গল্পঃ ঝগড়াময় ভালবাসা
__Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
- আপনার চুল এতো বড়বড় কেন?
- বড় আবার কই? এখন আরো ছোট আগের থেকে।
- লম্বা লম্বা চুল মেয়েরা রাখে। আপিনি কি মেয়ে নাকি?
- চুল ছোট করলে আমাকে পিচ্চি পিচ্চি লাগে তাই ছোট করিনা।
- কেন আপনি কি বুড়া হয়ে গেছেন নাকি?
- তার চেয়ে কম কিসের।
- কালকে চুল কেটে আসবেন। মনে থাকে যেন।
- কেন? চুল কাটতে পারবোনা।
- কেন মানে? আমি আপনার কি হই হুম?
- ঐতো ওটাই। বিয়ে হয়েছে কদিন আগে। কিন্তু আমার চুল আমার ব্যাপার। আমি কাটবোনা।
- তাই না? আমার কথা তো শুনলেন না। পরে কিছু হলে কিন্তু আমি কিছু জানিনা।?
- পরে কিছু হবে মানে? দেখুন আপনি কিন্তু বেশি বেশি করছেন।
- করবোই।
- আজব তো। আমার চুল নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যাথা ক্যান?
- অধিকার আছে হুহ। ডিনার রেডি সবাই খাওয়ার টেবিলে অপেক্ষা করছে। আসুন তারাতারি।
- যান যান নিজে গিয়ে খেয়ে নিন। আমার ক্ষিদা লাগলে গিয়ে খেয়ে নিবো।
- বাইরে থেকে খেয়ে আসছেন নাকি? একদিন না মানা করেছি?
- খাবো পরে।
- তাহলে আমি ডাক দেই হুম আব্বুকে?
- হ্যাঁ। পাইছেন শুধু আব্বুর ভয়। আব্বু যাক বাসা থেকে তখন দেখি কি করেন।
একসাথে সবাই খেতে বসছে। সিয়ামের বাবা সিঙ্গাপুরে থাকে বছরের প্রায় দশ মাসই। জাহাজের ব্যবসা। এবার এসেছে এক মাস হয়ে গিয়েছে। আর এক মাস আছেন। এরমধ্যে সিয়ামের বিয়েটাও নিজের হাতে দিয়েছে।
- কিরে বাপ তোর কি খবর?
- এইতো ভাল। আপনার?
- সে আগের মতোই দৌড়াদৌড়ির উপর। বউমার দিকে খেয়াল রাখিস। কোন অভিযোগ যেন না শুনি।
- জ্বী।
কথাগুলো শুনছিলো আর ইভানার দিকে রাগী চোখে তাকাচ্ছিলো সিয়াম। খাওয়াদাওয়া শেষ করে রুমে আসে। সিয়ামের অভ্যাস ঘুমানোর আগে একটা গল্প লেখা। কিন্তু ইদানীং ব্যাস্ততার কারনে হয়ে উঠছেনা। ফোনটা নিয়ে একটা নোটের এপস অপেন করলো।
- এখন কয়টা বাজে? (ইভানা)
- রুমে ঘড়ি নাই? না আপনার ফোন নাই?
- তা আপনারও আছে। দেখুন না কয়টা বাজে।
- এগোরোটা. দশ। কেন?
- কেন মানে? ঘুমের সময় কি আরেকবার আসবে নাকি? ফোন রেখে ঘুমান বলছি।
- আজব তো! আপনি ঘুমান না। আমাকে টানছেন কেন? আমি একটু পরে ঘুমাবো।
- কাল সকালে অফিস নাই? আব্বুকে ডাক দিবো?
- ব্ল্যাকমেইল! হইছে আর ডাক দিতে হবেনা।
সিয়াম ফোন অফ করে ঘুমের দেশে পা বাড়ালো। কিছুক্ষন পর ঘুম ভাঙ্গলো ইভানার ডাকে।
- কি ব্যাপার? ফোন রেখে আমি তো ঘুমাচ্ছিলামই।
- না অন্য কারনে।
- তো বলুন আপনার কারন।
- আমার না খুব কবিতা শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে। একটা কবিতা শুনান না প্লীজ।
- ও হ্যালো। আমি ব্যবসার ছাত্র। কবিটা টবিতা পারিনা।
- প্রাইমারি স্কুলের কবিতাও মনে নাই।
- আছে তো! শুনালে ঘুমাবেন তো?
- হুম।
- ঐ দেখাযায় তাল গাছ.. ঐ আমাদের গা.. ঐখানেতে বাস করে কানা বগির ছা... ঘুমান গুড নাইট।
- আরে আরে এটা কোন কবিতা হলো? আচ্ছা কবিতা শুনানো লাগবেনা। একটা গান শুনান আপনার পছন্দের।
- চার লাইন শুনালে হবে?
- উমম.. হবে।
- তোমার আমার প্রেম আমি আজও বোঝিনি.. ঐ চোখের চাওয়াতে প্রেম আজও দেখিনি.. দূরে তবু দূরে সরে থাকতে পারিনি.. কাছে এসে কেন কাছে আসতে পারিনি। শুভ রাত্রি।
- এটা কি গান হলো। ছ্যাকামার্কা গান। একটা রুমান্টিক গান শুনান।
- আসমানের তারা জানে..জানে জমিনের ফুল.. ভালবেসে তোমায় করিনাই ভুল। আর পারিনা শুভ রাত্রি হ্যাঁ?
- হ্যাঁ এই গান পারবেন কেন। তবুও ধন্যবাদ। শুভ রাত্রি।
সিয়ামকে রাগিয়ে দিতে অনেক ভালো লাগে ইভানার। এজন্য যে কোন বিষয়ে অতিরিক্ত খবরদারী করে। ফজরের নামাজের সময় সিয়ামকে কাতুকুতু দিচ্ছে। কাতুকুতুতে ঘুম ভাঙ্গলো।
- কি ব্যাপার? কি হলো আবার?
- আজান দিবে একটু পর।
- অহ.. আগে আজান দিক। তারপর উঠবো।
- মুখ কাঁপলোনা একথাটা বলতে? এখনি উঠেন। আব্বু মনে হয় একটু পরেই ডাকবে।
আরেকটু ঘুম আর হলোনা। উঠে বাবার সাথে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ে এসে আবার ঘুম। কিন্তু কপালে বেশিক্ষন স্থীর রইলোনা। আবার ডাকাডাকি!
- কি হলো আবার?
- কিছু হয়নি। আর কিছুক্ষন দেরি হলে শরীরে আপনার পানি
প ঢালবো আর কিছুনা।
- কি শয়তান মেয়ে। একটা দিনও ঠিক করে ঘুমাতে দেয়না।
- বেশি ঘুমালে শরীর খারাপ করে।
সিয়ামের উঠতে হলো। না উঠে উপাই নেই এখন। কারন কিছুক্ষন পর সত্যি সত্যিই পানি ঢেলে দিতো। এর আগে অনেকবার ঢেলে দিয়েছিলো। তার উপর এখন আরো শীত। অফিসে যাওয়ার আগে।
- রাতে কি বলছিলাম মনে আছে?
- আপনি কি আর একটা দুইটা কথা বলেন। কোন কথাটা?
- ঐ আপনার মাথার চুল। আসার সময় কেটে আসবেন। নাহয় রাতে ঘুমানোর সময় কেঁচি দিয়ে কেটে দিবো।
- আমিও আপনার চুল কেঁচি দিয়ে কেটে দিবো। আমি পারিনা নাকি?
- তাই না? আব্বুকে একটু ডাক দেই? দিয়ে বলি আপনি আমার চুল কেটে দিবেন। হুম?
সিয়াম আর কোন কথা না বলে হাঁটা শুরু করলো। ইভানা হাসছে মিঠমিঠিয়ে। অফিসের লাঞ্চ টাইম। সিয়াম ফোনটা অফ করে রেখেছে। জানে এক্ষণি ফোন দিয়ে বকবকানি শুরু করে দিবে। ইভানা ফোন দিয়ে অফ পেয়ে মেজাজ খারাপ হলো। অফিস শেষে ফোন খুললো। এরি মধ্যে ইভানার ফোন।
- কি ব্যাপার? দূপুরে ফোন অফ ছিলো কেন?
- চার্জ ছিলোনা। এখন অফিস থেকে চার্জ করে নিছি।
- মিথ্যা কথা বলার আর জায়গা পাননা না? সকালেও পুরো চার্জ ছিলো আর এরি মধ্যে চার্জ শেষ?
- আমার ফোন তো পুরো আপনার মতো। রাক্ষসের মতো চার্জ খায়। আমি কি করবো?
- কিহহ? এত্ত বড় কথা? আমি রাক্ষসের মতো খাই?
- রাক্ষসীর মতো খান।
- ঠিকাছে বাসায় আসেন আমি পরেরটা দেখছি।
- হু হু জানি কি দেখবেন।
সিয়াম আসার সময় চুল ঠিকই কেটে আসলো। ভেবেছে ইভানা খুশি হবে। কিন্তু বাসায় তুমূল কাণ্ড। ইভানা নাকি বিকেল থেকেই কান্নাকাটি করছে। কেন কাঁদছে, কি জন্য কাঁদছে সেটাও বলছে না। সিয়ামের বাবা প্রচণ্ড রেগে আছে। সিয়ামের দিকে চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে তার বাবা। সিয়াম বোঝতে পারছেনা কি করবে বা কি বলবে।
- কিরে বউমা কাঁদছে কেন? কি বলছিস?
- কই? আমি তো কিছু বলিনি।
- ঠিক করে বল বলছি।
- আচ্ছা আমাদের ব্যাপার তো। আমি রুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখি?
- নাহ এক্ষণি বল কি বলছিস।
- কিছু বলিনি তো।
- নাহলে কি এমনি এমনিই কান্না করছে?
- সেটাই তো আগে গিয়ে জিজ্ঞেস করি?
সিয়ামের বাবা চুপ করে সম্মতি দিলো। ঝগড়ারাণী তো সত্যিই কান্না করছে বাচ্চাদের মতো।
- এহেম এহেম।
ইভানা পিছনে তাকালইনা। কয়েকবার ডাক দিলো তবুও কোন রেস্পন্স নেই। না পেরে গিয়ে কাঁধে হাত রাখলো। ওমা মহারাণী কান্নার গতিবেগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। সিয়াম ভাবলো টাচ করেছে এজন্য মনে হয়।
- আমার কথাটা তো শুনবেন নাকি?
কেঁদেই চলেছে।
- আরে কি এমন বললাম যে কান্নার বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন।
কেঁদেই চলেছে।
- এটুকু কথার জন্য এভাবে কাঁদতে হয়? আজব।
কেঁদেই চলেছে।
- ওকে আমি খুব খুব খুবই দুঃখীত। এবার কান্নাটা থামান প্লীজ।
কার কথা কে শুনে। কেঁদেই চলেছে।
- আরে বাপ এটুকু কথার জন্য কানে ধরতে হবে নাকি? ঠিকাছে তাও ধরলাম। এবার তো থামেন।
তবুও থামলোনা। অবশেষে জড়িয়ে ধরা ছাড়া আর কোন উপায় পেলোনা সিয়াম। এবার সত্যি সত্যিই কান্না থামলো যাক বাবা। প্রথমবারের মতো জড়িয়ে ধরলো সিয়াম। ইভানার ইচ্ছে করছে আরো কান্না করতে। যা মনে এলো আবার কান্না শুরু করলো।
- আবার!! কি ব্যাপার আবারো কান্না করছেন কেন?
- আমি কি আপনার থেকে বড় হই না অপিরিচিত কেউ? তাহলে আপনি করে বলছেন কেন?
- এটা তো আগে থেকেই বলি।
- আজ থেকে আর বলতে পারবেন না।
- একটু কষ্ট হবে তুমি করে বলতে।
- আমারো একটু কষ্ট হবে কান্না থামাতে।
- কি বজ্জাত মাইয়া! ওকে ওকে কান্না থামান... থামাও।
- আমি মাইয়া হই হুম? আরেকটু সুন্দর করে।
- না আপনি তো ডাকাত পর্যায়ের মেয়ে।
- কিহহ.. এয়ায়ায়া।
- না না.. তুমি খুব লক্ষী। এরকম মেয়ে আজকাল হয়ই না।
- মিথ্যে কথা জানি উউউ।
- না না.. তোমার মতো কেউ একজন কারো কপালে ঝুটলে। লাইফটা হেল হওয়ার জন্য যথেষ্ট… না মানে সুখী হতে আর কিছু লাগেনা।
- সত্যি তো?
- এক্কেবারে খাঁটি মিথ্যা কথা.. না মানে এর বিপরীত।
- উফফফ। একটা কথাও ঠিক করে বলতে পারেন না।
- একটু রাগ করেন তো।
- আবার আপনি!! আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে এবার।
- ওটাই তো চাই.. না মানে কান্না করলে আপনাকে বাচ্চাদের মতোই লাগে... দেখি রাগ করলে কিরকম লাগে।
- তাই না? আপনির জায়গায় তুমিটা ব্যাবহার করলে হয় না?
- এবার তো বাইরে যান আব্বু ফায়ার হয়ে আছে। কিছু একটা বলে বোঝিয়ে দিয়ে আসেন।
- পারবোনা আমি! আবারো আপনি কেন?
- আচ্ছা.. এবার বাইরে যান থুক্কু যাও মহারাণী আব্বুকে ম্যানেজ করে আসেন.. আসো।
- ঠিক করে একটা কথাও বলতে পারেনা! আরে চুল কাটলেন দেখা যায়! ওমা সত্যি সত্যিই তো পিচ্চি পিচ্চি লাগছে।
- বাইরে গিয়ে উদ্বার করেন আমাকে।
ইভানা রুম থেকে বের হয় হাসিমুখে। আব্বু জিজ্ঞেস করে।
- কি মা? সবঠিক আছে তো? এইতো হাসিমুখটা কত মিষ্টি তোমার। জানো তো মেয়েরা ঘরের লক্ষী। তারা কান্না বা মুখ কালো করে থাকলে ঘরটাই অন্ধকার হয়ে যায়।
- হ্যাঁ আব্বু। আপনার না বাজারে যাবার কথা? সারাদিন আজকে বাসায়ই বসে ছিলেন। একটু হাটাহাটি না করলে কিন্তু আবার ডায়াবেটিস বাড়বে।
সংসার করতে গেলে রাগ, অভিমান, ঝগড়া মনমালিন্য সবকিছুই হয়। এটা একটা অংশ। কিন্তু অনেক সংসার অতিরিক্ত ঝগড়া, অভিমানের জন্য বিচ্ছেদ হয়েছে। কেউ একটু ছোট হয়ে সরি শব্দটা বলেনা ইগোর জন্য। একটা শব্দ সুন্দর একটা সম্পর্ক আবার গড়তে পারে। ভালবাসাটা ঝগড়াময় হোক। ঝগড়া হলে সম্পর্ক আরো গভীর হয়। তবে সঠিক সময়ে ঝগড়াটা শেষ করলে। বেশি করলে আবার সমস্যা হয়ে যায়। কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালোনা। ভালবাসা ঝগড়াময় হোক তবে সেটা মিষ্টি আর একটা সীমার ভীতরে।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3521
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:ā§Šā§Š PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ