নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং :- (৩/১০)
লেখক :- বিবাগী শাকিল
==============================
.
রুমি অন্যদিকে ফিরে আছে। মানিক রুমির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে
- রুমি?
-- জি বলুন
- আমাকে একটা কথা সত্যি করে বলবেন?
-- হ্যা বলেন
- আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনার কিছু একটা হয়েছে।
-- কই নাতো?
- মিথ্যে কথা বলবেন না। আপনার চেহারাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে কিছু একটা হয়েছে।
মানিক যে একবারে মিথ্যে বলছে তা কিন্তু নয়। রুমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। মানিক আবার বলছে
- কেন জানি আমার মনে হচ্ছে আপনি বাড়ি থেকে না জানিয়ে এসেছেন?
-- না আমি বাড়িতে জানিয়ে এসেছি।
- তাহলে আপনার বাড়িতে ফোন করে কথা বলুন।
রুমি আমতা আমতা করে বলে
-- এ...এখানে ফোনের কথা আসছে কেন?
- আপনি ফোন করে কথা বললেই আমি বিশ্বাস করব যে আপনি বাড়িতে জানিয়ে এসেছেন।
-- আমি পারবনা
- তার মানে আপনি বাড়িতে জানিয়ে আসেননি। নিশ্চয় কোন একটা সমস্যা হয়েছে।
রুমি মাথা নিচু করে আছে। মানিক একেবারে সত্যি কথা বলেছে। রুমির নীরবতা আবারো প্রমাণ করে দিল যে মানিক সত্য কথা বলছে। মানিক রুমিকে বলে
- কি হল? বলবেন?
-- (রুমি নিশ্চুপ)
- আচ্ছা বলতে না চাইলে বলবেন না। কিন্তু সমস্যাটা বললে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করতাম।
-- আচ্ছা বলছি।
মানিক আর রুমি নদীর পাড়ে বসে আছে। নদীর স্রোত বারে বারে এসে কিনারে আছড়ে পড়ছে। নদীর ঢেউ গুলো ছন্দে ছন্দে ছন্দিত হয়ে মাতালের মত দুলছে। অনিক এখনো আসেনি ঝালমুড়ি নিয়ে। রুমি বলতে শুরু করে
-- বাড়িতে দিন ভালোই কাটছিল আমার। স্কুলে যেতাম, পড়ালেখা করতাম। সারাদিন দুষ্টুমি নিয়ে মেতে থাকতাম। সবাই বলে যে আমার পড়ালেখা অনেক ভাল। পরীক্ষাতেও রেজাল্ট ভালো করতাম। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলাম।রেজাল্টও ভাল হল। আমি অনেক খুশি হয়ে যাই কারন কিছুদিন পরে কলেজে ভর্তি হব। স্কুলে যখন পড়তাম তখন অনেক স্বপ্ন দেখতাম যে কখন কলেজে ভর্তি হব। কিন্তু এবার সুযোগটা হাতে এসেছে। তাই কলেজে ভর্তি হবার আনন্দে অস্থির হয়ে যাই। কিন্তু বাসার সবাই বলছে আমাকে আর পড়াবেনা। কিন্তু এক প্রকার জোর করেই আমি কলেজে ভর্তি হই। কিন্তু আমি যেন কলেজে ভর্তি হইনি.. সবার চোখের বিষ হয়ে গেছি। কেউ আমার সাথে ঠিক করে কথাও বলেনা। আগে যেরকম সবাই আমার কদর করত এখন তার ছিটেফোটাও নেই কারো মাঝে। খুব কষ্ট হত এসব দেখে। আম্মুর কাছে খাবার চাইলে আম্মু বলে আমি নিজে বেড়ে খেতে। আমি প্রচন্ড রকমের আশ্চর্য্য হয়ে যাই এসব দেখে। একদিন কলেজ থেকে বাসায় এসে দেখি সবাই আমার বিয়ের কথা বলছে। তখন বুঝতে পারি সবাই কেন আমার সাথে এরকম করত। আমার বড় বোনকেও বেশি পড়ায়নি। খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে দিয়ে দেয়। সবাই আমার বিয়ে দেবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তারপর একদিন.....
.
- আমি এসে গেছি ভাইয়া....
মানিক এবং রুমি তাকিয়ে দেখে অনিক ঝালমুড়ি নিয়ে এসেছে। অনেক দুরে তাই হেঁটে যাওয়া আসা করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। কিন্তু মানিক তবুও বিরক্ত হয়ে যায়। কারন রুমির পুরো কথাটা শুনতে পারেনি। মানিক বলে
- দে রুমিকে দে... আর তুইও খা।
-- আমি আসতে আসতে খেয়েছি ভাইয়া।
- টাকা কোথায় পেলি?
-- আমার কাছে পাঁচ টাকা ছিল। সাথে করে নিয়ে এসেছি ভেবেছিলাম রুমি আপুকে ঝালমুড়ি খাওয়াব। তার আগেই তুমি বলে দিলে।
- বাহ!!!! রুমি আপুর জন্য এত দরদ কেন রে?
কথাটা শুনে রুমি এবং অনিক দুজনেই হেসে ওঠে। অনিক কাঁচুমাচু করে বলে
- আমি যখন রুমি আপুদের বাসায় গেছিলাম তখন রুমি আপু আমাকে ঝালমুড়ি খাইয়েছিল তাই আমি এবার তা শোধ করব ভেবেছিলাম।
কথাটা শুনেই রুমি শব্দ করে হাসে। হাসতে হাসতে বলে
-- অনিক তুমি তাহলে শোধ করার জন্য ৫ টাকা এনেছিলে। আচ্ছা মানলাম কিন্তু সেই ৫ টাকা দিয়ে নিজে খেয়ে ফেললে? কই আমারটা কই?
- এই যে আমার হাতে।
-- ওটাতো মানিক ভাইয়ের টাকায়।
- আমার কাছে এখন নাই। পরে আবার খাওয়াব।
-- আরে না... দুষ্টুমি করলাম। খাওয়াতে হবেনা।
তারপর ওরা তিনজন মিলে ঝালমুড়ি ভাগ করে খায়। অনিক একটা বিষয় খেয়াল করে। সেটা হল রুমি একটু আগেই তো অনেক হাসিখুশি ভাবে কথা বলেছে। কিন্তু ঝালমুড়ি নিয়ে আসার পর থেকে রুমিকে একটু নীরব নীরব লাগছে। হাসলেও মনে হচ্ছে সে জোর করে হাসছে। মানিককেও কেমন যেন গম্ভীর দেখাচ্ছে। অনিক বিষয়টাকে এত পাত্তা দেয়নি। ঝালমুড়ি খাওয়ায় অংশগ্রহন করল আবার।
.
সন্ধ্যা হবে হবে করছে। কিন্তু এখনো পুরোপুরি হয়নি। সুর্যের লাল আভা নদীতে ছড়িয়ে পড়ায় পুরো নদীটাকে লাল নদী বলে মনে হচ্ছে। কি এক অপরুপ দৃশ্য। পাড়ে মানিকের বাবা তাদের নৌকার নোঙ্গর ফেলছে। মানিক, রুমি, এবং অনিক পাড়ের এক কোনে বসে আছে। ব্রীজে গুড়ুম গুড়ুম শব্দ হচ্ছে। তার মানে ট্রেন চলছে। মানিক তাকিয়ে আছে ঐ দিকে। রুমি মুচকি হেসে বলে
-- কি হল? ট্রেন দেখার ছেলেমানুষী এখনো গেলনা?
মানিক একটু লজ্জিত হয়। লজ্জা মাখা সুরে বলে
- না.. না... এমনিই দেখছি।
অনিক আর রুমি মানিকের লজ্জিত মুখ দেখে হাসতে শুরু করে। কিন্তু মানিক নির্বিকার ভাবেই বসে আছে। মানিকের নির্বিকার ভাব দেখে ওরাও আর কিছু বলেনা। ওরাও মানিকের সাথে তাল মিলিয়ে ব্রীজে চলতি ট্রেনের দিকে তাকায়। দেখতে দেখতে ট্রেন ব্রীজ পার হয়ে চলে গেল। তবুও ওরা ব্রীজের দিকে তাকিয়ে থাকে। এমন সময় রুমি বলে
- এই আজান পড়ছে। এখন বাসায় যেতে হবে।
অনিক রুমিকে সমর্থন করে বলে
-- হ্যা... রুমি আপু ঠিক বলেছে। দেরি হলে আম্মু বকা দিবে।
মানিক ওদের কথা মেনে নিয়ে বসা থেকে ওঠে। তখন একটু একটু অন্ধকার হয়ে এসেছে। অনিক আর রুমিকে সামনে রেখে তাদের থেকে অল্প একটু পেছনে হাঁটছে। পেছন থেকে মানিক রুমিকে দেখতে লাগল। মেয়েটাকে মানিকের কাছে ভালোই লাগে। একটু পথ সামনে এগিয়ে অনিক বলে
- রুমি আপু
-- হুম বল
- আজ বিকেলটা কেমন কাটল?
-- ভালোই।
- কাল আসবে আবার?
-- দেখি।
অনিক রুমির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল রুমি খুব একটা কথা বলতে চাইছেনা এখন। তাই অনিক রুমিকে আর বেশি কিছু বলেনা। পেছন ফিরে মানিকের দিকে তাকায় অনিক। মানিক রুমির দিকে তাকিয়ে হাঁটছে। অনিক এটুকু দেখে কিছু বুঝেনা। শুধু এটুকু বুঝতে পারে যে মানিক এবং রুমির মাঝে কিছু একটা হয়েছে। হাটতে হাটতে তারা বাসায় চলে আসে। রুমি রুমে গিয়ে খাটের উপর গিয়ে শুয়ে পড়ে। মানিকের মা রুমির কাছে এসে নাস্তা করবে কিনা জিজ্ঞেস করল। রুমি না বলাতে মানিকের মা বেশি জোর করেনা। কারন রুমি যেটা না বলে সেটা কখনো হ্যা হয়না। অনিক পড়তে বসেছে। মানিক উঠোনে এসে বসে। রুমির কথা গুলো বসে বসে ভাবছে। কিছু কথা এখনো বাকি আছে। পুরোটা শেষ করার আগেই তো অনিক চলে এসেছে। তাই রুমি পুরোটা বলতে পারেনি। কিন্তু যেটা এখনো বাকি আছে সেটা নিশ্চয় অনেক অপ্রিয়। যার কারনে রুমি বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। মানিক বসে বসে ভাবে কি এমন হতে পারে। কিন্তু সে ভেবে কিছুই পায়না। উঠোন থেকে উঠে মানিক মাঠে চলে যায়। আজকেও আকাশ কেমন মেঘলা মেঘলা। বৃষ্টিও হবে মনে হয়। থমথমে পরিবেশ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মানিক মাঠে বসে আছে। কোন এক অজানা কারনে মানিকের মন ভীষন খারাপ। কেন জানি রুমিকে বারবার দেখতে ইচ্ছে করে। রুমির সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে। তাই মাঠ থেকে উঠে আবার বাসায় চলে যায়। কিন্তু রুমি মানিকের সামনেও আর আসেনি। খাওয়ার সময় একবার দেখা হয়। কিন্তু কোন কথা হয়না। রুমি নিশ্চুপ ভাবে খেতে থাকে। মহিন মিয়া বলে
- মানিক আজ তো নৌকায় গেলিনা... তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বি আজ। যাতে কাল নৌকায় যেতে ভুল না হয়।
-- ঠিক আছে বাবা।
.
মানিক খাটে এসে শুয়ে পড়ে। কাল সকাল সকাল উঠে নৌকায় যেতে হবে। বিকেলের আগে আর রুমির সাথে দেখা হবেনা। এখন থেকেই একটা অস্থির ভাব প্রকাশ পায় তার নিজের ভেতরে। মানিক বুঝতে পারেনা কেন এমনটা হচ্ছে। তবে কি মানিক রুমিকে ভালোবেসে ফেলেছে। মানিক সে বিষয়টা এখন ভাবতে চায়না। আগে রুমির সমস্যাটা পুরোপুরি জানতে হবে। কেন সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে সেটা অন্তত আগে জানতে হবে। কাল নৌকায় যেতে ইচ্ছে করছেনা। কিন্তু যেতে তো হবেই। তার বাবা আর কত চালাবে। তাই যা করার কাল বিকেলে করতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতেই মানিক ঘুমিয়ে পড়ে।
.
(চলবে)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2288 (3)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:⧍ā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ