"ভালো থাকার গল্প"
লেখক : মিশু মনি
.
অন্তু চৌধুরীকে কিডন্যাপড করে নিয়ে এসেছে মিশু।
অন্তু গালে হাত দিয়ে বসে আছে।তাকে টেক্সট দিয়ে এক জায়গায় আসতে বলা হয়েছিল।সেখানে আসার পর পিছন থেকে নাকে রুমাল চেপে অজ্ঞান করা হয়।তারপর আর কিছুই বলতে পারেনা অন্তু।জ্ঞান ফিরলে নিজেকে এই ঘরে আবিষ্কার করলো।
এমন সময় মিশু ঘরে প্রবেশ করলো। অন্তু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।এই মেয়েটি কি তাকে কিডন্যাপড করেছে! ভাবাই যায় না।
মিশু অন্তুর সামনে চেয়ার টেনে নিয়ে বসলো। অন্তুর মুখের কোণে হাসির ঝিলিক। মেয়েটি তাকে কিডন্যাপ করুক আর যাই করুক,অসম্ভব রূপবতী আর দেখলেই এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করছে।যাক,অবশেষে কোনো পরির নজর তার উপর পড়ল। এটা ভেবেই মুচকি হাসতে লাগল অন্তু।
মিশু জিজ্ঞেস করলো, আপনি ঠিক আছেন তো?
- yes. I am perfectly normal.
- আমি আপনাকে এবনরমাল বলিনি।হাসছেন কেন?
- কোনো পরির হাতে ধরা পড়ার সৌভাগ্যে।
- ফাজলামো করার জন্য আপনাকে ধরে আনিনি।সিরিয়াস কিছু কথা আছে।
- ওরে বাবাহ! বিয়ে টিয়ে পড়িয়ে দিবেন নাকি?
- মিস্টার চৌধুরী,আপনাকে তুলে নিয়ে এসেছি আপনার টেনশন হচ্ছে না?
- একটুও না।কোনো গুণ্ডা কিংবা প্রফেশনাল কিডন্যাপার রা ধরে নিয়ে আসলে টেনশন হত।কিন্তু তোমার মত পিচ্চি একটা মেয়ে আমাকে কৌশলে ধরে ফেলেছে এতেই মজা পাচ্ছি।
- আমি মোটেও পিচ্চি নই।আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংলিশে অনার্স করছি।
- ওরে বাবাহ! অনেক ট্যালেন্ট মনে হচ্ছে।সে জন্যই তো মজা পাচ্ছি।তুমি আমার অনেক ছোট।তুমি করেই বলি।
- আপনার ইচ্ছে।এবার আসল কথায় আসি।
- অবশ্যই,বলো আমাকে তুলে নিয়ে আসার কি মানে ছিলো?
- মানে হচ্ছে আপনার কাছ থেকে টাকা আদায় করা।
- হুম,সে জন্যই এই সাংঘাতিক কাজ!
- আপনাকে তুলে নিয়ে আসতে আমার তেমন কষ্ট হয়নি।কারন আপনার দুজন বন্ধু আমার পরিচিত। তারা যথেষ্ট সাহায্য করেছে।
অন্তু অবাক হয়ে বলল,তাই নাকি! গ্রেট! কিন্তু তাদের সহায়তায় আমার সাথে দেখা করলেই তো তোমাকে টাকা দিয়ে দিতাম।এভাবে ধরে আনার দরকার ছিলনা।আমার সম্পর্কে হয়ত জানো। তুমি চাইলেই আমি টাকা দিয়ে দিতাম।
মিশু একটু এগিয়ে এসে বলল,ওতে হয়ত কিছু টাকা পেতাম।কিন্তু এভাবে কিডন্যাপ করে আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করলাম,আর পরিচিত হলাম।তাছাড়া আপনার সাথে দেখা করলে আপনি সামান্যই টাকা দিতেন,কিন্তু আমার অনেক বেশি টাকা প্রয়োজন।
- ওহ আচ্ছা,তা বিয়ে টিয়ে করবা নাকি যে অনেক গুলা টাকা প্রয়োজন?
- আপনি আবারো ফাজলামো করছেন?
অন্তু হেসে বলল,তোমার সাথে রসিকতাই করা যায়।সিরিয়াস আলাপ করার জন্য চেহারায় সিরিয়াস ভাব থাকতে হয়।তোমার যা মিষ্টি চেহারা,মোটেও সিরিয়াস আলাপ করা যায় না।
মিশু এবার রাগ দেখানোর চেষ্টা করেও পারলো না।নিজেই হেসে ফেললো।
অন্তু হেসে বলল,বলুন ম্যাডাম।আপনার কত টাকা প্রয়োজন আর কি কাজে লাগবে? উদ্দেশ্য ভালো হলে আমি সেচ্ছায় টাকা দিবো।
- হু,আমার নিজের টাকা লাগবে না।
- তবে?
- কিছু লোকের কর্মসংস্থান করে দিবো।
- এর জন্য সরকার আছে।তুমি কেন?
মিশু চিন্তিত হয়ে বলল,সরকার তো অনেক করছে।আমরা সবাই যদি নিজেদের মত একে অপরের পাশে এসে দাড়াই,তবেই তো দেশ এগিয়ে যাবে।
অন্তু হেসে বলল,হুম।
- আমি ভেবেছিলাম আপনাকে সরাসরি গিয়ে ব্যাপার টা বলবো। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হত না।আপনি কথা টা কানেই তুলতেন না।তাই এভাবে...
- বেশ ভালো ই করেছ।আমি খুব এনজয় করছি।এবার বলোতো টাকা দিয়ে ঠিক কি করতে চাও?
মিশু বলল,আমি কয়েকদিন আগে আমার গ্রামের বাড়ি তে গিয়েছিলাম।যা দেখলাম,বন্যার কারনে কারোই ফসল হয়নি।ধানের ফলন ব্যাপক খারাপ। কৃষক দের অবস্থা তো করুণ আর যারা শ্রমিক, অন্যের জমিতে ফসল ফলান তাদের ও তেমন কাজ নেই।ফলন হয়নি,রোজগার নেই।অন্যদিকে চালের কেজি ৭০ টাকা।সব পরিবারেই অভাব, দুবেলা ভাত ও জোটেনা ঠিক মত।তাই ভাবছি, উচ্চবিত্তরা যদি তাদের পাশে এসে দাড়ায় তবেই তো সমৃদ্ধি হবে।সরকার তো প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। কিন্তু আমরা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবো?
অন্তু একটু ভেবে বলল,উদ্যেগ টা ভালো।কিন্তু উচ্চবিত্তদের কিসের দায় পড়েছে তারা নিজে ইনকাম করে অন্যকে ফ্রিতে দিবে?
- সে জন্যই তো আপনাকে কিডন্যাপ করেছি।এবার টাকা না দিয়ে যাবেন কই? আপনি পুরোপুরি নেটওয়ার্কের বাইরে এখন।বুঝিয়ে বলার পরও যদি কাজ না হয়,তাহলে তো...
অন্তু শব্দ করে হাসলো।
মিশু বলল,দেখুন আপনারা তো অনেক ইনকাম করেন।সেখান থেকে অল্পকিছু দিয়ে অসহায়দের সাহায্য করলেই পারেন।
- তাতে কি ওদের অভাব ঘুচে যাবে?
- হ্যা যাবে।কখনো চেষ্টা করে দেখেছিলেন কি?
- না করিনি।কিন্তু তুমি প্রত্যেকের হাতে টাকা তুলে দিবা,পরে দেখা যাবে ওরা টাকা শেষ করে খেয়েদেয়ে বসে আছে।তাতে লাভ কিছুই হবে না।
মিশু বলল,আমার প্লান টা বুঝার চেষ্টা করুন।আমি জানি ওদের হাতে টাকা দিলে খেয়ে বসে থাকবে।তাতে উপকার তেমন হবেনা।তাই আমি চাচ্ছি,প্রত্যেক পরিবারে কিছু উপার্জন করার মত সামগ্রী কিনে দিতে।
অন্তু অবাক হয়ে বলল,যেমন?
- এই ধরুন,কাউকে গরু কিনে দিয়ে,ছাগল কিনে দিয়ে,হাস মুরগী কিনে দিয়ে কিংবা নার্সারি করার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়ে।টাকা হাতে পেলেই ওরা শেষ করে ফেলবে।তাই সবাইকে জিজ্ঞেস করে যে যা চায়,সে অনুযায়ী কিছু কিনে দিবো।
- হুম,গ্রেট আইডিয়া।
- আমি নিজে সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে অবস্থা বিবেচনা করে তাদেরকে যা দেয়া উচিৎ তাই দিবো।আর কিছু বেকার যুবক যুবতীদের কে যুব কর্মসংস্থান, RTTC, BITTAC এ ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করে দিবো। তারা কাজ শিখে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে।
অন্তু অবাক হয়ে বলল,এত্ত বুদ্ধি আসে কই থেকে ম্যাম?
- সিরিয়াসলি নিয়েছেন তো?
- হুম।বেশ ভালো উদ্যেগ,যদি কাজের কাজ কিছু হয় তাহলে তো তুমি নোবেল প্রাইজ পাবা।
- আবারো মশকরা?
- হা হা, আরে সত্যি বললাম তো। এমন চিন্তা ভাবনা সবার মাথায় আসেনা।আর কেউ নিজের কাজ ফেলে কষ্ট করে অন্যের উপকার করতে লাগেনা।
- আমি করবো।একটা নীতি আমি মেনে চলি,আমি যে পরিবেশে জন্মগ্রহণ করেছি,তারচেয়ে উন্নত করে রেখে যেতে চাই।আমাকে লোকে স্মরণ করুক বা না করুক,আমার হাত দিয়ে সমাজের কিছুটা হলেও যেন উন্নতি হয়।তবেই আমি নিজেকে মানুষ বলতে পারবো।
- হুম,কত টাকা লাগবে বলো?
- আপনি বিবেচনা করে যা দিবেন। তবে আপনার তো অনেক বন্ধু আর পরিচিত অনেকেই আছেন। তাদের সাথে কথা বলে যদি কিছু নিয়ে দিতে পারেন?
- আচ্ছা।চেষ্টা করবো কিন্তু একটা বিষয় ভাবছি ম্যাম।
- কি?
- যে কাজ সরকার করছে না,সে কাজ তুমি করতে চাচ্ছো।যদি তোমার নামে মামলা হয়?
মিশু রেগে অন্তুর গলা টিপে ধরে বলল,একদম মেরে ফেলবো। অনেক্ষন ধরে ফাজলামো করছেন।
অন্তু কাশি শুরু করে দিয়েছে।এমন সময় কয়েকজন ছেলেমেয়ে রুমে ঢুকে মিশুকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,ওনাকে মেরে ফেলবি কেন? পাগল হইছিস?
অন্তু কাশি থামিয়ে বলল,আজব মেয়েরে বাবাহ!
মিশু রেগে বলল,আপনি এত রসিকতা করছেন কেন? সেই প্রথম থেকেই।
অন্তু হেসে বলল,এবার তো উচিৎ কথাই বলেছি।
- অন্যের উপকার করলে তার নামে মামলা হবে? আমি তো সরকারের বিরুদ্ধে যাইনি।আমি শুধু আমার গ্রামের অসহায় মানুষ দের পাশে থাকতে চাইছি।
- অনেকেই রেগে যাবেন দেখো।
- আশ্চর্য! মাদার তেরেসা কি অন্যের পাশে থাকেনি?
- তুমি কি নিজেকে মাদার তেরেসা ভাবো নাকি?
মিশু আবারো রেগে গেলো। এবার ওর বন্ধুরা ওকে সামাল দিলো।
অন্তু হেসে বলল,মজা করছিলাম তো। যাও আমি তোমাদের ১ লাখ টাকা দিবো। আর আমার রিলেটিভ দের কাছ থেকে নিয়ে সবমিলিয়ে ৩ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দিবো। হবে তো?
সবাই খুশি হয়ে বলল,হ্যা ভাইয়া খুব হবে।
মিশু রেগে আছে।অন্তু বলল,এই মেয়ে কিছু বলছ না যে?
- আমার আপনার কলিজা টা লাগবে।
অন্তু হো হো করে হেসে উঠল। মিশুর বন্ধুরাও হেসে উঠলো।
অন্তু বলল,বাবাহ এত রাগ! শান্ত হও মেয়ে।এরা কারা?
সবাই নিজেদের পরিচয় দিলো।
অন্তু জিজ্ঞেস করলো, আর এই কিডন্যাপার ম্যাম টার নাম কি?
আয়াত বলল,ওর নাম মিশু মনি।
অন্তু বলল,বাচ্চা বাচ্চা নাম।ওকে তো কোনো বড় পুরস্কার দিলে ব্যাপার টা কেমন দেখাবে।ওর নাম বদলে উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ার রাখতে হবে।
- উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ার!
সবাই হেসে উঠল।
মিশু বলল,খাতির পড়ে হবে জনাব।আগে টাকা বের করুন,
অন্তু হেসে বলল,এখন কই পাবো? আমাকে তো বাসায় যেতে হবে।
- আমি আপনাকে বিশ্বাস করছি না।আপনি নিজেই আমার নামে মামলা ঠুকে দিবেন সে হবেনা।
- হা হা,তাই মনে হচ্ছে? আমার দুজন বন্ধু নাকি আছে তোমার সাথে? তারা কোথায়?
- ওনারা এখানে নেই।কল দিতে হবে।যাই হোক,আপনি ১ লাখ টাকা নগদ বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ি যান।বাকিটা না দিলেও জোর করবো না।
- নগদ বুঝিয়ে দিবো? আমি কি বিয়ে করতে এসেছি? এটা দেনমোহর বুঝি?
মিশুর বন্ধুরা হাসছে।মিশু ক্ষেপে গেছে খুব।ছেলেটা অনেক দুষ্টু বটে!
.
অন্তু ওর বন্ধু দুজন কে দেখে অবাক হয়ে বলল,তোরা!
অন্তুর বন্ধু রিফাত ও প্রান্ত গর্বের হাসি দিলো যেন তারা কোনো মহৎ কাজ করছে!
অন্তু মিশুকে বলল,আমি বাসায় যাই?
- না,আগে টাকা।
- আমি ভালো ছেলে ম্যাম,বিশ্বাস করুন আমায়।
প্রান্ত বলল,মিশু ওকে যেতে দাও।আমার বন্ধু তো,আমি ওকে চিনি।
- এটা টাকার ব্যাপার, ছাড়া যাবেনা।
প্রান্ত হেসে বলল,আরে বাবা ও কিচ্ছু করবে না।ও টাকা না দিলে আমি দিবো ওর টাকা টা।
- সত্যি তো?
- হুম।
মিশু অন্তুকে বলল,তবে যান।
অন্তু চোখ বড় বড় করে বলল,জান!
- উহু,বাসায় যান।
সবাই হাসছে ওদের কথা শুনে।
অন্তু উঠে বের হতে গিয়েও আবার ফিরে আসলো।
মিশু বলল,কি হলো আবার?
- টয়লেটে যাবো।
- এখানে টয়লেট নেই।বাসায় গিয়ে করবেন।
- হুহ,তাহলে তোমার নাম্বার টা দাও।টাকার ব্যবস্থা করে কল দিবো।
- আপনার নাম্বার আমার কাছে আছে।আমি নিজেই কল দিবো।
অন্তু মুখ বেঁকিয়ে রিফাতকে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
.
দুইদিনের মধ্যেই অন্তু তিন লক্ষ টাকা নিয়ে মিশুর সামনে এসে উপস্থিত।
টাকা হাতে নিয়ে মিশু বলল,রাগ শেষ এবার। ধন্যবাদ।
অন্তু হাসল।
মিশু বলল,আমরা বন্ধুরা সবাই কালই গ্রামে যাচ্ছি।আপনার গাড়ি টা দিবেন?
- না দিবো না।
- ওকে।
- গাড়ি দিবো না,তবে আমি নিজেই যাবো তোমাদের সাথে,আমার গাড়ি তে করেই।
মিশু অবাক হয়ে বলল,আপনি!
- হুম,ভালো কাজ করে আসি।নিয়ে যাবা না?
মিশু খুশি হয়ে বলল,আচ্ছা চলুন।
.
অনেক আনন্দ করতে করতে সবাই গ্রামে এসে পৌছল।
পৌছানোর পর সবাই মিশুর দাদুবাড়িতে এসে উঠল।এখানেই কয়েকদিন থাকতে হবে।বাড়ির পরিবেশ আর মানুষ দের খুব পছন্দ হয়েছে অন্তুর।
খাবার খেয়েই মিশু তার দলবল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল গ্রামে।
প্রত্যেক বাড়ি ঘুরে ঘুরে একটা তালিকা করে ফেললো। শুধুমাত্র অতিদরিদ্র দের সাহায্য করা হবে।অনেক বেকার যুবক যুবতী ও পাওয়া গেলো।
সবার সাথে কথা বলে লিস্ট তৈরী করতেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো।
.
রাতে খাওয়ার পর সবাই মিলে আলোচনায় বসলো।
মিশু বলল,গরুর দাম অনেক।একেবারে অসহায় মানুষ ছাড়া কাউকে গরু কিনে দেয়া যাবেনা।ছাগল, হাস মুরগী কিনে দেয়া যেতে পারে।
তানিশা বলল,আর কয়েকজন বলেছে শাকসবজি চাষ করবে।ওদেরকে আলাদা ভাবে খরচ দিতে হবে রে।
- হুম,ভাবছি কিছু মহিলাকে টার্কি মুরগি কিনে দিয়ে যাবো। আমার কাজিন রা খোজ রাখবে নিয়মিত। কেউ যদি ছাগল পালন না করে বিক্রি করে দেয়,সেটা তার ব্যাপার। আমরা আমাদের মত চেষ্টা করবো,কয়েক টা পরিবার স্বাবলম্বী হলেই আমাদের ভিশন সাকসেস।
রিফাত বলল,যুবদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।এটা নিয়ে কথা বলতে হবে তো।
মিশু বলল,সব হবে।আমরা এক সপ্তাহ থাকবো এখানে।
অন্তু এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিল।এবার মুখ খুললো,উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ার আমি কিছু বলতে চাই।
মিশু অন্তুর দিকে তাকালো।
অন্তু বলল,আমার গার্মেন্টস এ অনেক কর্মী নিয়োগ দেয়া যাবে।কেউ আগ্রহী থাকলে যোগাযোগ করতে বলো।
মিশু খুশি বলল,হয়েই গেলো।
- কিন্তু ওরা যদি ভাবে তুমি তাদের পাচার করে দিবা?
মিশু রেগে বলল,আপনি সবসময় আমার পিছনে লাগেন কেন? আমার গ্রামবাসী আমাকে যথেষ্ট বিশ্বাস করে আর ভালো ও বাসে।কাউকে পাচার করে দিলে তারা আমার বাবা মা আর দাদুকে ধরে ফেলবে।ওরা তো এখানেই থাকে।আপনি খুব ইয়ে।
অন্তু হেসে বলল,আমিতো পিছনে লাগিনি।লেগেছ তো তুমি।
- আমি লেগেছি?
- হ্যা,আমাকে তুলে নিয়ে এসেছ তো তুমি।
মিশু রেগে বলল,ঝগড়া করেন কেন এত?
- মজা লাগে যে তাই।উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ারকে তো রাগা যাবেনা।রাগলে তো প্রাইজ পাবা না।
মিশু অন্যদিকে তাকালো।একইসাথে হাসিও পাচ্ছে, রাগ ও হচ্ছে।
অন্তু বলল,মিশু আমাকে একটা গরু কিনে দিও।
সবাই হেসে উঠলো,মিশু ও না হেসে পারলো না।
.
পাচ দিনের মধ্যেই গ্রামের অতিদরিদ্র পরিবার গুলোকে কিছু না কিছু সামগ্রী কিনে দেওয়া হলো।
ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারেও কথা বলা হয়েছে।আগামী মাস থেকে ওরা ট্রেইনিং করবে।
.
মিশুর মা আচার বানিয়েছেন। সব বন্ধু বান্ধবী মিলে কাড়াকাড়ি করছে আচারের বাটি নিয়ে।
মিশু দেখছে আর হাসছে!
অন্তু মিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।এই কয়েকদিনেই সে মিশুর প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে।
.
বিকেলে সবাই মিলে ঘুরতে বের হলো।
অন্তু মিশুকে ডেকে নিয়ে এসে নদী'র তীর ধরে হাটতে লাগলো।
মিশু বলল,আমাকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে আসার কি দরকার? একসাথে বসে কথা বলা যেত না?
- না,যেত না।আলাদা কথা আছে তাই আলাদাভাবে বলতে হবে।
- কি কথা?
- এখনো আমার উপর রেগে আছো?
মিশু হেসে বলল,নাহ।বলুন।
- কিভাবে যে বলি!
মিশু হেসে বলল,প্রপোজ করবেন?
অন্তু অবাক হয়ে বলল,হুম।
- টাইম পাস?
- আশ্চর্য! টাইম পাস কেন করবো?
- আজকাল তো প্রেমের নামে টাইম পাসই চলে।
- মিশু,আমি আমার বিজনেস রেখে এক সপ্তাহ ধরে এখানে পড়ে আছি।শুধুমাত্র তোমার জন্য,আর তুমি এভাবে বলছ!
মিশু হেসে বলল,মজা করলাম।
- পেনাল্টি?
- হুম,সত্যিই ভালোবাসেন?
- হুম মিশু।
- উহু,মিশু নয়।উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ার।
- ফাজলামো করছ? আমি সিরিয়াসলি কিছু বলছি।
মিশু হেসে বলল,কেউ সিরিয়াস কিছু বলছে আর ফাজলামো করলে কেমন লাগে বুঝেছেন?
অন্তু হাসল।
মিশু বলল,ভালো থাকার জন্য কি লাগে অন্তু?
- একজন ভালো মানুষকে সংগি হিসেবে পাওয়া।
- জানিনা,তবে ভালো থাকার জন্য ভালো কিছু কাজ করতে হয়।
অন্তু কিছুক্ষণ ভেবে বলল,তুমিই ঠিক। তবে আমিও ভুল নই।তুমি যদি আমাকে ফিরিয়ে দাও,তবে অনেক খারাপ থাকবো। কারন তোমার পাশে থেকে খুব ভালো আছি।
- তাই বুঝি!
অন্তু বলল,এবার বলো কি করতে চাইছো?
- সবার পাশে থাকতে।
- আর আমি?
মিশু হেসে বলল,তুমি জ্বলতে থাকো।
অন্তু বলল,আমাকে ও সাথে নাও।
- বড় লোকের ছেলেদের বিশ্বাস করতে পারিনা।
অন্তু অবাক হয়ে বলল,আমি এতকিছু করলাম তোমার জন্য! তবুও!
মিশু শব্দ করে হাসল।তারপর বলল,জ্বলছেন নাকি?
- জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি।
- বেশ তো, এই ছাই দিয়ে উইলিয়াম মিশুক্সপিয়ার দাত মাজবে।
অন্তু দাড়িয়ে পড়ল।
মিশু হেসে বলল,আচ্ছা আর মজা করবো না।এবার সিরিয়াস,বলুন কি বলতে চান।
অন্তু বলল,সারাজীবন তোমার পাশে থাকতে চাই,তোমার ইচ্ছে গুলো পূরন করে দিতে চাই।
মিশু কিছু না বলে হাটতে লাগলো।
অন্তুও পাশে হাটতে লাগলো।
মিশু হঠাত ই অন্তুর হাত ধরে ফেললো।অন্তু নিজেকে পূর্ন মনে করছে!
মৃদু বাতাস বইছে,গোধুলি বিকেলে নদীর তীর ধরে হাটছে দুজন সুখী মানুষ!
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ