গল্প:***বন্ধুত্ব***
.
আজব ক্যাটাগরির লোক আমি।কখন যে কি করতে
ইচ্ছে হয় নিজেই বুঝি না।যখন যা ইচ্ছা হয় তাই করি।
কোনো কাজ ই রুটিন মাফিক করি না।তবে রুটিন মাফিক না
করলেও একটা কাজ অনিচ্ছাকৃত রুটিন হয়ে গেছে।তা
হলো সারারাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়া।সিগারেট
ফুঁকতে ফুঁকতে আর পুরনো কিছু স্মৃতি নিয়েই
সারারাত কেটে যায়।
কখনো কখনো সারারত রাস্তায় ই কাটিয়ে দেই।এটাই
আমার জীবনের অঘোষিত রুটিন হয়ে গেছে।।
.
রাত ১১ টা।হাতে সিগারেট নিয়ে বাইরে বেরিয়ে
পড়লাম।।অনেক দিন হলো রাতে বাইরে কাটানো হয়
না।সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে হাটতেছি।আজকের
রাতটা অন্ধকার লাগছে।অন্য দিন এখানে
ল্যাম্পপোস্টের আলো জ্বলতো।কিন্তু আজ
নেই।কেনো নেই সেটা জানি না।হয়তো
কোনো সমস্যা হয়েছে তাই নেই।তবে অন্ধকার
রাতটাকে কেনো যেনো আপন মনে হচ্ছে
খুব আপন।অন্য দিন তো আলোতেই হাটতাম, আজ না
হয় অন্ধকারেই হাটি।জীবনে নাকি সব ধরনের
অভিজ্ঞতার দরকার আছে।আমার না হয় অভিজ্ঞতার খাতায়
আরো কিছু যুক্ত হলো।
এই সময়ে ফোনটা বেজে উঠলো।আমার
ফোনে সাধারনত ফোন আসে খুব কম।আর এখন
এতো রাতে ফোন আসছে!হয়তো কোনো
জরুরী কিছু।আমার কাছে কারো জরুরী কিছু কি
হতে পারে!ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে
দেখি তাসনোভার ফোন।তাসনোভা আমার বেস্ট
ফ্রেন্ড।যদিও পরিচয়টা নীল-সাদা ভার্চুয়াল জগৎে।
এতো রাতে কি দরকারে ফোন দিলো এসব এসব
ভাবতে ভাবতে ফোন রিসিভ করলাম,
>হ্যালো,তুষার কই তুই?
:-এইতো রাস্তায় হাটতেছি।
>তুই আর পাল্টাবি না?
:-পাল্টিয়ে কি হবে!আমি পাল্টালেই কি সব পাল্টাবে।
>তোকে কিছু বলেও লাভ নেই।
:-হুম বুঝছিস।
>সিলেট আসছিস কবে?
:-সিলেট আসবো কি করতে?
>কি করতে মানে??তোকে না বললাম কাল আমার
জন্ম দিন।
:-ওহ ভুলেই গেছিলাম।
>এতো কিছু জানি না তুই কাল আসবি।
আর কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম।
আজ কাল কিছুই মনে থাকে না।মনে হয় স্মৃতির পাতায়
সব কিছু জায়গা নিয়ে বসে আছে।কি আর করার কাল
সিলেট যেতে হবে।বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্মদিন
বলে কথা।সিলেটে গেলে ফয়সালের সাথেও
দেখা হবে।ফয়সাল আমার কলেজ জীবনের বন্ধু।
সিলেট যাওয়াটা মন্দ হবে না।বন্ধুদের সাথেও দেখা
হবে ভ্রুমনের নতুন অভিজ্ঞতাও হবে।
.
পরদিন খুব ভোরে সিলেটের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা
শুরু করলাম।সকাল ৭ টার ট্রেনে।৭ টা বাজতে ১৫ মিনিট
বাকি।তাই ভাবলাম একটা সিগারেট ফুঁকে নেই।
যথা সময়েই ট্রেন চললো।ফয়সাল কে ফোন
দিয়ে স্টেশনে আসতে বললাম।ভাবতেই কেমন
যেনো লাগছে আজ অনেকদিন পর ফয়সালের
সাথে দেখা হবে!ফয়সালের সাথে অনেক কথা
জমে আছে সব না হয় এবার বলবো।
দেখতে দেখতে ট্রেন স্টেশনে চলে
এসেছে।ট্রেন থেকে নেমেই দেখি ফয়সাল
দাড়িয়ে আছে।অনেক দিন পরে প্রিয় বন্ধুর সাথে
দেখা!নিজেকে কেনো যানি খুব সুখী মনে
হচ্ছে।ফয়াসালের মতো বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের
ব্যপার।ফয়সাল সেই আগের মতোই আছে।
আমাকে দেখে ফয়সাল অনেক অবাক হলো।কারন
আগের আমি আর এখনকার আমি পুরো পার্থক্য।
ফয়সাল জিজ্ঞেস করলো,
>তোর এই অবস্থা কেন?
:-এই তো বেশ আছি।
এর মধ্যেই তাসনোভার ফোন,
>কই তুই?
:-সিলেট স্টেশনে।
>সত্যি???
:-হুম।
>তোর সাথে কেউ আছে।
:-হ্যা।ফয়সাল রিসিভ করেছে।
>আচ্ছা চলে আয় ঠিকানা অনুযায়ী।
:-এখন না।বিকেলের দিকে আসবো।
>আচ্ছা।দেরি করিস না।
ফয়সাল কে নিয়ে সিলেট শহর ঘুরতে চললাম।
কখনো সিলেট আসা হয় নি তাই সব কিছুতেই নতুন
লাগছে।আর এই নতুনত্বেই কেনো যানি বিদঘুটে
লাগছে না।
.
ফয়সাল কে বলাম চল কোনো নিড়িবিড়ি জায়গায়।
অনেকদিন আড্ডা দেই না।
ফয়সাল একটা জায়গায় নিয়ে আসলো। খুব সুন্দর
লাগছে সব কিছু।
একটা সিগারেট ধরালাম।সিগারেট ফুঁকত ফুঁকতে
ফয়সালের সাথে আড্ডা দিচ্ছি।ফয়সাল বললো,
>তুই তো আগে সিগারেট খেতি না।
:-হুম।
>আগের কে,এইচ,তুষারের সাথে এখন কার
তুষারের কোনো মিল খুজে পাচ্ছি না।
:-হাহাহা।
>পুরনো স্মৃতি নিয়ে আর কতো?
:- দেখা যাক।
এর মধ্যেই ফয়সালের ফোন আসলো।
ফয়সালের কথা বলা দেখে বুঝলাম বন্ধুর ভালোবাসার
মানুষ ফোন দিয়েছে।কারন প্রিয় মানুষের সাথে কথা
বলার সময় সবাই কেমন যেনো একটা মায়া নিয়ে কথা
বলে।এমনিতেই বুঝা যায়।
.
ফয়সাল তার প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলছে।আর আমি
সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে পুরনো স্মৃতিগুলো
ভাবছি।এক সময় আমিও রাতের পর রাত কারো সাথে
কথা বলে কাটিয়ে দিতাম।খুব সুন্দর সময় যাচ্ছিলো
তখন।কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয় নি।নিয়তির কাছে পরাজিত
হয়েছি।সেই প্রিয় মানুষটি চলে গেছে।সেখানে
চলে গিয়েছে যেখান থেকে কেউ আর ফিরে
আসে না।খুব ভালোবাসতাম ওকে।ওর নাম ছিলো
অহনা।অহনা বলেছিলো কোনোদিন সিগারেট না
খেতে। ওর সব কথাই রেখেছি কিন্তু এটা পারি নি।
.
ফয়সালের কথা বলা শেষ।প্রায় ৪ বছর পর ফয়সালের
সাথে দেখা।দুজনের জমানো কথাগুলো বলতে
বলতে সময় চলে গেলো।বন্ধুটি আমার দিকে
কেমন করে যেনো তাকায়।এর মানে আমি বুঝতে
পারি।ফয়সাল ই আমাকে পুরোপুরি বুঝতে পারে।
ফয়াসাল বললো,
>খুব ভালোবাসিছ অহনাকে?
:-সব কিছু বলতে হয় না।
>কিভাবে পরিচয় হয়েছিলো?
:-আমার এক ব্যাচ জুনিয়র।
>কি হয়েছিলো অহনার?
:-(বন্ধুর এই কথা শুনে চুপ হয়ে গেলাম।পুরনো কথা
গুলো মনে করতে চাই না।কিন্তু প্রিয় বন্ধু
জিজ্ঞেস করেছে বলতে হবেই)।কিছুক্ষন চুপ
থেকে বলতে শুরু করলাম,"অহনার সাথে প্রতিদিন
বিকেলে দেখা হতো।ও প্রাইভেট পড়তে
আসতো।এমন ই একদিন ওর সাথে দেখা হলো।ও
বললো,
>আমি আর রিলেশন রাখতে পারবো না।
:-কি???
>হ্যা।আর যোগাযোগ করবেনা আমার সাথে।
আর কিছু না বলে চলে গেলো।আমি পুরো হতবাক
হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ওর চলে যাওয়ার দিকে কিছু
বলতে পারি নি সেই দিন।অহনা কেনো চলে
গিয়েছিলো তা তখনো জানতাম না।জানলাম ১৫ দিন পর।
খবর পেলাম অহনা মারা গেছে।এই খবর শুনে পুরো
স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম।অহনা আমার জন্য একটা চিরকুট
রেখে গিয়েছিলো।কিন্তু কখনো সেই চিরকুট
দেখার সাহস পাই নি।অহনার শেষ স্মৃতি হিসেবে
রেখে দিয়েছি আমার কাছে।।।দোয়া করি পরপারে
ভালো থাকুক অহনা।"
>এখনো ভালোবাসিস অহনাকে?
:-ভালোবাসার কমতি নেই বরং বেড়ে গেছে।
বন্ধু কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
কারন জানে কিছু বলেও লাভ নেই।
আরো কয়েকটা সিগারেট ফুঁকলাম এর মাঝে।
অহনাকে দেয়া কথাটাও রাখতে পারলাম না।সেই
সিগারেট ফুকেই চলেছি।প্রিয় মানুষের কথাও রাখতে
পারি নি কি অপদার্থ আমি!
.
ফয়সাল আর আমি পুরো শহরটা আরেকটু ঘুরে নিলাম।
বলা তো যায় না আর কখনো আসা হয় নাকি!
এর মধ্যেই তাসনোভার ফোন,
>কই তুই?
:-এইতো ঘুরতেছি ফয়সালের সাথে।
>এবার বাসায় আয়।সবাই অপেক্ষা করছে।
:-আসতেছি।
ফয়সাল কে নিয়ে চললাম তাসনোভার বাসায়।ঠিকানা
আগেই ছিলো ফয়সাল সাথে ছিলো তাই সমস্যা হয়
নি।
এই প্রথম আসলাম তাসনোভার বাসায়।নীল-সাদার দুনিয়ায়
বন্ধুত্ব!তবুও কখনো মনে হয় নি ওর সাথে বন্ধুত্বটা
ভার্চুয়ালে।খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে।
বাসার ভিতরে গিয়ে দেখি অনেক লোকজন।
তাসনোভা আঙ্কেল,আন্টির সাথে পরিচয় করিয়ে
দিলো।তারা খুব সহজেই আমাদের আপন করে
নিলো।আসলে বন্ধুত্ব মনে হয় এমনি হয়।
সত্যিকারের বন্ধুত্বগুলোর মধ্যে অন্যরকম একটা
মায়া থাকে।থাকে না কোনো মোহ।
অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে।আস্তে আস্তে বাড়ির
লোক জন খালি হয়ে গেলো।বেলকনিতে এসে
সিগারেট ফুঁকছি। এই সময়ে তাসনোভা আসলো,
>তুই আর ভালো হবি না?
:-ভালো আর খারাপ!
>অহনার কথাটাও রাখবি না?
:-সব ই রেখেছি শুধু সিগারেট বাদে।
>জানি তোকেও বলে লাভ হবে না।যাই হোক
আসলি তাহলে আমাদের এখানে।
:-হুম।
>কিছুদিন থাক আমাদের শহরে।
:- রাতেই চলে যাবো।১০ টায় ট্রেন।
>আজ ই কেনো?
:-তুই ভালো করে জানিস যখন যা মন চায় তাই করি।
>কি আর বলবো তোকে।স্মৃতিগুলো ভুলার চেষ্টা
কর।
আমি আর কিছু না বলে মুচকি হাসলাম।
তাসনোভার বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। গন্তব্য
রেল স্টেশন।
এই অল্প সময়ে আঙ্কেল,আন্টি সহ সকলের
অমায়িক ব্যাবহার ভুলার মতো না।
.
স্টেশনে দাড়িয়ে আছি।ট্রেন ছাড়তে আরো ১৫
মিনিট বাকি।কয়েক বছর পরে ফয়সালের সাথে দেখা
হলো।জানিনা আবার কবে দেখা হবে।হয়তো নিয়তি
দেখা করার সুযোগ করে দিবে।।ফয়সাল মনে হয়
কিছু বলতে চায় ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।আমি
বললাম,
>কিছু বলবি?
:-নিজেকে বদলে ফেল।
আমি শুধু মুচকি হাসলাম। চেষ্টা করবো প্রিয় বন্ধুর কথা
রাখতে।
এর মধ্যে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে।আস্তে
আস্তে ট্রেন চলতেছে আর ক্রমশ ই ফয়সাল
দুরে যাচ্ছে।এভাবেই চলছে জীবন,কাটছে সময়।
সব কিছু ছাপিয়ে টিকে যাচ্ছে বন্ধুত্বগুলো।
ভালো থাকুক প্রিয় মানুষগুলো।ভালো রাখুক
সবাইকে।
.
লেখা:K.H.TUSHAR
#রি_পোস্ট
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŽāĻ্āĻāϞāĻŦাāϰ, ā§Ģ āĻĄিāϏেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3682
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ē:⧍ā§Ŧ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ