"অামি ধর্ষক"
.
.
তিন দিন ধরে অামার বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেদিন কলেজ থেকে অার ফিরে অাসেনি অামার চঞ্চল বোনটি।
এই তিন দির ধরে প্রচুর খুঁজেছি অামি, কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যদি অামার একমাত্র অাদরের বোনের কিছু হয়ে যায় তাহলে অামি বাঁচবো না। খুব ভালোবাসি অামি অামার বোনকে, নিজের জীবনের চেয়েও বেশি।
এলাকার কোথাও বাদ রাখিনি অামি, সব যায়গায় তন্ন-তন্ন করে খুঁজেছি কিন্তু নাহ্ অামার বোনটিকে অামি খুঁজে পাইনি।
.
অাজ খুঁজতে খুঁজতে চলে অাসলাম অনেক দূরের একটি নির্জন ফাঁকা যায়গায়, বিষণ্ণ মনে খুঁজছি অামি। বার বার কল অাসে অামার ফোনে, ফোন কলে অামি তীব্র ভয় পাই। এই বুঝি অামার বোনের মৃত দেহ খুঁজে পাওয়া গেলো, এই বুঝি কোনো কিডনাপার ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করলো।
কিন্তু যদি অামার বোনকে মুক্তিপণের জন্য কিডনাপ করতো তাহলে এতদিনে কিডনাপারের ফোন চলে অাসতো। কিন্তু এই তিন দিনে কোনো কিডনাপারের ফোন অাসেনি, তাই মনের ভিতর ভয়টা অনল্প কাজ করছে।
.
কেন অামার বোনকে কেউ কিডনাপ করবে? কারো সাথে তো অামাদের কোনো প্রকার শত্রুতা ছিলোনা। অার অামার বোন তো ছোট নয় যে হারিয়ে যাবে, এই এলাকার ওলি-গলি সব ওর চেনা। তাহলে অামার বোন কোথায়? কোথায় হারিয়ে গেলো সে।
তাহলে কি গ্রামের কোনো ছেলের সাথে অামার বোন পালিয়েছে? না এটা কখনো হতে পারেনা।
অামার বোন এইসব ভালোবাসায় বিশ্বাসি নয়, তাছাড়া বোন অামাকে সব শেয়ার করতো। ও যদি কাউকে ভালোবেসে থাকে তাহলে নিশ্চই অামাকে বলতো, যদিও মেয়েরা ভালোবাসার কথা তার ভাইয়ার সাথে শেয়ার করেনা। তবে অামার বোন ছিলো ব্যতিক্রমী, সব শেয়ার করতো অামার সাথে।
.
অামার নির্বিণ্ণ চোখ দুটো চারদিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে অামার বোনকে।
কিছুদূর যেতেই অামি থমকে গেলাম, একটি গাছের সাথে কি যেন ঝুলছে। অামি ভাবলেশহীন চোখে তাকিয়ে অাছি। মনে হয় কারো মৃত দেহ ঝুলে অাছে গাছের একটি মোটা ডালের সাথে।
অামি দ্রুত ছুঁটে গেলাম গাছটির সামনে, সামনে যেতেই অামি ধপাস করে মাটিতে বসে পড়লাম। এ যেন পুরো অাকাশ অামার উপর ভেঙ্গে পড়লো, মনে হয় অামি পুরো অাকাশের ভার সহ্য করতে না পেরে মাটিতে লুটে পড়লাম।
অামার চোখ দুটো যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না, বোনের ক্ষতবিক্ষত দেহটি ঝুলে অাছে গাছের ডালে।
অামি চিৎকার করে কাঁদছি, অামার চিৎকারে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে চারপাশ।
.
কাঁপা কাঁপা হাতে বোনের ঝুলন্ত মৃত দেহটি নামিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম অামি।
অামার অার্তনাদ এই নির্জন যায়গার কেউ শুনবে না।
অামার বোন ধর্ষিতা, তারা অামার বোনকে নির্মমভাবে ধর্ষন করেছে। অামি বার বার এর জন্য সমাজকে দোষারোপ করছি, হ্যা এর জন্য সমাজই দায়ি। বাঁচতে দিলোনা অামার নিষ্পাপ বোনটিকে।
.
হঠাৎ অাকাশে বিকট শব্দ, চারদিক দিয়ে অস্বাভাবিক ভাবে ভয়ানক অন্ধকার হয়ে অাসছে।
পুরো অাকাশের মেঘ যেন অামার মাথার উপর এসে জমা হয়ে গেছে।
গর্জনের শব্দটাও ভয়নাক, বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেছে।
বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা কাটার মত শরীরে গেঁথে যাচ্ছে।
হঠাৎ অামি লক্ষ্য করলাম একটি মেয়ে অানমনে হেটে অাসছে অামার দিকে।
দূর থেকে অামার মনে হচ্ছে মেয়েটি অামার পরিচিত।
মেয়েটি যত কাছে অাসছে অামি ততই বিস্মিত হচ্ছি, মনে হয় মেয়েটি অামার চেনা কেউ হবে।
.
মেয়েটি যখন সামনে অাসলো তখন অামি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম।
অারে এটা তো মহনা, যে তিনমাস অাগে অাত্মহত্যা করেছে।
অামি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে অাছি মহনার দিকে, চারদিক টা অারো বেশি অন্ধকার হয়ে অাসছে, অামি এমন অন্ধকারে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেলাম।
হঠাৎ মেয়েটি এক ভয়নাক হাসি দিলো, হাসির শব্দে অামার হৃদয় কেঁপে উঠলো।
.
-হা-হা-হা-হা, কি ভয় পাচ্ছো? ভয় পাওয়ার কিছু নেই
.
-তু...তু...তুমি তো অাত্মহত্যা করেছিলে। তাহলে এখানে কি করে তুমি?
.
-অাত্মহত্যা? কে অাত্মহত্যা করেছে অামি? অামি অাত্মহত্যা করিনি। তুমি অামাকে মেরেছো সজিব
.
-অামি?
.
-হ্যা তুমি, শুধু অামাকে নয় অারো শত মেয়েকে তুমি মেরেছো। এই মৃত্যু গুলোর জন্য তুমিই দায়ি।
অাজ তোমার বোনের এমন অবস্থা দেখে তুমি কেন চিৎকার করে কাঁদছো?
যখন অন্য বোনের সতিত্ব নিয়ে খেলছিলে তখন কি তোমার মনে কাজ করেনা তোমার একটা বোন অাছে। তার সাথে এমন হলে তোমার কেমন লাগবে?
অামি বলবো তোমার বোনের সাথে যা হয়েছে তার জন্যও তুমিই দায়ি।
.
অামি কিছু বলছি না, বলার মত শক্তি অামার নেই। শুধু হতবাক হয়ে শুনে যাচ্ছি অামি।
.
-অাজ কেন এই সমাজকে দোষারোপ করছো তুমি? তোমার মাথায় কি এই কথাটি কখনো অাসেনি? ক্ষনিকের অানন্দের জন্য তুমি অামার মত শত মেয়ের সাথে প্রেমের নাটক করে দেহ ভোগ করে তাদের মানুষিক ভাবে হত্যা করে অাসছো।
মেয়েদের অাসল হলো সতিত্ব, এটা যদি কোনো মেয়ে হারিয়ে ফেলে তাহলে সেই মেয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবে এই সমাজের বুকে?
অামি অামার মত শত মেয়েরা যারা তোমাকে বিশ্বাস করেছে তারা কিভাবে নিজের নষ্ট শরীর নিয়ে অন্য কে ঠকিয়ে তাকে বিয়ে করবে?
অামার সাথে যা হয়েছে ঠিক তাই হয়েছে তোমার বোনের সাথে, কোনো মেয়েই এই নষ্ট শরীর নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়না। যেমনটি চায়নি তোমার বোন।
তুমি পাপ করেছো, পাপের প্রায়শ্চিত্ত তোমাকে পেতেই হবে।
এখানেই শেষ নয় সজিব, এর চেয়েও ভয়ানক কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। নিজেনে প্রস্তুত রেখো
.
মুহুর্তেই বাতাসের সাথে বিলিন হয়ে গেলো মহনা, অাকাশের মেঘেরা হঠাৎ করে মাথার উপর থেকে পালিয়ে গেছে। চারপাশ অাগের মত স্বাভাবিক হয়ে গেছে, বৃষ্টিও থেমে গেছে এখন। অামি নিস্তব্ধ হয়ে এখানেই বসে অাসি।
হ্যা মহনা যা বলেছে সবই সত্যি, খুব ফুর্তিবাজ ছিলাম অামি।
কোনো সুন্দরি মেয়ে দেখলেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি তখন, ঝাপিয়ে পড়তাম মেয়েটির উপর। পশুর মত তার দেহ কে ছিড়ে খেতাম অামি।
.
তখন মনের ভিতর একটা কথাই কাজ করতো, কেন করবো না অামি? অাল্লাহ্ অামাকে অঙ্কুশের মত চেহারা দিয়েছে, সালমানের মত বডি দিয়েছে, দিয়েছে অারিজিতের মত গলা।
এইসবেই মেয়েরা অাকৃষ্ট হয়ে যেত অার অামি তার সুযোগ নিব না কেন?।
অনেক মেয়ের দেহ ভোগ করেছি অামি, জোর করে হলেও নষ্ট করেছি তার সতিত্ব।
তখন অামার মাথায় এইসব কাজ করেনি মেয়েরা মায়ের জাত ওদের অভিশাপ ভয়ানক। অামি যে মেয়েটির উপর পশুর মত ঝাপিয়ে পড়তাম সেই মেয়েটির অাত্মহত্যার খবরটি অামাকে হাসাতো খুব হাসাতো
.
এখন উপলব্ধি করতে পেরেছি অামি কত বড় পাপি। অামি জানি এর কোনো ক্ষমা নেই, কারন মেয়েরা মায়ের জাত।
এই মায়ের জাত মেয়েদের অভিশাপ অামার সাথে জড়িয়ে অাছে। এই অভিশাপেরই শিকার অামার নিষ্পাপ বোন।
সমাপ্ত
.
লেখাঃ Arif Mahamud
(Silent Writer)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ