āĻļুāĻ•্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ…āĻ•্āϟোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

3510

গল্পঃ বাড়ীওয়ালার মেয়ে
.
[এক]
একটা বাসা খুব আর্জেন্ট দরকার তাদের। তাদের বলতে সিয়াম, সীমান্ত, সৌমিক আর সৌরভের। কালকে এ বাসা ছাড়তে হবে। বাসাটার প্রতি অন্যরকমের মায়া জন্মে গিয়েছে। যদিওবা বাড়ীওয়ালা খচ্চর ছিলো। তবে বাড়ীওয়ালী খুব ভালো ছিলো।  মেয়েরা যেমন হয় আরকি। নম্র, ভদ্র, আবেগী আর দয়াশীল। সব মেয়ে আবার এমন হয়না। ভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের সাহায্যে একটা ভালো বাসার সন্ধান মিললো। যদিওবা ফাহাদ ভাই'ই সব ঠিক করে দিয়েছে। হয়তো আপন রক্তের না। কিন্তু আপনের চেয়েও বেশী করেছে ফাহাদ ভাই তাদের জন্য। সৌরবের ব্যাপারে বলা যাক। অদ্ভুত ক্যারেকটার। বেশ লম্বা। চুলগুলোও লম্বা লম্বা। সৌরভ থেকে সভ্য হওয়ার কথা। কিন্তু না। এর মতো অসভ্য ছেলে ভার্সিটিতে আর একটিও নাই। সৌমিক। আহা এমন সোনার ছেলে বাংলাতে খুব কম। তার এতো এতো লজ্জা। যা কোন মেয়েরই নেই। পড়ালেখায় নাম্বার ওয়ান। সবসময়ই মুখে একটা কথা। দোস্ত পড়তে হবে। পড় আর পড়। সীমান্ত। এ হলো আরেক অদ্ভুত ক্যারেকটার। সারাক্ষণই কি যেন ভাবে। কিন্তু কি ভাবে সে নিজেও জানেনা। সারাক্ষণই পড়ায় লেগে থাকে। কিন্তু দিনশেষে আণ্ডা। সিয়াম। গান গবেষক। এর সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা। যারা চেনে তাদের কাছে পাগল। বেশ অভিমানী। কথা বেশি বলে। তবে আপনদের সাথে। অপিরিচিত কারো সামনে গেলো একেবারে দুধের শিশু। মুখে বলে মিথ্যাবাদী। কিন্তু মিথ্যে কথা বলতে সে একদমই ভয় পায়। নাম দিয়েই পরিচয় সেই তিনবছর আগে। মারামারি, হাসি কান্নায় বন্ধু ভাই। সৌমিকের পোশাকাদি দিয়ে বাকি তিনজন চলে আরকি। নতুন বাসায় এসে শিফট করলো। সবাই খুব উত্তেজিত। বাড়ীওয়ালার মেয়ে আছে কি না? কিছুক্ষণ পরপর এটা-সেটা অজুহাত নিয়ে দরোজার বেল বাজানো পরে হবে পাগলা। এখন তো নতুন। এরা যে ভদ্র ছেলেপেলে বাড়ীওয়ালাকে বোঝাতে হবে না। একেকজন কবি হয়ে যাচ্ছে। আরে বাড়ীওয়ালার মেয়েকে পটাতে হবে তো। ছাদে যাওয়া নিষেধ। বড় দুঃখের ব্যাপার। যেভাবেই হোক ফাহাদ ভাইকে দিয়ে এই পারমিশনটা পাশ করাতেই হবে। কয়েকদিন সময় নিলেও পারমিশন পাশ। সারাদিন রুমে বসে কি থাকা যায়? পাঁচ তলার বাসা। আরো কয়েকজন বাড়াটিয়া দেয়া আছে। মানুষকে বোকা বানাতে সৌরভ উস্তাদ। বাড়ীওয়ালার মেয়ের সাথে লাইন কানেক্ট করতে হলে বাসার টেইক কেয়ার আর দারোয়ানকে হাত করতে হবে। সে কি আলাপ শুরু করলো সৌরভ। পাশে সিয়ামও অবশ্য ছিলো। সিয়াম আরম্ভ করলে আর থামবেনা। প্রথম কয়েকদিন বেশ ভালই খাওয়াদাওয়া হলো দারোয়ানের সাথে।চা, সিগারেট, বিস্কুট ইত্যাদি ইত্যাদি। দারোয়ানের নাম শরীফ। অষ্টম শ্রেণী পাশ। পেটের দ্বায়ে লেখাপড়া আর হয়নি। বাসার দেখাশোনা করে আরমান হক। মধ্যবয়সী। কিন্তু এখনো বিবাহ করেনি। বেশ অদ্ভুত বিষয়। পিছনে কাহিনি আছে অবশ্যই। পরে বলা যাবে। ভালই হাতে আনা গেলো। মানুষটা একটু ত্যারা প্রকৃতির। কিন্তু খুব আবেগী বোঝা গেলো। এতো কিছু যে বাড়ীওয়ালার মেয়ের জন্য করছে তারা বাড়ীওয়ালার মেয়ে  আছে কি না এখনো এটুকুই জানা হলোনা। ও হ্যাঁ সবার প্রেমিকার ব্যাপারে বলা উচিৎ। সৌরভ। কত ছ্যাকা খেয়েছে। তার যত ক্রাশ সব বিবাহিতাদের উপর। তাকে নিয়ে বাকি সবাই চিন্তিত কারন যদি বাড়ীওয়ালীর উপর ক্রাশ খায় তো এ বাসায় আর থাকা হবেনা।  সৌমিক। সারাক্ষণই পড়া নিয়ে থাকে তার কি করে প্রেমিকা থাকবে। সীমান্ত। মিষ্টার যন্ত্রণা। তার বেশ প্যারাময় একজন প্রেমিকা আছে। যদিও সে মাঝে মাঝে ভুলে যায় তার প্রেমিকা আছে কি না। তবে দীয়া সীমান্তকে নিজের থেকেও বেশি ভালবাসে তা বাকি সবাইও জানে। সিয়াম। যদি গল্পের নায়কের প্রেমিকা থাকে তাহলে গল্প সাজবেনা। তাই প্রেমিকা নেই। এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষের সাথে কারো কথা হয়নি। সবই আরমান ভাইয়ের সাথে। পরিচিত হওয়া দরকার তো নাকি। তারা নাকি খুব শান্তশিষ্ট মানুষ। ঝামেলা, অতিরিক্ত কথা বলা একদম পছন্দ করেনা। সৌরভ থাকতে আর চিন্তা করতে হয় নাকি?
[দুই]
ছাদের দোলনায় বসে আছে সিয়াম। বিকেলের দুষ্টু বাতাস বেশ ভালই লাগে। ফোনে অদিত ফিচারিং তৌফিক ভাইয়ের বায়ান্ন গানটা চলছে। পরিবেশের সাথে গানের কোন মিল নেই। বাড়ির কথা মনে পড়ে মনটা কিঞ্চিৎ খারাপ হয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর ছোট্ট একটি মেয়ে আসলো দৌড়িয়ে। বাচ্চাদের মাঝে স্বর্গ থাকে আমি সবসময়ই বলি। মেয়েটাও কম নয় সিয়ামের ইচ্ছে হচ্ছিলো টমেটোর মতো গালটালে একটু টানতে। বাচ্চা মানুষ দেখলেই কার না কোলে নিতে ইচ্ছে করে। ঠোঁট মুখ বাকা করে বললো মেয়েটা।
- আমার বড় আপুকে দেখেছেন?
সিয়াম একটু চুপ করে রইলো। ভাবলো একটু মজা করা যাক।
- হুম।
মেয়েটার চোখে খুশির আকাশ।
- বলুন। কোথায় বলুন?
- আমি লুকিয়ে রেখেছি। শর্ত আছে বলতে পারি কোথায়।
- কি শর্ত?
- পরে বলি? আগে বলো তোমার নাম কি?
- অর্না।
- বেশ সুন্দর নাম তো। তার চেয়ে বেশি সুন্দরী তুমি জানো?
- বড় আপু কই?
- আহা বলছি তো। কিসে পড়ো তুমি?
- থ্রী'তে। আপু কই?
- তোমার বড় আপুকে তো দেখিনি। তোমার ছোট আপুকে এখানটায় আছে।
সিয়াম মজা করে বললো। সত্যি তো কাউকেই চেনেনা। কথা শুনে মেয়েটা রাগ করলো। একটু দূরে গিয়ে বললো।
- মিথ্যে কথা বলেন কেন? ছোট আপুকে আমি রুমে দেখে এসেছি।
- তাই? তাহলে তোমার বড় আপুও ঐখানেই আছে যাও।
মেয়েটা কিছু না বলে রাগী চোখে তাকিয়ে চলে গেলো। সিয়াম হাসছে। গানটা শেষ হয়ে পরের গান বাজতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর আবারো মেয়েটা আসলো। সঙ্গে আরেকজন।  সিয়ামের মনে হলো ইনিই মনে হয় বড় আপু। অর্না সম্ভবত তার আপুর হাতে ধরে টেনে আনছে। সিয়াম দোলনা ছেড়ে  দাঁড়ালো। সামনে এসে অর্না বললো।
- আপু দেখো। এই লোকটা বলেছিলো তোমাকে লুকিয়ে রেখেছে।
সিয়াম মুচকি হেসে বললো।
- পিচ্চি তো এজন্য একটু মজা করেছি কিছু মনে করবেন না।
অর্নার বড় আপু সহজ সরল হাসি দিয়ে বললো।
- কোন ব্যাপার না।
বলে অর্নাকে নিয়ে চলে গেলো। মেয়েটার হাসি নজরকাড়া। সিয়াম নিচে গেলো। একজন রুমের কোণে বসে দীয়ার সাথে মিষ্টি মিষ্টি প্রেমালাপ আর ঝগড়া করছে। আরেকজ ফেসবুকে চ্যাটিং নিয়ে ব্যাস্ত। আরেকজ খুব ভাবছে। সিয়াম গিয়ে বললো। মেয়েটা ভালই। একথা শুনেই বাকি দুজন সিয়ামের দিকে কৌতহুল নিয়ে তাকালো।
- কোন মেয়ে রে?
- মনে হয় বাড়ীওয়ালার মেয়ে।
- কিহহ? আগে বলবিনা? কথা হইছে তোর সাথে? কিসে পড়ে রে।
- থ্রী'তে।
- ধুর শালা। এটা আবার এমন ভাবে বলছিস না আজিব।
সিয়াম হাসছে। হো-হো করে হাসছে। কিছুক্ষণ হেসে বললো।
- সবার ছোট থ্রী'তে পড়ে।
আবারো দুজন হকচকিয়ে গেলো।
- আগে কবিনা বেটা। বিএফ আছে কিনা জিজ্ঞেস করছিস?
- করেছিলাম। আছে।
- তাহলে আর কি?
সিয়াম আবারো হাসছে। খুব হাসছে। তারপর বললো।
- একজনের মনে হয়না বিএফ আছে।
- বলিস কি? তোদের কিন্তু ভাবী হয়। ভাবী কিন্তু মা'য়ের সমান। মা ভেবে তাকাবি।
কথাটা বললো সৌরব। সিয়াম হেসে বললো।
- বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিএফ থাকবে কোথ থেকে?
সৌরভের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।
- বিয়ে হয়েছে তো কি হয়েছে। বিবাহিত  মেয়েরাই ভাল।
সিয়াম হেসে বললো।
- আপনে আবার ক্রাশ খাইয়েন না যেন ঠিকাছে? তাহলে বাসা ছাড়তে হবে। 
কথা শুনে সৌমিক আর সিয়াম হাসছে। সৌরভ রেগে একাকার।
[তিন]
রাকিবের মায়াবতী গানটা বাজছে। হেডফোন আছে কিন্তু সিয়াম হেডফোন ছাড়াই শুনছে। ইদানীং কানে ব্যাথা হয় অতিরিক্ত গান শুনতে শুনতে। সিয়াম দোলনা ছেড়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ প্রতিদিন অর্নার বড় আপু এসময়ে দোলনায় এসে বসে। এখনো নামটা জানা হলোনা। এসব ভাবতে না ভাবতে মেয়েটা আসলো। চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে মন খারাপ। মেয়েটা এসে দোলনায় বসলো। হঠাৎ মেয়েটার হাত থেকে ফোনটা মাঠিতে পড়ে যায়। মনে হয় স্কিনের। কাঁচটা ভেঙ্গে গিয়েছে। সিয়াম গিয়ে ফোনটা দেখলো। আরো বেশি মন খারাপ হয়ে গেলো মেয়েটার। হঠাৎ সিয়াম বললো।
- নামটা জানা হলোনা আপনার।
মেয়েটা অস্ফুট স্বরে বলে।
- অনন্যা। আপনার?
- সিয়াম। পুতুলের মতো মেয়ে উপন্যাসটা পড়েছেন?
-  নাহ তো কেন?
- আবুল হাসান আর সুপ্তির মেয়ের নাম ছিলো অনন্যা। পুতুলের মতো। আপনিও ঠিক সেরকম।
- ভালো কথা বলতে পারেন তো আপনি। তা উপন্যাসটা কে লিখেছে?
- প্রণব ভট্ট।
- আপনি উপন্যাস পড়েন?
- না। সীমান্তর কাছে আছে। সীমান্তই বেশি পড়ে। আমি মন খারাপ হলে টুকটাক।
- ভালো।
- আচ্ছা আমি যাই তাহলে নিচে।
- আচ্ছা।
সিয়াম নিচে চলে গেলো। অনন্যার মনটা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেলো। এভাবে প্রতিদিন টুকটাক কথা হয় তাঁদের মধ্যে । প্রতিদিন বিকেলেই হয়। আজকে খুব বেশিই গ্রামের কথা মনে  হচ্ছে সিয়ামের। গানও ভাল লাগছেনা। গান বন্ধ করে ছোটবেলার সোনালী মুহুর্তের কথা ভাবতে লাগলো। আজকেও ঠিক সময়ে অনন্যা এলো। সিয়াম মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে দেখে বললো।
- আপনার মনটা কি খারাপ?
সিয়াম নকল মুচকি হেসে বললো।
- কই না তো। কেমন আছেন?
- ভালো। তবে আপনি ভালো নেই বোঝতে পেরেছি। চাইলে শেয়ার করতে পারেন।
- নাহ তেমন কিছুনা। গ্রামের কথা মনে পড়ছে খুব।
- তো গ্রামে যাবেন।
কথাটা শুনে সিয়াম দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো।
- পারবোনা।
অনন্যা কথা বোঝতে পারলোনা।
- কেন?
- সে অনেক কাহিনি।
- বলুন আমি শুনবো।
- শুধু শুধু সময় নষ্ট হবে আপনার।
- না হবেনা। আপনি বলুন আমি শুনতে চাই।
দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সিয়াম বলতে আরম্ভ করলো।
- আমি ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলাম। লেখাপড়াটাও ঠিক করে করতাম না। মোটামুটি। অবশ্য স্যারেরা বলতো আমার মাথা ভালো। ছোটবেলার কিছু স্মৃতি আছে। যেমন শীতের খুব সকালে উঠে খেজুরের রস খাওয়া। স্কুল থেকে এসে শার্টটা খুলেই পুকুরে নেমে ডুবানো। বৃষ্টিতে ভেজা। ইত্যাদি ইত্যাদি। একটা বন্ধু ছিলো আমার অনিক। সবচেয়ে কাছের ছিলাম দুজন। তখন মাত্র এস এস এসি দিয়েছি। অনিক একটা মেয়েকে ভালবাসতো। মেয়েটাও বাসতো। আমাদের গ্রামে ক্লাব ঘরের মতো একটা রুম ছিলো যেখানে মানুষ যায়না পুরোনো। ধানক্ষেতের পাশে। সকালে বলেছিলো সন্ধার পরে ক্লাবটায় যেতে। আমিও গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি অনিক আর মেয়েটা বসে আছে। মেয়েটা কান্না করছে আস্তে আস্তে। আমারও বোঝার বাকি রইলোনা কি হয়েছে এখানে। কিন্তু এতোক্ষণে মানুষ আমাদের চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছিলো গ্রামের। অনিক আমার পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বলেছিলো মেয়েটার দ্বায় আমি নিতে। তাহলে আমার খুব একটা বেশী কিছু হবেনা। কারন আমার বাবা সাবেক চেয়ারম্যান ছিলো। আর ওর বাবা ছিলো রিকশাওয়ালা।  নিজের ঘাড়েই নিলাম। মেয়েটার অবস্থা দেখে সবাই বোঝতেই পেরেছে কি হয়েছে। আমি হলাম প্রধান আসামী অনিক হলো আমার সহকারী। অনিককে কয়েকটা থাপ্পড় দিয়েই দরবার থেকে বের করে দেয়। আর আমি হলাম সারাজীবনের জন্য গ্রাম হারা। বাবার সম্মান আর থাকে কই? দরবার থেকেই আমি এসে পরি ময়মনসিংহে। খালার বাড়ি। সে থেকে আর বাড়ি যাওয়া হয়নি। সবচেয়ে খারাপ লাগে প্রতি ঈদের সময়। মা'র সাথে শুধু ফোনে কথা হয়। একমাত্র মা'ই বিশ্বাস করে আমি অমনটা করতে পারিনা। যদিও দরবারে বলেছিলাম মেয়েটাকে আমিই আনি। বাবা এখনো রাগ করে আছে। যদিও টাকা পয়সা দেয় লেখাপড়ার জন্য মা'র কাছে। কথা হয়না বাবার সাথে। এই মুখ নিয়ে কিভাবে গ্রামে যাবো বলুন?
নিজের অজান্তেই সিয়াম কাঁদতে লাগলো। অনন্যা কি বলবে বোঝতে পারছেনা।
[চার]
সবাই আজকে গ্রামে যাবে। সৌমিক, সৌরভ আর সীমান্ত। অনেক জোরাজোরি করেছে সিয়ামকে কিন্তু যাবেনা কারো বাড়িতেই। কয়েকদিন পুরো একা থাকতে হবে। আসলে কাছের মানুষগুলো দূরে গেলে তাদের মর্ম বোঝা যায়। পিঠাপিঠি করে থেকেছে এতোদিন। একদিন কেউ না থাকলেই খারাপ লাগে। এক সপ্তাহ তো থাকবেই কমপক্ষে। একয়েকদিন বাহিরেই খেতে হবে। সব ভেবে আজকে আরেকটি মন খারাপের দিন। প্রতিদিনিই মন খারাপ হয়। আজকে একটু বেশি। আজকে অনন্যা আসছেনা। সিয়ামের মনে হচ্ছিলো কারো সাথে কথা বললে হয়তো একটু ভাল লাগতো। কিছুক্ষণ পর আসলো ঠিক। সিয়ামের মন খারাপের ব্যাপারটা এখন জানে অনন্যা।
- দেখলাম বাকিরা কোথাও যেন যাচ্ছে।
- হ্যাঁ গ্রামের বাড়িতে।
- আপনি তো একা  একয়দিন খাবেন কোথায় তাহলে?
- বাহিরে খেতে অসুবিধে হয়না আমার। চাচাকে না করে দিয়েছি একয়দিন এসে রান্না করে যেতে হবেনা।
- এটা কোন কথা হলো। যতদিন না আসে ততদিন বাহিরে খাবেন?
- আর আগেও খেয়েছি। আসলে কিছু একটা খেলেই হয়। খাওয়ার সময় বেশি মনে পড়ে তো এদের কথা।
- আমি আপনাকে রান্না করে দিতে পারি। যদি আপনার আপত্তি না থাকে।
সিয়াম কথাটা শুনে হাসলো।
- নাহ লাগবেনা। কেমন দেখায়। তাছাড়া আপনার যে মা মেরেই ফেলবে আপনাকে।
- শুধু মা'কেই দেখলেন? অর্পা কি মা'য়ের মতো? আমি কি মায়ের মতো? না অর্না?
- বোঝতে পারি আপনি আর অর্পার কলিজা অর্না।
- বাহ। আপনি সবসময় ঠিক বোঝেন। অবাক লাগে।
- একটা কথা বলুন তো। আপনার মা আপনার সাথে এমন ব্যাবহার করে মনে হয় আপনি উনার মেয়েই না। বাকি দুজন উনার মেয়ে।
অনন্যা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো।
- তেমন কিছুনা।
- তার মানে কিছু একটা। বলতে পারেন সমস্যা নেই।
- বাদ দেন মা'য়ের কথা।
- আমি তো আজকে বাদ দিবোনা। খারাপ লাগবে আমার না বললে।
- আসলে কেউ তো নিজের মেয়ের সাথে এমন ব্যাবহার করেনা।
- মানে কি? নিজের মেয়ে না মানে? আপনি বাড়ীওয়ালার মেয়ে না?
- হুম মেয়ে! বাড়ীওয়ালার মেয়ে। অর্পা আর অর্না দুজনের নামও আমি রেখেছি।
- আপনার কথা আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। একটু খুলে বলুন তো।
- তখন আমার বয়স খুব কম। তবে কিছুকিছু বোঝি। আমার বাবা মা দুর্ঘটনায় মারা যান। বাবা প্রাইমারি স্কুলে নতুন শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলো তখন।
- মানে? বাবা মা মারা যায়? তাহলে এরা কারা ? আপনি না বললেন আপনি বাড়ীওয়ালার মেয়ে।
- বাবা মা নাকি প্রেম করে বিয়ে করে। তাই তারা মারা যাবার পর কেউ ছিলোনা আমার। আমিও কাউকেই চিনিনা। না মা'য়ের বাড়ির মানুষদের না বাবার বাড়ির মানুষদের। পালিয়ে বিয়ে ছিলো তো।
- কেমন কথা বলছেন এগুলো? আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি। মাথায় কিছু ধরছেনা।
- ধরবে ধরবে। বাকিটা কাল বলি?
- আচ্ছা।
সিয়ামের যেন ত্বর সইছেনা। কি শুনলো এটা। অনন্যা বাড়ীওয়ালার মেয়ে না! তাহলে বাড়ীওয়ালী মা হয়না কিভাবে? ঘুম আসছেনা আজ। একটা সিঙ্গারা খেয়ে দিন পাড়। রাতে শুধুই অনন্যার কথা মাথায় ঘুরেছে।
[পাঁচ]
আজকে সিয়াম বিকেল তিনটা বাজতেই ছাদে এসে অনন্যার জন্য অপেক্ষা করছে। সময় যেন থমকে আছে। অনন্যারও যেন কিরকম লাগছে। সিয়ামের কাছে খুলে না বললে যেন ভীতর থেকে একটা চাপ যাচ্ছেনা। তাই আজকে একটু তারাতারি ছাদে এলো। আসতেই সিয়াম তারাহুরু করে বললো।
- বলুন। বাকিটা বলুন।
- অস্থীর হচ্ছেন কেন? কেমন আছেন?
- আছি ভালই। আপনি আপনার কথা বলুন।
- খেয়েছেন কি?
- সকালে হোটেল থেকে রুটি খেয়ে নিয়েছি। আপনি বলুন।
- আমি কেমন আছি জিজ্ঞেস করবেন না?
- ভালো নেই বোঝতে পারছি। তাই জিজ্ঞেস করবোনা। আপনি বলুন।
- আপনি আসলে ঠিকই বোঝেন। বলেছিলাম না আমি তখন একা। আমি এখন যাকে বাবা ডাকি উনি বাবার থেকেও বেশি কিছু। তখন তিনি অবিবাহিত ছিলেন। আমাকে শহরে নিয়ে আসে গ্রাম থেকে। কিছুদিন পর বিয়ে করে। ব্যাবসায়ও ভাল উন্নতি হয়। তাই একসাথেই থাকতাম তখন থেকে একটা ছোট বাসায়। তারপর এই মা গর্ভবতী হয়। পরে বাসা পরিবর্তন করে এই বাসায় উঠি। তারপর অর্পা হলো। অর্পার নামও আমি রেখেছিলাম। তারপর থেকে মা যেন কিরকম হতে লাগলো। আসলে নিজের সন্তাত তো নিজের সন্তানই। তবে বাবা আগের মতোই ভালবাসতো। বলতে গেলে পৃথিবীতে আমি অনাথ। আজকে এ বাসা থেকে বের করে দিলে আমার যাওয়ার কোন যায়গা থাকবেনা। অর্পা আর আমি আপন বোনের থেকেও বেশী আপন। আসলে খুব ছোট থেকেই আমি খাইয়েছি। স্কুলে দিয়ে এসেছি আবার নিয়ে এসেছি। অর্পা যখন জানলো আমি তার মা'য়ের পেটের বোন না। দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করেছে। কিন্তু আমরা ঠিক আছি। তারপর থেকে এইতো আছি প্রতিদিন মা'য়ের বকা শুনে। বাড়ির সব কাজ আমাকেই করতে হয়। তারপর মা আবার গর্ভবতী। অর্না হলো। অর্পার নামের সাথে মিল রেখে নাম রাখলাম অর্না। আসলে মা'য়ের কথায় সবাই উঠে বসে। আর বাবাতো দেশের বাহিরেই থাকে। বছরে একবার আসে। এই তো এভাবেই আছি। এজন্যই মা আমার সাথে এমন ব্যাবহার করে।
অনন্যা চোখের পানি মুছছে নিজের হাতে। সিয়ামও এবার কি বলবে বোঝতে পারছেনা। মেয়েটার প্রতি অদ্ভুত এক মায়া জন্মে যায়। সিয়াম বললো।
- আমার না ক্ষিদে পেয়েছে।
- অহ।! আপনার বাসায় তো কিছু নেই মনে হয়। আমি আপনার জন্য রান্না করে নিয়ে আসছি ঠিকাছে?
মাথা নাড়িয়ে বললো।
- ঠিকাছে।
দুজনেই মুচকি মুচকি হাসছে। আরেকটা প্রেমের কাহিনি শুরু হচ্ছে আরকি। এভাবে পাঁচদিন চুরি  করে রান্না করে দেয় সিয়ামকে। হালকা হালকা করে দুজনের গল্প বাড়ে। প্রতিদিনিই সুখ দুঃখের আলাপ হয়। তারপর নাম্বার আদান-প্রদান। রাত জেগে কথা বলা। শেয়ারিং, কেয়ারিং, শাষন। একসময় দুজনেই দুজনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্যাপারটা সবাই লক্ষ করে। সিয়াম ঠিক করে এবার প্রস্তাব দিয়েই বসবে। কিন্তু কোনভাবেই পেরে উঠছেনা। রাত বারোট বাজে। হাতে কিছু গোলাপ ফুল নিয়ে ছাদে বসে আছে সিয়াম। ভাবছে ফোন দিবে কি না। যরি ফিরিয়ে দেয়? তাহলে কি করবে? কেমন লাগবে? এসব ভাবাভাবী বাদ দিয়ে ফোন দিলো ।
- এতো রাতে?
- আজকের চাঁদটা দেখেছেন? অনেক সুন্দর। আমি ছাদে বসে আছি।
বলে সিয়াম ফোন কেটে দেয়। মনে মনে ধরে রেখেছে যদি অনন্যা আসে তাহলে বোঝবে অনন্যাও তাকে ভালবাসে আর না আসলে অনন্যা ভালবাসেনা। অপেক্ষার প্রহর গুনার সময় অনন্যা এসে হাজির। ভয়ে কাঁপছে অনন্যা। সিয়াম উঠে গিয়ে দোলনায় বসতে দিলো অনন্যাকে। জোছনাকুমারী লাগছে যেন অনন্যাকে। সিয়াম একটু দূরে দাঁড়িয়ে বললো।
- আজকের চাঁদটা অনেক সুন্দর না?
- হুম।
- কিন্তু আপনার সাথে তুলনা দিলে চাঁদ লজ্জা পাবে।
অনন্যা চুপ করে বসে আছে। কয়েকমিনিটের জন্য দুজনেই নীরব। হঠাৎ সিয়াম দোলনার সামনে হাঁটুগেরে গোলাপ ফুল দিয়ে প্রপোজ করে বসলো। অনন্যার বুকের মধ্যে কিরকম হাওয়া বয়ে গেলো। এখন কিছু বলা ঠিক হবেনা। রাত হয়ে যাচ্ছে। তাই ফুলগুলো হাতে নিয়েই দৌড় দিলো। অনন্যার মিষ্টি হাসিতে আর বাকি থাকলো কি?
[ছয়]
ফযরের আজান দিবে একটু পর। সবাই বেশ ঘুমে। বাজে একটি স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেলো অনন্যার। সিয়ামকে ফোন দেয়। ঘুমুঘুমু চোখে ফোনটা রিসিভ করলো। অস্ফুট স্বরে অনন্য বললো।
- ঘুমাচ্ছেন?
- না। ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো।
- নামাজে যাবেন না?
- দেখি।
রাগী কণ্ঠে অনন্যা বললো।
- দেখি মানে কি? যাবেন না?
- হ্যাঁ উঠছি।
- সাথে যে তিন বান্দর আছে তাদেরকেও নিয়ে যান।
- আচ্ছা।
- একটা কথা বলুন তো।
- কি?
- আমার কথা এতো শুনেন কেন?
- বড়দের কথা শুনতে হয়।
- আমি কি বড়? তাছাড়া অন্য বড় কেউ বললেও শুনবেন না?
- সবাই কি আর জোছনাকুমারী হয়?
- হয়েছে বোঝেছি। নামাজ শেষে আবার ঘুমাবেন। রাখছি তাহলে।
- আচ্ছা। শুনো...  কিছু একটা বলতে ফোন করেছো মনে হয়। বলে ফেলো সংকোচ করোনা।
অনন্যা আশ্চর্যান্বিত হয়ে যায়। কিভাবে বোঝে সিয়াম সব মনের কথা?
- না মানে....।
- ইচ্ছে না হলে বলোনা। কিন্তু যদি মন চাপ দেয় বলতে তাহলে দেরী করোনা।
- আমি মুখ দিয়ে বলতে পারবোনা।
- আমি একেবারে হারিয়ে গিয়েছি না?
অনন্যা থ হয়ে আছে। এতকিছু বোঝে ফেললো কিভাবে? স্বপ্নে কি দেখেছে সেটাও বোঝে ফেললো।
- না। একেবারেই না। এই কথা আর বলতে পারবেন না।
- চিন্তা করোনা। ঘুমাও পারলে। আমি কখনো হারাবোনা।
- রাখছি তাহলে।
- আল্লাহ হাফেজ।
ফোন রেখে দিলো অনন্যা। কিন্তু অজানা এক কাল ভয় হচ্ছে। কেন হচ্ছে সে নিজেও বোঝতে পারছেনা। সিয়ামের সাথে কথা বলার সময় অর্পা সব শুনে ফেলে। অনন্যার কাঁধে হাত রেখে বললো।
- কিছু হবেনা আপু। ঘুমাও।
অনন্যা অর্পার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বোঝতে পারছেনা। শুয়ে আছে তবুও ঘুম আসছেনা। পাখীরা কিচিরমিচির করছে। সিয়াম বাকি তিন বান্দরদের নিয়ে অজু করে মসজিদের দিকে রওনা দিলো। সিয়াম একটু অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলো। তিনজন একটু সামনে চলে যায়। একটা মালবাহী গাড়ি আসে ভোর সকালেই। সামনের তিনজন সরে যায়। সিয়াম বোঝে উঠার আগেই গাড়ির একপাশের ধাক্কা লাগে মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ঝড়তে থাকে। ঠিক ঐসময় অনন্যার ভেতরে কিরকম যেন মোচড় দিয়ে উঠলো। গাড়ি ব্যাবস্থা করার আগেই অনেক রক্ত ঝড়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। পরিচিত এক ডাক্তার চাচা ছিলো তাই সাজ সকালেই ঠায় হলো হাসপাতালে। অনন্যা সিয়ামের ফোনে ফোন দিলো। ফোন সৌরভের কাছে। রিসিভ করেই কাঁদতে লাগলো। অনন্যা বোঝতে পারলো খারাপ কিছু একটা হয়েছে। সৌরভের কণ্ঠ শুনে বললো।
- কি হয়েছে আপনার বন্ধুর?
সৌরভ কাঁদতেই আছে।
- হাসপাতালে।
বলেই ফোন কেটে দেয় সৌরভ কথা বলতে পারছিলোনা আর। ফোনে টেক্সট করে হাসপাতালের ঠিকানা নিয়ে ছুটে আসে অনন্যা। এতোক্ষণে সিয়াম আইসিইউতে [ICU] সিয়ামের মা বাবা বা গ্রামের কেউ তো জানেনা। আছে বলতে তিন বন্ধু। একেকজন একেকজায়গায় বসে আছে। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। অনন্যা কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এই ভয়টাই হচ্ছিলো। অনন্যার কাছে মনে হচ্ছে সিয়ামের এই অবস্থার জন্য সে নিজে দ্বায়ী। নামাজে না পাঠাতে বললে হয়তো দুর্ঘটনা'টা ঘটতোনা। মৃতুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে সিয়াম। চারজন বাহিরে কান্না করছে। কেউ কাউকে শান্তনা দেবার অবস্থা নেই। কেউই কান্না থামাতে পারছেনা। সবাই খুব অস্থীরতায় ভুগছে।
[সাত]
সিয়ামের জ্ঞান ফিরেছে। শুয়ে আছে। এক পাশে তিন বান্দর চোখের পানি মুছছে বারবার। এক পাশে অনন্যা সিয়ামের বাঁ হাত ধরে কাঁদছে। কথা বলতে খুব অসুবিধে হচ্ছে সিয়ামের। তবুও কি যেন বলতে চাচ্ছে। অনন্যা মুখে চাপ দিয়ে বললো।
- এখন কিছু বলতে হবেনা। আপনার কিছুই হবেনা। কদিন পরেই কথা বলবেন।
সিয়ামের চোখ দিয়েও পানি ঝড়ছে। এক মাস লাগবে পুরো সুস্থ হতে ডাক্তার বলেছে। অনন্যা, অর্পা, অর্না সহ চেনা জানা সবাই প্রতিদিন দেখতে আসে সিয়ামকে। এখন একটু একটু কথা বলতে পারে। অনন্যা ঔষধ আর পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিয়াম হা করছেনা। অনন্যা বললো।
- হা করছেন না কেন?
- আর ঔষধ খেতে ভাল লাগেনা।
- এসব বললে হবেনা। আর তো মাত্র কয়েকদিন।
সিয়াম অনিচ্ছাকৃত ভাবেই হা করলো। ঔষধ আর পানি খাইয়ে অনন্যা এখন চলে যাবে। দূপুরে আবার আসবে। সিয়াম হাত ছাড়ছেনা। অনন্য হাতটা আরো শক্ত করে ধরে বললো।
- এখন ছাড়েন। নাহলে দূপুরে আসতে দিবেনা মা।
- তুমিই তো আরো শক্ত করে ধরে রেখেছো। তুমি কাছে থাকলে সময় এতো দ্রুত চলে যায় কেন বলতে পারো?
অনন্যা হাতটা ছেড়ে বললো।
- জানিনা। এখন যাই দূপুরে আসবো।
সিয়াম অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে। সিয়ামের গ্রামের বাড়িতে কেউ কিছু বলেনি। বয়স্ক মা,বাবা। যদি কিছু হয়। মা'য়ের মন ঠিকই ছটফট করে। ফোনে পায়না। বন্ধুরা এটা-সেটা বলে কাটিয়ে দেয়। সীমান্তর প্রেমিকা দীয়া সীমান্তকে বকাঝকা করছে। তাঁকে সময় দিতে পারছেনা। সিয়ামের খেয়াল রাখতে হয়। সিয়ামের কাছে থাকতে হয়। দীয়া ফোন দিলো সীমান্তকে।
- কই তুমি?
- হাসপাতালে।
- খাইছো?
- হুম। তুমি?
- আমার খোঁজ নেয়ার সময় আছে তোমার? আছো তো সিয়ামকে নিয়ে।
- ভালো করে কথা বলো।
- মানে? আমি খারাপ করে কথা বলছি?
- সিয়ামকে নিয়ে আছি মানে কি?
- আমি তো সত্যই বলেছি।
- হাহ। তোমরা মেয়েরা এমনি।
- তুমি কি বলতে চাচ্ছো?
- তোমার সেমিষ্টার ফি'র কথা মনে আছে? একবার না দুবার না তিন তিনবার সিয়াম তোমার টাকা ম্যানেজ করে দিয়েছিলো। তোমার হাতের ফোনটা আমি দেইনি সিয়ামের টাকার কেনা। আমার সাথে তোমার রিলেশন হওয়ার আগের কথা মনে পড়ে?  ছিঃ আজ তুমি বলছো আমি সিয়ামকে নিয়ে আছি? এরপর আর ফোন দিবেনা।
- তাই না? ওসব আগের কথা।
- ঘৃণা হচ্ছে আমার আজ। খুব ঘৃণা হচ্ছে।
- আমি বড় না সিয়াম বড়?
- গুড বাই।
সীমান্ত দীয়ার নাম্বারটা ব্লক করে দেয়। সব যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্লক করে দেয়। সীমান্ত ভাবছে সিয়াম যদি শুনে দীয়া এসব বলেছে। বিশ্বাস করবেনা। কিছু মেয়ে নিজের স্বার্থের জন্য নিখুঁতভাবে চোখের পানি ফেলতে পারে। অনন্যা এসে আবারো খাইয়ে যায় দূপুরে। সীমান্ত মুখ কালো করে বসে আছে। সিয়াম বোঝতে পারলো।
- কি হইছে রে?
- কিছুনা।
- দীয়ার সাথে ঝগড়া আবার না?।
- তুই কেন ঐ মেয়েটারে বারবার সাহায্য করিস বলতো?
- আমি জানি রে দীয়া তোরে ফোনে বকছে। আমার কাছে আছিস বলে তাইনা?
- তুই বোঝলি কিভাবে?
- আমারও একটা বোন ছিলো জানিস। বোন। কিন্তু আজ নেই রে। অনেক দূরে চলে গেছে- যেদিন ভার্সিটিতে ভাইয়া বলে ডেকেছিলো প্রথম। সেদিন থেকেই নিজের বোন ভেবেছি।
- খুব মহৎ কাজ করছিস। আজ সেই মেয়েই কিনা... । আমার মাথা ধরে আছে।
- বাসায় যা গিয়ে ঘুমা।
- থাপ্পড় চিনস? আবার আইসিইউর কাজ লাগবো।
- আচ্ছা ভাই তুই মাথা ব্যাথা নিয়েই থাক।
- তোর মাথা ব্যাথা করেনা? বেডে শুয়েও ঝগড়া করিস?
- তাই তো বেচে আছি রে।
দুজনেই খিলখিল করে হাসছে।
[আট]
সিয়াম এখন পুরো সুস্থ। বাসায় ফিরেছে কাল। সৌরভ আর সিয়াম আজ ছাদে বসে আছে। অনন্যা আসার পরে সৌরভ চলে যায়। অনন্যা বললো।
- অসভ্য চলে গেলো কেন?
- উম আমার আর তোমার মাঝে কোন অসভ্যতা করবেনা বলে হেহে।
- কি যে বলেন।
- তোমার হাতটা একটু ধরি?
- না। ছাদে কেউ আসলে?
- আসবেনা অসভ্য নিচে পাহারা দিচ্ছে।
- মানে কি?
- হুম।
- না তবুও ধরা যাবেনা।
- ঠিকাছে।
সিয়াম একটু সরে বসলো দোলনায়। অভিমান করেছে।চুপ করে আছ কথা বলছেনা। অনন্যা একটা হাত ধরে বললো।
- একটা আবদার করি?
- হুম।
তখনই সিয়ামের ফোন বেজে উঠে। অনন্যা বললো।
- ফোনটা ধরেন।
- পরে ধরা যাবে। তুমি বলো।
- ফোনটা ধরেন আগে।
সিয়াম ফোনটা রিসিভ করতেই দীয়া কাঁদতে থাকে।
- কি হলো কাঁদছো কেন?
- সরি ভাইয়া। আমি বোঝতে পারিনি।
- সে কিছুনা।
- সীমান্ত আমার নাম্বার সহ সব ব্লক করে রেখেছে।
- আমি দেখছি।
বলে সিয়াম ফোন কেটে দিলো। অনন্য বললো।
- কে?
- দীয়া।
- দীয়া কে?
- সীমান্তর গার্ল্ফেন্ড। তোমার আবদার টা বলো।
-  আমাদের সম্পর্কটা তো মা মেনে নিবেনা।
- তোমার কি মনে হয় আমি তোমার বাবার টাকা'কে ভালবাসি?
- না। আমি কি সেটা বলেছি?
- তুমিই আমার পৃথিবী। আর কিছু চাইনা আমার।
- তবুও তো। সবাই তো জানে উনারাই আমার বাবা,মা।
- ভালবাসো?
অনন্যা মাথা নাড়িয়ে বললো।
- হুম।
- বিশ্বাস করো?
আবারো মাথা নাড়িয়ে বললো।
- হুম।
- তাহলে এসব চিন্তা বাদ দাও।
- আপনি কি কোনদিন গ্রামের বাড়ি যাবেন না?
- তোমাকে তো সবই বললাম।
- হুম। আচ্ছা আমি তাহলে আজ যাই।
- আসলেই যাইযাই করো কেন?
- আমার অনেক কাজ থাকে বোঝলেন?
- হ্যাঁ যাও।
অনন্যা চলে গেলো। সিয়াম সীমান্তকে কোনভাবেই বোঝাতে পারেনা। সীমান্ত কোনভাবেই আর দীয়ার সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়না। সিয়াম বললো। এই শেষ বার। সীমান্ত তবুও রাজি হয়না। অনেক চেষ্টা করে নাম্বার আনব্লক করলো। দীয়া ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করলো। আবার তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। সিয়াম দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বাঁচলো। অনন্যাকে ফোন দেয়।
- কি করো?
- এইতো অর্নাকে পড়াচ্ছিলাম। আপনি?
- একটা মহৎ কাজ করেছি।
- হুম ভালো।
- আচ্ছা তোমার চাঁদমুখটা কি আজ আর দেখতে পাবোনা?
- নাহ। এতো দেখা লাগবেনা।
- না দেখলে যে আমার ভাল লাগেনা। মন মানেনা।
- ইশ। মন মানবে, মানবে।
- তুমি আসবে আসবে। আমি আর কিছু জানিনা।
- কোথায় আসবো?
- কেন ছাদে?
- পারবোনা সাহেব।
- আচ্ছা।
সিয়াম ফোন কেটে দেয়। মনটা খারাপ হয়ে যায়। তবুও ছাদে গিয়ে অপেক্ষা করছে। ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ত মানুষ। সবাই নিজের জন্য ছুটছে। গ্রামে মানুষ কম। তাই হয়তো সৌন্দর্য বেশি। এসব ভাবছে সিয়াম আনমনা হয়ে। হঠাৎ পাশ থেকে কে যেন বলে উঠলো।
- কি ভাবছেন?
সিয়াম না তাকিয়েই বললো।
- কাজী অফিস।
-  বাব্বাহ। এতো তারাতারি?
- অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।
- কেনো কেনো?
- তোমাকে ছাড়া যে আমার একটা মুহুর্তও কাটেনা।
- কাটেনা কেন?
- এতো প্রশ্ন করো কেনো?
- ভাল লাগে।
- কেন ভালো লাগে?
- জানিনা।
- মেয়েদের এই এক কথা জানিনা বলে সব উড়িয়ে দেয়।
- উড়তে দিবোনা আমি। লুকিয়ে রাখবো।
- কিভাবে?
- ভালবাসা দিয়ে।
- চলোনা বিয়ে করে ফেলি।
দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখে বলছে।
[নয়]
সিয়াম ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ অনন্যার অনন্যার ঠোঁটের স্পর্শে ঘুম ভাঙ্গলো।
- কি সাহেব? উঠার সময় হয়নি?
- না একটু পরে উঠবো।
- কেনো? অফিস যাবেনা?
- অফিসের অনেক সময় আছে।
- লেট করে গেলে তোমার বস তোমাকে বকা দেয় না?
- না। তোমাকে বকা দেয়।
- কেনো? আমাকে বকবে কেন?
- আমি বলি তুমি আমাকে ছাড়োনা। তাই আসতে দেরী হয়।
- মিথ্যে বলো কেন?
- আমি মিথ্যা বলি? তুমি আমাকে জড়িয়ে রাখোনা?
- না রাখিনা।
- সত্যি তো?
- এক সত্যি দুই সত্যি তিন সত্যি।
সিয়াম রেগে গিয়ে বললো ।
- যাও কাল থেকে তোমাকে আর জাগিয়ে দিতে হবেনা।
- কেনো? তাহলে কে জাগিয়ে দিবে? ঘরে বউ আরেকটা আছে? নাকী আরেকটা আনার শখ?
- থাপ্পড় চিনো?
- কেনো মারবে?
- হ্যাঁ। এসব কি বলো? আমি সহ্য করতে পারিনা।
- বা রে আমি কি সত্যি বলেছি নাকি?
- তাও এসব আর বলবেনা।
- ঠিকাছে। এখন উঠো। আমি নাস্তা রেডি করতে গেলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে না উঠলে কিন্তু পানি ঢেলে দিবো।
- আরেকটু থাকোনা।
- নাস্তা করতে হবেনা?
- আচ্ছা আজকে নাস্তা করবোনা।
- রাখো তো এসব। আমি গেলাম।
অনন্যা নাস্তা রেডি করতে গেলো। সিয়াম উঠে ফ্রেশ হলো। খাবার টেবিলে বসে আছে। অনন্যা খাবার বেরে দিচ্ছে। সিয়াম অনন্যার দিকে অপলকে তাকিয়ে আছে।
- এভাবে তাকিয়ে থাকো কেন?
- মন ভরেনা যে।
- প্রতিদিনই দেখো তাও ভরেনা?
- মনে হয়না এ জনমে ভরবে।
- ইশ রে। কত্ত পিরিত। এখন খাও তারাতারি অফিসে যেতে দেরী হবে।
- আমি কি একাএকা খাই প্রতিদিন?
- উম আজকে আমি খাবোনা। তুমি খাও আমি দেখি তোমাকে।
- কালকে দেখো। বসো তো আমার সাথে খাবে নাহলে আমি খাবোনা।
দুজনে একসাথে খেলো। সিয়াম অফিসে গেলো। সিয়াম যাওয়ার পাঁচ মিনিট পরেই সীমান্ত আর দীয়া সিয়ামের বাসায় ঢুকলো। অনন্যা অবাক। দীয়ার সাজুগুজো দেখে অনন্যার বোঝতে বাকি রইলোনা যে তারা মাত্র বিয়ে করে এসেছে। অনন্যা বললো।
- আমি যা ভাবছি তা কি ঠিক?
সীমান্ত মাথা নাড়িয়ে বললো।
- হুম।
অনন্যা আর কিছু বললোনা। দুজনের জন্য খাবার রুমে দিয়ে আটকিয়ে রাখলো। তারপর সিয়ামকে ফোন দিলো।
- তোমাদের ভদ্র বান্দরটা তো মহৎ একটা কাজ করে ফেলেছে।
- সীমান্ত কি করলো আবার।
- বিয়ে।
- বিয়ে মানে?
- হুম বিয়ে। তুমি করতে পারো সীমান্ত করতে পারেনা?
- সিরিয়াসলি?
- হুম। দুজনকে গেষ্ট রুমে বন্ধি করে রেখেছি। তারাতারি বাসায় আসো তুমি।
- ও গড.... ।
সিয়াম অফিস শেষ করে কিছু ফুল, একটা লাল বেনারসি আর পাঞ্জাবী নিয়ে বাসায় আসলো। বাসায় এসে তাদেরকে গিফট করলো। সীমান্ত কি বলবে বোঝতে পারছেনা। দীয়া কাঁদে। আসলে বড় সমস্যাটা হচ্ছে সীমান্ত মুসলিম আর দীয়া হিন্দু। দীয়ার বাড়িতে জানলে না জানি কি হয়। শেষ ভরসা সিয়াম তাই সিয়ামের বাসায়ই আসা। অনেক ঝামেলা হলো। তবুও সিয়াম সব সামলিয়ে তাদের এক করে দেয়। সীমান্ত তো ডাক্তার। পাঁচটা বউ'য়ের খরচ চালাতে পারবে। কিন্তু দীয়া হিন্দু বলে যত সমস্যা হয়েছিলো। যাহোক এখন তারা খুব সুখে আছে। অনন্যা কাপড় ধুচ্ছে। আজকে শুক্রবার। সিয়াম বারবার ডাকছে।
- ঐ কই তুমি? শুক্রবারেও তোমার কাজ থাকে?
অনন্যা একটু জোরে পাশের রুম থেকে বললো।
- ও সাহেব। এটা আপনার অফিস না যে শুক্রবারে ছুটি। সংসারটা সাজিয়ে রাখতে হয় বোঝলেন?
সিয়াম অভিমানী স্বরে বললো।
- হ্যাঁ বোঝেছি তুমি খুব ব্যাস্ত মানুষ।
[দশ]
- এই উঠোনা।
সিয়াম ঘুমের ঘোরে বললো।
- উউউ।
- কি উউউ? আরিয়ানকে আজ স্কুলে ভর্তি করানোর কথা না? ভুলে গেলে?
- মনে আছে তো।
- তাহলে এখনো ঘুমাচ্ছো কেন?
- এখন বাজে কয়টা দেখো তো?
- ছয়টা পঁয়তাল্লিশ। উঠো।
- এতো তারাতারি স্কুল খুলে না।
- তুমি উঠবে। দাত মাজবে। ফ্রেশ হবে। নাস্তা করবে তারপর না যাবে।
- আরিয়ান কোথায়?
- ঘুমাচ্ছে। তোমার ছেলে তোমার মতো না ঠিকাছে। এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমায় না।
- হ্যাঁ বোঝেছি ছেলেটা তোমার মতো হয়েছে। খুব ভোরে উঠে তোমার মতো। এখন নিশ্চয় উনি ব্যায়াম করায় ব্যাস্ত?
- হুম। তোমার মতো কি ঘুমাবে?
- অহ ভালো। তাহলে দাওনা।
- কি দিবো?
- বোঝোনা?
- না।
- তাহলে আর উঠলাম না। আরিয়ানকে নিয়ে তুমি যাও স্কুলে।
অনন্যা মুচকি হেসে সিয়ামের গালে তার ঠোঁটের স্পর্শে আবদার পূরণ করলো।
- এবার তো উঠো?
- আরেকটু ঘুমাই না।
- মেজাজ খারাপ করো কেন? পানি আনবো?
- না না। এমনিই শীত। উঠছি। তুমি আরিয়ানকে রেডি করো যাও।
- গেলাম তুমি উঠো এখনি।
সিয়াম ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে আছে। সাথে আরিয়ানও। অনন্যা ছেলেকে অনেক কিছু বোঝিয়ে দিচ্ছে। এটা করা যাবেনা ওটা করা যাবেনা। স্যার জিজ্ঞেস করলে ঠিকঠিক উত্তর দিবে। ইত্যাদি ইত্যাদি। সাধারণত যা  হয় আরকি। স্কুলের প্রথম দিন সব মা'য়েরাই এরকম করে। খাওয়াদাওয়া শেষ। সিয়াম আর আরিয়ান রওনা দিবে। এমন সময় আরিয়ান বলে উঠলো।
- আম্মু।
- কি আব্বু?
- আমি তোমাকে ছাড়া যাবোনা।
- কেনো? তোমার আব্বু যাচ্ছে তো।
- আমার আব্বু কি তোমাকে ছাড়া কোথাও যায়?
সিয়াম হেসে বললো।
- দেখলে ছেলেটা কিভাবে মনের কথা বলে দিলো।
অনন্যা চোখ দিয়ে যেন বলছে। একটুও লজ্জা নাই।
এখন তিনজন একসাথে বের হলো। কাছের একটা স্কুলে ভর্তি করবে। ভর্তি করাতে যেয়ে সিয়াম অবাক হয়ে গেলো। আরে সৌমিক এখানে শিক্ষক। কিন্তু এতোদিন বলেনি কেন?
- ঐ তুই এখানে শিক্ষকতা করিস কিভাবে?
- নতুন জয়েন করছি রে।
- আমার বাসায় একবারও যাওয়া যেতোনা? এতোটা সার্থপর হয়ে গেলি?
- আরেহ না কি বলিস। আরিয়ান অনেক বড় হয়ে গিয়েছে দেখি । পুরো ভাবীর মতো কিউট হয়েছে রে।
- হুম ভর্তি করাতে আসছি।
- আচ্ছা তোরা বাহিরে থাক। আমি আরিয়ানকে নিয়ে সব কাগজপত্র ঠিক করে আসছি।
- আচ্ছা।
অনন্যা আর সিয়াম হাঁটছে স্কুলের মাঠে। সিয়াম আস্তে করে কানের কাছে এসে বললো।
- ম্যাম হাতটা ধরা যাবে একটু?
- শখ কত। কত মানুষজন চোখে পড়েনা?
- বা রে আমি কবুল বলে বিয়ে করেছি না?
- দিবোনা হাত আমি রাখো তোমার কবুল।
- তাহলে যাই আমি তুমি থাকো।
- কি পাগল। কই যাবে?
- আরিয়ানের কাছে।
- দাঁড়াও আমিও তো যাবো। আমাকে ফেলে যাবে?
- তুমি আমার কেউনা।
- তাই না?
- হুম তাই।
- একটা কথা কি জানো?
- কি?
- রাগলে তোমাকে একদম পঁচা দেখায়। আর রাগ করোনা ঠিকাছে? একটু হাসো তো।
- সত্যি?
- না তিন মিথ্যা। পাগলামী ছাড়ো। আরিয়ানের ভর্তির কাজ মনে হয় শেষ। তারাতারি বাসায় যেতে হবে।
- আজকে আমরা ঘুরবো। আরিয়ানের প্রথম স্কুলের দিন মনে রাখতে হবেনা?
- এজন্যই না তোমাকে আমার এত্ত ভালো লাগে। তুমি কত সুইট।
- একটু আগে কি বলছো? আমি পঁচা এখন সুইট? ঘুরার কথা শুনলে ওমনিই সুইট।
- এই আমি কি মন থেকে বলছি নাকি? তুমি কি রাগ করছো? আচ্ছা সরি।
- সরি বলো কেন? আমি কি পর কেউ?
- আচ্ছা সরি বলার জন্য সরি। এবার যাওয়া যায়?
সিয়াম অনন্যার হাতটা ধরে বললো।
- যায় মানে খুব যায়।
তিনজনে আজ সারাদিন ঘুরবে। সন্ধায় বাসায় ফিরবে…।
[সমাপ্ত]

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ