āĻļুāĻ•্āϰāĻŦাāϰ, ⧍⧝ āϏেāĻĒ্āϟেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

2834 (3)

সেই তুমি (পর্ব -৭)
লিখা: #রবিউল ইসলাম
.
রুমে ঢুকতে গিয়েই ফাহাদের মনে হল ভিতরে ইরা ম্যাডাম আছেন।না জানি এখন নতুন কি ঝামেলা পাকানোর প্ল্যান করছেন।যাই হোক চিন্তা বাদ দিয়ে সাহস করে রুমে ঢুকেই গেল। ঢূকেই দেখল আপন মনে কাপড় চোপড় আবার স্যুটকেসে ঢুকাচ্ছে ইরা।ফাহাদের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।এত কস্ট করে আলমিরা আনল আর এখন উনি কাপড় আবার স্যুটকেসেই ঢুকাচ্ছেন।যাই হোক এই নিয়ে ঝামেলা করতে ইচ্ছা হল না।এখন কিছু বললেই আবার ঝগড়া শুরু করবে।এই মেয়ের তো ওকে জ্বালানোর জাস্ট একটা বাহানা দরকার।যা ইচ্ছা করুক।ফাহাদ ঠিক করল কিছুই বলবে না।চুপচাপ রুমে ঢুকে ফ্রেশ হতে যাবে তখনই ইরা বলল,
-তৈরি হয়ে নিন।শ্বশুড় বাড়ি যাবেন আজ
বলেই একটা রহস্যময় হাসি হাসল।
-মানে?
-মানে বিয়ের পর বউ কে নিয়ে নতুন জামাই কিছুদিনের জন্য শ্বশুর বাড়ি যায়।এত ডিটেইলস আমি বলতে পারব না।আপনার মায়ের থেকে জেনে নিন।
কি বলছে এই মেয়ে?এখন আবার এই পাগলের সাথে তার বাড়িতে গিয়ে থাকতে হবে?নেভার।ফাহাদ ওর মাকে ডাকল। ডাক শুনে মা এলেন।
-কি হল?ডাকছিস কেন?
-আমার নাকি এখন আবার শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে?
-ও হ্যা।এটাই নিয়ম।রেডি হয়ে নে।ইরার মা ফোন করেছিল।
-দেখ আমার কিছু কাজ আছে।আমি কোথাও যেতে পারব না।ড্রাইভারকে বল ইরাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে।
ফাহাদের মা মনে মনে একটু খুশিই হলেন।বউয়ের পিছু পিছু ছেলে শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইছে না।এই মেয়ের একটা শিক্ষা হও্য়া দরকার ছিল।উনি বললেন,
-কাজ থাকলে আর যাবি কিভাবে? তাহলে বরং বউমারও যাওয়ার দরকার নেই।জামাই ছাড়া গেলে লোকজনও খারাপ বলবে।আমি ইরার মাকে ফোন করে না করে দিচ্ছি।
বলেই একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলেন।শ্বাশুড়ি যেতেই ইরা রেগে গেল। ফাহাদ কে বলল,
-এবার আপনি খুশি?আমাকে আর আমার বাবা মাকে আরেকটু কস্ট দেওয়ার সুযোগ পেলেন।
বলেই ইরা স্যুটকেসের দিকে দৌড়ে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে গুছানো কাপড় বের করতে শুরু করল।এবার ফাহাদের একটু মায়া হল।এমনিতেই মেয়েটা অসুস্থ তার উপর বাবা মায়ের থেকে দূরে।ওর জন্য ইরা বাবা মায়ের কাছেও যেতে পারছে না।নাহ এমন টা হতে দেওয়া যায় না ।দুই একদিনেরই তো ব্যাপার।ম্যানেজ করে নেবে ।ও হেঁটে ইরার কাছে গিয়ে বলল,
-থামুন ।যাব আমি।কান্নাকাটি করবেন না দয়া করে।
ইরা জেদের বশে ফাহাদের কথা পাত্তাই দিল না।কাপড় বের করেই যাচ্ছে।ফাহাদ ইরার হাত ধরল।
-থামুন।এত রাগ কেন আপনার?অনেক কেঁদেছেন।যান মুখ ধুয়ে আসুন।আমি কাপড়গুলো গুছাচ্ছি।
-আমার কাপড় আপনার গুছিয়ে দেবার দরকার নেই।আর আপনার আমার সঙ্গে কোথাও যাবারও দরকার নেই।আমি এখানেই পচে মরব।
-উফ এত জেদী কেন আপনি?যান ফ্রেশ হয়ে আসুন তারাতারি।আপনার বাবা মা ওদিকে কস্ট পাচ্ছে।মা এতক্ষনে উনাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে আমরা যাবনা।তারাতারি ওখানে পৌছে উনাদের সারপ্রাইজ দিতে হবে।
হাত ধরে প্রায় জোর করেই ওয়াশরুমের দরজায় দিয়ে এল ইরা কে। এই প্রথমবার ওকে টাচ করার পরেও ফাহাদকে কিছু বলতে পারল না ইরা।বিয়ের পর এই প্রথমবার কেন জানি ছেলেটাকে খারাপ মনে হচ্ছে না।অথচ এই দুদিনে অনেক জ্বালিয়েছে ফাহাদকে।তবুও ছেলেটা ওর কস্টের পরোয়া করছে।অদ্ভুত।কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছিল না।
ফাহাদের মা টেবিলে খাবার রেডি করছিলেন।তখনই ফাহাদ আর ইরা স্যুটকেস হাতে নিচে নামল।ফাহাদ বলল,
-মা আমরা এখন খাব না।ইরাদের ওখানে গিয়েই খাওয়া দাওয়া করব
-মানে?তুই না বললি যাবিনা?
মায়ের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।কিন্তু বুঝালেন না
-মা ইরা অনেক মন খারাপ করছিল।তাই ডিসিশন চেঞ্জ করলাম।দু একদিনেরই তো ব্যাপার।নতুন বউয়ের জন্য এটুকু করাই যায়।
বলেই ফাহাদ হাসল।
ফাহাদ আর ইরা বেড়িয়ে যাচ্ছে।মা চেয়ে রইলেন।ছেলেটা বদলে যাচ্ছে।মেয়েটা ছেলেটাকে কন্ট্রোল করতে শুরু করেছে।অথচ এই মেয়েকে ফাহাদ বিয়েই করতে চাইছিল না।উনারাই জোর করেছিলেন।এখন হিতে বিপরীত হচ্ছে।মায়ের চোখে কেন জানি পানি চলে এল।
ইরার বাবা মা দুজনই মন খারাপ করে বসে আছেন।আজ জামাই নিয়ে ইরার আসার কথা ছিল কিন্তু আসে নি।মনটাই ভেঙ্গে গেছে উনাদের।সকাল থেকে ইরার মা তারাহুরো করে অনেক কিছু রান্না করেছেন।জামাই প্রথমবার বাসায় আসবে। নতুন জামাই বলে কথা।কিন্তু শেষ পর্যন্ত এল না কেউই।হঠাত কলিংবেল বাজল।ইরার মা দরজা খুলে হতবাক।মেয়ে আর মেয়ের জামাই দুজনেই দরজায় দাঁড়িয়ে।ফাহাদ হাসছে।খুশিতে আত্মহারা হয়ে ইরাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন ইরার মা।ফাহাদ শ্বাশুরিকে সালাম করতে করতে বলল,
-ভাবলাম আপনাদের সারপ্রাইজ দেব।যাই হোক প্ল্যান কাজ করেছে।
বলেই হাসল ফাহাদ।মানুষগুলোকে এতটা খুশি করতে পেরে কেন জানি অনেক ভাল লাগছে ওর।
রাতে ঘুমানোর জন্য ফ্রেশ হয়ে এসেই ইরা দেখে ফাহাদ বিছানার একপাশে শুয়ে পড়েছে।মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ইরার।একদিন একটু সাপোর্ট দিয়েছে বলেই যেন হিরো হয়ে গেছেন উনি।ভাবল কি করে এই ছেলে যে ইরা ওকে তার সাথে শুতে দিবে? চেঁচিয়ে উঠল ইরা,
-আপনি আমার বেডে কোন সাহসে শুয়েছেন?
প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিল ফাহাদ।কাচা ঘুম টা ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে এ মেয়ে। ফাহাদও রেগে গেল।উঠে বসতে বসতে বলল,
-তাহলে কি আমি আপনার মাথায় শোব?পুরো রুম আলতু ফালতু জিনিসে ভরা।কোথাও ফ্লোরিং করার একটু জায়গা নেই।আপনি কি চান বাইরে গিয়ে সোফায় শুই?চাইলে যেতে পারি কিন্তু আপনার বাবা মা কোন প্রশ্ন করলে তার উত্তর আপনি দিবেন।
ইরা বুঝতে পারল এই বিষয়ে ঝগড়া করা অর্থহীন।রুমে শোয়ার আর কোন জায়গা নেই।তারপর বলল,
-ঠিক আছে বেডেই শোন।কিন্তু আমার থেকে অন্ততপক্ষে দুইহাত দূরত্ব বজায় রাখবেন।সাবধান কোনভাবেই যেন আমার সাথে আপনার গা না লাগে।
-দেখুন আপনি কোন হুরপরী না যে আপনার সাথে শুলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।আপনার থেকে অনেক সুন্দরি সুন্দরি মেয়ে আমার পিছনে ঘুরেছে।আমি পাত্তাই দেইনি।নিশ্চিন্তে শুয়ে পড়ুন।আপনার প্রতি আমার কোন ইন্টারেস্টই নেই।
বলেই অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল ফাহাদ।ইরার শরীরটা জ্বলে গেল।কত বড় কথা।সে কি সুন্দরি না নাকি?তার পিছনেও ছেলেরা লাইন ধরত।মন চাচ্ছিল কথাটা জোরে জোরেই শুনিয়ে দেয় ফাহাদকে।কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে নিল।মাঝরাতে বাবা মা ঝগড়া শুনলে ভেজাল হবে।
রাতের বেলা হঠাত ইরার ভয়ার্ত আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেল ফাহাদের।উঠেই দেখে ইরা চোখ বন্ধ করে সমানে কাঁপছে ।সারা শরীর ঘেমে ভিজে গেছে আর আবল তাবল বলছে।ফাহাদ বুঝল ইরা খারাপ কোন স্বপ্ন দেখছে।সে আধশোয়া হয়েই ইরাকে ডাকল।ফাহাদের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেল ইরার। জেগে উঠেই কাঁপতে কাঁপতে ফাহাদকে জড়িয়ে ধরল।ফাহাদ কি করবে বুঝে পেল না।ইরা বলেছিল ওর থেকে অন্ততপক্ষে দুইহাত দূরে থাকতে।কিন্তু মেয়েটা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।ও আস্তে করে ইরাকে জড়িয়ে ধরল।
-কি হয়েছে?খুব বেশি ভয় পেয়েছেন?
ইরা ফাহাদের বুকেই মুখ বুজে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
-স্বপ্নে আমি মারা যাচ্ছিলাম।অনেক কস্ট হচ্ছিল।আমাকে বাঁচান প্লিজ।এই অসুখ টা আমায় খেয়ে নিবে। আমি মরতে চাই না।একদম চাই না।
ফাহাদ আরও শক্ত করে ইরাকে জড়িয়ে ধরল।মনে মনে বলল,
-আমি আপনাকে মরতে দিব না।
(চলবে).

সেই তুমি (পর্ব -৮)
লিখা: #রবিউল ইসলাম
.
সকালে নাস্তার টেবিলে ফাহাদ ইরা কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না।গতরাতের ঘটনার জন্য ইরা যথেষ্ঠ লজ্জিত।ওর ওভাবে ফাহাদকে জড়িয়ে ধরা উচিত হয়নি।এখন ফাহাদের সামনে মুখই উঠাতে পারছে না।এদিকে ফাহাদেরও ইরার সাথে চোখ মেলাতে কেমন যেন আনকম্ফর্টেবল লাগছে।ইরার মা ব্যাপার টা লক্ষ করলেন।উনি বললেন,
-তোমাদের দুজনের আবার কি হল?কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছ না।ঝগড়া হয়েছে নাকি?
ফাহাদের একটু মজা করতে ইচ্ছা হল।
-আরে না মা।আপনার মেয়ের মত এত লক্ষী মেয়ের সাথে কি ঝগড়া হতে পারে?আপনার মেয়ে আমার অনেক খেয়াল রাখে।সেদিন পায়ে ব্যথা পেয়েছিলাম একটু সে পা টিপে দিতে শুরু করল।না করছিলাম,কিছুতেই শুনল না।আর কাল রাতের কথা আর কি বলব খাটে দুজনের জায়গা হচ্ছিল না।উনি আমাকে জায়গা করে দিয়ে নিজে নিচে শুতে চাইলেন।
বলেই হেসে ফেলল ফাহাদ।মেয়ে এত স্বামীভক্ত হয়ে গেছে শুনে ইরার মা মনে মনে স্বস্তি পেলেন।কি উচ্ছৃঙ্খলই না ছিল মেয়েটা।কিন্তু খাটে জায়গা হচ্ছিল না শুনে ইরার মা আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লেন,
-বল কি বাবা!জায়গা হচ্ছিল না মানে?আমি আজকেই বড় খাটের ব্যবস্থা করছি।
-আরে না মা।এখন আমরা ম্যানেজ করে নিয়েছি।মিলেমিশে শুতে শিখে গেছি।ছোট খাটই ভাল।এভাবে ভালবাসা বাড়বে।বলেই ইরার দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্ট হাসি হেসে বলল,কি বল ইরা?ঠিক বলেছি না?
রাগে ইরার শরীর টা জ্বলে যাচ্ছিল।মা নতুন খাট আনবে শুনে একটু স্বস্তি পেয়েছিল।এই ছেলে আবার সব বিগরে দিয়েছে।কি আর বলবে এখন?একটা মলিন হাসি হেসে বুঝাল যে ফাহাদ ঠিকই বলেছে।
মা হেসে ফেললেন।এদিকে এই মেয়েকে প্রথমবার একটু জ্বালাতে পেরে ফাহাদেরও মজা লাগছে।
ইরার চিকিৎসার বাকি টাকা কিভাবে ম্যানেজ করবে এই চিন্তা করতে করতেই ফাহাদ রুমে ঢুকল।ইরার চিৎকারে সংবিত ফিরে এল।
-বাইরে এই ড্রামাটা কেন করলেন?
ফাহাদ হকচকিয়ে গেল।তারপর খেয়াল হল।
-কেন?সমস্যা কি?আপনার মা ভাবছে আপনি অনেক ভদ্র হয়ে গেছেন।আপনাকে বরং বড় করলাম উনাদের সামনে।
-মোটেও না।আপনি খাট আনতে না করলেন কেন?গতরাতের ঘটনায় কি ভেবেছেন?আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি তাই আপনাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম?ব্যাপারটা মোটেও ওরকম না।আমি স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়েছিলাম জাস্ট।
-হয়েছে হয়েছে আপনার মতলব সব বুঝি আমি।আমাকে নিজের এত কাছে পেয়ে আসলে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি।ব্যাপার না।আমি মাইন্ড করিনি।
হেসে গুনগুন করতে করতে ফাহাদ গোসলে চলে গেল।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ইরার।এখন চাইলেও ঝগড়া করতে পারবে না।বাবা মা শুনবে ।ভালই মজা নিচ্ছে এই সুযোগে।
ফাহাদ গোসল সেরে এসে দেখে ইরা বিছানায় কাতরাচ্ছে।ও দৌড়ে এসে বলল,
-কি হয়েছে আপনার?
-কিছু না শরীরের পেশীগুলোতে ব্যথা হচ্ছে।একটূ পর সেরে যাবে।এটা নরমাল।মেডিসিন নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।
ফাহাদের নিজের উপর রাগ হল খুব।এত বড় অসুখ নিয়ে ঘুরছে মেয়েটা অথচ সে ঠিকমত খেয়াল রাখতে পারছে না।
-এখন মেডিসিন নিয়েছেন?
ইরা চোখ বন্ধ করেই বলল,
-হুম
আপনার প্রেসক্রিবশন টা কোথায়?
-কেন?
-যা বলছি উত্তর দিন।
-ব্যাগে।
ফাহাদ ব্যাগ থেকে প্রেসক্রিবশন টা বের করে এনে বলল,
-এখন থেকে টাইম মত আমি অসুধ খেতে বলব আপনাকে।এটা আমার কাছেই থাকবে।
এই নিয়ে কথা বলার শক্তি নেই ইরার।ও চোখ বন্ধ করল।
ইরা ঘুমাচ্ছে।ফাহাদ ইরার বাবার রুমে এল।
-বাবা আপনার সাথে কিছু কথা ছিল আমার।
-হুম বল বাবা
-আপনার থেকে একটা হেল্প দরকার ছিল আমার।
-বল কি হেল্প লাগবে।আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।
-আমার কিছু টাকার দরকার।আমি পরে আপনাকে দিয়ে দিব।
মাথা নিচু করে কথাগুলো বলল ফাহাদ।
-কত টাকা লাগবে?
-১৫ লক্ষ
ইরার বাবার কাছে এইটাকা দেওয়া কঠিন কিছু না।কিন্তু বিয়ের পরেই নতুন জামাইয়ের মুখে টাকার আবদার শুনে একটু মনক্ষুন্ন হলেন।কিন্তু বোঝালেন না।
-ঠিক আছে।তুমি বস।আমি চেক লিখে দিচ্ছি।
সন্ধ্যেবেলা ইরার মা ইরাকে আলাদা ডেকে নিয়ে বললেন,
-ফাহাদ কি কোন সমস্যায় পড়েছে?
ইরা বুঝল না মা ঠিক কি বলতে চাইছে।সে বলল,
-কেন কি হয়েছে?
-ও তোর বাবার থেকে কিছু টাকা নিয়েছে তাই মনে হল।
কথাটা শুনে ইরা কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলল।ছিঃ তাহলে এই ছিল উনার এখানে আসার পিছনে কারন?ওর মরে যাওয়া পর্যন্তও অপেক্ষা করতে পারল না?
ফাহাদ সব হিসাব করছিল কিভাবে কি করবে।দেশের বাইরে যাবার প্রয়োজন নেই।বাইরে থেকে ভাল একজন ডাক্তার আসবেন নেক্সট উইকে।ট্রিটমেন্ট টা দেশেই করানো সম্ভব।এখন ইরাকে সব জানানো উচিত। এর মধ্যেই ইরা রুমে ঢুকল।ইরা কে দেখে উঠে দাঁড়াল ফাহাদ।কিছু বুঝে উঠার আগেই ওর বুকে সজোরে এক ধাক্কা দিল ইরা।
-ভেবেছেন টা কি আপনি?জামাই হয়েছেন বলে কি সবার মাথা কিনে নিয়েছেন?আমার বাবার থেকে টাকা নেওয়ার সাহস কিভাবে হল?লজ্জা করল না একটু?
আরেকবার ধাক্কা দিতে আসছিল তখনই ইরার হাত শক্ত করে ধরে ফেলল ফাহাদ।
-একদম সিন ক্রিয়েট করবেন না এখানে।সব বলব আপনাকে।এখন তৈরি হয়ে নিন ।বাইরে যেতে হবে।তাহলেই বুঝবেন সব।
ফাহাদ ইরাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে ।ইরা কিছুই বুঝতে পারছে না।এর মাঝেই ফাহাদ বলল,
-আপনার কিছু টেস্ট করাতে হবে।বাইরে থেকে আগামি সপ্তাহে ভাল একজন ডাক্তার আসবেন।টাকাও এরেঞ্জ হয়ে গেছে।অপারেশন আগামি সপ্তাহেই হবে।আর আমি বিজনেস জয়েন করব এসব ঝামেলা মিটে গেলেই।তখন আপনার বাবার টাকা ফেরত দিয়ে দেব সব।ভিতরে চলুন।
ইরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ফাহাদের দিকে।তাহলে এত কিছু ওর জন্যই করেছে এই ছেলে?আর ও কত খারাপ কিছুই না ভেবেছে ফাহাদকে নিয়ে। চোখ ঝাপসা হয়ে এল ইরার।এর মাঝেই ফাহাদ বলল,
-কি হল চলুন
অাগামী পর্বে সমাপ্ত
(চলবে).

সেই তুমি (শেষ পর্ব)
লিখা: #রবিউল ইসলাম
.
কাল ইরার অপারেশন।মেয়েটা নাও বাঁচতে পারে।যদি কিছু হয়ে যায় সেই দায়ী থাকবে।এগুলোই ভাবছিল ফাহাদ।এর মাঝেই ইরা বলে উঠল,
-আমার আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করছে খুব।এখানে কি পাওয়া যাবে?
ফাহাদ অবাক হয়ে তাকাল।আজব! মেয়েটার এসব নিয়ে কোন চিন্তাই নেই।অবশ্য এটাও একদিক দিয়ে ভাল।
-এত রাতে এখানে আইসক্রিম কোথা থেকে পাব?এটা হাসপাতাল।আইসক্রিম পার্লার না।
-কেমন জায়গায় নিয়ে এসেছেন ইচ্ছামত কিছুই করতে পারছি না।এই ফালতু বেডে আমার ঘুমও আসবে না।
আসলে ইরা আজ ঘুমাতে চাইছে না।হতে পারে এটাই তার জীবনের শেষ রাত।ফাহাদকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যথেষ্ঠ টেনশনে আছে।এসব টেনশন থেকে ওর মাইন্ড ডাইভার্ট করা উচিত।ফাহাদও ভাবছে এসব টেনশন থেকে ইরাকে দূরেই রাখা উচিত।সেও নরমাল সাজার ট্রাই করল।
-তা এখন কি করতে হবে আমাকে বলুন।বিয়ের পর থেকে তো আপনার ইশারাতেই নাচতে হচ্ছে।
-আমি আজ ঘুমাব না।আপনার আমার সাথে পুরো রাত জাগতে হবে।
ফাহাদের রাত জাগতে সমস্যা নেই কিন্তু ডাক্তার বলেছে অপারেশনের আগের রাতে রোগীর ভাল ঘুম হও্য়া প্রয়োজন।এটা বলে লাভ নেই ইরাকে।কথা শুনবে না।সে বলল,
-দেখুন আমার অনেক ঘুম পেয়েছে।আমি জাগতে টাগতে পারব না।আমি ঘুমাব আপনিও ঘুমিয়ে যান।
কেবিনে দুইটা বেড ছিল।একটাতে শুয়ে পড়ল ফাহাদ।
ইরা মন খারাপ করে বসে আছে।ফাহাদ শুয়ে পড়েছে অন্য পাশ ফিরে।রাগ হচ্ছিল খুব ফাহাদের উপর।কিন্তু কেন জানি ডাকতে ইচ্ছা করল না ওকে।এদিকে ফাহাদ জেগে আছে।ইরা ঘুমালে ও ঘুমাবে।কিন্তু এখনও শুচ্ছে না মেয়েটা।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে আবার উঠে বসল ফাহাদ।
-কি হল?ঘুমাবেন না?
-ভাল লাগছে না।
-কিন্তু আজ আপনার ঘুম প্রয়োজন।প্লিজ চেস্টা করুন।
-চেস্টা করে লাভ নেই ঘুম আসবে না।
ফাহাদ উঠে ইরার পাশে এসে বসল।
-আচ্ছা গল্প শুনতে কেমন লাগে আপনার?
ফাহাদ কি বলতে চাইছে ইরা ঠিক বুঝতে পারছে না।ও আবার বলল,
-কি হল উত্তর দিচ্ছেন না যে?
-হুম ভালই লাগে।
-ছোট বেলায় ঘুম পাড়ানোর জন্য মা অনেক গল্প শুনাতো।চলুন আজ আমি শুনাই আপনাকে।
বলেই বালিশ ঠিক করে দিয়ে ইরাকে শুতে বলল।ইরার কেন যেন ফাহাদের কোন কিছুতে না বলতে ইচ্ছে করছে না আজ।সেও বাধ্য মেয়ের মত শুয়ে পড়ল।ইরার পাশেই আধশোয়া হয়ে ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ফাহাদ বলতে শুরু করল,
-এক ছিল রাজা।তার ছিল দুই রানী........................
এগূলো শুনতে শুনতেই ইরার চোখের পাতা ভারী হয়ে এল।যেন কোন এক রুপকথার রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছে সে। ও ফাহাদের দিকে ফিরে এক হাতে ফাহাদকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চা মেয়ের মত ঘুমিয়ে গেল আস্তে আস্তে।
ফাহাদ ইরার দিকে তাকিয়ে আছে।ইরার একটা হাত এখনও ওর উপর।ফাহাদ নড়ছে না।নড়লে ইরার ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।ও ভাবছে মেয়েটাকে সে বিয়ে করেছে।তার মানে ইরা তার বউ।এটা ভেবেই আপন মনে হেসে ফেলল ফাহাদ।ইরাকে সে কখনই পাগলি ছাড়া কিছু ভাবেনি।তারপর আবার ভাবল, হুম ও তো পাগলিই।ও তার পাগলি বউ।
একটু পরেই ইরাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হবে।ও ফাহাদের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।ফাহাদেরও ভয় করছে কিন্তু সেটা ইরা কে বুঝতে দিল না।সে বলল,
-আপনি কি ভয় পাচ্ছেন?দেখুন ভয়ের কিছু নেই,আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি।উনি বললেন নরমাল অপারেশন।আপনি অযথাই চিন্তা করছেন।
ফাহাদ জানে রিস্ক আছে।খুব ভাল ডাক্তার হলেও উনি খুব একটা আশা দিতে পারেননি।ফিফটি ফিফটি চান্স বলেছেন।ইরাকে বাঁচাতে হলে এই রিস্ক টা নিতেই হবে।ইরা জানে ফাহাদও টেনশনে আছে।সে বলল,
-শুনুন আমার যদি কিছু হয়ে যায় প্লিজ কখনও নিজেকে দোষারোপ করবেন না।আমি জানি আপনি খুব কস্ট পাবেন।কিন্তু ভাগ্যে যা থাকবে তাই হবে।ওকে?
ফাহাদের কেন জানি খুব খারাপ লাগছে।কস্ট হচ্ছে খুব।সে বলল,
-হুম
-মাথায় থাকবে?
-হুম
-শুধু হুম হুম কেন করছেন?আর আলমিরাতে সবার জন্য কিছু গিফট রেখে এসেছি।প্যাকেটের উপর সবার নাম লিখা আছে।ওগুলো সবাইকে দিয়ে দিবেন।ওকে?
-্দেখুন আপনার কিছুই হবে না।শুধু শুধু চিন্তা করছেন।
ইরা চুপ করে রইল।ফাহাদ আবার বলল,
-সব ঠিকঠাক মত হয়ে গেলে আপনি আমার সাথে কক্সবাজার যাবেন?ওখানেই আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।মনে আছে?
ইরার সব মনে আছে।ও ফাহাদের দিকে তাকিয়ে ছিল।চোখে পানি আসায় ফাহাদের মুখটা কেমন যেন ঝাপসা হয়ে গেল।এর মাঝেই ডাক্তার আর নার্সরা এল ওকে নিয়ে যেতে।অনেক কিছুই বলার ছিল।নাহ এখন আর সময় নেই।
অপারেশন থিয়েটারের বেডে শুয়ে আছে ইরা।ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছে।একটু পরেই অজ্ঞান হয়ে যাবে।বাবা মায়ের কথা মনে পড়ছে খুব।কিছুই জানে না বাবা মা।হঠাত করে ওর মারা যাওয়ার খবর শুনলে অনেক কস্ট পাবেন।ফাহাদের কথা মনে পড়ছে।স্বার্থহীনভাবে ওকে বাঁচানোর জন্য দিনরাত এক করে দিয়েছে ছেলেটা।ওর যদি কিছু হয় ফাহাদ কোনদিনও মাফ করতে পারবে না নিজেকে।ভাবতে ভাবতেই অচেতন হয়ে গেল ইরা। অপারেশন থিয়েটারের বাইরে ফাহাদ দাঁড়িয়ে আছে।ওর বুকের প্রত্যেকটা হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছে ও।জানেনা কি হবে আজকের পর।শুধু এটা জানে মেয়েটা যদি ফিরে আসে কখনও নিজের থেকে দূরে যেতে দেবে না।
ইরা চোখ খুলেই দেখে ফাহাদ বসে আছে সামনে।তার মানে সে বেঁচে আছে।কিন্তু মাথাটায় অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে। ইরাকে চোখ খুলতে দেখেই ফাহাদ ইরার দিকে ঝুঁকল।ইরা আস্তে করে বলল,
-আমি কি বাঁচব ?
ইরার জ্ঞান ফিরার পর খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে ফাহাদ ।তবুও কেন যেন চোখের কোনে পানি চলে এল। ও মৃদু হেসে বলল,
-আমাকে সারাজীবন জ্বালানোর জন্য হলেও বেঁচে থাকতে হবে অাপনাকে।
বলেই ইরার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে চুমু খেল একটা।
★★★★★★★★★সমাপ্ত★★★★★★★★★

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ