2843

গল্প: উপকার
.
মাদ্রাসাটা দশ দিনের জন্য বন্ধ দিছে।
তাই আমি আর আমার এক বন্ধু বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুত হচ্ছি।
কিন্তু তখন মাদ্রাসার বড় হুজুর এসে আমাদের কে বলে তোমরা বাড়িতে দুই দিন পরে যাও।
মাদ্রাসার আরেক হুজুর রফিক আছে না..
জ্বী হুজুর আছে তো তার কী হয়েছে?
না তার কিছু হয় নাই।তার মা টা অসুস্থ হয়ে পরেছে তাই  রফিক সায়েব হুজুর গ্রামের বাড়িতে গেছে।
সে যে মসজিদে   নামায পড়াতো সেই মসজিদে নামায পড়ার মতো এখন কেউ নাই।
তাই আমাকে বলে গেছে মাদ্রাসার দুই টা ছাত্র দিয়ে সেই মসজিদে নামায পড়াতে।
তোমরা কী নামায পড়াতে পারবে?
ইনশাআল্লাহ্ পারবো।
তাহলে আমার মাথাটা  এখন একটু হালকা হলে। কারন আরো কয়েক জন কে বলেছি তারা নামায পড়াতে পারবে না বলে দিছে।
এই বন্ধের মধ্যে তারা বাড়িতে যাবে।
তোমরা কতো ভালো বাড়িতে না গিয়েই ত্যাগ স্বীকার  করে নামায পড়াবে আল্লাহ তোমাদের কে উত্তম বদলা দান করুক।
আমিন....
.
নিলয় আর নিরব একটু খুশিই হলো।
কারন তারা এখনো  নামায পড়াই নাই কোন মসজিদে এই প্রথম নামায পড়ানোর সুযোগ পেলে।
নিলয় আর নিরব তারা দুই বন্ধু।
তাবলীগ খুব পছন্দ করে।
দুই জনে তাবলীগে সময়ও লাগাইছে।
যে তাবলীগে তিন চিল্লা সময় লাগাবে  সে যদি আলেম না হয়ে মুর্খ মানুষও হয় তার পরেও সে যদি বয়ান করে তাহলে একজন আলেমের বয়ানের কাছা কাছি হবে। এরকম বয়ান শিখে তারা তিন চিল্লা দিয়ে।
আর নিরব আর নিলয় তিন দিন তিন দিন সময় লাগিয়েছে।
তার পরেও তারা আলেম পড়া পরছে তো তাই এই তিন দিন তিন দিন সময় দিয়ে অনেক সুন্দর বয়ান শিখেছে।
.
নিলয় আর নিরব সেই মসজিদে গেলো।
মসজিদ টা দেখতে অনেক সুন্দর।
মোটামোটি মসজিদ টা বড়ই।
এই মসজিদে খাদেম আছে
একজন আবার ময়াজ্জেনও আছে।
এখন বাজে এক টা।
ময়াজ্জেন সায়েব এসে মসজিদে ঢুকে আজান দিলো।
নিলয় যোহরের নামায টা পড়ালো।
সুন্নত পরে হুজুরের রুমে তারা দুইজন চলে গেলো।
এসে দেখে খানা হাজির।
হাত মুখ ধুয়ে  খানা খেতে বসে পরলো।
.
নিলয় আর নিরব অবাক হয়ে গেলো।
চার পাঁচ পদের তরকারী।
তারা দুইজন অনেক দিন পর পেট ভরে খানা খেলো।
মাদ্রাসায় ডাল আলুর ভর্তা নিরামিষ সপ্তাহে একদিন মাছ দেয়।
এসব খেয়ে মন মতো পেট ভরে না।
.
একদিন পার হয়ে গেলো।
তার পরের দিন সকালে।
মক্তব পড়ানোর জন্য মসজিদের বাড়ান্দায় আসলো নিলয় আর নিরব।
এসে তো অবাক হয়ে গেলো।
মুক্তবে প্রায় একশ জন ছাত্র ছাত্রী এসেছে।
কেউ কোরআন পড়ছে আবার কেউ কায়দা পরছে।
সবাইকে পড়িয়ে ছুটি দিলো।
.
দুই দিন কেটে গেলো সেই হুজুর টা চলে এসেছে।
নিরব আর নিলয় মসজিদ থেকে চলে আসলো মাদ্রাসায়।
এসেই বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তত হলো।
নিলয় আর নিরবের বাড়ি এক সাথেই।
ঢাকা থেকে নবীনগর আসবে  নিলয় আর নিরব।
তাই ঢাকা টু নবীনগর  এই বাসে
উঠে পরলো।
বাস টা পুড়াই খালি।
অল্প কয়েক জন মানুষ আছে।
একটু একটু জ্যাম আছে।
কিন্তু গাবতলীতে এসে আর কোন জ্যামে পড়ে নাই।
লোকাল বাস তো তাই  অনেক যায়গায় ব্রেক করে মানুষ ওঠানোর জন্য সব নবীনগর পর্যন্ত লোক নিছে।
নবীনগর এসে সবাই নেমে পড়তাছে।
হঠাৎ একজন মেয়ে এসে বলে ভাই ইসলামপুর জাবেন।
মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দর।
তখন প্রায় রাত দশটার মতো বাজে।
হেলপার টা মেয়েটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
হেলপার টা বললো হ্যাঁ জামু আপা।
কিন্তু আমার আর নিলয়ে মনে একটা খটকা লাগলো।হেলপারের মুখটা একটা অন্যরকম ভাব দেখতে পেলাম।আর বাসটা নবীনগর পর্যন্ত শেষ ঠিকানা।
কিন্তু সে আরো সামনে ইসলামপুর জাবে কেন?
কোন একটা রহস্য আছে।
মেয়েটাকে একা পেয়ে কিছু আবার করতে পারে।
হেলপার আবার আরেক জন কে ফোন দিলো ফিস ফিস করে বললো তোরা বিশ মাইল থাকিস।
এই কথাটা বুঝতে পারলাম
এখন আর বুঝার বাকি রইলো না কি হতে চলছে।
হেলপার বলছে আরে ভাই আপনারা দুইজন নামছেন না কেন?
না আমার সামনে একটু ধরকার আছে
তাই বসে আছি মেয়েটাকে বললেন ইসলামপুর জাবে আমিও সেখানে যাবো....
আরে ভাই আপনারা অন্য বাসে জান?
না আমরা এই বাসেই যাবো।(নিলয় আর নিরব এখন বুঝে গেছে অন্যবাসে কেন যেতে বলে।না এই বাস থেকে আর নামা যাবে না।)
হেলপারের সাথে তর্কা তর্কি লাগলো।
পরে ড্রাইবার বলে আচ্ছা ওধের নিয়ে চলো।
.
গাড়ি চলছে...
বিশ মাইল এসে কয়েক জন লোক এসে মেয়েটার পাশে ঘেশে বসলো।
মেয়েটা কিছু বলতে পারছে না।
একটু ঝাঁকুনি লাগলে সেই মেয়েটার উপরে এসে পরে তারা।
আমি কয়েকবার মেয়েকে ইশারায় বুঝানোর চেষ্টা করেছি বাস থেকে নামার জন্য পরে মেয়েটা বুঝতে পারলো।
আমরা বাইশ মাইল এসে নেমে পরলাম।
.
তার পরে মেয়েটাকে বললাম।
কি হতে চলছিলো।
কাল প্রত্রিকায় আসতো বাসে একটা মেয়েকে ধর্ষন করে তার পরে হত্যা।
হুম আপনারা না থাকলে হয়তো আমার অবস্তা খারাপ হতো।
আমরা কিছুই করি নাই।
সব আল্লাহ তালার কুদরতে আপনাকে হেফাজত করেছে।
আরেক টা কথা বলি আপনাকে আর কখনো যে বাসে মানুষ দেখেন নাই সেই বাসে  আর উঠবেন না।
আচ্ছা ঠিক আছে।
আপনাদের এই উপকারে কথা কখনোই ভুলবো না।ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। আপনাদের কে আল্লাহ তয়াালা এর প্রতিদান কাল হাসরের ময়দানে যেনো দেন। আমিন,,

,.
তার পরে আমরা দুইজন আবার বাইশ মাইল থেকে নবীনগর এসে আমাদের বাড়িতে যাই।
আপনার যদি কখনো এমন পরিস্থিতি দেখেন তাহলে  মেয়েদের কে একা ফেলে যাবেন না।
মানুষের উপকার করার চেষ্টা করবেন।তাহলে আল্লাহ তালা দশ বছর এতেকাফ করার সওয়াব দিবেন।
.
সমাপ্ত
.
লেখক:অগোছালো লেখক।