#ঈদ_স্পেশাল
.
ছোটগল্প:: ঈদের খুশি
লেখা: সাজ্জাদ আলম বিন সাইফুল ইসলাম
উৎসর্গ: ডাক্তারবাবু
.
.
.
(১)
প্রভাতের উজ্বল রবি জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। ভোর খুব দ্রুত না হলেও আজকে যেন খুব দ্রুতই এসেছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের চোখে নেই ঘুম। চারদিকে খুশির আমেজে ছোট-বড়-বৃদ্ধ সবাই আনন্দে গদগদ। ছোটরা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রাস্তায়, আঙ্গিনায়, কিংবা বাড়িতে আনন্দ মিছিল করছে। সদ্য কেনা নতুন গরুটাকে খড়-ঘাস খাওয়াচ্ছে। কেউ কেউ গোসল শেষ করে ঈদগাহের দিকে ছুটছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ঈদ বোনাসের জন্য বড়দের কাছে আবদার করছে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামায আদায় করে বাড়িতে এসে গোসল সেরে নেয় রহিম। হালকা নাস্তা করে নতুন পোশাক পড়তে ব্যস্ত হয়ে যায়। রবি,রানু দৌঁড়ে ভাইয়ার কাছে ছুটে আসে। হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, 'ভাইজান ঈদ বোনাস দেন, ভাইজান ঈদ বোনাস দেন।'
রহিম মুচকি হেসে উত্তর দেয়, 'আমি তো চাকরি করি না ছোট? আমার কাছে কেন?'
রবি রহিমের হাতটা ধরে নাকটা উঁচিয়ে বলে, 'ভাইজান তুমি যত দিবে তাতেই আমরা খুশি হবো। বেশি চাইবো না।'
রহিম বলে, 'তোরা ছোট মানুষ, ঈদ বোনাস দিয়ে তোরা কি করবি?'
রানু বলে উঠে, 'দেখ ভাইজান, আমরা ঈদগাহের পাশে ছোট্ট মেলাতে যাব। খাব, খেলনা কিনবো আরো কত কি!'
রহিম বুঝতে পারে ছোটরা নাছোড়বান্দা, তাই মুচকি হেসে দু'জনের হাতে দুটো বিশ টাকার নোট ধরিয়ে দেয়।
রানু বলে উঠে, 'দেখ ভাইজান, চাকরি করলে কিন্তু বোনাস বাড়িয়ে দিতে হবে হুহ। না হলে তোমার সাথে আড়ি দিবো। চাকরি করো না বিধায় আজ বেঁচে গেলে।'
কথাটা বলেই দু'জনেই দৌঁড়ে চলে গেল। রহিম হাহা করে হাসতে থাকে। যখন সে ছোট ছিলো সেও বড়দের কাছে এভাবে আবদার করতো। সময়ের পরিক্রমায় জীবন পাল্টে যায়, পাল্টে যায় জীবনের প্রান্তরেখা।
ঘরের বাইরে থেকে ডাক আসে রহিমের বাবার, 'কই রে রহিম? ঈদগাহে যাবি না নাকি? সময় যে হয়ে এলো।'
রহিম ঘরের ভিতর থেকে বের হতে হতে উত্তর দেয়, 'এই তো বাবা হয়ে গেছে।'
রহিমের বাবা বলে উঠেন, 'কি রে বাজান, এত দেরি হলো কেন?'
টুপি মাথায় দিতে দিতে রহিম বলে, 'আরো বলো না বাবা, রবি আর রানু আসছিলো ঈদ বোনাস নিতে। তাই একটু দেরি হলো।'
রহিমের কথায় উনি হাহা করে হাসতে থাকে, 'কত দিলি বোনাস?'
রহিম বলে, 'বিশ টাকা করে দিছি। আমার পকেট এখন ফাঁকা।'
রহিমের বাবা হাসতে হাসতে পকেট থেকে পাঁচ'শ টাকার নোট বের করে দিয়ে বলে, 'এই নে তোকেও ঈদ বোনাস দিলাম।'
রহিম মুচকি হেসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে, 'আপনার অভ্যাসটা পরিবর্তন হলো না বাবা।'
রহিমের বাবা বলেন, 'নেয়ার মাঝে যেমন আনন্দ আছে ঠিক তেমনি দেয়ার মাঝেও আনন্দ আছে। ঈদ মানেই খুশি। ঈদে সবাই খুশি থাক, ভালো থাক এটাই তো চাই।'
স্মিত হেসে বাবা-ছেলে ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হয়। রাস্তায় আরো যোগ হয় রহিমের চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
.
(২)
তালি দেয়া পাঁচ বছর আগের ছোট পাঞ্জাবিটা পরে কোনমতে নামায পড়ে বাড়ি ফিরে আসে রাজু। পেশায় একজন বাদামওয়ালা। বয়স খুব বেশি নয়, মাত্র এগারো। এত ছোট বয়সে স্কুলের বদলে পার্ক, চিড়িয়াখানায় বাদাম নিয়ে চিৎকার করতে হয়, 'এই বাদাম, এই বাদাম।'
সংসারে মায়ের পাশাপাশি ৬ বছরের একটা বোনও আছে তার। বোনটার নাম রিয়া।
ঈদগাহ থেকে বস্তিতে ফিরে আসে রাজু। মাকে ডাকতে থাকে, 'মাগো কিছু খাবার কি আছে? আমার পেট যে ক্ষুধায় জ্বালা করতেছে।'
মা ঘর থেকে বের হয়ে বলেন, 'আছে বাজান, রিয়াকে নিয়ে বস আমি ভাত বাড়তাছি।'
রাজু পাঞ্জাবিটা খুলে রিয়াকে নিয়ে মেঝেতে বসে পরে। রাজুর বাবা বছর তিনেক আগে মারা গেছে। তখন থেকে দু'টো টাকার জন্য বাদাম বিক্রি করতে হয়। রাজুর মা রাবেয়া বেগমও মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করেন।
প্লেটে ভাতের সাথে শাক ভাজি। শাক দেখে চোখ ছলছল করলেও কোন কথা বলে না রাজু।
গত কয়েকদিন সে অসুস্থ ছিলো তাই বাদাম বিক্রি করতে পারে নি। সেজন্য হয়তো আজকের এই খুশির দিনেও তাদেরকে শাক পাতা খেতে হচ্ছে। প্রথম লোকমা মুখে না দিতেই রিয়া চিৎকার দিয়ে ওঠে, 'ঈদের দিনে শাক পাতা খামু না।'
রাজু রিয়ার মাথায় হাত বোলাতে থাকে। রিয়া রাগে মাথা থেকে হাতটা সরিয়ে দেয়। রিয়ার এমন আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে দু'টো চড় বসিয়ে দেন রাবেয়া বেগম। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে যায় রিয়া।
স্বাভাবিকভাবে রাজু বলে, 'মা ওকে মারলে কেন? ছোট মানুষ, সেজন্য হয়তো বুঝে না। তাছড়া প্রতিদিন শাক ভর্তা খাই। আজ ঈদ তাই এমন খাবার দেখে রাগ করেছে।'
রাবেয়া বেগম কোন কথা বলেন না। ছেঁড়া কাপড়টা দিয়ে মুখখানা ঢেকে কাঁদতে থাকেন।
ছলছল চোখে রিয়াকে খুঁজতে বেড়িয়ে পরে রাজু। গায়ে এখনো জ্বরজ্বর ভাব। মাথাটা বেশ গরম। হয়তো কিছুক্ষণ ঘুমাতে পারলে শরীরটা আরাম লাগতো।
বস্তির আশেপাশে রিয়াকে খুঁজেও পায়না রাজু। অবশেষ পুকুরপাড়ে দিকে আসে। পুকুরপাড়ের শান বাঁধানো ঘাটে পানির দিকে তাকিয়ে আছে রিয়া।
সবাই কত আনন্দ করছে! কিছু সময় রাজুর মনে হয় ঈদ শুধু ধনীদের আনন্দ বয়ে আনে আর গরীবদের বয়ে আনে কষ্ট। ঈদ শুধুই ধনীদের জন্য,গরীবদের জন্য নয়।
রিয়ার পাশে বসতেই মাথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেয় সে।
রাজু বলে উঠে, 'বোন দেখ আমি বাড়ি থেকে বের হইছি। বস্তির বাইরে যাবো গোস্ত খুঁজতে। আমার জন্য নয়,অন্তত তোর জন্য। দ্যাখ আমার হাতে পলিথিন।'
রিয়া এবার ভাইয়ার দিকে তাকায়, 'ভাইয়া সত্যি তুমি গোস্তে আনবা তো? কতদিন খাই না?'
রাজু রিয়াকে বুকের মধ্যে টেনে উত্তর দেয়, 'আনমু বোন গোস্ত আনমু। তুই বাড়ি যা, আমি গোস্ত লইয়া আসি। সন্ধ্যায় আমরা এক লগে গোস্ত দিয়ে ভাত খামু।
রাজু মেকি হেসে রিয়ার দিকে তাকায়।তখন দু'জনের চোখ ছলছল করছিলো।
.
(৩)
রাজু হাঁটছে তো হাঁটছে। আত্মবোধকে বিসর্জন দিয়ে পলিথিন হাতে নিয়ে হাঁটছে। মনে মনে একটাই ভাবনা, 'সন্ধ্যায় সকলে একসাথে গোস্ত দিয়ে ভাত খাব।'
বেশ কয়েকজনের কাছে যাওয়াতে দূরদূর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। সকলের একই ভাষ্য, 'আমাদের কাছে যে গোস্ত আছে তা আমাদের মহল্লায় দেয়াতে টান পড়বে।'
রাজু শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে চলে এসেছে। অনেকেই অবশ্য ছোটলোকের ছেলে বলে গালি দিয়েছে। তাতে অবশ্য কোন কষ্ট পায়নি সে। বাদাম বিক্রির সময় অনেকেই এমন বলে।
পলিথিনের ভিতর খুব সামান্য কয়েক পিচ গোস্ত। রাজু মনে মনে ঠিক করে নেয় আর কয়েকটা বাড়ি দেখেই ঘরে ফিরবে। জ্বর যদি না আসতো তাহলে হয়তো তাকে এভাবে গোস্তের সন্ধানে ঘুরতে হতো না। বাদাম বিক্রির টাকা দিয়ে কিছু গোস্ত কিনতে পারতো।
এভাবে পলিথিন হাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে কখনোই হাত পাতে নি। বুকের বাম পাশটা চিনচিন করছে। তবুও এর বিনিময়ে যদি ছোট্ট বোনটার মুখে হাসি ফুটে! তবেই মনে কিছুটা তৃপ্তি পাওয়া যাবে।
ঈদের নামায পরে ঘরে ফিরে টেলিভিশন দেখছিলো রহিম। গরু জবাই ও কাটাকাটির পর চলছে গোস্ত বণ্টন। রহিমরা উচ্চ মধ্যবিত্ত, তাই রহিমের বাবা ও রহিমের চাচা একটা গরু কোরবানী দিয়েছে। বাড়িতে অনেক ভাই-বোন থাকার সুবাদে কোন কাজ করতে হচ্ছে না রহিমকে।
ঘরের বাইরে চেঁচামেচি দেখে বের হয় রহিম। গোস্তের পালার পাশে একটা ছেলে পরে আছে। রহিম দ্রুত ছেলেটাকে মাটি থেকে তোলে, ছেলেটাকে খুব চেনাচেনা মনে হয় রহিমের।
চাচার দিকে তাকায় রহিম, 'কি ব্যাপার চাচা, ওকে ফেলে দিলেন কেন?'
চাচা গোস্ত ভাগ করতে করতে বলে, 'আর বলিস না বাবা, ওকে কতবার বললাম এখানে হিসেবের বণ্টন করে রেখেছি তবুও বারবার গোস্ত চাচ্ছিলো।'
রহিম বলে, 'এজন্য আপনি ওকে ফেলে দিলেন?'
চাচা বলে, 'বারবার অনুরোধ করছিলো, কি আর করবো?'
রহিম ও তার চাচার কথোপকথন দেখে রাজু আস্তে বলে উঠে, 'ভাইজান থাক, নিজেদের মধ্যে আমার জন্য তর্ক করবেন না। আমি বরং চলে যাই, ক্ষমা করবেন।'
রাজু চলে যাবার জন্য হাঁটা দেয়। রহিম রাজুর হাতটা টেনে ধরে। স্মিত হেসে বলে, 'তোমার নাম রাজু না? সেদিন তোমায় চিড়িয়াখানায় দেখেছিলাম বাদাম বিক্রি করতে?'
রাজু মাথা নিচু করে হ্যাঁ বলে উত্তর দেয়।
রহিম বলে, 'তুমি এভাবে গোস্ত সংগ্রহে বের হয়েছো কেন? তোমার বাড়ির পাশে কেউ কুরবানী দেয় নি?'
রাজু এবার একটা নিশ্বাস ফেলে বলে, 'ভাইজান আমরা গরীব মানুষ। বস্তিতে থাকি, বস্তির সবাই গরীব। কে কুরবানী দিবে বলুন? কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলাম, বাদাম বিক্রি করতে পারি নি। ঘরে কিছু নেই যে তা দিয়ে ছোট্ট বোনটার জন্য গোস্ত কিনে আনবো। জানেন ভাইজান, আজকে খেতে বসে খুব অভিমান করেছে শাক দেখে। তাই বোনের মুখের হাসির জন্য গোস্ত সংগ্রহে বের হয়েছি। কিন্তু ভাইজান সবাই দূরদূর করে তাড়িয়ে দিয়েছে।'
.
(৪)
রহিমের চোখের কোণায় জলের রেখা স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। ছোট্ট বোনের হাসি-খুশির জন্য অন্যের দুয়ারে ঘুরছে গোস্তের জন্য। হৃদয়টা ভরে যায় রহিমের, 'চাচা আমরা সবসময় গোস্ত-মাছ কিংবা ভালো তরকারি দিয়ে ভাত খাই। কিন্তু এই যে বস্তির ছেলে রাজুকে দেখছেন ওরা বা ওদের মতো ছেলেরা এসব খেতে পায় না। ওদের কাছে গোস্ত-মাছ শুধুই স্বপ্ন। যাদের পেটে দু'বেলে গরম ভাত জোটে না তারা কিভাবে এসব পাবে? আমি একদিন #ডাক্তারবাবুর সাথে চিড়িয়াখানা গিয়েছিলাম ঘুরতে তখনি দেখি ছোট্ট রাজু যার স্কুলে যাবার বয়স,খেলাধুলা করার সময় তখনি সে পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য বাদামের ঝুলি হাতে নিয়ে বিক্রি করতে বের হয়। বাবা আপনি সকালে বললেন ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদে যদি সবাই হাসি-খুশিতে না থাকে তাহলে কিসের ত্যাগ? কিসের খুশি?
কুরবানীর দেয়ার উদ্দেশ্য হলো গরীব-দুঃখীকে একটা দিন হলেও সাহায্য করা কিন্তু আমরা অধিকাংশরাই কুরবারী দিয়ে সবটা ফ্রিজে বা শুকিয়ে রাখি পরে খাবার জন্য। অথচ পাশের গরীবেরা খেতে পেল কি পেল না তা আমরা জিজ্ঞেসও করি না।'
রহিমের কথা শুনে রহিমের বাবা বলে উঠে, 'তুই অনেক সুন্দর কথা বলেছিস বাজান। আমার মনটা আনন্দে ভরে গেল। কত ভাবিস তুই মানুষকে নিয়ে! বিশ্বাস কর, এভাবে আমি কখনো ভাবি না।'
রহিম বলে, 'ভাবেন নি, ভাবতে হবে বাবা। আমরা যদি গরীব-দুঃখীর পাশে না দাঁড়াই তাহলে কে দাঁড়াবে? তাছাড়া আল্লাহ গরীব, মিসকিন, এতিমদেরকেও গোস্ত দেয়ার জন্য বলেছেন। এতে আল্লাহ খুশি হন। তিনি বলেন, 'তোমাদের কুরবারীর গোস্ত আমার নিকটে পৌঁছে না। শুধু পৌঁছে তোমাদের তাক্বওয়া।'
রহিমের বাবা রাজুকে কাছে টেনে বলে, 'বাবা আসলে আমাদের ভুল হয়ে গেছে, তোমাকে ওভাবে ফেলে দেয়া ঠিক হয়নি। তোমার কাছে আমরা লজ্জিত। রহিম তুমি আমাদের ভাগের থেকে কিছু গোস্ত রাজুকে দাও।'
রাজুর চোখ ছলছল করছে। একদিন একটা ছোট্ট কথা শুনেছিলো সে, 'প্রত্যেক মানুষের ভিতরে অসাধারণ কিছু গুন থাকে। তা প্রকাশ্য হোক বা অপ্রকাশ্য।'
রহিম বলে, 'রাজু তুমি আমার সাথে খাবার খাও? আমার অনেক ভালো লাগবে।'
রাজু মাথা নিচু করে বলে, 'না ভাইজান, আপনাদের কাছে যা পেলাম তা ভুলবার নয়। আমি আমার ছোট্ট বোনকে কথা দিয়েছি একসাথে সন্ধ্যায় খাবো। ওকে ছেড়ে কিভাবে আমি খাই বলুন? কথা দিয়ে তো কথা রাখতে হবে। ইমাম সাহেব বলেছিলেন, 'যে কথা দিয়ে কথা রাখে না সে মুনাফিক।'
রহিম রাজুকে আর বাঁধা দেয় না। রাজুর পলিথির ভর্তি করে গোস্ত দেয়। রহিমের বাবার চোখে আনন্দজল।
রাজু চলে যাচ্ছে। রহিম পিছন থেকে ডাকে, রাজু পিছনে ফিরে চায়। দু'টো এক'শ টাকার নোট হাতে দিয়ে বলে, 'একটা তোমার বোনকে ঈদ বোনাস দিও আর বাকি একটা দিয়ে তুমি ওষুধ খেও।'
রহিমের কথা শুনে ঝরঝর করে কেঁদে উঠে রাজু। রাজু চলে যাচ্ছে, রহিম তাকিয়ে আছে রাজুর দিকে।
হঠাৎ বেজে উঠে রংপুরের #অবিচল_শিল্পীগোষ্ঠীর ক্ষুদে শিল্পী #মোস্তাফিজারের গানের কিছু অংশ....
ঈদের দিনে ভুলে যা তোর যত তো কেনা
ভুলে যা তোর জীবনেরই লেনাদেনা...
.
(৫)
রাজুর মুখে খুশির ছাপ। আজকে অনেকদিন বাদে রিয়াকে গোস্ত দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারবে।
যতটুকু আশা করেছিলো তার চেয়ে বেশি পেয়েছে গোস্ত। সব রহিম ভাইয়ের কৃতিত্ব। মানুষটা যে এত ভালো তা তার জানা ছিলো না। চিড়িয়াখানায় শুধু জিজ্ঞেস করেছিলো তোমার নাম কি? তুমি কোথায় থাকো?
শুধু এতটুকু। রহিম ভাইয়ের মতো মানুষ বেঁচে আছে বলে কিছু গরীব মানুষ আশা নিয়ে বাঁচতে পারে, স্বপ্ন দেখতে পারে। রাজুকে দেখা মাত্র রিয়া দৌঁড়ে আসে, 'ভাইজান গোস্ত আনছো, ভাইজান গোস্ত আনছে?'
রাজু হাসিমুখে উত্তর দেয়, 'হ্যাঁ রে অনেক গোস্ত আনছি। আইজ তিনজনে গোস্ত দিয়া পেট ভইরা ভাত খামু।'
দু'ভাই-বোন আনন্দে ঘরে ফিরে যায়। রাবেয়া বেগম ঘরে চুপটি মেরে বসে আছেন। চিন্তা করছেন অসুস্থ ছেলেটা কখন ফিরবে? চিন্তার ছেদ ভেঙে রাজুর কণ্ঠে মা ডাক শোনে। দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে রাজুর হাসিমাখা মুখটা দেখে। তড়িঘড়ি করে বলেন, 'সারাদিন কই ছিলি বাজান? কিছুই তো খাস নি?'
হাসিমুখে রাজু উত্তর দেয়, 'গোস্ত সংগ্রহে গেছিলাম মা। দেখ কত্ত গোস্ত আনছি। আইজ তিনজনে পেট ভইরা খামু।'
পলিথিন ভর্তি গোস্ত দেখ থতমত হয়ে যায় রাবেয়া বেগম।
আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করে, 'এত গোস্ত কই পাইছিস বাজান?'
গোস্তের পলিথিন মায়ের হাতে দিয়ে বলে, 'এক ভাইজান দিছে মা। লোকটা খুব ভালা। প্রথমে খারাপ আচরণ করলেও ভাইজান আইসা তাদের অন্যায়ের কথা কইলেন। সবাই সবটা বুঝে ক্ষমা চাইছিলো। দেখ মা, আমারে দু'শ টাকাও দিছে। এক'শ রিয়ার জন্য আরেক এক'শ আমার ওষুধ কেনার জন্য।'
ছেলের কথা নীরব হয়ে যান রাবেয়া বেগম। চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেন, 'আল্লাহ তাগো ভালা করুক।'
দু'ভাই-বোন বিছানায় মজার মজার গল্প করছে। সূর্য প্রায় ডুবুডুবু। রাবেয়া বেগম গোস্ত রান্না করছেন। গ
কতদিন পর যে তিনি গোস্ত রান্না করছেন তা ঠিক তার মনে নেই। গোস্ত রান্নার ঘ্রাণে চারদিক মৌ মৌ করছে। আর মাত্র কিছুক্ষণ! তারপরই দু'ভাই-বোনের অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে। শেষ হবে আরেকটি দিন। উদিত হবে নতুন দিনের নতুন সূর্যের। পথচলা শুরু হবে নতুন করে।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļāύিāĻŦাāϰ, ⧍ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
711
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧝:ā§Šā§Ģ PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ