*নিঃসঙ্গ শহর*
.
®- শামসুজ্জামান স্বপ্ন
.
বাসে করে বাসায় যাচ্ছি, এমন সময় আম্মুর ফোন, হ্যালো অয়ন কতদুরে বাবা? এইতো মা সৈয়দপুর পার হইলাম। ও আচ্ছা আয়। আচ্ছা মা বলে ফোনটা রাখলাম। এতক্ষণ পর পাশে থাকা জলপরীটা আমার দিকে তাকালো।
-ওই হারামী, বীরগঞ্জে এসে বলছিস সৈয়দপুর। মিথ্যা বললি ক্যান?
-ইটস মাই উইশ।
- কি আমার সামনে ইংলিশ ঝাড়া হচ্ছে বলেই একটা রামচিমটি দিয়ে দিল।
-ওই ডাইনি চিমটি দিলি ক্যান।
-এটা তোর ইংলিশ বলার পুরস্কার।
এমনি ছোটখাটো খুনসুটি নিয়েই আমাদের সংসার থুক্কু প্রেমকাহিনী।
ও হ্যা আমার পাশের জলপরীটা (পেত্নীটা) আমার গার্লফ্রেন্ড। ওর নাম আয়শা বিনতে অনু আমি ডাকি জলপরী।
ওর সাথে কোন একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রথম পরিচয় আমার সম্পর্কে ও আমার আম্মুর কোন এক দুরসম্পর্কের মামাতো বোনের মেয়ে ছিলো। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানগুলো আমার এমনিতেই কেমন যেন লাগে তাই চুপচাপ বাসার বাইরে বসে বসে জোছনা দেখছি। এমন সময় ঠন করে একটা শব্দ, সাথে সাথে অনুভব করলাম মাথাটা কেমন যেন অসহ্য একটা ব্যাথায় কিলবিল করতে শুরু করেছে, আর মুখটা বেয়ে নোনতা গরম তরল চুইয়ে নামছে।
কোনমতে হাতটা দিয়ে চেপে ধরেছি, সাহায্যের আশায় হোক বা কোনমতে বাসায় আসার জন্য দাড়িয়ে পড়লাম। হাটতে পারছিলাম না। দু'মিনিট পর আর নিজের নিয়ন্ত্রন রাখতে পারলাম না বো করে মাথাটা ঘুরে পড়ে গেলাম। এরপর আর কিছুই মনে নেই। সকাল বেলায় পিটপিট করে চোখ খুলে দেখি আমি বিছানায় শোয়া পাশে আম্মু ঘুমাচ্ছে তার পাশেই অচেনা একটা মেয়ে আম্মুকে জড়িয়ে শুয়ে আছে। আমার জ্ঞান ফিরেছে দেখে সেই প্রথম উঠে বসলো। তারপর কাছে এসে কাদো কাদো ভাব নিয়ে মাথায় ব্যাথা আছে কি না জিজ্ঞাসা করলো। আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়ালাম। "রোমান্টিক কোন গল্প হলে এখানে মেয়েটা আমাকে একা ডেকে নিয়ে কেদে কেদে বলতো আমার এই পরিস্থিতিরর জন্য দায়ী " কিন্তু বাস্তবতাটা কিছুটা ভিন্নই হয়, ওর চাহনী আর কথা বলার ভঙ্গীই আমায় বলে দিল আমার মাথাটা ইটের ঢিল মেরে ওই ফাটিয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
.
--আচ্ছা ঢিল যে তুমিই মেরেছিলে তাতো বুঝতেই পারছি তবে এটুকু বল তো কি উদ্দেশ্য নিয়ে ঢিল মেরেছিলে।
.
-আসলে আমি প্রায়ই আমার হাতের ঢিল ছোড়ার লেন্থ পরীক্ষা করি, আমি ভেবেছিলাম এখানে তো বিয়েবাড়ি তাই কে আর ওপাশের নির্জন রাস্তায় বসে থাকবে এই ভেবেই ইটের টুকরো টা ছুড়েছিলাম।
-বাদর মেয়ে একটা বলেই একটা শুকনো হাসি দিলাম।
.
এরপর ও চুপচাপ চলে গেল
।এর মধ্যে আম্মুও পুরো বিষয়টা বুঝে গেছে। তাই এটা নিয়ে আর কোন উচ্চবাচ্চ্যই হলো না।
.
বিকেলে বরযাত্রীর দল এলো, আমি তখনও খানিকটা অসুস্থ ছিলাম তাই শুধু চুপচাপ বসে বসে সব দেখছিলাম। এমন সময় মেয়েটার দিকে আবার চোখ পড়লো আমার, নীল রঙের স্কার্টে মেয়েটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো। বলা যায় ওই একটা দেখাতেই ওর প্রেমে পড়ে গেলাম আমি।
.
বিয়ে বাড়ির সব কাজ শেষে বর ও বরযাত্রীর দল সবাই বিদায় নিল। এবারে আমাদের খাওয়া দাওয়ার পালা।
.
ওমা মেয়েটা দেখি এখানেও হাজির। খাওয়ার পর্বে আমার সাথে দুবার চোখাচোখি ও হলো। খাওয়া শেষে উঠোনটাতে দাড়িয়ে জোছনা দেখছি। এমন সময় পেছন থেকে মৃদু-গলার আওয়াজ,
-এই যে জোছনা বিলাসী, আজ জোছনা দেখতে যাবেন না।
পিছন ফিরে দেখছি ওই মেয়েটা।
-কেন একবার মাথা ফাটিয়ে শখ মিটেনি বুঝি তাই আজ আবার ন্যাড়াকে বেলতলায় যেতে বলছো।
-আমার কথাটা শুনে হেসে দিলো সে।
আমি অনেকটা সম্মোহিত হয়ে গেলাম, এত সুন্দর করে কেউ হাসতে পারে।
-আচ্ছা আজকের জোছনাটা কিছুটা মায়াময় এমন জোছনা একা একা দেখতে নেই। জোছনার মায়াতে হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
-বাহ! সাহিত্যচর্চা করা হয় বুঝি।
-না। বলা চলে আমার তেমন কপাল নেই আর তাও বা যেটুকু অবশিষ্ট ছিলো সেটুকুও তো ব্যান্ডেজিত হয়ে গেছে।
-হা হা হা (আমার কথার ছিরি দেখে হেসে দিলো সে) আপনি তো অনেক মজা করে কথা বলতে পারেন। জানেন এইসব বেশি মজা করে কথা বলতে পারা ছেলেগুলো খুব লুচু টাইপের হয়।
.
কথাটা শুনে মাথার তাপমাত্রা ১০০০ ডিগ্রীতে যাওয়ার জোগাড়।
- এইযে হ্যালো, কথা একটু বুঝে বলিয়েন ওকে। আপনার সাথে একটু হেসে হেসে কথা বলছি দেখেই ভেবে নিয়েন না আমি আপনার সাথে প্রেম করবো বা প্রেমে পড়ে গেছি।
.
-যাই হোক ঢোড়া সাপের মত হলেও ফোঁসফোঁসানি রাগ আছে তাহলে। আচ্ছা যাই হোক আপনার নামটা জানতে পারি।
-না!
- ও, আচ্ছা ভালো থাকিয়েন বাই দ্যা ওয়ে আমার নাম অনু, আবারে দেখা হবে ভালো থাকিয়েন। গুড নাইট।
তখন ওর আবার দেখা হবে কথাটাকে অতটা গুরুত্ব না দিলেও রাতে আমার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে ওর মেসেজ দেখে বুঝে গেলাম সব। পরে জানলাম আমার আন্টির কাছেই নাম্বার আর আমার ডিটেইলস নিয়েছে ও। এরপর থেকে প্রায়ই মেসেজ ও ফোনে কথা হতে হতে পরিচয় তারপর প্রেম।
.
হঠাতই ওর ডাকে ফ্ল্যাশব্যাক থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম।
.
-এই শোননা, একটা কথা বলি?
- কি কথা বল।
-বাসায় গিয়ে ঠিকমত থাকবি কিন্তু।
- আচ্ছা, ঠিকাচ্ছে।
-ওই তোর এসব ফালতু ভাষা আমার সামনে বলবিনা।
-মানে! আমি আবার কি ফালতু ভাষা বললাম?
-এই যে এখনি বললি, ঠিকাচ্ছে!
-ও আচ্ছা।
-এইতো গুড বয়।
-ওই শোননা, আর একটা কথা।
-কি?
-এবার বাসায় গিয়ে কিন্তু তোর আম্মুকে আমার কথা বলবি।
-আচ্ছা বলবো।
-আচ্ছা এখন একটু সামনে তাকা। মানুষজন কেমন জানি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি সামনে তাকানোর সুযোগ পেলাম না। তার আগেই বিকট একটা শব্দ আর সাথে সাথে বাসটা পুরো চর্কির মত পাল্টি খেল। বো করে মাথাটা ঘুরে গেল আমার। জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
সাথে সাথে ঘুমটা ভেঙে গেল আমার, ঘেমে নেয়ে গেছি। আবার সেই সেদিনের ঘটনাটাই দেখলাম।
হ্যা এই স্বপ্নে দেখা ঘটনাটাই বাস্তবে ঘটে গেছে আমার সাথে। গত ২০১৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি বাসা যাওয়ার পথে বাস এক্সিডেন্ট হয়।
এরপর আমার যখন জ্ঞান ফিরে আসে, চোখ খুলে নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিস্কার করি নিজেকে। আর আমার পরীটাকে চারিদিকে খুজে ফিরে আমার দুচোখ। না কোথাও ছিল না সে। ওর অমংগল চিন্তায় অস্থির আমি বেড থেকে উঠার জন্য তড়পাতে থাকি। এমন সময় একজন নার্স এসে আমাকে বেডের সাথে চেপে ধরে। অনেক অনুনয় বিনয় করি তার সাথে। কিন্তু না আমাকে উঠতে দিতে রাজি হয়নি সে। শেষে অনুর ছবিটা নার্সকে দেখিয়ে বলি, এই মেয়েটাকে একটু খুজে দেখবেন। আমার অনুরোধে নার্স রাজী হয়, বলে আচ্ছা ঠিক আছে দেখছি।
বলেই আমার হাতে একটা ইঞ্জেকশন পুশ করে চলে যায় সে। কয়েক মিনিটেই ঘুমে চোখ বুজে আসে আমার।
এভাবে দু'দিন কেটে যাওয়ার পর মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসি আমি।
.
আমার জলপরীটা হারিয়ে গেছিল সেদিন, অনেকগুলো অপুর্ণ স্বপ্ন নিয়ে চুপচাপ না ফেরার দেশে চলে গিয়েছিলো আমাকে একা করে।
.
আমায় সাথে নিয়ে পদ্মাপারের কাশবনে জোছনা দেখার একটা অদ্ভুত নিমন্ত্রণ ছিলো,
আমার কাধে মাথা রেখে ছন্নছাড়া বাউন্ডুলে কবিতা শোনার একটা গভীর আকুলতা ছিলো।
চাদ-মিলন তিথিতে সস্তার আইস্ক্রীম খেতে খেতে হেটে বাসায় ফিরতে চাওয়ার একটা অপুর্ণ ইচ্ছা ছিলো।
.
জানিস অনু, এখন আমি জোছনা দেখতে পারি না। চাদ-জোছনার মিলন তিথিতে একটা শুন্যতার অনুভূতি মিশে থাকে ওই অনুভূতি টাকে বড্ড ভয় পাই আমি।
.
নীলচে আকাশে পেজা তুলোর মত টুকরো টুকরো মেঘ, আমি তাকাতে পারি না, ওখানে যে আলোর আড়ালে জমাট বাধা একাকীত্ব।
.
আচ্ছা অনু, এখন কি কোন একটা কৃষ্ণচূড়া ফোটা পুর্ণিমা রাতে আমায় অনুভব করিস তুই, তোর বাম পাজরের নিচেও কি একটা শুন্যতার অনুভূতি নেমে আসে। প্রতিটা ইন্দ্রিয় কি ছেয়ে যায় না পাওয়ার অদ্ভুতরকম একটা কষ্টে।
.
অনেকদিন পর আজ আজ আবার ছাদের কিনারে এসে দাড়ালাম, খুব ইচ্ছে করছে আমার অনুর কাছে চলে যেতে,
চাদ নেই আকাশে, ওপাশটায় তাকালাম, ঝলমলে বাতিতে ঢাকা পড়ে আছে শহর, কিন্তু তার সেই আলোর রেখাটা ছাড়িয়ে অল্প একটু উপরের অন্ধকার।
পুরোটা শহরেই যেন নিঃসঙ্গতা ভর করেছে।
আমার কোন এক প্রহরের নিঃসঙ্গ শহর!!
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍⧝ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2808
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧍:ā§¨ā§Ž AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ