"একজোড়া জুতো"
.
.
লেখাঃ ফুয়াদ হাসান রেহান
.
.
.
গ্রীষ্মের দুপুর। সূর্যটা প্রায় খাড়াভাবে কিরন দিচ্ছে। যোহরের নামাজ শেষে মাথার টুপিটা ঠিক করতে করতে রাশেদ মসজিদ থেকে বের হচ্ছে। কিন্তু মসজিদের গেটের সামনে এসে সে তার জুতো খুজে পাচ্ছে না। গেটের পাশেই তো রেখেছিলো। সবার জুতোই আছে শুধু ওরটা নেই। খুজতে খুজতে দেখলো গেটের একেবারে কোনায় ওর জুতোর মতো হুবহু এক জোড়া জুতো।
.
নিজের জুতো ভেবে পড়তে গিয়েই রাশেদ দেখলো এ জুতো জোড়া একেবারে নতুন আর অনেক দামী, যেনো আজই কেনা হয়েছে। কিন্তু রাশেদের জুতো গুলো পুরোনো আর কিছুটা ফাটা ছিলো। রাশেদ বুঝতে পারলো কেউ নিজের ভেবে ওর জুতো নিয়ে গেছে আর তার এই নতুন জুতো জোড়া ফেলে গেছে।
.
মসজিদে অন্য সবাই বলছে যেহেতু লোকটা ওর জুতো নিয়ে গেছে তাহলে এ জুতো পড়ে গেলে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু রাশেদ কিছুতেই নেবে না। যতোই হোক তার জুতো গুলো তো পুরোনো ছিলো, এই নতুন জুতো গুলো পড়া তার ঠিক হবে না। জুতোর মালিক জুতো পাল্টাতে আসবে ভেবে মসজিদের সামনেই বসে রইলো রাশেদ।
.
অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পরেও কারো কোনো খোজঁ না পেয়ে জুতো জোড়া হাতে নিয়ে মসজিদ থেকে কিছু দূরে আড্ডা খানার দিকে হাটতে লাগলো। নামাজ শেষে তো দুপুরে অনেকেই ওখানে বিশ্রামের জন্য বসে। হতে পারে জুতোর মালিকও সেখানে গিয়েছে। আড্ডা খানায় যাওয়ার পরেই একজন জিজ্ঞেস করলো " কি রাশেদ মিয়া? জুতা হাতে নিয়া খালি পায়ে হাটতাছো ক্যান?" রাশেদ তাকে সব বললো আর জিজ্ঞেস করলো কেউ জুতো পাল্টে যাওয়া নিয়ে কোনো কথা বলছিলো কি না।
কিন্তু কোনো আশাজনক উত্তর পেলো না।
.
এবার আর কি করার। বিকেল গড়িয়ে পড়ছে। এতোক্ষন খালি পায়ে হাটার পরেও রাশেদ জুতো পায়ে দিচ্ছে না। রাস্তার আশে পাশের সবাই ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে। হাতে জুতো রেখে খালি পায়ে হাটছে দেখে কেউ কেউ পাগল বলে তামাশা করছে।
.
রিক্সা দিয়ে যাওয়ার সময় তো একজন জোরে বলেই দিলো "ও ভাই, অল্প বয়সে কি মাথাটা খোয়ালেন নাকি।"
যাই হোক অন্যের নতুন জুতো নিতে পারবে না সে। এতোক্ষন রাস্তায় হাটার পরেও কোনো লাভ হলো না। তাহলে এজুতো গুলো করবেই বা কি।
.
দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে যাচ্ছে। হাটতে হাটতে ক্লান্ত সে। এখন আর খুজেঁ লাভ নেই। বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নেয়া দরকার।
.
হাতের উলটো পিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে হঠাৎ সামনে আব্দুর রহমান চাচাকে আসতে দেখলো রাশেদ। রহমান চাচা মানুষটা গরিব কিন্তু মনটা অনেক ভালো। এ দুনিয়াতে আপন বলতে তার কেউ নেই। স্ত্রী তো ১২ বছর আগেই মারা গেছে তারপর একটা ছেলে ছিলো সেও ৩ বছর আগে কলেরায় মারা যায়।
.
এখন তিনি একাই। কাজ বলতে মসজিদ পরিষ্কার ও দেখাশুনা করে সে। মাস শেষে এলাকার মানুষ খুশি হয়ে যা দেয় তা দিয়েই তার দিন চলে। লোকটা রাশেদের মধ্যে নাকি তার ছেলেকে দেখতে পায়। আব্দুর রহমান চাচার ছেলের নাম ছিলো বেলাল। রাশেদের খুব ভালো বন্ধু ছিলো। একেবারে গলায় গলায় বন্ধু যাকে বলে। সারাদিন রাশেদের সাথেই থাকতো। ক্রিকেট খেলা, মাছ ধরা কতো কিছু। কিন্তু তিন বছর হলো বেলালটা কলেরায় মারা গেছে
.
তারপর থেকে রহমান চাচা রাশেদকে দেখলে বাজান ছাড়া কথাই বলে না। লোকটা নাকি ওর মধ্যে বেলালকে দেখতে পায়। আর রাশেদকে দেখলেই বিড়বিড় করে রাশেদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকে।
.
রহমান চাচাকে দেখেই রাশেদ তার কাছে গিয়ে সালাম দেয়। অনেকদিন পর রহমান চাচা রাশেদকে দেখে তো অনেক খুশি হয়। আহ্লাদের সাথে জিজ্ঞেস করতে থাকে " বাজান তুমি ভালা আছো? তোমার শরীর-সাস্থ্য ভালা তো?"
:- জ্বি চাচা, আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
রাশেদ কথাটা বলার পড়েই খেয়াল করল রহমান চাচার পায়ের জুতো জোড়া একেবারে পুরনো আর করুন অবস্থা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক গুলো সেলাই দিয়ে এখনো চলছে।
.
রাশেদ জিজ্ঞেস করলো "চাচা আপনার জুতোটা তো একেবারে ছিড়ে গেছে।"
-: " হ বাজান, মেলা দিন ধইরা পড়তাছি জুতা তো ছিড়বোই।
: চাচা নতুন জুতো কিনবেন না??
: হ বাজান, হাতে দুইডা টাকা পয়সা হইলেই কিনমু।
.
মাথাটা নিচু করে কিছু একটা ভাবার পর রাশেদ বললো " চাচা আপনার জুতোগুলো খুলুন"
: " ক্যান বাজান?"
: "আহা! চাচা খুলেনই না"
-: "আইচ্ছা বাজান ঠিক আছে, এই ন্যাও খুলছি"।
.
রাশেদ রহমান চাচার জুতোটা সরিয়ে ওর হাতে থাকা জুতো গুলো চাচার সামনে রেখে বললো " চাচা এই জুতো গুলো পরেন দেখি।"
.
চাচা দেখে অবাক হয়ে বললো
:- কি কও বাজান? আমি পড়লে তুমি কি পইড়া বাড়ি যাবা?
:- কেন, আপনার জুতো পড়ে।
:- না, বাজান! ওই ছিরা জুতা তুমি পড়তে পারবা না। তোমার কষ্ট হইবো।
:- কোনো সমস্যা হবে না চাচা। আমি ঠিক পারবো। এ জুতো গুলো আপনি পড়েন। এগুলো এখন থেকে আপনার।
.
রহমান চাচা তবুও ইতস্তত করছে দেখে রাশেদ বললো
:- " চাচা আপনি না বলেন আমিই আপনার বেলাল। তাহলে চাচা আপনার এ জুতো রাখতে হবে।"
.
রহমান চাচা এবার আর না করতে পারলেন না।
:- আইচ্ছা বাজান ঠিক আছে।
.
রহমান চাচা চোখ থেকে অশ্রু মুছে জুতো গুলো পড়ে নেয়। আর রাশেদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
" বাজান আমি সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আল্লাহ আমার এই বাজানরে ভালা রাখে সুস্থ রাহে।"
রাশেদ তখনই রহমান চাচাকে সালাম করে বলে "আচ্ছা চাচা তাহলে যাই বেলা পড়ে যাচ্ছে।"
:- আইচ্ছা বাজান, যাও। আমারও কামে যাওন লাগবো।
.
রহমান চাচা চলে যাচ্ছে তবে আল্লাহ আল্লাহ বলে কিছু একটা বিড়বিড় করে বলছেন। লোকটা এমনই রাশেদকে দেখলেই বিড়বিড় করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকে।
.
রাশেদও খুশিমনে বাড়ির দিকে রহনা দিচ্ছে। যাই হোক জুতোগুলো উপযুক্ত স্থানেই পৌছতে পারলো সে।
.
.
.
--------> Fuad Hasan Rehan
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϏোāĻŽāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ģ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2341
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:ā§Ģā§Š AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ