#অবাক_পৃথিবী 5
☆
আজ বাড়িতে বেশ ষোড়গোল হচ্ছে। অনেক আত্নীয়-স্বজন এসেছে। অনেক বললে ভুল হবে আসছে শুধু মাত্র কাকাতো মামাতো দুইটা বোন একটা ভাই। তাতেই যেন বাসাটা জ্বল জ্বল করছে। আসলে যে বাসায় ছোট বাচ্চা বোন থাকেনা সে বাসাটা যেন একটা ফসলহীন শূন মাঠ কিনবা মরা শুকনো বাবলা গাছ। আর ছোট বাচ্চা আসলেই যেন বাসাটা তার প্রাণ ফিরে পায়। যেন মরুভুমিকে বৃষ্টির পানি দিয়ে সাগর বানিয়েছে। আর তাইতো আজ ওদের ডাকে প্রতিদিনের চেয়ে ভিন্ন ভাবে ঘুমটা ভাঙ্গল।
>ভাইয়া তোমার ফোনটা দাও তো… (কাকলি মামাতো বোন)
-না তোদের ফোন দিব না। তোরা গেইম খেলে র্চাজ শেষ করে দিবি… (আমি)
>দাও না ভাইয়া গেইম খেলব না… (স্নিগ্ধা কাকাতো বোন)
-না তোদের বিশ্বাস নাই… (আমি)
>ভাইয়া প্লিজ
*
দুজনে এমন ভাবে কথাটা বলল তাই দিতে ইচ্ছে হল। না হলে দিতাম না। গেউম খেলে আমার ফোনের বারটা থেকে দুইটা বাজাইতো। হায় হায় আমার ফোন কই। ফোন খুজে পাচ্ছি না। এখানেই তো ছিল।
*
-ঐ আমার ফোন কই… আগে ফোন নিয়ে তারপর বলতে আসছিস… দাড়া তোদের দেখাচ্ছি… (আমি)
>ভাইয়া ভাবি কিন্তু অনেক সুইট। আমাদের পছন্দ হয়েছে… (দৌড় দিতে দিতে বলল)
-ঐ তোরা দেখেছিস নাকি…
>হুম এই যে… (আমার ফোনটা দেখিয়ে)
*
কি বুদ্ধিরে বাবা। ঠিক বের করেছে। আর পাবেই বা না কেন। ফোনে তো একজনেরই ছবি। যাই হোক রুম থেকে বের হতেই বুঝতে পারলাম আজ আমার গায়ে হলুদ। আমার কি যে আনন্দ লাগছে। আর মাত্র একটা দিন পরেই ইশিতা আমার একান্ত আমার হতে চলেছে। একটা মাস কিভাবে চলে গেল বুঝতেই পারলাম না। অবশ্য ভাল সময় খুব তারাতাড়ি শেষ হয়ে যায়। বাবার থেকে অভিজ্ঞতা নেওয়ার পর আর কোন সমস্যায় পরতে হয়নি। আমার মন মত সব কিছু হয়েছে। অবশ্য আমিও কোন ঝামেলা সৃষ্টি করিনি। বাবার সাথে একটু দেখা করা দরকার দেখি তার প্রস্তুতি কেমন।
আরে বাপ রে… সমস্ত ঘর পারফিউমের সুবসে ভরে গেছে। একদম সকাল সকাল শুরু করে দিয়েছে।
-বাবা এত সাজুগুজু তাও আবার এত সকাল সকাল… (আমি)
>কই সাজলাম… (বাবা)
-পারফিউম দিতে দিতে ঘরে র্দুগন্ধ ছড়াইছো আবার বলছো কই সাজতেছো…
>হুম… কিছু বললি…
-আমি… কই কিছু না তো…
*
বলেই বাবার রুম থেকে বাইরে আসলাম। দুপুরের পর থেকে আত্নীয় স্বজন আসতে শুরু করল। আর বাবা একের পর এক ট্রাই মেরে চলেছে। অনেক জনকে আবার পটিয়েও ফেলেছে। আমি শুধু দেখে যাচ্ছি। কিছু করার নেই। আমি যে দলিল ভুক্ত। কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে গেলে বলে ভাবি কেমন। আর কিভাবে কি হল এইসব। আমার মামাতো ভাইটাও কম যায়না। সব মেয়েকে ট্রাই মেরেই চলেছে। কিন্তু বয়সটা কম তো তাই থাপ্পরের বদলে গালে চুমু পাচ্ছে। আমার মত বাবলা কাঠের মত ওর কপাল নয়। আমার এখনও মনে আছে সোনালি আপুর বিয়েতে এই রকম ট্রাই মারতে গিয়ে কত না থাপ্পর খেয়েছি। আউচ্ কথাটা মনে হলে আপনা আপনি গালে হাত চলে যায়। আর ও আহ্ আমাকে যদি এভাবে কেউ চুমু দি…
-এই এই কি হচ্ছে কি… (আমি হতবম্ব হয়ে)
>আয় হায়… জ্বলে গেল জ্বলে গেল… (কিছু কমন্ জেন্ডার)
-এই কি হচ্ছেটাকি ছাড়ো আমাকে… কে আছো আমাকে বাঁচাও… (নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে)
>আহ্ মজনু এত লাফা-লাফি কর কেন… কাছে আসো না… (কমন জেন্ডার)
-আমার মা প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেন… (কাদোঁ কাদোঁ কন্ঠে)
>ও হিরো এসব কি বলছো জআআআআন বলো না…
-বাবা বাঁচাও…
*
সবাই বেশ মজা নিচ্ছে আমার অবস্থা দেখে। কি জন্য যে চুমু চাইলাম কে জানে। আমার সব শেষ। ইশু তোমায় আর কিছু দিতে পারব না। আমার সব শেষ।
*
-কি হচ্ছে কি এখানে হুম… (বাবা রাগী গলায়)
>ওহহ্ হট বয়্ (বাবার আপদমস্তক দেখে ওদের মধ্যে একজন)
-এই না না একদম না… (পিছাতে পিছাতে বাবা)
*
অতঃপর আমাকে ছেড়ে ওরা সবাই বাবাকে এক ধাক্কায় রুমে ঢুকিয়ে ফেলেছে। আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। এই প্রথম বার বাবা ভাল মত ফেসেছে। আমার খুব নাচতে ইচ্ছে করছে।
হৈ হৈ হৈ হৈ হৈ হৈ হৈ হৈ হৈ… পুরো লুঙ্গি ডান্স দিতেছি। খেয়াল করলাম চারিদিকে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আমার এমন আচরণ দেখে। অবশ্য অবাক হওয়ারই কথা। কিন্তু যে কি আনন্দ লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।
-আর একটু অপেক্ষা করেন আগে নেচে নেই…. (সবাইকে বললাম)
অতঃপর আবার নাচতেছি। কিন্তু কি হচ্ছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। ওরা সবগুলো এভাবে দৌড় দিয়ে যাচ্ছে কেন। আর বাবা আরে বাপ..রে পারফিউম দিতে দিতে বের হচ্ছে। চারিদিকে তাকিয়ে বেশ লজ্জায় পরে গেলাম। বাবাকে এরাও শায়েস্তা করতে পারল না। আর এখানে এক মূর্হুত নয়। সোজা রুমে ঢুকলাম।
*
অতঃপর সেই ক্ষণ উপস্থিত। যে ক্ষণে আমাকে ভাজার জন্য তৈরী করা হবে। কয়েকজন মিলে আমাকে ঘর থেকে বের করল। অতঃপর যথাস্থানে আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সব নিয়ম কানুন বেশ ভাল ভাবে মানা হচ্ছে। তবে একটা জিনিস বুঝলাম শুধু বিয়ে করলেই নয় অনেক কিছু করতে হয়। অত সোজা না বিয়ে করা।
সব নিয়ম শেষে আমার গালে হলুদ ছোয়া শুরু হল। যার এক অনুভুতি অন্যরকম। একে একে সবাই একটু একটু করে লাগিয়ে দিল। অন্য দিকে নাচ চলতেছে। অনেকে টানাটানি করছে ওদের সঙ্গে নাচার জন্য কিন্তু কেমন জানি লজ্জা লজ্জা লাগছে তাই যেতে নারাজ। কিন্তু স্নিগ্ধা আর কাকলি ঠিকি আমাকে ওদের সাথে নাচালো।
অতঃপর গায়ে হলুদ পর্ব শেষ। সবাই অনেক পরিশ্রান্ত। এখন প্রায় রাত ১টা বাজে। সবাই ঘুমে বিভোর। কিন্তু আমারে কেন জানি ঘুম পাচ্ছেনা। তবুও তো ঘুমাতে হবে। অতঃপর আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।
*
পরের দিন…
চোখটা খুলতে একটু কষ্ট হচ্ছে তবুও খোলার চেষ্টায় আমি ব্যস্ত। কিন্তু সব কিছু ঝাপসা দেখছি। আপছা আপছা অনেক গুলো মেয়ের মুখ দেখতে পাচ্ছি। কেউ হাসতেছে তো কেউ আবার মুখটা কালো করে রেখেছে। পরক্ষনই আবার দুই পাটি দাত বের করে হাসতেছে।
অতঃপর চোখ ঘষতে ঘষতে শরীরটা একটু মোচর দিলাম। কিন্তু বড্ড ভার অনুভব করছি। চোখ খুলে দেখতেই আমার চোখ কপালে। পুরো পিচ্চি পল্টন আমার উপর। আমি মাথা তুলতেই মেয়েগুলো সব অবাক। আমাকে হয়তো ওরা এখানে আশা করেনি।
>ভাইয়া তুমি এখানে কিভাবে এলে… (স্নিগ্ধা)
-ওই চোখে কি ছানি পরছে নাকি… আমার রুমে আমি থাকব না তো কে থাকবে… (আমি)
>আরে রাগ কর কেন… আজ না তোমার বিয়ে রাগ দেখালে তোমার বাসরঘর সাজিয়ে দিব না…
-না দিলি তাতে কি… ওই খানেই থেকে যাব…
>ভাইয়া তুমি ঘর জামাই হবা…
-হওয়ার তো কোন ইচ্ছা নাই কিন্তু তোরা যদি চাস তাহলে হব… হাজার হলেও তোরা আমার দুষ্ট মিষ্টি ছোট বোন তোদের কথা কি ফেলতে পারি…
>হইছে হইছে আর দরদি কথা বলতে হবে না… ভাবির সাথে একবার কথা বলাইলা না আর বড় বড় কথা… (কাকলি)
-ভাবি দিয়ে কি করবা। তোমাকেই বিয়ে করি… তুমি না আমাকে পছন্দ করতা… (আমি)
>কখন পালাবা বলো… আমি রেডি আজকেই বিয়ে করব… (কাকলি উৎসাহিত ভাবে)
-বলো কি… তুমি তো শুধু আমাকে পছন্দ করতা ভালতো আর বাসতা না… ভাল না বাসলে কি বিয়ে করা যায়… (আমি)
>ভালবাসিতো…
-তাই কতটুকু…
>অনেক অনেক অনেক…
-হুম… কিন্তু আমি য়ে বাসিনা… (মজা করে)
>বিয়ের পর আমার ভালবাসা দিয়ে তোমাকে জয় করে নিব…
-কিন্তু যদি না পারো… (কি কথা রে বাবা)
>তাহলে তুমি তোমার ভালবাসাকে কাছে টেনে নিও আর… (একটু থেমে গিয়ে)
-আর… (জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)
>আমাকে তোমার পায়ের কাছে একটু ঠাই দিও…
-চলো…
>কোথায় বিয়ে করতে…
-না আমাকে বিয়ে করবে আমার মা কে বলবা না…
>আচ্ছা চলো…
*
কি মেয়েরে বাবা। সবে পড়ে দশম শ্রেণীতে আর বলে কি সব কথা। চিন্তা করে পাইনা। এদের এসব শেখায় কে। জানি এই বয়সে একটু আবেগ বেশি হয়। কিন্তু তাই বলে এমন। আর ওদের দোষ দিয়ে কি করবো আমিও তো কম না। কত গুলো মেয়ের সাথে টাংকি মারছি তার কোন ঠিক নেই। যাই দেখি মায়ের কাছে…
-এই যে মিস্ স্বপ্না আপনার কি একটু সময় হবে… (আমি)
>হুম বলো। যা বলার তারাতাড়ি বলো… আমার সময় নেই… (মা)
-না না আমি কিছু বলব না… বলবে তো আপনার ভাইয়ের মেয়ে… কাকলি
>কি বলবে মা বলো…
-কি রে কি হল বল কি বলবি… (আমি)
<দেখোনা আন্টি তোমার ছেলে তার ফোনটা একটুও দিচ্ছে না। কোন একটা মেয়ের সাথে শুধু কথা বলেই যাচ্ছে… (কাকলি)
-না না মা ও মিথ্যা কথা বলছে… ও তো ঐ কথা বলতে আসে নাই… (আমি)
<তুমি চুপ কর। তোমাকে আমি ভাল করে চিনি। ওকে ফোনটা দাও… (রাগী গলায় মা)
*
কি আর করার অতঃপর ফোনটা দিলাম। কিছু তো বলতে পারবো না। আমার কথা তো বিশ্বাস করবে না। আর ও যে কথা বলতে এসেছিল সেটা বললে তো আরও বিশ্বাস করবে না।
*
বিকালে আমাকে সাজানো হচ্ছে। আর সাজানোর দায়িত্ব তো স্নিগ্ধা আর কাকলি নিয়েছে। ওদের মন মত আমাকে সাজাচ্ছে আর কাকলি ওর সব আবেগের কথা আমার কানে বলেই যাচ্ছে। কিন্তু আমার একটাই কথা ভীতু।
অতঃপর আমি প্রস্তুত। সবাই গাড়িতে ওঠা নিয়ে ব্যস্ত। সন্ধ্যায় আমরা গাড়ি ছাড়লো। যেতে খুব বেশিক্ষণ লাগবে না।
*
অতঃপর আমরা উপস্থিত বিয়ে বাড়িতে। সুন্দর ভাবে গেট ধরেছে কিছু শালিকা। আহ্ কি মিষ্টি দেখতে। অবশ্য গেটে মেয়েদের সাথে ঝগড়া করতে আমার ভালই লাগে। কিন্তু লাগলে কি হবে। আমি আজ বন্দি। এত দিন আমি যাদের বিয়েতে মজা নিয়েছি আজ তাড়া আমার বিয়েতে মজা নিচ্ছে তাও আবার আমার িএমন সুইট সুইট কিউট কিউট শালিদের থেকে। ইশশশশ…রে…
>দুলাভাই এই নেন মিষ্টি মুখ করেন… (কিউট একটা মেয়ে)
-হুম…. (কোন একটা মেয়ের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম)
>হা করেন…
-হুম… (হা করে)
*
মনে হয় ওদের ঝগড়ার পর্ব শেষ। যাক্ বাবা ভালই হয়েছে। এত কিউট কিউট শালির সাথে ঝগড়া হুম্।
*
>না না এটুকু খেলে হবে না… পুরোটা খেতে হবে…
-বাবা কত আদর খেয়ে নেওয়াই ভাল। (মনে মনে)
>কি হল… খেয়ে নেন…
-হুম… হুম (মুখে পুরে)
*
ও মা গো আমার দাঁত সব শেষ। মিষ্টির মধ্যে তো পাথর। কি করব বের করে তো আর ফেলতে পারবো না। আমার চোখ তো মাথার উপরে। আর মেয়ে গুলো হেসেই যাচ্ছে। আমি কি বোকা এদের আমি সুইট আর কিউট বললাম। যারা আমার দাত ভাঙ্গতে চেয়েছে। কিন্তু আমি কি করব বের তো করতে পারবো না। অতঃপর বুদ্ধি করে ওটাকে হাতে নিলাম। আর ওদের বোঝালাম যে আমি পাথরটাকেও খেয়ে ফেলেছি।
-তোমার খবর পরে করছি… (ওদের চোখে চোখ রেখে চোখে চোখে বলে দিলাম)
*
অতঃপর সেখান থেকে রেহাই পেলাম। কিন্তু বাড়ির গেটে যেতেই আর এক ঝামেলা বাড়ির সব মহিলারা আমাকে বরণ করতে আর মিষ্টি খাওয়াতে এসেছে। না তো করতে পারিনা। তবে যত গুলো মিষ্টি খেয়েছি তাতে এ জন্মে না হলেও পরের জন্মে ঠিকউ ডাইবেটিস হবে।
এই পর্ব শেষ হতেই আমাকে একটা রুমে নেওয়া হল। আমি আমার পাশে আমার দুই বোন আর মিষ্টি কয়েকটা শালি। দরজা খোলা থাকায় অনেকটা দেখঅ যাচ্ছে। বাইরে বেশ কয়েকটা সুন্দরী একা একা ঘুরছে। কেন যে বিয়েটা করতে গেলাম। না হলে এতক্ষণ ওদের সাথে বেশ একটা জমাইতাম।
*
কিছুক্ষণ পর বাড়িতে একটা হৈ চৈ পড়ে গেল। কারণটা অজানা। সবাই আমার রুম থেকে বের হয়ে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর মামাতো ভাইটা বলে গেল আজ নাকি ইশিতার বড় ভাই মানে আমার শালা বাবু বিয়ে করে বউ নিয়ে আসছে। কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। কিন্তু আমার কি কিছু করা উচিৎ নাহ্ আমি নতুন বর আমি কি করব।
অনেক ভাবারপর সেখানে গেলাম ঘটনা সত্যি। সে বিয়ে করে এসেছে… অনেকক্ষণ যাওয়ার পর…
-আপনারা যদি একটু চুপ করেন তাহলে আমি কিছু কথা বলতাম… (আমি)
>তুমি কি বলবে বাবা। আমারই সব দোষ এমন কুলাঙ্গার ছেলে জন্ম দেওয়া… (কাকু)
-না কাকু আপনার কোন দোষ নেই এতে। আমাকে একটু সময় দেন আম সব ঠিক করে দিচ্ছি…
>দেখো বাবা তুমি একটু বুঝাও…
-আমি আর কি বুঝাবো… এই যে আপনি বিয়ে করেছেন একবারও কি বাবা মাকে বলার প্রয়োজন মনে করেন নি। আপনাকে জন্ম দিয়েছেন ওনারা। তারপর আপনার দেখাশুনা পড়া লেখা আপনার পোশাক আশাক ইত্যাদির জন্য কি শুধু আপনার বাবা মা। এত কষ্ট করে যাকে মানুষ করেছে তার কি এটুকু স্বাদ নেই যে তার ছেলের বিয়ে দেখে… (আমি)
>আমি আসলে… (শালাবাবু)
-না আপনি আসলে কি… আপনি যা করেছেন ঠিক করেছেন তা আমি মানছি। জীবনের সব চেয়ে বড় সিধান্ত জীবন সঙ্গীনী নির্বাচন করা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি আপনার বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে তা করবেন।
>বিশ্বাস করো আমি বাবা মাকে কষ্ট দিতে চাইনি…
-তাহলে কি করতে চেয়েছেন…
>দেখ এই মেয়েটার বাবা মা নেই। আজই আমার সাথে পরিচয়। ওর কাকা কাকি একটা বৃদ্ধ লোকের সাথে বিয়ে দিতে চায়। তাই ও পালিয়ে আসে আর আসার পথে আমার সাথে দেখা। তখন আমি কারণ জানতে চাইলে সে সব খুলে বলে। ও বিয়ে করবে না বলে বাসায় মিথ্যে বলেছে যে সে বিবাহিত। কিন্তু সে স্বামী কোথায় পাবে। আমাদের সমাজে ভারাটে বউ পাওয়া যায়। কিন্তু স্বামী না। আর তাই ও আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। তাই আমি ওকে বাঁচাতে গিয়ে বিয়ে করি… (শালাবাবু)
*
শালাবাবুর কথা শুনে তাকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে। কিন্তু সবাই মানতে নারাজ…
-দেখেন আপনি যা করেছেন তা মানবিক দিক দিয়ে ঠিক। কিন্তু আপনি ঐ সমাজের কথা বললেন… হ্যাঁ আসলেই আমাদের সমাজটা বড়ই অদ্ভুত। দোষীকে র্নিদোষ বলছে। খুনীকে বলছে সাধু বাবা। আবার কিছু লোকতো তার পায়ের ধুলো মাথায় ঠেকাচ্ছে। এখানে মেয়ে ছেলের হাত ধরলে মেয়েটা পতিতা। আবার যারা পতিতা বলছে তারাই আবার রাতে তার কাছে যাচ্ছে। ছেলে মেয়ে প্রেম করে গোপন রেখে তাকে বাবা মায়ের পছন্দ বানিয়ে বিয়ে করলে ছেলে ভাল। আর পালিয়ে বিয়ে করলে কুলাঙ্গার। কিন্তু এত র্পাথক্য কোথায়। যেথানে জোড় করে পছন্দ করানো হচ্ছে তার চেয়ে তো পালিয়ে বিয়ে করা ছেলেটাই ভাল। কিন্তু আমাদের সমাজ মানতে নারাজ। বিদ্যুত প্রকৃত পক্ষে ঋণাত্বক হতে ধনাত্বক প্রান্তের দিকে যায়। কিন্তু আমরা বলি না ধনাত্বক হতে ঋণাত্বক প্রান্তে যায়। আমাদের সমাজটা এমন চোখে যা দেখে তাকেই ঠিক মনে করে। কিন্তু চোখের আড়ালে কি হচ্ছে সেটা দেখে না। চুরি যেই করুক না কেন যার ঘরে চুরির জিনিস পাওয়া যায় তাকেই চোর বলে আমাদের সমাজ। আপনি যতই ভাল কাজ করেন না কেন… সমাজ মানতে নারাজ এটাই তো অবাক পৃথিবী… (আমি)
>হুম তুমি ঠিক বলেছো… আমার এখানে জায়গা নেই। বাবা-মা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি তোমাদের মনে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু যেহেতু আমি এই মেয়েটিকে বিয়ে করেছি অতএব ওর দায়িত্ব এখন আমার। আমি তো তোমাদেরই ছেলে তাই মেয়েটার জীবনটা তো নষ্ট করে দিতে পারি না। তোমরাই তো শিখিয়েছো… যে জীবন গড়ে দিতে আমি পারি কিন্তু কারো জীবন নষ্ট কি করে করি। জানি তোমাদের কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তোমাদের চেয়ে আমার কষ্টটা বেশি হচ্ছে তোমাদের ছেড়ে যেতে হবে আমি কখনও কল্পনা করিনী। তোমাদের কষ্ট নিরসনের একটা উপায় বলে দিয়ে যাচ্ছি আমি… আমি জানিনা আমার কথা তোমাদের মনে পড়বে কি না তবে যদি মনে পরে তাহলে তোমরা কষ্ট পেয়োনা। মনে করিও আমি কোন দিন তোমাদের ছেলে ছিলাম না। মনে করিও আমি মরে…
<এই কথা আর একবার মুখে এনে দেখ। অনেক বড় হয়ে গেছিস না। অনেক বড় বড় কাজ করছিস। আমাদের তো একটু বোঝার সময় দিবি… (শালা বাবুর কথা শেষ না হতেই মুখে আঙ্গুল রেখে কাকিমা)
>কিন্তু মা… (শালাবাবু)
<আর কোন কিন্তু নয়। বৌমা অনেকক্ষণ ধরে বাইরে দাড়িয়ে আছে। ভিতরে নিয়ে আয়… (কাকিমা)
>দাড়াও… (কাকু)
-কাকুর আবার কি হল। সব একদম থমথমে করে দিল (মনে মনে)
>নতুন বউ বরণ করে নেও আগে তারপর না ভিতরে নিবে… (সবাইকে অবাক করে দিয়ে কাকু কথাটা বলল)
*
অতঃপর বিযেটা মেনে নেওয়া হল। আমার মনে খালি ধুক ধুক ধুক করছে আমার বিয়েটা যে কখন হবে। রাততো প্রায় শেষ। ধুর আর ভাল লাগেনা।
কিছুক্ষণ পর…
বিয়েটা আমাদের সম্পন্ন হলো। আমিও কারো দায়িত্ব নিলাম। বিয়ে হতে হতে রাত শেষ হয়ে গেছে। র্সূযের লাল আভা চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে। আমাকে আর ইশিতাকে পাশাপাশি বসানো হয়েছে। লাল আভা এসে পরেছে আমার বউটার ময়দা মাখা গালে। বেশ লাগছে। তবে সারা রাত্রি জাগরণের ফলে ওর চোখে মুখে ঘুম বিরাজ করছে। মনে মনে বলছি আর একটু সোনা তারপর আমার কাধে ঘুমিও।
অনেক্ষণ হয়ে গেছে এবার আমাদের বিদায়ের পালা। আসার সময়…
>তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব আমার ভাষা নেই… (শালাবাবু)
-আরে না কিছুই বলতে হবে না। এটাতো আমার কর্তব্য… (আমি)
>কর্তব্য কি করে…
-আরে আপনি আমার শালাবাবু না…
>ইশিতা বলেছিল আমায় তুমি অনেক ফাজিল… সত্যিই তুমি ফাজিল…
-কিহ্ এই কথা বলেছে…
>আচ্ছা বাদ দাও। তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ… (আমার হাত ধরে)
-আরে আরে কি করছেন কি… (আমি)
<আমি ভাবতাম আমার ছেলে একটা গাধা… কিন্তু আজ আমার গর্ব হচ্ছে… (বাবা)
-ও তাই… তুমি আমাকে খুশি করেছো যাও আজকে আর তোমার পিছনে লাগব না… (আমি)
<হুম এখন গাড়িতে গিয়ে বসো…
*
বাবার আদেশে গাড়িতে গিয়ে বসলাম। পাগলিটা কই দেখছি না কেন… উঁকি দিতেই দেখতে পেলাম মেয়েটা কেদে কেদে কি অবস্থা করেছে। আসতেই চাচ্ছে না পরিবার ছেড়ে। আসলেই আমার ও খুব খারাপ লাগছে। কি এক অবাক পৃথিবী যারা ছোট বেলা থেকে আজ পযন্ত এত কষ্ট করে বড় করল আগলে রাখল আজ তাদের ছেড়ে একটা অচেনা জায়গায় অচেনা পরিবার একটা অচেনা লোকের সাথে বাকিটা জীবন কাটাতে হবে। আর এ নিয়ম শুধু মেয়েদের জন্য। কেন এমন আমাদের সমাজ…
>বাবা আমার মেয়েটাকে দেখে রেখ… (কাকিমা না এখন শাশুড়ি মা)
-হুম… (শাশুড়ি মার ডাকে বাস্তবে)
<দেখে রেখ বাবা আমাদের মেয়েটা একটু অবুঝ ওকে একটু চালিয়ে নিও… (শশুড়)
-কত অবুঝ সে কি আর আমি জানিনা… (মনে মনে) মাথা নেড়ে জবাব দিলাম
*
গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। আর মেয়েটা গাড়িতেও অবিরাম কেদেই যাচ্ছে…
-এই যে অবুঝ খুকি এভাবে কাঁদলে তো গাড়িতে বন্যা হয়ে যাবে… (আমি)
>….???? (কেঁদেই চলেছে)
-বাড়ির সবার কথা মনে পরছে… (নরম সুরে)
>…???
-দেখ সব মেয়েকে তো একদিন বাবা মাকে ছেড়ে স্বামীর সংসার করতে যেতে হয়। তুমিও তার ব্যতিক্রম নও। আমার দিকে দেখো…
>বাবা মার কথা খুব মনে পরছে… (আমার দিকে দেখে)
-ঠিক আছে। কয়েক দিন পর তো ঠিকই আসবা। তখন অনেক করে দেখবা। এখন চুপ কর। কি করেছো কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল করে ফেলেছো… (চোখের জ্বল মুছতে মুছতে)
*
অবশেষে কান্না বন্ধ হল। আমর ডান হাতটা ধরে কাধে মাথাটা রাখল। অন্যরকম অনুভুতি এক বিয়ে না করলে বুঝতে পারবেন না। আমার হাতের আঙ্গুল গুলো নাড়াচারা করছে আমিও কিছু বলছি না। কয়েক মিনিট পরে ওর দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম মেয়েটা আমার কাধেই ঘুমিয়ে পরেছে। আমারও বেশ ঘুম পচ্ছে। আর কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি নিজেও জানিনা
ঘুম ভাঙ্গলো চিৎকার চেচামেচিতে… বাড়িতে যে কখন এসেছি। আমাদের গাড়িকে ঘিরে অনেক মানুষ দ্বাড়িয়ে আছে। হঠ্যাতি আমার চোখ গেল কাকলির উপর তাই ওকে দেখিয়ে ইশুকে একটু কাছে টেনে নিলাম। আর ও আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো। আমিও মুখ ভেংচি কাটলাম। কিন্তু আমার কান্ড দেখে সবাই হাসতেছে। বেশ একটা লজ্জা পেলাম।
অতঃপর সব নিয়ম কানুন মেনে বাড়িতে ঢুকলাম। আমাকে আর ইশিতাকে আলাদা ঘরে রাখা হল। খুব কষ্ট হচ্ছে না ওর জন্য না রাতে ঘমি হয়নি তার জন্য। আমি সোজা গিয়ে ঘুম।
ঘুম থেকে উঠলাম বিকালে। আমার রুমে ঢুকবো কিন্তু ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না আমাকে। তারা নাকি কি করছে। পরে অবশ্য উঁকি দিয়ে দেখেছি যে কি করছে ওরা। বাসর ঘর সাজাচ্ছে। ওটা দেখে মনে কি আনন্দ হচ্ছে তা বলে বোঝাতে পারবো না। যে আমারও ফুলশয্যা হবে।
*
রাত এগারোটা…
বিকাল থেকে অনেক গল্প সল্প করেছি। সবার সাথে অনেক মজা করেছি। কিন্তু একটা মেয়েকে দেখতে পাইনি। সবাই নাকি আমার বউয়ের কাছে গেছে। কিন্তু এখন কোথায় যাবে। বসে আছি আনমনে। স্নিগ্ধা আসলো আমাকে ডাকতে। আর আমার কথা না শুনেই সোজা টেনে নিয়ে গেল। সামনে কাকলি। চিন্তু হচ্ছে এ যে আবার কি করে… কিন্তু আমাকে আবাক করে দিয়ে ঘরে ঢোকার জন্য বলল… আর আমি পা বাড়াতেই…
>এভাবে হবে না… (কাকলি)
-তো কিভাবে শুনি… (আমি)
>দশহাজার লাগবে…
-পাগল নাকি আমার ঘরে আমি ঢুকবো তার জন্য দশহাজার দিব মগের মুল্লুক নাকি…
>ঘর তোমার কিন্তু ভাবি আমাদের… আগে টাকা না হলে রাস্তা মাপো…
-তোদের ভাবি তো আমার বউ। কিন্তু টাকা কেন…
>অত কিছু বুঝিনা দশ হাজার দাও তারপর ঢুকো।
*
নাহ এরা ছাড়বে না। অতঃপর সাত দিয়ে বিদায় করলাম। কিন্তু ঘরে ঢুকে তো কপালে হাত ঘরে বউ নাই। অতঃপর একটা চিরকটুট পেলাম বাকিটা না দিলে ঘর পাবা কিন্তু বউ না। নাহ্ এরা খুব বদ। বাকিটা দিলাম। ঘরে বসে আছি। এতদিন শুনেছি ঘরে বউ বসে থাকে আর এখানে আমি বসে আছি। বউ আসার অপেক্ষা করছি।
মনে হচ্ছে বউ আসছে। হ্যাঁ বউ আসলো। দরজা নিজেই লাগিয়ে দিল। কি অবাক কান্ড। এখন কি আমার ওকে সালাম করা উচিত। ও তো আমার সব কাজ করল আর আমি ওর কাজ। কাছে আসতেই উঠে দাঁড়ালাম। আমাকে সালাম করল। ওকে উপরে তুলে নিলাম। বধু বেশে ওকে দেখছি…
-অর্পূব লাগছে তোমাকে… তোমাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসাবে পেয়ে আমি ধন্য। ভালবাসি তোমাকে… (আমি)
*
ওর চোখে মুখে উত্তেজনা বিরাজ মান। আমিও বেশ কৌতুহলী যে কি বলবে ও…
>তোমার দেখা আর বলা শেষ হলে আমি কিছু বলি…
-হুম বলো…
>আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। এখন ঘুমাই…
-হুম ঘুমাও… (মুখটা কালো করে) কি ভাবলাম আর কি হল
>কি হল তোমার… (ইশিতা)
-কই কিছু না তো… (আমি)
>তাহলে শুইতেছো না কেন…
-তুমি ঘুমাও আমি একটু পরে ঘুমাবো…
>তাহলে আমি মাথা রাখবো কোথায়…
-মানে… বালিশে… রাখবা…
>না বালিশ শক্ত…
-এমন ভাবে কথা বলছে যে ওর বাবা ওকে তুলার উপর রেখেছিল… (মনে মনে)
>কি হল…
-কি আবার হবে… নরম কি বল…
>এই জায়গাটা নরম… (আমাকে ধাক্কা দিয়ে বুকে মাথা রেখে)
*
এখন তার পরেও একটু ভাল লাগছে। বউকে তো বুকে নিতে পেরেছি…
-তোমার মাথাটার বড্ড ওজন… (মজা করে আমি)
>কিহ্ (রাগি গলায়)
-আরে তোমার ভালবাসার ওজনের কথা বলছি আমি…
>ভালবাসো…
-এই এত গুলো… (জ্বড়িয়ে নিলাম)
*
এখন লাইট অফ…
To be continue…
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ā§Ŧ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3104 (3)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ģ:ā§¨ā§Š AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ