āϏোāĻŽāĻŦাāϰ, ā§§ā§Ž āĻĄিāϏেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

3933 (1)

সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে
পর্ব: ০১
লেখা: মিশু মনি
.
- একজন Rj হয়ে এরকম একটা গাইয়া মেয়েকে বিয়ে করবো আমি? Impossible.
খুব চড়া গলায় কথাটি মাকে জানিয়ে দিলো সিফাত।
সিফাত একজন জনপ্রিয় রেডিও আর.জে।মায়ের জোরাজুরিতে দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মেয়ে দেখতে এসেছে সে।কিন্তু মেয়ে দেখেই মাথা খারাপ হয়ে গেল সিফাতের।এই মেয়েকে নিয়ে সে কোনো প্রোগ্রামেও যেতে পারবে না,বন্ধুদের সামনে যেতে পারবে না,স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা ও করতে পারবে না।মেয়ে একেবারেই গ্রাম্য।কিভাবে মায়ের সাহস হলো এরকম একটা পরিবেশে তাকে নিয়ে আসার? এসব নিয়ে সে মাকে অনেক কথা শুনালো।
সিফাতের মা শাহানা চৌধুরি ছেলেকে বুঝিয়ে বলতে শুরু করলেন। কিন্তু মায়ের প্রতি টা বাক্যে সিফাতের মেজাজ চড়ে যাচ্ছে।সিফাত বলল,ঢাকায় মেয়ের অভাব ছিল? এতদূর নিয়ে এসে এভাবে আমাকে অপদস্থ করলা তুমি?
- দ্যাখ বাবা,মেয়েটা অনেক ভালো।তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে,বাবার সম্মান টা তো রাখবি।
- আমার বন্ধুর মেয়ে হলেও আমি এভাবে ই react করতাম। listen mom,আমি একজন সেলিব্রেটি,লিজেন্ড। সব জায়গায় আমার নাম ছড়িয়ে পড়েছে। তুমি অযথাই আমাকে insult করার চেষ্টা করছ।এই মেয়ে আমার ফ্যান হতে পারে,life partner নয়।তুমি আর বাবা মিলে conspire করছ আমার life টা হেল করার জন্য।
শাহানা চৌধুরি বললেন, বুঝার চেষ্টা কর বাবা।মেয়ে টা অনেক গুণবতী। আমাদের বাসায় গেলেই নিজেকে তোর মত করে গড়ে তুলতে পারবে।
- mom,তুমি কি লাইফ টা কে আজকাল হিন্দি সিরিয়াল ভাবো?
- পাগল ছেলে আমার,মেয়ে টার অনেক গুন আছে।শুনলে অবাক হয়ে যাবি।চেহারা ও মাশাল্লা সুন্দর। শুধু গেটাপ টাই যা নরমাল।ঠিক হয়ে যাবে।রবীন্দ্রনাথ যখন ভবতারিণী কে বিয়ে করেছিলেন, তখন মেয়ে টা গাইয়া ছিল।কিন্তু ঠাকুর বাড়িতে এসে সে মৃনালিনী হয়ে উঠল, সবকিছু বদলে গেল।এই মেয়ে ও আমাদের বাসায় গেলে গুটি থেকে প্রজাপতি হয়ে বের হবে।
সিফাত রাগে গজরাতে লাগল।কোনো কথা বলছে না।
ছেলের রাগ দেখে শাহানা বললেন, আচ্ছা তুই যা বলবি তাই।এ বিয়ে তোকে করতে হবে না।এখন খাওয়া দাওয়া করে ভদ্রভাবে বাসায় ফেরা যাক।বিয়ে করতে হবেনা তোকে।
মায়ের কথা শুনে রাগ হালকা হলো সিফাতের।
বলল,তুমি যাও আমি আসছি।
শাহানা চৌধুরি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলেন। সিফাত মনটাকে  শান্ত করার চেষ্টা করছে।
.
তারা এতক্ষণ বাড়ির বাইরের দিকের একটা বারান্দায় দারিয়ে কথা বলছিলেন।
বারান্দার দেয়ালের আড়ালে দাড়িয়ে এইসব কথা শুনতে পেলো তনিমা।
তনিমা অনেক আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মেয়ে।এইভাবে তাকে অপমান করে সিফাত চলে যাবে এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।তনিমা ভাবতে লাগল কিভাবে একে কাবু করা যায়।
ভাবামাত্রই মাথায় বুদ্ধি চলে আসলো। কারো নিকট প্রিয় হয়ে উঠতে চাইলে যে উপায় টি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী তা হচ্ছে "প্রশংসা ". উপায় টা প্রয়োগ করে দেখা যাক।
তনিমা সিফাতের কাছে এসে বলল,আপনি কি আমাকে ডেকেছেন?
সিফাত বিতৃঞ্চা নিয়ে তাকাল- আমি কেন ডাকবো?
- আপনার মা আমাকে পাঠিয়ে দিলেন। আপনার কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে করতে পারেন,
- nothing to say. you can go.
- আপনাকে একটা কথা বলবো?
- শিউর,
- আপনার কণ্ঠ যত টা সুন্দর, আপনি দেখতে তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি সুন্দর!
সিফাতের সকল রাগ হঠাত কমে গেল।প্রশংসা শুনতে কে না ভালবাসে?
সিফাত মুচকি হেসে বলল, তাই!
- হ্যা।আপনার চোখ গুলা অসম্ভব সুন্দর! দেখলেই মনে হয় ওই চোখে সমুদ্র আছে।
সিফাত শব্দ করে হাসল,চোখে সমুদ্র! ইন্টারেস্টিং!
- হ্যা।স্বয়ং বনলতা সেন যদি আপনার চোখ একবার দেখতেন, তিনি ও জীবনানন্দ দাশ কে ভুলে যেতেন।
- how funny! 
সিফাত হাসছে তনিমার কথা শুনে।
তনিমা বলল,আপনি সত্যিই অনেক সুন্দর! আমি জানি অনেক মেয়েই আপনার পিছনে লাইন লেগে থাকে।আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি সেটা ও জানি।কিন্তু আপনি যে আমার মন টা ভেঙে দিয়ে গেলেন। আমি যে এবার অন্য কাউকে গ্রহণ করতেই পারবো না।
- মানে?
- আপনার চোখ,হাটার স্টাইল, সৌন্দর্য,এটিচিউট সবকিছুই যে আমার সাধনা ভেঙে দিলো। আপনার সব প্রোগ্রাম আমি শুনতাম। আর ভাবতাম কারও কণ্ঠ এত সুন্দর হয় কি করে! আর আজ সামনা সামনি দেখে আমি পুরা ফিদা।যখন ই পড়েছে নজর, আমিতো হয়ে গেছি তোর এই অবস্থা।আমি মনে মনে আপ্নাকেই নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছি।যদি আপনি বিয়েতে রাজি না হন,আমি আজীবন কুমারী থাকবো।
সিফাত অবাক হয়ে বলল,হোয়াট!  কুমারী থাকবা?
- হ্যা।বিশ্বাস না হলে দুবছর পরপর খোজ নিয়ে দেখবেন। আমি প্রথম দেখেই আপনার প্রেমে পড়েছি। আপনি অনেক সুন্দর মনের মানুষ!
সিফাত বিব্রত বোধ করছে।মেয়েটা কি বলছে এসব? 
তনিমা বলল,আমার সাধনা জুরে শুধু আপনি ই থাকবেন। আমি আজীবন কুমারী থাকবো বলে রাখলাম। আপনি বিয়ে না করলে আমি সন্নাসী হবো।
তনিমার কথা শুনে অবাক হয়ে যাচ্ছে সিফাত।এমনিতেই মেয়েটার প্রশংসা সুচক বাক্য শুনে সিফাতের মন গলে পানি হয়ে গেছে।তারউপর এই ধরনের আবেগী কথা বার্তা মনে বিরাট প্রভাব ফেললো।
সিফাত শুনেছিল গ্রামের মেয়েরা সহজ সরল হয়।এই মেয়েটা তার প্রমাণ দিলো। মনে দাগ কাটতে শুরু করেছে।এত পরিষ্কার মনের একটা মেয়ে,দেখতে ও সুন্দর। তার জীবন টা আমার জন্য নষ্ট হয়ে যাবে! মায়ের কথা তো রাখা যায়।একদম সাদা সিধা মেয়ে,বাসায় নিয়ে গিয়ে যোগ্য করে গড়ে তোলা যাবে।
এসব ভেবে সিফাত বলল,তুমি কি আমার মত হতে পারবা?
তনিমা মাথা ঝাকিয়ে বলল,আপনার জন্য আমি সব করতে পারবো।
- ওকে।for any sake,খুব শীঘ্রই নিজেকে ডেভেলপ করার ট্রাই করো।এমন silly স্বভাব থাকা চলবে না।be smart.
- আচ্ছা।
তনিমার মনে একসাথে তের টা লাডডু ফুটল। কিন্তু মুখে হাসি না ফুটিয়েই বলল,আপনি কি বিয়েতে রাজি হবেন?
- মেয়বি।বাবা মা দুজনেই যখন চাইছে,তাদের prefer টাকে importance দেয়া উচিৎ।
- আপনি কি খুব ইংরেজিতে কথা বলেন?
- Rj দের বাংলিশে কথা বলতে হয় তো। হ্যাবিট হয়ে গেছে।
- আচ্ছা।তবে কি বিয়েটা হবে?
সিফাত তনিমার চোখের দিকে তাকাল।চোখে চোখ পড়তে ই যেন বিদ্যুৎ শক খেলে গেল শরীরে।
সিফাত হেসে বলল,কারও জীবন টা নষ্ট হয়ে যাক তা তো চাইনা।আর mom তোমাকেই বউ করার জন্য উঠে পড়ে লাগছে।
- আচ্ছা।আপনি যা বলবেন তাই।
তনিমা বাধ্যগত ছাত্রের মত মাথা নেড়ে নেড়ে সিফাতের সব প্রশ্নের জবাব দিলো। সিফাতের মনে এমন এক ধারনা জন্মালো যে,তনিমা খুব সহজ সরল গাইয়া এক মেয়ে।যে সবকিছু খুব কম বোঝে,আর বাধ্যগত কন্যা।
.
তনিমা মনে মনে বলল,আমাকে তো চেনোনা মশাই।ভাবের অন্ত নাই আপনার, আপনার ভাবের নিকুচি করি।বিয়েটা হইতে দাও,কত পানিতে কত জল বুঝাবো।আমি গাইয়া ক্ষ্যাত মেয়ে তাই না? সহজ সরল বোকা।বিয়েটা হয়ে যাক,তোমাকে তেলাপোকা ডান্স করাবো। এমন নাচ নাচাবো যে, মস্তিষ্কে ব্যাথা ধরে যাবে।

সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে
পর্ব:০২
লেখক : মিশু মনি
.
সিফাত বিয়েতে রাজি হয়েছে শুনে শাহানা চৌধুরীর আনন্দ যেন আর ধরেই না।
তনিমাকে আংটি পরিয়ে বিয়ের দিন তারিখ পাকা করে তারা বাসায় ফিরলেন।
.
রাত্রিবেলা সিফাত গিয়ে মাকে বলল,মম তনিমাদের বাসার নাম্বার দাও তো।
- কেন বাবা সিফ? বিয়ে ভাংবি নাকি?
- মম তুমিও না।ওই মেয়েকে মানুষ করতে হবে।নাম্বার টা দাও।
- মেয়ে টা কি অমানুষী?
- মেয়ে টা পুরাই silly. হাবা মেয়ে একটা।আপাতত স্টাইলিশ বানাই বাকি টা বিয়ের পর বানাবো।
- স্টাইলিশ বানাবি? মনে হচ্ছে বিয়ে করে সংসার করবি না,বউ কে চ্যানেল আই লাক্স সুপার স্টার বানাবি।
সিফাত আর কিছু না বলে তনিমাদের বাসার নাম্বার নিয়ে নিজের রুমে আসলো।
কল রিসিভ করলেন তনিমার আম্মু।সিফাত কথা বলবে শুনে তিনি চেঁচিয়ে মেয়েকে ডাকতে লাগলেন। সিফাত মনে মনে বলল,সবগুলাই গাইয়া ভুত।
তনিমা হ্যালো বলতেই সিফাত সম্বিৎ ফিরে পেলো।
- হ্যালো তনিমা,
তনিমা ভদ্র লক্ষী ও হাবা মেয়ের মত গলায় সালাম জানালো। সিফাত সালাম নিয়ে বলল,
- কাল শহরে যাবা।
-কেন যাবো?
- আমি যেতে বলছি তাই।
- আপনি কেন যেতে বলছেন?
- শহরের সবচেয়ে ফেমাস পার্লার এ যাবা।গিয়ে পার্লারের মেয়ের কানে মোবাইল ধরিয়ে দিবা।যা বলার ওকে ই বলবো।
- পার্লারের মেয়ে বুঝি আপনার পরিচিত?
- পরিচিত হবে কেন,তুমি কাল যাবা।মেয়ে টাকে আমি তোমার ব্যাপারে বলবো।
- আপনার আর আমার বিয়ের কথা বলবেন?
সিফাত বিরক্ত হয়ে বলল,ধুর এ কেমন গাইয়া!
- কি বললেন?
- নাথিং। যা বলছি শুনো। কাল যাবা।টাকা লাগলে আমাকে বলিও।
- আচ্ছা।কিন্তু কি দরকার একটু বলবেন প্লিজ? কৌতুহল জাগছে।
- তোমাকে বানাতে বলবো।
- আমাকে কি বানাবে? আমি কি গমের আটা যে রুটি বানাবে?
- মেয়ে মানুষ বানাতে বলবো।
- আমি কি মেয়ে নই? আমাকে কি আপনার হিজরা মনে হয়?
সিফাত রেগে বলল,shut up. বেশি ত্যানা পেঁচালে হাতের আংটি খুলে নিয়ে আসবো।
তনিমা কোনো জবাব দিলো না।সিফাত কল কেটে দিলো।
.
পরদিন
তনিমা পার্লারে গিয়ে সিফাতকে ফোন দিলো। সিফাত পার্লারের বিউটিশিয়ানের সাথে কি কি যেন কথা বলল।তনিমা চুপচাপ দেখছে।
বিউটিশিয়ান মেয়েটি তনিমাকে মোবাইল টা এগিয়ে দিয়ে বলল,আপু আপনি বসুন।আমি যা  যা করতে হবে সব করে দিচ্ছি।
- কি কি করতে হবে?
- ভাইয়া যা যা করতে বলেছেন। বসে পড়ুন আপু প্লিজ।

তনিমা আগ্রহ সহকারে বসে পড়ল। মেয়েটি তনিমার মুখ ধুয়ে দিয়ে মুখে কি যেন লাগিয়ে দিলো।
লম্বা চেয়ারে পা মেলে শুয়ে আছে তনিমা।
মেয়েগুলো সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে তনিমার রুপচর্চা করলো। তনিমা চুপচাপ আরামে শুয়ে আছে।
হাত, পায়ের নখ পরিষ্কার থেকে শুরু করে চুল ধোয়া পর্যন্ত সব করে দিলো। তনিমা কিছুই বুঝতে পারছে না।
বিউটিশিয়ান মেয়েটি বলল,আপু আপনার ত্বক অনেক সুন্দর। যে নাইট ক্রিম টা শুট করবে আমি সেটা দিয়ে দিচ্ছি।নিয়মিত ইউজ করলে আপনাকে আর টেনশন করতে হবেনা।তবে প্রতিমাসে একবার অবশ্যই ফেসিয়াল করবেন।
তনিমা চোখ চোখ বড় বড় করে বলল,মাসে একবার এইরকম সাজঘরে গিয়ে মুখে এসব মেখে চার পাচ ঘণ্টা বসে থাকতে হবে?
মেয়েটি হেসে বলল,ভাইয়া যেভাবে বলেছেন আমরা সেভাবেই করেছি আপু।এবার আপনার হেয়ার কাট দেয়া হবে।
- কিহ! আরও কতক্ষণ কার্টুন সেজে বসে থাকবো?
- প্রথমবার পার্লারে এসেছেন তো তাই সময় বেশি লাগছে।
বিউটিশিয়ান নির্দেশ দিচ্ছে আর কর্মী মেয়েরা সেভাবেই ক্রিম মাখাচ্ছে।তনিমা হাসছে আর উপভোগ করছে।
.
সব কাজ শেষ হওয়ার পর তনিমা আয়নার সামনে দারিয়ে নিজেকে চিনতেই পারছে না।এটা কে!
তনিমার বিস্ময়ের শেষ নেই! সে এত ফর্সা হয়ে গেছে,চুল গুলা সিল্কি আর সুন্দর! ত্বক অনেক মসৃণ!
কিন্তু মেয়েটি বিল চাইলো দশ হাজার টাকা!  তনিমার চোখ উপরে উঠে গেল! দশ হাজার!
সে তো এত টাকা নিয়ে আসেনি।
সিফাত কে কথা টা বলতেই ও বলল,রকেট নয়ত বিকাশ নাম্বার টা পাঠিয়ে দাও।আমি টাকা সেন্ড করে দিচ্ছি।
.
তনিমা খুশিতে নাচতে নাচতে বিল পরিশোধ করে দিলো।
সিফাত বলল,তোমার কিছু ছবি তুলে আমাকে পাঠাও।আর ওয়েট মেপে ডায়েট করার নিয়ম জেনে নাও।পারলে কিছু ইয়োগা শিখিয়ে নিও।
তনিমা সিফাতের কথা মত কাজ করলো। টাকা তো যাবে সিফাতের।অসুবিধার কিছু নেই।
সিফাত আবারো কল দিয়ে বলল,তুমি মার্কেট এ যাও।
- কেন?
- ভালো ব্রান্ড এর কসমেটিকস কিনে নাও কিছু।আপাতত ডাভ সাবান,ডাভ শ্যাম্পু,দামী নেইলপলিশ,লিপস্টিক আর কাজল কিনে নাও।আর কিছু কিনতে হবে না।বিয়েতে আমি নিজেই শপিং করবো।
তনিমা ফোন ব্যাগে রেখে মার্কেট ঘুরে ঘুরে জিনিসগুলা কিনল।মনে খুব ফুর্তি।সবসময় বউ রাই স্বামীকে বলে আমার এটা এটা লাগবে,পার্লার যেতে হবে।আর এখানে পুরাই উলটা। সিফাত ই বউকে রুপচর্চা করা শেখাচ্ছে।এর চেয়ে মজার ব্যাপার আর কি হতে পারে?
.
তনিমার মা মেয়েকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। তনিমা হেসে বলল,কি দেখো?
- তুই তো নায়িকার মত হয়ে গেছিস!
- চুল গুলা কত সিল্ক দেখেছ? আগে আমাকে কিছু ছবি তুলে দাও,তোমার জামাইকে পাঠাতে হবে।
.
তনিমার ছবি দেখে সিফাতের চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বাহ! মেয়েটা সুন্দর বটে! 
তনিমাকে বলল,যেভাবে শরীরের কেয়ার করতে বলবো সেভাবেই করবা।আর খাওয়া দাওয়া যেন ডায়েটের নিয়ম অনুযায়ী হয় বলে রাখলাম।আজ থেকেই ইয়োগা শুরু করে দাও।
- আচ্ছা। আপনি যা বলবেন তাই তাই করবো।
- আপাতত নিজের কেয়ার করো ভালভাবে। বিয়ের পর তোমার মগজ ঝালাই দিবো। তোমার ব্রেইন তো হাজারিবাগের drain.
তনিমা রেগে গেলেও প্রকাশ করল না।মনে মনে বলল,আমার ব্রেইন হাজারিবাগের drain? বিয়ের বুঝাবো মিস্টার Rj...
.
বিয়ের আগের দিন তনিমা ওর ছোট ভাইকে ডেকে বলল,ভাই আমিতো কাল চলেই যাচ্ছি।আমার একটা আবদার রাখবি না?
- বল আপু।
- কিছু জিনিস জোগার করে  দিবি?
- কি জিনিস আপু?
- দশ বার টা তেলাপোকা, একটা গুল,বিলাই চিমটি,পেট খারাপের ওষুধ, এক হালি কলা,কিছু ছারপোকা আর একটা সুপার গ্লু আঠা।
- কি করবি এইগুলা দিয়ে আপু?
- অলিম্পিক গেমস এ যাচ্ছি,চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিতে হবে।
- মানে!
- তুই বুঝবি না।যেভাবে পারিস কালকের মধ্যেই এইগুলা প্যাকেট করে আমার লাগেজে ঢুকিয়ে দিবি।পারবি?
- খুউউউব পারবো।
.
অনেক ধুমধামের মধ্য দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলো।ভোরবেলা বরযাত্রী বউ নিয়ে রওনা দিলো।
ঢাকায় পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। সকলেই অনেক ক্লান্ত।দীর্ঘ পথ জার্নি করে এসে কারও আর ভালো লাগছে না।
কিন্তু সিফাতের মনে আনন্দ! সব বন্ধু বান্ধব রা তনিমার রুপের প্রশংসা করেছে।সিফাতের বোনরা  বলেছে,ভাইয়া তোর বউ এত সুন্দর কেন,আমাদের চেয়েও সুন্দরী। এটা কিন্তু ভালো হলোনা।
মেয়েরা কেউ কেউ গাল ফুলিয়েছে।কারন তনিমা ওদের সকলের চেয়ে মায়াবী দেখতে!
সিফাত অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে কখন ভালভাবে বউয়ের মুখ দেখতে পারবে।গাড়ি তে পাশে বসে ছিল কিন্তু মুখ টা ভালো করে দেখা হয়নি।
.
সব রীতিনীতি পালন করার পর তনিমাকে বাসর ঘরে নিয়ে যাওয়া হলো।ঘরের সৌন্দর্য দেখে তনিমা অভিভূত!
সবাই বেড়িয়ে যাওয়ার পর তনিমা ব্যাগ থেকে কলা বের করে খাওয়া শুরু করলো। কলা গুলা খেয়ে দরজায় খোসা গুলো দরজায় ও বিছানার কাছে এমন ভাবে রাখল যাতে পা রাখামাত্রই ধপাস হওয়ার সম্ভাবনা ৯০%.. 
.
অনেক অপেক্ষার পালা শেষ করে সিফাত খুশিমনে ঘরে ঢুকছিল।দরজায় পা দেয়া মাত্রই একেবারে চিতপটাং!
সিফাত ওরে বাবাগো বলে চেঁচিয়ে উঠল।
তনিমা মনে মনে হেসে উঠলেও মুখে হাসতে পারল না।উঠে এসে সিফাতকে টেনে তুলল।
সিফাত মুখ কাচুমাচু করে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।
তনিমা বলল,আপনাদের বাড়ির লোকজনের এটা কেমন আক্কেল? দরজায় কলার খোসা ফেলে রেখেছে!
সিফাত বলল,কাল টের পাওয়াবো একেক জনকে।আমার দরজায় কলার খোসা রাখার পরিণতি সবাই টের পাবে।
তনিমা অবাক হয়ে বলল,কে করতে পারে এটা?
- নিশ্চয় ই আমার শয়তান কাজিন রা।
তনিমা মুখে আফসোসের ন্যায় শব্দ করে বলল,আহারে! অল্পের জন্য কোমড় টাই ভাঙল না।আপনার বোনরা অনেক পাজি তো।
- সব কটা বদের হাডডি।
- খুব লেগেছে না? মলম দিবেন?
সিফাত রেগে বলল,ইয়ার্কি মারা হচ্ছে? যাও গিয়ে ঘুমাও।
- ঘুমাবো কেন? বাসর রাতে কেউ ঘুমায়?
সিফাত তনিমার দিকে তাকালো।তনিমা বলল,এভাবে দারিয়ে দেখবেন না।আমি বিছানায় গিয়ে বসছি।আপনি এসে ঘোমটা তুলে আমাকে দেখবেন। আচ্ছা?
সিফাতের রাগ কমে যাচ্ছে।সত্যিই মেয়েটা দেখতে মায়াবী!
তনিমা বিছানায় গিয়ে বসলো।তারপর লম্বা ঘোমটা টেনে দিলো।
সিফাত বিছানার দিকে এগোতেই আবারো কলার খোসায় পা পড়ে দ্বিতীয় চিতপটাং!
তনিমা দাত বের করে হাসছে,সিফাত চেঁচাচ্ছে।
তনিমা মনে মনে বলল,কেমন লাগে এখন?
কাহিনী টা এখানেই শুরু.....
( চলবে....)

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ