#প্রায়শ্চিত্ত ১ম পর্ব
Umme Nipa
জিহান ফুলশয্যার ঘরে ঢুকেই নববউয়ের মুখ ঢাকা ঘোমটা তুলেই
চমকে গিয়ে বউকে প্রশ্ন করে রিয়া তুই??
রিয়া: হুম আমি।কেন আশা করোনি?খেলার শেষ চাল টা আমি ঘুরিয়ে দিলাম।
জিহান: তুই এক্ষনি আমার ঘর থেকে বের হবি।
এক্ষন ই...
রিয়া বিছানার বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলছে,যাবার জন্য আমি বউ হয়ে আসিনি তোমার।
জিহান টেবিল এর উপর দুধ এর গ্লাস ছুরে মারলো দেয়াল এ...
গ্লাস ভাঙার শব্দ পেয়ে বাসার সবাই জিহান এর রুমের সামনে এসে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে।
জিহান এর মা কান্না গলায় বলছে জিহান কি হয়েছে?দরজা খোল বাবা..
জিহান দরজা খুলে ওর মাকে বলছে,মা এই চরিত্রহীনা মেয়ে আমার বাসায় কি করছে?
তুমি জানো না এই মেয়ে কি বাজে চরিত্রের?
আমাকে মেয়ের যে ছবি দেখিয়েছিলে তা তো ও না।
ও এখানে কেন?
জিহান এর মা: বাবা শান্ত হ।
আমি সব বলছি তোকে..
জিহান: ও তুমি ও জানো সব।
এই বলে জিহান বাসা থেকে বের হয়ে গেল।
কোটিপতি না হলেও জিহান এর বাবা অর্থ,নাম,যশ সবকিছুর দিক দিয়ে রিয়ার পরিবার এর দিক দিয়ে আগানো।
জিহান,রিয়া এক সময়ের প্রতিবেশী ছিল।
প্রায় ১বছর আগের ঘটনা।
যখন রিয়া জিহান দের এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে আসে।
জিহান আর রিয়ার বাসা পাশাপাশি।এতো পাশাপাশি যে একজনের ছাদ থেকে টপকে আরেকজনের ছাদ এ যাওয়া যায়।
প্রথম দেখা দুজনের ছাদ এ বসেই।
রিয়া প্রায় ই ছাদ এ হাঁটাহাটি করতো।
এমন ই এক বিকেলে ছাদ এ বসে দেখছে,পাশের ছাদ এ এক ছেলে চেয়ার এ বসে গিটার বাজাচ্ছে।
রিয়া গিটার এর শব্দ পেয়ে পাশে তাকাতেই দেখে ছেলেটা খালি গায়ে গিটার বাজাচ্ছে।
রিয়া ছেলেটাকে খালি গায়ে দেখে লজ্জা পেয়ে দেয়ালের আড়ালে চলে যায়....
ছেলেটা গিটার বাজানো বন্ধ করে দেয়।
রিয়া অপেক্ষা করছে,কখন ছেলেটা ছাদ থেকে চলে যাবে আর সাথে সাথেই সেও বের হবে।
এখন বের হলে ছেলেটা দেখে ফেলবে যে রিয়া তাকে খালি গায়ে দেখে ফেলেছে।রিয়া চায়নি ছেলেকে লজ্জা দিতে..
রিমা যখন লুকিয়ে দেখলো ছেলেটা চলে গেছে এর মাঝেই সে দেয়াল এর আড়াল থেকে বের হয়ে নিচে নামতে যাবে এর মাঝেই পাশের ছাদ থেকে এই যে শুনুন বলে ডাক দিল।
রিয়া ফিরে দেখে সেই ছেলেটা।
রিয়া: এ মা আপনি যান নি?
ছেলে: না।আমি লুকিয়ে ছিলাম আসল চোরকে ধরতে।
রিয়া: চোর?
ছেলে: হুম আমায় লুকিয়ে দেখার চোর।
আপনি নিচে তাকিয়ে কথা বলছেন কেন?প্রতিবন্ধী নাকি?
প্রতিবন্ধীরা কিন্তু চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেনা।
রিয়া: আপনি খালি গায়ে তাই।
ছেলে: তাতে কি?বাসায় বাপ ভাই নাই?
রিয়া হেসে দিল।
ছেলে: নাম কি আপনার?
রিয়া: রিয়ামনি।
আপনার?
ছেলে: জিহান....
চলবে..
#প্রায়শ্চিত্ত ২য় পর্ব
Umme Nipa
এর পর প্রায় প্রায় ই মেয়েটি ছাদ এ উঠত। ছেলেটির জন্য অপেক্ষা করতো।
লুকিয়ে লুকিয়ে তার গান শুনতে ভালো লাগতো।
"জানো কি তাকে..দেখেছোকি তাকে..
সে থাকে আড়ালে ছাদেতে দাড়ালে।"
জিহান এর গলায় এই গান শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে জিহান এর অন্ধ ভক্ত হয়ে যায়।
মনে হত গান গুলি তাকে ঘিরেই গাওয়া।
হুট করেই কয়েকদিন ধরে জিহান ছাদ এ আসা বন্ধ করে দেয়।
রিয়া ছাদ এ এসে বারে বারে জিহানদের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
হঠাৎ একদিন জিহান রিয়াদের ছাদ এ এসে উপস্থিত।
রিয়া অবাক হয়েছিল খুব তবে সস্তিও লেগেছিল।
মেয়েদের মন মাঝে মাঝে এমন কারনে আনন্দিত হয় তা নিজেদের ও জানা থাকেনা।
এভাবেই দু-এক কথায় বাড়তে থাকে তাদের কথাবার্তা।
মেয়েটি তখন অনার্স ১ম বর্ষে আর ছেলেটি এম.বি.এ শেষ করে কোন জব করছিল না।
জিহান আর রিয়ার সম্পর্ক যখন ৪মাস তখন জিহান রিয়ার মুঠোফোনে কল দেয়...
জিহান: রিয়া আমার না খুব জ্বর।
রিয়া: হায় আল্লাহ কি বলো?
জিহান: তার মাঝে মা ও বাসায় নেই।ছোট ভাইকে নিয়ে স্কুলে গেছে।
আমি বিছানা থেকেই উঠতেই পারছিনা জানো।
আমার মাথায় একটু পানি দিয়ে দিবে প্লিস...
এই বলেই চুপ করে থাকে।
রিয়া: জিহান...হ্যালো..
কল এনডেড>>>
রিয়া উদ্বিগ্ন হয়ে গিয়েছে খুব।কি করবে বা কি করা উচিৎ তার ভেবে পাচ্ছিলনা।
একজন মানুষ তার উপর ভালোবাসার মানুষ এর এই অবস্থায় তার পাশে থাকাটা যে খুব জরুরি।
রিয়া বাসা থেকে পড়ার নাম করে জিহান এর বাসায় গেল।
দরজায় নক করতেই জিহান দরজা খুললো..
ফিস ফিস করে বলছে,ভিতরে আসো তাড়াতাড়ি। পাশেরবাসার আন্টি দেখবে...
রিমা ভয়ে বাসার ভিতরে যায়।
জিহান এর কপালে হাত দিয়ে দেখে গা একেবারেই নরমাল।
বরং নরমাল এর চেয়ে ঠান্ডা
রিয়া: কি বেপার?তোমার জ্বর নেই।
জিহান: তুমি আসাতেই সেরে গেছে।
রিয়া: তুমি আমাকে মিথ্যে বলে এনেছো..এই বলেই রিয়া বাসায় আসতে নিবে জিহান রিয়ার হাত ধরে টান দিল।
জিহান: এই রিয়া..তুমি জানো আমার মা, ছোট ভাই নানুবাড়ি গেছে আমায় নিতে চেয়েছিল আমি শুধু তোমার জন্য থেকে গেছি।
আর তুমি আমায় ভুল বুঝো?
এই বলেই কপাল এ চুমো দিল।
রিয়ার কোন বেপারে দূর্বলতা ছিল তা জিহান এর জানা হয়ে গিয়েছল।
রিয়া ধীর গলায় বললো,আচ্ছা আমি এক ঘন্টা থাকবো কিন্তু কথা দেও আমায় গান শোনাবে।
জিহান: ওকে রানী।
জিহান এর কক্ষে বসলো দুজন।
রিয়ার ভয় করছে খুব।
মানুষ এর জানাজানির ভয়।
বাবার বড় মেয়ে রিয়া..বাবার মান-সম্মান যাবার ভয় পেয়ে বসেছিল খুব।
রিয়া: জিহান আমি এখন যাই প্লিস।
জিহান: এ মা ১ঘন্টা হয়েছে?বুঝেছি তুমি আমায় বিশ্বাস করোনা তাইতো?
আচ্ছা যাও..যে ভালোবাসায় বিশ্বাস নেই সেখানে আর জোর খাটেনা।
রিয়া: এই ছিঃছিঃ।
আমি শুধু বিশ্বাস নয় ভরসা করি তোমায়।
মেয়েরা খুব আবেগাপ্লুত হয়।আর ছেলেরা সেটা খুব বুঝতে পারে।সেটাকেই তারা মাছের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে..
রিয়া তুমি বসো আমি কফি করে আনি।
রিয়া: আমি আনি..
জিহান: তুমি আজীবন ই করবে,শুধু আজ আমি করি।
রিয়া শুধুই মলীন হাসি দিল....যে হাসি দোটানার।যে হাসি মন রাখার,এবং যাতে হাজার সংকোচতা মিশে থাকে।
কফি খাবার পর জিহান গান ধরলো.
একে একে গান গাইছে.
হাতে গিটার আর গলায় সুর...
রিয়া মাতাল হচ্ছে...
সাথে চারদিক ঝাপ্সাও হয়ে যাচ্ছে।
প্রথমে রিয়া বালিশ এ হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে গান শুনতে শুনতে নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে যায়।।।
ঘুম ভেঙে দেখে রিয়া বিবস্ত্র জিহান এর বিছানায় শুয়ে আছে...
বাইরে অন্ধকার হয়ে এসেছে।
তড়িঘড়ি করে ফোন হাতে নিয়ে দেখে ফোন বন্ধ হয়ে গেছে।
হয়তো বাবা-মা বার বার কল দিয়েছে তাই আমায় পায়নি।
আচ্ছা এটাকি স্বপ্ন?আমি কোথায় আছি এই ভাবতে ভাবতে দেয়ালের ঘড়ির টুং টাং শব্দে ভয়ে আতকে দেয়াল এর দিকে চোখ পরে যায় রিয়ার।
ঠিক ১০টা।
আচ্ছা সকাল ১০টা?
না আমিতো এসেছিলাম ১১:৩০টার সময়।
কি করে আমি এতক্ষণ ঘুমালাম এই বলে বিছানা থেকে তড়িঘড়ি করে নেমেই পাশের রুমে হাসাহাসির শব্দ।
রিয়া রুমের দরজার আড়ালে দাড়িয়ে দেখছে,জিহান আর তার দু বন্ধু....নেশার আসর বসিয়েছে।
সবার হাতে সিগারেট। জিহান এর এক বন্ধু লিমন এর হাতে ফোন আর ফোনের দিকে দেখছে আর সে বলছে শালি ঘুমাইয়া ছিল মামা...
তবুও তার মধ্যে বলে "আমি বাড়ি যাব" এই বলে হাসি দিতে দিতে লুটিয়ে পরলো...
জিহান রিয়ার দেয়া গিটার এর তারে হাত বুলাচ্ছে আর বলছে,শালা তোদের আনছি ভালোভাবে ভিডিও করতে আর তোরা ভিডিও করতেও জানোসনা..
এই গিটার রিয়া গত মাসের ফ্রম ফিলাপের কথা বলে বাবার কাছ থেকে নিয়ে রিমন কে কিনে দিয়েছিল।
সেই তাল ই আজ রিয়ার সর্বনাশ এর কারন।
এই ভেবে রিয়া ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
আতিক জিহান এর আরেক বন্ধু: কিরে ওয় এখনো উঠেনা কেন?
কয়টা ট্যাবলেট দিছস?আবার মইরা যাবে নাকি?
উঠলে কি কবি ওরে?
জিহান: উঠলে ভিডিও দেখাবো।ব্লাক মেইল করে সারা রাত রেখে দি।
এর মাঝেই লিমন উঠে বলে,রাত এ উঠে কিনা দেখ?
পরে কেস না খাই।
জিহান: আরে মামা টেনশন নিসনা।মাত্র ৫টা ট্যাবলেট..উঠবে ১২-১টার সময়ে।
আতিক: তা তুই যা বলিস,তুই কিন্তু অভিনয় ভালো করিস।পুরস্কার দেয়া দরকার...
এই কথা শুনে রিয়া ওখানে এক মুহুর্ত স্থীর থাকতে পারলোনা..
বাসা থেকে বের হয়ে গেল।
সব কিছু এক দিনেই এলোমেলো লাগছে।
সবচেয়ে কাছের মানুষ হুট করে হিংস্র হওয়া মানে সব দুনিয়াই অচেনা এবং ভয়ানক লাগা।
বাসার গেইট এর কাছে যেতেই রাস্তায় অনেক লোকজন এর ভীড়..
রিয়ার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত...
চলবে..
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ