#দ্যা_ডেভিল_ফ্রেন্ড
পর্ব-০৫(শেষের পর্ব)
লেখকঃ মনজুরুল করিম
আবার পুরনো দিন গুলোর কথা বারর বার মনে হতে থাকে "দীপুর"। রবিনের সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিগুলো কিছুতেই ভুলতে পারে না সে। বারবার নিজেকে অপরাধী মনে হয় তার।যার জন্য দীপুর মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে দিন দিন।
আগে হয়তো দীপুকে রাস্তায় রাস্তায় একা একা কথা বলতে দেখা যেতো তবে এখন সে রাস্তায় একা হাঠে ঠিকই কিন্তু কথা বলে না।দিনদিন কেমন জানি বদলে যাচ্ছে "দীপু"। তার এই বদলে যাবার কারণ ও কেউ জানে না,,,,,
আজ কিছুদিন ধরে ডেভিল অথবা রবিন কারোরই কোন দেখা পায়না দীপু। সেদিন রবিনের আসার পর থেকে এখনো কোনো রাতে ঘুম হয়নি "দীপুর"। তার মনে এখনো বেশ আতংক। রবিনের মৃত্যুর একমাত্র কারণ সে নিজে। তাই নিজ থেকে রবিনের কাছে ক্ষমা চাওয়াটাই এখন দীপুর শেষ ইচ্ছা।
তাই এখনো সে প্রতিটা রাতেই জেগে থাকে কখন রবিন আসবে আর তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে... আজ অনেক দিন হয়ে গেলো রবিন বা ডেভিল কেউই দীপুর কাছে আসেনা। আগের মতো ডেভিল ও দীপুর সাথে এখন কথা বলে না।
ভয়ে আর দুশ্চিন্তায় এখন আর আগের মত আচরণ করেনা দীপু। এখন আগের থেকে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই দীপুর প্রতিটা দিন কাটে। ক্লাশে আগের মত হাবা হয়ে বসে থাকেনা।স্যারদের সকলের সাথে এখন দীপুর বেশ ভাব। এখন সব শিক্ষকের প্রিয় ছাত্র "দীপু"।
নিজের জিবনের অনেক পরিবর্তন হলেও ভিতরে ভিতরে কিন্তু দীপুর মনে এখনো পুরনো দিনের কথা গেঁথে আছে। এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় দীপুর আসেপাশে "রবিন" ঘুরে বেড়ায় তার মৃত্যুর বদলা নেবার জন্য। তাই এখনো রাতে দীপু ঘুমায় না ভালো করে,,,,,,,
আজ কলেজে একটা নতুন ছেলে টি.সি নিয়ে ভর্তি হয়েছে। ছেলেটা দেখতে বেশ স্বাভাবিক। সবার সাথে কথা বলে কিন্তু দীপুর সাথে কথা বলেনা সে। কেনো কথা বলে না তার কারণ খুঁজতে যায় না কেউই..
লেখাপড়ায় খুবই ভালো ছেলেটা।এমনকি দীপুর থেকেও ভালো সে। ক্লাশে আগে দীপুই সব কিছুতে প্রথম ছিলো.... কিন্তু ছেলেটা আসার পর থেকে সেই এখন সবকিছুতে প্রথম থাকে... যার জন্য পরোক্ষ ভাবে হলেও তার উপর হিংসা হয় দীপুর...
সারারাত ধরে এক বারের জন্য হলেও বালিশে মাথা দেয়নি দীপু। তার মনে সব সময়ই এখন চিন্তা থাকে কে এই ছেলেটা? উড়েএসে জুড়ে বসে দীপুর জায়গা দখল করে নিচ্ছে আস্তে আস্তে,,,,
এমনিতেই অন্যের ভালো পারফরমেন্স কখনোই সহ্য হয়না দীপুর। সে যেই হোক তাকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে হয় তার,,, তবে এই ছেলেটাকে কেমন জানি অন্যরকম লাগে,,,,
পরেরদিন নিজ থেকেই ছেলেটির সাথে কথা বলে দীপু,,,,
- কি নাম তোমার?
-আমার নাম দিয়ে তুমি কি করবা?
- এভাবে কথা বলো কেনো?
- নাম বললে ভয় পাবে না তো??
-ভয়ের কি আছে নামই তো!! বলে ফেলো...
- আমার নাম "রবিন"।
নামটা শুনেই বেশ অবাক দীপু। ছেলেটার সাথে আর কথা বলা হয়না তার। বেশ অস্থির লাগছে এখন... ক্লাশ না করেই কলেজ থেকে বাসায় ফিরে আসে সে। পিছন থেকে ছেলেটা ডাকছে,,, কিন্তু সেদিকে কোন খেয়াল নেই দীপুর।
বাসায় এসে একটা ছোট নকশীকাথা গায়ে দিয়ে ঘুম ধরে দীপু। টেবিলে খাবার রেডি করে ডাকতেছে ছোট বোন... কিন্তু সেদিকে কোন খেয়াল নেই তার। ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও খাবার খেতে ইচ্ছে করছেনা তার। প্রচন্ড জ্বর উঠেছে দীপুর... জ্বরে এখন পুরোটাই অচেতন সে..
পরেরদিন ঘুম ভাঙে দীপুর। নিজেকে একটা হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করে সে,, পাশে ছোটবোন বসে আছে তার চোখের কোণায় জল ,,, দীপুর জেগে উঠার শব্দেই,,, "ভাইয়া" বলে কেঁদে উঠে সে,,,
দীপুর মাথায় তখনো চিনচিন ব্যথা করতেছে। ধীরেধীরে গত দিনের কথা গুলো মনে হতে থাকে তার,,, ছেলেটির নাম,,, "রবিন" ঠিক আছে,,, কিন্তু তার কণ্ঠস্বর,, চাল-চলন সব কিছুই রবিনের মত.. আর সেটা দেখেই ভয় পায়,,, দীপু। যার জন্য আজ সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে সে,,,,,,
দীপুর মাথায় আবার সেই পুরনো দিনের মনোভাব টা জেগে উঠে। আবার তার মনে হয় যে,,, তার একটা ডেভিল বন্ধু চাই! হাসপাতালের বেডে থেকেই ডেভিল কে স্মরণ করতে থাকে সে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে ডেভিলের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। হাতের ইশারায় ছোট বোনকে বিদায় জানায় সে.... আবার সেই পুরনো রহস্যময় হাসি নিয়েই উপস্থিত হয় ডেভিল... দু জনের মধ্যে আলাপ শুরু হয়,,,,
- আমার একটা অন্তিম ইচ্ছে ছিল.. সেটা কি পুরণ করতে পারবে?
- হাহা!! অবশ্যই পারবো.. কি কাজ?
- কলেজে ভর্তি হওয়া নতুন ছেলেটার মৃত্যু চাই!!
- এর জন্য ,,, বিনিময়ে তোমাকে কিছু হারাতে হবে...
- কি হারাতে হবে?
- তোমার নিজের প্রাণ!!
নিজের প্রাণ!! শুনেই অবাক হয় দীপু। একদিকে অন্য কারোর ভালো পারফর্ম সহ্য হয়না তার, সেই ছেলেটাকে আটকানোর অন্য কোন রাস্তাও নেই...
তাছাড়া ছোটবোন ও বাঁচবেনা বেশিদিন। এ মাসেই তার মৃত্যু হবে হয়তো। কারণ তার ব্লাড-ক্যান্সার। ছোট বোন ছাড়া এই পৃথিবীতে "দীপু"র আর কেউই নেই,,,,
সুতরাং,, সেই ছেলেটিকে মারার জন্য নিজের প্রাণ দিতেও রাজি "দীপু"।
"দীপু" ডেভিলকে জানিয়ে দেয় যে,,, সে রাজি,, তবে মৃত্যুটা কালকের মধ্যেই হতে হবে,,,, ডেভিল ও দীপুর কথায় সহমত!!
পরের দিন কলেজ থেকে পিকনিকে যাওয়া হয়।পিকনিকের স্থান ছিল,,, পাহাড়ি এলাকায়।দীপু,,, রবিন কে নিয়ে সেখানের সব থেকে উঁচু পাহাড়ে উঠে,,,,
পাহাড়ের উপর থেকে নিচের দিকে থাকাতেও ভয় লাগে... পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে দুজনেই,,, এখান থেকে পড়লেই নিশ্চিত মৃত্যু!!
মনে মনে ডেভিলকে স্মরণ করতে থাকে "দীপু"। সেখানেই ডেভিলের উপস্থিতি টের পায় সে... বাতাসের মাঝে একটা শব্দ ভেসে আসে,,,, আর ইউ রেডি?
দীপুর,, মনে হয় এটা নিশ্চয় ডেভিলের আওয়াজ। "ইয়েস আই এম রেডি" বলেই রবিনকে টান দিয়ে তার হাত ধরে পাহাড় থেকে নিচে লাফ দেয়!!
"দীপু" অবাক হয়!! সে নিচের দিকে পড়লেও ছেলেটা নিচের দিকে পড়ছে না। হাওয়ার মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটা। তার মুখে মিটিমিটি হাসি.... ছেলেটা কিছু একটা বলছে হয়তো,,, কিন্তু দীপু শুনতেছেনা। হঠাৎ করেই ধপাস করে শব্দ হয়। দীপু নিচে পড়ে যায়,,, কিছুক্ষণের মধ্যেই তার কানে ভেসে আসে ছেলেটার বলা কথা গুলো,,,
"আমিই রবিন ছিলাম,, আমিই ডেভিল ছিলাম!"
সব ছাত্রছাত্রী যখন নিচে নেমে এসে,,, "দীপু"র কাছে আসে,,, ততক্ষণে "দীপু " লাশ হয়ে গেছে........
(সমাপ্ত)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ