āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āϟেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

2288 (10)

নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং :- (১০/১০) [শেষ পর্ব]
লেখক :- বিবাগী শাকিল
=============================
.
খুব অস্থিরতার সাথে কেটে যাচ্ছে মানিকের প্রতিটি মুহুর্ত। নৌকা চালানোর সময় মহিন মিয়া অনেক বার জিজ্ঞেস করে মানিক এত অস্থির হচ্ছে কেন? মানিক প্রতিবারই কিছু না বলে এড়িয়ে যায়। আসলে ব্যাপারটা মানিক নিজেও বুঝতে পারেনা। আজ তার কি হয়েছে। বার বার কেন এত অস্থির হচ্ছে সে। কেন এই অস্থিরতা?
.
শত অস্থিরতার মাঝেও মানিক রুমির কথা মনে করে হাসে। আজ বিকেলে রুমিকে নিয়ে খেয়া নৌকায় ঘুরবে। নৌকাটি নদীর পাড়ে বাঁধা আছে। ইদানীং ব্রীজে গুমগুম শব্দ করে ট্রেন গেলেও মানিক ফিরেও তাকায় না। রুমির ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে আস্তে আস্তে মানিক তার নিজের অস্তিত্বের পরিবর্তন ঘটায়। পুরনো অস্তিত্বকে বিলীন করে দিয়ে নতুন অস্তিত্বের চাদরে নিজেকে ঢেকে রাখে। আর সেই নতুন অস্তিত্বের পুরোটা অংশ জুড়ে শুধু রুমিই রয়েছে। রুমি না থাকলে এই অস্তিত্বেরও কোন প্রাধান্য থাকবেনা। মানিক শুধু রুমিকে চায় আর রুমি শুধু মানিককে চায়। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে সময় কাকে চায়?
.
বৈঠা হাতে নিয়েই মানিক আনমনা হয়ে আছে রুমির ভাবনায়। মহিন মিয়ার কথায় মানিকের ভাবনার ঘোর কাটে।
- কিরে... আজ তোর কি হয়েছে যে সারাক্ষন অস্থির হচ্ছিস আর কি যেন ভাবছিস?
-- কই...  নাতো। আমি তো ঠিকই আছি বাবা।
- ঠিক থাকলে নদীর মাঝপথে এসে কেউ বৈঠা না চালিয়ে বসে থাকে?
আসলে মানিক রুমির ভাবনায় এতটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছিল,  সে যে নৌকা চালাচ্ছে সেটা পর্যন্ত বেমালুম ভুলে গেল। মহিন মিয়া খেই ধরিয়ে দিতেই মানিক আবার বৈঠা চালানো শুরু করে। কিন্তু অস্থিরতার জ্বালায় মানিকের শরীর ও মন দুটোই উত্তাল সাগরের মত অশান্ত হয়ে উঠেছে। কেন আজ এত অশান্ত মানিক?? এই প্রশ্নটার উত্তর কি হতে পারে???
.
দুপুর হয়ে এসেছে। মানিক পাড়ে নৌকা থামিয়ে যাত্রীদের থেকে ভাড়া নেয়। তাকে আজ তাড়াতাড়ি চলে যেতে হবে।খেয়া নৌকাটিকে খুব শক্ত করে বেঁধে রেখেছে। বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে দুজনকেই বেরিয়ে পড়তে হবে। দেরি হলে আবার রুমি রাগ করে বসে থাকবে। তাই মানিক বাড়িতে আসার জন্য পা বাড়ায়। এমন সময় মহিন মিয়া বলে
- এই মানিক দাড়া।
মানিক একরাশ বিরক্তি নিয়ে দাড়ায়। তারপর মহিন মিয়ার দিকে এগিয়ে যায়। মানিক বলে
-- কি হয়েছে আবার?
- নোঙ্গরটা তো ভেঙ্গে গেল।
-- ভাঙবেই তো। তোমাকে কতবার বলেছি যে একটা লোহার নোঙ্গর বানাও। তুমি তো আমার কথা শুনলেইনা। কাঠের নোঙ্গর আর কতদিন চলবে।
- আরে এখন কি করব? নোঙ্গরের ব্যবস্থা না করলে তো নৌকা বেতাল হয়ে যাবে।
-- তো এখন কি করব?
মহিন মিয়া একটু চুপ হয়ে যায়। কিভাবে এই মুহুর্তে একটা নোঙ্গরের ব্যবস্থা করবে সেটাই ভাবছে। একটু পরে বলে
- ব্রীজের নিচে কাশেমের নৌকা আছে। ওখানে যেতে হবে এখন।
মানিকের খুব বিরক্ত লাগে তখন। কিন্তু বাবার উপরে তো দোষ দেয়া যায়না। তাছাড়া এটা তে কারোরই দোষ নেই। নৌকা চালিয়ে ওদের সংসার চলে সেই নৌকাকেই যদি রক্ষা না করে তাহলে নৌকাটির সাথে বড্ড বেঈমানী হয়ে যাবে। হোক না নৌকাটি একটি জড়বস্তু... তবুও তো তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। এসব ভেবে মানিক বিরক্তির ভাবটা কিছুটা কমিয়ে দেয়। নিজেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রন করে। হয়ত একটু দেরি হবে। রুমিকে বুঝিয়ে বললে সে নিশ্চয়ই রাগ করবেনা। ভাবতে ভাবতে মানিক আবার নৌকায় ওঠে। এবার মহিন মিয়াই নৌকা চালাচ্ছে। নদীর পাড় ঘেষে ব্রীজের দিকে এগোচ্ছে তাদের নৌকা। মানিক বাধ্য হয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে। তারা ব্রীজের নিচে যায়। কাশেমের থেকে একটি নোঙ্গরের ব্যবস্থা করে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসে। মাটিতে খুব শক্ত করে মানিক নিজের হাতেই নোঙ্গরটি গেঁথে ফেলে। তারপর সে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। বাড়িতে যাবার তিনটা রাস্তা আছে। একটা সাহেবপাড়ার রোড, একটা হাসপাতাল রোড, আরেকটা হচ্ছে পাকশী বাজার রোড। এখান থেকে সবচেয়ে কম সময়ে বাড়িতে পৌঁছাতে হলে হাসপাতাল রোড দিয়ে যেতে হবে। মানিক হাসপাতাল রোড দিয়ে বাড়ির দিকে অগ্রসর হয়। রুমির পায়ের নুপুরের ছন্দের শব্দটা শোনার নেশা প্রচন্ড তীব্র হয়ে উঠেছে।
.
মানিক বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে পড়ে। তাকিয়ে দেখে তার মা আর অনিক বিষন্ন মুখে খাটের উপর বসে আছে। মানিকের বুকটা ধক করে ওঠে। কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে
- কি হয়েছে মা।
মানিকের মা কিছু বলার আগেই অনিক চটপট ভাবে বলে দেয়
-- রুমি আপুকে উনার বাবা এসে নিয়ে গেছে।
কথাটা শোনার পরে মানিকের মাথা যেন কিছুক্ষনের জন্য নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ধপ করে খাটের উপর বসে পড়ে। অনিকের দিকে তাকিয়ে বলে
- কখন নিয়ে গেছে?
তারপর অনিক পুরো ঘটনাটা বলা শুরু করে।
-- আমরা ঐদিন পাকশী রেল স্টেশন মানে ব্রীজের উপর উঠেছিলাম যে সেদিন তো আমরা ব্রীজে অনেকক্ষন ছিলাম। ব্রীজের উপর দিয়ে যে ট্রেনটা নদীর ওপাড়ে গেছে সেই ট্রেনে রুমি আপুর বাবা ছিল। তিনি নাকি আমাদের দেখেছেন। তোমাকে তো কখনো দেখেনি তাই রুমি আপুর সাথে তোমাকে দেখে চিনতে পারেনা। কিন্তু আমি যে মায়ের সাথে রুমি আপুদের বাসায় গিয়েছিলাম তখন থেকেই উনি আমাকে চিনে। আমাকে দেখেই উনি বুঝতে পারে রুমি আপু আমাদের বাসায়ই এসেছে। আর রুমি আপু নাকি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে কাউকে না জানিয়ে। ওর নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। কিন্তু সে রাজি ছিল না তাই কাউকে না জানিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। রুমি আপুর বাবা এখানে এসে রুমি আপুকে অনেক বকা দেয়। রুমি আপু অনেক কেঁদেছিল। সে যেতে চায়নি। পরে রুমি আপুর বাবা তাকে জোর করে নিয়ে যায়।
.
কথাগুলো শুনে মানিক কাঠের পুতুলের মত হয়ে যায়। ওর পৃথিবীটা যেন ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছেনা।অনেকটা জোর করেই বলে
- কখন নিয়ে গেছে?
বলতে গিয়ে গলাটা ধরে এল মানিকের। অস্বাভাবিক লাগে গলার স্বরটাকে। অনিক বলে
-- এইতো একটু আগেই।
- কোনদিক দিয়ে নিয়ে গেছে?
-- সাহেবপাড়ার রোড দিয়ে।
মানিক দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়। সাহেবপাড়ার রোড দিয়ে গেলে ওদের নাগাল পাওয়া সম্ভব হবেনা। তাড়াতাড়ি যেতে হলে হাসপাতাল রোড দিয়ে যেতে হবে। মানিক হাসপাতাল রোড দিয়েই দৌড়ানো শুরু করে। পায়েও কেন জানি আজ এত গতি চলে এসেছে। দুরন্ত গতিতে ছুটে নদীর পাড়ের রাস্তায় পৌঁছে যায়। রাস্তা থেকে নদীর পাড়ের সব গুলো নৌকা দেখা যায়। অনেক যাত্রী দেখা যাচ্ছে।কেউ উঠছে, কেউ নামছে। এত মানুষের ভেতরে রুমিকে খুজে পাওয়া সম্ভব না। রাস্তা থেকে নেমে দৌড়ে নদীর পাড়ের নৌকা গুলোর কাছে চলে যায়। কিন্তু ততক্ষনে একটি নৌকা ওপাড়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। মানিক হাঁপাতে হাঁপাতে নৌকাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। রুমিকে দেখার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছেনা।হঠাৎই রুমিকে চোখে পড়ে মানিকের। মুখে হাত দিয়ে বসে আছে। ধীরে ধীরে রুমির অবয়বটা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে। নৌকাটি দ্রুত বেগে মাঝনদীতে চলে যায়। মাঝনদীতে চলে যাওয়ার পর কোন মানুষের চেহারাকে বোঝা যায়না। শুধু অবয়ব টা বোঝা যায়। প্রচন্ড এক ক্লান্তি নিয়ে মানিক মাটিতে বসে পড়ে। রুমিকে নিয়ে এতদিন যা ভেবেছিল তার সব গুলোই অপুরনীয় ছিল। আর সেটাই ছিল আজকের অপুর্ণতার পুর্বাভাস। নৌকাটি এখন জোঁকের মত লাগছে। একেবারে ছোট। ওপাড়ে গিয়ে থেমেছে। মানিক আর সেদিকে তাকাতে চায়না।
.
নদীর পাড়ে খেয়া নৌকাটি বাঁধা আছে। আজকেই খেয়া নৌকায় চড়ার কথা ছিল দুজনের। কিন্তু অচেনা এক ঝড় এসে সবই তছনছ করে দিল। মানিক ধীরে ধীরে খেয়া নৌকাটির দিকে এগিয়ে যায়। এই নৌকায় বসে রুমির পায়ের নুপুরের শব্দ শোনার খুব ইচ্ছে ছিল। ইচ্ছেপুরন আর হলনা। হবেওনা। নিজে নিজেই খেয়া নৌকায় উঠে মানিক। বৈঠা চালাতে মন চাচ্ছে না। বসে আছে নৌকার উপর। চারিদিকে পানির কলকল শব্দ, বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ থাকার পরেও মানিকের মনে হচ্ছে এখানে কিছুই নেই। আসলেই নেই। খেয়া নৌকাটিকেও প্রচন্ড শুন্যতা এসে ঘিরে রেখেছে। এই শুণ্যতা আর কখনো পুরন হবেনা। হয়ত বা আর কখনো এই খেয়া নৌকাটি নদীর পাড়ে বাঁধা থাকবেনা। সেই অধ্যায়ের প্রতিটি পাতা যেন ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। (সমাপ্ত)

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ