গল্পঃ গল্পের জামাই
__ Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
আমারও গায়ে হলুদ হবে! শাড়ি পরবো, বউ সাজবো। ইশ কি লজ্জার কথা! ছোট ভাইটার সাথে আর দিনরাত ঝগড়া হবেনা। ছোট বোনটার সাথে আর লুকোচুরি খেলা হবেনা। ধুর এসব কি ভাবছি! আমি এসব ভাবছি কেনো? অহ হ্যাঁ মনে পরেছে। আব্বুকে দেখলাম কাল আম্মুর সাথে কার বিয়ে নিয়ে যেন কিছু বলছে। বাড়ির বড় মেয়ে তো আমি। হলে আমার কথাই হবে। সে থেকে আমি যেন কিরকম হয়ে গেছি। এজন্যই এসব চিন্তা বারবার মাথায় আসছে বুঝেছি। কলেজে থাকাকালীন একটা ছেলে আমাকে প্রপোজ করেছিলো। আমি রাজি হইনি। দেখতাম বান্ধবীরা তাদের প্রেমিককে নিয়ে ঘুরছে। শপিংয়ে যাচ্ছে, খাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
আমার কাছে এসব গল্প করতো সবাই। মাঝে মাঝে হিংসে হতো কিন্তু আফছোস হতোনা। কারন আমি কোন সম্পর্কে না জড়ালে আমার হবু জামাইটাও জড়াবেনা। এটা আমার বিশ্বাস আল্লাহর প্রতি হুহ। নিষিদ্ধ ব্যাপারে মানুষের বেশী আগ্রহ থাকে। এটাই স্বাভাবিক। সকালে ছোট বোন অরিন হাতে একটা ছবি নিয়ে রুমে দৌড়া দৌয়ড়ি করছে। বুঝতে
পারলাম না কিছু। ঝাড়ি দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, সমস্যা কি তোর? হাতে কি? এভাবে চুন্নিদের মতো হাসতেছিস কেনো? অরিন আরো জোরে জোরে হেসে বললো, বলবোনা বলবোনা। আমি ধমক দিয়ে বললাম, যাবি রুম থেকে না থাপ্পড় দিবো? অরিন হেসে বললো, দেখো দেখো আপু কিরকম লজ্জা পাচ্ছে। আমার হাতে কি জানো?
.
আমার বুকের মধ্যে ধিকধিক করে উঠলো। মনে মনে যে ভয়টা করছি সেটাই না তো আবার! নরম স্বরে বললাম, লক্ষি বোন আমার। হাতে কি দে তো দেখি। অরিন ভেংচি দিয়ে বললো, এতো উতালা হলে হবেনা। ছাদনাতলাই দেখলেই হবে হিহি। বলে অরিন রুম থেকে থেকে পালাল। আমার অনেক রাগ হলো। হাতমুখ ধোয়ার জন্য রুম থেকে বেরোলাম। মা ডাকলো বললো কথা আছে। কি যে লজ্জা লাগছিলো। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম বিয়ের কথাই বলবে। যেই কথা সেই কাজ। বিয়ের কথাই বললো। বলার সময় আম্মুর মুখটা একটু অন্ধকার অন্ধকার লাগছিলো। আমি কিছু না বলে আবারো দৌড় দিয়ে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
.
সারাবাড়ি সাজানো হচ্ছে। গায়ে হলুদ! বান্ধবীদের আগেই বলে রেখেছি। সবাই এসেছেও। কিছু বান্দরণী আসতে পারেনি। অরিন কিছুক্ষণ পরপর এসে জিজ্ঞেস করছে, আপু কোন শাড়িটা তোমার পছন্দ? লাল না হলুদ? আমি ইশারা দিয়ে বুঝালাম হলুদ। মনে মনে চিন্তা হচ্ছে হবু জামাইটাকে এখনো দেখলাম না। না জানি কিরকম হয়! চঞ্চল না ভূতুম পেঁচা? লাজুক না পাগল টাইপের? আমাকে ভালবাসবে তো? আমার ছোট ছোট ইচ্ছে, আবদার পূরণ করবে তো? ভিলেন টাইপের হবে না হিরোটাইপ? মাঝে মাঝে জোকারীও করা লাগবে আমাকে হাসাতে। ছোট ভাই অনিককে দেখছিনা দুদিন ধরে বেশী। অস্থীর ছেলেটা স্থীর হয়ে গেলো। অবাক করা বিষয়। ভাবতেই মন খারাপ লাগছে কাল থেকে আমি অন্য বাড়ির সদস্যা হিসেবে থাকবো।
.
সকাল থেকে বাড়িতে হৈ-হুল্য। সবাই দৌড়াদৌড়িতে আছে। বান্ধবীরা কানের কাছে এসে কিছুক্ষণ পরপর খোঁচা মারছে। ঠিক খোঁচা না, মজা করছে। আমি শুধু লজ্জা পাচ্ছি। কালকে হাতে মেহেদী দিয়েছিলাম। আজকে চার পাঁচজন মিলে আমাকে বউ সাজাচ্ছে। যদই মুহুর্ত পার হচ্ছে ততই মন খারাপ হচ্ছে। অরিন আজকে আমার সামনে খুব বেশী আসেনি। কিছুক্ষন আগে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে গিয়েছে। সেই থেকে বেশী মন খারাপ। অনিককে দেখলামই না। আমার কাছে আর আগেরমতো টাকা চাইতে আসবেনা। আমি বকবোনা। আবার বকাবকির পরে টাকা দিলে যে অনিক যে হাসিটা দিতো সেটা হয়তো আর দেখা হবেনা। বর এসেছে বর এসেছে।
.
বলে সবাই দৌড়াদৌড়ি করে বর দেখতে গেলো। কবুল বলতে বলছে আমাকে। আমি চুপ করে আছি। চোখ বেয়ে পানি পরছে। অরিন খোঁচা দিচ্ছে, ইশ কি লজ্জারে! আমি কান্না করছি। এক দুই করে বেশ অনেকক্ষণ পর কান্নাকাটি করে কবুল বলা শেষ করলাম। আম্মু কাঁদছে, আব্বু কাঁদছে, অরিন আমার হাতের আঙুল ধরে আছে। বারবার চোখের পানি মুছছে। অনিকের দেখা নেই। সন্ধার সময় বিয়ে হবার কারণে শ্বশুর বাড়ি যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে গেলো। বাসর ঘরে বসে আছি। অবশ্যই ঘোমটা দিয়ে। চোখ দিয়ে নিজের অজান্তে পানি পরছেই। হৃদস্পন্দন কাঁপছে। কিছুক্ষণ পর বর এলো। আমার ঘোমটা সরিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে।
.
অনেক লজ্জা পাচ্ছি কিন্তু খারাপ লাগছেনা। যাকগে বাসর ঘরের কথা। এরপর থেকে বরের প্রতি আমার অভিযোগের শেষ নেই। খুব বেশী কথা বলেনা। দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করে। আমাকে নাকি ভয় পায়! আমি বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় পেতে হবে? আমার জন্য একটা কবিতা লিখেছিলো। কবিতাটা পড়ে উনার মানে সিয়ামের প্রেমে না পরে পারলাম না। একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম এরকম কবিতা আরো কতজনের জন্য লিখেছেন? রেগে গিয়ে আমাকে অনেকগুলো কথা শুনিয়ে দিয়েছিলো। সেই থেকে আমিও ভয় পাই। স্বামীদের ভয় পাওয়া ভাল। অমঙ্গল হয়না। বাচ্চা মেয়েদের মতো আমাকে যত্ন করে। আমিও কিন্তু কম খেয়াল রাখিনা হুহ। ইচ্ছে করেই বলি মাথা ব্যাথা।
.
তারপর উনি মাথায় তেল দিয়ে চুল বেনি করে দেয়। সব বাহানা হিহিহি। মাঝরাতে ইচ্ছে করে ঘুম ভাঙ্গিয়ে বলি আমার ঘুম আসছেনা। তারপর আমাকে কোলে করে ছাদে নিয়ে যায়। চাঁদ দেখতে দেখতেই জামাইটার কাঁদে আবারো ঘুমিয়ে পরি। সকালে আবার নিজেকে বিছানায় আবিস্কার করি। ঘুম থেকে উঠার সময় হাতটা ছাড়বেনা। গোসল করার পরে আমাকে উনার মাথার পানি মুছে দিতে হয় তোয়ালে দিয়ে। একটু দেরী হলেই গালগুলো ফুলিয়ে মিষ্টি লাউয়ের মতো করে রাখে। এজন্য আমি একটু দেরী করি হিহি। যখনি বাড়ির জন্য মন খারাপ হয়। জামাইটা ঠিক মুখ দেখে বুঝে নিবে। আমার বলার আগেই উনি রেডি হয়ে বলে রেডি হও জলদি শ্বশুর বাড়ি যাবো।
.
ননদের সাথে একবার বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম। তারপর এলো জ্বর। সেদিন এতো এতো বকা দিয়েছিলো যা বলার বাহিরে। আমি কিছু মনে করিনি। ভালবেসেই তো বকেছে। আমাকেই তো বকবে আমাকেই তো ভালবাসবে হিহিহি। প্রতিদিন অফিস থেকে আসার সময় কিছু না কিছু আনবেই। সব থেকে বেশী আনে কি জানেন? এক টাকা দামের লজেন্স প্যাকেট করে। প্যাকেট অনেক বড় হয়। অনেক আগ্রহ নিয়ে খুলি। কিন্তু খুলে যখন দেখি এক টাকা দামের লজেন্স তখন উনি মিঠমিঠিয়ে হাসে। আমি রাগ করে কথা বলিনা। তারপর জড়িয়ে আদর করে। আসলে আদরের জন্যই রাগ করি। ইশ লজ্জার কথা না! প্রতিদিন অফিসে যাবার আগে কপালে একটি চুমু দিয়ে যায়।
.
প্রথম প্রথম খুব রাগ হতো। এখন ভুলে গেলে সেই রাগ হয়। মনে হয় এই যেন আমার প্রতি ভালবাসা কমছে। মাথা থেকে ঘোমটা পরলেই রাগী চোখে তাকিয়ে থাকে। আমি রান্না না করলে না খেয়েই অফিসে চলে যায়। এতেই বুঝা যায় আমি কতো ভাল রান্না করতে পারি হিহিহি। টিভি দেখার সময় আমাকে সাথে না নিয়ে বসেনা। অথচ শুধু টিভিতে খেলা ছাড়া আর কিছুই দেখেনা। জানিনা আমাকে কেনো নিয়ে বসে। আসলে রুমান্টিক কোন মুভি বা নাটক আমিই দেখতে দেইনা। তখন মুভির বা নাটকের নায়িকার দৃশ্য আসলে যখন উনি দেখে তখন আমার খুব খুব হিংসে হয়। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়।
.
যেন বরটার চোখে এমন একটা কিছু লাগিয়ে দেই যাতে আমি ছাড়া কোন পরমহিলাকে চোখে না দেখে। অবশ্য উনি এমন না। যখনি আমার উনার হাত দিয়ে খেতে ইচ্ছে হয় তখনি বলি আমার খেতে ইচ্ছে করছেনা। তারপর আমাকে খাইয়ে দেয়। কি সুন্দর পদ্ধতি তাই না? হেহে। সবসময়ই শুধু বলে, তোমার চোখটা আমার নামে দলিল করে লিখে দাও প্লীজ। যেন আমি ছাড়া অন্য কেউ না দেখতে পারে তোমার চোখ। তোমার চোখের সাগরে শুধু আমি ডুববো। আমি কানের কাছে গিয়ে বলি, কবুল বলার সাথে সাথেই তোমার নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। হেহে সব বলে দিচ্ছি। আমার কাছে যা আবদার করে তা আমারই খুব করে দিতে ইচ্ছে হয়। এবং করিও।
.
আমাদের মতের কোনদিন অমিল হয়নি। হয় মিষ্টার বর সেক্রিফাইস করে নাহয় আমি করি। জামাইটা চেয়েছিলো আমাদে প্রথম বাবুটা যেন মেয়ে হয়। আল্লাহর দয়ায় বাবুটা মেয়েই হয়। বাবু কান্না করলে আমার দিকে এমন ভাবে তাকায় যেন আমি সাত খুন করে ফেলেছি। মজার ব্যাপার হলো জামাইটার কোলে গেলেই বাবু আর কান্না করেনা। আমার অনেক হিংসে হয়। কারণ আমি কখনো বাবুর কান্না থামাতে পারিনা। মনে হয় আম্মুর থেকে আব্বুকে বাবু বেশী ভালবাসে। বাবুকে কোলে নিয়ে যখন কান্না থামায় তখন আমি গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। তখন আমার দুগাল টেনে টেনে বলে, বাবুর আম্মুর কি হিংসে হয়? আমি মাথা নাড়িয়ে ঠোঁট বাকা করে বলি, হুউউউম.......!
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3497
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:⧍⧧ PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ