এর উত্তর নিয়ে বই টা পাশে রাখলেন..
আমি বই টা আড় চোখে দেখছি আসলে ওটা কি গাইড কিনা।গাইড হলেই বাবাকে জানাবো সে চুরি করে গনিত দেখে দেখে করায়।
অনেক চেষ্টা করেও বইয়ের নাম দেখতে পারলাম না।
এর মাঝেই উনি বললেন,গনিত বইটা বের করেন।
আমি হা করে তাকিয়ে আছি,শিক্ষক হয়ে ছাত্রী কে আপনি করে বলে এ আবার কেমন শিক্ষক!
১টা ঘন্টা আমি কোন মতে বসেছি আর উনি চুপচাপ খাতায় গনিত করছেন।
মনে হয় ওনাকে আনা হয়েছে গনিত এর নোট লিখাতে..
কিচ্ছুক্ষন পর পর ই বলছে না বুঝলে বলবেন...
আমি তো কিছুই বুঝিনাই তাই আর বলিও নাই।ওনার কাজ গনিত করিয়ে উনি চলে গেলেন।
উনি যাবার পর ই দেখি টেবিল এ সেই গাইড রাখা।ভুলে রেখে গেছেন।
আমি তাড়াহুড়া করে খুলে দেখলাম ওটা আসলে "মক্বছুদুল মুমীন"
বই খুলেই দেখি লেখা "বেহেস্তের পথ"
আর সাথে এক মিষ্টি ঘ্রান..কোন সুগন্ধি আতরের।
যে খাতায় ইকবাল অংক করেছে সেই খাতা-কলম থেকেও সেই একই ঘ্রান।ঠিক যেন শেফালী ফুলের ঘ্রান...
তার মানে এই আতর খেঁজুর ই দিয়ে এসেছিল।
ইকবাল কে আমি তার পিছনে খেঁজুর বলেই ডাকতাম...
চলবে..
#অবৈধ বিয়ে ২য় পর্ব।
লেখা: Umme Nipa
বই নিয়ে নিচের তলায় গেলাম।দরজা নক করলাম..
খেজুর আজ সাথে সাথেই দরজা খুলছে..
আবারো সে সালাম দিল।
কি অদ্ভুত সে ভুলেই যায় সে আমার শিক্ষক..
আমি: এই নিন আপনার বই..
ইকবাল: বই এর নাম দেখেছিলেন?
আমি: মানে?
ইকবাল: না কিছুনা...
তার মানে আমি যে আড় চোখে দেখেছি তা উনি খেয়াল করেছেন..
আমি: আচ্ছা আমি আসি..
আসলে যতটা হাদা ভাবি উনি তা নন।সব বুঝেও না বোঝার ভান করে।
আচ্ছা উনি আবার জঙ্গি নয় তো..
বাবা আসলে মানুষ না বুঝেই বাসা ভাড়া দেয়।এসব রহস্যজনক মানুষ খুব ভয়ানক হতেই পারে...
আমার মনে হয় উনি ঘরের মধ্যে বোমা বানায়।তাই দরজা খুলতে দেড়ি হয়..
বাসায় যাবার পর মা জিজ্ঞেস করলো কই গিয়েছিলি..
আমি: জঙ্গির বাসায়..
মা হা করে তাকিয়ে আছে।
আমি ফিসফিস করে বললাম মা আমার মনে হয় ইকবাল জঙ্গি..
মা ভীত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলছে কি বলিস?
তুই কি ওর হাতে বন্দুক-টন্দুক দেখছিস?
আমি: না তা দেখিনাই তবে চেষ্টা করলে দেখতে পারবো.তাছাড়া আমরা তার বাসার কাউকেই আসতে দেখিনি।
এর মাঝেই বাবা আসলো..
আমায় জিজ্ঞেস করতেছে,কি লুবনা পড়া কেমন লাগছে?
এর মাঝেই মা উঠে বললো,রাখো তোমার পড়া, তুমি দেখে শুনে লোক উঠাবানা বাসায়।
বাবা: কেন কি হয়েছে?
মা: ছেলেকে আমার সুবিধার মনে হয়না...
বাবা হাসি দিয়ে ভিতরের কক্ষে চলে গেল।
মা আমার পাশে এসে বলে তোর বাবা হাসে হাসুক,সে গুরুত্ব না দিলেও আমি ওই ছেলেরে বাসা থেকে বের করেই ছাড়বো..
আমি: কিভাবে?
মা: পানি দিবনা।ওর বাসার মেইনসুইচ অফ করে রাখবো..ও নিজেই বাসা ছেড়ে দিবে।
আমি: মা তাতে যদি সে আমাদের উপর রেগে বোমা মারে..
মায়ের মুখটা এমন ভাবে শুকিয়ে গেল মনে হচ্ছে আমরা ১৯৭১সালের যুদ্ধে অবস্থান করছি..
আর আমাদের আশে পাশে ইকবাল হল পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য।
আমি হেসে বললাম মা এতো চিন্তার কিছু নাই।সে জঙ্গি হলেও তোমার কিছু করবেনা।তুমি যে মজার মজার খাবার দেও তাকে, তাতে সে কাউরে বাঁচিয়ে রাখলে তা হবা তুমি..
মা পাশের রুমে গেল আর বললো,জঙ্গিদের আবার মা-বাবা!
পরের দিন সে ঠিক সময়ে হাজির।
মা মাঝে মাঝেই আমাদের পড়ার কক্ষে ঘুরে যায়। আমি জানি মা এখনো ইকবাল কে সন্দেহ করছে।
ইকবাল যাতে বুঝতে না পারে তার জন্য মা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাহানা নিয়ে আসে।এই যেমন লুবনা আমার ব্যাগ টা দেখছিস??
আর ইকবাল সেই নিজের মতন করিয়ে একের পর এক গনিত কষে যাচ্ছে।
পরের দিন মা বললো ইকবাল এর বাসায় খাবার নিয়ে যাবে।
আমাকে পড়াতে আসার পর আমি আর খাবার নিয়ে যাইনা।মা ই নিয়ে যায়...
মা বললো আজ তার সাথে আমাকে ও যেতে। আমরা বাহানা করে ঘরের ভিতর গিয়ে দেখবো আসলে বোমা আছে কিনা..
বা কোন প্রমান..
নিজেদের কেমন গোয়েন্দা -গোয়েন্দা লাগছে...
মা সামনে খিচুড়ি নিয়ে আর আমি পিছনে...
মা শিখিয়ে দিল যে সে ভিতরে যাবার সাথে সাথে আমাকেও যেতে।
মা ইকবাল এর সাথে কথা বলবে আর আমি এদিক -সেদিক প্রমান খুঁজবো।
মা এখানে ডিবির প্রধান আমি তার চামচা আরকি...
ইকবাল এর ঘরের সামনেই গিয়ে দেখি দরজা খোলা...
মা বললো: লুবনা বাসা রেখে পালালো নাকি?
আমি: মা হতেও পারে।আমরা সন্দেহ করেছি বুঝে গেছে।
আচ্ছা এটা আবার ফাঁদ নাতো..?
আমাদের খালি হাতে ভিতরে যাওয়া কি ঠিক হবে?
মা: খালি হাত কই?হাতে তো খিচুড়ি আছে।
আমি: উফ!হাতে ছুড়ি বা গুলি নিয়া আসিনাই তো..
মা: তা পাবো কই,ইস! বাসায় দা -বটি ছিল তো..
আস্তে আস্তে দুজন ভিতরে গেলাম।আমার জঙ্গির উপর ভরসার চেয়েও ভরসা ছিল ইকবাল এর উপর।সে ক্ষতি করার মতন না।
এই ভেবে আমি আগে ঢুকলাম..
গিয়ে দেখি বিছানায় কাথা গায়ে শুয়ে আছে।
এই অবেলায় শুয়ে আছে?
মা ঢাকলো কোন সাড়া নেই..
আমি : মা আত্মঘাতী হলো নাকি?
মা: চুপ থাকতো।সে গিয়ে ইকবাল এর পাশে বসে ডাকছে।
আমি এই ফাকে খাট এর নিচে, টেবিল এর উপর...আর আছে এক পুরাতন আলনা তাতে তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম।
চারদিকে খোঁজার পর দু একটা তেলাপোকার ডিম ছাড়া কিছুই জুটে নাই..
কিছুক্ষন পর দেখি মা ইকবাল এর মাথায় পট্টি দিচ্ছে।
আর বাবা বাবা করে সম্মোধন করছে।
কি হলো বুঝলাম না।এই লোক জাদু করতে জানে নাকি!
আমি: মা চলো যাই।
মা: তুই যা আমি পরে আসবো।
আমি: কি বলো?এখানে থাকা ঠিক হবেনা।
মা: তুই দেখছিসনা ছেলেটার জ্বর।
জ্বরের ঘোরে মাকে ডাকছে।
আমি: মাকে ডাকছে,তোমাকে তো না।
মা: তুই যা তো উপরে।আর গিয়ে তোর বাবাকে এখানে পাঠিয়ে দে।উনি এসে ডাক্তার আনলে আনবে।
ধূর!আমি মাকে ও হাতছাড়া করলাম।
ছেলে নেই বলে যে কোন ছেলেরেই নিজের সন্তান ভাবা ওনার অনেক আগের রোগ...
বাসায় গিয়ে বাবাকে পাঠিয়ে দিলাম।
সন্ধ্যা হলো,যেহেতু জ্বর তাহলে আজ আর পড়াতে আসবেনা।
তাই আমি কানে ইয়ারফোন গুঁজে গল্পের বই পড়তে বসলাম...
"রবীন্দ্রনাথ এর মহামায়া"
যে চেয়ারে ইকবাল বসে সে চেয়ারে পা রেখে টেবিল এর উপর বসে পড়ছি আর পা নাড়াচ্ছি।
এর মাঝেই ইকবাল হাজির..
আমি তড়িঘড়ি করে নামলাম।আমি নামার সাথে সাথেই উনি চেয়ারে বসলো..
আমি: আপনার না জ্বর?
ইকবাল: এখন একটু সুস্থ।
আমি মুখ বাকিয়ে পড়তে বসলাম।
এর মাঝে মা এসে কি যে বাবা-বাবা শুরু করে দিল..
আমার বাবার চেয়েও মা বেশি ফিদা হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।
আমায় মা ডাক দিয়ে ভিতরে নিল, আমি গেলাম মা বলে, তুই পড় আমি ইকবাল এর জন্য সামনের দোকান থেকে কিছু খাবার নিয়ে আসি...
বেচারা এই জ্বরের মাঝে এসেছে.
আমি: মা এই জঙ্গির কাছে রেখে যাবা?
মা: যা পড়তে বস..
মা চলে গেল..
ইকবাল বার বার কাশি দিচ্ছে আর আমায় বহুপদী সমীকরন বুঝাচ্ছে।
তবুও বুঝানো থামাচ্ছেনা।
কিন্তু মা যাবার ১০মিনিট এর ভিতর ই বিদ্যুৎ চলে গেল.....
চলবে...
#অবৈধ বিয়ে ৩য় পর্ব।
লেখা: Umme Nipa
আমি ছোট বেলা থেকেই খুব সাহসী মেয়ে।আমি অন্ধকার কে ভয় পাইনা।
জীবন কোন চলচিত্র নয় যে বিদ্যুৎ গেল আর আমি ভয়ে কাউলে জড়িয়ে ধরবো...
তা আবার খেজুরকে!
আমার ভয় ভুতে নয়,আমার ভয় মানুষে।
মায়ের উপর রাগ বেড়ে যাচ্ছে। আমাকে সে বাঘ এর মুখে ফেলে গেল।
ছেলে আর বাঘ এক ই।মা হয়ে পারলো কি করে।
ইকবাল ওর পকেট থেকে মোবাইল বের করে আলো জ্বালালো আর আমি তখন উঠে রান্না ঘরে গেলাম মোম খুঁজতে...
সব ঘর অন্ধকার।কবরের মতন লাগছে।আর ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
রান্নাঘরে তাকের উপর হাত দিতেই গরম তরকারীর কড়াই আমার গায়ে পরলো।আমার চিৎকার শুনে ইকবাল ফোন নিয়ে রান্নাঘরে আসলো।
আমি ওনাকে রান্নাঘরে দেখে পুড়ে যাওয়ার ব্যাথা ভুলে গেছি ভয়ে।
ইকবাল: আচ্ছা একটু দেখে শুনে কাজ করা যায়না?
আমার ফোনটা নিয়া আসতেন।
এই নেন এই আলোয় খুঁজুন এখন...
আমি আবার তাকের উপর খুঁজছি।হঠাৎ খেয়াল করলাম রান্না ঘরের দরজার পাশে অনেক লোকের জটলা...
একেক একেকজনের হাতে টর্চ।সবাই আমাদের দিকে মারছে...
এর মাঝেই আমার ফুপাতো ভাই রুবেল আসলো ইকবাল এর পাশে..
ইকবাল: কি হয়েছে ভাই?
রুবেল: আবার জিগাছ কি হইছে?
এখানে বসে নষ্টি ফষ্টি করছ আর জিগাস কি হইছে এই বলেই ইকবাল এর হাত ধরে সামনের রুমে নিয়ে গেল...
আমি: ভাইয়া কি বলো এসব...
রুবেও: ওই তুই চুপ কর।তুই যদি আমার আপন বইন হইছি আমি তোরে আজ খুন করতাম।
মামা আসুক আজ,কি করা লাগে করুম...
যেই মানুষের ভয়টা আমি পেয়েছিলাম ঠিক সেটাই হলো...
আমার ইচ্ছে করছে যদি গায়েফ হয়ে যেতে পারতাম।এই লজ্জা নিয়ে মানুষ কি করে বাঁচতে পারে...
মনে মনে দোয়া কালাম পড়ছি আর কাঁদছি...
আশে-পাশের সব প্রতিবেশী আমাদের বাসায় হাজির।
কেউ বলছে মাইয়াটারে ভালো ভাবছিলাম।এগুলার মধ্যে এতো..
সবাই যে যার মতো ঘটনা বানাচ্ছে।আর আমার দিকে বাজে ইঙ্গিতে তাকাচ্ছে।
১০টা খুন করলেও তাকে যেভাবে ধরে না রাখে, ইকবাল কে তার চেয়েও খারাপভাবে দুপাশ থেকে দুজন ধরে রাখছে।
এতো মানুষ এর ভীড় কাটিয়ে পিঁপড়াও পালাতে পারেনা তারপর তো মানুষ।
অনেকের কথা শুনে বুঝলাম,আমার ফুপাতো ভাই ই সবাইকে ডেকে এনেছে।
আজ আমার বড় ভাই নেই বলে যে কেউ আমার উপর জুলুম চালাতে পারছে...
পাশের বাসার কাকি বলছে আমায়,ওই মাইয়া তোমার মা কই?
যে মহিলা কিনা দু দিন আগেও আমায় মা সম্বোধন করতো সে আজ আমার সাথে এমন করে কথা বলছে..
আমি কোন জবাব দিলাম না...
এর মাঝেই পাশের একজন বললো আরেহ মহিলা মনে হয় মাইয়া দিয়া ব্যবসা করে।
ঠিক মাইয়ারে ছেলের কাছে রেখে ঘর ফাঁকা করে গেছে..
কথাগুলি আমার শরীরে পেরেক বিঁধে দেয়...
পাশের বাসার কাকা: এই এলাকা ভদ্র এলাকা..এখানে এসব চলবেনা।আমাদের ও মেয়ে বউ আছে ঘরে..মানসম্মানের বেপার...
মনে মনে ভাবি আমি কি এমন পাপ করেছিলাম যার শাস্তি আল্লাহ আমায় এতো অপমান দিল।কত মানুষ খারাপ কাজ করে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়ায় আর আমার দোষ রান্নাঘরে মোম খোঁজা?
একজন বলছে,এই সবার ঘরে বিদ্যুৎ আছে এ ঘরে নাই কেন?
এর মাঝেই আমার ফুপাতো ভাই বলে আরে বুঝেন না,এই বেটা হুজুর মনে হয় আসার সময়ে নিচের মেইনসুইচ বন্ধ করে এসেছে...
সে এই বলেই নিচে গিয়ে মেইন সুইচ অন করলো....
বাবা সুবিধার জন্য নিচে সব বাসার আলাদা আলাদা মেইনসুইচ রেখেছে আর তা বাক্স দিয়ে তালা মারা থাকে।তালা কি করে খুললো!
আমার বুঝতে বাকি নেই এই রুবেল ই মেইন সুইচ অফ করেছে...
আমার ফুপুর সাথে বাবার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বহুদিন।তাই বলে সেই প্রতিশোধ এভাবে নিবে!
এর মাঝেই মা আসলো...
অনেক মানুষ বাসায় দেখে মায়ের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।আমি মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
অনেকক্ষন পর আমার ভয় কিছুটা কমলো।
মা: কি হয়েছে এখানে?এই লুবনা কাঁদছিস কেন?
রুবেল: মামি কই গেছিলেন..
মা: দোকানে,কেন?
পাশের বাসার আন্টি: এমন ই প্রতিদিন যান?
মা: মানে?
রুবেল: মামি এটা একটা ভদ্র এলাকা।আপনার মাইয়ার জন্য কি এলাকাছাড়া হমু?
আমার এক বন্ধু থাকে আপনাদের উপর তলায়..
সে আমায় কল দিয়ে জানালো এ ঘরে খারাপ কাজ চলে।
আমার মামাতো তো বোন বলে ওরা কিছু বলেনায়...
না হলে তো রাস্তায় নামাতো.
মা চুপ করে আছে,মনে হয় তার বলার কিছু নাই।মা হলেও মেয়ে তো অতিরিক্ত সাহস কলিজায় সঞ্চয় নেই।
অন্ধকারে ইকবাল কে দেখিনি।
এখন বিদ্যুৎ এর আলোয় দেখতে পারছি।
মাথা নিচু করে আছে।মনে হচ্ছে ফাঁসির আসামী।
আপাদত নিজেকে ছাড়া কারো প্রতি সহানুভূতি দেখাতে পারছিনা।
রুবেল ইকবালকে ধাক্কা দিয়ে বলছে,ওই বেটা তোর বাড়ি কই।
ইকবাল কিছু বলছেনা।
রুবেল: যাক তুই কবি না আমি কমু?কি করছস তোরা?
ইকবাল আমার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে কাকি...
এর মাঝেই রুবেল তাকে ধাক্কা দিয়ে বলে একটাও কথা কবিনা তুই থাম।
লজ্জা নাই তোর?
শুনেন মামি,আমি আপনাদের সম্মান করি কিন্তু এখন যা ঘটছে তা মান ইজ্জত এর প্রশ্ন।
যদি শাস্তি না দেয়া হয় তাইলে বাকি সবাই প্রশ্রয় পেয়ে যাবে।
মা: আচ্ছা তোমরা কি দেখছো তা তো বলবা...
মা যে ভয় পেয়েছে তা তার কাপাকাপা কণ্ঠে স্পষ্ট।
রুবেল: আরেহ আমি কি জানি পাশের বাসার আন্টি ওদের খারাপ অবস্থায় ধরছে।
আমি না থাকলে তো ওই বেটারে গন ধোলাই দিয়ে মেরে ফেলত।
রুবেল কে আমার হায়নার মতন ই হিংস্র লাগছে।যে ছেলে এলাকার সব মেয়েকে উতক্ত করে সেই কিনা আজ বিচারক!
এই না হল সমাজ...
কেউ আমার মানসম্মান এর কথা ভাবছেনা সবাই গুনডার কথা বিশ্বাস করে।
আগে জানতাম আপনজন নাকি আপনজনের ক্ষতি করতে ঘরে চোর পাঠায় কিন্তু আমার ঘর যে দিন দুপুরে ডাকাতি হয়ে গেল।
রুবেল: এখন কন আপনে শাস্তি দিবেন না আমি দিমু?
মা বলে কারে শাস্তি দিবা?
আমার জামাইরে?
আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাই কি অবস্থায় থাকবে তা তোমাদের দেখার বিষয় না।
তোমরা আমার ঘরে এসে জুলুম শুরু করছো আমি পুলিশ এর কাছে যাব...
চলবে.....
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ