________আমার বিয়ে_________
লেখক: ShoheL Rana
__________শেষ-পর্____________
কয়েকমাস কেটে গেল দেখতে দেখতে। এর মধ্যে একবারও সাবরিনার সাথে আমার দেখা বা কথা হয়নি। ডিভোর্সের পর ওকে খুব মিস করতে শুরু করি। বেডে যখন ঘুমাতাম, তখন মনে হতো পাশে বুঝি সেও শুয়ে আছে। ওর সাথে ঝগড়ার দিনগুলো আমি ভুলতে পারিনা।
.
আমাদের ডিভোর্সের কথা শুনে জয় আমার উপর খুব রেগে গেছিল। ও একদিন আমাকে ডেকে অনেক বকা দিল। সে বলল:
--রানা, তুই সাবরিনাকে কখনো বুঝতে পারিসনি, তুই বুঝতে পারিসনি তুই কি হারিয়েছিস....."
আমি শুধু বললাম:
--জয়, আমাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিলনা কোনদিন.... তাহলে ওর সাথে আমি বাকি জীবনটা কি করে কাটাতাম বল?"
জয় আমার কাঁধে হাত রেখে বলল:
--সাবরিনা তোকে অনেক ভালোবাসে, তুই আমাকে আর ওকে সন্দেহ করেছিলি? বিশ্বাস কর, আমরা ছিলাম কেবল ভাই বোনের মতো। ও আমাকে কি বলত জানিস? বলতো, তোকে নিয়ে সে অনেক স্বপ্ন দেখে, তুই ওকে ওর মতো করে ভালোবাসবি, কাছে টানবি, অথচ কিছুই হলোনা....."
--বাদ দে ওসব কথা..... ডিভোর্স তো হয়ে গেছে, এখন আর ওসব ভেবে কি লাভ বল?"
--ভুল করেছিস বন্ধু, তুই বড় ভুল করেছিস। ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমাকে একবার জানাতে পারলিনা? তোকে একটা কথা বলি?
--বল.....
--সাবরিনাকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারিস কিনা দেখ......"
--সেটা সম্ভব না দোস্ত।
--তবুও একবার ভেবে দেখ....."
--আচ্ছা...... "
***
এর কিছুদিন পর জয় বিদেশ চলে যায়। তার কথা এতদিনেও ভাবা হয়নি। আমি চেষ্টা করিনি সাবরিনার সাথে যোগাযোগ করার।
তবে কয়েকমাস পর একদিন সাবরিনার সাথে দেখা হয় আমার হাসপাতালে। আমার দাদু গাড়িতে এক্সিডেন্ট করেছিল, দাদুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন সাবরিনা দাদুকে দেখতে আসে। দাদুকে বাঁচাতে "ও" নেগেটিভ ব্লাড দরকার ছিল, সাবরিনার সাথে ব্লাড মিলে। ও ব্লাড দেয় দাদুকে। হাসপাতালে সে দাদুকে সেবা করতে থাকে।
তবে আমার সাথে কোনো কথা বলেনি। রাত এগারোটায় দাদুর জ্ঞান ফিরে। তখন সে দাদুর পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আমি যখন দাদুর পাশে গেলাম, সে নিরবে চোখ মুছে বেরিয়ে যায় কেবিন থেকে। আমি কিছুক্ষণ দাদুকে দেখে কেবিনের বাইরে এলাম। দেখলাম সাবরিনা একটা চেয়ারে বসে আছে। ওর পাশের চেয়ারে আমাকে বসতে দেখে একটু নড়েচড়ে বসল সে। আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম:
--সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ....
সে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল:
--না ঠিক আছে, ধন্যবাদ দেয়ার কি আছে?
--তো কেমন আছো?"
--হুমমম, আছি মোটামুটি..... তুমি নিশ্চয় খুব ভালো আছো?
--আমি? আমিও আছি কোনরকম....
--অনেক শুকনো হয়ে গেছ আগের থেকে....
--তাই?
--হুমম.....
--বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল না?
--হুমমম..... ২ দিন পর ফ্লাইট....
--কোনদেশে যাবে?
--ইতালি..... ওখানে আমার এক মামার কাছে থাকব। আর একটা জবের অফার আছে।
--শুভকামনা রইল.....
--ধন্যবাদ।
--তো এখন কি চলে যাবে বাসায়? রাত তো অনেক হলো.....
--হুমমম, চলে যাব.....
--চলো, তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি..." বলেই উঠে দাঁড়ালাম, ও পিছু পিছু আসল আমার।
হাসপাতালের বাইরে গাড়ি রাখা ছিল আমাদের। ওকে গাড়িতে উঠে বসতে বললাম। ও গাড়ির পেছনের সিটে উঠে বসল। আমি ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি ছেড়ে দিলাম। কোন কথা হয়নি আমাদের আর। ওকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে বিদায় জানালাম। তারপর চলে এলাম আমি।
***
দুইদিন পর দাদুকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। দাদুকে গাড়িতে তোলার সময় আমার নজর পড়ে গাড়ির পেছনের সিটে একটা ভাজকরা কাগজের দিকে। ওটা পকেটে রেখে দিই আমি।
বাসায় এসে কাগজটা খুললাম। সাবরিনার কাঁপা কাঁপা হাতে লেখা একটা কাগজ। হয়তো সেদিন তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার সময় গাড়ির পেছনে বসে এটা লিখেছে। আর আমার অজান্তে রেখে দিছে। আমি পড়তে শুরু করলাম কাগজটা। ও লিখেছে:-
***তোমার সাথে আবার এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবিনি। তোমাকে অনেক কথা বলার ছিল, যা আমি কখনো বলতে পারিনি। জানো, আমি তোমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতাম, ভাবতাম সারাটা জীবন তোমার পাশে ছায়া হয়ে থাকব, কিছুই হলোনা। আমি চেয়েছিলাম আমাদের সম্পর্কটা হবে সম্পূর্ণ অন্যরকম। আমার প্রতি দুর্বল হবে ধীরে ধীরে। কিন্তু কখনো তুমি দুর্বল হওনি আমার প্রতি। এতো শক্ত মন কেন তোমার?
.
জানি, আমার প্রতি তোমার অনেক রাগ হতো, যখন তোমাকে নিয়ে শপিং-এ বের হতাম, আর বান্ধবীদের শপিং করাতাম তোমার টাকা দিয়ে। কিন্তু তুমি এটা জানতেনা, তোমার টাকাগুলো আমি বা আমার বান্ধবী কেউ খরচ করিনি। তোমার যতো টাকা খরচ করতাম, ততো টাকা আমরা আবার তোমার একাউন্টে ব্যাক দিতাম। তুমি তো তা বুঝতেই পারতেনা। আসলে আমার খুব ভালো লাগত তোমার সাথে মজা করতে।
প্রথম যেদিন তুমি আমাকে দেখতে এসেছিলে পাত্রী হিসেবে, সেদিনই তোমার লজ্জা লজ্জা চাহনী দেখে আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। তখন ভেবেছিলাম, বিয়ের পর তোমাকে আমার মনের মতো করে ভালোবাসব।
বাসর রাতের কথা মনে আছে তোমার? ভয়ে ভয়ে তুমি আমার সাথে ঘুমাতেও চাওনি, আমি তখন খুব মজা পেয়েছিলাম। ভাবলাম, সবার বাসর রাত একরকম হতে হবে কেন? আমাদের বাসর রাতটা অন্তত ভিন্ন হোক।
হানিমুনের ব্যাপারটাও একই। চেয়েছিলাম ভিন্নধরণের হানিমুন। তোমার সাথে তো সারাজীবন কাটাব, একদিনের বাসর আর সাময়িক হানিমুনের কি দরকার? যখন তুমি আমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়বে, তখন প্রতিটা রাত হবে আমাদের বাসর রাত, প্রতিটা মুহূর্ত হবে আমাদের হানিমুনের সময়। কিন্তু আফসোস! কিছুই হলোনা।
.
ভেবেছিলাম জয় ভাইয়ের সাথে মিশলে তুমি জেলাস ফিল করবে, আর আমাকে ভালোবাসবে তখন। তাও হলোনা। হলো উল্টোটা, তুমি সন্দেহ করে আমাকে দূরে ঠেলে দিলে আরো। আমার একটাই আফসোস! জীবনের কোন হিসাব আমি ঠিকমতো মিলাতে পারলাম না। আমি আমার মতো করে সবকিছু করতে চেয়েছি, তাই হয়তো সব হারাতে হলো।
.
ঐদিনের কথা মনে আছে তোমার? তুমি আমার গায়ে হাত তুলেছিলে? সেদিন আমি রাগ করে কারো সাথে কথা বলিনি, খাবার খাইনি। রাতে তুমি খাবার নিয়ে এসে বললে খাওয়ার জন্য। আমার অনেক ইচ্ছে ছিল তোমার হাতে খাব, ভেবেছিলাম তুমি জোর করে নিজ হাতে আমাকে খাওয়াই দিবা। কিন্তু তুমি দাওনি। সারারাত খাবারগুলো ঐভাবেই ছিল। খুব খিদে পেয়েছিল আমার, তবুও খাইনি। একটু কি পারতেনা আমাকে খাওয়াই দিতে? মারতে তো ঠিকই পেরেছ, খাওয়াই দিতে পারনি কেন?
.
আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছ কোনদিন জানো? যেদিন তুমি আমাকে ডিভোর্স পেপার হাতে ধরায় দিছিলা। ঐদিন সকাল থেকেই আমি ভেবেছিলাম, তোমাকে যখন আমার মতো করে পাবনা, তখন তোমার মতো করেই ভালোবাসব। তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম কবে তুমি বাহির থেকে আসবে। বিকেলে যখন তুমি এলে, আমি ছুটে গিয়েছিলাম তোমাকে ভালোবাসি, অনেক ভালোবাসি কথাটা বলার জন্য। তখন তুমি বললা একটা গুড নিউজ আছে। আগে আমি গুড নিউজটা শুনতে চাইলাম, আর তুমি আমাকে এমন গুড নিউজ দিলে, তখন আমার মরণ হলে ভালো হতো। আমার হাতে ডিভোর্স পেপার ধরায় দিলে তুমি। আমারও আর বলা হলোনা "ভালোবাসি তোমাকে"।
তুমি ডিভোর্স পেপারটা আমাকে দিয়ে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়লে, আর আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে চুপচাপ কাঁদতে লাগলাম। তারপর একসময় আমিও সাইন করে দিলাম। জানো, সাইন করার সময় কেমন লেগেছিল? মনে হয়েছিল এই বুঝি আযরাইল এসে জান কবজ করে নিল। এতো বেশি কষ্ট পেয়েছি সেদিন। তারপর আমি সব অধিকার হারিয়ে রাতেই চলে আসলাম। মুক্তি তুমি আমাকে দাওনি, আমিই দিয়েছি সেদিন তোমাকে। ভেবেছি, কষ্ট হোক আমার, তবুও তুমি ভালো থেকো।
তুমি যখন আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে এলে, আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম। বারবার মনে হচ্ছিল, এইবুঝি তুমি আবার এসে আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই হলোনা, কিচ্ছু না।
.
ডিভোর্সের পর এমন একটা দিন আমার কাটেনি, যেদিন আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরেনি। প্রতিটা মুহূর্তে তোমাকে মনে পড়তো শুধু।
আজ আবার অনেকদিনপর তোমাকে দেখলাম। অনেক শুকিয়ে গেছ তুমি। নিজের প্রতি একটু যত্ন নিও। আর বাড়ির সবার দিকে খেয়াল রেখো। দাদুর প্রতি একটু বেশি খেয়াল রেখো। আমি ইতালি চলে গেলে দেশে হয়তো আর আসবনা। সবাইকে খুব মিস করব। ভালো থেকো।
সাবরিনা।
***
সাবরিনার লেখাগুলো পড়তে পড়তে আমার চোখ বেয়ে অশ্রু বের হতে শুরু করল। চোখের অশ্রু গিয়ে পড়ল কাগজটার উপর। আমি বুঝতে পারলাম কি হারিয়েছি আমি। সাবরিনাকে আমার চাই। আর দেরি করলামনা। বেরিয়ে পড়লাম গাড়ি নিয়ে। ওর বাসায় গেলাম। পেলামনা ওকে। ও বেরিয়ে পড়েছে বাসা থেকে অনেক আগে। এয়ারপোর্টে গেছে। আমি গাড়ি ছুটালাম এয়ারপোর্টের দিকে। স্পিড বাড়ালাম যতো বাড়ানো যায়। তারপরও আমাকে ব্যর্থ হতে হলো। আমি ফেরাতে পারলামনা তাকে। আমি এয়ারপোর্টে পৌছার একটু আগেই তাদের বিমানটা আকাশে উড়াল দিল। আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। বিমানটা দূর থেকে দূরে চলে যেতে লাগল। একসময় হারিয়ে গেল আমার দৃষ্টির আড়ালে। দূরে চলে গেল সাবরিনা। আর আমি ব্যর্থতাকে বুকে নিয়ে আবার গাড়িতে উঠলাম ফিরে যাওয়ার জন্য। বাকিটা জীবন কাটাব সাবরিনার ফেরার আশায়। আশায় থাকব একদিন সে আবার ফিরে আসবে.......
*********(সমাপ্ত)**********
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍⧝ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2828 (7)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Š:ā§Ļ⧍ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ