3944

এ্যাডমিনের সাথে প্রেম
লেখা: মিশু মনি
.
লিখালিখি গ্রুপের নিয়মিত পাঠক তানিশা।
কয়েকদিন আগে এক টা এডমিন পোস্ট এ দেখল" স্যারের সাথে প্রেম,অমুকের সাথে প্রেম,তমুকের সাথে প্রেম,এই সব গল্প গ্রুপে দেয়া যাবেনা।জনৈক ব্যক্তি কমেন্ট করেছেন, "আপু,এ্যাডমিনের সাথে প্রেম " নামে কোনো গল্প লেখা যাবে?
ব্যাপার টা তানিশার মাথায় ঢুকে গেল।ও ভাবল,আমি এই নামে গল্প লিখব এক টা। কিন্তু গল্প তো হতে হবে কাহিনি নির্ভর। অমন কাহিনি এখন কই পাবো? আচ্ছা এক টা এ্যাডমিনের সাথে সিরিয়াসলি প্রেম করলে কেমন হয়?
ভাবতেই ওর হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল।ফেসবুকের জগতে অনেকেই ওকে প্রপোজ করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।কিন্তু কাউকে নিজে থেকে মনের কথা বলা টা ব্যাপার টা কেমন যেন! তাছাড়া সে যদি না করে দেয়,তখন খুব মন খারাপ হবে।আমি আবার প্রচুর ইমোশনাল!
ভাবতে ভাবতে মোবাইল এর স্ক্রিন টাচ করতে লাগল ও।তবে কি এই নামে গল্প লেখা হবেনা?
.
হঠাত এক টা পোস্ট এ চোখ আটকে যায় ওর।লেখার মান,বিষয়, ধরণ সবই মনোমুগ্ধকর!!
বাহ! ছেলে টি জিনিয়াস বটে!
.
এবাউট পড়ে আরও বেশি ভাল লাগল তাকে।কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেখানে লেখা " in a relationship "
.
মেজাজ টাই বিগড়ে গেল তানিশার-ধুরর.. সেচ্ছায় মালা পড়াতে চাইলাম। আর উনি আগেই মালা বদল করে বসে আছেন!
.
মুখ কালো করে বসে আছে তানিশা।তবে কি এই নামে আদৌ কোনো গল্প লেখা আমার হবেনা? দেরি করলে হয়ত অন্য কেউ লিখে ফেলবে।যদি গ্রুপে কপিরাইট আইন থাকত,তাহলে গল্প টা আমার নামে নিবন্ধন করে নিতাম।হুহ..
.
এডমিনের প্রোফাইল এ ঘুরঘুর করছে তানিশা।ছেলে টার নিক নেম " আবেগ সাহেব"। নাম টাও ভাল লেগেছে! কিন্তু ওই যে লেখা " in a relationship "
চেয়ারম্যান আর মেম্বার এর মাঝখানে চৌকিদার হয়ে ঢুকার ইচ্ছে ওর নেই।
.
বারবার স্ট্যাটাস গুলো পড়তে লাগল ও।অধিকাংশ লেখা গুলোই " move on" টাইপের।সারাংশ করলে দেখা যায় সবগুলার মর্মার্থ একই।হতে পারে সে ছেকা খেয়েছে কিন্তু " single " লিখতে ভুলে গেছে।
ফেসবুকে বিপত্নীক, বিধবা,ডিভোর্সি,সব অপশন ই আছে।কিন্তু ছেঁকা খোর,ক্রাশ খোর,ব্রেক আপার,অর্ধেক ব্যাচেলর অপশন গুলা দেয়া উচিৎ ছিল।
.
অবশেসে এক টা মেসেজ দিয়েই ফেলল তানিশা।অনেক্ষন আগে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট চলে গেছে কিন্তু কনফার্ম করার নাম গন্ধই নাই।
.
মেসেজের রিপ্লে আসল,"আপনি কি আমাকে চিনেন?"
তানিশা লিখল,জ্বি।আপনি আবেগ সাহেব। lives in Chittagong.
- বাহ!আমার ব্যাপারে অনেক কিছুই জানেন দেখছি
- হুম।এবার আমাকে জিজ্ঞেস করুন।
- কি জিজ্ঞেস করব?
- যা খুশি
- আমার যা খুশি তাই জিজ্ঞেস করলাম। আপনি বলুন।
- ধুর।কথা প্যাচাবেন না।কথা প্যাঁচানো মেয়েদের কোয়ালিটি।
- ওকে।আপনার নাম?
- তানিশা।পরিচয় পরে দিবো। আগে বলুন তো আপনার বয়স কত?
- আপনি বুঝি ঘটকালি করেন?
- হ্যা করব।বলুন।
- এখনো বিয়ের বয়স হয়নি।
- good.গার্ল ফ্রেন্ড কয়টা?
- হুরর.. মোবাইল পালাতে হিমশিম খাই আরও গার্ল ফ্রেন্ড।আমি ওসব আলগা জি এফ পুষি না।
- সত্যি?
- হ্যা।
- তিন সত্যি?
- আরে বাবা হ্যা।
.
তানিশা খুশিতে নাচানাচি শুরু করে দিলো। প্রেম না হোক,লাইন মারার সুযোগ টা পাওয়া গেল।
তানিশা লিখল- আপনি এত ভাল লিখেন কেন?
- কারন আমার হাতের লিখা সুন্দর
- আপনাকে মেয়েরা খুব জ্বালায় তাইনা?
- আমি কি বারুদ,গ্যাস নাকি জ্বালানি? যে জ্বালাবে?
- কি brilliant!
-
তানিশা লিখল,আমি আপনার প্রেমে পড়তে চাই।পারমিশন দিবেন?
- এভাবে পারমিশন নিয়ে কেউ প্রেমে পড়ে বলে জানতাম না।প্রেমে পড়ার পর বলতে হয়।
- কিন্তু প্রেমে পড়ব কিভাবে?
- ধপাস করে পড়েন।শোনেন, ভালোবাসা টা হয়ে যায়।তারপর সেটা বলতে হয়।
- কিন্তু আপনি যদি ভাব নেন? আগেভাগে বলেই আমি পড়তে চাই।
অপরপক্ষ থেকে রিপ্লে আসার আগেই তানিশা লিখতে বসে গেল।ওর আর তর সইছে না গল্প টা লেখার।আগে শুরু করা যাক,তারপর যা হবে সেটা পরের পর্বে লিখলেই চলবে।