গল্প- কালো মেয়ে_
.
আব্বা উঠানে পা রেখেই আম্মা কে ডেকে
বললেন কই গো আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে
যাও, আম্মা রান্না ঘর থেকে আব্বার ডাকে
সাড়া দিয়ে বললেন আসছি,আব্বা উঠানের ধারে
চেহারে বসতে না বসতেই আম্মা পানি নিয়ে
হাজির,আম্মা আব্বা কে বলতে লাগলেন
আপনাকে এতো বিষণ্ণ লাগছে কেন,আব্বা
পানির গ্লাস হাতে নিয়ে গ্লাসে এক চুমু দিয়ে
বলতে লাগলেন আর বলো না ওই যে আমাদের
রহীম ভাই আছেন না ওনার বাসাই একটু
গিয়েছিলাম,রহীম ভাই এতো করে জোরাজুরি
করলেন না জেয়ে পারলাম না ওনার মেয়ে রুপা
কে পাত্রপক্ষ আজও দেখতে আসছে।
.
আম্মা আব্বার কথা শেষ না হতেই বলতে লাগলেন
সে আবার নতুন কি, এই পর্যন্ত কত পাত্র এলো আর
গেলো, রহীম ভাই মেয়েটা কে নিয়ে কতই না
বিপদে আছেন,তো আজ কি কিছু সুরাহা
হলো,আব্বা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন কি আর
বলবো শুরুতেই সব ঠিকঠাক ছিল,কিন্তু রুপাকে
দেখার পর ওরা বেঁকে গেল,এবার ও মেয়েটার
কোন গতি হলো না।রহীম ভাইয়ের মুখপানে
তাকানো যাচ্ছিল না,বেচারা খুব হতাশাই
ভুগতেছেন।
.
আম্মা তখন বলে উঠলেন ভাগ্যিস আল্লাহ
আমাদের কে কোন মেয়ে সন্তান দেন নাই,যদি
রুপার মত কালো হত হয়তো আমাদের অবস্থা ও
রহীম ভাইয়ের মত হতো,আমাদের এক মাত্র ছেলে
তাতেই আমরা খুশী, ছেলে কালো হলেও কোন
সমস্যা নাই,আম্মার কথাই আব্বা মাথানাড়া
দিয়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি প্রকাশ করল।
.
আব্বা আম্মা কে বলে উঠলেন রাজ কোথাই?ও
হ্যাঁ আমি রাজ আব্বা আম্মার একমাত্র
সন্তান,আমি একটি প্রাইভেট ভার্সিটি তে
পড়ি,ঈদের ছুটিতে বাসাই এসেছি। যারা
এতোক্ষণ রুপার বিয়ে নিয়ে কথোপকথন
করছিলেন তারাই আমার আব্বা আম্মা....
আব্বার কথা শেষ না হতেই আম্মা বললেন রাজ
ওর রুমেই আছে,আর হ্যাঁ আমি রুমে থেকেই রুপা
আপুর সব কথাই শুনেছি,খুব খারাপ
লেগেছে,কালো বলে একটা মেয়ের বিয়ে হবে
না,সে কি মানুষ না?আমরা কোন সমাজে আছি
আরো নানান প্রশ্ন আমার মাথাই ঘুরপ্যাক করছে।
.
আব্বা আমাকে ডাকলেন রাজ...
আমি আব্বার ডাকে সাড়া দিয়ে বলছি আব্বা
আসতেছি,আব্বার সামনে এসে দাঁড়ালাম,আমি
এমনিতেই ভদ্র, আব্বা আম্মার সামনে আরেকটু
বেশি,আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি,আব্বা
বলতে লাগলেন বাবা রাজ কাল তো চলে যাবি
হলএ তোর তো ছুটি শেষ,বাবা একটু মন দিয়ে
লেখা পড়া করিস,তোকে নিয়ে আমাদের অনেক
গর্ব,আব্বা কথাগুলো বলছেন আর আমি হ্যাঁ সূচক
মাথানাড়ছি।
.
যাই হোক পরের দিন আব্বা আম্মার থেকে
বিদায় নিয়ে রওনা হলাম গন্তব্যের পথে,বাসা
থেকে বিদায় নিয়ে একটা রিক্সায় উঠলাম,একটু
দূর যেতেই আমি ভ্যাবাচেকা খেলাম, দেখলাম
রুপা আপুদের বাসার দিকে অনেক লোক যাচ্ছে,
আমি রিক্সা থামিয়ে তড়িঘড়ি করে বলে উঠলাম
কি হয়েছে এতো লোক কোথাই যাচ্ছে, পাশ
থেকে কেউ একজন বলে উঠলেন আরে তুমি জানো
না রুপা গতকাল রাতে আত্মহত্যা করেছে,আমার
মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,আমি
পাঁচ মিনিট নীরব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম,আর মনে
মনে বললাম এটিই বুঝি নিয়তি।
.
মন এমনিতেই অনেক খারাপ আব্বা আম্মা কে
ছেড়ে চলে যাচ্ছি, রুপা আপুর মৃত্যুর সংবাদ শুনে
আরো মন খারাপ হয়ে গেল,তবুও কিছু করার নাই
নিজ গন্তব্যস্থানে তো যেতেই হবে,কয়েক ঘন্টা
জার্নি করার পর ভার্সিটি হলে
পৌঁছালাম,কিন্তু মন কে কিছু তেই বুঝাতে
পারছি না,সব চেয়ে বেশি কাঁদাচ্ছে রুপা আপুর
আত্মহ্ত্যার ব্যাপারটা,ভাবতেই পারছি না শুধু
মাত্র কালো হওয়ার কারণে একটা মেয়ে কে
পৃথিবী ছাড়তে হলো...
.
বন্ধুদের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করলাম তারা
অনেক বুঝালো,আর আমিও ধীরে ধীরে
স্বাভাবিক হলাম,ইতিমধ্যে মাস্টার্স ফাইনাল
পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ হলো,প্রিপারেশন
ভাল,পরীক্ষা ও দিয়ে দিলাম, বাসাই ফিরবো
মনস্থির করলাম,
কিন্তু না বন্ধুরা বললো পরীক্ষা মাত্র শেষ হলো,
আর কবে দেখা হবে না হবে দুই তিনদিন ঘুরবো
তারপর বাসাই যাবো,অনেক চিন্তা ভাবনার পর
বললাম আচ্ছা ঠিক আছে,..
.
অনেক ঘুরাঘুরি করলাম দুই দিন শেষ,তৃতীয় দিন
আমাদের প্ল্যান আমরা নদী দেখতে যাবো আর
পরের দিন যে যার গন্তব্যপথে......
যাই হোক নদী দেখতে যথাসময়ে বের হলাম
আবহাওয়াটাও অনেক সুন্দর ছিল।আর বিকেল
বেলার আবহাওয়া টা এমনিতেই সুন্দর হয়,বন্ধুরা
যে যার মত সেলফি তুলতে লাগলো হঠাৎ আমি
লক্ষ্য করলাম একটা মেয়ে নদীর পানে মুখ করে
তাকিয়ে আছে,আমি আর কাউকে কিছু বললাম না
কারণ অনেকেই আসে নদী দেখতে হয়তো
মেয়েটিও নিজেকে নদীর মাঝে হারিয়ে
ফেলছে কিছুক্ষণের জন্য,যাই হোক আমরা
আমাদের মত করে হাঁটছি আর হাঁটতে হাঁটতে
অনেক দূর চলে গেছি তবে নদীর পারেতে হাঁটতে
ভালোই লাগে ঝিরঝির বাতাস মনোমুগ্ধকর...
.
সন্ধ্যাটা ও আজ যেন অনেক আগে ঘনিয়ে
এলো,কি করা রুমে ফিরতে তো হবে,আবার সে
পথ ধরে আসতেছি,কিন্তু কি আশ্চর্য হঠাৎ আমার
চোখ গেল মেয়েটির দিকে একি এ তো সে
মেয়েটি যাকে যাওয়ার সময় দেখে গেলাম,কি
ব্যাপার মেয়েটি কি করতেছে এখানে সন্ধ্যা
ঘনিয়ে আসছে মেয়েটি কি দেখছে না আজিব
তো...
যাবো কি একবার মেয়েটির কাছে, মনে মনে
ভাবতে লাগলাম,আর সামনে তাকিয়ে দেখি
একি আমার বন্ধুরা আমাকে রেখে অনেক দূর চলে
গেছে,আমি যে এখানে দাঁড়িয়ে পরেছি তাদের
খবরও নেই।
.
আমি আর বন্ধুদের কে ডাকলাম না একপা দুপা
করে মেয়েটির দিকে এগুতে লাগলাম,যখন একটু
কাছাকাছি গেলাম আমার বুকের ভিতর দুপদুপ শুরু
হলো,তারপরেও সাহস নিয়ে পাশে দাঁড়ালাম,
আমি মেয়েটিকে বললাম এই যে,
আপনাকে বলছি..?...
আপনি একা একা এখানে কি করেন?
যাওয়ার পথে এমন কি আসার পথেও দেখতেছি
আপনি একেই অবস্থাই দাঁড়িয়ে আছেন?
মেয়েটি আমার কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে
না,নদীর দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে।
আমি তখন বিরক্তির সহিত বললাম আচ্ছা ঠিক
আছে আমি গেলাম, এখন মানুষের উপকার করতে
আসলেও দোষ আজিব....
.
দুপা এগুতেই মেয়েটি হুরমুর করে কেঁদে উঠল, আমি
পিছনে তাকিয়ে দেখি মেয়েটি আমার দিকে মুখ
করে তাকিয়ে আছে,আর কাঁদো কাঁদো কন্ঠে
বলছে আমি কোথাই যাবো আমার কোথাও
যাওয়ার জায়গা নেই,আমি যে বাবা মায়ের
অভিশাপ....
.
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি,আর মনে
মনে বলতেছি কি বলে মেয়েটি এসব,যার
টানা টানা চোখ,মুখের মায়া,লাম্বা চুল, সে
আবার কি অভিশাপ হতে পারে,তবে হ্যাঁ
মেয়েটি কালো,
তখন মেয়েটি বলে উঠল কালো মেয়েরা সমাজের
অভিশাপ,আত্মহত্যা তাদের একমাত্র মুক্তি,
কিন্তু কি জানেন নদীতে জাপ দিবো কিন্তু
দুনিয়ার মায়া ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না,এই
বলে আরো জুরে কাঁদতে লাগো....
.
আমি মেয়েটি কে কি শান্তনা দিব বুঝতে
পারছি না মেয়েটির কথা শুনে রুপা আপুর কথা
মনে পড়ে গেল,দুই মিনিট স্মৃতিপথে হারিয়ে
গেলাম,কিন্তু কি করা বাস্তবতার কাছে সবাই
অসহায়, আমি মেয়েটি কে বললাম আপনি শান্ত
হোন, বাড়ী ফিরে যান, অনেক বুঝালাম,কিন্তু কে
আর কার কথা শুনে,
মনে মনে নিজেকে গালি দিতে লাগলাম কেন
যে দয়া দেখাতে আসলাম,
এই বলে হাঁটা শুরু করলাম, খুবেই বিরক্তি
লাগতেছিল,এমনিতেই বন্ধুরা রেখে চলে
গেছে,কিছুদূর যাওয়ার পর আমার মেয়েটির জন্য
একটু খারাপ লেগে উঠল পিঁছে ফিরে দেখি
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়েই আছে।একদুড়
দিয়ে আবার মেয়েটির কাছে আসলাম,কেন যেন
মায়া হলো চার পাঁচ না ভেবেই বললাম,আমার
সাথে যাবেন,আমি আপনাকে বিয়ে
করবো,কালো হয়েছেন তো কি হয়েছেন আমরা
সবাই মানুষ,মেয়েটি আমার দিকে ফ্যালফ্যাল
করে তাকিয়ে আছে।
.
মাগরিবের আযান হচ্ছে আর আমরাও হাঁটছি, আর
ভাবছি জানি না আমাদের গন্তব্য
কোথাই,আম্মার কথা খুব মনে পড়ছে আম্মা এই
ব্যাপারটা মেনে নিবেন তো,
তবে যাই হবার হোক একটা মেয়েকে তো
আত্মহত্যার হাত থেকে রক্ষা করতে
পেরেছি,নতুন উদিত সূর্য দেখতে পারবো_
জীবনে মানুষ বাঁচে কয়দিন সবাই তো সুন্দর
মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে,বেঁচে থাকে,না হয়
আমি কালো মেয়েটি কে নিয়েই বাকি জীবনটা
কাটিয়ে দিবো ___
.
সবাই যদি রাজের মত চিন্তা করতো হয়তো আর
কোন কালো মেয়ে কে নিয়ে গল্প লেখা হত
না.সবার মুখে হাসি ফুটত,কালো মেয়ে গুলো
আত্মহত্যার কথা চিন্তা ও করতো না_____
.
writer by: Sopno Kumari Koly
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϏোāĻŽāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ģ āϏেāĻĒ্āĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
2296
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§:ā§Ļ⧍ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ