অতঃপর বিড়াল মারা
Ahmed Shimul
~
বিয়ের কয়েকমাস কেটে গেল কিন্তু আমার বিড়াল মারা হলো না।আসলে সম্ভব হয়নি কিছুসংখ্যক কারণে।নীলার সথে আমার বিয়ে হয়েছে পারিবারিকভাবেই।যদিও এই বিয়েতে আমার কিংবা নীলার কারো মত ছিলোনা।আমরা দুজন যে দুই পৃথিবীর মানুষ তা বাসর রাতেই টের পেয়েছিলাম।এক একজনের এক একরকম পছন্দ।যদিও এটা একসাথে, একঘরে,এক বিছানায় যায়না তবুও আমরা চালিয়ে নিচ্ছিলাম।আসলে দুজনের ভিন্নতার কারনেই এমন একটা গুমোট পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।নীলা যেটা হ্যা বলে আমি সেটা না বলি।আমরা কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ।কিন্তু একসাথে চলতে গেলে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত।আমার আর নীলার মাঝে এসবের কোনো ছিটেফোঁটাও নেই।শুনেছি স্বামীস্ত্রী ঘুমায় দুজন দুজনের দিকে মুখ করে।কিন্তু আমি আর নীলা ঘুমাই উল্টোদিকে।একটা অদ্ভুত বিষয় এইযে,এখন পর্যন্ত আমি নীলাকে ছুয়ে দেখিনি।নীলা নিজেও আমার কাছে ঘেষেনা।অসহ্য লাগে আমার নীলাকে।অপছন্দের মানুষের সাথে ঘুমানোর যে কি যন্ত্রনা তা আমি ছাড়া আর কে বোঝে?সবকিছুতেই মেয়েটার বারাবারি।
বাসায় এসে খাবারটা পাই শুধু মায়ের জন্য।মা মরে গেলে ছেলেটাও না খেয়ে মরবে।এখন পর্যন্ত নীলার সাথে এক টেবিলে বসে খেতে পারিনি।মেয়েটা আমার চোখের সামনে আসেই না।আমি টিভি দেখলে ও রুমে থাকেনা আর নীলা টিভি দেখলে আমি রুমে থাকিনা।নীলার প্রতি আমার মায়া দয়া কিছুই হয়না।একটা মানুষ যদি কারও সাথে অনেকদিন থাকে তবে তার প্রতি আপনা-আপনি মায়া চলে আসে।নীলা এমন একটা মেয়ে যার প্রতি আমার মায়া তো দুরের কথা একটু সেনসিটিভ কিছুও কাজ করেনা অথচ আমরা কিন্তু স্বামীস্ত্রী।
ইতিমধ্যে আমার বড় আপু বিষয়টা লক্ষ্য করেছে।দুদিন হলো ঘুরতে আসছে অথচ আমার আর নীলার ব্যাপারটা ওর কাছে ক্লিয়ার হয়ে গেছে।কয়েকদিন হলো ও নীলার সাথে কি যেন কথা বলে।আমি যেহেতু নীলার সাথে কথা বলিনা তাই জানার উপায় নেই কি বলে।এদিকে আপু বয়সে আমার চেয়ে বড় হওয়ায় তাকেও বলতে পারিনা আমার বউয়ের সাথে তোমার এত কিসের কথা!হায় হায়!আমি তো নীলাকে বউ ডেকে ফেলছি।তার মানে কি আমি নীলাকে ধীরে ধীরে মেনে নিচ্ছি?তাহলে কি নীলার প্রতি আমার মায়া জন্মাচ্ছে?নীলা কি আমার কাছে মূল্যবান কিছু হতে যাচ্ছে?
না না না...এরকম মেয়েকে আমি ভালোবাসতে পারবনা যে সবসময় অ্যাটিটিউড নিয়ে থাকে।যার কাছে স্বামীর কোনো মূল্য নেই তার মূল্য আমার কাছেও নেই।
আচ্ছা আমি যে নীলাকে নিয়ে এসব ভাবি, নীলাও কি আমাকে নিয়ে এসব ভাবে?নাকি ও আমার ব্যাপারটা মাথায়ই আনেনা?আচ্ছা আমি কি ছ্যাঁচড়া নাকি যে আগে আগে সব কল্পনা করি?এমন বেহুদাও কি পৃথিবীতে আছে?
আসলে কলেজের প্রফেসররা একটু বেহুদা টাইপেরই হয়।এরা সবসময় পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।নীলার তো কোনো কাজ নেই!বাসায় বসে বসে সারাদিন আমার সেলফ থেকে বই পড়া ছাড়া আর কোনো কাজ করে বলে আমার মনে হয়না।গোসল আর খাওয়া না হলে শরীর নষ্ট হবে তাই মনে হয় ও কাজগুলো কাজ করে,দায়ে পড়া যাকে বলে আর কি!
আচ্ছা!সাহিত্যের শিক্ষকরা তো অনেক রোমান্টিক হয়।আমি কেন রোমান্টিক না?আমি সেই ইউনিভার্সিটি থেকে সাহিত্য পড়ছি অথচ একটু রোমান্টিক হতে পারলাম না।ব্যর্থতা.... সবই ব্যর্থতা....।ইংরেজি সাহিত্যে কি কম রস আছে?এই রসে আমি ভিজতে পারলাম না কেন?
আপু রাতে আমাকে ডেকে পাঠালো।ড্রয়িংরুমে বসে সবার সাথে আলাপচারীতায় মগ্ন হতে হলো।যদিও আমার ভালো লাগছিলনা তবুও জোড় করেই ভালো লাগাতে হচ্ছিল।
শিমুল-
-তোদের বিয়ে হলো প্রায় তিন মাস কিন্তু তোরা দুজনে মিলে এখনও মধুচন্দ্রিমা সারতে পারলিনা।ভেবেছিলাম বিয়ের পর তোরা দুজনে মিলেই প্লান করবি। কিন্তু সবই তো বুঝলাম।নীলার সাথে আমার কথা হয়েছে এই ব্যাপারে।(এতক্ষণে বুঝলাম যে এরা দুজনে কি কথা বলছে।তলে তলে নীলা এত শয়তান?)নীলার ইচ্ছা অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার।তুই কি বলিস?
-অস্ট্রেলিয়া! সে তো বিলেত!না না....আমি এত বড় লং জার্নি করতে পারবনা।
-তোকে অস্ট্রেলিয়াতেই যাইতে হবে।নীলা যা বলছে তাই হবে।
কি আর করার!নীলার ইচ্ছাই পূরন হলো।আর আমাকে যেতে হলো অস্ট্রেলিয়াতে।হানিমুনে যাবে তাই কত কেনাকাটা!প্রতিদিন আপুর সাথে নীলা শপিং করতে যায়।আমি মাস্টার মশাই কোনো শপিং করতে পারলাম না।ক্লাস থাকায় সময় হয়ে উঠলোনা।এদিকে পাসপোর্ট অফিস থেকে ফোন করে বলল স্যার কাজ শেষ।আপনাদের দুজনের স্বাক্ষর লাগেবে।মাঝে মাঝে ভাবি নিরক্ষর হলে এসব ঝামেলা পোহাতে হতো না।সারাদিন বসে বসে সাহিত্যপাঠ করতে দিলে আমি তাই করতাম।কেন যেন ডুবে যাই এর মাঝে।কিছু কিছু রোমান্টিক কবি আর প্রোজ রাইটার তো আমাকে মুগ্ধ করে দেয় প্রতিদিন।গত সপ্তাহে আমার ফ্রেন্ডের এক বস্তা বই মেরে দিছি।
অস্ট্রেলিয়া গেলাম ইমিরেটস ফ্লাইটে।নীলার মাঝে কোনো এক্সাইটমেন্ট নাই।দুই দফায় জার্নি শেষে আমরা পৌঁছলাম ক্যানবেরাতে।অনলাইনে হোটেল বুক করে রেখেছিলাম।প্রথম রাতে কোনো কথাই হলো না নীলার সাথে।পরেরদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি পাশেই একটা কাগজ পরে আছে।কৌতুহল বসত বের করে পড়তে লাগলাম।
এই প্রফেসর সাহেব-তারাতারি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিন।
আমি তো রীতিমতো অবাক।নীলা আমাকে চিরকুট দিছে।
সে যাই হোক।একটু আরাম করে পা ছড়িয়ে সাপের মত মোচড়াচ্ছি। এমন সময় একটা মেয়ে আসলো সামনে।
ভেজা চুলগুলো টাওয়াল দিয়ে মুছতে মুছতে সোজা আমার বেডরুমে।পড়নে তার হলুদ শাড়ি। হাত উচু করে চুল মোছাতে তার আপেলের মত কোমড় আর পেট দেখতে পাচ্ছি আমি।মেরুদণ্ডের নিচ জায়গাটা বেশ সুন্দর।পিঠ থেকে কোমড় পর্যন্ত এক পলকে দেখলাম।
ছিঃ ছিঃ মাস্টার মশাই!তুমি এত খারাপ!মেয়েদের দিকে এমন করে কেউ তাকায়!নিজেই নিজেকে খারাপ বলছি!আসলেই আমি বেহুদা!নিজের বউকে দেখলে আবার খারাপ হয় নাকি?
হ্যা,এটা আমার বউ নীলা।তারপর মেয়েটা ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসে চুল শুকাচ্ছে ড্রায়ার দিয়ে।ভুমমমমমম.......একটুপর চিরুনি করে নিল চুল।ইচ্ছে করছে ওর চুলগুলো আচড়ে দিতে।এই প্রথম নীলার প্রতি আমার মুগ্ধতা আর আকর্ষণ কাজ কারছে।চোখে কাজল দিচ্ছে নীলা আর আমি হা করে দেখছি।ঠেটে লিপস্টিক দিল কিন্তু ঠোট লাল হলোনা।আমার ছাত্রীগুলো লাল করে লিপস্টিক নেয়।কিন্তু আমার বউ নেয়না।কপালে ছোট্ট একটা টিপ নিয়ে আস্তে করে ঘোমটা দিয়ে নিজেকে দেখছে নীলা।আমি বেহুদা সাহেব মুগ্ধ নয়নে দেখছি।
কি প্রফেসর সাহেব!শুয়েই থাকবেন নাকি ফ্রেশ হতে যাবেন?
হা..........
নীলা আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক!আমি কি ভাগ্যবান!
কিছু বলতে পারলাম না নীলাকে।মুখে আটকে গেল সব।আসলে ওর সাথে কথা বলে অভ্যাস নেই তো তাই এমনটা হলো।গোসলে গিয়ে মনের সুখে গান গাইতেছি আমি।"বিউটি কুইন অফ অনলি এইট্টিন সি হ্যাড সাম ট্রাবল উইথ হারসেলফ......।এমন সময় দরজায় নক দিল কেউ।খুলতেই সামনে টাওয়াল।ওওও...আমি টাওয়াল নিতে ভুলে গেছিলাম।নীলা দেখছি আমার কেয়ার করছে!বউ বউ মনে হচ্ছে নীলাকে এখন।ইশ...আমারও বেশ লজ্জা লাগছে।নীলার বর বর মনে হচ্ছে নিজেকে।গোসল শেষে আমরা খাওয়াদাওয়া করলাম।বিদেশের হোটেলে খাবারগুলো সাধারণত বাঙালী হতে ইউনিক হয়।চিংড়ি মাছ কি যেন করছে।সেটাই অর্ডার দিল নীলা।একি!এমন সিদ্ধ চিংড়ি আমি কখনও খাইনি।টাকা নষ্ট এসব খেয়ে।আমরা তারপর নর্দান টেরিটরির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।অস্ট্রেলিয়া বিশাল দেশ।এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে অনেক সময় লাগে।এত বড় দেশ অথচ জনসংখ্যা অনেক কম।নীলা প্লেনে উঠবেনা।ওর নাকি রাস্তা দিয়ে গাড়িতে যাওয়ার শখ অস্ট্রেলিয়ায়।নিজেই একটা কার রেন্ট নিয়ে আমাকে চালাতে বলল।অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ থেকে আমরা দুজনেই ড্রাইভিং করার অনুমতিপত্র নিলাম।এদিকে পুলিশ সতর্ক করল সিট বেল্ট,ক্যাঙারু আর ডিসার্ট সম্পর্কে।গুগল ম্যাপ দেখে দেখে যাচ্ছিলাম আমরা।নীলা আমার সাথে টুকটাক কথা বলছে।ডারউইনে পৌছানোর আগেই নীলা আমাকে গাড়ি থামাতে বলল।বুঝলাম না এই গহীন মরুভূমিতে আবার কি হলো ওর।নীলা গাড়ি থেকে নেমে একটু দুরে দাঁড়িয়ে আছে।এমনিতে ডিসেম্বর মানে অস্ট্রেলিয়ায় গ্রীষ্মকাল।অনেক গরম। গাড়িতে এসি থাকায় তা একদম টের পাইনি।আমিও গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম একটা সাইডে গাড়ি রেখে।নীলার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। সন্ধা হয়ে গেছে প্রায়।মরুভূমিতে সন্ধা মানেই শীত।নীলা চুপচাপ আমিও চুপচাপ।আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গুনছিলাম আমি।
প্রফেসর সাহেব?
হুম?
বউকে ভালোবাসেন?
বাসিতো (অনেক্ষণ ভেবে)
কাউকে ভালোবাসলে এত সময় নিয়ে বলতে হয়না।আচ্ছা আমার সাথে কথা বলেন না কেন?
বলিত!
বলেন তবে সেটা আমি কিছু বললে তবেই।নিজে থেকে কিছু আসেনা?আপনার কি আমার প্রতি কোনো ফিলিংস কাজ করেনা?
অনেস্টলি স্পিকিং, কখনও করেনি।তবে আজ সকালে তোমাকে দেখে নিজের বুকের মাঝে কেমন যেন একটা অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে।
আমি জানি সেই অনুভূতিটা ভালোবাসা নয়, কামবাসনা।আমি কি ভালোবাসার যোগ্য না?আপনার ডায়েরি আমি প্রতিদিন পড়তাম।আপনার বউকে নিয়ে আপনি অনেক কিছু লেখেন।
অবাক হয়ে নীলার দিক তাকিয়ে আছি।
জানেন?বিয়েটা এত তারাতারি করতে চাইনি আমি।আপনাকে আরেকটু জানার ট্রাই করেছিলাম।কিম্তু আমাকে সময় দেয়নি। তাই আপনার সাথে কথা বলতে পারিনা।
বুঝলাম নীলা অনেক আবেগী মেয়ে।ওকে বুঝতে আমার হাজার বছর লেগে যাবে।কত কবি কত লেখকের কথা বুঝি আর নিজের বউয়ের অনুভূতি বুঝিনা।আসলেই আমি একটা খ্যাত।
গাড়িতে যান,পেছনে দেখতে পাবেন একটা ব্যাগ আছে নিয়ে আসেন।
না পারবনা!
চোখ রাঙানি দেওয়ায় ভয় পেলাম।বাধ্য ছেলের মত এনে নীলার হাতে দিলাম।ও না নিয়ে আমাকে খুলতে বলল।ব্যাগ খুলে দেখি চকলেট।আরে সেই চকলেট যেগুলো আমি নীলার জন্য প্রতিদিন নিয়ে আসতাম।রাতে ওর বালিশের নিচে রেখে দিতাম।গত রাতে চকলেট পাইনি।আজকে বিয়ের একশতম দিন কিন্তু আমার কাছে চকলেট নিরানব্বই টা।আমার একশতম চকলেট লাগবে।
এক মিনিট বলেই গাড়ি থেকে আমার ব্যাগ নিয়ে এসে নীলাকে ওর একশতম চকলেট দিলাম।নীলা জানো প্রতিদিনের ভালোবাসা আমার এই একশটা চকলেট জানে।তোমাকে যে চুপি চুপি আমি কতটা ভালোবেসেছি তা এই একশটা চকলেটকে জিজ্ঞেস করো উত্তর পেয়ে যাবে।এক একদিন এক একটা চকলেট তোমাকে বলে দিবে আমার ভালোবাসার কথা।নীলা ওর ব্যাগ থেকে একটা পাঞ্জাবি বের করে দিয়ে বলল এটা পড়ে আসেন।আপনার জন্য কিনেছিলাম।আমিও তৎক্ষনাত নীলাকে একটা নীল রঙের শাড়ি দিয়ে বললাম এটা তোমার জন্য কিনেছিলাম।খোলা আকাশের নিচে দুজনে কাপর বদলাবো এটা কেমন যেন লাগছে তাই দুজনে গাড়িতে এসে বসলাম।আমি পাঞ্জাবি পড়ে নিলাম।নীল রঙের পাঞ্জাবি কোনোদিন পড়িনি কিন্তু আজ আমাকে নীলে ভালোই লাগছে।ওদিকে নীলা শাড়ির কুচি দিতে পারছেনা বলে আমাকে ডাকল।গিয়ে ওর কুচি করে দিলাম।পেটে গুছিয়ে দিব এমন সময় নীলা আমার হাত ধরে বসল।এই প্রথম নীলার স্পর্শ পেলাম আমি।ও নাকি নিজেই পড়ে নিবে বাকিটুকু।কি হারামি বউ!আমি বাইরে দাড়িয়ে আছি।অন্ধকারে অস্ট্রেলিয়ান ডিসার্ট অনেক সুন্দর।চারদিক নীরব।মাঝে একটা করে গাড়ি শোঅঅঅঅ করে চলে যায়।আকাশে অনেক তারার মেলা আর সেখানে একটু পর পর প্লেন যাচ্ছে।এসবের মাঝে আমি ডুবে থাকা অবস্থায় নীলার গলার শব্দ শুনতে পেলাম।ছোট একটা তাবু করেছে মেয়েটা।এই মরুভূমিতে তাবু করে শীতে কষ্ট করাটা অনেক কঠিন কাজ।
কেমন হয়েছে প্রফেসর সাহেব?প্রশংসার দাবি রাখো তুমি।কিন্তু ক্ষুধা পেয়েছে।খাবার আছে তো।দুজনে মরুভূমিতে বসে তারা গুনছি আর ডিনার করছি।আমি ভাবিনি এমন একটা মুহূর্ত আমার জীবনে আসবে।মোমবাতি জ্বালিয়ে সদ্য প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠা কারও সাথে গল্প করাটা যে কতটা রোমাঞ্চকর বিষয় তা আমি আজ টের পাচ্ছি।খাওয়া শেষ করে নিলাম।দুজনে এক চাদরে তাবুতে বসে তারা গুনছি আর কত গল্প যে করছি।কত রাত হয়ে গেছে তার কোনো খোঁজ নেই।
প্রফেসর সাহেব?আমাকে প্রপোজ করবেন না?
ওয়াক!বউকে কেউ প্রপোজ করে?
করে করে।সবাই করে।আপনিই করেন না শুধু।
হুম।তাহলে আমাকে তুমি বলতে হবে।আচ্ছা বলব।আগে প্রপোজ করতে হবে, তবেই।
পাঞ্জাবির পকেট থেকে গোলাপটা বের করে হাটু গেড়ে নীলাকে এমন সুন্দর মহূর্ত উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে চিৎকার করে বলে দিলাম "নীলা আমি তোমার প্রেমে পরে গেছি,ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়,গ্রহন কর আমার ভালোবাসা"। কেউ শোনেনি আমার চিৎকার।শুধু মরুভূমির প্রতিটা বালি,প্রানি শুনেছে।নীলা আমার হাত থেকে ফুল নিয়ে বলল কোথায় ছিল এই ফুল?আমার কাছেই ছিল।কিন্তু তুমি জানোনা।নীলা আমাকে অবাক করে দিয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে দিল "আই লাভ ইউ ঠু প্রফেসর সাহেব,থ্যাংকস ফর বিং উইথ মি"।তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।এই প্রথম আমি নীলার উষ্ণতা পেলাম।ওর কোমড়ে পিঠে হাত দিয়ে আরো কাছে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।সকালে উঠেই রওনা হলাম ডারউইনের উদ্দেশ্যে।সেখানে পৌছে সারাদিন রেস্ট নিলাম।নীলা আমার বুকের মধ্যে এসে নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে।মেয়েটা এত মায়াবতি কেন?আসলে প্রতিটা বউ মায়াভরা পুতুলের মত হয়।যাকে শুধু আদর করতে ইচ্ছে করে।চুপি চুপি নীলার কপালে চুমু খেলাম।রাতে ড্রাইভিং করব তাই সারাদিন শেষে আমি আর নীলা নিউ সাউথ ওয়েলসের দিকে যাত্রা শুরু করলাম।অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বড় প্রদেশ।এই প্রদেশে বিখ্যাত বিখ্যাত সি বিচ আছে।সকালে নিউ সাউথ ওয়েলসে পৌছালাম আমরা।নীলা আমার কোলে ঘুমিয়ে গেছিল।ওকে কোলে নিয়েই হোটেলে প্রবেশ করে বিছানায় শুয়ে দিলাম।সন্ধায় আমরা সি-বিচে যাব।সারাদিন কাটিয়ে সন্ধায় গেলাম পাশের সি-বিচে।অস্ট্রেলিয়াতে সি-বিচের শেষ নেই।এই সি-বিচ থেকে ল্যাতিন আমেরিকা চোখে পরে।রাতে আমরা দুজনে সৈকতের বালিতেই ক্যাম্প করি।দেখলাম অনেকেই আসছে ক্যাম্প করতে।পার্টি চলছে একটা বাউন্ডারিতে।সবাই সেই পার্টিতে নগ্ন হয়ে ডান্স করছে।যে যেমন ইচ্ছা তাই করছে।কিন্তু কেউ বাউন্ডারি থেকে থেকে বের হচ্ছেনা।গভীর রাতে ডিজে সং অফ হলে নীরবতা নেমে আসল।হালকা বাতাস,আকাশ ভরা তারা,নীরবতা বেশ লাগছে।নীলাকে বুকে নিয়ে উপভোগ করছি আমি।তাসমান সাগর এমনিতেই শান্ত থাকে।তবে সাগরের মাঝে নীল তিমির গর্জনের শব্দ পাচ্ছি।নীলা ভয় পেলেও ওকে আশ্বস্ত করলাম যে ভয়ের কিছু না।তিমি গর্জন করছে।নীলা কেন যেন আমাকে আজকে বেশিই টানছে।ওকে পাগলের মত আদর করতে থাকলাম।কিন্তু বাঙালী বলে কথা।তাই পাগলামির সীমানা ছাড়াতে পারলাম না খোলা আকাশের নিচে। বাঙালীদের পাগলামি চার দেয়ালের মাঝেই মানায়।সকাল হতে না হতেই সব গুছিয়ে হোটেলে ফিরলাম।ফিরেই বাসর রাতের বিড়াল একশ দুই তম দিনে মেরে ফেললাম।সকল রোমাঞ্চ, অ্যাগ্রেশন,অতৃপ্তি, অজানা শেষ হয়ে গেল।
প্রফেসর সাহেব সত্যি সত্যি ফেসে গেলেন নীলা নামে এক মায়াভরা পুতুলের প্রেমে।মাস্টার সাহেব তুমি শেষ।পুতুল মেয়েটা তোমাকে সম্মোহন করে অবশেষ গ্রাস করেই নিল।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļāύিāĻŦাāϰ, ⧝ āĻĄিāϏেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3684
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧧⧍:⧍ā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ