নিলয় ও তার পরিবার আজ নতুন বাসায় ভাড়া এসেছে । নিলয় অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র । ভার্সিটি থেকে তাদের বাসা অনেক দূরে । তাই তারা ভার্সিটির কাছাকাছি নতুন বাসা নিয়েছে ।
.
নিলয় খুব ভালো গান গায় । মাঝে মধ্যে রাত জেগে গান গাওয়া তার অভ্যাস ।
.
নতুন বাসা নতুন জায়গা । তাই রাতে ঘুম আসছিল না নিলয়ের । বারান্দায় চেয়ারে বসে গান গাচ্ছিল নিলয় । হঠাৎ একটা কাশির শব্দ শুনে নিলয় গান থামিয়ে দেয় । তাকিয়ে দেখে পাশের ফ্ল্যাটের বেলকুনিতে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।
---- এই যে মিঃ । এতো রাতে গান গাইছেন কেন?
--- না মানে, নতুন জায়গা তো ঘুম আসছিল না তাই _____
---- তাই বলে অন্যদের বিরক্ত করবেন?
--- আমি বুঝতে পারি নি । দুঃখিত
.
এই বলে নিলয় রুমে যাবার জন্য চেয়ার থেকে উঠল । আর তখনই মেয়েটি পেছন থেকে ডাকল,,,
---- এই যে, কথা নেই বার্তা নেই চলে যাচ্ছেন যে? আপনার নাম কি?
--- আমার নাম নিলয় ।
--- ওহ আমি নীলাদ্রি । সবাই নীলা নামেই ডাকে ।
-- ভালো ।
--- আমি এখানেই থাকি । মাঝে মধ্যে গান গেলে সমস্যা নেই ।
--- ঠিক আছে । এখন অনেক রাত হয়েছে । বাই
---- ওকে বাই
.
সেই রাতের মতো তাদের কথা বার্তা এখানেই শেষ । পরদিন সকালে নিলয় অনেক বার বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ায় । কিন্তু নীলাকে দেখতে পায় না । সেই বেলকুনি দেখে মনে হয় অনেক বছর কেউ পরিষ্কার করে নি ।
.
বিকাল বেলা নিলয় বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দেখে নীলাদের ফ্ল্যাটে তালা । নিলয় ভাবল নীলারা হয়তো বেড়াতে গেছে ।
.
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে নিলয় বেলকুনিতে এসে দাঁড়াল । কিছুক্ষণ পর নীলার কন্ঠ শুনতে পেল নিলয় ॥
--- মিঃ নিলয় ॥ কেমন আছেন?
--- জ্বী ভালো । আপনি?
--- ভালো আছি ।
--- আচ্ছা আপনার বাবা মা কোথায়? উনাদের তো দেখলাম না ।
---- আসলে উনারা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন ।
--- ও আচ্ছা ।
--- জানেন, অনেক দিন পর কারো সাথে কথা বললাম । মানুষের সাথে কথা না বললে মনে শান্তি হয় না ।
--- মানে????????
---- না মানে সবার সাথে তো আর বন্ধুত্ব করা যায় না । তাই বলছিলাম আর কি ।
---- ও আচ্ছা ( মেয়েটা কেমন অদ্ভুত )
--- কি ভাবছেন?
---- না মানে আমরা কি তুমি করে বলতে পারি?
--- আমিও সেটাই বলতে চেয়েছিলাম । আমার কোনো আপত্তি নেই ।
--- ধন্যবাদ ।
-- এখন যাই । তোমার মা তোমাকে খুঁজছেন । পরে কথা হবে । শুভ রাত্রি ।
---- শুভ রাত্রি ( মেয়েটি কিভাবে জানল মা আমাকে খুঁজছেন? )
.
নিলয় কথা গুলি ভাবতে ভাবতে নিলয়ের মা হাজির ।
.
--- কিরে নিলয় । এতো রাতে এখানে একা একা কি করছিস?
--- না মা কিছু না
--- চল ভেতরে চল ।
-- হ্যাঁ চল ।
.
ঘুমাতে এসে নিলয় নীলার কথা ভাবতে লাগলো । কি অদ্ভুত মেয়ে । আগেই বলে দিল নিলয়ের মায়ের কথা । অথচ সে কিভাবে জানল? এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল নিলয় । পরদিন সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গল নিলয়ের ।
.
--- নিলয় উঠ ভার্সিটি যাবি না?
--- হ্যাঁ উঠছি ।
নিলয় ফ্রেস হয়ে বেলকুনিতে এসে দাঁড়ায় । কিন্তু না । নীলাকে দেখতে পেলো না । পরে ভার্সিটিতে যাবার সময় দেখে নীলাদের ফ্ল্যাটে তালা ঝুলছে । এর আগেও এই ব্যাপারটা নিলয় লক্ষ্য করেছে । তাই আজ সে ঠিক করল নীলাকে জিজ্ঞেস করবে ।
.
রোজকার মতো রাতে নিলয় বেলকুনিতে এসে দাঁড়ায় । আর কিছুক্ষণ পর নীলাও চলে আসে বেলকুনিতে ।
.
--- কেমন আছ নিলয়?
--- ভালো । আচ্ছা একটা কথা বলতো?
--- কি?
--- তোমাদের বাসায় দিনের বেলা তালা থাকে কেন? আমি আগেও দেখেছি ।
--- ও কিছু না । বাদ দাও । আজ বৃষ্টিতে কেন ভিজলে?
--- তুমি কিভাবে জানলে????!!?
--- দেখেছি ।
---- তাহলে সামনে কেন আসলে না?
--- তোমার বন্ধু ছিল তাই ।
--- ও আচ্ছা । এখন যাই ॥ ঘুমাতে হবে । বাই
--- আচ্ছা বাই ।
.
সেদিন রাতে নিলয়ের প্রচন্ড জ্বর আসে । বৃষ্টিতে ভেজার কারণে এই জ্বর । পুরো ১ সপ্তাহ জ্বর ছিল নিলয়ের । কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর সন্ধ্যার সময় বেলকুনিতে বসে চা খাচ্ছে নিলয় । এমন সময় নীলার আগমন ।
.
--- বৃষ্টিতে ভিজে ভালোই জ্বর বাধালে ।
--- আচ্ছা আমি বুঝতে পারি না তুমি সব কিভাবে বলতে পারো? ঐ দিন মা খুঁজছেন সেটাও বলে দিলে । আমার জ্বর হয়েছে সেটাও বলতে পারো । কিন্তু কিভাবে?
---- ভালোবাসার টানে।
---- মানে????
--- তোমাকে ভালোবাসি তাই বলতে পারি ।
.
নিলয় কিছু বলতে যাবে এমন সময় নিলয়ের মা হাজির ।
--- একা একা কার সাথে কথা বলছিস?
--- নীলার সাথে ।
--- নীলা? কোথায়? এখানে তো কেউ নেই!!!!!
.
নিলয় নীলাদের বেলকুনিতে তাকিয়ে দেখে নীলা নেই ।
---- মা নীলা এখানেই তো ছিল ॥
---- তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে । এখানে কেউ নেই । আয় ঘরে আয় ॥
.
নিলয়ের মা চলে যাবার পর নিলয় নীলাদের বেলকুনিতে তাকিয়ে চমকে উঠে,,,,,,
-- একি!!!!!!!!!তোমাকে তো একটু আগে দেখতে পাইনি । তুমি কোথায় ছিলে?
--- লুকিয়ে ছিলাম । তোমার মা না দেখার জন্য ।
--- কেন????
--- লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করবো তাই । হিহিহি
---- হাহাহা
--- বললে না তো । ভালোবাসো আমায়?
--- হ্যাঁ ।
.
এই ভাবেই তাদের প্রেম চলতে থাকে । প্রতিদিন রাতে কথা বলা তাদের রুটিন ।
একদিন নিলয় নীলাকে বলল,
--- নীলা চল কাল আমরা কোথায়ও বেড়াতে যাই ।
---- না আমি যাব না । বাইরের আলো আমি সহ্য করতে পারি না ।
--- কেন?????????
---- না মানে একটু মাথা ব্যথা করে আরকি ।
--- একদিন বেরুলে কিছু হবে না । চল না প্লিজ ।
--- আচ্ছা যাব । কখন যাবে বল ।
--- কাল বিকেলে । তুমি তৈরি থেকো
--- ঠিক আছে ।
.
পরদিন সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে নিলয় আর নীলা পার্কে যাবার জন্য রিকশা নিল । নিলয় রিকশায় বসে নীলার সাথে কথা বলেই চলেছে ।
---- তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে এই শাড়িতে ।
--- হুম জানি ।
.
নিলয়ের কথা শুনে রিকশাওয়ালা বার বার নিলয়ের দিকে তাকাতে লাগলো ।
.
--- তুমি চুপ কর । দেখছ না রিকশাওয়ালা কিভাবে তাকাচ্ছে? (নীলা)
--- আরে সে তো তোমাকে দেখছে । হা হা হা (নিলয়)
.
কথা বলতে বলতে রিকশা পার্কের সামনে চলে এলো । রিকশা থেকে নেমে নিলয় রিকশাওয়ালাকে বলল,
--- কিগো মামু । বার বার পেছনে কি দেখছিলা?
--- আপনে একলা একলা কথা কইতাছিলেন তাই,,,,,,
--- একা মানে????? আমার সাথে আরো একজন যে আছে দেখতে পাও নি???
--- কই???আপনে তো একলাই রিকশায় উঠলেন ।
--- এই চলতো (নীলা)
.
নিলয় আর কথা না বাড়িয়ে রিকশা ভাড়া দিয়ে পার্কের ভেতরে গেল । নিলয় পার্কে হাঁটছে আর রিকশাওয়ালার কথা ভাবছে । হঠাৎ নীলার কথায় বাস্তবে ফিরে এলো ।
--- কি ভাবছ? (নীলা)
--- না রিকশাওয়ালার কথা ভাবছি। তোমাকে কেন দেখতে পায় নি বলল?
--- আরে বাদ দাও তো । মিথ্যা বলেছে তোমাকে ।
--- হুম চল ফুচকা খাই ।
--- তুমি খাও আমি খাব না ।
--- খেতে হবে । আমার সাথে এসেছো আর খাবে না???
(নিলয় ফুচকাওয়ালার উদ্দেশে বলে ) ২ প্লেট ফুচকা বানান তো ভাই ।
--- ২ প্লেট???????? (ফুচকাওয়ালা)
--- কেন? কি হয়েছে?
--- আপনি একজন মাত্র মানুষ । আর বলছেন ২ প্লেট ফুচকা খাবেন!!! মানুষ ১ প্লেটই খেতে পারে না আর আপনি,,,,,,,
--- কি বলছেন এসব!!!!!!! আমার সাথে আর একজন আছে আর আপনি বলছেন আমি একা??
---- কোথায়?? আপনি তো একাই বসে আছেন ।
.
ফুচকাওয়ালার কথা শুনে নিলয় অবাক হয়ে যায় নিলয় । সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু সে চিন্তা করতে থাকে । নীলাদের বাসায় তালা থাকা । তারপর আগে থেকে নীলার বলে দেওয়া । পার্কে আসার সময় রিকশাওয়ালার কথা । আর এখন ফুচকাওয়ালা । এসবের মানে কি?? তার মানে নিলয় যাকে ভালোবাসে সে মানুষ নয়!!! অশরীরের কেউ!!!! মাথা তুলে সামনের দিকে তাকায় নিলয় । একি? নীলা কোথায়?? তার মানে সে যা ভাবছে তাই ঠিক!!
.
না আর এখানে থাকা ঠিক হবে না । যত দ্রুত সম্ভব বাসায় যেতে হবে । এমন সময় পার্কে আসে নিলয়ের বন্ধু অভি । নিলয়ের এমন অবস্থা দেখে সে জিজ্ঞেস করে,
--- কিরে কি হয়েছে???
--- দোস্ত বাঁচা ।
--- কি হয়েছে বল?
তারপর নিলয় সব খুলে বলে অভিকে । সব শুনে অভি বলে,
--- নিলয় মনে হয় নীলার আত্না তোকে ভালোবেসে ফেলেছে । আর তা যদি সত্য হয় তাহলে তোকে মেরেও ফেলতে পারে নীলা । কারণ মানুষ আর আত্না এক সাথে থাকতে পারে না ।
--- না!!!! তুই আমাকে বাঁচা । (
--- নিলয়!!!!!!!! (নীলা)
পেছনে তাকিয়ে দেখে নীলা দাঁড়িয়ে আছে ।
--- না!!! তুমি আমার কাছে আসবে না!!! অভি দেখ নীলা!!! (নিলয়)
---- কোথায়???? আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না । (অভি)
.
তখনই অভি দেখলো হলুদ শাড়ি পড়ে একটি মেয়ে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে । অভি বুঝতে পারলো এটাই নীলা ।
.
--- নিলয় তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না । আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি । আমি একবার আমার ভালোবাসার মানুষকে হারিয়েছি । আর হারাতে চাই না । নিলয়! তোমার মধ্যে আমি আমার সেই ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে পেয়েছি । যার অবহেলার কারণে আজ আমি মৃত । ঐ ফ্ল্যাটে আমাদের নতুন জীবন শুরু করার কথা ছিল । বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলাম তার সাথে । কিন্তু সে আমাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে । আমার মৃত দেহ নর্দবায় ছুড়ে ফেলেছে । আজ পূর্ণিমা ॥ এই দিনটির জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম । একটু পর সন্ধ্যা নামবে । আকাশের বুকে ঘন মেঘের আড়ালে উঁকি দিবে পূর্ণিমার চাঁদ । এই চাঁদের আলোতে তোমার আত্মার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে । খুন কর তোমাকে । আমি আর আমার ভালোবাসা হারাতে পারবো না । আমার আর তোমার বিয়ে হলেই আমার মুক্তি হবে । এসো নিলয় । আমার কাছে এসো । ভয় পাচ্ছো কেন?
--- অভি বাঁচা । না!! নীলা কাছে এসো না ।
.
সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে গেল নিলয় । এদিকে নীলা ধীরে ধীরে নিলয়ে কাছে আসতে লাগলো ।
--- দাঁড়াও নীলা । তুমি নিলয়কে নিয়ে যেতে পারবে না । (অভি)
--- আমি নিলয়কে ভালোবাসি । আমি নিলয়কে আমার সাথে নিয়ে যাবো ।
--- দেখ নীলা । তুমি নিলয়কে তোমার সাথে নিয়ে গেলে নিলয়ের মা বাবা কষ্ট পাবেন ।তুমি তোমার দিক থেকে ভেবে দেখ । তুমি তোমার মা বাবাকে ছেড়ে যাবার পর উনাদের কি অবস্থা হয়ে ছিল! তোমার সাথে যারা অন্যায় করছে তাদের প্রাপ্য শাস্তি আমরা তাকে দিব । তুমি নিলয়কে ছেড়ে দাও । প্লিজ নীলা ।
--- ঠিক আছে । আমি চলে যাচ্ছি ।
.
এই কথা বলেই নীলা অদৃশ্য হয়ে গেল । নীলা চলে যাবার পর অভি নিলয়ের মুখে পানির ঝাঁপটা দেয় ।
.
নিলয়ের জ্ঞান ফিরে এলে অভি নিলয়কে সবকিছু বলে । তারপর নিলয়কে বাসায় নিয়ে যায় অভি । সেখানে নিলয়ের বাবা মা কে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে অভি আর নিলয় । সব শুনে নিলয়ের বাবা বাসা ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন ।
.
এরপর নীলাকে দেওয়া কথা রাখতে নীলার প্রতারক প্রেমিকের বাসার ঠিকানা জোগাড় করে সেখানে যায় তারা । কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারে ২ দিন আগে লোকটি হার্ট এটাক করে মারা গেছে । তাহলে কি নীলা নিজেই অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছে?????
লেখা --Shamim Ahmed Nirob (নীর হারা পাখি)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍⧝ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2822
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧍:ā§Ēā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ