------------------অবুঝ ভালবাসা-----------------
...............(২য় পর্ব)...............
রুমে আসার পর থেকে অনামিকা একনাগাড়ে শুধু হেসেই যাচ্ছে। তার হাসি যেন থামতেই চাচ্ছে না। তার এমন হাসি দেখে তার মা আফরোজা চৌধুরী বিষণ অবাক হয়ে যান।
তিনি বলেন,
-কি হয়েছে? এমন করে হাসতেছিস কেন?
অনামিকা অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বলল,
-আম্মু একটা মজার ঘটনা ঘটেছে।
-কী ঘটেছে?
-বলছি.... হিহিহি..... আগে একটু হাসতে দাও....
-আর কত হাসবি? রুমে আসার পর থেকেই হেসে যাচ্ছিস। এবার আমায় বল কী ঘটেছে?
-তুমি যদি আম্মু ঐ ছেলেটার মুখ দেখতে তাহলে তুমিও আমার মতো হাসতে।
এবার আফরোজা চৌধুরী বেশ ঘাবড়ে যান। তার মেয়ের দুষ্টামি সম্পর্কে তার ভালোই জানা আছে। নিশ্চিত কোনো একটা কান্ড ঘটিয়েছে।
-কি হয়েছে সবকিছু খুলে বলতো। কোন ছেলের কথা বলছিস?
হেসে হেসে অনামিকা বলতে লাগল,
-বলছি, সবকিছুই বলবো। হয়েছে কি.... আমি যখন বাইরে বেরিয়েছিলাম তখন রাস্তায় দুটি ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, তখন আমি...........
সবকিছু শুনার পর আফরোজা চৌধুরী বলেন,
-ছেলেটি কি দেখতে হ্যান্ডাসাম ছিল?
-হাঁ ছিল। কিন্তু সাথের ছেলেটাকে আরো বেশি হ্যান্ডসাম মনে হচ্ছিল।
-তাহলে তুই ঐ ছেলেকে না বলে একে বললি কেন?
-এটাই আমার স্টাইল আম্মু। এইসব তুমি বুঝবে না।
-আমার আর বুঝে কাজ নেই। তবে তোর এইরকম করাটা মুটেও উচিত হয়নি।
-আমি কি করবো, ওরা ঐভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কেন!
-ওদের আর কি দোষ বল! আমার মেয়েটা এত সুন্দর যে একবার যে দেখবে বারবার দেখতে ইচ্ছে করবে।
একথা বলে উনি দুইহাত দিয়ে মেয়ের গালে একটু আদর করলেন।
তারপর আবার বলেন,
-ওদের যখন হোটেলের কাছেই দেখেছিস তবে নিশ্চয় আশেপাশে কোথাও থাকে। এরপর কখনো দেখা হলে ক্ষমা চেয়ে নিবি।
অনামিকা নিচু স্বরে বলে,
-ঠিক আছে।অনামিকা ওদের সাথে অভিনয়টা করতে পেরে খুব আনন্দ পেয়েছে। তাই ভেবেছিল যদি আবার কখনো দেখা হয় তবে ওদের সাথে আরো বেশি ফাজলামি করবে। কিন্তু এখন আর তা হবে না, মায়ের কথা মতো ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে।
""ওরা দুজন নিশ্চয় এখন একে অন্যকে ভুল বুঝছে।""
কথাটি মনে মনে বলে হেসে উঠে সে।
অনামিকা ও তার মা ঢাকা থেকে কিছুদিনের জন্য রাঙ্গামাটি এসেছে বেড়ানোর জন্য। অনামিকার বাবা শিল্পপতি শিহাব চৌধুরী। দেশে ও দেশের বাইরে তার বেশ কিছু বিজনেস রয়েছে। সবকিছু নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকলেও তার একমাত্র মেয়েকে সবসময় সঙ্গ দেন। তবে রাঙ্গামাটি আসতে পারেননি। কেননা এখানে অনামিকারা বেশকিছু দিন থাকবে। আর তার দ্বারা সব বিজনেস রেখে আসা সম্ভব নয়। তাই তিনি অনামিকা আর তার মাকে তাদের নিজেদের গাড়ি দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সাথে ওদের অনেকদিনের পুরানো ড্রাইভার।
প্রথমে তিনি কিছুতেই রাজি হননি অনামিকাকে এত দূরে আসতে দিতে। কিন্তু অনামিকার বায়নার কাছে তাকে হার মানতে হয়। মেয়েকে খুব ভালবাসেন বলে তার কোনো ইচ্ছেই তিনি অপূর্ণ রাখেন না। এবার পরীক্ষা শেষ হতেই সে বায়না ধরলো রাঙ্গামাটি দেখবে।
এখন তাকে রাঙ্গামাটি পাঠিয়ে শান্তি পাচ্ছেন না শিহাব চৌধুরী। সারাক্ষণ চিন্তায় থাকেন। তিনি মেয়ের কষ্ট একদম সহ্য করতে পারেন না।
একবার অনামিকা যখন খুব ছোট ছিল তখন হঠাৎ করে সে বায়না ধরেছিল সাইকেল কিনে দিতে। তারপর সাইকেল পেয়ে চালানো শিখতে ব্যস্ত হয়। চালানো শিখার এক পর্যায়ে সে সাইকেল থেকে পড়ে যায় এবং পায়ে সামান্য কেটে যায়। তখন তার মা কাটা জায়গায় ডেটল দিয়ে ধৌয়ে ব্যান্ডেজ করে দেন।
রাতে বাসায় ফিরে শিহাব চৌধুরী মেয়ের পায়ে ব্যান্ডেজ দেখে বিচলিত হয়ে উঠেন।
-কি হয়েছে অনামিকার?
তার স্ত্রী বলেন,
-সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে পড়ে গেছে।
শিহাব চৌধুরী রেগে যান। স্ত্রীকে ধমক দিয়ে বলেন,
-অনামিকা এক্সিডেন্ট করেছে আর আমাকে কিছুই জানানো হয়নি...
-আহা! জানানোর মত তেমন কিছু হয়নি। সামান্য কেঁটে গিয়েছিল ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি।
-মানে কি !! ডাক্তার আসেনি?
-না, আঘাত তেমন গুরুতর নয় তাই ডাক্তার ডাকিনি। তুমি এত চিন্তা করো না তো,কিছুই হবে না।
-তুমি কি ডাক্তার নাকি? কিছু হবে না বললেই হল!
এই বলে তিনি তাদের ফ্যামিলি ডাক্তারকে ফোন দিলেন। অনামিকা এতক্ষণ তার বাবার পাগলামি দেখছিল। ডাক্তারকে ডাকছেন দেখে কথা বলে,
-আব্বু আমার কিছুই হয়নি। তুমি চুপচাপ শুয়ে থাকো মামণি। আমি তোমার ডাক্তার আঙ্কেলকে ফোন করে দিয়েছে, এখনি চলে আসবে।
-আব্বু তুমি শুধু শুধু ডাক্তার আঙ্কেলকে ডাকছ। আমার একটুও ব্যথা করছে না।
-ব্যথা এখন করছে না যদি রাতে করে তখন কি হবে?
অনামিকা আর কিছু বলল না। শুধু ভাবলো তার বাবা তাকে কত ভালবাসেন।
ডাক্তার এসে অনামিকার পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে কাটা স্থানটা দেখে হেসে উঠলেন। শিহাব চৌধুরী অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন,
-কী ব্যাপার ডাক্তার! হাসছ কেন?
ডাক্তার লায়েক হাসি থামিয়ে নিজের চোখের চশমাটা ঠিক করে বললেন,
-হাসছি আপনার পাগলামি দেখে।
-কেন?
-অনামিকার কিছুই হয়নি। সামান্য চিড়ে গেছে।
এই বলে উনি অনামিকার আঘাত প্রাপ্ত স্থানটা দেখান। শিহাব চৌধুরী অবুঝের মত প্রশ্ন করেন,
-অনামিকা ব্যথা পাবে না তো?
-আরে না, একদম ব্যথা পাবে না।
তারপর অনামিকার দিকে তাকিয়ে বলেন,
-কী মামণী ব্যথা করছে?
-না ডাক্তার আঙ্কেল।
-দেখলে তো চৌধুরী?
শিহাব চৌধুরী দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন,
-আচ্ছা ঠিক আছে এখন নিশ্চিত হলাম। তোমাকে কষ্ট দিলাম এত রাতে ডেকে এনে।
-আরে না, এটা আবার কিসের কষ্ট।
ডাক্তার চলে গেলেন। তখন মিসেস চৌধুরীও মন খারাপ করে রুম থেকে বেরিয়ে যান। এটা লক্ষ্য করে অনামিকা বলে,
-আব্বু, আম্মু মনে হয় তোমার প্রতি রেগে গেছে। তুমি অকারণেই আম্মুকে বকেছ।
-তাইতো! আসলে তখন আমার মাথা ঠিক ছিল না। কি বলতে কি বলেছি.....
-এইসব আমাকে বলছ কেন? যাও গিয়ে আম্মুকে বলো।
তারপর স্ত্রীকে এই সেই কতকিছু বলে, বুঝিয়ে সুঝিয়ে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে স্ত্রীর অভিমান ভাঙ্গেন। এইরকম আরো অনেক পাগলামি করেছেন মেয়ের জন্য।
এইযে রাঙ্গামাটি এসেছে, তিনি যখনি সময় পান তখনি ফোন করে কথা বলেন।
মেয়েটির কথা সত্য নাকি রাহুলের??অভির মনে এখন শুধু এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। এই মেয়েকে নিয়ে কিছু বললেই রাহুল রেগে যাচ্ছে। তাই অভি রুম থেকে এসে হোটেলের বাগানে বসে আছে। ছাড়িদিকে অন্ধকার হয়ে গেছে।হোটেলের নীল ও হলুদ বাতিও জ্বলে উঠেছে।এই সময় একা বাগানে বসে থাকতে অভির ভালোই লাগছে। তবে কিছুতেই সেই মেয়ের কথা ভুলতে পারছে না। এই প্রথম কোনো মেয়ের হাসি তার দুচোখ আটকে দিতে পেরেছে। এই মেয়েকেই সে গতকাল বিকেলে দেখেছিল। একথাটাই সে রাহুলকে বলতে চেয়েছিল কিন্তু সে কথা শেষ না করতেই মেয়েটি এসে রাহুলের সাথে কথা বলতে শুরু করে। এখন অভি নিজের মনকে বারবার প্রশ্ন করছে,,,,,
সত্যিই কি ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আছে? কিন্তু ওদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক থাকলে রাহুল কেন মেয়েটিকে ভুলে যাবে? মেয়েটি তো অনেক সুন্দরি। তাছাড়া রাহুল তিন বছর হল প্রেম করে অথচ আমিই জানি না! এটা কি করে সম্ভব? তবে কি মেয়েটি মিথ্যে কথা বলেছে?
কিন্তু মেয়েটি কেনইবা মিথ্যে বলতে যাবে? কি কারণ হতে পারে মিথ্যে বলার? নাকি রাহুলের কথাই ঠিক? মেয়েটি কি পাগল?
কিন্তু তাকে দেখে তো মনে হয় না। কাল সে নিজের চোখে দেখেছে মেয়েটি বাচ্চাগুলোর ছবি তুলছে। কোনো পাগল একাজ করতে পারে না।
অভি যতোই ভাবে না কেন কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারে না। অভি আফসোস করে বলে,
-ইশ ঐ মেয়েটি যদি আমাকে ভালবাসতো......
তখন সে একটি মেয়ে কণ্ঠ শুনতে পেল,
-আপনি এখানে?
অভি তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটি।
-হাঁ আমি এই হোটেলে উঠেছি। কিন্তু আপনি এখানে কেন?
-আমিও এই হোটেলে উঠেছি।
অভি বোকার মতো প্রশ্ন করে বসে,
-কেন?
-কেন মানে! আমার ইচ্ছে। একই প্রশ্ন যদি আমি করি যে আপনি কেন এসেছেন?
-আমরা তো ঘুরতে এসেছি।
-তবে কি আমরা নাচতে এসেছি? আমরাও ঘুরতে এসেছি।
-কিন্তু আপনি তখন বলেছিলেন রাহুলকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসেছেন।
অনামিকা মজা করার সুযোগ পেয়ে হাত ছাড়া করলো না।
- হাঁ তাতো অবশ্যই। একসাথে দুটি কাজ করে ফেললাম আর কি।
একথা বলে অনামিকা এদিক সেদিক তাকিয়ে নিয়ে আবার বলে,
-আচ্ছা আপনার ফ্রেন্ড কোথায়?
-রাহুল রুমে। আচ্ছা আপনি সত্যি করে একটা কথা বলেনতো। রাহুল আর আপনার মাঝে কি সত্যিই কোনো সম্পর্ক আছে? আসলে আমি এবং রাহুল খুব ভালো বন্ধু। আমরা একে অন্যের কাছে কোনো কথা গোপন রাখি না। রাহুল যদি কারো সাথে প্রেম করতো তবে আমায় জানাতো।
-এই কথাটা আমিও জিজ্ঞেস করতে চাই। সে কেন আমার কথা গোপন রাখলো। তাছাড়া সে কেন আমাকে চিনতে না পারার অভিনয় করছে।
-কিন্তু সে আপনাকে চিনতেই পারছে না। ভালবাসার কথা স্বীকার করাতো অনেক পরের কথা।
-এটা আমাদের সমস্যা। আমরাই ঠিক করে নিবো তাকে একবার আমি একা পেয়ে নেই।
একথার পর অভির আর কিছু বলার থাকে না। একটা দীর্ঘ শ্বাস চেপে রেখে বলে,
-ঠিক আছে, আমি দেখছি রাহুলকে এখানে পাঠাতে পারি কিনা।
অভি চলে যায়। অনামিকা বাগানে বসে রইলো। মনে মনে হাসছে সে।
(চলবে)...........
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍⧝ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2832 (2)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:ā§Ļā§ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ