3942 (3)

মিস্টার চিতপটাং
শেষ পর্ব
লেখা: মিশু মনি
★
আমার মামাতো ভাই অর্ক এসেছে।
কিন্তু আজ চিতপটাং সাহেবকে দেখতে পেলাম না।
খোজ নিয়ে জানতে পারলাম উনি মেসে আছেন। মনটাই খারাপ হয়ে গেল।উনাকে জব্দ করার জন্য অর্ক কে নিয়ে আসলাম অথচ উনিই নেই।
পরপর কয়েকদিন কেটে গেল।চিতপটাং বাবুর দেখা নাই।নিশ্চয় আমাকে জব্দ করার জন্য এটা করেছে।ওকে দেখতে না পেলে ওর প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাবে সেটাই হয়ত ভেবেছে।
আমিও কম গেলাম না।যখন শুনেছি শুভ্র আসছে তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম।মামাবাড়ি চলে যাব।এক সপ্তাহ ও এ বাড়িতে আসেনি।এবার আমিও এক সপ্তাহ মামাবাড়ি কাটিয়ে আসব।চিতপটাং সাহেব বুঝবে মজা।
.
মামাবাড়ির সকলেই আমাকে দেখে খুব খুশি।অনেক দিন পর মামাতো ভাই বোন দের সাথে একত্রিত হলাম।আশা করছি কয়েকটা দিন খুব আনন্দে কাটবে।
.
সারাদিন আডডা,খেলাধুলা, ঘুরে বেরানো, সব মিলিয়ে এক সপ্তাহ বেশ ভাল সময় কাটালাম।
.
আজ বাসায় যাচ্ছি।চিতপটাং সাহেবকে অনেকদিন হল দেখিনা।ও হয়ত আমাকে ভুলেই গেছে।কিন্তু আমি প্রতিমুহুর্তে মিস করেছি মানুষ টাকে।
আজও দেখা হবে কিনা জানিনা।এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পৌছলাম।
.
বিকেলে বাগানে বের হয়ে একটু হাটছিলাম। হঠাত শুভ্রকে দেখতে পেলাম। এতদিন পর ওকে দেখে খুব ভালো লাগছে।
ও বলল,খুব ভাল ছিলে তাইনা?
- হুম কেন?
- এম্নিই।অন্যকে কষ্ট দিয়ে ভালো থাকার মজাই আলাদা।
- কে কাকে কষ্ট দিলো?
- প্রথমে আমি তোমাকে,তারপর তুমি আমাকে।
- যাক বুঝতে পেরেছেন তাহলে।
এরপর অনেক্ষন দুজনেই চুপচাপ।
আমি বললাম,ঝগড়া করছেন না কেন?
- অধিকার আছে?
- ঝগড়া করতেও অধিকার লাগে?
- হুম লাগে।
আবার কিছুক্ষণ কেউ কোনো কথা বললাম না।
আমি ঘাসের উপর বসে পড়লাম। শুভ্রও পাশে বসল।
- অবনী,
- হুম।বলুন?
- কয়েকদিন খুব খারাপ ছিলাম।
- কেন?
- রানীপুকুর রোগ টা বেড়ে গিয়েছিল।
- ওহ আচ্ছা।আমি ভাবলাম আমাকে দেখতে পান নি বলে।
শুভ্র আমার দিকে তাকাল।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনার জিএফ কেমন আছে?
- ভাল। আমিই ভাল নাই।
- কেন? আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? কিছু হয়েছে?
- আর আমাকে না বলে কোথাও যাবা না।
আমি অবাক হয়ে তাকালাম। শুভ্র বলল,আমি আম্মুকে বলেছি।
- কি বলেছেন?
- বলেছি আমি অবনীকে বিয়ে করবো।
- কিহ!
আমি অবাক হয়ে গেলাম।শুভ্র কয়েকদিনে একেবারে বদলে গেছে।মনের ভিতর টা নেচে নেচে উঠছে ওর কথায়।
ও বলল,আমাকে বিয়ে করবা তো?
- হুমমমম...
- এত্ত শখ!?
বলেই হাসতে লাগল।আমি উঠে হাটতে শুরু করলাম। আচমকা চিতপটাং হয়ে পড়ে গেলাম।বুঝতে পারছিনা কেন এমন হল।উঠার চেষ্টা করেও উঠতে পারছিনা।কোমরে ব্যাথা পেয়েছি।
শুভ্র ব্যাপার টা বুঝতে পেরে এসে আমাকে টেনে তুলল।
তারপর বলল,আমার অসুখ তোমার কাছে চলে গেছে দেখছি।নাও হাত ধরো।
- হাত ধরবো কেন?
- পড়লে একসাথে পড়ব, মরলে একসাথে মরবো।
আমি হেসে হাত বাড়ালাম।শুভ্র বলল,এত্ত ভালোবাসা? আমিতো বাংলা ছবির ডায়ালগ দিচ্ছিলাম। আর তাতেই এই অবস্থা?
আমি রেগে আগুন হয়ে তাকালাম। শুভ্র হাসতে লাগল।মুগ্ধ হয়ে দেখছি ওর হাসিটা।কারও হাসি এত সুন্দর হয়!