#দ্যা_ডেভিল_ফ্রেন্ড
পর্ব-০৩
লেখকঃ মনজুরুল করিম
"দীপু" কি করবে কিছুই বুঝতে পারেনা। এখন তার কি করা উচিত তাও ঠিক করতে পারেনা। বোনের অবস্থাও বেশি ভালোনা। তাছাড়া এখন তাকে সুস্থ করে তুলতে হলে অন্য কোন রাস্তাও নেই।
কিছুদিন ধরে "রবিন" ও দীপুর বেশ খেয়াল রাখে কাছের বন্ধুর মত। রবিনকে কাছে পেয়ে "দীপু" এখন "অহনা"কে তেমন মিস করে না।বলতে গেলে অনেকটা ভুলেই গেছে সে। দীপুর প্রতিটা দিনই কাটে রবিনের সাথে। তার সাথে বেশ সখ্যতা থাকায় রবিনের জীবন বাজি রাখতে দীপু দ্বিধায়য় পড়ে যায়....
কিন্তু "দীপু"র আরর কিছুই করার নেই। রাতে বাসায় ফিরে আসে সে। রবিনের কাছ থেকে সন্ধ্যায় বিদায় নিয়ে এসেছিল। বাসায় এসেই ডেভিলের উপস্তিতি টের পায় "দীপু" পুরো রুম জুড়ে ডেভিলের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ডেভিল এখন নিজ থেকে কথা বলছেনা। দীপুর কেনো জানি মনে হলো তার ডেভিল বন্ধুটা অনেক বদলে গেছে। আগে নিজ থেকেই কথা বলতো কিন্তু আজ নিরব! কেমন জানি ভাবুক হয়ে গিয়েছে.....
দীপু নিজ থেকে ডেভিলের সাথে কথা বলে।
আচ্ছা রবিন ছাড়া অন্য কারোর জীবন নেয়া যায় না?? ডেভিল হালকা হেসে জবাব দেয়... তাহলে তো "অহনা"র জীবন নিতে হয়... বলেই ডেভিল আবার হেসে উঠে।
দীপু দুটানায় পড়ে যায়। বোনের জিবনের বিনিময়ে যেকোন একজনের জীবন হারাতে হবে। তবে ডেভিল যদি অন্যকোন ব্যক্তির জীবন চাইতো তবে দীপু কোন দ্বিধাবোধ করতোনা। ডেভিলের শেষ কথা,, যদি বোনের জীবন বাঁচাতে হয় তবে "রবিন" অথবা "অহনার" জীবন হারাতে হবে। "ডেভিল" দীপুকে বেশি ভাবার সুযোগ দেয়না। কার জীবন এর বিনিময়ে বোনের জীবন রক্ষা করতে হবে তা আজ রাতেই ঠিক করতে হবে.. নয়তো আর কখনো বোনের জীবন বাঁচানো যাবে না....
অনেক রাত হয়ে এসেছে। চারিদিকে অন্ধকার। বাবা-মা মারা গেছেন অনেক আগেই। আপন বলতে এখন একটা মাত্রবোন আছে তার। এই বোনের জীবন বাঁচাতে হলে এখন তাকে খুব কাছের মানুষকে হারাতে হবে.... ভাবতেই বেশ অবাক লাগে তার!!
বেশকিছুক্ষণ চিন্তা করে দীপু। কার জীবন নেয়া যায়?? বোনকে বাঁচানোর জন্য কাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যায়?? কোন কিছুই ভাবতে পারেনা,, "দীপু"। সে শুধু এটাই জানে যে,, বোনকে বাঁচাতে হলে প্রিয় বন্ধু ও প্রিয় মানুষ দুজনের একজনকে হারাতে হবে।।।।
অনেক কিছু ভেবেই দীপু "রবিন"কে হারানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তার কেমন জানি এখনো "অহনা"র জন্য মনে কেমন জানি অনুভূতি কাজ করে। যার জন্য "রবিনের" কথাই বলে দেয় সে.... দীপু জবাবে " ডেভিল" হেসে হেসে জবাব দেয়... "ঠিক আছে " বলেই বিদায় নেয় সে...
পরেরদিন সকালে খুবই ভোরে ঘুম ভাঙে দীপুর। হাসপাতাল থেকে ফোন আসে তার বোন পুরোপুরি সুস্থ এখন। আজই সে বাসায় চলে আসতে পারবে। বেশ আনন্দিত হয়ে মনে মনে ডেভলকে ধন্যবাদ জানায় সে,,,, "দীপুর" মন বেশ হাল্কা হয়। মনের খুশিতে বোনের জন্য তার প্রিয় খাবার রান্না করে । গোসল করে,,, বোনকে বাসায় আনার জন্য বেড়িয়ে পড়ে সে....
বাসা থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতেই বেশ অবাক হয় "দীপু"! এলাকায় আজ অন্যরকম নিরবতা দেখা যাচ্ছে। কারো মুখে কোন কথা নেই। সবাইকে আজ কেমন জানি মনমরা দেখাচ্ছে। এলাকার একজন কে ডাক দিয়ে কি হয়েছে জানতে চাইলে,, সে জবাব দেয় "রবিন " নামের একটা ছেলে মারা গেছে... তাও অনেক ভয়ংকর ও মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে তার। কোন মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে পারে না,,,, এমনটাই বোঝাতে চাইছিলেন ব্যক্তিটি...
খবরটা শুনেই "দীপু" চমকে উঠে। তার মানে ডেভিল রবিনের জীবন নিয়ে দীপুর বোনের জীবন ফিরিয়ে দিয়ে গেছে,, হাসপাতালে আর যাওয়া হয়না দীপুর। বাসা থেকে সোজা রবিনের বাসায় চলে যায় সে। রবিনের লাশ মাঝখানে রেখে তার আত্মীয় এবং এলাকার মানুষরা কাঁদতেছেন।
রবিনের লাশের পাশে যাবার সাহস পায়না "দীপু"। নিজেকে কেমন জানি অপরাধী অপরাধী মনে হয় তার। রবিনের মৃত্যুর জন্য সেইতো দায়ী। তবে এখনে কাউকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবেনা...
আস্তে আস্তে "রবিনের"লাশের দিকে পা বাড়ায় "দীপু"। কাছে যেতেই বেশ অবাক হয় দীপু! রবিনের মৃত্যু কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তার সমস্ত শরীর কেমন জানি নীল হয়ে আছে.. দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে,, রক্তহীন একটা নিথর দেহ সামনে পড়ে আছে।
"রবিনের" লাশের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের অজান্তেই দু ফোটা চোখের জল ফেলে দীপু। বেশিক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা সে। রবিনের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে কেমন জানি অস্থির লাগছে তার। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসে সে...
বিকেলে বোনকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসে সে। নিজের বোনকে সুস্থ দেখেও কেমন জানি মনে শান্তি মিলছেনা "দীপুর"। যখনই বোনের দিকে থাকায় তখনই রবিনের কথা মনে হয় তার।
একা একা অনেক কিছুই চিন্তা করতে থাকে সে। নিজের অদৃশ্য বন্ধুকে "ডেভিল" মনে হয়না তার। "দীপুর" কেনো জানি মনে হয়,, অদৃশ্য বন্ধুটি "ডেভিল" না... সে নিজেই একটা "ডেভিল".......
(চলবে)
#দ্যা_ডেভিল_ফ্রেন্ড
পর্ব-০৪
লেখকঃ মনজুরুল করিম
ডেভিলকে ডেভিল না ভেবে নিজেকে ডেভিল ভেবে বেশ মজা পায় "দীপু"। তার ভাবতেই অবাক লাগে যে,, সে নিজেই একটা ডেভিল তবে পরোক্ষ ডেভিল। যাকে সে নিজে ছাড়া আর কেউই জানে না। নিজের অজান্তেই হাসতে থাকে দীপু ....
কিছুক্ষণের মধ্যে "দীপুর" রুমে তার বোন চলে আসে। "দীপু" তার বোনের দিকে যতবার তাকায় ততবারই "রবিন"এর চেহারা মনে পড়ে তার। মনে হয় যেনো সামনে তার বোন নয়!! তারই বন্ধু "রবিন" সামনে আছে.....
"দীপু" কোন কিছুই ভাবতে পারেনা। হঠাৎ তার রবিনের কথা মনে হয় কেনো? জীবনে যখন কাউকে আপন মনে হয়না তখন বরিনের জন্য তার কেনো মন খারাপ হবে? যদিও রবিন তার আপন কেউ ছিলনা তবুও রবিনের জন্য কেমন জানি আফসোস হয় দীপুর।
অনেকক্ষণ অনেক কিছুই চিন্তা করে দীপু। কোন কিছুই ভাবতে পারেনা সে.. হঠাৎ বোনের ডাকে তার ধ্যান ভাঙে।
- ভাইয়া, তোমার কি হয়েছে??
- না তো.... কিছু না।
-তাহলে তোমাকে এমন চিন্তাশীল দেখাচ্ছে কেনো?
- কই?? নাতো...
- আচ্ছা,, খেতে চলো...
অনেক দিন পরে দীপু ও তার বোন একসাথে খেতে বসেছে। অন্য কারো সাথে এভাবে বসে কখনো খাওয়া হয়নাই। ভাবতেই দীপুর মনে অন্যরকম অনুভূতির আবেশ প্রকাশ পায়। তবে অনেকটা খারাপ ও লাগে তার। কোনো একদিন এভাবেই রবিনের বাসায় রবিনের সাথেই খাবার খেয়েছিল সে। কথাটি ভাবতেই দীপুর মনে রবিনের জন্য অন্যরকম ভালোবাসা দেখা দেয়... তবে "রবিন" তো এখন আর বেঁচে নেই....
দীপুর খাওয়া আর হয়না,,, রবিনের কথা মনে হতেই টেবিল থেকে উঠে দাঁড়ায় সে। কোনরকমে হাত-মুখ ধুয়ে বিছানায় চলে আসে সে। বালিশে মাথা লাগাতেই টের পায় তার রুমে অন্যকেউ আছে। কোন কিছু ভাবার আগেই সে টের পায় এটা নিশ্চয় ডেভিল হবে। কিন্তু,, ডেভিলের শরীরের গন্ধ দীপুর পরিচিত। কিন্তু এটা তো ডেভিলের গন্ধনা... তাহলে কে হতে পারে এটা??
তবে এই গন্ধটা বেশ চেনাচেনা লাগতেছে । মনে হচ্ছে অনেকদিনের পরিচিত কোন এক বন্ধু আজ দীপুর রুমে বসে আছে। তবে তাকে দেখা যাচ্ছে না। কেনো দেখা যাচ্ছেনা এর কিছুই "দীপু"র মাথায় আসে না।
হয়তো একই রুমে দুই পুরনো বন্ধু বসে আছে কিন্তু কেউ কোন কথা বলছেনা। দীপু বুঝতে পারে তার রুমে কে আছে। তবে ভয়ে আর আতংকে তার মুখ থেকে কোন কথা বলছে না।
কতক্ষণ পরেই অদৃশ্য থেকে একটা আওয়াজ আসে,
-কেমন আছ বন্ধু??
আওয়াজ শুনেই দীপু আরেকটু অবাক হয়। গন্ধটা যেমন তার পরিচিত লাগছিল ঠিক তেমন ভাবে এই আওয়াজটাও এখন বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই আওয়াজ টাই রবিনের আওয়াজ।
আর কোন কিছু না ভেবেই দীপু আস্তে আস্তে জবাব দেয়..
- "রবিন" তুমি??
- হ্যা% আমিই.. কেনো?? অবাক হচ্ছো?? আমাকে কেনোই বা মৃত্যুর মুখে টেলে দিলে??
এই মূহুর্তে এই প্রশ্নের কোন জবাব খুঁজে পায়না দীপু। উত্তর দেবার আগেই সে তার রুমে অন্য কারোর উপিস্থিতি টের পায়।
বেশ অবাক লাগে দীপুর। নতুন কারোর আগমনে আগের জন চলে গিয়েছে হয়তো। কিন্তু কে এলো এই সময়ে? কিছুক্ষণের মধ্যে দীপু বুঝতে পারে এখন তার রুমে ডেভিল এসেছে।
ডেভিলের উপিস্তিতিতে এখন আর আগের মত খুশি হয়না দীপু। তবে কিছুটা ভয় পায় সে। অনেকক্ষণ ধরে কিছুই চিন্তা করতে পারেনা সে। আজ ডেভিলের জন্য তার বন্ধু রবিনের জীবন দিতে হয়েছে..... তাই ডেভিলের জন্য তার মনে কিঞ্চিৎ ঘৃণা জন্মে গিয়েছে।
কোন কিছু বলার আগেই ডেভিলের কিঞ্চিত হাসির আওয়াজ পাওয়া যায়। ডেভিল বলতে থাকে,,, "আমার নিজের ইচ্ছায় কোন কিছুই হয়নি। তুমি যা চেয়েছিলে তাই হয়েছে। "
এবার দীপুর মনে ডেভিলের জন্য থাকা সব ঘৃণা মুছে যায়। ঠিকই তো ডেভিল নিজের ইচ্ছায় কিছুই করেনি। সে যা চেয়েছে তাই ডেভিল করেছে। কিছুক্ষণের জন্য দীপু নিরব থাকে। নিজেকে একটু শক্ত করে তুলে সে। যা হবার হয়েছে এখন আর এসব নিয়ে ভাবলে চলবে না... এসব কিছুই ভাবতেই দীপুর ঘুম এসে যায়............
খুব সকালে বোনের ডাকে ঘুম ভাঙে তার। সকালের সোনলি আলোয় বোনের হাতের এক কাপ চা পেয়ে বেশ খুশি সে। অনেকদিন আগে হয়তো এভাবেই খুব ভোরে তার "মা" চা নিয়ে তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতেন....
মায়ের কথা মাথায় আসতেই দীপুর হঠাৎ "রবিনের" মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। রবিনের মৃত্যুর কয়েকদিন হয়েগিয়েছে। তার মা হয়তো এখনো ছেলের জন্য কাঁদতেছেন। "চা" টা শেষ করে দীপু রবিনদের বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। আজ রবিনের মা'' কে একবার দেখে আসতে ইচ্ছে করছে তার।
দীপুকে দেখেই রবিনের "মা" তার দিকে এগিয়ে আসেন। নিজের ছেলের মতই দীপুর কপালে চুমুখান তিনি। এর আগেও রবিনের বাসায় এসেছিল দীপু,,, কিন্তু এতটা আদর পায়নি। আজ কেনো জানি মনে হচ্ছে একটু বেশিই আদর পাচ্ছে সে। রবিনের মা নিজের ছেলের মতোন ভালোবাসছেন তাকে। তিনি নিজ হাতে দীপুকে খাইয়ে দিয়েছেন। এসব কিছু দেখে দীপুর চোখের কোণে জল চলে আসে। বেশিক্ষণ "রবিনের" বাসায় থাকতে পারেনা সে.. আন্টিকে বিদায় জানিয়ে নিজের বাসায় চলে আসে.....
বাসায় এসে রবিনের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে থাকে সে। নিজের অজান্তেই চোখে জল চলে আসে।তার কেনো জানি মনে হয়... কাল রাতে রবিন যখন এসেছিল তখন তার কাছে মাফ চাওয়া উচিত ছিল....
হঠাৎ দীপুর মনে নতুন একটা প্রশ্নের উদয় হয়। কাল রাতে রবিন এবং ডেভিল দুজনেই এসেছিল। কিন্তু ডেভিলের আগমনে রবিন চলে গেলো কেনো???
(চলবে)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ