নদীর পাড়ের খেয়া নৌকা
পর্ব নং :- (২/১০)
লেখক :- বিবাগী শাকিল
=============================
.
সকাল বেলা অনিক আর রুমি কথা বলছে। একটু জোরেই কথা বলছে।অনিক কি একটা কথা বলায় রুমি অনেক জোরে হাসতে শুরু করে। হাসি সংক্রামক একটি জিনিস। একজন হাসলে তা দেখে অপর জনও হাসি শুরু করে। তাই অনিকও জোরে শব্দ করে হাসে। দুজনের হাসি মিশ্রিত হয়ে শব্দটা পিশাচের হাসির শব্দের মত হয়ে যায়। আর সেই হাসিতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় মানিকের। অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে তাই এত সকাল সকাল ঘুম ভাঙ্গায় খুব বিরক্ত হয়ে ধমকের সুরে বলে
- এই অনিক.... কি হইছে রে
অনিক চমকে উঠে। হাসিটাকে পুরোপুরি দমন করে বলে
-- কিছুনা ভাইয়া।
- কিছু না হলে এত জোরে হাসছিস কেন? দেখছিস না ঘুমাচ্ছি।
-- ভাইয়া আমি না তো। আমরা দুজনেই হাসছি।
- কে কে?
-- আমি আর রুমি আপু।
- সে যেই হোক। এখন থেকে আর একটা হাসি বা কথার শব্দ শুনেছি তো দেখিস কি করি।
.
কথাটা শুনে অনিক আর রুমি চুপ হয়ে যায়। রুমি একটু বেশিই চুপ হয়ে যায়। কিছুটা মন খারাপ হয়ে যায় তার। আর কোন শব্দ করেনা। তা দেখে অনিকেরও মন খারাপ হয়ে যায়। অনিক বলে
- রুমি আপু....
-- কি বল
- তোমার মন খারাপ কেন?
-- কে বলেছে তোমায় আমার মন খারাপ।
- দেখতেই পাচ্ছি আমি।
-- না কিছু না।
- আমি জানি..... ভাইয়া এরকম করে আচরন করার জন্য তুমি কষ্ট পেয়েছ তাইনা?
-- না না.... একেকজন মানুষ একেক রকম। তাই কোন অপরিচিত পরিবেশে আসলে সবারই এটা হয়।
অনিক চুপ করে থাকে। রুমিও চুপ হয়ে যায়। কেউ কোন কথা বলছেনা। কিছুক্ষন চুপ থেকে অনিক আবার বলে
- ভাইয়া কিন্তু এখনো অনেক ছেলেমানুষের মত আচরন করে।
রুমি একটু হেসে ফেলে। তারপর বলে
-- কি কি করে শুনি।
- ব্রীজের উপর দিয়ে ট্রেন গেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।
-- হাহাহাহা... তাই নাকি?
- হ্যা.... ভাইয়া এমনিতে সহজ সরল।
-- ও আচ্ছা।
- ঘুমের মানুষ তো তাই একটু আঘাত করে কথা বলে ফেলেছে। তুমি কিছু মনে করোনা আপু?
-- না সত্যি... আমি কিছু মনে করিনি। এটা স্বাভাবিক।
- চল বাইরে যাই।
-- যাবে?? চল তাহলে।
.
মানিক অনেক বেলা করে ঘুম থেকে ওঠে। ঘুম আগেই ভেঙ্গেছে। কিন্তু তারপরেও বিছানা থেকে উঠতে মন চাচ্ছেনা। তাই এতক্ষন জাগ্রত অবস্থায়ই শুয়েছিল। কিন্তু এখন আর শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছেনা। তাই বিছানা থেকে নেমে হাতমুখ ধোয়। হাতমুখ ধুয়ে এসে নাস্তা করার জন্য তার মাকে ডাক দেয়
- মা
-- কি হয়েছে
- নাস্তা দাও
-- শোন আমি একটু কাজ করছি। তুই রুমিকে বল।
- তুমি দিবা কিনা বল? আমি তোমার কাছে চেয়েছি।
-- আমি কাজ করছি তো বাবা।
- ঠিক আছে নাস্তাই করবনা।
উঠোন থেকে রুমি আর অনিক কথাগুলো শুনে ফেলে। তারা দুজনে চুপিচুপি ঘরে আসে। মানিক টেবিল থেকে যেই উঠবে তখন রুমি এসে মানিককে বলে
-- আপনি বসুন... আমি এনে দিচ্ছি।
বলেই রুমি নাস্তা আনতে চলে যায় রান্নাঘরে। মানিক প্রচন্ড রকমের আশ্চর্য্য হয়ে যায়। এটা তো রুমকি। যার সাথে গতকাল বিকালে নৌকায় কথা হয়েছিল। তবে কি রুমকিই রুমি?? মিতু খালার মেয়ে?? মনে মনে মানিক খুব খুশি হয়। রুমি এসে টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে রাখে আর মুচকি মুচকি হাসছে। মানিক বলে
- আপনি রুমকি না?
-- হ্যা... আমিই রুমকি।
- অনিক যে বলল আপনার নাম রুমি।
-- ঐ হল... রুমকি থেকে রুমি। আপনাকে তো কাল বললামই। কেউ রুমকি ডাকে কেউ রুমি ডাকে।
- আপনি কালকে বলতে তো পারতেন যে আপনি আমাদের বাসায়ই আসবেন।
-- আমি কি জানি আপনি সামিনা খালার ছেলে। আমি অনিককে চিনি। তাও অনেক আগে অনিক খালার সাথে আমাদের বাসায় গিয়েছিল তাই চিনি। আপনাকে তো দেখিনি আর আপনি আমাদের বাসায় কখনো যান নি তাই চিনতে পারিনি।
- আমি আরো আপনাকে না চিনে আপনার থেকে ভাড়া নিয়ে ফেলেছি। আগে জানলে তো ভাড়া নিতাম না। বাড়িতে নিয়ে আসতাম।
-- না না... ঠিক আছে। আপনি নাস্তা করেন। আর এত বেলা করে ঘুম থেকে উঠলেন যে?
- রাতে ঘুমাতে দেরি হয়ে গিয়েছিল তাই একটু লেট হয়ে গেছে।
-- ও.... লেট করে ঘুমালেন কেন?
- জানিনা কালই এ ব্যতিক্রমটা ঘটেছে। ও আচ্ছা ভালো কথা... আপনি তো আগে কখনোই আমাদের বাড়িতে আসেননি। চিনেছেন কিভাবে?
-- পথে আসতে আসতে মানুষকে খালুর কথা বলেছি। ওরাই আমাকে দেখিয়ে দিয়েছে।
- ও....
দুজনে এরপর নিশ্চুপ হয়ে যায়। মানিক বাসা থেকে বের হয়। তার বাবা আজ নৌকা একাই চালাচ্ছে। আজ তার আর নৌকায় যেতে ইচ্ছে করছেনা। আমতলা বাজারে যায়। কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু ওখানেও ভাল লাগছেনা। কেন জানি মনটা বাড়িতেই পড়ে আছে। রুমির কথা বারবার মনে হচ্ছে। তাই বেশি দেরি না করে বাসায় চলে যায়।
.
দুপুরে মানিক গোসল করে উঠোনে এসে বসে। দেখে রুমি উঠোনের এক কোনে বসে আছে। চুলগুলো এখনো ভেজা। মেয়েদের চুল শুকাতে একটু দেরিই হয় তাই হয়ত এখনো ভেজা। কিন্তু মুখটা এমন বিষন্ন কেন? কিছু একটা নিশ্চিত হয়েছে। তা না হলে মানিকের বাবা-মাকে জানিয়ে আসত রুমি। কিন্তু মানিকের বাবা-মাও রুমি আসার কথা আগে থেকে জানতনা। আর রুমি কাউকে তেমন কিছু বুঝতেও দিচ্ছেনা। সবার সাথেই স্বাভাবিক ভাবে আচরন করছে। কিন্তু এখন রুমি কেমন যেন চুপসে আছে। রুমির এই চিন্তিত চেহারাটা মানিকের কাছে অচেনা মনে হল। মানিক রুমির কাছে যায়।
- রুমি
রুমি আচমকা মানিকের কথা শুনে হকচকিয়ে ওঠে। মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করল। কিন্তু শাক দিয়ে কি আর মাছ ঢাকা যায়!!!! রিমির মুখ থেকে সেই বিষন্ন ছাপ উবে যায়নি। মানিকের দিকে তাকিয়ে বলল
-- জি বলুন
- কি হয়েছে? মন খারাপ কেন?
-- কই মন খারাপ।
- মনে হচ্ছে। কিছু হয়েছে?
-- না।
- কিছু হলে বলবেন।
-- আচ্ছা বলব।
- আসেন ঘরে আসেন। আম্মু ডাকছে। খাওয়া দাওয়া করার সময় হয়ে গেছে।
-- আচ্ছা আসছি।
মানিক ঘরের ভেতরে চলে আসে। তার পিছে পিছে রুমিও আসে। মানিক,অনিক,রুমি এবং মানিকের মা একসাথে খেতে বসে। মানিকের খেয়াল রুমির প্রতি। রুমির প্রত্যেকটা কথায়, কাজে,ভাবে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে কিছু একটা হয়েছে। এমন সময় মানিকের মা রুমিকে জিজ্ঞেস করে
- এই রুমি, এখানে আসবি যে বলে এসেছিস?
রুমি প্রশ্নটা শুনে একটু ঘাবড়ে যায়। তারপর চিন্তিত মুখে বলে
-- হ্যা বলে এসেছি।
- তাহলে তোর মা চিন্তা করবেনা তুই ঠিক মত পৌঁছেছিস কিনা এসব নিয়ে? বিকেলে ফোন করে কথা বলিস।
-- আচ্ছা বলব।
শেষ কথাটা বলতে মনে হয় রুমির কষ্ট হল। এমন কিছু একটা হয়েছে যার কারনে রুমি তার বাড়ির কথা তুলতে চাইছেনা। বাড়ির ব্যাপারে কথা বলতেও চায়না। ব্যাপারটা খেয়াল করে মানিক। নাকি রুমি না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। বিষয়টা খটকা লাগছে মানিকের। রুমিকে পরে জিজ্ঞেস করবে ভেবে আবার খেতে শুরু করে।
.
বিকেল বেলা রুমি আর মানিক কথা বলছে। রুমির কথা বলার ভাবভঙ্গি দেখে স্পষ্টা বুঝে গেছে যে রুমি যে কোন কিছু একটা করে এসেছে। মানিক বলে
- রুমি
-- হ্যা বলেন।
- বাড়িতে ভাল লাগছে?
-- হ্যা লাগছে।
- নদীর পাড়ে ঘুরতে যাবেন?
-- হুম..... এখন?
- হ্যা....
-- অনিক কই। সে গেলেও ভাল হত।
- অনিক বোধ হয় বাইরে গেছে।
বলতেই অনিক বাড়িতে এসে ঢুকে। মানিক আর রুমি খুশিই হয় অনিককে দেখে।
- কিরে অনিক কোথায় গিয়েছিলি?
-- এইতো ভাইয়া... বাইরে গিয়েছিলাম।
- নদীর পাড়ে যাবি?
-- হ্যা যাব.... দাড়াও হাতমুখ ধুয়ে আসি।
.
নদীর পাড়ে হাঁটছে মানিক,অনিক আর রুমি। রুমি আর অনিক মজা করছে অনেক। অনিক ক্লাশ সেভেনে পড়ে। রুমির বয়স যেহেতু ষোল হবে সেহেতু নিশ্চয় এতদিনে মাধ্যমিক পাশ করে ফেলেছে। কিন্তু ওরা দুজনে অনেক ফ্রেন্ডলি আচরন করছে। মানিকের তা দেখে অনেক ভালো লাগে।মানিক ভাবছে কিভাবে রুমির সাথে একটু একাকি কথা বলা যায়। এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে
- অনিক
-- বল ভাইয়া।
- যা তো... এই বিশ টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি নিয়ে আয়।
-- কোথায় পাব ঝালমুড়ি।
- ব্রীজের নিচে আছে। সবসময় থাকে।
-- কিন্তু ব্রীজ এখান থেকে তো দুরে।
- যা না একটু কষ্ট করে ভাই।
-- আচ্ছা যাচ্ছি।
বলেই অনিক বিশ টাকা নিয়ে ঝালমুড়ি আনতে চলে যায়। মানিক ভাবল এইটাই মোক্ষম সুযোগ। এখনই জিজ্ঞেস করতে হবে।রুমির দিকে তাকিয়ে দেখে রুমি অন্যদিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে আছে। হয়ত কিছুটা বিব্রত হচ্ছে।কিন্তু রুমিকে জিজ্ঞেস করার এই মোক্ষম সুযোগটা হাতছাড়া করতে চায়না মানিক। তাই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে এখনই জিজ্ঞেস করবে।তাই কিভাবে জিজ্ঞেস করবে সেটা মনে মনে ভেবে নিজেকে প্রস্তুত করে।
.
(চলবে)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2288 (2)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:⧍ā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ