গল্প: #টিজ
.....
- এই যে মিস পাউডার সুন্দরী..(আমি)
- কিহহহ..আমি পাউডার সুন্দরী মানে? মি. ভালো ভাবে কথা বলবেন। (নিশি)
- ওকে..i love you. (আমি)
- কিহহহহহ..
- আরে এর মানেটা যেনো কি? আসলে আপনি যদি এর মানেটা বলে দিতেন।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি। (নিশি)
- সত্যিই..আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি।
- মানে কি?
- আরে তুমিই তো বললে. আমাকে ভালোবাসো।
- চুপপ..আপনাকে কেন বলতে যাবো? আমি তো মানেটা বললাম। ইডিয়েট একটা..
কথাটি বলে নিশি চলে গেল। আর আমি ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি হাসতে হাসতে। নিশিকে আমি সত্যিই ভালোবাসি। কিন্তু সে আমাকে পাত্তায় দেয় না। কারন আমি তার কাছে বেয়াদপ একটা ছেলে। টিজ করে বেড়ায় আমি।
নিশিকে প্রথম যেদিন দেখি। সেদিন লম্বা চুলের সাথে মাথায় কালো ওড়না দিয়ে কলেজে এসেছিলো। চোখের ভ্রুতে অল্প একটু কাজল। লম্বাচুলের কয়েক গাছি চুল সামনে এসে পড়েছিলো। সামনে দিয়ে যখন যাচ্ছিলো তখন অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম নিশিকে। সেদিন টিজ করিনি। তবে রোজ তাকে দেখি আর আসতে আসতে টিজ করতে থাকি।
- কিরে দোস্ত ক্লাসে যাবি না? হাবার মত দাড়িয়ে না থেকে চল ক্লাসে যায়। (ফাহিম)
ফাহিমের কথা শুনে ক্লাসের দিকে গেলাম। নিশি অনার্স প্রথম বর্ষে আর আমি ২য়।
তাই আগে ওকে দেখিনি।
(ক্লাস শেষে)
ক্লাস শেষ করে যখন বাইরে আসলাম তখন দেখি নিশি ক্যামপাসে বসে আছে। দৌড়ে তার কাছে গেলাম।
- নিশি...
- আবার আপনি? আপনাকে না বলেছি আমার সামনে আসবেন না। তবুও বারবার কেনো আসেন?
- ভালোবাসি তো তাই আসি।
- কিসের ভালোবাসা? বেয়াদপ ছেলে একটা।
চুপ করে দাড়িয়ে থাকলাম। তখনি মনে হল আরো একটু টিজ করি। তাই বললাম..
- নিশি. চলো প্রেম করি।
- কিহহ..
- চলো হারিয়ে যায় শীতের কুয়াশার মাঝে। তুমি আমার হাতে হাত রেখে হাটবে সারা সকাল। সকাল শেষে তুমি দিবে আমায় ধোয়া ওঠা এক কাপ গরম চা। সেই চায়ে চুমুক দিতে দিতে বুনবো আমরা হাজারো স্বপ্ন।
- আহহহারে...বেচারা..আর কোনোদিন যদি আপনি আমার সামনে আসেন। তো আপনার খবর আছে।
- আটটার খবর? নাকি ১০ টার?
- হুটট..
- হিহিহিহি
নিশি আর কিছু না বলে রাগ দেখিয়ে চলে গেলো। আমি আবারো তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। কি থেকে কি হয়ে গেলো? এত মেয়েকে টিজ করলাম অথচ কারো মায়াতে পড়লাম না। আর এই নিশির মায়ার সাগরে নৌকা ছাড়াই পড়ে গেছি। এখন সাঁতরিয়ে পাড়ে উঠার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছুতেই হচ্ছে না। বরং তাকে দেখলে আরো গভীরে ডুপ মেরে বসছি।
বালিকা, কি মায়াতে ফেললা তুমি।
তোমায় ভেবে সারা বেলা কাটাচ্ছি আমি।
- রাফিন কবিতা না বলে বাসায় চল (ফাহিম)
- ওহ হুমম..চল বাসায় যায়। (আমি)
.
(পরেরদিন)
.
ক্যামপাসে বসে আছি। তখনি দেখি নিশি আসছে ওর বান্ধবিদের সাথে । দৌড়ে ওর সামনে গেলাম।
- আবার আপনি? কাল না বললাম আর আসবেন না। তবুও..
কিছু বললাম না। হুট করেই নিশির হাতটা ধরলাম। তখনি বললাম..
- বালিকা. ক্ষতি কী..?
পড়ন্ত বিকেলে ছাদে এসে আমার কথা ভেবে.
প্রকৃতি দেখো যদি?
- হাত ছাড়ুন বলছি..
- ভালোবাসবে তো...?
- হাত ছাড়তে বললাম না..
নিশির চোখের দিকে তাকালাম। সেই চোখে অজস্র রাগ জমে আছে। যে রাগের স্ফুলিঙ্গে আমি হয়ত ভস্ব হয়ে যাবো। তাই ভয়ে ছেড়ে দিলাম।
- যদি আর কোনোদিন আমার সামনে আসেন। আপনার খারাপ হবে বলে দিলাম
বেয়াদপ ছেলে,,ইডিয়েট, ছ্যাছড়া।
কথাগুলো বলে নিশি হনহন করে চলে গেলো। আর আমি চেয়ে রইলাম। এমন গালি কত শুনি আমি। তাই সব সহে গেছে।
.
কয়েকদিন পর ক্যামপাসে বসে আছি।
তখনি দেখলাম, কালো উড়না মাতায় দিয়ে নিশি আসছে। তাই আমি ওর সামনে গেলাম..
- নিশি..
- আজকেও...? তো বলেন..
- আমাদের জাতীয় সংগীতের সেকেন্ড লাইনটা না ভুলে গেছি, যদি একটু বলতা..?
- মানে..
- সেটাই তো বুঝতে পারছি না। বলোতো..
- আমি তোমায় ভালোবাসি।
- সত্যিই..? চলো..
- মানে..কোথায় যাবো?
- আরে ভালোবাসি বললে না.? তো চলো বিয়ে করে ফেলি।
কথাটি বলে যেই না নিশিরা হাত ধরলাম..
- ঠাসসসস..ঠাসসসসস..আর কোনোদির যদি তুই আমার সামনে আসিস। তাহলে আমি সুইসাইড করবো।
বেয়াদপ ছেলে একটা..তোর বোনকে যদি এমন করতো কেউ কি করতি? ছ্যাঁচোড় একটা...ধুররর হ..
নিশি কথাগুলো বলে চলে গেলো। আর আমি তার চলে যাওয়ার দিকে তাকালাম। কখন যে চোখ দিয়ে পানি পড়ে গেলো বুঝিনি। আজ খুব কষ্ট পেলাম। আসলে এভাবে কেউ এর আগে বলেনি তো তাই..
আমি আর কোনোদিক না তাকিয়ে সোজা বাসার দিকে দৌড় দিলাম। কেমন যেন সব এলোমেলো লাগছে।
.
আজ তিনদিন হল কলেজে যায় না..কিন্তু ফাহিম এসে আজ জোর করে ধরে নিয়ে গেল কলেজে।
ক্যামপাসে বসে আছি। তখনি দেখি নিশি আমাদের দিকে আসছে। এটা দেখে ফাহিম চলে গেলো। আমি নিশির দিকে তাকিয়ে আছি। কাছে আসতেই সে বললো..
- রাফিন, আসলে...(নিশি)
- আসলে নিশি আমি তোমার সামনে আসতে চাইনি। আমি তো কলেজেই আসতে চাইনি আজ। কিন্তু ফাহিমের জন্য এসব হল। সরি..
- রাফিন, আমি আসলে বলতে......
- আচ্ছা, আজ কিছু বলি আমি? প্রমিস করছি আমি আর তোমার সামনে আসবো না। সত্যিই বলছি..
-...... (চেয়ে আছে আমার দিকে)
- আসলে তোমার কথায় সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। জানো আমি এমন ছিলাম না কিন্তু হয়ে গেছি। এটার জন্য দায়ী আমার পরিবার।
একটা সন্তান মানুষের মত মানুষ হয় তার পরিবারের থেকে শিক্ষা গ্রহন করে। কিন্তু আমি সেটা পাইনি।
তাদের থেকে শিক্ষা নেয়া দুরে থাক, তারা আমাকে জিগাসও করে না কি করি সারাদিন।
এমন কোনো দিন বা রাত নেই, আমার আব্বু আম্মু ঝগড়া করে না। রোজ যখন পড়তে বসি তখনি ওদের শুরু হয় গন্ডোগোল। সারাটা রাত প্রায় চলতে থাকে এমন। আমি খেয়েছি কিনা সেটা তারা জানে না। খোজও নেয় না আমার। আমি পাড়াতে বেয়াদপি করে সেটাও তারা জানে না। জানে তারা একে অপরের থেকে কিভাবে জিতবে?
আসলে নিশি, ভালো হওয়ার জন্য দরকার পরিবারের শাষন। দরকার হয় পরিবারের ভালোবাসা। কিন্তু আমি সেটা পাইনি। তাই নিজের মত করে চলি। যা মন চাই তাই করি। আমি সরি তোমাকে টিজ করার জন্য, আর কোনোদিন তোমার সামনে আসবো না।
.
কথাগুলো বলে নিশির থেকে চলে আসলাম। কিছু ভালো লাগছে না। কেন আমার সাথে এমন হয়?
বাসায় এসে দেখলাম, আম্মু আব্বু আগের মত ঝগড়া করছে.. মাথায় রাগ উঠে গেলো..বললাম.
- আম্মু চুপ করো..আর কতদিন এমন করবা?
-.....
- আব্বু প্লীজ থামো তোমরা,,এমন রোজ রোজ আর ভালো লাগে না।
-......
- থামবে তোমরা...? (চিৎকার করে)
ঠিক তখনি সবাই চুপ হয়ে গেলো। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।
- কি সমস্যাটা কি তোমাদের? রোজ এমনটা করো তোমরা। তোমাদের কি কোনোদিন কষ্ট হয় না? একবারো কি ভাবো আমার কথা?
- তোর হাত খরচের জন্য তো রোজ টাকা দিই। (আব্বু)
- হাহাহাা...দাও,, তবে কোনোদিন খোজ নাও আমার ব্যাপারে? কোনদিন জানতে চাও আমি কি করি না করি? কোনোদিন জিগাস করেছো তোমরা, আমি খেয়েছি কি না সময় মত? করোনি কিছুই,,টাকাই সব না আব্বু,,। আমি তো রোজ টাকা চাইনা তোমাদের কাছে, চাই একটু ভালোবাসা, একটু কেয়ার। কিন্তু সেটা তোমরা দাও না। তাও খালি কষ্টের পাহাড় একটা। এতই যখন অবহেলাতে রাখবে তখন জন্ম কেনো দিছিলে তোমরা? ওকে ফাইন, আমি আজিই সুইসাইড করবো..
কথাগুলো বলে রুমে এসে সটাং করে দরজাটা আটকে দিলাম। মনে হচ্ছে মেরে ফেলি নিজেকে। তখনি..
- বাবু দরজা খোল.. (আম্মু)
- রাফিন দরজা খোল বাবা..(আব্বু)
যেয়ে দরজা খুলে দিলাম। তখনি আম্মু কাদতে কাদতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো..
- বাবা সরি রে, আসলে আমি আর তোর বাবা কোনোদিন তোকে খোজ নেয়নি। আসলে আমরা বুঝিনি আমাদের ছেলেটা এতটা একাকিত্বের মাঝে থাকে।
- সরি রাফিন, আমাদের প্লীজ মাফ করে দে। আমরা বুঝিনি..(আব্বু)
ওনাদের জড়িয়ে ধরে কেদে দিলাম। তখনি কেমন যেন শান্তির আভাস ছড়িয়ে গেলো মনে।
..
(দুইদিন পর)
..
- এই যে মি. টিজার.. (নিশি)
ক্যামপাসে বসে আছি। তখনি নিশি এসে কথাটি বললো, আমার চুল ধরে..
- কি হচ্ছে কি এসব? (আমি)
- আমি তোমাকে ভালোবাসি...(নিশি)
- কিহহহ...?
- নাহ মানে এর ইংলিশটা যে কি হবে বুঝতে পারছি না।
- i love you.. (আমি)
- সেতো জানি,, তাহলে চলো প্রেম করি।
- মানে কি..? (আমি)
- মানে হল, আমি এই রোমান্টিক টিজার কে ভালোবাসি।
- সত্যিই?
- হুমমম..
- হাহাহাহাহা..
- হাসো কেনো??
- আমাকে করুনা করছো..?
- মানে...
- মানেটা জানো না..আমার সমস্যার কথা শুনে আমাকে ভালোবাসতে এসেছো? এর আগেও তো ভালোবাসতে না। দুর দুর করে তাড়িয়ে দিছো..
- রাফিন, থাপ্পড় দিবো আরো মুইটা..আমি এর আগেও বলতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি।
- মানে..?
- মানে আগের দিন তোমাকে সরি বলতে এসেছিলাম। আর এটাও বলতে এসেছিলাম, তোমাকে তিন দিন ক্যামপাসে দেখিনি বলে মিস করেছি। ফলে ভালোবেসে ফেলেছি।
- ভালো..
- তো চলো প্রেম করি...(নিশি)
কিছু না বলে আমি ওর সামনে থেকে চলে আসলাম। আমি বুঝে গেছি নিশি আমাকে ভালোবাসে। তাই আমি যেমন ঘুরেছি তার পিছনে সেও একটু ঘুরুক আমার পিছনে? তাতে ক্ষতি কি?
দেখলাম, নিশি আমার পিছনে জোরে জোরে হাটতে হাটতে কাছে আসছে..আর বলছে..
- রাফিন এনস দাও..
আমি মুচকি হাসছি, এখন যায় বাসাতে,। কদিন পর এক্সেপ্ট করবো, এখন নিশি একটু টিজ করুক...
(৫০)
------------(সমাপ্ত)--------------
লেখা> Abir Hasan Niloy (মি. ভূত)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ