আকাশের রং কালো
লেখক :- বিবাগী শাকিল
==================
.
আকাশের রংটা ঘন কালো। অনেক বেশি কালো। কালো আকাশে হাজার হাজার তারা স্পষ্ট দেখা যায়। একসময় এখানে আকাশটা নীল ছিল। আর এখন সেই আকাশের নীল রং এর উপর কালো রং এর প্রলেপ দেয়া হয়েছে। কেন?
.
বেশিক্ষণ ডুব দিয়ে পানিতে থাকতে পারিনা। কিন্তু ভালোবাসার সাগরে ডুব দিয়ে দুবছর থেকেছি। এই দুবছরের অভিজ্ঞতানুযায়ী এটা বলতে পারি যে এই সাগর আমার জন্য না অথবা আমি এই সাগরের জন্য না। যবে থেকে এই সাগরে আমি ডুব দিয়েছি তবে থেকেই ঝড়, জলোচ্ছ্বাস,সাইক্লোন লেগেই আছে। যেন আমাকে উগলে ফেলার চেষ্টা করছে। আমিও অনেক চেষ্টা করেছি এই সাগরটাকে শান্ত রাখার জন্য। কিন্তু ব্যর্থ হলাম। তাই বাধ্য হয়ে এই সাগর থেকে আমি উঠে যাই। পাড়ে দাড়িয়ে সাগরটাকে দেখি। খুব শান্ত। সময়ানুযায়ী নিয়মিত জোয়ার ভাটা হয়। কিন্তু খুব বেশিদিনের জন্য নয়। আবার সেটা অশান্ত হয়ে যায়। কিন্তু বুঝতে পারি এখনকার এই অস্থিরতার মানে কি। কিন্তু আমার কিছু করার নেই। মাটিতে ফেলে দেয়া থুথু কেউ আবার মুখে টেনে নেয়না।
.
ব্রেকাপ ডে। অপ্রত্যাশিত দিন আমার জন্য। কল্পনার বাইরে রাখতাম এই বিষয়টাকে। কিন্তু এই বিষয়টা যে বাস্তবে চলে আসবে জানা ছিল না। অনেকবার জোর করে হোক বা ব্ল্যাকমেইল করে হোক, তাকে আটকে রেখেছিলাম। কিন্তু যে চলে যেতে চায় তাকে আঁকড়ে ধরে রাখব আর কতকাল। এমন একটা কথা শুনলাম যে, আমার মুখে আর কিছুই বলার মত থাকলনা।
.
দুটিবছর একটা রাস্তা দিয়েই একসাথে হেঁটে এসেছিলাম দুজন। এখন এই রাস্তাটা দুইভাগে বিভক্ত। যার একটা উত্তর দিকে সোজা অন্ধকার জগতে বয়ে গেছে। আরেকটা দক্ষিণ দিকে সোজা আলোর জগতে বয়ে গেছে। আমাকে উত্তর দিকে যেতে হবে। আর ও যাবে দক্ষিণ দিকে।
- শোন
-- হুম বল। এখনই যা বলার বল। আর সময় নেই।
- আমি জানি সময় নেই। তাই কিছু বলব না। শুধু শেষবারের মত একবার জড়িয়ে ধরতে চাই।
-- ঠিক আছে। বিদায় লগ্নে তোমায় কষ্ট দিতে চাইনা।
ওকে ঝাপটে ধরলাম। মনে হচ্ছে যেন এই প্রথমবার ধরছি। নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলেছি। ও ধরেনি। না ধরুক। আমি ধরেছি এতেই চলবে।
-- হয়ে গেছে।
আমি কিছু না বলে ওকে ছাড়লাম। আমাদের হাতটা ওর ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। আমি দেখলাম ও অনায়াসে বাঁধনটা খুলছে। আমি খুলিনি। বাঁধনটা খুলে দিয়ে বলল
--I m sorry.. আমায় ক্ষমা করে দিও।
- তুমি কেন ক্ষমা চাচ্ছ। আমি তো তোমায় কখনো সুখী রাখতে পারিনি। ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিত।
-- আচ্ছা যাই হোক। আমি গেলাম ভালো থেকো।
বলেই সে চলে যাচ্ছে। ধীর পায়ে হাঁটছে। খুশি হয়েছিলাম অনেক। ভেবেছিলাম আমার ডাক শোনার জন্য ধীর পায়ে হাঁটছে। ডাক দিতে যাব এমন সময় আমার বিবেক আমার সামনে এসে দাড়াল। বলল
- কেন ডাক দিবি তুই?
-- আমি ডাক দেব। তোর কোন সমস্যা।
- আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যাকে ডাক দিবি তার সমস্যা। তোকে কি বলেছে ভুলে গেছিস।
চুপ হয়ে গেলাম। আর ডাকিনি। একবারো পিছন ফিরে তাকাচ্ছেনা। ওর কথা আমি ভুলিনি বলেই আর ডাক দিতে পারিনি। অন্ধকার রাস্তা। কিছু দেখছিনা। বারবার হোঁচট খাচ্ছি। কয়েকবার পড়েও গেছি। দক্ষিণ দিকে তাকালাম। ও ধীর পায়েই হেঁটে যাচ্ছে। তার রাস্তায় অনেক আলো। যার জন্য সে একবারও হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়নি। আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। খুব আশা করছি যে একবারের জন্যে হলেও সে পিছন ফিরে তাকাবে। তাকায়নি। হতাশা এসে ঘিরে ধরল চারিদিকে। ওর দিকে আর না তাকিয়ে সামনে হাঁটা শুরু করলাম। মনে পড়তে থাকল ওর সাথে কাটানো দিনগুলোর কথা। পাগলের মত ভালোবাসতাম তাকে। একবার তার উপরে আমার খুব রাগ উঠে। সেই রাগের বশবর্তী হয়ে আমি তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করি। বিপদে ফেলে দিয়েছিই। কিন্তু মাথা ঠান্ডা হবার পর আমি আমার ভুল বুঝতে পারি। এবং সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করি। তাকে বিপদে যত সহজে ফেলেছি বিপদ থেকে উদ্ধার করতে তার চেয়েও বেশি কঠিন হয়ে যায় আমার জন্য। শেষমেষ ওকে বিপদ থেকে উদ্ধার করি।
.
পা গুলো অবশ হয়ে যাচ্ছে। আর হাঁটতে পারছিনা। এমনিতেই চোখে কিছু দেখছিনা তার উপর অমাবস্যার রাত। আকাশের দিকে তাকালাম। ঘন কালো রঙে ছেয়ে গেছে নীল আকাশটা। তারাগুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। মনে পড়ে গেল আরেকদিন এর কথা। আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি রোমান্টিক দিন। ওকে নিজ হাতে শাড়ি পরিয়েছিলাম। আমি পারতাম না কিভাবে শাড়ি পরায়। ও এসে আমার হাতে একটা শাড়ী দিয়ে বলে
-- শাড়ীটা পরিয়ে দাও।
- আমি? পারিনা তো।
-- আল্লাহ.... তুমি শাড়ী পরাতে পারোনা?
- না। তবে একটা উপায় আছে।
-- কি সেটা?
- ইউটিউব। ভিডিও দেখে শিখব।
-- ভালো তো। দেখ এখন।
আমি ইউটিউবে ঢুকে লিখি How to wear a saree... ব্যাস, ভিডিও চলে আসলো। আমি প্লে করলাম। যখনই ভিডিও তে ওদের খোলা পেট দেখা যাচ্ছে তখন ও আমার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। আর বলে
-- মেয়েদের খোলা পেট দেখার খুব শখ তাইনা?
- আজব তো... আমি কি এরকম?
-- এরকম না হলে তো এভাবে ভিডিওটা দেখতেনা।
- ভিডিওতে খারাপ কি আছে। শাড়ি কিভাবে পরায় সেটা শিখে তোমাকে এক্ষুণি পরিয়ে দিতাম।
-- তার আর দরকার নেই।
- কেন? তুমি কি নিজে নিজে শাড়ি পরবা?
-- না। তুমি পরিয়ে দিবা।
- বললাম না পারিনা।
-- আমি শিখিয়ে দেব।
- ঠিক আছে।
-- এখন চোখ বন্ধ কর।
- কেন?
-- শাড়ি পরানোর সময় চোখ খোলা রাখা চলবেনা।
এই বলে সে তার ওড়না দিয়ে আমার চোখ বাঁধল। আর আমার হাত দিয়ে নিজে নিজে শাড়ি পরতে থাকে। দু মিনিট যাওয়ার পর বাঁধনটা খুলল আর বলল
-- শাড়ী পরানো হয়ে গেছে তবে একটা কাজ বাকি আছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম
- কি?
-- আঁচলটা তুলে মাথায় ঘোমটা পরিয়ে দাও।
আমি আঁচলটা তুলে ওর মাথায় ঘোমটা পরিয়ে দিলাম। খুব সুন্দর লাগছিল ওকে। ও আমার চোখের দিকে তাকাতে পারেনি। সোজা আমার বুকে এসে আছড়ে পড়ল।
.
হ্যাঁ.... আছড়ে পড়ল। তবে সে না। তার দেয়া কষ্টগুলো এসে আমার বুকে আছড়ে পড়ল। কয়েকদিন আগে সে পড়েছিল আজ তার দেয়া কষ্ট পড়ল। বুকটা ডাস্টবিনের মত হয়ে গেল। শুধু ওর প্রাইভেট ডাস্টবিন। সে যখন খুশি যা তা আমার বুকে আছড়ে ফেলে দিত। আর আমি তা সংরক্ষণ করে রাখতাম। সবকিছুই রেখেছিলাম। আজ তার দেয়া কষ্ট গুলো আগলে ধরে পথ চলছি। কত পথ হেঁটেছি জানিনা। পা গুলো যেন আর চলেনা। ওর পথের দিকে তাকালাম। ওকে আর দেখা যাচ্ছেনা। মনে হয়ে অনেক দুরে চলে গেছে। ওর রাস্তাটা তো অনেক লম্বা। আমার টা অত লম্বা না। জানিনা এই পথের শেষে কি আছে। কারো পায়ের শব্দ শুনে চমকে উঠলাম। ভয়ও পেলাম। অন্ধকারে কাউকে দেখছিনা। কিন্তু শব্দ শুনে মন হল কেউ দৌড়ে আসছে। আমি পেছন ফিরলাম। দেখলাম ছোট একটা আলো দ্রুত গতিতে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি আরো বেশি ঘাবড়ে গেলাম। আরো কিছু সময় কাটার পর দেখলাম আলোটা আর কেউ নয়। আমার উনি স্বয়ং নিজেই দৌড়ে আসছে। আসতে আসতে আমার নিকটে চলে এলো। কিন্তু একি? কি অবস্থা হয়েছে ওর চেহারার। চুল এলোমেলো, চোখে পানি, শাড়ির কয়েকজায়গায় ছিঁড়ে আছে। কেমন যেন ময়লাটে হয়ে গেছে শাড়িটা। হাঁপাতে থাকে। এমন ভাবে হাঁপাচ্ছে যে তার মুখ দিয়ে কথাও বের হতে চাইছেনা। তারপরেও অনেক কষ্ট করে ও বলল
-- আমি পারবনা তোমায় ছাড়া থাকতে। যখন তোমায় ছেড়ে আমি আমার রাস্তায় হাঁটা শুরু করেছি তখনও এত কষ্ট লাগেনি। এখন কেন এমন কষ্ট হচ্ছে। এই অল্প সময়ের দুজনের আলাদা হাঁটা আমাকে জীবনের চরম শিক্ষা দিয়ে গেছে। কারো সাথে কারো অকারনে পরিচয় হয়না। এর পেছনে একটা কারন থাকে। হয় মানুষটা তার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে না হয় তার জীবনে শিক্ষা হিসেবে আসে। তেমনি তোমার সাথে আমার অকারনে পরিচয় ঘটেনি। তুমি আমার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছ। আমি আশীর্বাদের অবমাননা করতে চাইনা। আর সে জন্যেই আমি ছুটে আসি তোমার কাছে। কিন্তু তোমার রাস্তাটা অনেক অন্ধকার। দুরের কিছু দেখা যায়না। কয়েকবার পড়েও গিয়েছি। তাই এই শাড়িটা ছিঁড়ে গেছে। দেখ, ভালো করে দেখ, তুমিই পরিয়ে দিয়েছিলে এই শাড়িটা। এই শাড়িটা আবার তোমার হাতে আমার গায়ে জড়াতে চায়। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও। তোমার পথে আমি আর তুমি একসাথে চলব। চলনা দুজন একসাথে পথ চলি।
.
আমি ওর কথা শুনে একগালে হেসে উঠি। মুখে কিছু বলতে পারবনা মনে হয়। বলেছিলাম না, ভালোবাসার সাগরে ডুব দিয়ে অনেকক্ষণ থাকতে পারি। কিন্তু সাগরটা তো আমাকে উগলে ফেলে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। চেষ্টা সফলের উদ্দেশ্যে আমি নিজেই সাগর থেকে উঠে সাগরের পাড়ে গিয়ে দাড়াই। দেখতে থাকি সাগরটা কিভাবে থাকে। কিছুটা সময় সাগরটা স্বাভাবিক ছিল। পরে আর স্বাভাবিক থাকতে পারলনা। আবার সেই পুরনো অস্থিরতা। কিন্তু এবারের অস্থিরতার উদ্দেশ্য ভিন্ন। আমাকে ফিরে পাবার জন্য এই অস্থিরতা। সেও আমাকে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা সময় নিজের রাস্তায় হাঁটে। তারপর কি মনে করে আমার কাছে ফিরে আসল আমি জানিনা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। তার এখনকার অস্থিরতাকে আমি গুরুত্ব দিই নি। শুধু ওকে বললাম
- এতক্ষণ অন্ধকার ছিল তাই কিছু দেখা যায়নি। এখন তোমার হালকা আলোয় আলোকিত হয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দেখ, আমার পিছনে কি দেখা যাচ্ছে দেখ।
ও আমার কথা শুনে আমার পিছন দিকে তাকায়। দেখে যে রাস্তাটা শেষ। সেখানে একটি সাইনবোর্ডে লিখা আছে [ The way is end ]। সেও চমকে যায় আর আমিও রাস্তায় ঢলে পড়ি। হাত থেকে শূণ্য বিষের কৌটোটা পড়ে ভেঙ্গে যায়। আর সাথে সাথে আমিও। সে দৌড়ে এসে আমার মাথাটা তার কোলে নেয়। কান্নার জন্য কথা বলতে পারছেনা। কাঁদতে কাঁদতে বলে
-- কেন এমনটা করলে তুমি?
- যেমনটা তোমার ইচ্ছে ছিল। তোমার রাস্তাটা অনেক লম্বা ছিল আর আমারটা একদম ছোট। রাস্তাটা শেষ তাই এমনটা হয়েছে।
-- আমি তো তোমাকে অনেক ভালো বাসি।
আমি কিছু না বলে ওর দিকে হাত বাড়াই। ও আমার হাত ধরে। আমি ওর আঙ্গুল দিয়ে আকাশের দিকে ইশারা করে বললাম
- এখানে আকাশ নীল ছিল। গাঢ় নীল ছিল। আর এখন আকাশের রং কালো। ঘন কালো। ভীষণ কালো। সেটাকে আর নীল করা যাবেনা। তাই নিকষ কালো ঐ আকাশে আমি মিশে গেলাম। তুমি আলোর পথে থেকো। আমি আছি তোমার পাশে পাশে। ছায়া হয়ে থাকব। একদম চিন্তা করোনা।
ও আমার কথা শুনে আকাশের দিকে তাকায়। সেও বুঝতে পারে আকাশের রং কালো। ঘন কালো। যাকে কোন দিনও নীলিমায় নীলিমিত করা যাবেনা। ( সমাপ্ত )।
.
.
.
লেখক :- বিবাগী শাকিল
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ē āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2287
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:ā§¨ā§Š AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ