নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং :- (৯/১০)
লেখক :- বিবাগী শাকিল
============================
.
কেন জানি মনটা প্রচন্ড খারাপ হয়ে আছে রুমির। কেন যেন তার মনে ভয় হচ্ছে। এই বুঝি রুমির পরিবারের কেউ এসে গেল। আচ্ছা!!! ওরা যদি আসে তাহলে তো রুমিকে নিয়ে চলে যাবে। রুমি তো মানিককে ছাড়া এক মুহুর্তও থাকতে পারবেনা। এখন থেকেই থাকতে পারেনা তার উপর যদি ওকে নিয়ে চলে যায় কিভাবে থাকবে। এই যে সকাল থেকে মানিক বাসায় নেই। নদীতে গেছে। এতেই ছটফট করছে রুমির মন মানিককে এক নজর দেখার জন্য। একবার যদি রুমি মানিকের থেকে দুরে চলে যায় তাহলে আর কাছে আসতে পারবেনা। এসব বিষয় ভেবে ভেবে রুমি প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে। অজানা এক ভয় এসে ছড়িয়ে পড়ে রুমির সারা মন জুড়ে।
.
পকেটে হাত দিয়ে মানিক দেখে ৬০ টাকা আছে। নুপুর জোড়া কিনতে আরো ৬০ টাকার দরকার। যাত্রীদের থেকে টাকা নিয়ে কিছু তার বাবাকে দিচ্ছে আর কিছু নিজে রাখছে। এতেই ৬০ টাকা হয়েছে। দুপুরের সূর্য্য মাথার উপরে। বাকি টাকা যোগাড় করতে হলে নৌকা আরেকবার ঐপাড়ে নিতে হবে যাত্রী নিয়ে। তাই আজ দুপুরে আসবেনা বলে সিদ্ধান্ত নেয় মানিক। মহিন মিয়া মানিককে বলে
- কিরে আজ বাসায় যাবিনা?
-- না বাবা.... আরেকবার ঐ পাড়ে যাত্রী নামিয়ে আসি। তারপর যাব।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
অবশেষে নুপুর কেনার টাকা পুরোপুরি যোগাড় করতে পেরেছে মানিক। মনে একটা চাপা আনন্দ বয়ে যায়। নিজেকে খুব খুশি খুশি লাগছে মানিকের। বাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় মানিক। কিন্তু পরক্ষনে ভাবল বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেই তো আবার আসতে হবে নুপুর কেনার জন্য। এতে বেশি পরিশ্রম হয়ে যাবে। তাই এখন বাড়িতে না গিয়ে ব্রীজের নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল।
.
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে কিন্তু মানিক এখনো আসেনি। বিষয়টাকে নরমালি নিতে পারেনা রুমি। মনটা সেই সকাল থেকে এখনো খারাপ হয়েই আছে। কিছু ভালো লাগছেনা। খাটের উপর শুয়ে আছে। আগে যেমন অনিকের সাথে হাসিঠাট্টা করত আজ সেটাও করেনি। আসলে ভয় জিনিসটা খুব মারাত্মক। একবার মনে ঢুকে গেলে সহজে আর বের হতে চায়না। আর সেই ভয়ের কারনেই রুমি এভাবে নীরব হয়ে আছে।
.
রাত আটটার দিকে মানিক বাসায় আসে। মানিকের মা বলে
- কিরে সেই যে সকাল বেলা বেরিয়েছিস আর এখন এলি। সারাদিন কই ছিলি।
-- নদীতে।
- তা সারাদিন তো নৌকা চালাসনি। তাহলে বাড়িতে আসিস নি কেন?
- এমনিতে। ক্ষুধা লাগছে। খেতে দাও।
-- আচ্ছা যা হাত মুখ ধুয়ে আয়।
খাটের উপর থেকে মানিক আর মানিকের মায়ের কথা শুনতে পায় রুমি। খাট থেকে উঠে বসে। কিন্তু খাট থেকে নামছেনা। ভয়ের সাথে সাথে অলসতাও যেন তাকে ঘিরে রেখেছে।
.
মানিক খেতে খেতে বারবার এদিক ওদিক তাকিয়ে রুমিকে দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু পুরোবাড়িতে রুমির কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছেনা। মানিক একটু চিন্তিত হয়ে যায়। একটু পরে মানিক নিজেই রুমিকে ডাক দেয়
- রুমি..... রুমি....
মানিকের ডাক শুনে রুমি খাট থেকে নেমে মানিকের কাছে আসে। চোখে মুখে একরাশ বিষন্নতা লেগে আছে। মানিক ওর দিকে তাকিয়ে বলে
- কি হয়েছে? মন খারাপ?
-- না।
- চোখমুখ এরকম লাগছে কেন?
-- আরে এমনিতেই।
- না কিছু হয়েছে নিশ্চয়।
রুমি কিছু না বলে আবার খাটের উপর গিয়ে শুয়ে পড়ে। মানিক প্রচন্ড অবাক হয়ে যায়। রুমির নিশ্চয় কিছু একটা হয়েছে। তা না হলে রুমি কখনোই মানিককে এড়িয়ে চলতে পারতনা। কি এমন হয়েছে রুমির যার কারনে মানিককে এড়িয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয় মানিক। চিন্তা করতে করতে অস্থির হয়ে ওঠে মানিক। কিন্তু যতক্ষন না ব্যাপারটা জানতে পারবে ততক্ষন মানিকের এই অস্থিরতা থামবেনা। ব্যাপারটা জানতে হলে তো রুমিকে জিজ্ঞেস করতে হবে। কিন্তু বাড়ির সবাই এখনো ঘুমায়নি। আর রুমিও রুম থেকে বের হচ্ছেনা। তাই এখন ওকে জিজ্ঞেস করার মত কোন সুযোগ পাচ্ছেনা। মানিক নিজের খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ে। ঘুম আসছেনা। কিন্তু চোখ বন্ধ করে পড়ে আছে।
.
কপালে শীতল স্পর্শ পেয়ে হকচকিয়ে মানিক চোখ খুলে। তাকিয়ে দেখে রুমি। কিছু বলতে যাবে তার আগেই রুমি মানিকের ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখে রাত সাড়ে বারোটা বাজছে। মানিক অবাক হয়ে যায়। কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা। কারন তার ঠোটে রুমি আঙ্গুল দিয়ে আছে। রুমি ইশারায় মানিককে বাইরে আসতে বলে। মানিক কোন শব্দ না করে সাবধানতার সাথে খাট থেকে নামে। দুজনে বাইরে এসে উঠোনের এক কোনে দাড়িয়ে আছে। মানিক বারবার জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে, মন খারাপ কেন, কিন্তু রুমি তখনও কোন শব্দ করেনা। নিরুত্তর হয়ে আছে। মানিক বলল
- ঠিক আছে... একটু অপেক্ষা কর। আমি আসছি।
বলে মানিক ঘরের ভেতর চলে যায়। রুমি যেমন ছিল তেমন ভাবে দাড়িয়ে আছে। মানিক ঘরে এসে প্যান্টের পকেট থেকে নুপুর জোড়া বের করে। বাইরে এসে দেখে রুমি যেমন ভাবে ছিল তেমন ভাবেই দাড়িয়ে আছে। মানিক রুমির পায়ের কাছে বসে পড়ে। আর বলে
- দেখি পা টা দাও।
এতক্ষনে রুমির মুখে কথা ফুটে ওঠে। নির্লিপ্ত সুরে বলে
-- কেন?
- আরে দাওতো।
-- না।
ঠিক আছে বলে মানিক নিজেই রুমির পায়ে হাত দিয়ে নুপুর জোড়া পরিয়ে দেয়। রুমি একটু পিছিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু মানিক যেতে দেয়নি। নুপুর জোড়া পরিয়ে মানিক উঠে দাড়ায়। রুমির দিকে তাকিয়ে আছে। রুমি কিছু বলছেনা। হঠাৎ করেই ডুকরে কেঁদে ওঠে রুমি। মানিকের কাঁধে মাথা রেখে অশ্রুনিপাত করছে। মানিক পুরোপুরি ঘাবড়ে যায় আকষ্মিক এই ঘটনার জন্য। মানিক রুমির মাথা উঠিয়ে বলে
- কি হয়েছে রুমি? বল আমাকে।
রুমি কোন কথা বলছেনা। কেঁদেই যাচ্ছে। মানিক রুমির হাত তার মাথায় নিয়ে বলে
- রুমি এবার যদি না বল তাহলে....
পুরো কথাটা শেষ করার আগেই রুমি কাঁদতে কাঁদতে বলে
-- আমি আপনাকে হারাতে পারবনা। আমি আপনাকে ছেড়ে থাকতে পারবনা।
মানিক একগাল হাসি দিয়ে বলে
- সেটা তো আমিও পারবনা। তাই বলে কি কাঁদতে হয় পাগলি?
-- আমার.... আমার খুব ভয় করছে।
- কেন? কিসের ভয়?
-- আমার পরিবারের কেউ যদি এখানে এসে পড়ে তাহলে কিন্তু আমি শেষ। আর একবার আমাকে আপনার থেকে দুরে নিয়ে গেলে আমি আর কখনো আপনার কাছে আসতে পারবনা।
- তোমায় আমি যেতে দিলে তো? এখন কান্না বন্ধ কর। আর বল নুপুর পছন্দ হয়েছে।
রুমি চোখ মুছতে মুছতে বলে
-- ভীষন পছন্দ হয়েছে।
- তাহলে চল হাঁটি। তোমার পায়ে নুপুরের ছন্দের শব্দ আমি শুনব।
-- এই না না... এখন না। নুপুরের শব্দে খালা, বা অনিক উঠে গেলে কি হবে বুঝতে পারছেন?
- হুম.... সেটাও ঠিক। কিন্তু কি করব তাহলে।
রুমি একটু ভেবে নিয়ে পরক্ষনে বলে
-- কালকে আবার দুজনে খেয়া নৌকায় ঘুরব। আপনি দুপুর পর্যন্ত খালুর সাথে নৌকা চালাবেন। তারপর বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করে আমাকে নিয়ে যাবেন। আমি তখন নুপুরগুলো পরে বের হব।
- অনেক ভালো বলেছ তো।
-- ঠিক আছে। এখন চলেন। ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ি।
- কি বল!!!! বিয়ের আগেই একসাথে থাকব?
-- চুপ ফাজিল..... আপনি আপনার রুমে আর আমি আমার রুমে।
মানিক হাসতে হাসতে বলে
- ঠিক আছে চল।
.
তুফান শুরু হয়েছে মানিকের পুরো বুক জুড়ে। না না... এ তুফান কষ্টের নয়। আনন্দের তুফান। কাল আবার খেয়া নৌকায় রুমিকে নিয়ে ঘুরবে। নদীর পাড়ে খেয়া নৌকাটি এখনো বাঁধা আছে। কাল ওটা নিয়েই ঘুরবে দুজনে। খুশিতে যেন মানিকের চোখের ঘুমটাই বিদায় নিল।
.
(চলবে)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2288 (9)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:⧍ā§Ģ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ