নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং :- (৭/১০)
লেখক :- বিবাগী শাকিল
===========================
.
শুন্যতায় ঘেরা যে মরুভুমি তার বুকে ফুল ফোটাতে ভালোবাসার জলই যথেষ্ট। এতে আর কোন কিছুর প্রয়োজন হয়না। ভালোবাসা তো ভালোবাসাই। সব সময় পুর্ণতা আর অপুর্ণতার মাঝখানে থাকে। পালে হাওয়া লাগিয়ে মানিক আর রুমির ভালোবাসার নৌকা তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে কোন এক অজানা গন্তব্যে। কেউ কি জানে এর শেষটা কোথায়?
.
চাঁদের আলো আজ যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে পুরো এলাকাটাকে দিনের মত মনে হচ্ছে। আকাশের তারা গুলো মিটিমিটি করে জ্বলছে।ঘরে বিদ্যুৎ নেই। তাই মানিক,অনিক আর রুমি উঠোনে এসে বসে। ওরা কথা বলছে অনেক প্রসঙ্গে। অনিক কিছু একটা চিন্তা করে বসে বসে।তারপর বলে
- ভাইয়া....
-- হ্যা বল
- তুমি নাকি রুমি আপুরে বিয়ে করবা?
-- অনিক... চুপ থাক।
- বল না ভাইয়া।
-- আগে দেখ, রুমিরে তোর ভাবি হিসেবে পছন্দ হয় কি না।
- সেটা আর বলতে হয় নাকি। আমি যদি রুমি আপুর বড় হতাম তাহলে তো আমিই প্রপোজ করতাম।
কথাটা শুনে তিনজনই শব্দ করে হেসে ওঠে। রুমি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হাসি থামাতে তার একটু কষ্ট হয়। তারপর বলে
-- তার মানে অনিকের পেটে পেটে জিলিপির প্যাঁচ।
- এমন আছাড় মারব যে জিলিপির প্যাঁচগুলো সব সোজা হয়ে যাবে।(মানিক)
সাধারনত বড়রা ছোটদেরকে এসব কথাই শোনায়। আর মানিকই বা বাদ যাবে কেন। অনিক রুমির দিকে তাকিয়ে বলে
- এই রুমি ভাবি.... একটা গান শোনাওনা।
রুমি মুখে আঙ্গুল দিয়ে বলে
-- ইশশ..... আস্তে... তোমার আম্মু শুনবেতো।
- আচ্ছা এখন একটা গান শোনাও।
রুমি মানিকের দিকে তাকায়। মানিকের চোখে সম্মতির ভাব প্রকাশ পাচ্ছে। রুমি ঠিক আছে বলে গান শুরু করে।
.
রাতেরও আকাশে নিশ্চুপ স্বাক্ষী
দুরের ঐ ধ্রুবতারা
কতটা বেসেছি ভালো
শুধু মন জানে
এ হৃদয় জানে.....
.
জানি তুমি আর ফিরবেনা
নিভে যাওয়া দ্বীপ জ্বালাবেনা আর
প্রতি নিঃশ্বাসে কষ্ট ধরে
বেচে থাকা দায় তোমাকে ছাড়া।
দুরের ঐ ধ্রুবতারা
কতটা বেসেছি ভালো
শুধু মন জানে
এ হৃদয় জানে।
.
মানিক চুপচাপ বসে চোখ বন্ধ করে রুমির গান শুনছে। রুমির গানের সুরে অন্যরকম একটা মায়া ছড়িয়ে পড়ে। সেই মায়াজালে মানিক আটকে আছে। মনের দেশে শহর জুড়ে সোনালী তেপান্তরে বাতাসের মত ছড়িয়ে পড়ে রুমির গানের সুর।
.
পরদিন বিকালে মানিক খাওয়া দাওয়া করে ঘর থেকে বের হয়। তার বয়সী ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে মাঠে। মানিক ধীর পায়ে হাঁটছে। খেলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু খেলবেনা। যদি রুমির চিন্তা মাথা থেকে সরে যায় তাই। অদ্ভুত সব পাগলামি এসে গিজগিজ করছে মানিকের মাথায়। মাঠ পেরিয়ে বাজারের দিকে যায়। কিন্তু ওখানেও ভালো লাগেনা। তাই বাজার পেরিয়ে হাটতে থাকে। বাস্কেটবল খেলার মাঠেও কিছু ছোট ছোট ছেলে খেলছে। মানিক বসে পড়ে একটা নিরাপদ জায়গা পেয়ে। রুমির কথা গুলোই বারবার ভাবছে। আর ওর ভাবনার অবসান ঘটিয়ে দেয় আসিফ। মানিকের মাথায় একটা টোকা দেয়। মানিক একটু চমকে ওঠে। পেছনে তাকিয়ে আসিফকে দেখতে পায়।
- কিরে মানিক কি করছিস এখানে? আজকাল তোকে দেখাই যায়না।
-- এই তো বসে আছি। কি খবর তোর।
- আমার আর খবর। কিছু ভাল লাগেনা।
-- আমারো কিছু ভালো লাগেনা রে।
- এখন আর কি করবি?
-- না এখন কিছু করবনা।
- বোর্ড খেলবি?
-- চল খেলি।
.
রাগে মাথা গরম হয়ে আছে রুমির। এত রাত হয়ে এল মানিক এখনো ঘরে আসেনি। সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছে। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। এতক্ষনে সবার কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মানিকের কি কাজ আছে যে এত রাতেও বাড়িতে আসছেনা। মানিকের জন্য রুমি এখনো খাওয়া দাওয়াও করেনি। রাগ উঠেছে প্রচন্ড ভাবে রুমির মাথায়। উঠোনে এলোমেলো ভাবে হাঁটাহাঁটি করছে। আজ আসুক মানিক। দু চার কথা শুনিয়ে দেবে রুমি। কি কি বলবে সেটা মনে মনে বারবার আওড়াচ্ছে। রুমির প্রতীক্ষার সমাপ্তি ঘটিয়ে মানিক এসে উঠোনে পা রাখে। রুমি দ্রুত হেঁটে মানিকের সামনে আসে। মানিক কিছুটা চমকে গিয়ে থমকে দাড়ায়। রুমি নিচুস্বরে কিন্তু কড়া গলায় মানিককে বলে
-- এই... এত রাত পর্যন্ত বাইরে কেন? এত সাহস কেন আপনার? আপনি জানেন না আমি বাড়িতে আপনার জন্য অপেক্ষা করি।
মানিক নিজেকে অপরাধী মনে করে মাথা নিচু করে রাখে। মনে হয় রুমিকে সে যমের মত ভয় পায়।কাঁচুমাচু করে বলে
- আসলে বন্ধুদের সাথে বোর্ড খেলেছিলাম
-- ঠিক আছে ভালো কথা বোর্ড খেলছিলেন। তা এত রাত পর্যন্ত খেলতে হবে?
- স্যরি.... এমনটা আর হবেনা।
-- আপনার জন্যে আমি এখনো খাওয়া দাওয়া করিনি।
- কিন্তু তুমি খেয়ে নিতে। আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকার কি দরকার।
-- তাহলে বিয়ের পরেও আর অপেক্ষা করবনা।
মানিক অবাক হয়ে রুমির দিকে তাকিয়ে রইল। আজ রুমি তাকে শাসন করছে। ভালোবাসার শাসন করছে।তার উপর অধিকার খাটাচ্ছে। মানিকের চোখ ছলছল করে ওঠে। সে একটা অগোছালো ছেলে। পড়ালেখাও খুব বেশি করেনি। কিন্তু তারপরও রুমি মানিককে আগলে রাখার চেষ্টা করছে। ব্যাপারটা ভাবতেই রুমির প্রতি কৃতজ্ঞতায় মানিকের মাথা নুয়ে আসে।
- এই কান ধরে বলছি আর এমনটা হবেনা।
-- মনে থাকবে?
- হ্যা মনে থাকবে।
এরপর রুমি নিজেই হাত দিয়ে মানিকের হাত কান থেকে নামিয়ে দেয়। মানিকের ডান হাত শক্ত করে ধরে বলে
- আসেন.... একসাথে খাব।
বলে রুমি মানিকের হাত ধরে টানতে টানতে ঘরের দিকে নিয়ে যায়। মানিক নীরবে রুমির পিছু পিছু যায়। কোন রকম বিরোধিতা করেনা। মানিক যেন একটা জাহাজ। আর সেই জাহাজের দিক নির্দেশক হল রুমি। সারাক্ষন কম্পাস হাতে নিয়ে ব্যস্ত। সেই অবুঝ জাহাজের সঠিক দিক নির্বাচন করতে।
.
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমি আর মানিক আবার উঠোনে বেরিয়ে আসে। মানিক আর রুমি পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে। রুমি একটু পর পর মানিকের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকাচ্ছে। একটু পরে মানিক বলল
- রুমি....
-- বলেন
- তোমার হাতটা একটু ধরি।
-- কেন?
- এমনিতেই।
-- এমনিতে কেন?
- আচ্ছা না চাইলে থাক।
শেষ কথাটা মানিক অভিমানী সুরে বলল। রুমি মানিকের অভিমান দেখে নীরবে হাসে। তারপর মানিকের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু মানিক অন্যদিকে তাকানো ছিল তাই দেখতে পায়নি। তাই বাধ্য হয়ে রুমি মানিকের হাত ধরে। রুমির শীতল স্পর্শে মানিকের পুরো শরীর জুড়ে একটা শিহরন ঢেউয়ের মত খেলে যায়।মানিক রুমির হাতের স্পর্শ পেয়ে যেন সবকিছু ভুলে গেল। ভাবনার অতল সাগরে তলিয়ে যায়। রুমি বলল
-- কি হল? কথা বলছেন না যে?
- তোমার স্পর্শ পেয়ে সব ভুলে গেছি। মুখে কোন কথা আসছেনা।
-- বাহবা!!!! এখন থেকেই এ অবস্থা না জানি বিয়ের পর কি হয়।
- বিয়ের পর আর কিই বা হবে। ছেলে না হয় মেয়ে যেকোন একটা হলেই হবে।
রুমি ফিক করে আবার হেসে ফেলে। কিন্তু তবুও মানিকের হাত ছাড়েনা। মানিক বলে
- রুমি... কাল ব্রীজের নিচে যাবে?
-- হ্যা যাওয়া যায়।
- নতুন একটা রাস্তা দিয়ে যাব। খুব সুন্দর একটা পথ। দুপাশে গাছপালা দর্শকের মত দাড়িয়ে থাকে আর মাঝখানে সরু রাস্তা।
-- ওয়াও আমি যাব।
- আচ্ছা নিয়ে যাব।
-- এই অনেক রাত হয়েছে। কেউ টের পেলে ভীষন সমস্যা হবে।
- আচ্ছা চল। ঘরে চল।
তারপর মানিক চলে যায় তার রুমে। রুমি চলে যায় তার রুমে। দুজনেই দুজনের কথা ভাবতে ভাবতে চোখে নতুন এক স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
.
(চলবে)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2288 (7)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:⧍ā§Ģ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ