গল্পঃ মিষ্টি যন্ত্রণা
__Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
গ্রামের বাড়ি থেকে শহরে আসছে সিয়াম আর মিষ্টি অনেকদিন পর গ্রামে গিয়েছে। সিয়াম বারবার মিষ্টির হাতটা ধরার চেষ্টা করছে। মিষ্টি রাগে সিয়ামের দিকে তাকাচ্ছে। হিজাবের কারণে চোখ ছাড়া কিছু দেখাও যাচ্ছেনা। ফিসফিস করে বলছে।
- সমস্যা কি আপনার? বারবার হাত ধরছেন কেন?
- আমার বিয়ে করা বউ এর হাতই তো ধরবো।
- দরকার নেই।
রাস্তার পাশে বড় বিল্ডিং এর ছাদে একটি বড় বিলবোর্ড। বিলবোর্ডে এক সুন্দরী টাঙ্গানো। লাক্স সাবানের বিজ্ঞাপন। সিয়াম একটু তাকিয়ে দেখছিলো বিলবোর্ডেটা। ওমনিই রাজরাণীর চোখে আগুন।
- ঐ তুমি বিলবোর্ডে তাকাইছো কেন? আমি সুন্দর না তাইনা?
- আরে এখানে তুমি অসুন্দরের কি হলো বোঝলাম না।
- এখন তো বোঝবাই না।
মিষ্টির চোখে পানি টলমল করছে। সিয়ামের মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু কিছুই করার নেই। কিছুক্ষণ পর এনিয়ে বিনিয়ে চোখের পানি ফেলবে আর বকবে। তাই সিয়াম কান ধরে বসে আছে। মিষ্টি দেখে মনে মনে হাসছে। অনেক্ষন হলো সিয়াম কান ছাড়ছে।
- ঐ কান ধরে আছো কেন?
- ভুল করছি তো।
- হইছে কান ছাড়ো এবার। বাসে লোকজন দেখবে না।
- পিছনের সিটেই আছি আমরা কেউ দেখবে না।
- বললাম না কান ছাড়ো।
- অনেক ধন্যবাদ ম্যাম।
- জানালা দিয়ে আর বাইরে তাকাবা না। আমার দিকেই তাকিয়ে থাকবা।
- হাতটা কি ধরা যাবেনা?
- নাহ তুমি আজকে অনেকগুলো ভুল করে ফেলছো।
সিয়াম বোকার মতো মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। যদিও তাকিয়ে থাকতে ভালই লাগছে। কিছুক্ষণ পর মিষ্টি নিজেই হাতটা ধরলো।
- হাত ধরলা কেন?
- নাহলে যে তোমার গুমরো মুখটা দেখে আমাকে বাসায় যেতে হবে।
- খুব বোঝ না?
- হুম বোঝি তোমার সমস্যা?
বাসায় সব কিছুতেই কিরকম ধুলো লেগে গিয়েছে। যদিও বাসার দেখা শোনার জন্য একজন আছে। অফিসের ছুটি ছিলো সিয়ামের। আজকেই শেষ দিন। কালকে শুক্রবার। শনিবার থেকে আবার অফিস করতে হবে। শুক্রবার বলে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠবে। কিন্তু মিষ্টির জন্য সম্ভব হলোনা। হাতে একটি বাজারের লিষ্ট আর ব্যাগ।
- এইযে মহারাজ.. উঠেন এবার।
- শুক্রবার না আজকে?
- জ্বী শুক্রবার। বাজার থেকে আসো আগে তারপর ঘুমাবা।
- আজকেই বাজারে যেতে হবে?
- নাহলে কপালে নাস্তা জুটবেনা।
- বাইরে গিয়ে খেয়ে নিবো। আসো ঘুমাই।
- ঘুমাই মানে? বাইরে খাবা মানে কি? আমি রান্না করতে পারিনা?
- কিয়ের মধ্যে কি শুরু করছো।
- পানি আনাবাই আমাকে দিয়ে তাই না?
সিয়াম অসহায়ের মতো উঠলো। টেবিলে ব্রাশের মধ্যে পেষ্ট লাগিয়ে রেখে দিয়েছে মিষ্টি। দাত ব্রাশ করেই বাজারের দিকে রওনা দিলো। যথারীতি বাজার করা শেষ করলো। বাসায় এসে মিষ্টির হাতে ব্যাগটা দিলো। এখন তো ভুলেও ঘুম হবেনা তাও গিয়ে শুয়ে থাকবে সিয়াম। রুমের দিকে পা বাড়াতেই মিষ্টির ডাক।
- এইযে দাঁড়ান।
- কি হলো?
- লিষ্টে কি লবণ লিখা ছিলোনা?
- হুম কেন?
- তাহলে লবণ কই?
- আছে দেখো ভাল করে।
- আমি কি কানা হুম? দেখো ভাল করে।
সিয়াম ব্যাগটা দেখে বোকার মতো একটা হাসি দিয়ে বললো।
- ভুলে গেছিলাম মনে হয়?
- খাওয়ার সময় তো ভুল হয়না। এখন কি আমি লবণ ছাড়া রান্না করবো?
- একদিন করো সমস্যা নাই।
- শয়তান! তাহলে তুমি রান্না করো আমি গিয়ে শুয়ে থাকি কেমন?
সিয়াম আর কথা না বাড়িয়ে এক দৌড়ে গিয়ে লবণ নিয়ে আসে। তারপর গিয়ে আবারো ঘুমিয়ে থাকার অভিনয় করতে গেলো। কিছুক্ষণ পর আবারো মিষ্টি।
- এই আমার না রান্নাঘরে একা একা ভাল লাগছেনা।
- তো আমি কি গিয়ে তোমাকে পাহারা দিবো?
মিষ্টি চুপ করে আছে। বাকা চোখ দেখে সিয়াম বোঝতে পেরে গিয়েছে উনি রান্না করার সময় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে রাখতে হবে। সিয়াম গিয়ে রান্নাঘরে বসে মিষ্টির ঘামে মাখা মুখটা দেখছে। কিরকম এক তৃপ্তি হচ্ছে। মেয়েরা খুব বেশি কিছু চায়না। একটু সময় পেলেই অনেক। রান্না করা শেষ। দুজন একসাথে খেতে বসেছে।
- কি সাহেব কেমন হলো রান্না?
- এই দেখো তোমার রান্নার প্রসংসা করতে গেলে আমাকে নতুন কোনো ভাষা আবিস্কার করতে হবে।
- তাই না? এটা কিন্তু খুব বেশি বেশি বলছো।
- তবুও আমার দুজনে খেতে কেমন যেন ভালো লাগেনা।
- মানে? আর কে থাকবে তাহলে? বিয়ে করবা আরেকটা এই ভুত মাথায় চাপছে না।
- আরে বাবা না। আমাদের একটা ছোট্ট রাজরাণী থাকবে না? তুমি রাজরাণীটাকে খাওয়াতে পারবে না। লুকোচুরি করবে তোমার সাথে। তারপর শেষে আমি খাইয়ে দিবো।
- হইছে আপনার রাজরাণীটাকে পরে খাইয়ে দিয়েন । এখন আমাকে খাইয়ে দাও।
- কেনো তোমার হাত নাই?
- না মনে করো কেটে গেছে।
- উম না একদম এসব বলা যাবেনা।
- হিহি তাহলে খাইয়ে দাও।
মিষ্টির যত মিষ্টি মিষ্টি আবদার। ভালবাসা তো এখানেই বেচে থাকে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে কি হবে যদি ভালবাসাটাই না থাকে। পরেরদিন অফিসের সময়। লাঞ্চের সময় মিষ্টির ফোন। কিন্তু ফোন ধরে কথা বলছেনা। মুহুর্তক্ষানেক পর শুধু এটুকু বলে
- তারাতারি বাসায় এসো। সারপ্রাইজ আছে।
বলে ফোন কেটে দেয়। সিয়ামের যেন আর তর সইছেনা। অফিস শেষে বাসায় ফিরে দেখে মিষ্টি সাজুগুজো করে বসে আছে। সিয়াম মনে মনে ভাবছে আজকে কি কোন স্পেশাল দিন? মিষ্টি আবার লজ্জায় মুখ লুকিয়ে আছে। সিয়াম কাছে গিয়ে হাতটা ধরে বললো।
- জানিনা তুমি হঠাৎ কেন এতো সাজুগুজো করছ। তবে আমি লাঞ্চের সময় বাসায় না এসে মনে হয় জীবনের চরম আরেকটা ভুল করে ফেলছি। নাহলে আমার ঘরের পরীটাকে আরো মন ভরে দেখতে পারতাম। এখন বলো তোমার সারপ্রাইজটা কি?
- তাই না? বলবোনা আগে বলো বলার পরে আমাকে কি দিবা?
- জীবনের অন্তিমদশা পর্যন্ত তুমি যা চাও। তবে যদি আমার ক্ষমতার মধ্যে থাকে তো।
- এভাবে বলোনা আমার কষ্ট হয়।
- আচ্ছা বাবা আগে বলোনা সারপ্রাইজটা কি?
মিষ্টি সিয়ামের কানে কানে বলে।
- আব্বু হতে চলেছো।
সিয়াম কি বলবে বোঝতে পারছেনা।
- কি চাও বলো। জীবন দিলেও হলেও এনে দিবো।
- তুমি সারাজীবন এমনি থেকে যাও। এর থেকে বেশি আমার আর কিছু চাওয়া হতে পারেনা।
সিয়ামের চোখে সুখের পানি। জড়িয়ে ধরে আছে মিষ্টিকে। এখন প্রায় রান্না সিয়ামই করে। যদিও ডিম ভাজী ছাড়া আর কিছু পারেনা। মিষ্টির দেখাশোনার জন্য গ্রাম থেকে সিয়ামের ভাবী আসে। আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনমুগ্ধকর দৃশ্যের মধ্যে গর্ভবতী মায়ের হাসি এক। কারন এই হাসিতে বেচে আছে জীবনের ছোট ছোট স্বপ্ন। রাতে ঘুমানোর সময়। সিয়াম মিষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ঘুমাতে।
- এই তোমার ফোনটা একটু দাওনা।
- কেন? কাউকে ফোন দিবা?
- উমম না একটু গেমস খেলবো।
- উম একদম না। এখন রাত জাগা যাবেনা।
- তুমি খেলতে পারো সারাদিন আমি খেললেই দোষ।
- হ্যাঁ তারপর আমার আম্মুটাও গেমস পাগলী হোক না?
- ইশ হইছে। আমি খেললেই হবে নিজে খেললে হবেনা।
সিয়ামের ফোনটা নিয়ে হঠাৎ মিষ্টি খেয়াল করলো মিষ্টির নাম্বারটা সিয়াম মিষ্টি যন্ত্রণা দিয়ে সেভ করে রেখেছে।
- এইযে আপনি আমার নাম্বারটা মিষ্টি যন্ত্রণা দিয়ে সেভ করে রাখলেন কেন?
- তুমি তো মিষ্টি যন্ত্রণাই।
- তাই না? কিভাবে?
- তুমি হচ্ছো এমন মিষ্টি যন্ত্রণা যে যন্ত্রণাটা আমার কাছে অক্সিজেন। আমি অক্সিজেন ছাড়া তো বাচতে পারবোনা।
মিষ্টি সিয়ামের হাতটা ধরে বললো।
- আমার থেকে সুখী মনে হয়না এখন কেউ আছে।
সিয়াম হাতটা শক্ত করে ধরে বললো।
- অনেক হইছে আবার ঘুমাও।
গল্পতে এরকম মিষ্টির চরিত্র তৈরি করা যায় খুব সহজে। কিন্তু বাস্তবে এমন মিষ্টি, সিয়াম বিলুপ্তপ্রায়। টাকা আর টাকা। টাকাই যেন সম্পর্কের হাত-পা।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3515
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:⧍⧠PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ