#অবাক_পৃথিবী 3
☆
<কি হল কথা বলছো না কেন… এসব কি? (খালামনি)
>আমি ওকে ভালবাসি। (একটু জোড়েই কথাটা বলল ইশিতা)
<কি বলছো কি এসব। (খালামনি)
>হুম।(মাথাটা একটু নত করেই বলল ইশিতা)
<কথা কি সত্য জ্যোতি? (খালামনি)
-ইয়ে মানে না মানে আসলে হয়েছি কি… (আমি)
<কি মানে মানে করছো (অনেকটা রাগান্বিত কন্ঠে)
-আউউউউউচ… (আমি)
<কি হল… (খালামনি)
-না কিছু না। আপনার ভাতিজি চিমটি কাটছে (শেষের কথাটা মনে মনে বললাম)
<কিছু বললে… (খালামনি)
-কই কিছু না তো। (কি কানরে বাবা)
<তাহলে বল ঘটনা কি সত্য
-হুম সত্য। (একটু লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে)
<কত দিন থেকে…
-না মানে খালামনি সব বলছি কিন্তু তুমি কাউকে বলিও না।
<আচ্ছা ঠিক আছে (ঠোটের কোণায় দুষ্টু হাসি নিয়ে)
-ধন্যবাদ খালামনি। চুমমমমম্মা (আমি)
*
এই রে কি করতে কি করে ফেলেছি। ভুল করে বউকে চুমমম্মা না দিয়ে শাশুড়িকে দিয়ে ফেলেছি। ওরা দুজনে যেভাবে তাকাচ্ছে মনে হচ্ছে তাতে আমি ভষ্ম হয়ে যাব। কিন্তু কেউ কারো সামনে কিছু বলতে পারল না। কপাল খুব ভাল আমার।
*
<এখন বল তোমাদের সর্ম্পক কি ভাবে? (খালামনি)
-একি খালামনি আপনি ভাতিজি জামাইয়ের লাভস্টোরি শুনবেন। তা কিভাবে। আমাদের মাঝে কত অংক, কত বিক্রিয়া ঘটেছে তা কি করে বলি। আমাদের বুঝি লজ্জা করে না। (আমি)
<বাবা এখন থেকে নিজেকে জামাই ভাবতে শুরু করেছো। তোমার সাথে যদি আমাদের মেয়ের বিয়ে না দেই তাহলে। (তামাশা করে খালামনি)
-তা দিবেন কি না দিবেন সেটা আপনাদের ব্যপার কিন্তু এখন তো আপনাদের মেয়ে আছে আমার সাথে। (আমি)
<আচ্ছা এটা ঠিক আছে এটা তো বলো কত বছর ?
-সেই ছোট বেলা থেকে। একবার ওকে একটা চুমমম্মা দিয়েছিলাম। তারপর আমার ও আমার চুমমম্মু খাওয়ার মডেল এ প্রেমে পড়ে যায়। (একটু ঠাট্টা করে)
<তাই। তা কেমন ভাবে… (খালামনি)
-কাছে আসেন দেখাচ্ছি… (আমি)
<কিহ্
-ওহ্ আপনি তো খালামনি। আপনাকে কেন কাছে ডাকব আপনার ভাতিজিকে ডাকছি… (যদিও বা ভূল করে খালামনিকেই কাছে ডেকেছিলাম)
>আমি কেন কাছে যাব… (ইশিতা)
-আরে আসো না…
*
অতঃপর ইশিতার চোখে চোখ রেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর অসমাপ্ত কাজটা সমাপ্ত করলাম। যেটায় বাধা পরেছিল। অবশ্য খালামনি চোখ বন্ধ করে ফেলেছে।
*
<এই এই কমপক্ষে একটু বড়দের সম্মান কর। আমি এখানে আছি তোমরা কি করছো (খালামনি)
-আপনি তো দেখতে চাইলেন। তাই তো… (আমি, ইুশতা অবশ্য লজ্জা পেয়েছে)
<তাহলে সেই ছোট থেকে। (খালামনি)
>না না ফুফি। চার বছর থেকে। (ইশিতা)
<হুম। তা কে আগে প্রোপোজ করেছিল।
>ও আগে প্রোপোজ করেছিল।
-না করে উপায় আছে। আমার দিকে তাকিয়ে শুধু হাসি দেয়। আর বারবার আমি সেই হাসিতে রক্তাত্ব হয়ে যাই। (আমি)
<ও তাই। (খালামনি)
-হুম।
<বুঝলাম। কিন্তু রাস্তা ঘাটে মেয়েদের প্রোপোজ করা মানে কি? (খালামনি)
-ও কিছু না। আপনার ভাতিজির সাথে ঝগড়া হয়েছিল। ও বলে আমি নাকি কোন মেয়েকে জীবনে পেতাম না। যদি না ও আমার জীবনে আসতো। আর তাই তো মেয়ে পটানোর জন্য রাস্তা ঘাটে প্রোপোজ করে বেড়াই। কিন্তু কে জানতো এটা আপনাদের বাসা। আর আপনি ওর ফুফি। (আমি)
<তাই না। (খালামনি)
-হুম। (আমি)
<আচ্ছা তোমরা আসো। তোমাদের ডাকছে। (খালামনি)
>আচ্ছা তুমি যাও। আমরা একটু পর আসতেছি। আর কাইকে বলিও না ফুফি (ইশিতা)
<হুম… (খালামনি)
>এটা কি হল। (আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে)
-কোনটা (আমি)
>কোনটা আমাকে তো চুমু খাওয়ার সময় তোমার হাত পা কাপে। আর ফুফিকে খাওয়ার সময়।
-ও ওটা তো আবেগে হয়েগেছে।
>আবেগে না। আর ফুফির সামনে আমাকে…
-আমাকে যে দেখাতে বলল
>দেখাতে বলল তাই না। দাড়াও
*
অতঃপর আমার মত শিশুর উপর নির্যাতন শুরু হয়ে গেল। উফফ কি জোর রে বাবা। কোন কম্পানির চাল খায় কে জানে। জানলে আমিও খেতাম। মারামারি করতে করতে হঠ্যাতি ও আমার বুকের উপর পরে গেল। আর চোখে চোখ পরতেই কি জানি মনে করে উঠে দৌড়ে চলে গেল। আর আমি বুকে বলিশ জড়িয়ে ধরলাম। কিন্তু তাতে কি আর তৃপ্তি হয়। তাই তো আমিও রুম থেকে বের হলাম।
কিন্তু সবাই কেমন জানি আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। খালামনিও বসে আছে দেখছি। ইশিতাকে সামনে বসিয়ে রেখেছে। সবার মুখ গম্ভীর হয়ে আছে। কেউ কিছু বলছে না। শুধু চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাহলে কি খালামনি সব বলে দিয়েছে। ওনার দিকে ইশারা করলাম কিন্তু কোন লাভ হল না। তাহলে ওরা আমার দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছে কেন? নিজেকে বার বার প্রশ্ন করছি কিন্তু কোন উত্তর পাচ্ছি না।
অতঃপর বুঝতে পারলাম আমার মধ্যে কিছু একটা ঘটেছে। নিজের দিকে তাকাতেই একটা বড় শক খেলাম। র্শাটের মধ্যে লিপিস্টিকের দাগ। র্শাটের বোতাম ছেড়া একটা। হাতের ঘড়িটা দেখতে পাচ্ছি না। ওমা ঘড়িটা তো ইশিতার ওড়নার সাথে। মাথায় হাত দিতে বুঝতে পারলাম মাথার চুল গুলো অ্যামাযন হয়ে গেছে। পুরোটাই ধরা খেয়েছি। নাহ্ কিছু একটা করতে হবে…
*
-কাকু দেখেন আপনার মেয়ে আমার কি হাল করছে। শুধু মাত্র তখন কেক দেইনি বলে। (কাকু মানে ইশিতার বাবার কাছে গিয়ে)
>হুম-হুম (কাকু)
-শুধু কি তাই আমাকে ঘরে ডেকে নিয়ে লিপিস্টক আটা ময়দা আরো না কত কি মাখিয়ে দিল। আমি নাকি দেখতে মেয়েদের মত। আপনিই বলেন আমি কি মেয়েদের মত দেখতে (আমি)
<ওও তাই। এদিকে আসো আদর করে দেই। ছোট্ট বাবুটা (খালামনি)
-খালামনি আমার সব শেষ… (একটু আবেগী ভাবে)
>এই হতচ্ছাড়া এদিকে আয়। তোকে আমি ভাল করে চিনি। ফাজলামি পাইছিস… (আমার কানটা টেনে ধরে মা)
-মা মাইরি বলছি সত্যি। কানটা ছাড়ো লাগছে তো… (আমি)
>না আগে সত্যি কি হয়েছে সেটা বল। এমনিতেই এই মিস্টি মেয়েটার দোষ দিচ্ছিস কেন…
-মা লাগছে তো… সত্যি বলছি এটাই করেছে….
>না আন্টি ছাড়বেন না। ওনি মিথ্যা বলছেন। (ইশিতা)
-আমি মিথ্যা বলছি তাই না। তাহলে এগুলো কি… (আমি)
>সেটা আমি কি জানি। আমি সেই তখন থেকে এখানে বসে আছি।
-সত্য কথা বলে দেন না ভাল হবে না কিন্তু… (আমি)
<আমি বলি সত্যটা কি (খালামনি)
-আরে না না আপনি কেন এত কষ্ট করবেন। আমিই বলছি…
>হুম বলেন… (ইশিতা)
-আসলে সত্যটা বলতে খুব লজ্জা লাগছে…
<তাহলে আমি বলি (খালামনি)
-না না। আসলে সত্যটা হয়েছে কি। আমি ভুর বশত খালামনিকে ভুল-ভাল কথা বলেছিলাম। আর ইশিতাকে তো কেক খাওয়াইনি। তাই ওনারা দুজনে মিলে আমাকে পাঁচ পাইন্ডের একটা কেক জোড় করে খাইয়ে দিছে। কিন্তু আমি এত খেতে পারবনা বলে আসতে ছিলাম আর তখন ওনারা দুজনে মিলে আমাকে ধরে কি বলব দুঃখের কথা। পুরো কেকটা খাইয়ে দিল। আর আমি জোড়া জুরি করাতে ইশিতা আমার বুকে এসে পড়ে। অবশ্য বিষয়টা আমাকে অনেক ভাল লেগেছিল। আর ফলশ্রুতিতে আমার র্শাটে ইশিতার ঠোট জোড়া। (আমি)
>তাই নাকি… (বাবা)
-হুম। কি আর বলব। যখন আমার বুকে পরল তখন যা অনুভুতি হয়েছিল। (আমি)
<সত্যি তুমি ওকে পুরো কেক টা খাইয়েছো মা। (মা)
>না মানে আন্টি পুরোটা খাওয়াতাম না। কিন্তু এমন ছেলে আপনার বাধ্য হয়ে খাওয়াতেই হল। (ইশিতা দোষী ভাব নিয়ে)
>ভাই সাহেব মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে। (মা)
*
কথাটা ঠিক বুঝলাম না। তাই বাবাকে ইশারা করলাম। কিন্তু বাবা তার চোখ দিয়ে বলে দিল আমি বন্দি হতে যাচ্ছি। যদিও বা আমি এটাই চাইতেছি। কিন্তু যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করছি তা না বলতে হবে। আর তাই আমি বাবাকে চোখে চোখে বললাম আমি কি ক্ষতি করেছি তোমার যে এত বড় শাস্তি দিচ্ছ। কিন্তু তিনি বলে দিলেন এটা করলে তার রাস্তা ফাকা। একাই জীবনটা ভোগ করতে পারবে। আর আমি জ্বলে পুরে মরব। অনেক অনুরোধ করেও লাভ হল না। কিন্তু সে এটা জানেনা যে আমি যে এটাই চাই।
*
>এমন একটা মেয়েকেই আমার বউমা হিসাবে খুজছিলাম। যে কিনা আমার এই বাদর ছেলেকে মানুষ করতে পারবে। (মা)
-মা তুমি আমার গলায় দড়ি দিওনা। তাহলে আমি শেষ। (আমি)
>দড়ি না দিলে যে বাবা তুমি এর ওর বাগানে ঢুকে পর। তাই এবার থেকে বেধে রাখব।
-মা-আআআআআআ্-হা
>আর কোন কথা নয়। যা বলছি তাই হবে। ভাই সাহেব মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে। আপনারা কি বলেন। (মা)
<আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আপনার ছেলে (কাকু)
>ওর কথা বাদ দেন। ও এমনিতেই এমন করে। দুদিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে। (মা)
<নেন মিস্টি মুখ করেন। (কাকু)
*
কি আর করার অতঃপর কারো ছিকলে বন্দি হতে যাচ্ছি। আর আমার বাবা আমার দিকে দেখে মজা নিচ্ছে। নাও নাও। আমাদের আলাদা ভাবে কথা বলার জন্য অন্য রুমে পাঠানো হল। কি অদ্ভুত ব্যপার তাই না। বাবার বিবাহ বার্ষিকীতে এসে তার মেয়েকে বিয়ে করতেছি। না না করব। তবে মনে মনে আমার কিন্তু হেব্বি আনন্দ হচ্ছে। যাই হোক ইশিতা আমাকে ওর রুমে নিয়ে গেল।
*
-দেখলে কেমন দিলাম… পুরো ছক্কা। (আমি)
>তাই না। আর আমি, আমি তোমার উপর নির্যাতন করি। বিয়ের পর বুঝতে পারবা নির্যাতন কি জিনিস। (ইশিতা)
-ও বাবা এই মেয়ে তো বিয়ের আগেই হুমকি দিচ্ছে। আমি শেষ। না পচা দাত থাকতে দাতের মর্যাদা দে।
>মানে কি…
-মানে আমি বিয়ে করব না। তুমি আমাকে শেষ করে ফেলব। আর আমি এটা কোন ভাবে মানতে পারব না। আমি এখনো বিয়ে করিনি।
>বিয়ে করনি জন্য তো বিয়ে কর তোমায়
-তাই…
>হুম… কেন বিশ্বাস হচ্ছে না।
-না বিশ্বাস হচ্ছে না।
>কেন…
-এবার বিশ্বাস হয়েছে… (ওর হাতটা ধরে একদম টেনে বুকে এনে ফেলেছি)
>এই কি করছ কেউ দেখলে কি বলবে…
-কি আর বলবে… বলবে মেয়ে জামাই বিক্রিয়া করছে আর তার ফলে নতুন অতিথী সৃষ্টি হবে…
>যাহ্ দুষ্টু আমার বুঝি লজ্জা করে না।
-এই আমাদের বাচ্চা কয়টা হবে… সাতটা না নয়টা…
>তুমি থাকো আমি যাই… (যেতে যেতে)
-তাহলে দশটা… (ওর হাতটা টেনে ধরে)
>আহ্ ছাড়ো তো… (হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে)
-তাহলে এগারোটা একটা ক্রিকেট টিম বানাবো… (একটু জোড়ে বললাম)
*
ও চলে গেল। আমিও ওখান থেকে আসলাম। এসে জানতে পারলাম আগামী মাসে বিয়ে। অতঃপর রাতের খাওয়া শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সমস্ত রাস্তা বাবা আমাকে দেখছে আর শয়তানি হাসি দিচ্ছে। কিন্তু আমি তার কানে কানে বলে দিলাম।
হাসতেছো হাসো। কিন্তু তুমি এটা কি জানো এসব আমার প্লান মতে হয়েছে। বাবা প্রথমে মুখটা কালো করলেও হঠ্যাতি হো-হো করে হেসে উঠল। মনে হচ্ছে আমি কোন বলদের মত কাজ করেছি। অবশ্য বাবার কথায় তাই বুঝতেছি। নিজে নিজে গলায় দড়ি দিয়েছি। কপাল। নিজেকে খুব গালি দিতে ইচ্ছে করছে। কোথায় প্রেম করে বেরাবো তা না বিয়ে নিয়ে বসেছি। নেও এবার ঠেলা বোঝ।
বাসায় এসে চরম একটা গান শুনলাম। আর শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি সকালে মা গায়ে পানি না ঢেলে বুঝতেই পারতাম না। তবুও মনটা কেন জানি নাচতেছে…
-মা এটা কি করলা… (আমি)
>কি করলাম। বেলা কয়টা বাজে… আর ঘুমের মধ্যে কি সব আবোল তাবোল কথা বলিশ… (মা)
-যা্হ বাবা কি আবার বললাম।
<সারা দিন শুধু একিন ধান্দা করলে এসব তো বলবেই… (বাবা)
-হুম এখন তুমি তোমার সব গুণ গুলো আমার উপর চাপিয়ে দেও। (আমি)
>আর কোন কথা শুনতে চাই না। নাস্তা দেওয়া হয়েছে ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো… (মা)
*
কি গাদ্দায় যে পরছি। সবাই সুযোগ পাইলে শুধু খোটা দেয়। তার উপর আবার নতুন ঝামেলা কপালে আসছে। আমার বাবাটাও না। সুযোগ পেলে তোমাকেও এমন বাশ দিব না।
*
-ও বাবা এত কিছু কেন। আজ কি হয়েছে বাড়িতে… (আমি)
>আরে তেমন কিছু না। আমার একমাত্র আদরের ছেলেটার গলায় ফাস পরছে তো তাই একটু ভাল মন্দ খাইয়ে মোটা তাজা করছি। (বাবা)
-কত ভাবে আমার কথা। আজ উদ্দেশ্য তো অন্য কিছু মনে হচ্ছে। যাই হোক একটা সুযোগ পেয়েছি ছক্কাটা মারতেই হবে… (মনে মনে)… মা বিয়ে করা মানে কি গলায় ফাসি দেওয়া… (আমি)
<কিহ্… (রান্নাঘর থেকে আসতে আসতে মা)
-না মানে বাবা বলল। বাবার তো বিয়ে হয়েছে আর তোমারও তাহলে তোমরা তো ভাল জানো… তাই না। (আমি)
<কে বলেছে… (মা)
-আমি না বাবা বলেছে… (আমি)
<কিহ্ আমি ফাস তোমার গলার… (মা)
>না ইয়ে মানে তা নয়… (বাবা)
<তাহলে কি…
>ভালবাসা… বিয়ে করলে কত আদর কত ভালবাসা পাওয়া যায় কিন্তু ব্যাচেলর থাকায় কি সেটা বোঝা যায় তাই বলছিলাম…
<ঐ বাদর ছেলে কি বলছিলি… (কান টেনে ধরে)
-মা লাগছে তো… এবারের মত মাফ করে দাও আর কখনও এমন করবো না… (আমি)
<হুম মনে থাকে যেন… (মা)
-বাবা তুমি আমার সাথে দুনম্বরি করলা। বুঝতে পারবা… (আমি)
<ঐ আবার দাড়া… (মা)
*
কিছু বুঝিনা আমি বাবাকে যতবার কেস্ খাওয়াতে গেছি ততবার আমি কেন বাশ খাই। আর কি করে বাবা মাকে পটিয়ে ফেলে বুঝিনা। তবে ওদের মাঝে যে ভালবাসা আছে তা অকৃতিম। মা বাবাকে এরকম একসাথে হাসতে দেখলে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়।
*
-মিঃ আদিল আর মিসেস আদিল… চালিয়ে যাও… আমি ঘরে ঢুকলাম। (আমি হেসে হেসে)
<তবে রে বাদর ছেলে… (মা)
-বাবা মাকে আসতে দেবে না। মাও তুমিও বাবাকে আসতে দেবে না। আমি এখকন তোমাদের বৌমার সাথে কথা বলব…
To be continue…
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
#অবাক_পৃথিবী 4
☆
ঘরে এসে ভাবছি ইশিতাকে ফোন দিব কিনা। বাবার কথা গুলো বারবার ভাবাচ্ছে। আসলেই কি আমি বোকার মত কাজ করলাম। নিজে নিজে পরাধীন হতে চলেছি। অবশ্য চারপাশটা দেখলে বাবার কথা গুলো সত্যি মনে হয়। আর বাবাও তো পরাধীন। তাহলে কি সত্যিই আমি ভুল করলাম। না না এতে ভুল করার কি আছে যাকে ভালবাসলাম তাকেই তো বিয়ে করতে হবে। ভালবাসা হল ভালবাসা এতে স্বাধীনতা আর পরাধীনতার কি? কিন্তু আমি যে আর আগের জীবনযাপন করতে পারব না। তাহলে কি বিয়ে ভেঙ্গে দিব। না না যদি বিয়ে না করি তাহলে ভালবাসলাম কেন? আজ হোক বা কাল বিয়েতো করতেই হবে। তাহলে এত কিসের ভয়। নানান চিন্তা ঘোরপাক খাচ্ছে মাথায়। না না আর ভাবনা চিন্তা নয় পচা শামুকে যখন পা দিয়েই ফেলেছি ব্যথা তো একটু হবেই। তাই বলে কি হাটা ছেড়ে দিব। না আর কিছুদিন পর যেহেতু বন্দি হতে যাচ্ছি তাই বাবার কথা মত একটু এই কয়েক দিন আনন্দ ফুরতি করে নেই। একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি…
-মা আমি একটু বাইরে গেলাম… (মাকে ডেকে)
>এখন আবার কোথায় যাস্ অফিস যাবিনা… (মা)
-যাব তবে আজ একটু দেরি করে… (আমি)
>আচ্ছা যাও…
অতঃপর বাইরে বের হলাম। পরিবেশটা আগের মতই। তাই আমিও আগের মত ভাবে চলছি। কিন্তু যাচ্ছি কোথায়? একদিকে গেলেই হল। চারিদিকে কলেজ পরুয়া কপোতী চলেছে। কেউ একটা আর অনেকে দল বেধে আবার কেউ কেউ কলেজ যাচ্ছে না প্রেম করতে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। হাতে অবশ্য বই খাতা সবই আছে তবে মনে হচ্ছে এটা বাবা মাকে বোকা বানানোর সহজ পদ্ধতি। যাই হোক তা ভেবে কাজ নেই। এখন সচারচর এটাই ঘটতেছে। নিজের চরকায় তেল দেওয়া ভাল। ঐ তো সামনে বেশ একটা মেয়ে দেখা যাচ্ছে যাই একটু ট্রাই মেরে আসি…
-এই মিস্ শুনছেন… (আমি পিছন থেকে)
>আমাকে বলছেন… (মেয়েটা থেমে গিয়ে)
-আপনি ছাড়া এখানে এত সুন্দরী আর কাউকে দেখতে পাচ্ছি না….
>ধন্যবাদ কাকু… (চলতে শুরু করে)
-কি কাকু… আমাকে দেখে তোমার কাকু মনে হল…
>কেন কাকু বললে কি সমস্যা আছে…
-না তা থাকবে কেন? কিন্তু আমার এই বয়সে কাকু হওয়ার কোন ইচ্ছা নাই…
>তাহলে কি বলব…
-মামা, কাকা, মেশো তোমার বাবার ভাই সর্ম্পক বাদে যা খুশি তাই…
>তাই
-হুম তাই…
>তা কি বলবেন...যেন
-তোমার নাম্বারটা…
>এত তারাতাড়ি… নাম শুনলেন না একদম নাম্বার…
-হুম আমি একটু ফাস্ট কিনা… আর নাম দিয়ে কি করব… নাম তো পরেও জানা যাবে… তোমাকে হারালে পরে আবার নাও পেতে পারি…
>তাই না…
-হুম তাই… নাম্বারটা দেও তো…
>এই নেন… (নাম্বার দিল)
*
নাম্বার দেখে আমি পুরাই টাসকি। এইটা তো ইশিতার নাম্বার। ওরে পচা নিজের গলায় নিজে দড়ি দিলাম। আজ আমার কপালে কি আছে কে জানে। আমি শেষ। বাবার কথায় ফুরতি করতে গিয়ে নিজের বাশ নিজে নিলাম।
*
>কি হলো আপনার মুখটা ওমন বাংলার পাঁচের মত হয়ে গেল কেন… (মেয়েটা)
-না বইনে আমাকে এত বড় বাশ দিওনা। এই বাচ্চা ছেলেটা বাশটা নিতে পারবে না… (আমি চিন্তা যুক্ত ভাবে)
>তা কি করে হয় আপনার নাম্বারটা তো দেন… (তামাশা করে)
-ও খালাম্মা দয়া করেন এই বাচ্চাটাকে…
>কিহ্ খালাম্মা ঠিক আছে…
*
রাগি ভাবে চোখ গুলো বড় বড় করে কথাটা বলল মেয়েটা। আমি ভয় পেয়ে দৌড় দিয়েছি। না ও জানানোর আগে আমাকে কিছু একটা করতে হবে। কোথায় কি ভাবলাম আর কি হল। সময় যখন খারাপ যায় তার আগে শতর্ক সংকেত অবশ্যই পাওয়া যায়।
*
অতঃপর ইশিতাকে ফোন করলাম। কিন্তু ফোন তো ওয়েটিং দেখাচ্ছে। তাহলে কি মেয়েটা আমার আগে ইশিতাকে ফোন দিয়ে সব বলছে। আজ আমি শেষ।
*
কিছুক্ষণ পর…
ইশিতা ফোন করেছে। ধরব কি ধরব না বলে ধরলাম…
-হ্যালো ইশু… (আমি ভর্য়াত কন্ঠে)
>হুম বল… (ইশিতা)
-কার সাথে কথা বলছিলে… (কাঁপা কাঁপা গলায়)
>ভাইয়া ফোন করছিল… কিন্তু তুমি কাঁপছো কেন… (ইশিতা)
-যাক এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম… (অনেকটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে)
>বেঁচে গেলা মানে…
-এই সেরেছে… কি বলতে কি বলে ফেঁলেছি… (মনে মনে)
>কি হল কথা বলছো না কেন…
-ন-আআআআ আসলে… (ইচ্ছাকৃত ভাবে কেঁপে কেঁপে)
>কি হয়েছে তোমার একটু খুলে বলতো…
-তোমাকে হারানোর ভয় পেয়েছিলাম জানো তোমাকে আমি হারাতে চাই না প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না… (অনেকটা ইমোশনাল ভাবে কথাটা বললাম)
>তুমি এমন ভাবে কথা বলছো কেন… ভাইয়ার ফোন করছিল তাই তো কথা বললাম। আর আমাকে হারাবে কেন… আমি তো শুধু তোমার একটা মাস পর তো একদম তোমার হয়ে যাব…
-তবুও ভয় হয় জানো…
>তোমার আজ কি হয়েছে বলতো… আগে তো এমন ভাবে কথা বলতে না আজ এমন কথা বলছো কেন...
-তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না তো…
>আরে বাবা হ্যাঁ যাবো না…
-জানো আমার না খুব ভয় হয়…
>কেন…
-চারপাশে কত ধরনের বিচিত্র মানুষ সবাই নিজের র্স্বাথ সিদ্ধির জন্য ব্যস্ত… নিজেদের র্স্বাথের জন্য যে কোন কিছু করতে পারে… তাই ভয় হয়
>কিন্তু এতে ভয়ের কি আছে…
-আমার নামে তোমাকে যদি কেউ কোন বাজে কথা বলে তুমি বিশ্বাস করোনা প্লিজ…
>এই কি হয়েছে খুলে বলতো… তোমার কথা সুবিধার মনে হচ্ছে না…
-ধরা খাইলাম মনে হয়…
>ধরা খাইলা মানে… (অনেকটা রাগী গলায়)
*
এই সারছে কি বলতে কি বলে ফেলেছি
*
-কই না তো… (আমি)
>একদম মিথ্যা বলবা না… তোমাকে আমি ভাল করে জানি… (ইশিতা)
-আমি এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম… (ইমোশনাল ভাবে)
>ঐ একদম নাটক করবা না… কি হয়েছে তারাতাড়ি বল (রাগি গলায়)
-তুমি তো সব জানো তাহলে আমাকে আবার বলছো কেন… (অভিমানী স্বরে)
>রাগ করেছো… আচ্ছা বল কি হয়েছে… (নরম সুরে)
-আজ একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি জানো… তোমার একটা বান্ধবী আমার নামে যা তা তোমাকে বলেছে। আর তুমি আমাকে এত্তগুলো কথা শুনিয়ে একটা চড় মেরে চলে গেলা। আর তোমাকে ফিরাতে পারিনি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমার কোন দোষ ছিল না। আমাকে দেখে তোমার বান্ধবীর ভাল লাগে আর তাই আমার ফোন নাম্বার চায়। কিন্তু আমি যখন তোমার ছবি দেখিয়ে বললাম আমার হবু বউ তখন আমাকে হুমকি দিয়ে চলে গেল। আর তোমার কাছে ঠিক এর উল্টো কথা বলে আর তুমি তাই বিশ্বাস করে…. আমি আর বলতে পারছি না। আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। তোমাকে কখনও হারাতে চাইনা। (চাঁপা)
>ওহ্ স্বপ্ন স্বপ্নই। বাস্তব না। তুমি কোন টেনশন করোনা। আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাব না। বড় ভালবাসি যে আমার পাগলটাকে… (ইশিতা)
*
তার মানে কাজ হয়েছে। আর একটু অভিনয় করা যাক্। অবশ্য নিজেকে নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছে। চলচিত্র জগতে থাকলে হয়তো অস্কার পেতাম।
*
-তোমাকে বলি মেয়েটা দেখতে কেমন তাহলে হয়তো তুমি আন্দাজ করতে পারবে… মেয়েটা দেখতে ফর্সা। লম্বা দেখতে মোটা মোটি ভালোই তবে তোমার মত নয়। চুল গুলো বেশ লম্বা। শাড়ি পড়ে কম বেশি…
>হুম… এত কিছু তুমি সব স্বপ্নে দেখলা… (ইশিতা)
-আরে স্বপ্নে কোথায় এই মাত্র তো দেখলাম… (বলেই জিহ্বায় কামড় এইটা কি বলাম)
>তার মানে তুমি আমাকে মিথ্যা বললে… (রাগি কন্ঠে)
-আরে না না তোমাকে বলিনি। পাশের বাসার কাকুকে বললাম।
>ওহ… আমাকে বোকা পেয়েছো তাইনা…
-হ্যালো-হ্যালো-হ্যালো… ইশু শুনতে পাচ্ছো আবাবাবাবাবা…. হ্যালো-হ্যালো… (আমি)
*
ফোনটা কেটে দিলাম। অতঃপর সুইচ অফ। বেশি ভাব নিতে গিয়ে ধরা পরে গিয়েছিলাম। না আর এখানে দেরি করা ঠিক হবে না। জানিনা কি র্দুভোগ আছে আমার কপালে… আরো নানান কথা ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসলাম।
*
>জ্যোতি তোর ফোন আসছিল… (মা)
-কে ফোন করছে… (আমি)
>ইশিতা ফোন করেছিল। তোর ফোন নাকি সুইচ অফ…
-এই সেরেছে… তুমি কি বলছো…
>বলেছি তুই বাসায় নাই…
-ওহ্। মাকে কিছু বলা যাবে না (মনে মনে)
>কি রে… এমন চুপ হলি কেন… মেয়েটা ফোন করেছে একটু কথা বল…
-আমি অফিসে যাই… (একটু তাড়া দিয়ে)
>অফিস পরে যা আগে মেয়েটাকে ফোন কর… তোকে কি যেন বলবে… (রাগি গলায়)
-আমি অফিসে গিয়ে ফোন দিব এখন… (অনেকটা অবুঝ খোকার মত)
>না না তুই এখানে দে… তোকে আমি ভাল করে চিনি… তুই যে কত ফোন করবি জানা আছে… (ধমক দিয়ে)
-তুমি এটা বলতে পারলে… (অসহায়ের মত)
>তা নয়তো কি… নাস্তার টেবিলে বললি যে তুই বৌমাকে ফোন করবি কিন্তু করিস নাই…
-তুমি কি করে জানলে… (ভ্রু কুচকে)
>তুই যদি ফোন করতি তাহলে ও আরো ফোন করে। আর বলে যে তোর ফোন বন্ধ।
*
আমার মা তুমি যদি উকিল হতে তাহলে তোমাকে কেউ হারাতে পারতো না। কি বুদ্ধি রে বাবা। আর তার ছেলে আমি। একটা মেয়েকে বোকা বানাইতে পারিনা। অবশ্য কাকে বোকা বানাবো। যাকে বোকা বানাবো সে তো এনারই হবু বৌমা। অতঃপর অসহায়ের মত ফোন দিলাম…
>এই তোমার ফোন বন্ধ কেন… (ফোন রিসিভ করে রাগান্বিত কন্ঠে)
-ইয়ে মানে নেটর্য়াক ছিলনা… (ভয়ে ভয়ে)
>তখন কি বলছিলে তুমি…
-আপনার বলা শেষ হয়েছে… পরে কথা হবে…
>কথা বলা শেষ মানে… আর পরে কথা হবে কি…
-আচ্ছা ঠিক আছে এখন রাখি… (নরম সুরে আমি)
>ঐ একদম ফোন রাখবানা… (ধমক দিয়ে)
-হ্যাঁ হ্যাঁ পরে কথা হবে। বাই… (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
<হ্যাঁরে কি বল বৌমা… (মা)
-মা তুমিও না… আমার লজ্জা করে না… (লাজুক ভাবে)
<আচ্ছা লাজুক ছেলে আমার। যাও এখন অফিসে যাও… (আমার মাথাটা নেড়ে দিয়ে)
*
না না এভাবে চলা যায় না। বার বার নিজের পাতানো ফাঁদে নিজে পরছি। একটা মেয়েকে ম্যানেজ করতে পারিনা। মেয়ে পটানোর একটা র্কোস করতে হবে। তাছাড়া চলা সম্ভব নয়। বিয়ের পর যদি বৌ রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যায় তাহলে তো আর ফেরাতে পারবো না। তখন তো বৌ হারা হব। আর যে ছেলে মেয়ে পটাতে পারে না তাকে আবার পরে কোন মেয়ে বিয়ে করবে। নাহ্ এই একমাসে মেয়ে পটানো শিখে নিতে হবে। না হলে ভবিষৎ অন্ধকার। বৌ ছাড়া থাকতে হবে...
এসব ভাবতে ভাবতে অফিসে চলে আসলাম। অফিস কন্ট্রলার হওয়ার সুবাদে আমাকে কারো কথা শুনতে হয় না। সোজা নিজের রুমে গিয়ে বসলাম। অতঃপর বাবাকে ডেকে নিলাম। বাবা আর আমি একই অফিসে জব করি। মজার ব্যপার হল বাবাকে আমাকে স্যার করে বলতে হয়। এই ব্যপারটা আমারে খুব মজা লাগে। যাই হোক বাবা আসছে…
>স্যার আমাকে ডেকেছেন… (বাবা মুচকি হেসে)
-একি আদিল সাহেব আসার আগে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলেন না… (মজা করে)
>সরি স্যার ভুল হয়েছে… কাজের এত চাপ বুড়ো বয়সে সব এলামেলো হয়ে গেছে। (ঠাট্টা করে)
-হুম কত কাজ কর জানিনা। শুধু কচি কচি মেয়েদের সাথে প্রেম নিবেদন… (আমি)
>কিছু বললেন স্যার…
-না কিছু না। যেকারণে ডেকেছি… আপনি তো বিয়ে করেছেন তাই না… (আমি)
>হুম… (বলেই আমার দিকে চোখ গুলো রসগোল্লার মত করে তাকালো)
-ওহ্ তাই তো… বিয়ে না করলে আমি আসলাম কোথা থেকে… (চোখ দেখে ভয় পাইছি)
>আজ এমন প্রশ্ন কেন…
-আপনার বৌ রাগ করলে কি ভাবে ম্যানেজ করেন… (আমি)
>না স্যার আমার বৌ খুব ভাল রাগ করে না। (হেসে হেসে)
-ও বাবা বল না। না হলে আমি শেষ… (আমি অসহায়ের মত)
>একি স্যার আপনি কি বলছেন এসব… (আবারও হেসে হেসে বাবা)
-বাবা প্লিজ। ইশিতা রাগ করেছে। আর বিয়ের একটা মাস বাকি। এখন আমি কি করব। যদি বিয়ের পর রাগ ভাঙ্গাতে না পারি তাহলে আমাকে বৌ ছাড়া থাকতে হবে। তুমি কি করে মায়ের রাগ ভাঙ্গাও বলোনা। না হলে আমি শেষ… (মন খারাপ করে)
>হুম… বুঝলাম (নিঃশ্বাস ছেড়ে)
-বলো না বাবা প্লিজ…
>বলে আমার লাভ কি… (হেসে হেসে)
-কি বাপরে বাবা ছেলেকে একটা বিষয় শিখাবে তার জন্য লাভ খোজে…. (আমি)
>কিছু বললেন… (না শোনার ভান করে)
-আচ্ছা আমি আর তোমার পিছনে লাগবো না। তুমি আটটা দশটা বারটা প্রেম কর মাকে কিছু বলবো না…
>ঠিক তো…
-হুম। একদম…
>মনে থাকবে তো…
-আগে জেনে নেই তার পর দেখাবো… (মনে মনে) হ্যাঁ মনে থাকবে…
>তাহলে শোনো…
প্রথমে যেটা করতে হবে… তোমাকে ওর বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। যেন সব ভুল তুমি ঠিক। আর এটা অর্জন করার জন্য তোমাকে এমন কিছু করতে হবে যেন ও ঘাবড়ে যায়। যে তুমি ভুল করতেই পারো না। তোমাকে ভুল বোঝার কারণে তুমি এমন করেছো। রাগ করলে একটু আবেগি কথা বলতে হবে। যেমন ধর… তুমি আমাকে একদম বিশ্বাস করো না। আমি তোমার কেউ না। আমার কথা কেন বিশ্বাস করবে বাইরের লোকেরাই তো সব। আমি তোমাকে ভালবাসিনা। আর তুমি তো আমাকে আরো বাসো না। ইত্যাদি নানান কথা। আর অভিমান করলে কি কারণে অভিমান করেছে সেটা দিয়ে চমকে দেওয়া। পছন্দের জিনিস নিয়ে আসা…. (আরো অনেক কিছু শেখালো)
-ওহ্ বাবা তুমি তো সেরা মেয়েবাজ… (আমি)
>এমনি এমনি রে পাগলা এত কিছু করার পর ও তুমি কোন দিন আমাকে ছেকা দিতে পারো নাই… (গর্বিত ভাবে)
-আচ্ছা বাবা তুমি মায়ের সাথেও কি এটা কর…
>হুম এটাই করি। আর তার জন্য তো দুই একটা র্গালফ্রেন্ড পাশে রাখি…
*
যদিও বা বাবার এসব কিছুই নাই। একটু প্রশংসা করেছি তো তাই বড় বড় কথা।
*
-আর আমি তোমার কথা রেকর্ড করে রাখি… (ফোনটা দেখিয়ে)
>চিটিং আমার সাথে… (বাবা)
-কি করব বলো তোমারি তো ছেলে…
>আমি তোর বাবা। এখানে তোর আগের কথা সব আমিও রেকর্ড করেছি… (ফোন দেখিয়ে)
-হে হে হে হে আমি তো মজা করছিলাম। এখানে কিছুই নেই। (আমি)
>হি হি হি হি আমিও মজা করছিলাম। এখানেও কিছু নেই। (বাবা)
*
বলেই চলে গেল। আর আমি বসে আছি। বোকা বানাতে পারলাম না। না তবে যেটা বলেছে সে অনুযায়ী কাজ করা দরকার। রাতের বেলায় সব বুঝাবো। এখন কাজে মন দেওয়া দরকার।
কি এক অদ্ভুত ব্যপার। মেয়ে মানুষ তার সব দিয়ে তার ভালবাসা আগলে রাখার চেষ্টা করছে। আবার অল্পতেই ভুল বুঝতেছে। ওরা ভয় পায় যদি তার কাছের মানুষটা হারিয়ে যায়। আর এই ভুল ভাঙ্গানোর মধ্যে থাকে ভালবাসা। তার তাকে একটা ছেলে এই ভরসা দিচ্ছে যে হারাবে না।
*
অফিস শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে হেটে ফিরছি। বাবাকে গাড়িতে করে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ বড় হাটতে মন চাইছে। বিকালের এই সময়টা বেশ ভাল লাগছে। কনক্রিটের পথ ধরে হেটে আসছি। পাশে অনেক গুলো ফুলের দোকান। এই সময় কপোত কপোতিরা সাধারণত এক অপরের জন্য ফুল কেনে। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। ইশিতার সাথে যখন প্রেম করতাম তখন তো এটাই করতাম। তাই ভুল বশত কিছু তরতাজা গোলাপ কিনলাম। হেটে হেটে অনেকটা পথ এসেছি। হঠ্যাতি ইশিতার ফোন। ধরব কি ধরব না বলে ধরলাম…
>এই দাঁড়াও… (ইশিতা)
-আমি তো দাঁড়িয়ে আছি… (আমি)
>তোমাকে থামতে বলেছি…
-কিন্তু কেন…
>পিছনে তাকিয়ে দেখ…
*
দুইটা মেয়ে আসতেছে। বুঝতে পারলাম ইশিতাও আছে। কিন্তু পাশে থাকা মেয়েটাকে চিনতে পারছি না। তবে চেনা চেনা লাগছে। হ্যাঁ মনে পরেছে এটাতো সকালের সেই মেয়েটা। তাহলে কি সব বলে দিয়েছে সর্বনাশ। আমি আজ শেষ…
>এই তোমাকে কতবার ডেকেছি… কানে কি দিছো হ্যাঁ… (ইশিতা)
-বিশ্বাস করো আমার কোন দোষ নেই। আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনি। আর এমন কাজ কখনও করবো না। এবারের মত ক্ষমা করে দাও… (অসহায়ের দৃষ্টিতে)
>কি বলছো এসব যাতা। সেই সকাল বেলাও কি সব বললে কিছুই বুঝলাম না। এখন আবার কি সব বলছো… (অবাক ভাবে)
*
মেয়েটাকে ইশারা করলাম কিছু বলেছে নাকি। কিন্তু কিছু বলল না। শুধু হেসে গেল।
*
>কি হয়েছে তোমার বলতো… তমি এমন করছো কেন… (ইশিতা)
-বিশ্বাস করো আমি আর এমন করব না।
>কি করেছো তুমি…
*
ওর কথায় মনে হচ্ছে ও কিছু জানে না। অতঃপর মেয়েটাও আমাকে অভয় দিল সে বলেনি। কিন্তু আমি একটা বিরাট ভুল করে ফেলেছি। ভয়ে ভয়ে তো এমনিতেই সব বলে ফেলেছি। কথা ঘুরাতে হবে…
অতঃপর আর কোন কথা না বলে হাতে থাকা গোলাপ গুলো বাড়িয়ে দিয়ে রাস্তার মাঝে দ্বিতীয় বাড়ের মত ইশিতাকে প্রোপোজ করলাম…
-তুমি আমার ঘুম কেড়ে নেওয়া প্রথম দেখা পরি। স্বপ্নে দেখা আমার রাজ্যের রাণী আমার জীবনে এসে রঙ্গিন করেছো সাদা কালো এই জীবন। বাকি জীবনটাও করে দিও। ঠকাবোনা তোমায় বুকভরা ভালবাসা দিয়ে জড়িয়ে রাখবো তোমায়। ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি…
*
অনেকটা অবাক হয়েছে। আমার কান্ড দেখে মুখে হাত দিয়েছে। অতঃপর কোমল হাতে গোলাপ গুলো নিয়ে মিষ্টে কন্ঠে বলে দিল…
>ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি আমার এই পাগলটাকে…
<তোমরা থাকো আমার একটু কাজ আছে… (বলে মেয়েটা চলে যেতে চাইল)
>দাঁড়া… (ইশিতা) এই হল আমার বান্ধবী মেঘনা। আর মেঘনা এই হল আমার পাগল… (পরিচয় করিয়ে দিল)
-আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল মেঘনা… (আমি)
<আমারও… আজ আর নয় অন্য দিন কথা হবে এখন আসি… (মেঘনা)
-একটা চা খেয়ে যান… (আমি)
>না ভাইয়া আমার একটু তাড়া আছে… আজ নয় (মেঘনা)
-আচ্ছা ঠিক আছে…
*
মেয়েটা কেন চলে গেল বুঝতে পারছি। আমাদের মাঝে আর থাকতে চাচ্ছে না। আমরাও আর আটকালাম না।
*
-আজ সারাটা বিকেল তোমার সাথে কাটাবো… (আমি)
>সত্যি… (ইশিতা)
-হুম সত্যি…
*
অতঃপর আমরা হাটতে শুরু করলাম…
To be continue…
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ