3525

গল্পঃ অতঃপর লিটনের ফ্ল্যাট
__Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
- বাবু। (আবির)
- বলো জান। (সাদিয়া)
- আমরা তো বিয়ে করবো না জান?
- হুম অবশ্যই করবো কেন তোমার ইচ্ছা নেই?
- আছে তাহলে একটা কথা বলি?
- একটা কেন হাজারটা বলোনা কোন সমস্যা নাই।
- আমাকে তুমি বিশ্বাস করো জান?
- জীবনের থেকেও বেশি জান।
- তাহলে ( লিটনের ফ্ল্যাটে যাওয়ার প্রস্থাব দিলো )
- ছিঃ আবির..  তুমি..  বিয়ের আগে আমি কিছু করতে পারবোনা সরি।
- বোঝেছি.. তুমি আমায় ভালবাসোনা একটুও।
- দেখো এটা আমি করতে পারবোনা এর মানে এটা না আমি তোমায় ভালবাসি না।
- তুমি আমাকে একটুও বিশ্বাস করোনা বোঝেছি। তোমার সাথে আর কোন কথা নেই। তাছারা আমরা তো বিয়ে করবোই নাকি?
- বিয়ের পরেই নাহয় এসব হবে। আবির প্লীজ আমার এসব ভালো লাগছেনা।
- দেখো তুমি যদি রাজি হও তাহলে মনে করবো আমাকে ভালবাসো তবেই আমি তোমাকে বিয়ে করবো।
.
নিজের ভালবাসা প্রমাণ করতে রাজি হয়ে গেলো সাদিয়া। না করে উপায় নেই। অনেক দিনের প্রেম। ভেবেছে বিয়ে তো আবিরের সাথেই হবে।
.
- শুনো। (সাদিয়া)
- বলো।
- কখন আসতে হবে?
- জান তুমি রাজি হয়ে গেছো? জানি জান তুমি না রাজি হয়ে পারবে না। আমি জানিতো তুমি আমাকে অনেক ভালবাসো। দাঁড়াও আমি তোমাকে টেক্সট করে ঠিকানাটা বলে দিচ্ছি।
.
টেক্সট করে লিটনের ফ্ল্যাটের ঠিকানাটা দিয়ে দেয়। কাল বিকেল ৪টায় পৌঁছাবার কথা।
.
- দোস্ত মাল তো রাজি হয়ে গেছে? (আবির)
- কোনটা রে.. ? (সিফাত)
- আরে ঐযে বলছিলাম না সাদিয়ার কথা।
- মাম্মা তুইও না পারিসও বটে।
- হ মাম্মা ঠিক মতো ক্যামারাটা বসিয়ে রাখিস। মালটা তোরাও খেতে পারবি পরে।
- ওকে মাম্মা চিন্তা করিসনা এদিকটা সময় মতো আমি সব রেডি রাখবো।
- ওকে মাম্মা এখন রাখছি।
- ওকে মাম্মা।
.
পরেরদিন বিকেল ৪টার আগে পৌঁছে গেলো আবির আর সাদিয়া। সাদিয়াকে ইমপ্রেস করার জন্য অনেক কিছুই রেডি রেখেছিলো আবির আর তাঁর বন্ধুরা। শেষমেশ আবিরের প্ল্যান সাক্সেস। ক্যামারায় ভিডিওটাও ভালো করে হয়েছে।
.
- আবির। (সাদিয়া)
- বলো।
- বিয়ে করবে কবে আমাকে?
- বিয়ে? কাকে?
- কাকে মানে আমাকে?
- তোমাকে বিয়ে করবো কেন?
- মানে কি আবির? তুমি এসব কি বলছো?
- বাংলা বোঝতে পারোনা?
- এখন তুমি এসব কি বলছো? ওসব করার আগে মনে ছিলোনা?
- যে মেয়ে বিয়ের আগে নিজের দেহ বিলিয়ে দেয় তাঁকে কখনো বিয়ে করা যায়না।
- আবির তুমি এসব বলতে পারোনা।
- ফোন রাখছি কাজ আছে আমার।
.
সমস্যাটা এখানেই শেষ না। আবিরের বন্ধুরা ভিডিওটা দেখিয়ে থ্রেড দিচ্ছে। যদি ওসব না করে তাহলে ভিডিওটা ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। ওসব করার পর সাদিয়া বাস্তবতা বোঝতে পারলো। কিন্তু অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে।
.
- আবির (কান্নাসিক্ত কন্ঠে সাদিয়া)
- বলো কি বলবে আমার হাতে সময় কম।
- আমাদের ওসবের ভিডিওটা তোমার বন্ধুরা পেলো কি করে।
- কিজানি..  আমি জানিনা।
- ওরা তো থ্রেড দিচ্ছে ওসব করতে না করলে ভিডিওটা ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে বলছে।
- করোনা সমস্যা কি? আমার সাথে যখন করছো ওদের সাথেও করতে সমস্যা কি? ইঞ্জয় করো বেবি।
- ছিঃ আবির ছিঃ তুমি এতো খারাপ জানলে তোমার সাথে রিলেশনে যেতাম না।
- হা হা ভালো মেয়েরা রিলেশনে যায়না। বিয়ে পর্যন্ত ওয়েট করে।
- আমি কিন্তু আত্বহত্যা করবো আবির।
- যা ইচ্ছা করো আমাকে আর ফোন দিয়োনা তো বিরক্ত লাগে।
.
ভিডিওটার ভয়ে সাদিয়া কয়েকবার করার জন্য রাজিও হয়েছে। কিন্তু আবিরের বন্ধুরা প্রতিদিনিই ওসব করতে চাইতো। সাদিয়া এ ব্যাপারে কারো সাথেই শেয়ার করতে পারছেনা।
.না পুলিশ না সমাজ। পুলিশের কাছে গেলে ভিডিওটা প্রকাশ পাবে আর না গেলে এভাবে আবিরের বন্ধুদের হাতের পুতুল হয়ে থাকতে হবে। এতো চাপ সহ্য করতে না পেরে আরেকটি আত্বহত্যার গল্প।
.
- দোস্ত শুনলাম সাদিয়া নাকি আত্বহত্যা করছে। (সিফাত)
- ইগনোর বেটা।
- দেখতে যাবি নাকি?
- কুকুরে কামড়াইছে নাকি আমারে।
- দোস্ত একটা মালই আছিলো রে।
- বাদ দে আরো সাদিয়া আসবে তোরা রেডি থাকিস।
- ওকে মাম্মা।
.
আফসোস হয়! এরকম ছেলেদের সাথেই রিলেশনে যাওয়ার জন্য পাগল থাকে মেয়েরা। একটু চকলেট টাইপের না হলে হয় নাকি? সময় আছে এখনো। এরকম পরিস্থিতে অনেকের গার্ডিয়ান'রা হয়তো
.
অনেক সাদিয়াকে লুকিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয় কিন্তু সুখী কতোটা হতে পারে আমার জানা নেই। তাই নারীদের বলছি। আপনাদের ইজ্জতটা ছাড়া জগতে কিচ্ছু নাই। ইজ্জতটা দেয়ার আগে আরেকটু ভাবুন।
.
[শিক্ষামূলক গল্প]