- আপনার মতো খারাপ ছেলে আমি আর একটিও দেখিনি।
- হুম।
- আজব ব্যাপার! আমি আপনাকে খারাপ বললাম। আপনি রিয়েক্ট করবেন না?
- রিয়েক্ট করার কি আছে?
- আমাকে যদি কেউ খারাপ বলে তাহলে তো আমার মাথা গরম হয়ে যায়।
- ভাল। তবে সত্যি বললে আমি রিয়েক্ট করিনা। আমি খারাপ আমি জানি।
- মেয়েরা আপনার কি ক্ষতি করছে শুনি?
- কিছুনা।
- কিছুনা! তাহলে মেয়েদের অবিশ্বাস করেন কেন? কোন মেয়েকেই বিশ্বাস করেন না! সমস্যাটা কি আপনার?
- আমার ইচ্ছা।
- আপনার ইচ্ছা হলেই তো হবেনা।
- নিজের প্রতি নিজের অধিকার মানুষের থাকে?
- থাকে কিন্তু সেটা একটা ভুল ধারনায় কেন?
- জানিনা।
- ধ্যাৎ।
পাঁচ মিনিট পর।
- আচ্ছা একটা কথা বলুন।
- কি?
- আপনি কি কোনদিনও আমায় বিশ্বাস করবেন না?
- আমি আপনাকে অবিশ্বাস করি?
- বিশ্বাস'ও তো করেন না।
- অবিশ্বাসও করিনা। আর বিশ্বাস অবিশ্বাস পরে। আমার দ্বারা আপনি কোনদিন অসম্মানিত, অপমানিত হবেন না। এটা নিশ্চিত থাকুন।
- আর ভালবাসা? সেটা তো বিশ্বাস ছাড়া পূর্ণতা পায়না।
- আমি আপনাকে ভালবাসবো সেটা কিভাবে ভাবলেন?
- কেনো? নিজের স্ত্রীকেও ভালবাসতে আপনার অসুবিধে? তাছাড়া আমার অপরাধ কি?
- আমি বিয়ের আগে বলেছিলাম যে আমি আপনাকে ভালবাসতে পারবোনা?
- বলেছিলেন.. কিন্ত!
- তাহলে? আমার অপরাধ কোথায়? আপনি তো ভাঙা বিয়ে জোরা লাগিয়েছেন। তারপরেও আমি আপনাকে অনেকবার বুঝিয়েছি। কিন্তু আপনি শুনেছেন একবারও?
- কিন্তু কেনো? একটা মানুষ এরকম কেনো হবে?
- বিরক্তিকর! আমি আপনাকে আগে বলিনি যে আমি আপনাকে ভালবাসতে পারবোনা ? হ্যাঁ কি না?
- হ্যাঁ.. কিন্তু!
- তাহলে দয়া করে আপনার মতো আপনি থাকুন আর আমার মতো আমি। ঠিকাছে?
- না। কোন ঠিক নেই। বিয়ের আগে কি বলেছিলেন সেটা এখন বলে লাভ নেই। আমি বিয়ের পর আগের কথা মানবোও না শুনবোও না।
- আপনি জানেন আমার প্রচন্ড রাগ হলে আমি কি করি?
- জানি তো। আপনার কি আমি জানিনা সেটা বলুন তো।
- আজব ক্যারেকটার! আপনি জেনে শুনে থাপ্পড় খাবেন?
- হুম। তাতে সমস্যা কি? তাও তো আপনি আমাকে ছুঁবেন!
- বাসায় আর কেউ নেই। থাপ্পড় খেয়ে ফিট হয়ে থাকলে কেউ দেখতেও আসবেনা।
- না আসুক। যার আদর করার অধিকার আছে তাঁর থাপ্পড় দেয়ারও অধিকার আছে।
- বেশী হয়ে যাচ্ছে না?
- কি বেশী হয়ে যাচ্ছে হুম? হোক বেশী। দেখি আপনি কি করেন।
- বিয়ের আগে আপনি "সংসার চুক্তি"তে কি বলেছিলেন সব মনে আছে? সব মনে করতে হবেনা আপনি প্রথমে বলেছিলেন যে বিয়ের পর কখনো, কোনদিন স্ত্রীর অধিকার ফলাতে আসবেন না। মনে আছে?
- বিয়ের আগের কথা বা চুক্তি আমি মানবোনা বিয়ের পরে।
- এখানেও মিথ্যা বললেন। ভাল আপনাকে বিশ্বাস করা যায়!
- দেখুন এভাবে খোঁচা দিয়ে কথা বলবেন না। আমি শুধু জানি আপনি আমার স্বামী আর আমি আপনার স্ত্রী। আর তাই আপনাকে আমাকেই ভালবাসতে হবে।
- তালাক দেয়ারও একটা পদ্ধতী আছে! ভুলে যাবেন না।
.
চাঁদনী আর কথা না বাড়িয়ে সিয়ামের সামনে থেকে চলে গেলো। চাঁদনী সব কিছুই মানতে পারে কিন্তু সিয়াম থাকবেনা তাঁর সাথে তাঁর পাশে হাতটা ধরে সারাজীবন সেটা ভাবতে পারেনা।
ছেলেটার সাথে সুখে দুঃখে থাকবে বলে এক প্রকার প্ল্যান করেই বিয়ে করলো।
আসলে চাঁদনী সিয়ামের হাতটা সারাজীবনের জন্য ধরতে চেয়েছিলো কদিনের জন্য অভিনয় করার জন্য হাতটা ধরার জন্য নয়।
তাই এরকম বিয়ে! সিয়ামকেই বা কি দোষ দিবে? সিয়াম তো একবার না দুবার না অনেকবার বলেছে বিয়ের আগেই।
চলছে জোর করে ভালবাসা আদায় করার চেষ্টা। কিন্তু যেই লাউ সেই কদু।
স্বপ্নটার পাখীরা আজকে ডানা মেলে আকাশে উড়তে চায়না। ইচ্ছে গুলো মাঠি হয়ে গিয়েছে।
বেশ অনেক মাস পরে চাঁদনী সিদ্ধান্ত নিলো আলাদা হয়ে যাবে। কারন হাজারো বৃথা চেষ্টা। কি লাভ মায়া বাড়িয়ে?
.
- কালকে চলে যাবো। ক্ষমা করবেন আমাকে সব কিছুর জন্য।
- হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত?
- আসলে বুঝতে পারলাম শর্ত দিয়ে বা জোর করে আর যাই হোক ভালবাসা হয়না।
- আর ক'টা দিন থেকে গেলে কি খুব অসুবিধে হয়?
- থেকে আর কি হবে? আপনার বিশ্বাস,ভালবাসা.... যাক বাদ দিন। এসব বলে আর কি লাভ?
- আসলে আমার কপালটাই খারাপ। ভাল কিছু সহ্য করতে পারেনা।
- ভুতের মুখে রাম নাম মনে হলো?
- মনে তো কতো কিছুই হয়। সেটা ভেবেই বা কি হবে?
- হাসূচক না নাসূচক?
- একটা গল্প বলি শুনবে?
- হ্যাঁ অবশ্যই।
- আমার যখন ছয় বছর তখন আমার মা আমাদের ছেড়ে চলে যায়! গিয়ে অন্য আরেকজনের সাথে ঘর বাঁধে। চলে যাবার দিন বাবা অনেক কান্নাকাটি করেছিলো। এমনকি মা'র পায়ে পর্যন্ত ধরেছিলো। শুধু আমার জন্য। পাঁচ বছরের বাচ্চা মা ছাড়া থাকবে কিভাবে? তার উপর ছিলো লাভ ম্যারেজ। আমার এখনও মনে পরে! মা যখন কাপড়চোপড় রেডি করছে শেষবারের মতো চলে যাবে। আমি তখন চৌকিতে বসা। বসে বসে কাঁদছিলাম। মা যাবার সময় আমার দিকে একটিবার তাকালোও না! আমি তাঁর সন্তান! এখানেই শেষ না। কদিন পর স্কুল থেকে এসে বাবা ফ্যানে ঝুলছে! আমি তখন মাত্র ক্লাস ওয়ানে পড়ি। তারপর থেকে নারী জাতীদের প্রতি সবসময়ই ঘৃণা কাজ করতো। মানুষ হয়েছি দুঃসম্পর্কের এক চাচার কাছে। উনি ছিলেন শিক্ষক। আর তাঁর প্রিয় ছাত্রী ছিলে তুমি। দুদিক এক করে তুমি এক প্রকার ফাঁদে ফেলেই বিয়ে করালে! বাবার পর এই চাচার কাছেই মানুষ হয়েছি তাই আপনাকে মাথায় নিয়ে সারাজীবন ঘুরতেও অসুবিধে নেই। কিন্তু বিশ্বাস,ভালবাসা, প্রেম এগুলো আমার দ্ধারা সম্ভব না। এর কারণ মা! যদিও মা বলতে ঘেন্না লাগে! কিন্তু তোমার সাথে একয়দিন থাকার পর বুঝলাম। তোমাকে না ভালবাসলে আমি জীবনের শ্রেষ্ঠ ভুলটা হয়ে যাবে। তুমি আমার জীবনে সূর্য হয়ে এসেছো....!
.
কথা গুলো বলার সময় সিয়ামের চোখ বেয়ে পানি পরছিলো। চাঁদনী শাড়ির আঁচল দিয়ে সিয়ামের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো।
- সত্যি তো?
- কি মনে হয়?
- আমি জানি আপনি মিথ্যে বলতে পারেননা।
- উঁহু আপনি না, তুমি।
- ইশ না পারবোনা। আগে বলেন এখনও কি আমাকে বিশ্বাস হয়না?
- হুম।
- আর ভালবাসা?
- সেটা আবার কি জিনিষ?
- দেখুন এরকম ন্যাকা করবেন না। আমার চোখের দিকে তাঁকিয়ে বলুন। ভালবাসবেন কি না?
- বললামই তো হুম। আর না বাসলে?
- এখনো সন্দেহ হয়?
চাঁদনীর চোখ জল। সিয়াম চাঁদনীকে বুকে টেনে বললো।
- আচ্ছা তুমি চিৎকার করে কাঁদতে পারোনা? একটু কাঁদো তো দেখি।
চাঁদনী কেঁদেই যাচ্ছে। সিয়াম আবারো বললো।
- এই পাগলী থামো এবার।
- এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে? আরো শক্ত করে ধরতে পারেননা?
- হেহে.. শুনো.. আই লাভ ইউ... আমি তোমাকে ভালবাসি।
- এতোদিন লাগলো বলতে? সব শুধু মেয়েদের দোষ। ছেলেরা যে মেয়েদের কান্না করায় সেটা কোন দোষ না।
- দুঃখীত। সরি তো। হয়েছে?
- হয়েছে কি? আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে পারেননা? ন্যাকামো করেন? না আপনি মেয়ে মানুষ লজ্জা করে?
- হাহা। আমার চোখের দিকে তাকাও। না তাকাতে হবেনা। চোখ বন্ধ করেই ভালবাসি বলো না? তুমি আজ পর্যন্ত বলোনি। শুধু অধিকার ফলাতে এসেছো!
- না না না। বলবোনা মানে বলবোনা। শুধু তুমি বলবে, তুমি, তুমি, তুমি বুঝছো?
.
__ বিশ্বাস
Siam Ahmed Joy
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ