বিয়ে উৎসব
লেখা: মিশু মনি
.
সবসময় ই কাল্পনিক কিংবা বাস্তব চরিত্র গুলো গল্পে উঠে আসে।কিন্তু গল্পের চরিত্রগুলো যদি বাস্তবে নেমে আসে তবে কেমন হত? সেই অদ্ভুত বিনোদন নিয়েই এবারের লেখাটি।
★
আজ মিশুর বিয়ে।
মিশুর লেখা কিছু গল্পের নায়ক নায়িকা এসেছে বিয়েতে।মিশু খুব খুশি সকলকে একসাথে পেয়ে।
"আমার বর" গল্পের তন্ময় ও মিফতা এসেছে।তারা মিশুকে দেখে হাসল।
মিশু এগিয়ে গিয়ে বলল,কি ব্যাপার মিফতা?
- খুব ভালো। মিশুর বিয়েতে কেউ খারাপ থাকতে পারে?
- হা হা।তাই বুঝি? তা তন্ময় কি এখনো তোমাকে শর্ট বলে অপমান করে?
তন্ময় জিহ্বায় কামড় দিয়ে বলল,নাউজুবিল্লা। আমি সেই কবেই ওই কথা টা ভুলে গেছি।ওসব লম্বা খাটো ব্যাপার না।মনের বন্ধন টাই আসল কথা।
এমন সময় "বিবাহ বিভ্রাট " গল্পের সাদিয়া ও মিনার এগিয়ে এসে বলল,তন্ময়, মনের মিল কাকে বলে সেটা আমাদের দেখে শেখা উচিৎ সবার।এক বছর আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না।কিন্তু হঠাত ই সাদিয়া আমার বাসায় এসে উঠল তাও আবার আমার বিয়ের আগের দিন।সে কি ঝড় গেলো আমার উপর দিয়ে।অবশেষে বিয়েটা সাদিয়াকেই করেছি।দেখেছেন কত বন্ধন?
মিফতা বলল,সে যাই হোক।সেরা বিয়ে কিন্তু আমাদের ছিল।
সাদিয়া লাফিয়ে উঠে বলল,একদম ই না।সেরা বিয়ে আমাদের ছিল।আমরা কত সংগ্রাম করে বিয়ে করেছি জানো না?
মিফতা বলল,তাতে কি? আমাদের গল্প টাই সবাই বেশি পছন্দ করেছে। সো আমরাই সেরা।
সাদিয়া বলল,আমাদের বিয়েটা বেশি ইন্টারেস্টিং ছিল।আপনাদের টা নয়।ওকে?
- নট ওকে।পাঠক বেশি পছন্দ করেছে "আমার বর" গল্প টা। এটায় দুই হাজার প্লাস লাইক পড়েছে। আর তোমাদের গল্পে ছয়শ'র বেশি পড়েনি।
সাদিয়া রেগে বলল,লাইক পরলেই বিয়ে সেরা হয়না।সেরা বিয়ে আমাদের টা। কারন মিনারের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল অন্যকারো সাথে।কিন্তু আমি ওর বাসায় এসে উঠেছি বিয়ের আগের দিন।তারপর সেই হবু বউয়ের জন্য পাত্র খুঁজে বের করেছে মিনার।সে কি দূর্ভোগ! এত কষ্টের পর আমাদের বিয়ে টা হয়েছে।বাট তোমাদের বিয়েটা তত টা ইন্টারেস্টিং ছিল না।
মিফতা বলল,নিজে যাকে বড় বলে বড় সেই নয়,লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়।আমাদের বিয়েটা সবার কাছে আকর্ষণীয় ছিল।আমি আমার বরের চেয়ে অনেক শর্ট, তাই ও আমাকে মেনে নেয়নি।কত কষ্টে ওকে আপন করে পেয়েছি।আর আমাদের গল্পের পাঠক ছিল চার হাজারের বেশি।কাজেই আমরাই সেরা।
সাদিয়া বলল,টাকা থাকলেই বড় হওয়া যায় না।তেমনি বেশি লাইক পেলেই সেরা বিয়ে হয়না।বুঝলা মিফতা?
মিশু হেসে বলল,তোমরা কি থামবা দয়া করে? এভাবে ঝগড়া করলে পাঠক কি ভাববে বলোতো?
সাদিয়া বলল,তাহলে তুমিই বলো মিশু,সেরা বিয়ে কার?
- দেখো সবাই যদি বিয়ে করে সুখী হয়,তাহলে সে ভাব্বে তার নিজের বিয়ে টাই সেরা বিয়ে।তোমরা সবাই সেরা।এত ঝগড়া করছ কেন?
- ঝগড়া তো মিফতা করছে।
- তুমিও তাল মিলাবা? দেখো, এই বিয়ে উতসব গল্প টাও পাঠক রা পড়বে। যদি তোমরা এখানে ঝগড়া করো,তাহলে তো পাঠক রা তোমাদের উপর ক্ষেপে যাবে।বিয়ে খেতে এসে ঝগড়া শুরু করেছ।
সাদিয়া মুখ বাকিয়ে বলল,আমাদের বিয়েটাই সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং। এটা মিফতাকে মেনে নিতে বলো?
মিফতা বলল,চাপার জোরে সেরা হওয়া যায় না।
মিশু চেঁচিয়ে বলল,আবার ঝগড়া?
তন্ময় হেসে বলল,মিশু তুমি আসো,আমরা ওদিকে যাই।এরা ঝগড়া করুক।মেয়েদের স্বভাব ই এটা।
মিফতা তন্ময়ের হাত টেনে ধরে বলল,এই কই যাচ্ছো? খবরদার এক পা আগাবা না।
তন্ময় হেসে বলল,মিশু দেখো কেমন জ্বালা? বিয়ে করা মানেই জেলখানায় বন্দি হওয়া।
মিশু হেসে অন্যদিকে চলে আসলো। "আমার বর" গল্পের মিফতা ও "বিবাহ বিভ্রাট" গল্পের সাদিয়া ঝগড়া করেই যাচ্ছে।
.
মিশু দারিয়ে আছে।"সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে" গল্পের Rj সিফাত ও তনিমাকে দেখা যাচ্ছে!
মিশু গিয়ে তনিমাকে জরিয়ে ধরলো।
তনিমা বলল,মিশু খুব খুশি খুশি লাগছে তোমায়।
মিশু বলল,বিয়ে ব্যাপার টাই খুশি খুশি।
- হে হে হে।ঠিক তাই।
সিফাত বলল,Mishu you looking gorgeous!
মিশু বলল,থ্যাংকস সিফাত।আসো তোমরা ভিতরে আসো।ভিতরে গিয়ে দেখো মিফতা আর সাদিয়ার ঝগড়া লেগেছে।কার বিয়ে সেরা সেটা নিয়ে।
সিফাত হেসে বলল,সেরা তো আমাদের বিয়ে।আর আমাদের সংসার সবচেয়ে সুখী, রমণীর গুনে।
মিশু হেসে জবাব দিলো, তোমরাও ভিতরে গিয়ে ঝগড়ায় যোগ দাও।আমি সবাইকে রিসিভ করার জন্য দারিয়ে আছি।
সিফাত ও তনিমা ভিতরে চলে গেলো। সকলকেই আজ বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে!
.
এমন সময় "রৌদ্রময়ী " গল্পের রৌদ্রময়ী এ ইফতিকে দেখা গেলো।
মিশু খুশি হয়ে বলল,তোমাদের তো কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার কথা।আমি ভেবেছিলাম তোমরা আসবা না।
রৌদ্রময়ী বলল,মিশুর বিয়েতে আমরা আসবো না সেটা কি হয়?
- খুব খুশি হয়েছি।আচ্ছা তোমাদের দুজনের হাতে দুই টা গিফট কেনো?
ইফতি বলল,এমন গার্ল ফ্রেন্ড পাইছি মিশু,সে আমার টাকায় এক পা ও ফেলবে না।ও নিজের টাকায় নিজে কিনেছে আর আমি আমার টাকায়।
- হা হা হা।যাও ভিতরে গিয়ে বসো।দারুণ ঝগড়া চলছে সবার মাঝে।
- কেন?
- কার বিয়ে সেরা সেটা নিয়ে?
- হা হা।আমাদের তো এখনো বিয়েই হয়নি।তাই আমরা ঝগড়া করবো না।
ওরা দুজনে ভিতরে প্রবেশ করলো।
.
মিস্টার চিতপটাং ও অবনীকে দেখে মিশু চেঁচিয়ে বলল,তোমরা!
চিতপটাং বলল,হুম আমরা।খুশি হওনি?
- বহুত খুশি।ভিতরে যাও।
- তুমি এখানে কেন? সকলে আসেন নি?
- অনেকেই এসেছেন। ময়লা চাদর,আবির, বাধন, চেয়ারম্যান এর নাতি ওরা কেউ এখনো আসেনি।
- ওরাও আসবে অবশ্যই।
এমন সময় "ছোট মামার বিয়েতে" গল্পের অংকুশ ভাব নিতে নিতে এসে দারাল।
মিশু বলল,সারপ্রাইজ অংকুশ! তুমি ও এসেছ!
- জি মহারানী।
- একা কেন?
- আমার নায়িকা এখনো খুঁজে পাইনি।দেখি যদি তোমার বিয়েতে কাউকে পাই।
- তুমি তো ভাবে থাকো, এত ভাব নিয়ে থাকলে নায়িকা জুটবে না ভাই।
- ভাব কমাই দিবো ভাবছি।
চিতপটাং সাহেব বলল,অংকুশ যেমন আছো তেমন ই থাকো।চলো ভিতরে যাই।
.
হলরুমের ভিতরে পা দিতেই মিস্টার চিতপটাং একেবারে চিতপটাং হয়ে গেলেন!
সকলের হাসি আর দেখে কে!
হাসির শব্দ শুনে মিশু ছুটে এসে দেখে চিতপটাং মেঝেতে পড়ে আছে।মিশু ওকে টেনে তুলে বলল,সিফাত কলার খোসায় পা পিছলে সংসার শুরু করেছে।আর তুমি এমনিতেই চিতপটাং! হা হা হা।
.
মিশু সামনে তাকিয়ে দেখে গানের প্রতিযোগিতা চলছে।
ছেলেরা একদিকে আর মেয়েরা আরেকদিকে।
তনিমা কোমড় বেধে নেমেছে আর গান ধরেছে,
সংসারে সুখ আসে মোটা ইনকামে,
মেয়েরা যে তাই ছোটে অফিসের কামে,
ছেলেরা বড় কুজে,মুখে বাতেলা ছারে,
বাপের হোটেলে থাকে,অকালে ভুরি বারে,
মিছে দোষ দেয় শুধু মেয়েদের নামে...
মিশু হো হো করে হাসতে হাসতে এগিয়ে গেলো।
সিফাত গাইছে,
যে রাধে, চুল ও বাধে আজ নারী ভুলেছে,
পরনে পোশাকের কাপড় যে কমেছে...
তনিমা পাল্টা জবাব দিতে শুরু করলো।তারমানে সংসার আর বিয়ে নিয়ে ঝগড়া এখনো চলছে!!
মিশু হেসে মেয়েদের মাঝে গিয়ে ঢুকল।
কিছুক্ষণ গান চলার পর শোনা গেলো, বর এসেছে বর এসেছে..
.
সবাই বরকে রিসিভ করতে চলে গেলো। মিশু এসে ফুল দিয়ে সাজানো গদির উপরে বসে পড়ল। এখন বর আসবে,তারপর বিয়ে! বিয়ে ব্যাপার টা সত্যিই মজার! সবাই কত আনন্দ করে!
.
বর এসে মিশুর পাশে বসলো। সবাই বর বউয়ের পাশে বসে সেলফি তুলতে লাগলো।
কাজী এসে বিয়ে পড়াল তারপর শুরু হলো মিষ্টি বিতরণ!
এই যে পাঠক, হাত পাতুন।বিয়ের মিষ্টি নিন....
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ