āĻļুāĻ•্āϰāĻŦাāϰ, ā§§ āĻĄিāϏেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

3680 (17)

প্রিয়ার চোখে জল

পর্বঃ ৩৯

লেখকঃ সাইদা ইসলাম বকুল

মা আর রুবেল কথা বলছে। মা বললো, জোর করে বিয়ে তো করালাম, জানি না কি হয়।
রুবেল বললো, খালাম্মা আপনার মুখে ভাবীর কথা শুনে মনে হচ্ছে কিরণের জন্য আপনি ঠিক বউ ঘরে এনেছেন । আমার বিশ্বাস, কিরণ এবার বদলে যাবে।
মা বললো, আমিও রাতদিন তাই প্রার্থনা করি বাবা।
প্রিয়া এলো।
রুবেল অবাক হয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
প্রিয়া সালাম দিল।
রুবেল উত্তর দিল।
মা প্রিয়াকে তার পাশে বসালো। তারপর বললো, এই আমার বউ মা। মা উঠে দাঁড়ালো। রুবেলকে বললো, তুমি বসে বউমার সাথে কথা বলো, আমি আসছি।
রুবেল বললো, খালাম্মা শুধু মিষ্টি খেয়ে কিন্তু চলে যাবো না। আজ ভাবীর হাতের রান্না খেয়ে তারপর যাবো।
মা হেসে বললো, ঠিক আছে বাবা। মা চলে গেল।
প্রিয়া মাথা নিচু করে বসে রইলো।
রুবেল বললো, ভাবী আমি জরুরী একটা কাজে সিলেট গিয়েছিলাম। সেখানে বসে খবর পেলাম কিরণ বিয়ে করেছে। শুনে তো আমি অবাক!  তাই আপনাকে দেখার লোভ সামলাতে না পেরে কাজ ফেলেই ঢাকায় চলে আসলাম। অবশ্য এখানে আসার আগে কিরণের কাছে অনুমতি নিয়ে এসেছি। তা না হলে আমার কান ধরে বলবে, শালা আমাকে না বলে আমার বউকে দেখতে এসেছিস!  রুবেলের কথা বলার ধরণ দেখে প্রিয়া হেসে ফেললো। প্রিয়ার হাসি দেখে রুবেল খুশি হয়ে বললো, এইবার ভাবীর মত লাগছে। ভাবী আপনি দেখতেও সুন্দর, আর আপনার মনটাও সুন্দর হবে। আর সেই সুন্দর মন দিয়ে কিরণের মন থেকে সব ভুল ধারণা মুছে দিবেন। হয়তো কিছুটা কঠিন কাজ। তবুও কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি পারবেন। অনেকে বলে মানুষ চেনা কঠিন, কিন্তু আমি তা মানি না। মানুষ দেখে কিছুটা হলেও বোঝা যায়। যেমন আপনার চেহারার মাঝে এক ধরণের আত্মবিশ্বাস দেখতে পাচ্ছি, আর সেই বিশ্বাস দেখেই মনে হচ্ছে আমার বন্ধু কিরণকে আপনি সঠিক পথে নিয়ে আসবেন।

প্রিয়া বললো, দোয়া করবেন ভাই। আপনাদের সবার আশা যাতে আমি পূরণ করতে পারি। প্রিয়া উঠে দাঁড়ালো বললো, ভাই আপনি বসুন আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি। আমি রান্না করছি খেয়ে যাবেন।

রুবেল বললো, ঠিক আছে ভাবী, আমি কিরণকে ফোন করে আসতে বলছি। আরো দু'জন বন্ধুকে আসতে বলছি। সবাই মিলে আনন্দ করবো। বিয়েতে তো আনন্দ করতে পারলাম না। তাই আজ করবো, ঠিক বললাম না ভাবী?

প্রিয়া বললো, হ্যাঁ।  তারপর রান্নাঘরে চলে গেল। রুবেল মোবাইল বের করে কিরণের কাছে ফোন দিল তারপর দুই বন্ধুকে আসতে বললো।

টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে। কিরণ, রুবেল, আর দুই বন্ধু ড্রইংরুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে। মা ডাক দিল। সবাই এসে খেতে বসলো। রান্না খুব ভালো হয়েছে। তাই সবাই পেট ভরে খেল। অবশ্য কিরণ ও আজ একটু বেশিই খেল।

রুবেল বললো, খালাম্মা ভাবী দেখতে যেমন সুন্দর, আর তার হাতের রান্নাও তেমন মজা। মা বললো, আমি তো এখন বুড়ো হয়ে গেছি, এখন থেকে সংসারের সব দায়িত্ব বউ মা-ই পালন করবে, বুঝলে বাবা?  আমার ভাগ্যটা ভালো যে, এমন লক্ষ্মী বউ মা পেয়েছি। মায়ের মুখে এই কথা শুনে কিরণ মনে মনে খুশি হল।
প্রিয়া মিষ্টি আর দই এনে সবার সামনে দিল। কিরণ উঠে যেতে চাইলে রুবেল কিরণের হাত চেপে ধরলো। কিরণ মাথা নিচু করে বসে ছিল। রুবেল চুপি চুপি বললো, কিরণ আমার একটা অনুরোধ রাখ, একবার ভাবীর দিকে তাকিয়ে দেখ। কিরণ প্রিয়াকে দেখলো। চোখ ফেরাতে গিয়েও পারলো না। অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। মনে মনে বললো, এই মেয়ে আমার স্ত্রী!  যাক আমার মায়ের পছন্দ আছে। সবার সামনে আর ছোট হতে হলো না। বন্ধুরা মিষ্টি মুখ করে হাসি মুখে বিদায় নিল। যাওয়ার আগে রুবেল বলে গেল, যদি পারিস তাহলে তোর নষ্ট অতীতকে ভুলে বাস্তবতাকে মেনে নে, দেখবি সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। সামনে তোর সুন্দর ভবিষ্যৎ, তাকে নষ্ট হতে দিস না।

.
বন্ধুরা চলে যাবার পর কিরণও ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
রাত সাড়ে এগারোটায় কিরণ বাড়ি ফিরে এল। মা আর রহিমা ঘুমিয়ে পড়েছে। প্রিয়া জেগে আছে। কিরণ হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার এর টেবিলে বসলো। প্রিয়া এসে সামনে খাবার দিল। কিরণ চেঁচিয়ে মাকে ডাকতে লাগলো।
প্রিয়া বললো, মা ঘুমিয়ে পড়েছে। আপনিও খেয়ে গিয়ে শুয়ে পড়ুন। কিরণ উঠে দাঁড়ালো।
প্রিয়া বুঝতে পারলো কিরণ না খেয়েই চলে যাবে। তাই বললো, খাবার না খেয়ে চলে যাচ্ছেন কেন?  আপনি সন্তান হয়ে বুঝেন না যে, আপনার মা কিছুটা অসুস্থ। বেশি রাত জেগে থাকলে তার অসুবিধা হয়। আপনার সামনে খাবার দিয়েছি, না খেয়ে চলে যাচ্ছেন কেন?  আমি আপনার স্ত্রী হিসেবে এই বাড়িতে এসেছি। কিন্তু আমি তো আপনার কাছে স্ত্রীর অধিকার চাইছি না, আর জোর করে কখনো চাইবো ও না। স্ত্রী হিসেবে না হোক একজন মানুষ হিসেবে আমার   সাথে কথা বলবেন। আমি যখন এই বাড়িতেই থাকবো তখন আমার সাথে আপনার দেখা হবেই। আমার সাথে কথা বললে তো আর দোষ হবে না। আর আপনার সম্মানও নষ্ট হবে না, এবার বসুন খেয়ে নেন।

কিরণ কোন কথা বললো না, চুপচাপ খেতে লাগলো। বিয়ের রাতেও কিরণ প্রিয়ার সাথে জোর গলায় কথা বলতে পারেনি, আজও পারলো না। কেন পারলো না, কিরণ জানে না। কিরণের ইচ্ছে করছিল প্রিয়াকে অনেক কিছু বলতে। কিন্তু কেন যেন বলতে পারে না। ভেতর থেকে কে যেন বাধা দেয়। কিরণের খাওয়া শেষ, উঠে চলে যেতে লাগলো, কি মনে করে পেছন ফিরে তাকালো। দেখলো প্রিয়া খেতে বসেছে।
কিরণ হঠাৎ করে বলে ফেললো, আপনি এত রাত পর্যন্ত না খেয়ে বসে ছিলেন? 

প্রিয়া কথাটা শুনে মনে মনে খুশি হল। তারপর বললো,এতক্ষণ ক্ষিদে লাগেনি, আর আপনি এত দেরিতে ফিরলেন তাই চিন্তাও হচ্ছিল, মা অবশ্য জেগে থাকতে চেয়েছিলেন, আমি বারণ করেছি। কারণ আমি তো মায়ের জন্যই এই বাড়িতে এসেছি। আমি থাকতে উনি কষ্ট করবেন কেন? 

কিরণ আর কোন কথা না বলে চলে গেল।প্রিয়া একা একা বললো, আমি কখনো কারো সাথে এভাবে কথা বলিনি। আজ আপনার সাথে বললাম, কারণ নারীর কত রুপ, নারী স্বামী সংসারের জন্য কত কিছু করতে পারে, নারী কতোটা মমতাময়ী, শুধু তা বোঝানোর জন্য আপনার সাথে এভাবে কথা বলতে হচ্ছে।
প্রিয়া সামান্য খেয়ে উঠে গেল।
যে প্রিয়া আগে মামীর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে ভয় পেত, সেই প্রিয়া আজ কিরণের সামনে নির্ভয়ে কথা বলে যাচ্ছে। সময় মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন এনে দেয়।

প্রিয়ার চোখে জল

পর্বঃ ৪০

লেখকঃ সাইদা ইসলাম বকুল

. রাত প্রায় একটার দিকে আকাশ আর সুমি এসে বাড়িতে পৌঁছালো। মিতু গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই আকাশ কোলে নিয়ে উপরে উঠে এল। ঘরে এসে মিতুকে বিছানায় শুইয়ে দিল।

-বুয়া সুমিকে বললো, আফা কিছু লাগবো?
সুমি বললো, না, বুয়া তুমি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।
-আকাশ হাত- মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এল।
-সুমি মিতুকে ভালোভাবে শুইয়ে দিল। মিতু সুমিকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারে না। আর সুমিও মিতুকে সব সময় নিজের কাছেই রাখে। আর আকাশ তা দেখে খুব খুশি। আকাশ মিতুর পাশে শুয়ে পড়লো।

. জয় আর নীলা কানাডা গেছে বেড়াতে। তাই ওদের বিদায় জানাতে আকাশ, সুমি আর মিতু এয়ার পোর্ট গিয়েছিল। জয়কে পেয়ে নীলা খুব খুশি। আর জয়ও নীলাকে মন থেকে ভালোবাসে। তাই দু'জনই খুশি। ওদের খুশিতে সুমি আর আকাশও মহাখুশি। নীলা যেন বিয়ের পর আরো বেশি সুন্দর হয়ে গেছে।
সুমি আর আকাশ কিছুক্ষণ কথা বললো।
-তারপর আকাশ কি যেন ভাবতে লাগলো। সুমি বললো, কি হয়েছে, হঠাৎ করে তোমার মনটা খারাপ হয়ে গেল কেন,কি ভাবছো?
ভাবছি হঠাৎ করে আমাদের জীবনে এতো কিছু ঘটে গেল, আর সবকিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে,সব কিছু স্বপ্নের মত মনে হয়। নীলার জন্য আর কোন চিন্তা নেই। মিতুও আমাদের আপন করে নিয়েছে। মিতুকে নিয়েও কোন চিন্তা নেই, শুধু চিন্তা করি প্রিয়ার জন্য। ওর কথা ভাবলে আমার সব আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। জানি না কিরণ প্রিয়ার সাথে কি রকম আচরণ করে। প্রিয়া খুব চাপা স্বভাবের মেয়ে, ও যদি ওখানে কষ্টে থাকে, তবুও আমাদের মুখ ফুটে কিছু বলবে না। তাই প্রিয়ার কথা ভাবলে মনটা খারাপ হয়ে যায়।

. আকাশ, তুমি প্রিয়াকে নিয়ে যতটা চিন্তা কর, আমিও চিন্তা করি। আমি প্রতিদিন ওর সাথে কথা বলি, যাতে ও নিজেকে অসহায় না ভাবে। তবে তুমি চিন্তা করো না, আর কিছুদিন যাক, হয়তো সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। নীলার মত প্রিয়া আর কিরণও আমাদের সামনে এসে হাসিমুখে দাঁড়াবে। আমাদের সবার দোয়া আছে প্রিয়ার উপর। এত মানুষের দোয়া কখনো বিফলে যাবে না। তুমি আর চিন্তা করো না, রাত অনেক হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়।
সুমি আকাশের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
সুমি যখন আকাশের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, তখন আকাশের মনটা শান্ত হয়ে যায়।
আকাশ চোখ বুজলো।
সুমি বুঝতে পারলো একটু পর আকাশ ঘুমিয়ে পড়বে। স্বামী স্ত্রীকে বোঝে,, আর স্ত্রী স্বামীকে বোঝে, এটাই তো ভালোবাসা,এটাই বন্ধন আর এই বন্ধনের জালে আটকে আছে সমাজ সংসার।

. প্রিয়ার বিয়ে হয়েছে তিন মাস হয়ে গেছে। এই তিন মাসে প্রিয়া এই বাড়ির প্রতিটা জিনিস আপন করে নিয়েছে। শুধু কিরণকে আপন করতে পারেনি। তবে কিরণের মাঝে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। বেশি রাত করে বাড়ি ফেরে না। মোটামুটি সবার সাথে কথা বলে। ব্যবসার অনেক কথা মায়ের সাথে আলোচনা করে। প্রিয়ার সাথে কথা বলে, তবে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। এসব দেখে মা কিছুটা খুশি। প্রিয়া নিজের কষ্ট চেপে রেখে মাকে সান্ত্বনা দেয়। মা হাসে। তবে মনে মনে অনেক চিন্তাও করে। ভাবে কিরণ যদি প্রিয়াকে কখনো স্ত্রীর মর্যাদা না দেয়, তখন কি হবে?  মার আর বেশি ভাবতে পারে না। মায়ের বুকের ভেতর শুকিয়ে আসে,চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। তখন মা শুধু প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। সেই চাহনির ভাষা প্রিয়া বুঝে, কিন্তু বুঝেও না বোঝার ভান করে। প্রিয়া চায় না মা কষ্ট পাক। কিন্তু মায়ের কষ্ট কি আর কমে? 

প্রিয়ার চোখে জল

পর্বঃ ৪১

লেখকঃ সাইদা ইসলাম বকুল
.
.
.
কিরণ আজ অফিসে যায়নি। কেন জানি আজ বাইরে যেতে ইচ্ছে করছে না। কেন ইচ্ছে করছে না, তা কিরণও জানে না। শীতের আগমন ঘটেছে, তাই সকালবেলা চারিদিকের পরিবেশ শান্ত। কিরণ ছাদের উপর বসে আছে। চারিদিকে হালকা রোদের আলো ছড়িয়ে পড়েছে। সেই মিষ্টি রোদের আলো ভালোই লাগছে। আজ অনেকদিন যাবৎ কিরণ তার মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কিরণ ভাবে,আমি কি মায়ের কথা রাখতে গিয়ে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিলাম?  প্রিয়া তো কোন দোষ করেনি। তাহলে আমি তাকে বিয়েই করলাম কেন, আর এভাবে কষ্টই দিচ্ছি কেন?  একটা অসহায় মেয়েকে এভাবে অবহেলা করা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু আমি তো ওকে কখনো স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবো না। আমার ভুলের সাজা ও পাবে কেন?  এটা ঠিক নয়। আমি ওকে এই জীবন থেকে মুক্তি দিতে চাই। কিন্তু কিভাবে দেবো তা বুঝতে পারছি না। কিরণ ভাবতে ভাবতে ছাদের কিনারে এসে দাঁড়ালো। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে রুবেল এসেছে। রুবেলকে দেখে কিরণ নীচে নেমে এলো। দু'জন ড্রইংরুমে বসলো। রুবেল কিরণের দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে বললো, কিরে তোর কি হয়েছে, মনে হচ্ছে খুব চিন্তায় আছিস?  ও,বুঝতে পেরেছি সকালবেলা তোর বউয়ের হাতে নাস্তা খেতে এসেছি, তাই তোর মন খারাপ? শোন দোস্ত, আমি যখন বিয়ে করবো, তখন তুইও আমার বাসায় চলে আসবি। আমার বউয়ের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য। অবশ্য আমার বউ ভাবীর মত রাঁধতে পারবে কিনা জানি না, যাই বলিস ভাবীর হাতের রান্নার কোন তুলনা হয় না।
.
.
রুবেল, তোর ভাবী মানুষ হিসেবে কেমন?
অসাধারণ!  ভাবীর মত মানুষ যে সংসারে থাকবে, সে সংসারে শুধু সুখই থাকবে। শান্ত স্বভাবের ধৈর্যশীল মহৎ মনের মানুষ। কারো কাছ থেকে ভালোবাসা না পেলেও নিজের ভালোবাসাটুকু সবার মাঝে বিলিয়ে দেয়। কেন তুই এতদিনেও ভাবীকে বুঝতে পারিসনি। অবশ্য না বোঝারই কথা, কারণ তুই তো কখনো তাকে বোঝার চেষ্টাই করিসনি।
.
.
কে বললো করিনি, অনেকবার করেছি। আর যতবার করেছি, ততবারই নিজের কাছে হেরে গেছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এভাবে একটা মেয়েকে কষ্ট দেয়া ঠিক হচ্ছে না।
.
কিরণের এই কথা শুনে রুবেল খুশি হল।
বললো, বন্ধু তোকে বোঝাতে পারবো না আজ আমি কত খুশি। তুই তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস, ভাবীর কষ্ট বুঝতে পেরেছিস, তোকে অনেক ধন্যবাদ। সবার মত আমিও চাই তুই সংসারী হ,সুখে থাক। কিরণ বললো, রুবেল আগে আমার পুরো কথাটা শুন, তুই তো জানিস কোন পরিস্থিতিতে আমাদের বিয়ে হয়েছে। শুধু মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি এই বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে আমি অসহায় একটা মেয়ের কাঁধে দুঃখের বোঝা দিয়ে দিয়েছি যা আমার করা উচিৎ হয়নি। তাই ভাবছি আমি ওকে আমার বন্ধন থেকে মুক্ত করে দেব। প্রিয়া খুব ভালো মেয়ে, তুই প্রিয়াকে বিয়ে কর। আমি জানি প্রিয়া তোর কাছে সুখেই থাকবে।
.
কিরণ তুই কি আমার সাথে মজা করছিস?
মোটেই না,আমি সত্যি সত্যি বলছি।
ছিঃ কিরণ ছিঃ, তোর মনটা এত ছোট। আর এত নোংরা, আগে জানতাম না। যদি জানতাম, তাহলে বন্ধুত্ব তো দূরের কথা, তোর সাথে আমি কথাই বলতাম না।এই কথা  বলে তুই শুধু আমাকে অপমান করিসনি, অপমান করেছিস সেই নারীকে। যে তোর সব দোষ জেনেও তোকে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছে। তোর ভালোবাসা পাওয়ার আশায় এই বাড়িতে পড়ে আছে। তোর মা আর এই সংসারকে সামলাচ্ছে। আর সেই নারীর প্রতি এই তোর প্রতিদান!  তুই কি ভেবেছিস, সব নারী তোর সেই ছলনাময়ী প্রেমিকার মত?  তোর ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আর তুই কি ভেবেছিস, তুই  যা বলবি প্রিয়া তাই করবে?  কোনদিনও না। তোর সংসার ছেড়ে যদি সে চলে যায়, তবুও সে কখনো অন্য ছেলের হাত ধরে তার ঘরে যাবে না। এটা আমার বিশ্বাস। প্রথম দেখার পর থেকেই আমি ভাবীকে বোনের মত দেখেছি, আর আজ তুই ছিঃছিঃ ওই কথা মুখে আনতেও আমার লজ্জা লাগছে। আজ থেকে তোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি ভাববো কিরণ নামের আমার কোন বন্ধু ছিল না। এই বলে রুবেল ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। কিরণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। রুবেলকে এই কথা বলার জন্য নিজেকেই নিজে ধিক্কার দিল। সামান্য একটা ভুলের জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু আজ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে গেল। কিরণের খুব খারাপ লাগছে। এমন সময় ভেতর থেকে রহিমার কান্নার আওয়াজ শোনা গেল। কিরণ বুঝতে পারলো না রহিমা কেন কাঁদছে। চিন্তিত মন নিয়ে মা এসে কিরণের সামনে দাঁড়ালো। কিরণ বললো,মা রহিমা এভাবে কাঁদছে কেন?  মা বললো, দেশ থেকে আমার মোবাইলে ফোন এসেছে, ওর মায়ের অবস্থা নাকি খুব খারাপ। তাই শুনে রহিমা কাঁদছে। মায়ের জন্য সন্তান কাঁদবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আমি ভাবছি ওর মাকে দেখতে যাবো। কিরণ বললো, কি বলছো মা,এতদূর পথ তুমি যাবে?  মা বললো, ওর মা আমাদের বাড়িতে এত বছর কাজ করে গেছে, আর এখন ওর মেয়েকে আমার বাড়িতে দিয়ে রেখেছে। ওদের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ব আছে না?  বিপদের সময় তো মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ। তুই আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না। বাসে করে তো আর যাবো না,যে আমার কষ্ট হবে। নিজের গাড়িতে আরাম করে যাবো। কিরণ বললো,ঠিক আছে, তুমি যা ভালো মনে কর, তাই করো। তবে তাড়াতাড়ি ফিরে এসো। একা বাড়িতে থাকতে আমার ভালো লাগবে না। মা বললো, রহিমার সাথে আমি একা যাবো, প্রিয়া বাসায়ই থাকবে। কিরণ বললো, ওকে নিয়ে যাও, একা বাড়িতে থেকে কি করবে?

.
মা বললো, প্রিয়া কি তোর কাঁধে বোঝা হয়ে আছে? 
.
কিরণ বললো,মা তুমি সব কথায় শুধু দোষ খুঁজে বেড়াও।
.
মা বললো, দোষের কথা বললে তো দোষ হবেই। কিরণ বললো, মা আমি ভেবেছি একা থাকলে মন খারাপ লাগবে। মা বললো, মেয়েদের মন ছেলেদের মত চঞ্চল নয়, মেয়েদের মন স্থির বলেই তো সারাক্ষণ ঘরে থাকতে পারে। একজন নারীর জীবনে অনেক শখই পূরণ হয় না। তবুও সে কোন অভিযোগ করে না। একজন নারী সংসারের সবার ভালোমন্দের দিকে খেয়াল রাখে। কিন্তু সেই নারীর ভালোমন্দ জানার চেষ্টা কেউ করে না। আমি চলে যাচ্ছি, প্রিয়া বাড়িতে রইলো। যদি পারিস, তাহলে খেয়াল রাখিস। মা রহিমাকে নিয়ে গাড়িতে বসলো। প্রিয়ার মন চাইছে না মাকে যেতে দিতে। মা প্রিয়ার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে বললো, যদি প্রয়োজন না হত, তাহলে যেতাম না। মন খারাপ করিস না মা,আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো। মা চলে গেল। কিরণও মায়ের যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ