নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং:- (৬/১০)
লেখক :- বিবাগী শাকিল
============================
.
পাড়ে এসে নৌকার নোঙ্গর ফেলে মানিক। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বাবার সাথে চলে আসে। মাথার উপর সূর্য্যটা গন গন করে জ্বলছে। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে গোসল করার জন্য নদীতে নামে। রুমিকে কাল রাতের পরে আর দেখেনি। মেয়েটা কি করছে কে জানে। মানিক শত ব্যস্ততার মাঝেও রুমিকে এক মুহুর্তের জন্য ভোলেনি। রুমিকে এখন দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা ভাবনার জালে আটকে রেখেছে। হাতছাড়া করতে মন চায়না। যদি হারিয়ে যায় এই ভয়ে মানিক শত চেষ্টা করে রুমিকে নিজের করে রাখার।
.
বাড়িতে এসে খাটের উপর বসে মানিক। রুমি পাশের রুমে। মানিক ডাক দেয়
- রুমি
মানিকের ডাক শোনার সাথে সাথেই রুমি চটপট জবাব দেয়। যেন সে মানিকের ডাকের অপেক্ষাই করছিল।
-- জ্বি আসছি।
রুমি মাথায় ঘোমটা দিয়ে লজ্জামিশ্রিত হাসি মুখ নিয়ে মাথা নিচু করে মানিকের সামনে আসে। মানিক তাকিয়ে থাকে রুমির দিকে। প্রতিদিনই দেখে, তবু যেন দেখার কোন শেষ নেই। একবারে অমৃত। মানিক বলে
- কি কর
-- এই তো বসে ছিলাম।
- খাওয়া দাওয়া করছ? মা আর অনিক কোথায়?
-- অনিক খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাচ্ছে। খালা এইমাত্র শুয়ে পড়েছে। এখনো ঘুমায়নি।
- খাওয়া দাওয়া করেছ কিনা?
-- না করিনি।
- কেন?
প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করতেই রুমি আরো লজ্জিত হয়। আর রুমির এই লজ্জামাখা মুখটা দেখতে মানিকের ভীষন ভালো লাগে। রুমি নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছে। কিছু বলছেনা। মানিক আবার বলে
- কি হল... এত বেলা হয়ে গেল কিন্তু এখনো খাওনি কেন?
রুমি মানিকের দিকে আরেকটু এগিয়ে যায়। মানিক ছাড়া যাতে আর কেউ শুনতে না পায় সেরকম নিচু স্বরে বলে
-- আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আপনি আসলে একসাথে খাব বলে এখনো খাইনি।
বলে রুমি আবার আগের জায়গায় গিয়ে দাড়িয়ে থাকে। মানিকের মনে একটা শিহরন বয়ে যায়। কেন এই অনুভুতি। আর এই অনুভুতির নামটাই বা কি। এই প্রশ্ন গুলো মানিকের মনে প্রতিদিন সূর্য্যের মত উঁকি দেয়। উত্তরটা খুজে পেয়েছে কিনা কে জানে। মানিক রুমির দিকে তাকিয়ে বলে
- খেয়ে নিলেই পারতে। আমি আসতে দেরি হবে তুমি জানোনা।
-- হলে হবে। তাতে কি?
মানিক এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে খাট থেকে উঠে দাড়ায়। আস্তে আস্তে ধীর পায়ে রুমির দিকে এগিয়ে যায়। তারপর রুমির হাত ধরে বলে
- চল... একসাথে দুজন খাব।
রুমি মানিকের দিকে না তাকিয়েই আলতো করে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে
-- চলেন।
.
মানিক এবং রুমি একসাথে খাচ্ছে। এক জনের থালার খাবার আরেকজনের থালায় তুলে দিচ্ছে। আর অজানা এক ভালোবাসার হাসি তাদের ঠোঁটে ফুটে উঠে। স্বামী স্ত্রীর মাঝে যে ভালোবাসা থাকে সেটা মানিক আর রুমির মাঝে বিরাজ করছে। কেউই কাউকে ভালবাসি বলেনি কিন্তু একে অপরকে নীরবেই ভালবেসে যায়। স্বর্গের ভালবাসা নেমে এসে মানিক আর রুমির অন্তরে ভালবাসার অনুভুতি জাগিয়ে তোলে। রুমি মানিককে মনের অন্তরালে জায়গা করে দিয়েছে। মানিকের জন্য তার সব ভালোবাসাকে উজাড় করে রেখেছে। তারা দুজনে খাচ্ছে। ততক্ষণে মানিকের মাও ঘুমিয়ে পড়েছে। অনিক আরো আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে। মানিকের বাবা নৌকায়। বাড়িতে এখন শুধু রুমি আর মানিক জেগে আছে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে দুজনে উঠোনে এসে বসে। মানিক রুমিকে বলে
- রুমি তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।
রুমি এতে আরো লজ্জা পাওয়ার কথা। কিন্তু রুমির লজ্জা এখন কিছুটা হলেও কেটে গেছে। মানিকের চোখের দিকে সরাসরি তাকায়। আর বলে
-- হইছে আর পাম্প দিতে হবেনা।
- রুমি আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
কথাটা এক নিঃশ্বাসে বলেই মানিক চোখ বন্ধ করে ফেলে। কারন এই কথা শোনার পর রুমির মুখের বহিরাবস্থা মানিক দেখতে চায়না। থাকনা.... এই অবস্থায় রুমির চেহারাটা না হয় অদেখাই থাক। রুমি মানিকের দিকে তাকিয়ে বলে
-- বোকা নাকি.... এই কথা বলার পরে চোখ বন্ধ করতে হয় নাকি।
মানিক আস্তে আস্তে চোখ খুলে।চোখ খোলার পর সবার প্রথমেই রুমির সেই চাঁদের মত চেহারাটা মানিকের চোখ দুটো তার মস্তিষ্কে প্রেরণ করে। কিন্তু বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারেনা।মাথা নিচু করে চোখ নামিয়ে ফেলে। তারপর নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে মানিক। তবুও রুমির দিকে তাকাতে পারেনা। তাই রুমির চোখের দিকে না তাকিয়েই বলে
- কি হল তুমি কিছু বলবেনা?
-- আমি কি বলব?
- কিছুই কি বলার নেই?
-- বলার আছে। কিন্তু বলবনা। নিজে বুঝে নিতে পারেন না?
- কিভাবে বুঝব।
-- এভাবে মাথা নিচু করে রাখলে হবে? আমার চোখের দিকে তাকান। উত্তর পেয়ে যাবেন।
মানিক আস্তে আস্তে তার চোখদুটো রুমির চোখে রাখে। রুমি নির্বিকার। মানিক তাকিয়ে আছে একদৃষ্টে। ঐ তো...... মানিক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে রুমির চোখ মানিককে ভালোবাসার হাতছানি দিয়ে ডাকছে। রুমির না বলা ভালোবাসাকে তার চোখ দুটিই প্রকাশ করে দিচ্ছে। এ যেন এক ব্যতিক্রমী সম্মোহন। রুমি যেন তার সমস্ত ভালোবাসা চোখের ভেতরে এনে মানিককে সম্মোহিত করে ফেলেছে। নিঃশব্দে বসে আছে দুজন। একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার প্রহর গুনছে।
.
--- বাহবা!!!!!! শুভদৃষ্টি চলছে নাকি???
কথাটা শুনেই মানিক এবং রুমি হকচকিয়ে ওঠে। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে কিন্তু কাউকে দেখতে পাচ্ছেনা। তারপর দুজনেই একসাথে পেছন দিকে তাকায়। দেখে অনিক দরজার সাথে হেলান দিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।কখন যে অনিক ঘুম থেকে উঠে দরজায় এসে দাড়িয়েছে ওরা টেরই পায়নি। দুজনেই প্রচন্ড অপ্রস্তুত হয়ে যায়। কথা বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে। আর অনিক এই সুযোগ টাকে কাজে লাগিয়ে আস্তে আস্তে ওদের দিকে এগিয়ে আসে। আর বলে
--- তাই তো বলি... রুমি আপু এভাবে চুপচাপ থাকে কেন আর মাঝে মাঝে নীরবই বা হয় কেন? আর ভাইয়াও দুপুরে বাবাকে নৌকায় রেখে বাড়ি চলে আসে কেন? তার মানে জল এতটুকু গড়িয়েছে। আমার তো প্রথম থেকেই সন্দেহ হয়েছিল। উফ... কি রোমান্টিক মুডে ছিলা তোমরা। আমি এসে গড়বড় করে দিলাম।
কথাগুলো অনিক একটানা বলে যায়। মানিক অনিককে ধমক দিয়ে বলে
- এই চুপ কর... বেশি পাকনামো করছিস কিন্তু তুই।
-- আহা... ওকে ধমকাচ্ছেন কেন? ও তো ঠিকই বলেছে। (রুমি)
রুমির কথা শুনে অনিক একটু সাহস পায়। তারপর বলে
- দেখেছ রুমি আপু.. স্যরি... রুমি ভাবি, ভাইয়া আমাকে বকছে।
-- দাড়া আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। (মানিক)
এই বলে মানিক অনিকের দিকে একটু দৌড়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু অনিক কে ধরবে এটা কার সাধ্যি। অনিক দৌড়ে পালিয়ে যায়। মানিক অনিক কে ধরতে না পেরে বাধ্য হয়ে আবার রুমির কাছে এসে বসে। রুমি বলে
-- অনিক তো আমাকে ভাবি বানিয়ে দিল। এবার?
- এবার আর কি.. তোমাকে অনিকের ভাবি বানিয়ে দিব।
-- কিন্তু আম্মু যদি কোনভাবে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যায় তাহলে সেটা আর সম্ভব না।
- তার আগেই তো তোমায় লাল শাড়ি পরিয়ে দেব।
রুমি আবারো লজ্জা পেয়ে যায়। লজ্জিত মুখ নিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। মানিক তাকিয়ে থাকে রুমির দিকে। তারপর বলে
- বাহবা!!! এত লজ্জা!!! ভালো তো। লজ্জা পেলে তোমাকে বউ বউ লাগে।
রুমির মুখে হালকা মুচকি হাসি ফুটে উঠে। গাল দুটো তার লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
.
(চলবে)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2288 (6)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:⧍ā§Ģ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ