গল্পঃ ভালবাসা
__Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
সবার জীবনে ভালবাসা আসে। কথাটা আমার বিশ্বাস হতোনা। কিন্তু আমারও যেদিন আসলো সেদিন বিশ্বাস করেছিলাম। একটা মেয়েকে ভালবেসে ছিলাম। খুব বেশি ভালবেসে ছিলাম। আরবীও আমাকে ভালবাসতো। আরবীকে দেখেছিলাম এক বন্ধুর বড় ভাইয়ের বিয়েতে। কি একটা বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিলো ছেলে মেয়েদের মধ্যে। মুরুব্বীরাও জড়িতো ছিলো। আমি খুব ফাজিল হলেও ঝগড়া পছন্দ করিনা। দৌড়াদৌড়ির সময় আমার মানিব্যাগটা হারিয়ে গিয়েছিলো। আর সেটা পেয়েছিলো আরবী। মানিব্যাগে খুব টাকা ছিলোনা তবে কিছু দুরুত্বপূর্ণ কার্ড ছিলো। মানিব্যাগটা আমাকে দিয়ে বলেছিলো। নিজের জিনিষ নিজে রক্ষা করতে শিখেন। আমি আরবীকে আগে কখনো দেখিনি। দিনরাত মানিব্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
.
আমার বন্ধু হৃদয়কে বলেছিলাম মেয়েটার নাম ঠিকানা বের করতে। আমি তখনও নাম জানতাম না। কোনভাবেই ঠিকানা পাওয়া গেলোনা। প্রায় একমাস পরে ছোটবোনের জন্য কিছু বই কিনতে বাজারের লাইব্রেরীতে গিয়েছিলাম। আমি দোকানটায় ঢুকেই স্থব্দ হয়ে গিয়েছিলাম। আরবীও লাইব্রেরীর দোকানে। আমি কি বলবো কি করবো বুঝতেছিলাম না। আরবী হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে কি জানি ভাবছিলো। তারপর বললো।
- আপনি সেই মানিব্যাগের মালিক না?
আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম।
- হুম।
বোনের জন্য বই আর কিনলাম না। জিজ্ঞেস করেছিলাম।
- নাম কি আপনার।
হেসে হেসে বলেছিলো।
- নাম দিয়ে কি করবেন?
আমি বলেছিলাম।
- থাক ঠিকাছে। বলতে হবেনা।
আবারো হেসে হেসে বলেছিলো।
- আরবী জান্নাত।
.
আরবী মহিলা কলেজে পড়তো। প্রতিদিন দেখার জন্য কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। একদিন সাহস করে নাম্বার চেয়েই বসেছিলাম। তার আরো আটদিন পর নাম্বার দিয়েছিলো। খুব বেশী কথা হতোনা। প্রতিদিন পাঁচ মিনিট। তারপর আস্তে আস্তে আমিও সব শেয়ার করতাম আরবীও করতো। কিছুদিনের মধ্যে অনেক ভাল একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। আরবী সবসময় মাথায় কাপড় দিয়ে রাখতো। গালের নিচে একটা তিল ছিলো। হাসলে অনেক সুন্দর লাগতো। আমি যে আরবীকে ভালবেসে ফেলেছিলাম আরবী বুঝতো। হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো। প্রতিদিন ফুল পাঠাতাম। আরবী ফুল অনেক ভালবাসতো। অনেকদিন চেষ্টা করেছিলাম ভালবাসি বলে দিতে। কিন্তু বলা হয়ে উঠেনি। ভালবাসা দিবসে ফোনে টেক্সট করে ভালবাসি বলে ফেলেছিলাম।
.
তখন আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো। অনেক্ষণ হয়েছিলো টেক্সটের উত্তর দিচ্ছিলোনা। আমি ভয়ে আবার সরি ভুলে টেক্সট করে ফেলেছি বলেছিলাম। সাথে সাথে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি আরম্ভ করে দিয়েছিলো। আমি বুঝতেছিলাম না কেন কাঁদছে। জিজ্ঞেস করেছিলো।
- সত্যিই ভুলে এসেছে টেক্সটটা?
আমি তখন বলেছিলাম।
- না।
সেদিন আমার ভালবাসা গ্রহন করেছিলো। কিন্তু বলেছিলো তুমি কোনদিনও আমাকে বিয়ে করতে পারবেনা। বলে কাঁদতো। আমি জিজ্ঞেস করলে বলতোনা কেন। একদিন বললো।
- আমার বিয়ে ঠিক করা আমার মামাতো ভাইয়ের সাথে। মামাতো ভাই আমার থেকে এক বছরের ছোট। মামা এখানকার অনেক বড় ভয়ংকর নেতা। মামা যা বলে তাই'ই হয়। আর বিয়েটাও মামা ঠিক করেছে।
.
সেদিন রাত্রে আমার ঘুম হয়নি। সারারাত কান্না করেছিলাম। আমি আরবীর মামার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। উনি আমাকে কিছু বলেননি কিন্তু আরবীকে মেরেছিলো খুব। দুদিন জ্বর ছিলো আরবীর। আরবী বলেছিলো একটা পথই খোলা আছে আমাদের। পালিয়ে গিয়ে বিয়া করা। আমি কি করবো বুঝতেছিলাম না। আমার বাড়িতে বলেছিলাম এ ব্যাপারটা বড় ভাইকে দিয়ে। তারা মেনে নিয়ে আবারো আরবীর মামার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলো। কিছু বলেনি বাবাকে। আরবীকে মেরেছিলো। সেদিন আমার মনে হয়েছিলো আরবীর মামাকে খুন করি। আরবী ফোন দিয়েই কাঁদতো। মামাতো ভাইও বিয়েতে রাজি ছিলোনা। সেও অন্য একটা মেয়েকে ভালবাসতো। কিন্তু মামার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পেতোনা।
.
নিজের ছেলেকে অনেকবার মেরে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলো। আরবীর কান্না আমি একদম সহ্য করতে পারতাম না। আমিও কাঁদতাম। আরবী একদিন বললো। আমি এভাবে আর কিছুদিন থাকলে আমাকে মারতে মারতে মেরেই ফেলবে। আমি এভাবে থাকতে পারছিনা প্লীজ আমাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করো। কিছু একটা করো। আমি দুদিন পর বললাম চলো পালিয়ে যাই। তাছাড়া কোন রাস্তা নেই। আরবী মামাকে ভয় পেতো তাই প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। পরে আর কোন উপায় না পেয়ে রাজি হলো। পরেরদিন সব গুজগাজ করে দুজনে পালিয়ে যাই। বন্ধুরা কিছুদিন থাকা খাওয়া আর লুকিয়ে থাকার ব্যাবস্থা করেছিলো। আরবী বলেছিলো বিয়ে ছাড়া আমি তোমার সাথে এক ছাদের তলে থাকতে পারবোনা।
.
তাই বিয়েটাও করেছিলাম সেদিন। সম্পুর্ণ অপ্রস্তুত ছিলাম আমি। আরবীও ছিলো। কিছু করার নেই বিয়েটা করতেই হবে। আরবী আমাকে এক মুহুর্তের জন্যও ছাড়তোনা। বলতো আমার খুব ভয় করে। কদিন ভালই কেটেছিলো ভয়ে ভয়ে। বন্ধুরা বাজার করে দিয়ে যেতো। আরবী আর আরমান রান্না করতো। আরমান খুব ভালো রান্না করতে পারে। আমারা বাবুর্চি বলে ডাকি। সবাই মিলে খেতাম। একদিন হঠাৎ আরবীর মামা খোঁজ পেয়ে যায়। আরবী আমার হাত ছাড়ছিলোনা। আরবীকে তুলে নিয়ে যায়। এটো সিনেমা না যে বিশ পঞ্চাশ জনের সাথে একা মারপিট করে আমি আরবীকে রক্ষা করবো। আমাকে মেরে পুলিশের হাতে দিয়ে দেয় মিথ্যে মামলা করে। আরবীকে কিডন্যাপের অভিযোগে।
.
পুলিশও টাকার গোলাম। সারাক্ষণই আমাকে মারার উপরে থাকতো। আমাকে মারতো সহ্য করতে পারতাম। কিন্তু আরবীর কথা ভেবে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না। আমার বাড়ির কেউও এতোদিনে খোঁজ পায়নি। সবাই মনে করেছিলো হয়তো আমাকে কোথাও মেরে ফেলে রেখে দিয়েছে। প্রায় নয় মাস কাটলাম জেল। থানায় তো টাকাই কথা বলে। জেল থেকে বেড়িয়েছিলাম । চব্বিশ তারিখ। বাড়িতে গিয়ে কোনরকম জীবন বাচাই। অনেক চেষ্টার পর জানতে পারলাম আরবী হাসপাতালে। প্রেগন্যান্ট এখন। বাচ্চাটা নিতে দিবেনা জানি আরবীর মামা। আরবীর মামাতো ভাই মুন্নার কাছ থেকে জানতে পারি আরবী সদর হাসপাতালে আছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আরবীর মামা কেবিনের বাহিরে বসে আছে। আমি পায়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করলাম।
.
আরবীকে একবার দেখার জন্য। উনি বললো তাহলে বাচ্চার সাথে সাথে আরবীরও জীবনের শেষ দিন। আমি তখন অসহায়। কিছু করার নেই। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি। আজকে আমার সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখবে। কিন্তু একটা অমানুষের জন্য পৃথিবীর মুখ দেখতে পারবেনা। চোখ দিয়ে অজস্র পানি ঝড়তে থাকে। এখানকার কোন থানা পুলিশ আরবীর মামার বিপক্ষে যাবেনা। গ্রেফতার দূরের কথা। আমার হাতজোর করা ছাড়া কোন রাস্তা নেই। বাচ্চাটা হওয়ার পর আরবীর চোখের সামনে খুন করে আরবীর মামা। ছেলে সন্তান হয়েছিলো। পরেরদিনই আরবীর মামা খুন হয়। কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দূর্বত্তরা। একটা অমানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় হলো। আর মাত্র একটা দিন আগে জানোয়ারটা মরলে আমার ছেলের মুখে আব্বু ডাকটা হয়তো শুনতে পেতাম আজ।
.
আরবী তখন ভীষন অসুস্থ। এখন আর আরবীর কাছে যেতে আমার কোন বাধা নেই। আরবীর হাত ধরে সারারাত কান্না করেছিলাম। আরবী খালি বলতো। তোমাকে অনেকে মেরেছে না? বলেই কাঁদতো। আমি জানি আরবীর উপর দিয়েও দখল গিয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলো। জানো তোমার ছেলেটা না ঠিক তোমার মতো দেখতে হয়েছিলো কিন্তু হারামখোর আমার সামনে আমাদের সন্তানটাকে জবাই করেছে। আমার তখন ভীতরটা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছিলো জানো। আরবীর চোখের একফোটা পানি আমার যেন ভীতরে তীর হয়ে লাগে। গল্পটা ২০১৫'র প্রথম দিকে। মে মাসের দুই তারিখ আরবীর সাথে দেখা হয় হাসপাতালে। আজকে আবারো সেই একই হাসপাতালে বাহিরে অস্থীর হয়ে বসে আছি।
.
প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলো। আজকে আবার আমার স্ত্রী হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। আমার পাশে আমার মা, বাবা, ভাই আছে। সবাই খুব চিন্তিত। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললো। অভিনন্দন আপনি বাবা হয়েছেন। মেয়ে সন্তান হয়েছে। আমার এখন কি খুশি লাগছে তা কোনভাবেই প্রকাশ করতে পারবোনা। আরবীর মুখে বিশ্বজয়ের হাসি। মেয়েটা পুরো মায়ের মতো হয়েছে। নাক, মুখ, চোখ সবই আরবীর মতো। আমরা সেই প্রথমে ঠিক করেছিলাম ছেলের নাম রাখবো আদিব। তা তো আর হলোনা। তাই ছেলের নাম আর আরবীর নামের সাথে মিল রেখে নাম রাখলাম আদিবা। সত্যিকারের ভালবাসার জয় একদিন কোনো না কোনভাবে হবেই। সত্যের জয় হবেই।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3507
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:⧍ā§Ē PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ